মুহাম্মাদুল্লাহ ফয়সাল - সদর, লালমনিরহাট

৪০৩৭. Question

আমাদের এলাকায় মসজিদে ঈদের জামাত হয়। গত ঈদে নামাযের আগে প্রচণ্ড বৃষ্টি আরম্ভ হয়। তখন আমরা সবাই মসজিদে অবস্থান নেই। এছাড়া অবস্থানের অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। এদিকে ঈদের নামাযের সময় ঘনিয়ে এলে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে কাতার করি। কিন্তু ভিড়ের কারণে পেছনের কাতারের কয়েকজন মুসল্লী অন্যের পিঠের উপর সিজদা করে নামায আদায় করে।

জানতে চাচ্ছি, আমাদের এভাবে নামায আদায় করা কি সহীহ হয়েছে? নাকি পুনরায় আদায় করতে হবে।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের নামায সহীহ হয়েছে ভীড়ের কারণে সিজদার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে পিঠের উপরও সিজদা করে নামায আদায় করা জায়েয আছে। এটি সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল দ্বারাও প্রমাণিত।

হযরত উমর রা. বলেন,

مَنْ زَحَمَهُ النَّاسُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ حَتَّى لَا يَسْتَطِيعَ أَنْ يَسْجُدَ عَلَى الْأَرْضِ فَلْيَسْجُدْ عَلَى ظَهْرِ رَجُلٍ .

জুমার দিনে ভীড়ের কারণে যে ব্যক্তি জমিনের উপর সিজদা করতে সক্ষম নয়সে যেন অপর ব্যক্তির পিঠের উপর সিজদা করে। (আলমুহাল্লা ৩/২৯৮)

হাসান বসরী রাহ. বলেন,

إذَا اشْتَدَّ الزِّحَامُ فَإِنْ شِئْت فَاسْجُدْ عَلَى ظَهْرِ أَخِيك.

 

যখন ভীড় অধিক হয় তখন তুমি চাইলে তোমার ভাইয়ের পিঠের উপর সিজদা করতে পার। (আলমুহাল্লা ২/২৯৮)

-কিতাবুল আছল ১/১৭৯; আলমাবসূত, সারাখসী ১/২০৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১২১; আলবাহরুর রায়েক ১/৩১৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭০

Sharable Link

ওমর ফারুক - উত্তরা, ঢাকা

৪০৩৮. Question

আমার একজন খালা গত তিন বছর আগে ব্রেন স্ট্রোক করেন। এরপর থেকে তিনি আর পূর্ণ জ্ঞান ফিরে পাননি। অনেক কিছুই মনে রাখতে পারতেন না। মাঝেমধ্যে আপন-জনদেরকেও চিনতে তার বেগ পেতে হত। নামাযের সময় হলে কেউ মনে করিয়ে দিলে অজু করে এসে নামাযে দাঁড়াতেন। তবে কয় রাকাত পড়ছেন, সিজদা কয়টি করছেন মনে রাখতে পারতেন না। অর্থাৎ শুদ্ধভাবে কখনও নামায পড়তে পারতেন না। এ অবস্থায় তিন বছর যাওয়ার পর গত কিছুদিন আগে তিনি এন্তেকাল করেন। জানতে চাচ্ছি, তার উক্ত দীর্ঘ সময়ের নামাযগুলোর হুকুম কী? এ নামাযগুলোর ফিদয়া দিতে হবে কি?

 

Answer

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার খালার ব্রেন স্ট্রোকের পর তিনি যেহেতু পূর্ণ জ্ঞান ফিরে পাননি বরং একেবারে অস্বাভাবিক ছিলেন তাই তার ঐ সময়ের নামাযের জন্য আপনাদের কিছুই দিতে হবে না। কারণএমন অবস্থায় নামায ফরয থাকে না। 

-জামে তিরমিযী, হাদীস ১৪২৩; রদ্দুল মুহতার ২/১০০

Sharable Link

হুযাইফা - কুটাপাড়া, বি-বাড়িয়া

৪০৩৯. Question

আমি আমার বড় ভাই আর আমার আব্বু আমরা তিনজন প্রতিবছর রমযানে বাসায় জামাতে তারাবীহ পড়ি। আগামী রমযান থেকে আমার বোন আর আম্মুও আমাদের সাথে শরীক হতে চাচ্ছেন। এখন আমি জানতে চাচ্ছি, আম্মু আর আপু আমাদের সাথে শরীক হলে আমরা কীভাবে কাতার করে দাঁড়াব? আর মহিলাদের বাসাতে জামাতে নামায পড়া বা বাইরের জামাতে অংশগ্রহণ করা কেমন? দলীল প্রমাণসহ জানতে চাই।

Answer

ইমামের সাথে যদি একজন পুরুষ ও মহিলা থাকেতাহলে পুরুষ ইমামের ডান পাশে দাঁড়াবে। আর মহিলা তাদের পেছনের কাতারে দাঁড়াবে। আর যদি ইমামের সাথে দুইজন পুরুষ ও মহিলা থাকেতাহলে দুইজন পুরুষ ইমামের পেছনের কাতারে দাঁড়াবেআর মহিলা তাদের পেছনের কাতারে দাঁড়াবে। আনাস রা. থেকে বর্ণিত-

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ جَدَّتَهُ مُلَيْكَةَ دَعَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِطَعَامٍ صَنَعَتْهُ لَهُ، فَأَكَلَ مِنْهُ، ثُمَّ قَالَ: قُومُوا فَلِأُصَلِّ لَكُمْ قَالَ أَنَسٌ: فَقُمْتُ إِلَى حَصِيرٍ لَنَا، قَدِ اسْوَدَّ مِنْ طُولِ مَا لُبِسَ، فَنَضَحْتُهُ بِمَاءٍ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَصَفَفْتُ وَاليَتِيم وَرَاءَهُ، وَالعَجُوزُ مِنْ وَرَائِنَا، فَصَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ انْصَرَفَ .

উক্ত হাদীসে এসেছে যেআনাস রা.একটি ছেলে ও একজন বৃদ্ধ মহিলাকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামাতে নামায পড়েছেন। সেখানে আনাস রা. ও ছেলেটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পেছনে দাঁড়িয়েছেন। আর বৃদ্ধ মহিলা দাঁড়িয়েছেন তাদের পেছনে।

প্রকাশ থাকে যেমেয়েদের জন্য তারাবীর নামাযও একাকী পড়াই উত্তম। আর গায়রে মাহরাম (মাহরাম নয় এমন) কোনো পুরুষের পেছনে পর্দার ভেতরে থেকেও মহিলাদের জন্য ইকতিদা করা মাকরূহ। আর যদি জামাতে শরীক হওয়ার  জন্য ঘরের বাইরে অন্য কোথাও যেতে হয় তবে তা আরো অপছন্দনীয়। কেননা বহু হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদেরকে একাকি গৃহাভ্যন্তরে নামায আদায়কে উত্তম বলেছেন এবং এভাবে নামায আদায়ে উৎসাহিত করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

صلاةُ المرأةِ في بيتها أفضلُ من صلاتها في حُجْرَتِها، وصلاتُها في مخدَعِها أفضلُ من صلاتها في بيتها.

মহিলাদের জন্য ঘরের ভেতরে নামায পড়া উত্তম বাইরের কামরায় নামায পড়া থেকে  আর গৃহাভ্যন্তরের প্রকোষ্ঠে নামাযে পড়া উত্তম ঘরে নামায পড়া থেকে। (সুনানে আবুদাউদহাদীস ৫৭০)

আরেক হাদীসে আছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

خَيْرُ صَلَاةِ النِّسَاءِ فِي قَعْرِ بُيُوتِهِنَّ

মহিলাদের জন্য উত্তম নামায হল যা গৃহাভ্যন্তরে আদায় করা হয়। (মুসনাদে আহমাদহাদীস ২৬৫৭০)

 

তাই মহিলাগণ জামাতে নামায পড়লে কিংবা ঘরের বাইরে গিয়ে জামাতে অংশগ্রহণ করলে সাওয়াব কম হবে এবং তা মাকরুহ হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/২০২; বাদায়েউস সনায়ে ১/৩৯২; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫২

Sharable Link

তাহের - টঙ্গী, গাজীপুর

৪০৪০. Question

আমি  আজ আসর নামাযের শেষ বৈঠকে ভুলে দুবার তাশাহহুদ পড়ে ফেলি। পরে সাহু সেজদা না দিয়েই নামায শেষ করি। এখন আমি জানতে চাই, আমার নামায কি আদায় হয়ে গেছে? নাকি পুনরায় পড়তে হবে? আরও জানতে চাই, এভাবে নামাযের শেষ বৈঠকে অথবা প্রথম বৈঠকে ভুলে একাধিকবার তাশাহহুদ পড়লে কী করণীয়?

 

Answer

নামাযের শেষ বৈঠকে ভুলে একাধিকবার তাশাহহুদ পড়লে সাহু সেজদা ওয়াজিব হয় না। তাই আপনি সাহু সেজদা না করে ঠিকই করেছেন। আর ফরয ওয়াজিব এবং সুন্নতে মুআক্কাদা নামাযের প্রথম বৈঠকে ভুলে একাধিকবার তাশাহহুদ পড়লে সাহু সেজদা ওয়াজিব হয়। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৭৪; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী পৃ.২৫১, রদ্দুল মুহতার ১/৫১০

Sharable Link

তাহের - টঙ্গী, গাজীপুর

৪০৪১. Question

হুযুর, আজ ফজর নামাযে প্রথম রাকাতে আমি ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে ঘুমাচ্ছিলাম। ইমাম সাহেব কখন রুকু ও সেজদা করলেন আমি তা টের পাইনি। হঠাৎ চোখ খুলে দেখি, তিনি সেজদা থেকে উঠে দ্বিতীয় রাকাত শুরু করছেন। তখন আমি তার সাথে দ্বিতীয় রাকাতে শরীক হয়ে নামায শেষে ছুটে যাওয়া রাকাতটি আদায় করেছি। আমার ঐ নামায কি আদায় হয়েছে? নাকি তা পুনরায় পড়তে হবে?

 

Answer

আপনার ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে। তা পুনরায় পড়তে হবে না। তবে তা নিয়মসম্মত হয়নি। কারণ নামাযের শুরু থেকে উপস্থিত থাকার পর ঘুমের কারণে কিছু অংশ ছুটে গেলে নিয়ম হলযে অংশ ছুটে গেছেতা আগে আদায় করে নেয়া। তারপর ইমামের অনুসরণ করা। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৪৭; বাদায়েউস সনায়ে ১/৫৬৩; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫৬; রদ্দুল মুহতার ১/৪৬৩

Sharable Link

আব্দুস সালাম - বসুন্ধরা, ঢাকা

৪০৪২. Question

 আমাদের এলাকায় এক মহিলার জানাযা নামায অনুষ্ঠিত হয়। ভুলে লাশকে ইমামের সামনে উল্টো তথা দক্ষিণমুখী করে মাথা রাখা হয়। লাশের উপর চাদর থাকায় বিষয়টি বুঝা যায়নি। এভাবেই নামায আদায় করা হয়। জানতে চাই, উক্ত জানাযা নামায সহীহ হয়েছে কি?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লাশ উল্টো করে রাখার করণে সুন্নাতের খেলাফ হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে লাশ যেহেতু ইমামের সামনেই ছিল তাই উক্ত জানাযা নামায সহীহ হয়ে গেছে।

উল্লেখ্য যেজানাযা নামায শুরু করার আগে ইমামের কর্তব্য হললাশ সঠিকভাবে সুন্নত তরীকায় রাখা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হয়ে নেওয়া।

-আলমাবসূত, সারাখসী ২/৬৮; আলমুহীতুল বুরহানী৩/১০২; শরহুল মুনয়া পৃ. ৫৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/২০৯

Sharable Link

সালমান - বাসাবো, ঢাকা

৪০৪৩. Question

আমার এক আত্মীয়ের একটি মৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তারা ঐ বাচ্চাকে গোসল দিয়ে কাপড়ে পেঁচিয়ে দাফন করে দিয়েছে। ঐ বাচ্চার জানাযার নামায পড়েনি। তাদের কাজটি কি সঠিক হয়েছে? না তাদের ঐ বাচ্চার জানাযার নামায পড়া উচিত ছিল?

 

Answer

হাঁশিশুটির জানাযা না পড়ে তাকে দাফন করে দেওয়া ঠিকই হয়েছে। কেননামৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে নিয়ম হলতার নাম রাখা ও গোসল দেওয়া। তারপর একটি কাপড়ে পেঁচিয়ে দাফন করে দেওয়া। মৃত ভূমিষ্ট শিশুর জানাযা পড়ার নিয়ম নেই।

জাবের রা. বলেন,

إذَا اسْتَهَلَّ صُلِّيَ عَلَيْهِ وَوُرِّثَ فَإِذَا لَمْ يَسْتَهِلَّ لَمْ يُصَلَّ عَلَيْهِ ، وَلَمْ يُوَرَّثْ.

শিশু যদি (ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর) কাঁদে (অর্থাৎ জীবিত জন্ম হয়এরপর সে মারা যায়) তবে তার জানাযা পড়া হবে ... আর যদি সে না কাঁদে (অর্থাৎ মৃত জন্ম হয়) তবে তার জানাযা পড়া হবে না... (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস ১১৭২৪)

-বাদায়েউস সনায়ে ২/২৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৮৮

Sharable Link

আইনুল হক - নেত্রকোণা

৪০৪৪. Question

আমার পাঁচ বছরের একটা ছোট্ট ছেলে ছিল। তার নাম ছিল সালমান। সে পরিবারের সবাইকে মাতিয়ে রাখত। প্রায় সারাদিন সে আমার সাথেই থাকত। আমি তাকে অনেক বেশি মুহাব্বত করতাম। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা হঠাৎ করে সে অসুস্থ হয়ে মারা যায়। দাফন কাফন হয়েছে আজ চার পাঁচ দিন। কিন্তু প্রায় প্রতিদিনই আমি ও তার আম্মু স্বপ্নে দেখি, সে বলছে, আব্বু আমি জীবিত। তুমি আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও। এখন আমরা সন্দেহে পড়ে গেছি, আসলে সে জীবিত না মৃত। এখন হুযুরের নিকট জানতে চাচ্ছি, আমি কি তার কবর খনন করে দেখে নিতে পারব আসলে জীবিত না মৃত? শরীয়ত কি আমাকে এটার অনুমতি দেয়?

 

Answer

শুধু স্বপ্নের উপর ভিত্তি করে কবরস্থ সন্তানের মৃত্যুর ব্যাপারে সন্দেহ করা ঠিক নয়। এবং এজন্য কবর খোলাও জায়েয হবে না। অধিক মুহাব্বতের কারণেই হয়ত আপনারা ঐ স্বপ্ন বারবার দেখছেন। তাই এর প্রতি ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না। আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে এই মুছিবতের উত্তম প্রতিদান দিন এবং শিশু সন্তান মারা গেলে মা-বাবা ধৈর্য ধারণ করার পর তাদেরকে যে জান্নাতে বড় মর্যাদা দেয়ার কথা হাদীসে রয়েছে তা আপনাদের নসীব করুন।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৯৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫১

Sharable Link

ইহসানুল কারীম - রাজস্থলী, চট্টগ্রাম

৪০৪৫ . Question

একদিন জানাযার পর দাদাকে দেখলাম, মাইয়েতের কোনো আত্মীয়ের ফরমায়েশে ছোট্ট একটি কাপড়ের টুকরোতে মাটির টুকরা দিয়ে

 لا إله إلا الله محمد رسول الله، أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمدا عبده ورسوله  লিখে মায়্যিতের কাফনে এঁটে দিলেন।

হুযুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, এটা কতটুকু শরীয়ত সম্মত? আদৌ এর কোনো ভিত্তি আছে কি না?

 

Answer

মৃতের সাথে বা কাফনে কালিমা শাহাদাতকোনো আয়াত বা যিকির লেখা নাজায়েয। এটি গলদ রুসম ও বিদআত। শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই। এছাড়া লাশ গলে গেলে যিকর ও কালিমার অংশে ঐ নাপাকী লেগে যেতে পারে। তাই এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

-রদ্দুল মুহতার ২/২৪৬; আলফাতাওয়াল ফিকহিয়্যা আলকুবরা ২/১২

Sharable Link

মুআয - ভাদুঘর, বি. বাড়িয়া

৪০৪৬ . Question

কিছুদিন আগে আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সে ঢাকায় থাকত। মৃত্যুর পরে তার জানাযা ও দাফনের জন্য তাকে গ্রামে নিয়ে আসা হয়। সবাই মনে করেছিল, ঢাকা থেকে মৃত ব্যক্তিকে গোসল করিয়ে আনা হয়েছে। তাই তারা তার গোসল না করিয়ে জানাযা পড়ে ফেলে। হঠাৎ তার এক আত্মীয় বলল, তাকে তো ঢাকা  থেকে গোসল করিয়ে আনা হয়নি। তখন এ ব্যাপারে ইমাম সাহেবের কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, এখন মাইয়েতকে গোসল করিয়ে পুনরায় তার জানাযা পড়তে হবে। পরে তাই করা হয়েছে। এখন জানতে চাই, ইমাম সাহেবের কথা কি ঠিক? আমাদের জন্য কি ঐ ব্যক্তির জানাযা পুনরায় পড়া আবশ্যক ছিল? এমনটি হলে কী করণীয়?

 

Answer

হাঁইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানো ছাড়া তার জানাযা পড়া সহীহ নয়। তাই গোসল দেওয়ার পূর্বে কোনো মাইয়েতের জানাযা পড়া হলে তা আদায় হবে না। সে ক্ষেত্রে গোসল দেওয়ার পর পুনরায় তার জানাযা পড়তে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/৩৬০; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৭৩, আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৯৭; বাদায়েউস সনায়ে ২/৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮৭

Sharable Link

মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ - সাইনবোর্ড, ঢাকা

৪০৪৭. Question

আমি একটি প্রতিষ্ঠানের বাবুর্চি। সেখানে প্রতি বেলায় অনেক মানুষের খাবার রান্না হয়। রমযান মাসে আমি একটি সমস্যায় পড়ি। খাবার একেবারে না চেখে রান্না করলে অনেক সময় লবণ কিছুটা কম-বেশি হয়ে যায়। ফলে ইফতার ও খাবারের সময় সবার কষ্ট হয়। তাই রোযা অবস্থায় আমি কি শুধু জিহ্বা দিয়ে তরকারির স্বাদ চেখে নিতে পারব?

 

Answer

রোযা অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া জিহ্বা দ্বারা স্বাদ না দেখা উচিত। একান্ত অন্যদের কষ্ট হলে ইফতারির লবণ দেখতে পারবেন। তবে লবণ দেখে সাথে সাথে থুথু ফেলে দিবেন। প্রয়োজনে কুলিও করে নিবেন। খেয়াল রাখতে হবেখাবারের অংশ যেন গলাতে চলে না যায়। আর তরকারীর লবণ ইফতারীর পরে দেখলেও চলে। কেননা তরকারী সাধারণত ইফতারীর পরই খাওয়া হয়। 

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৯৩৮৫, ৯৩৮৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৬; তাবয়ীনুল হাকাইক ২/১৮৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৯

Sharable Link

আল আমীন - খুলনা

৪০৪৮ . Question

গত রোযায় আমি একদিন শিঙ্গা লাগিয়েছিলাম। তবে এরপরে সারাদিন আর কিছু খাইনি। কিন্তু এখন সন্দেহ হচ্ছে যে, আমার ঐ রোযা আদায় হয়েছে কি না। তাই হুযুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, আমার ঐ রোযা কি আদায় হয়েছে?

 

Answer

হাঁ আপনার ঐ রোযা আদায় হয়েছে। শিঙ্গা লাগালে রোযা ভাঙ্গে না। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: احْتَجَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ مُحْرِمٌ صَائِمٌ.

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরামের হালতে রোযা অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন। 

-জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৭৫) -আলমাবসুত, সারাখসী ৩/৫৭; বাদায়েউস সনায়ে ২/২৭০; ফাতহুল কাদীর ২/২৫৬; রদ্দুল মুহতার ২/৪২০

Sharable Link

আম্মার - উত্তরা, ঢাকা

৪০৪৯. Question

আমি আজ এশার নামাযে প্রথম রাকাতে ভুলে ৩ বার সেজদা করেছি। পরে সাহু সেজদা দিয়ে নামায শেষ করেছি। আমার ঐ নামায কি আদায় হয়েছে?

 

 

Answer

এক রাকাতে ভুলে ৩ বার সেজদা করার কারণে আপনার উপর সাহু সেজদা করা আবশ্যক হয়েছিল। আপনি যেহেতু তা আদায় করেছেনতাই উক্ত নামায আদায় হয়ে গেছে। 

-মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, হাদীস ৩৫২৪; কিতাবুল আছল ১/২১১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩০৮; বাদায়েউস সনায়ে ১/৪০১

Sharable Link

সাইফুল ইসলাম - মালিবাগ, ঢাকা

৪০৫০. Question

আমি একজন হেফজখানার শিক্ষক। আমার হেফজখানায় কয়েকজন নাবালেগ বাচ্চাও পড়াশোনা করে। আমি জানতে চাই, নাবালেগ ছেলে যদি সেজদার আয়াত তেলাওয়াত করে, তাহলে কি আমার উপর সেজদা ওয়াজিব হবে?

 

 

Answer

বুঝমান নাবালেগ শিশু থেকে সেজদার আয়াত শুনলে সেজদা ওয়াজিব হয়। হেফজখানার বাচ্চারা সাধারণত বুঝমানই হয়ে থাকে। সুতরাং তাদের মুখে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে হবে। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪; বাদায়েউস সনায়ে ১/৪৪০; ফাতহুল কাদীর ১/৪৬৮; রদ্দুল মুহতার ২/১০৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশরাফুল হক - হবিগঞ্জ, সিলেট

৪০৫১. Question

আমার অধীনে প্রায় ৪০ জন কর্মচারী কাজ করে। আমি রমযান মাসে যাকাত আদায় করি। যাকাতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার সময় আমার কাছে বেতন বাবদ তাদের বেশ টাকা পাওনা থাকে। আমি উক্ত টাকা ঋণ হিসেবে বিয়োগ করে অবশিষ্ট সম্পদের যাকাত আদায় করি। মুফতী সাহেবের কাছে জানার বিষয় হল, আমার এভাবে যাকাত আদায় করা ঠিক আছে কি?

 

Answer

হাঁকর্মচারীদের বেতন বাবদ পাওনা অর্থ আপনার ঋণ। অতএব তা বাদ দিয়ে যাকাত আদায় করা ঠিক আছে।

প্রকাশ থাকে যেকর্মচারীদের বেতন যথা সময়ে আদায় করে দেওয়া কর্তব্য। ইসলামে এর গুরুত্ব অনেক। যথাসময়ে তাদের প্রাপ্য না দেওয়া এবং বিলম্ব করা গুনাহ।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪০; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৪/৮৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬০

Sharable Link

সাইফুল ইসলাম - মালিবাগ, ঢাকা

৪০৫২. Question

আমার ভাই ছোটবেলা থেকেই পাগল। সম্প্রতি আমার বাবা মারা গিয়েছেন। সম্পত্তি বণ্টনের সময় আমরা ঐ ভাইকে মীরাছ দিয়েছি। সে প্রায় ১ লক্ষ টাকা পেয়েছে। এখন জানতে চাই, তার উপর কি যাকাত ফরয হবে?

 

 

Answer

নাআপনার উক্ত ভাইয়ের উপর যাকাত ফরয নয়। তার সম্পদের যাকাত দিতে হবে না। কেননা পাগল ব্যক্তির উপর যাকাত ফরজ হয় না। 

-আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৬২; বাদায়েউস সনায়ে ২/৮২; ফাতহুল কাদীর ২/১১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২

Sharable Link

শরাফাতুল্লাহ - চান্দিনা, কুমিল্লা

৪০৫৩. Question

ঢাকার ওয়াশপুর এলাকায় আমার একটি জমির উপর ৩ তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি হয় একটি হাউজিং কোম্পানির সাথে। বিনিময় ছিল ৪৮ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে ৩৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। এদিকে ভবন নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। অবশিষ্ট ১৫ লক্ষ টাকা ধীরে ধীরে কিস্তিতে কয়েক মাসে পরিশোধ করব। এদিকে এখনই আমার যাকাতবর্ষ পূর্ণ হয়ে গেছে। তাই জানতে চাই, এখন যাকাতের হিসাবের সময় এই ১৫ লক্ষ টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বিয়োগ হবে কি না?

 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার যেহেতু যাকাতবর্ষ পূর্ণ হয়ে গেছে এবং বাকি পনের লক্ষ টাকা পরবর্তীতে কিস্তিতে ধীরে ধীরে আদায় করতে হবে। তাই এ টাকা গত বছরের যাকাতের হিসাব থেকে বাদ যাবে না। অতএব এই পনের লক্ষ টাকারও যাকাত দিতে হবে। 

-জামিউর রুমূয ১/৩০০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/৩৯১; রদ্দুল মুহতার ২/২৬১

Sharable Link

আরিফ বিল্লাহ মারুফ - পেকুয়া, কক্সবাজার

৪০৫৪. Question

চাচার কাছে শুনেছি দাদীর অনেক জায়গা-জমি ছিল। চাচার বর্ণনা অনুযায়ী বুঝলাম, দাদীর এ পরিমাণ প্রয়োজনাতিরিক্ত জমি ছিল যার একাংশও বিক্রি করে তিনি হজ্ব করতে পারতেন। কিন্তু সকল সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তিনি হজ্ব করেননি। চাচাকে এ ব্যাপারে বুঝালে তিনি দাদীর পক্ষ থেকে হজ্ব করতে রাজি হলেন। পরে চাচা বললেন, আম্মা আমাকে তো এ ব্যাপারে কিছু বলে যায়নি। এখন কীভাবে কী করি। আর সামনে আমার ব্যস্ততা বাড়তে পারে তখন অন্য কাউকে দিয়ে মায়ের পক্ষ থেকে হজ্ব করালে হবে কি না? এ দুটি প্রশ্নের উত্তর আমার জানা ছিল না। তাই হুযুরের কাছে এর উত্তর জানতে চাচ্ছি।

 

 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার দাদীর উপর হজ্ব ফরয ছিল। তাই তিনি যদিও অসিয়্যত করে যাননিকিন্তু ওয়ারিশদের উচিত হবে তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করানো। বদলী হজ্ব ওয়ারিশকেই করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। তাই আপনার চাচা যদি নিজে দাদীর পক্ষ থেকে হজ্ব করেনকিংবা অন্য কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব করানউভয় অবস্থায় তা আপনার দাদীর পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে এবং এর দ্বারা আপনার দাদী উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।

হাদীস শরীফে এসেছেহযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক লোক এসে বললআমার বোন হজ্বের মান্নত করেছিল। কিন্তু হজ্ব করার আগে সে মারা গেছে। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনতার উপর কোনো ঋণ থাকলে তা তুমি আদায় করতে নালোকটি বললহাঁরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনকাজেই আল্লাহর হক আদায় করে দাও। কেননা তা আদায়ের বেশি উপযোগী। (সহীহ বুখারীহাদীস ৬৬৯৯)

-বাদায়েউস সনায়ে ২/৪৬৯; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৮; মানাসিক, মুল্লা আলী আলকারী পৃ.৪৩৬; রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৯

Sharable Link

হাফিজুল ইসলাম - চাকলা, লালমনিরহাট

৪০৫৫. Question

মুহতারাম, আমার স্বামী ইন্তেকালের পরে ওয়ারিশ সূত্রে যে সম্পদ পেয়েছি তাতে একজনের হজ্বের যাবতীয় খরচ বহন করা যায়। আর এ সম্পদ আমার প্রয়োজনীয় বিষয় থেকে অতিরিক্ত। কিন্তু আমার মাহরাম পুরুষদের কারো হজ্ব করার সামর্থ্য নাই। এমতাবস্থায় আমার জন্য করণীয় কী তা জানালে উপকৃত হব।

 

 

Answer

আপনার নিকট যেহেতু নিজের হজ্বে যাওয়ার মত সামর্থ্য আছে তাই আপনার উপর হজ্ব ফরয। কিন্তু মাহরাম পুরুষ ছাড়া যেহেতু নারীর হজ্বে যাওয়া জায়েয নয় তাই আপনাকে মাহরাম পুরুষের অপেক্ষা করতে হবে। মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা হলে তার সাথে গিয়ে হজ্ব করবেন। অবশেষে মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা না হলে নিজে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যাওয়ার পর অন্যকে দিয়ে বদলী হজ্ব করাতে পারবেন। এবং এখন থেকেই অসিয়ত করে রাখবেন। যেন হঠাৎ মৃত্যু হয়ে গেলে ওয়ারিশগণ আপনার পক্ষ থেকে কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব করিয়ে নেয়। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; ফতহুল কাদীর ২/৩২৬,৩৩২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৯; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৭

Sharable Link

আবরারুল হক - মহেশখালী, চট্টগ্রাম

৪০৫৬ . Question

সাধারণত আমি কাঁথা/কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাই। হজ্বের সময় ১০ তারিখ (দিবাগত) রাতে আমি হোটেলে ঘুমাচ্ছিলাম। প্রথম দিকে শুধু গায়ের উপর কম্বল ছিল। চেহারা ও মাথা খোলা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আমার অজান্তেই কম্বল মুড়ি দিই। রাত তিনটার সময় ঘুম থেকে উঠে আমি নিজেকে এভাবেই পেলাম। জানতে চাচ্ছি, আমার অনিচ্ছাকৃত এ ভুলের কারণে কি দম দিতে হবে? নাকি এক্ষেত্রে অন্য কোনো বিধান রয়েছে?

 

 

Answer

ইহরামের নিষিদ্ধ কাজসমূহ অনিচ্ছাকৃত বা ভুলে করলেও জরিমানা দিতে হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু পূর্ণ বারো ঘণ্টা চেহারা ঢাকা ছিল নাবরং তার চেয়ে কম ছিল তাই আপনাকে  ঐ দেশের এক সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ টাকা সদকা করে দিতে হবে। ঐ অর্থ হারামের এলাকায় দেওয়া জরুরি নয়তবে উত্তম। নিজ এলাকার গরীবদেরকেও দেওয়া যাবে। 

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩০; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৮; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৫৪

Sharable Link

তামির জান্নাত - সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম

৪০৫৭. Question

চুল আঁচড়ানোর সময় আমি খুব উকুন মারি। হজ্বের সময় ইহরাম অবস্থায় উকুন মারতে পারে না- এ মাসআলা আমার জানা ছিল না। হজ্বের পর এক বান্ধবীর সাথে দেখা করতে গেলে এক প্রসঙ্গে জানতে পারলাম, ইহরাম অবস্থায় উকুন মারা যায় না। কিন্তু আমি হজ্বের পাঁচ দিনেও তো অনেক উকুন মেরেছি। সে বলেছিল, আমার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু আমি তো হজ্ব শেষ করে দেশে ফিরে এসেছি। এখন এ দম কীভাবে আদায় করব। দম কি মক্কা শরীফ থাকতেই দিতে হয় নাকি পরে দেশে এসে আদায় করা যায়।

 

Answer

ইহরাম অবস্থায় তিনটির অধিক উকুন মারলে জরিমানা হিসাবে এক সদকা ফিতর সমপরিমাণ মূল্য দান করা ওয়াজিব। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুসারে (তিনটির অধিক) উকুন মারার কারণে আপনাকে এক সদকাতুল ফিতরের সমপরিমাণ টাকা সদকা করে দিতে হবে। তবে আপনার উপর দম ওয়াজিব হয়নি। আর সদকা হেরেমের এলাকার গরীবকে দেওয়া উত্তম। তবে আপনি যেহেতু দেশে ফিরে এসছেন তাই দেশের কোনো গরীব-মিসকীনকে দিলেও আদায় হয়ে যাবে। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪২০; ফাতহুল কাদীর ৩/১৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৪৩,৫৫৮

Sharable Link

হাফেজ আবদুল ওয়াদূদ - সদর, মোমেনশাহী

৪০৫৮ . Question

এ বছর হজ্বের সময় ৯ যিলহজ্ব মাগরিবের পর আমরা আরাফা থেকে হেঁটে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। এক জায়গায় এসে আমীর সাহেব বললেন, রাতে আমরা এখানেই অবস্থান করব। আমরা মনে করেছিলাম মুযদালিফার সীমানায় চলে এসেছি। কিন্তু হজ্বের পরে জানতে পারলাম যে, রাতে আমরা যে জায়গায় অবস্থান করেছি তা মুযদালিফার বাইরে ছিল। আমীর সাহেবকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, রাতে মুযদালিফায় অবস্থান করা জরুরি নয়। সকালে ফজরের পর কিছু সময়ের জন্য মুযদালিফায় অবস্থান করাই যথেষ্ট।

মুফতী সাহেবের কাছে প্রশ্ন হল, আমীর সাহেবের এ কথা কি ঠিক? রাতে মুযদালিফার বাইরে অবস্থানের কারণে আমাদের উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হবে কি ?

এছাড়া সকালেও আমরা মুযদালিফায় অবস্থান করিনি। বরং মুযদালিফার উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে তা অতিক্রম করে গিয়েছি। এভাবে রাতে মুযদালিফার বাইরে অবস্থান করে সকালে হাঁটতে হাঁটতে মুযদালিফার সীমানা অতিক্রম করার দ্বারা মুযদালিফায় অবস্থানের ওয়াজিব আদায় হয়েছে কি? আর এ কারণে আমাদের উপর কোনো জরিমানা আসবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

 

Answer

১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এক মুহূর্তের জন্য মুযদালিফায় অবস্থান করলেও উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়। ওয়াজিব আদায়ের জন্য সেখানে দাঁড়ানো বা বসা জরুরি নয়বরং পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে মুযদালিফা অতিক্রম করলেও এ ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।

সুতরাং আপনারা যদি সুবহে সাদিকের পর সূর্যোদয়ের পূর্বেই মুযদাফিলার সীমানায় প্রবেশ করে থাকেন তাহলে আপনাদের উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়ে গেছে। আর যদি মুযদালিফার সীমানায় সূর্যোদয়ের পর প্রবেশ করে থাকেন তাহলে আপনাদের উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়নি। এক্ষেত্রে মুযদালিফায় প্রবেশ করা সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও যদি আপনারা সেখানে যথাসময়ে প্রবেশ না করে থাকেন তাহলে এ কারণে আপনাদের উপর দম ওয়াজিব হবে।

উল্লেখ্য যেমুযদালিফায় ৯ তারিখ রাতে অবস্থান করা সুন্নাত এবং হজ্বের ফযীলতপূর্ণ আমল। তাই মুযদালিফায় পৌঁছা নিশ্চিত হয়েই অবস্থান করা উচিত। বিশেষ ওজর ছাড়া সেখানে রাতে অবস্থান ত্যাগ না করা উচিত।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৬৩, ১৬২; বাদায়েউস সনায়ে ২/৩২১, ৩৫৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪১-২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩০

Sharable Link

আকরাম মোল্লা - ঈশ্বরদী

৪০৫৯. Question

আমার এক বন্ধু মাঝেমধ্যে রসিকতার ছলে স্ত্রীকে আপু বলে ডাকে। আমিও দু একদিন আমার স্ত্রীকে আপু বলে ডেকেছি। আমার প্রশ্ন হল, স্ত্রীকে আপু বলে ডাকলে বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হয় কি?

 

Answer

স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকা মাকরূহ। হাদীস শরীফে এসেছে,

عَنْ أَبِي تَمِيمَةَ الْهُجَيْمِيِّ، أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِامْرَأَتِهِ: يَا أُخَيَّةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أُخْتُكَ هِيَ؟ فَكَرِهَ ذَلِكَ وَنَهَى عَنْهُ.

এক লোক তার স্ত্রীকে বোন বলে ডাকলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনতে পেয়ে তা অপছন্দ করেন এবং তাকে এভাবে ডাকতে নিষেধ করেছেন। -সুনানে আবু দাউদহাদীস ২২০৪

তবে কেউ এমন বলে ফেললে এর কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।

-ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০

Sharable Link

মোহাম্মাদ জাকির হুসাইন - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৪০৬০. Question

আমাদের গ্রামে মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় কবর দেওয়া হয়েছে। এবং কবর দেওয়া বাবদ মৃতের অভিভাবকেরা আল্লাহর ওয়াস্তে মসজিদে ২০০/৩০০/৫০০ টাকা করে দান করেছেন। এখন মসজিদ সম্প্রসারণের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। কিন্তু মৃতের অভিভাবকেরা কবরের উপর মসজিদ করতে বাধা দিচ্ছে। এখন মুফতী সাহেবের নিকট প্রশ্ন হল, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো।

 

 

Answer

মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় কবর দেওয়া ঠিক হয়নি। মসজিদের জায়গার মালিক মসজিদ নিজে। এর ব্যবহারের অধিকার শুধুমাত্র মসজিদেরই। এখন যদি মসজিদ সম্প্রসারণ করতে গিয়ে কবর দেয়া জায়গার প্রয়োজন হয় তাহলে কবরের স্থান সমান করে তার উপর মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। এতে কারো বাধা দেয়া জায়েয হবে না। সেক্ষেত্রে কোনো ওয়ারিশ যদি তাদের কবরকে নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিতে চায় তবে তা পারবে। আর মৃত লোকদের অভিভাবকগণ যদি প্রশ্নোক্ত টাকা কবরের জায়গার বিনিময় হিসেবে দিয়ে থাকে তবে মসজিদ কর্তৃপক্ষ সে টাকা তাদেরকে ফেরত দিয়ে দিবে। আর যদি অনুদান হিসেবে দিয়ে থাকে তবে তা ফেরত নেওয়া তাদের জন্য বৈধ হবে না। 

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩৫০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/১০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৯৯

Sharable Link

নুরুল ইসলাম - সিলেট

৪০৬১. Question

আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি মাদরাসার জন্য একটি জায়গা ওয়াকফ করেছেন। ঐ জায়গায় অনেকগুলো কাঠগাছ আছে। ওয়াকফের সময় ঐ গাছগুলো ওয়াকফ থেকে বাদ দেওয়ার কথা কিছু বলেনি। ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর এখন তার ওয়ারিসরা ঐ জায়গা থেকে বিভিন্ন সময় গাছ কেটে নিয়ে যায়। আর বলে যে, গাছের মালিক আমরা। তাদের জন্য কি এটা জায়েয হচ্ছে?

 

Answer

কোনো জায়গা ওয়াক্ফ করার সময় ঐ জায়গার গাছগুলো ওয়াকফ থেকে বাদ দেওয়া না হলে জায়গার সাথে গাছও ওয়াক্ফ হয়ে যায়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ওয়াকফের সময় গাছগুলো বাদ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়নি তাই ঐ গাছগুলো ওয়াকফের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। গাছগুলোর মালিক এখন মাদরাসা। ওয়ারিসদের প্রশ্নোক্ত দাবি ঠিক নয়। তাদের জন্য মাদরাসার গাছগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা জায়েয হবে না। 

-আলইসআফ পৃ. ১৯; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩০৮

Sharable Link

রবীউল ইসলাম - বগুড়া

৪০৬২. Question

আমাদের দুই ভাইয়ের মীরাস সূত্রে পাওয়া একটি মালবাহী কার্গো আছে। কার্গোটি আমরা ভাড়ায় খাটাই। কার্গোটির যাবতীয় কাজ-কারবার, দেখাশোনা, গ্রাহকদের সাথে কথাবার্তা সবকিছু আমি করি। আমাদের চুক্তি হল, যা আয় হবে তার ৪০% ভাইয়ের, বাকিটা আমার, আমাদের এই বণ্টন কি সহীহ?

 

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লভ্যাংশ বণ্টনের চুক্তি সহীহ নয়। এক্ষেত্রে দুই ভাইয়ের মালিকানা যেহেতু সমান তাই গাড়ির যাবতীয় আয় আপনাদের মাঝে সমান হারে বণ্টন হবে। আর এমন একটি গাড়ির যাবতীয় কাজ করাবার ও দেখাশোনার ন্যায্য পারিশ্রমিক যা হয় তার অর্ধেক আপনি আপনার ভাই থেকে পাওয়ার হকদার। এক্ষেত্রে আপনার পারিশ্রমিক শতকরা হারে নেওয়া সহীহ নয়। বরং পারিশ্রমিকটা অংকে নির্ধারণ করে নেয়া আবশ্যক।

-রদ্দুল মুহতার ৪/৩২৬; দুরারুল হুক্কাম ৩/২৭; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ১০৭৩

Sharable Link

মীযানুর রহমান - খাগড়াছড়ি

৪০৬৩ . Question

আমি একটি সরকারী চাকুরিতে কর্মরত আছি। আমার বেতনের নির্দিষ্ট একটা অংক প্রতি মাসে সরকার প্রভিডেন্ট ফান্ডে বাধ্যতামুলক কেটে রাখে। যার উপর চাকুরি শেষে অধিক হারে সুদ দেওয়া হবে। এখন আমার প্রশ্ন হল-

১. মূল বেতনের অতিরিক্তটা নেওয়া কি আমার জন্য বৈধ হবে?

২. এই টাকার উপর কি প্রতি বছর আমাকে যাকাত দিতে হবে?

 

 

Answer

১. সরকারী প্রতিষ্ঠানের বাধ্যতামূলক জিপি ফান্ডে যতটুকু জমা করা আবশ্যক শুধু ততটুকু রাখা হলে জমাকৃত অংশ এবং অতিরিক্ত অংশ পুরোটাই আপনার জন্য বৈধ। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত অংশকে সরকারীভাবে সুদ বলা হলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তা সুদের অন্তর্র্ভুক্ত নয়।

২. ঐ টাকা হস্তগত হওয়ার আগ পর্যন্ত তার উপর যাকাতও ফরয নয়। হস্তগত হওয়ার পর থেকে তা যাকাতযোগ্য হিসেবে গণ্য হবে।

প্রকাশ থাকে যেপ্রভিডেন্ট ফান্ডে যতটুকু বাধ্যতামূলক কেটে রাখা হয় তার চে বেশি কাটানো নাজায়েয। অতিরিক্ত কাটালে শুধু কর্তিত টাকা অর্থাৎ জমাকৃত টাকা হালাল হবে। স্বেচ্ছায় জমার উপর অতিরিক্ত যা দেওয়া হবে তা সুদ ও হারাম হবে। আর কেউ যদি স্বেচ্ছায় জিপি ফান্ডে জমা করে তাহলে মূল জমার উপর তাকে বছরান্তে যাকাত দিতে হবে। 

-মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদীস ২৭৯; আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/৪৬৭; ইমদাদুল আহকাম ১/৪৭৯

Sharable Link

সাঈদ আহমাদ - উত্তরা, ঢাকা

৪০৬৪ . Question

দুই বছর পূর্বে আমি আমার বড় ভাই থেকে আঠারো লক্ষ টাকা নিয়ে একটি কাপড়ের দোকান দিয়েছি। কথা ছিল, তার মূলধন দিয়ে আমি ব্যবসা করব। আর লভ্যাংশ আমরা সমানভাবে ভাগ করে নিব। কিন্তু দুই বছরে আমি তাকে কোনো লাভ দিতে পারিনি। কারণ, ব্যবসাটা যেহেতু মাত্র শুরু তাই ডেকোরেশন ও অন্যান্য খাতে প্রচুর খরচ হয়ে গেছে। আর মানুষের মাঝে তেমন পরিচিতিও হয়ে উঠেনি। এখন আমার ভাই এই ব্যবসা বাদ দিয়ে তার মূলধন ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছেন। আমি চাচ্ছি, ব্যবসাটা ধরে রাখতে। কেননা, আমার প্রবল ধারণা, ব্যবসাটা থেকে ভবিষ্যতে লাভ আসবে। আর এখন যদি ব্যবসাটা বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে আমার এত দিনের শ্রম সম্পূর্ণ বৃথা যাবে। তাই জানার বিষয় হল, আমার ভাই যদি স্বেচ্ছায় ব্যবসাটা রাখতে না চায় তাহলে তাকে তা অব্যাহত রাখতে বাধ্য করতে পারব কি না?

 

 

Answer

আপনার ভাইয়ের সাথে ব্যবসার উক্ত চুক্তিটি মোদারাবা চুক্তি। আর মুদারাবার মধ্যে পুঁজি বিনিয়োগকারী চাইলে তার চুক্তি শেষ করে দেয়ার অধিকার রাখে। কারণব্যবসা চলমান থাকলে যেমনিভাবে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তেমনিভাবে পুঁজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। সুতরাং আপনার ভাই চাইলে তার পুঁজি ফেরত নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে চুক্তি রাখার জন্য তাকে বাধ্য করা জায়েয হবে না। বরং সে পুঁজি চাইলে দিয়ে দিতে হবে। অবশ্য সেক্ষেত্রে বর্তমানে দোকানে বিক্রিযোগ্য সে সকল মালামাল রয়েছে সেগুলো বিক্রি হওয়া ও চূড়ান্ত হিসাব হওয়া পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে। 

-বাদায়েউস সনায়ে ৫/১৫২; আলমাবসূত, সারাখসী ২২/১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১৮৮; রদ্দুল মুহতার ৫/৬৫৫

Sharable Link

আলী আছগর - ঝালকাঠি

৪০৬৫. Question

আমার বন্ধুর বারো হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল তার কাছে থেকে কয়েকদিন ব্যবহার করার জন্য নিয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম। মোবাইলটি পাঞ্জাবীর সাইড পকেটে ছিল। পকেটে কোনো চেইন ও ছিল না। বাসে খুব ভীড় ছিল। বাস থেকে নেমে দেখি, মোবাইল নেই। আমার জানার বিষয় হল, মোবাইলটির ক্ষতি পূরণ দেওয়া কি আমার জন্য জরুরি?

 

Answer

আপনার বন্ধু যদি মোবাইলটির জরিমানা দাবি করে তবে দিয়ে দেওয়াই উচিত। কেননাআমাদের দেশের বর্তমান অবস্থায় রাস্তা-ঘাটে ও জনসমাগমে চলাবস্থায় মোবাইল ইত্যাদি পাঞ্জাবীর সাইড পকেটে রাখা মোটেও নিরাপদ নয়।

সুতরাং পাঞ্জাবীর পাশের পকেট থেকে যেহেতু তা চুরি হয়েছে তাই আপনার পক্ষ থেকে এর হেফাজতের ব্যাপারে কিছু ত্রুটি হয়েছে এটাই স্বাভাবিক। তাই আপনাকে এর জরিমানা দিতে হবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১১/১৪৮; রদ্দুল মুহতার ৫/৬৭৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ মুফীজুর রহমান - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৪০৬৬ . Question

আমি একজন সরকারী চাকুরীজীবী, আমার প্রশ্ন হল

১. একজন সরকারী কর্মচারী এখন চাইলে মূল বেতনের কমপক্ষে ৫% বাধ্যতামূলক এবং সর্বোচ্চ ২৫% টাকা ঐচ্ছিক কর্তন করাতে পারেন। জিপি ফান্ডের সরকার প্রদত্ব অংশ বা সুদ নেওয়া জায়েয কি না?

২. আমি জিপি ফাণ্ডের সরকার প্রদত্ত অংশ বা সুদ নেব না। কিন্তু এই টাকা দিয়ে সরকারকে ট্যাক্স দেওয়া ঠিক হবে কি না। অথবা এই টাকা দিয়ে নিতান্ত অপারগতার কারণে অন্য কোনো সরকারী কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে পারব কি না?

 

 

Answer

সরকারী প্রতিষ্ঠানে জিপি ফান্ডে বেতনের যতটুকু অংশ বাধ্যতামূলক কেটে রাখা হয় তার সাথে সরকার প্রদত্ত অতিরিক্ত অংশ কর্মচারীর জন্য ব্যবহার করা জায়েয। সরকার এটাকে সুদ বললেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তা রিবা তথা সুদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে বাধ্যতামূলক অংশের অতিরিক্ত জিপি ফান্ডে কর্তন করানো জায়েয নেই। যদি কেউ অতিরিক্ত কর্তন করে তাহলে স্বেচ্ছায় জমার উপর প্রাপ্ত অতিরিক্ত সকল টাকা গরীবদেরকে সদকা করে দিতে হবে।

আর সুদের টাকা দ্বারা ট্যাক্স দেওয়া বা কাউকে ঘুষ দেওয়া জায়েয হবে না। ঐ টাকা গরীবদেরকে সদকাই করে দিতে হবে। কারণ ঐ টাকা দিয়ে টেক্স বা ঘুষ দিলে তা নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার হয়ে যায়।

উল্লেখ্যঘুষ দেওয়া-নেওয়া যে হারাম ও অভিশপ্ত কাজ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

-আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/৪৬৭; ইমদাদুল আহকাম ১/৪৭৯

Sharable Link