নূরুল হাসান - নেত্রকোণা

৩৬৫৫. Question

আমি গোসল করার জন্য একটি বালতিতে পানি রাখি। কিছুক্ষণ পর এসে তাতে দুটি তেলাপোকা মৃত দেখতে পেয়ে পানিটা ফেলে দিই। এখন জানার বিষয় হল, এ কারণে বালতিতে রাখা পানি নাপাক হয়েছিল কি না?

 


Answer

নাপ্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বালতির পানি নাপাক হয়নি। কারণ তেলাপোকার শরীরে যেহেতু প্রবাহিত রক্ত নেই তাই তা পানিতে পড়ে মারা গেলে পানি নাপাক হবে না।

Ñসুনানে দারাকুতনী ১/৩৭; সুনানে বায়হাকী ১/২৫৩; ফাতহুল কাদীর ১/৭৩; ইলাউস সুনান ১/২৬৮; মাবসূত, সারাখসী ১/৫১; আলবাহরুর রায়েক ১/৮৮; রদ্দুল মুহতার ১/১৮৩

Sharable Link

জুবাইর হাসান - ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত

৩৬৫৬. Question

আমাদের দেশে বাজারে প্রচলিত এক প্রকার মেহেদী পাওয়া যায়। যা গোল্ড মেহেদী নামে পরিচিত। উক্ত মেহেদীতে এমন এক প্রকার মেডিসিন দেওয়া হয়, যার দ্বারা মাত্র পাঁচ মিনিটে পুরোপুরি রঙ হয়ে যায় এবং যখন উক্ত মেহেদী উঠানো হয় তখন শরীর থেকে আলাদা আবরণের মতো উঠে আসে। 

এখন প্রশ্ন হল, উক্ত মেহেদী লাগানোর পর অযু করলে অযু হবে কি?

 


Answer

গোল্ড মেহেদী বা টিউব মেহেদী ব্যবহার করা জায়েয। এবং এগুলো ব্যবহার করে প্রলেপ উঠিয়ে ফেলার পর অযু-গোসল সবই সহীহ হবে। কেননা এ মেহেদী লাগানোর পর শরীরে যে রঙ অবশিষ্ট থাকে যার কোনো কোনোটিতে পরবর্তীতে আবরণের মতো উঠে তা আমাদের জানামতে চামড়ায় পানি পৌঁছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক নয়। তাই এগুলো ব্যবহার করতে সমস্যা নেই।

Ñশরহুল মুনয়া ৪৮; রদ্দুল মুহতার ১/১৫৪

Sharable Link

মাহমুদুল হাসান - ভালুকা, ময়মনসিংহ

৩৬৫৭. Question

পেশাব করতে গিয়ে চামড়ার মোজার উপর পেশাব লেগেছে। এখন তা ভিজা হাতে মুছে নিলে পবিত্র হয়ে যাবে কি?

 

 

Answer

নাভিজা হাতে মুছে নিলে তা পবিত্র হবে না। পবিত্র করতে হলে মোজার উপর ভালোভাবে পানি গড়িয়ে দিতে হবে। তবেই তা পবিত্র হবে।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫; রদ্দুল মুহতার ১/৩১০, ৩৩৩; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৫১১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু সাঈদ - মোমেনশাহী

৩৬৫৮. Question

ইস্তেঞ্জায় যাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ পড়া কি সুন্নত? দলিলসহ জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

ইস্তেঞ্জাখানায় প্রবেশের আগে যে দুআটি পড়া হয়কোনো কোনো বর্ণনায় এর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়ার কথাও আছে। তাই দুআটি এভাবে পড়া উত্তমÑ

بسم الله، اللهم إني أعوذ بك من الخبث والخبائث


Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/১০৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩২; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬

Sharable Link

মাসুম বিল্লাহ - মাধবপুর, হবিগঞ্জ

৩৬৫৯. Question

নামাযের নিয়তের বিধান কী? ইমামের পিছনে নামায পড়ার সময় কীভাবে নিয়ত করব আর একাকী নামায পড়ার সময় কীভাবে নিয়ত করব? অনেক সময় এমন হয় যে, পূর্ণ নামায শেষ করি বটে, কিন্তু অন্তরে কোনো কিছুই থাকে না। অর্থাৎ কোন নামায পড়ছি বা ইমামের পিছনে পড়ছি এগুলো কিছুই অন্তরে আসে না। তবে নিজেকে এই বলে প্রবোধ দেই যে, আমি তো নামাযের জন্যই মসজিদে এসেছি। সুতরাং নির্দিষ্টভাবে নিয়তের দরকার কী? আমার এই ধারণা কি সঠিক?

 


Answer

কোন ওয়াক্তের নামায আদায় করা হচ্ছে এই নিয়ত অন্তরে থাকা ফরয। এছাড়া জামাতের নামাযে ইমামের পিছনে নামায পড়ছি এই নিয়তও জরুরি। তবে এই কথাগুলো মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। অন্তরে থাকাই যথেষ্ট। কিন্তু কোন ওয়াক্তের নামায পড়া হচ্ছে তা যদি অন্তরেও না থাকে তাহলে ঐ নামায হবে না।

প্রকাশ থাকে যেনামাযের শুরুতে নিয়ত থাকার পর পরবর্তীতে খেয়াল ছুটে গেলেও নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না।

Ñমাবসূত, সারাখসী ১/১০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮০-৮৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৫

Sharable Link

ইদরীস আলী - বগুড়া

৩৬৬০. Question

আমাদের গ্রামের মসজিদে জুমার দিন মুসল্লিদের জায়গা সংকুলান হয় না। ফলে মসজিদের পূর্ব দিকের খোলা জায়গায় অনেক মুসল্লিকে নামায পড়তে হয়। এদিকে আমাদের মসজিদে নামাযের জন্য এখনও মাইকের ব্যবস্থা করা হয়নি। যার ফলে ঐ খোলা জায়গার পেছন দিকে বসলে জুমার খুতবা শোনা যায় না। আমার জানার বিষয় হল, খুতবা যেহেতু শোনা যাচ্ছে না, তাহলে কি আমি ঐ সময় কোনো যিকর বা তাসবীহ আদায় করতে পারব?

 


Answer

খুতবা অবস্থায় সকল মুসল্লির কর্তব্য হলমনোযোগ সহকারে শোনা এবং চুপ থাকা। খুতবা শোনা না গেলেও চুপ থাকা জরুরি। খুতবা শোনা না গেলেও এ অবস্থায় দুআ-দরূদ পড়া বা যিকর করা যাবে না।

হযরত উসমান রা. বলেনযে খুতবা শুনতে পাচ্ছে নাকিন্তু চুপ করে আছে সে চুপ করে খুতবা শ্রবণকারীর মতোই সওয়াব পাবে। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ৫৩৭২

আবদুল্লাহ ইবনে মুসলিম ইবনে ইয়াসার রাহ. তার পিতার ব্যাপারে বলেনখুতবা চলাকালীন তিনি তাসবীহ পাঠ করতেন না এবং দুআও করতেন না।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৫৩২০; মাবসূত, সারাখসী ২/২৮; ফাতহুল কাদীর ২/৩৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৩৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৭

Sharable Link

সাঈদুল হক - নোয়াখালী

৩৬৬১. Question

আসরের নামায শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি মসজিদের অযুখানায় অযু শেষে মনে মনে এই নিয়ত করি, এখন গিয়ে ইমামের পিছনে আসর নামায পড়ব। মসজিদে প্রবেশ করা মাত্রই ইমাম সাহেব রুকুতে চলে যান। আমি প্রায় দৌড়ে গিয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলে রুকুতে শরিক হই। তবে তাড়াহুড়োর কারণে তাকবীর বলার আগ মুহূর্তে নামাযের নিয়ত করতে পারিনি। জানতে  চাই, আমার ঐ নামায সহীহ হয়েছে কি না?

 


Answer

অন্তরের সংকল্পই হল নিয়ত। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মৌখিক নিয়ত না করলেও আপনি যেহেতু আসরের নামাযের উদ্দেশ্যেই তাকবীরে তাহরীমা বলে রুকুতে গিয়েছেন তাই আপনার ঐ নামায হয়ে গেছে। নামায শুরুর আগে মৌখিক নিয়ত জরুরি নয়। অন্তরের সংকল্পই যথেষ্ট।

প্রকাশ থাকে যেনামাযের জন্য যাওয়ার সময় ধীরস্থির ও গাম্ভীর্যের সাথে যাওয়া সুন্নত। নামায দাঁড়িয়ে গেলেও তাড়াহুড়ো করে বা দৌড়ে যাওয়া ঠিক নয়। হাদীস শরীফে এসেছেনবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনযখন তোমরা ইকামত শোন তখন হেঁটে হেঁটে নামাযের দিকে আসগাম্ভীর্য ও ধীরস্থিরতার সাথে। দৌড়ে এসো না। যতটুকু নামায পাবে তা পড়। আর যা ছুটে যাবে তা পূর্ণ করে নাও।

Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩৬; মাবসূত, সারাখসী ১/১০; আতাতজনীস ১/৪১৪; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ১/৫৭৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮১;

Sharable Link

শুআইব - টঙ্গি, গাজিপুর

৩৬৬২. Question

গত ঈদুল আযহার দিন ঈদের নামাযের আগে এক ব্যক্তিকে মসজিদে নামায পড়তে দেখলাম। নামায শেষে তাকে বললাম, আপনি কি নফল নামায পড়লেন? সে বলল, হাঁ। আমি বললাম, ঈদের দিন ঈদের নামাযের আগে কোনো নফল নামায পড়া যায় না। তখন সে বলল, ঈদের দিন ঈদগাহে নফল পড়া নিষেধ। কিন্তু অন্য যে কোনো জায়গায় নফল পড়া যায়। প্রশ্ন হল, ঐ ব্যক্তির কথা কি সঠিক?

 

 

Answer

নালোকটির বক্তব্য ঠিক নয়। ঈদের নামাযের পূর্বে যে কোনো স্থানে নফল নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেনঈদুল ফিতরের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই রাকাত ঈদের নামায পড়লেন। ঈদের নামাযের আগে এবং পরে কোনো নামায পড়েননি। Ñসহীহ বুখারীহাদীস ৯৬৪

ইবনে সিরীন রাহ. থেকে বর্ণিত আছেআবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ও হুযাইফা রা. ঈদের নামাযের পূর্বে যাদেরকে নফল পড়তে দেখতেনতাদেরকে নামায পড়তে নিষেধ করতেন। Ñআল মুজামুল কাবীর তবারানীহাদীস ৯৫২৪

আর ঈদের নামাযের পর শুধু ঈদগাহে নফল পড়া মাকরূহ। ঈদগাহ ছাড়া অন্যত্র নফল পড়া জায়েয। ইমাম শাবী রাহ. বলেনইবনে মাসউদ রা. ঈদের নামাযের পর বাড়িতে এসে চার রাকাত নামায পড়তেন।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৮৫০২; মুআত্তা, ইমাম মুহাম্মাদ ১/৬১১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১২৯৩; ফাতহুল কাদীর ২/৪২; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৬৯-১০৩

Sharable Link

মাহবুবুল আলম - উত্তরা, ঢাকা

৩৬৬৩. Question

ইমামের পিছনে নামায পড়া অবস্থায় প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ার পর মুক্তাদি যদি ভুলে দরূদ শরীফ পড়ে ফেলে তাহলে তার করণীয় কী? তার উপর কি সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে?

 


Answer

নাসাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। কেননা মুক্তাদির ভুলের কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না।

উল্লেখ্যখুশুখুযু ও একাগ্রতার সাথে নামায আদায়ের ব্যাপারে যতœবান হতে হবে।

Ñমুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৪৫৬০; কিতাবুল আসল ১/১৯৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২০; শরহুল মুনইয়াহ ৪৬৪

Sharable Link

শুআইব - বি.বাড়িয়া

৩৬৬৪ . Question

নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার আগে أعوذ بالله من الشيطان الرجيمبِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ  উভয়টা পড়বে, নাকি শুধু بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ  পড়বে? আর সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা পড়ার আগে কিبِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ   পড়বে?

 


Answer

ইমাম বা একাকী নামায আদায়কারী নামাযের শুধু প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার আগে أعوذ بالله من الشيطان الرجيم পড়বে। অন্য কোনো রাকাতে পড়বে না। আর প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার আগে بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ  পড়া এবং সূরা ফাতিহার পর অন্য কোনো সূরার শুরু থেকে পড়লেও بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ  পড়া মুস্তাহাব। তবে সূরার মাঝ থেকে পড়লেبِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ  না পড়লেও চলবে।

Ñখুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫২; ফাতহুল কাদীর ১/২৫৫; হালবাতুল মুজাল্লী ২/১২৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১১৩; আলবাহরুর রায়েক ১/৩১২; রদ্দুল মুহতার ১/৪৮৯

Sharable Link

মুসাদ্দেক বিল্লাহ - নেত্রকোণা

৩৬৬৫. Question

আমি একবার একাকি যোহরের নামায পড়ছিলাম। প্রথম বৈঠকে ভুলে সূরা ফাতিহা পড়ে ফেলি। এরপর আত্তাহিয়্যাতুর কথা স্মরণ হলে আত্তাহিয়্যাতু পড়ি এবং নামায শেষে সাহু সিজদা করি। এখন প্রশ্ন হল, আমার ঐ ভুলের কারণে সাহু সিজদা দেওয়া ঠিক হয়েছে কি না?

 


Answer

হাঁঐ ভুলের কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছে। তাই সাহু সিজদা দিয়ে ঠিকই করেছেন। 

Ñআলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৩৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২১; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৪৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৭

Sharable Link

লুৎফুর রহমান - সদর, নেত্রকোণা

৩৬৬৬. Question

আমি আসরের নামাযে মাসবুক হই। শেষ বৈঠকে ইমাম সাহেবের সালাম শুনে অবশিষ্ট নামায আদায় করতে দাঁড়িয়ে যাই। পরে ইমাম সাহেবের তাকবীর শুনে বুঝতে পারি ইমাম সাহেব সাহু সিজদা করছেন। তখন আমি সাথে সাথে বসে যাই এবং ইমামের সাথে সাহু সিজদা আদায় করি। এরপর যথানিয়মে অবশিষ্ট নামায পড়ি। এখন জানার বিষয় হল, আমার ঐ নামায কি আদায় হয়েছে?

 


Answer

হাঁআপনার ঐ নামায সহীহ হয়েছে। দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর সাহু সিজদার তাকবীর শুনে সাথে সাথে বসে যাওয়া এবং ইমামের সাথে সাহু সিজদায় শরিক হওয়া ঠিকই হয়েছে।

উল্লেখ্য যেমাসবুকের জন্য ইমাম উভয় সালাম ফেরানোর পর দাঁড়ানো উচিত। যাতে করে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যেইমামের নামায সমাপ্ত হয়েছে এবং তার উপর সাহু সিজদা নেই।

Ñফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১০২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯৭; শরহুল মুনয়া পৃ. ৪৬৬

Sharable Link

এস এম এম শাহাদাত হুসাইন - কল্যাণপুর, ঢাকা

৩৬৬৭. Question

বরিশাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে যদি কেউ মিরপুর-২ থেকে সদরঘাট যায় তাহলে সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ার আগে কি সে নামায কসর করতে পারবে?

 


Answer

নাসদরঘাটে লঞ্চ নোঙর করা অবস্থায় তাতে নামায কসর করা যাবে না। কেননালঞ্চ পাড়ে বা পাড়ের নিকটে ভিড়ানো থাকলে তা ঐ পাড়ের হুকুমে গণ্য হয়। আর সদরঘাট যেহেতু ঢাকা সিটির অন্তর্ভুক্ত তাই ঘাটে লঞ্চ ভিড়ানো থাকা অবস্থায় ঐ ব্যক্তি মুকীমই থাকবে। লঞ্চ সদরঘাট ত্যাগ করার পর থেকে কসরের হুকুম আরম্ভ হবে। 

Ñশরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৩, ২/৫৪০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১; ফাতহুল কাদীর ২/৮; ইমদাদুল আহকাম ১/৭১০

Sharable Link

আহমদ কবীর - কানাইপুর, ফরিদপুর

৩৬৬৮. Question

ক) সফর অবস্থায় সুন্নত নামায পড়ার হুকুম কি?

খ) আমরা জানি যে, সফরে চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে দুই রাকাত পড়তে হয়। ফরয এবং সুন্নত উভয় নামাযের জন্যই কি এই হুকুম? জানালে পেরেশানী মুক্ত হব।


 


Answer

ক) সফর অবস্থায় সুন্নত নামায পড়া-না পড়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের রা. দুই ধরনের আমলই বর্ণিত হয়েছে। কোনো কোনো বর্ণনায় সুন্নত পড়ার কথা এসেছে। আবার কোনো কোনো বর্ণনায় সুন্নত না পড়ার কথাও এসেছে।

তবে ফজরের সুন্নতের ব্যাপারে এসেছে যেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ-অসুস্থমুসাফির-মুকিম কোনো অবস্থাতেই তা ছাড়তেন না। Ñমুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ ৩৯৫০

অতএব ফজরের সুন্নত গুরুত্বের সাথেই আদায় করবে। অন্যান্য সুন্নতের ক্ষেত্রে হুকুম হলযাত্রাপথে তাড়াহুড়ো ও ব্যস্ততার সময় সুন্নত পড়বে না। আর যদি যাত্রাপথে তাড়াহুড়ো ও ব্যস্ততা না থাকে এবং সুন্নত পড়ার অবকাশ থাকে তাহলে সম্ভব হলে পড়ে নিবে। আর গন্তব্যস্থলে নিরাপদে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে সুন্নত পড়ে নেওয়াই উত্তম। এক্ষেত্রে সুন্নত ছাড়বে না।

খ) সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দুই রাকাত পড়ার বিধান কেবল ফরয নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সুন্নত নামাযের কসর নেই। তাই সফর অবস্থায় সুন্নত পড়লে পূর্ণ চার রাকতই পড়তে হবে। Ñজামে তিরমিযীহাদীস ৫৫০৫৫২সহীহ ইবনে খুযায়মাহাদীস ৯৪৭সুনানে আবু দাউদহাদীস ১২৫২আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৩-৩৮৪ইলাউস সুনান ৭/৩২৯-৩৩২আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১

Sharable Link

মোহাম্মদ আলী - ঝিগাতলা, ঢাকা

৩৬৬৯. Question

মাঝে মধ্যেই দেশের বাইরে আমার সফর হয়ে থাকে। আমার বাসা ঝিগাতলা। আমি যখন ঝিগাতলা থেকে এয়ারপোর্ট যাব তখন এয়ারপোর্টে থাকাবস্থায় নামায কি কসর পড়ব না পূর্ণ পড়ব।

 


Answer

এয়ারপোর্টে আপনাকে পূর্ণ নামায অর্থাৎ চার রাকাত বিশিষ্ট নামায চার রাকাতই পড়তে হবে। বিমান এয়ারপোর্ট ত্যাগ করার পর থেকে কসরের হুকুম হবে।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৮২৫৩; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪৩২৩; কিতাবুল আছল ১/২৩২; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১

Sharable Link

ওমায়ের - পাইকপাড়া, মিরপুর,ঢাকা।

৩৬৭০. Question

মাসবুক ব্যক্তি ইমামের সালাম ফিরানোর পর কখন দাঁড়াবে? অনেকে দেখা যায় প্রথম সালামের পর দাঁড়িয়ে যায়। আবার কেউ কেউ বলেন যে, দ্বিতীয় সালামের পর দাঁড়াতে হবে। কোনটি সঠিক।

 


Answer

সঠিক নিয়ম হলইমাম সাহেবের উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পর মাসবুক তার অবশিষ্ট নামায আদায়ের জন্য দাঁড়াবে। ইমামের প্রথম সালামের পরই দাঁড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ ইমাম সাহু সিজদা দিলে মাসবুকেরও ইমামের সাথে সিজদা করা আবশ্যক। আর ইমামের সাহু সিজদা নেই এটা প্রায় নিশ্চিত হবে দ্বিতীয় সালামের পর। তাই দ্বিতীয় সালামের পরই মাসবুক দাঁড়াবে।

Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৩১৫৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯৭

Sharable Link

রোকনুজ্জামান ও মাহমুদ - নাটোর সদর, নাটোর

৩৬৭১. Question

১. কসর সালাতের দূরত্ব ও সময়সীমা অর্থাৎ কী পরিমাণ দূরত্বের সফর করলে কছর পড়তে হয় এবং কত দিন পর্যন্ত সফরের হুকুম বলবৎ থাকবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

২. কছর নামায সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।


Answer

১ ও ২ : ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার বা এর বেশি সফর করার নিয়তে কেউ যদি নিজ গ্রাম বা শহরের সীমানা অতিক্রম করে তবে সে তখন থেকে মুসাফির গণ্য হবে এবং নামায কসর করবে। অর্থাৎ যোহর, আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত করে আদায় করবে।

আর সফর অবস্থায় কোনো স্থানে একসাথে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করা পর্যন্ত মুসাফির থাকবে।

আর কোনো স্থানে একসাথে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম গণ্য হবে এবং পূর্ণ নামায পড়তে হবে। 

 


Ñশরহুল মুনয়াহ ৫৩৫, ৫৩৬, ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭, ২/৩৮৮-৩৮৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮, ২/১৩১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১, ২/১২৪-১২৫; জাওয়াহিরুল ফিক্হ ৩/৪২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ জাহিদুল ইসলাম - সাভার, ঢাকা

৩৬৭৩. Question

কোনো কোনো সময় যোহরের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়ার মতো সময় থাকে না। এক্ষেত্রে আমি যোহরের আগে দুই রাকাত হলেও পড়ে নিই। আর বাকি দুই রাকাত যোহরের পরে আদায় করি। জানার বিষয় হল, এভাবে দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়লেও কি যোহরের সুন্নত আদায় হয়ে যায়?

 


Answer

যোহরের আগে চার রাকাত পড়ার মতো সময় না থাকলে সম্ভব হলে দুই রাকাত পড়ে নিবেন। তবে যোহরের পূর্বের চার রাকাতই যেহেতু সুন্নতে মুআক্কাদা তাই  কখনো যোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নতপড়তে না পারলে যোহরের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে পূর্বের চার রাকাত সুন্নত আদায় করে নেওয়া উচিত। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে,হযরত আয়েশা রা. বলেননবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের আগে চার রাকাত পড়তে না পারলেতা যোহরের পর পড়ে নিতেন।

Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ৪২৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১১৫৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৩২; ফাতহুল কাদীর ১/৪১৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২-১৩

Sharable Link

আবদুর রহমান - সাতক্ষীরা

৩৬৭৪. Question

 

গত রমযানে আমাদের এলাকার মসজিদে একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হাফেয তারাবীর নামায পড়িয়েছে। মসজিদের ইমাম সাহেব আমাদেরকে মাসআলা বলেছেন, নাবালেগের পিছনে তারাবীর নামায পড়া জায়েয আছে। জানার বিষয় হল, তার কথা কি সঠিক?

 


 

Answer

নাতার ঐ কথা ঠিক নয়। তারাবীর নামাযেও নাবালেগের ইমামতি সহীহ নয়। উমর বিন আবদুল আযীয ও আতা রাহ. বলেননাবালেগ ছেলে যেন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে ইমামতি না করে। ফরয নামাযেও নয়অন্য নামাযেও নয়।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৫২৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫৯; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭৭

Sharable Link

ইবরাহীম খলীল - লাকসাম, কুমিল্লা

৩৬৭৫. Question

জনৈক ব্যক্তি জামাতের সাথে নামায আদায় করছিল। দাঁড়ানো অবস্থায় তার ঘুম এসে যায়। এদিকে ইমাম সাহেব রুকু শেষ করে সিজদায় চলে গিয়েছিল। তখন সে জেগে উঠে এবং নিজে নিজে রুকু করে ইমামের সাথে সিজদায় শরিক হয়। জানার বিষয় হল, তার এ নামায সহীহ হয়েছে কি?

 


Answer

হাঁঐ ব্যক্তির নামায সহীহ হয়েছে। ইমামের সাথে নামায শুরু করার পর ঘুম বা অন্য কোনো ওযরে মাঝখানে কোনো রোকন ছুটে গেলে তা নিজে নিজে আদায় করে ইমামের সাথে শরিক হতে হয়। এটিই নিয়ম। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির একাকী রুকু করে ইমামের সাথে শরিক হওয়া নিয়মসম্মতই হয়েছে।

প্রকাশ থাকে যেনামাযের মধ্যে অবহেলা বা অলসতা খুবই অপছন্দনীয় বিষয়। নামায আদায় করতে হয় অত্যন্ত খুশুখুযু ও মনোযোগের সঙ্গে। আর নামাযে ঘুমিয়ে পড়া উদাসীনতার লক্ষণ। তাই এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

Ñকিতাবুল হুজ্জাহ ১/১৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৪৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯২; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫৬; রদ্দুল মুহতার ১/৫৯৪-৫৯৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ - আমিরাবাদ, লোহাগড়া

৩৬৭৬. Question

আমার এক আত্মীয় এক সপ্তাহ যাবৎ অসুস্থ ছিল। একেবারে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। কোনো ক্রমেই নামায পড়া সম্ভব ছিল না। এমনকি মাথার ইশারায়ও নামায পড়া সম্ভব ছিল না। তাই নামায পড়তে পারেনি। তবে পুরো সময় হুঁশ-জ্ঞান ছিল। আমার প্রশ্ন হল, অসুস্থ ব্যক্তির যদি হুঁশ-জ্ঞান বাকি থাকে কিন্তু মাথার ইশারায়ও নামায পড়তে না পারে তাহলে তার নামাযের হুকুম কী? আমার ঐ আত্মীয়কে বিগত দিনগুলোর নামায কাযা করতে হবে কি না?

 


Answer

অসুস্থতার কারণে রুকু-সিজদার জন্য মাথা দ্বারা ইশারা করে নামায পড়ার ক্ষমতাও যদি না থাকে এবং এ অবস্থায় একদিন একরাতের চেয়ে বেশি সময় অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে এ সময়ে ছুটে যাওয়া নামাযগুলোর কাযা করতে হবে না। অবশ্য যদি একদিন এক রাত বা এর আগেই মাথা দ্বারা ইশারা করে নামায পড়ার মতো শক্তি ফিরে পায় তাহলে উক্ত সময়ে ছুটে যাওয়া নামাযসমূহ কাযা করে নিতে হবে।

Ñআদ্দুররুল মুখতার ২/৯৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৭; মারাকিল ফালাহ ২৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আরমান কাদের - ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত

৩৬৭৭ . Question

আমার অনেক নামায কাযা আছে। আমি যদি রাতের বেলা প্রতিদিন বিগত একদিনের নামায আদায় করতে চাই সেটা ঠিক হবে কি? আর কাযা নামায আদায়ের নিয়ম কী হবে? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

হাঁরাতে পুরো দিনের কাযা নামাযও আদায় করা যাবে। কেননা কাযা নামায আদায়ের কোনো সময় নির্দিষ্ট নেই। দিনের কাযা নামায রাতেও পড়া যায়। আর কাযা নামায বেশি হলে এভাবে নিয়ত করতে পারেন যেআমি সর্বপ্রথম অনাদায়ী ফজরের কাযা আদায় করছি অথবা সর্বশেষ অনাদায়ী ফজরের কাযা আদায় করছি। প্রতিদিনই এভাবে নিয়ত করবেন। অনুরূপভাবে যোহরআসরমাগরিবইশা ও বিতরের ক্ষেত্রে নিয়ত করবেন। 

Ñফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২১, ১২৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮২; রদ্দুল মুহতার ২/৬৬, ৭৬

Sharable Link

হাবীবুর রহমান - খিলগাঁও, ঢাকা

৩৬৭৮ . Question

যদি কেউ এমন অবস্থায় নামাযের জামাতে শরিক হয় যখন ইমাম সাহেব কেরাত পড়ছেন অথবা রুকুতে চলে গেছেন, তখন সে কি সানা পড়বে নাকি ছেড়ে দিবে?

 


Answer

ইমাম সাহেব শব্দ করে কেরাত পড়ার সময় কেউ নামাযে শরিক হলে কিংবা রুকু অবস্থায় শরিক হলে সে সানা পড়বে না। আর আস্তে কেরাত পড়া অবস্থায় নামাযে শরিক হলে সানা পড়তে পারবে। 

Ñআত তাজনীস ২/৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/৩১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯০

Sharable Link

হাবীবুর রহমান - কিশোরগঞ্জ

৩৬৭৯ . Question

ইমাম সাহেবকে দেখি, ফরয নামাযের পর নিজ জায়গা থেকে একটু সরে দাঁড়িয়ে সুন্নত পড়েন। আমার জানার বিষয় হল, ফরয নামাযের পর নিজ জায়গা থেকে সরে অন্যত্র সুন্নত পড়ার হুকুম কী? এই হুকুম কি শুধু ইমাম সাহেবের জন্য প্রযোজ্য, নাকি মুসল্লিগণও অন্যত্র সুন্নত পড়বে?


Answer

যোহরমাগরিব ও ইশার নামাযের পর ইমাম যদি মসজিদের ভেতরই সুন্নত বা নফল পড়তে চানতাহলে ফরয নামাযের জায়গা থেকে ডানে বা বামে সরে সুন্নত পড়া উত্তম। আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত আছেইমাম যে স্থানে ফরয পড়েছে সেখানেই তার জন্য (সুন্নত-নফল) নামায পড়াকে তিনি অপছন্দ করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস ৬০৭৮

আর আশপাশে জায়গা থাকলে মুসল্লিদের জন্যও সামান্য আগ-পিছ করে দাঁড়ানো উত্তম। তবে ফরযের জায়গায় দাঁড়িয়ে সুন্নত পড়লেও কোনো গুনাহ হবে না।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৬০৬৬-৬০৬৮; কিতাবুল আসল ১/১৭; হালবাতুল মুজাল্লী ২/২২৬; আততাজনীস ২/৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৩২

Sharable Link

বদরুদ্দোজা - ফরিদপুর

৩৬৮০. Question

আমি যোহরের নামাযে প্রথম বৈঠকে শরিক হই। শরিক হয়ে তাশাহহুদ পড়া শুরু করি। তখনই ইমাম সাহেব তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যান। এখন জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় আমি কি তাশাহহুদ পূর্ণ করে দাঁড়াব, না ইমামের সাথে দাঁড়িয়ে যাব?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাশাহহুদ পূর্ণ করেই দাঁড়ানো উচিত। কেননা ইমামের পেছনে প্রথম বা দ্বিতীয় বৈঠকে শরিক হলে তাশাহহুদ পড়ে নেওয়াই নিয়ম। তাই ইমাম দাঁড়িয়ে গেলেও মুক্তাদি তাশাহহুদ পূর্ণ করে দাঁড়াবে।

Ñরদ্দুল মুহতার ১/৪৯৬; এমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩৩৯; এমদাদুল আহকাম ১/৫৫১

Sharable Link

হুযাইফা - সিলেট

৩৬৮১. Question

আমাদের এলাকায় মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। জানতে চাই এভাবে পানি ছিটিয়ে দেওয়ার কথা কুরআন-সুন্নাহয় কি আছে? না এটা কোনো কুসংস্কার?

 


Answer

নাএটি কুসংস্কার নয়। বরং কবরের উপরে পানি ছিটিয়ে দেওয়ার কথা হাদীসে এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে উমর তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় পুত্র ইবরাহীমের কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দিয়েছেন। Ñমারাসীলে আবু দাউদহাদীস ৩৮৭

ফকীহগণ বলেনপানি ছিটিয়ে দেওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য হলকবরের মাটি যেন ভালোভাবে জমে যায়।

Ñকিতাবুল আসার ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. ১/২৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৯৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৯৪

Sharable Link

আবিদ হাসান - হবিগঞ্জ

৩৬৮২. Question

কিছুদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের দুজন প্রতিবেশী মারা যান। তাদের দুজনের জানাযার নামায একসাথে পড়ার ব্যবস্থা করা হয়। এতে কিছু মানুষ আপত্তি করল যে, এক সাথে দুজনের জানাযার নামায পড়লে তা সহীহ হবে না। বরং প্রত্যেকের নামায আলাদা পড়তে হবে। এই নিয়ে তুমুল বাকবিত-া হয়। শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকের নামায পৃথকভাবে পড়া হয়।

আমার প্রশ্ন হল, একসাথে একাধিক মায়্যেতের উপর একবার জানাযার নামায পড়লে তা কি সহীহ হবে? নাকি প্রত্যেকের জন্য পৃথক নামায পড়তে হবে?

 


Answer

একসাথে একাধিক জানাযা উপস্থিত হলে যথাসম্ভব প্রত্যেকের পৃথক পৃথক জানাযা নামায পড়াই উত্তম। তবে একাধিক মায়্যেতের জানাযা একসাথে পড়াও জায়েয আছে এবং এর দ্বারা সকলের জানাযা আদায় হয়ে যাবে। হাদীস শরীফে এসেছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদ যুদ্ধে দশ দশজন শহীদের জানাযা একত্রে পড়েছেন।Ñশরহু মাআনিল আসার ১/২৪২

নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত আছেইবনে উমর রা. নয়জন পুরুষ ও নারীর উপর একসাথে জানাযার নামায পড়েছেন।

Ñসুনানে কুবরা, বাইহাকী ৪/৩২; কিতাবুল আসল ১/৩৫০; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৬৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৪; শরহুল মুনইয়া ৬০৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/২১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৭৭

Sharable Link

দেলোয়ার হুসাইন - নেত্রকোণা

৩৬৮৩. Question

যদি কোনো ব্যক্তির বৈধ সম্পদ এ পরিমাণ না থাকে, যার উপর যাকাত ওয়াজিব হয়। কিন্তু তার কাছে হারাম সম্পত্তিও রয়েছে যেগুলো যোগ করলে যাকাত ওয়াজিব হয়। এমন ব্যক্তির উপর যাকাত ওয়াজিব হবে কি না?

 


Answer

হারাম মালের উপর যাকাত আসে না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির যদি সত্যিই হালাল সম্পদ নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না।

প্রকাশ থাকে যেহারাম মাল পুরোটাই মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যক। মালিক জানা না থাকলে গরীব-মিসকীনকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করে দেওয়া জরুরি। তা কোনো অবস্থায়ই নিজে ভোগ করা জায়েয হবে না।

Ñফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৮৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৬

Sharable Link

সাঈদ আহমদ - উত্তরা, ঢাকা

৩৬৮৪. Question

আমাদের একজন আত্মীয় কিছু ঋণ রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিও এতই সামান্য যে, তা দিয়ে সব ঋণ পরিশোধ হবে না। এছাড়া তার সন্তানদের পক্ষেও নিজেদের অর্থ দিয়ে সেই ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব নয়। এখন আমি যদি আমার যাকাতের অর্থ দিয়ে তা পরিশোধ করি তাহলে আমার যাকাত আদায় হবে কি না?

 


Answer

যাকাতের অর্থ দিয়ে কোনো মৃতের ঋণ পরিশোধ করলে যাকাত আদায় হয় না। অবশ্য মৃত ব্যক্তির ওয়ারিসগণ যাকাতের উপযুক্ত হলে তাদেরকে যাকাতের অর্থ দেওয়া যেতে পারে। অতপর তারা চাইলে তা দ্বারা মায়্যেতের ঋণ আদায় করে দিতে পারবে।

Ñহেদায়া, ফাতহুল কাদীর ২/২০৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১২১; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৪৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৪৪

Sharable Link

ইদরীস আহমদ - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

৩৬৮৫. Question

আমি আমার যাকাতের টাকা তিন ভাগ করে কিছু অংশ গরীব আত্মীয়-স্বজনকে দান করি। আর কিছু অংশ ভিক্ষুকদেরকে দান করি। আর অবশিষ্ট অংশ দিয়ে যাকাতের কাপড় ক্রয় করে বিতরণ করি। গরীব আত্মীয়-স্বজনদের অবস্থা তো আমি জানি। কিন্তু কাপড় বিতরণের সময় যে-ই আসে তাকে দিয়ে দেই। আলাদাভাবে খোঁজ-খবর নেওয়ার সুযোগ হয় না। ভিক্ষুকদের ক্ষেত্রেও এমন হয় যে, যে হাত পাতে তাকেই দেই। অথচ তাদের মধ্যে অনেক পেশাদার ভিক্ষুকও থাকে। তো এভাবে দিলে আমার যাকাত আদায় হবে কি? নাকি বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জানা জরুরি?

 


Answer

যাকাতের অর্থ উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রদান করা যাকাত আদায়কারীর কর্তব্য। কেউ যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত বলে প্রবল ধারণা হলে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।

আর ঘোষণা দিয়ে যাকাতের কাপড় বা অর্থ বিতরণ করা হলে সেক্ষেত্রে আগত লোকদের অবস্থা একটু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। যেন যাকাত তার হকদারদের কাছেই পৌঁছে। অবশ্য নিজের প্রবল ধারণা অনুযায়ী কাউকে দরিদ্র মনে করে যাকাত দিয়ে দিলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পরে ভুল প্রমাণিত হলে অর্থাৎ সে দরিদ্র ছিল নাÑএমন প্রমাণিত হলেও ঐ যাকাত আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু যে ব্যক্তি যাকাতের উপযুক্ত নয় তার জন্য যাকাত গ্রহণ করা কোনো অবস্থায়ই বৈধ নয়। কেউ গ্রহণ করে ফেললে তার দায়িত্ব হবে মালিককে তা ফেরত দেওয়া কিংবা কোনো দরিদ্রকে সদকা করে দেওয়া।

Ñমুসনাদে আহমদ, হাদীস ৬৫৩০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১২৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৬৩; ফাতহুল কাদীর ২/২১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৭-৪৮; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫২

Sharable Link