আবদুল করিম - ঢাকা

২৭৯৪. Question

মহিলারা হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে পবিত্র হওয়ার পর তাদেরকে সিজদা দিতে হবে কি?

 

Answer

হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয় না। তাই পবিত্র হওয়ার পর তা আদায় করতে হবে না।

বিশিষ্ট তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ঋতুমতী মহিলা সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা করবে না। সে তো সিজদার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথা ফরয নামাযই আদায় করছে না।

অনুরূপ বক্তব্য সাঈদ ইবনে জুবাইর রাহ., আতা রাহ. ও হাসান বসরী রাহ. থেকেও বর্ণিত আছে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৩/৪০৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৬৫; রায়েক ২/১১৯

Sharable Link

জান্নাত - টঙ্গী, ঢাকা

২৭৯৫. Question

একজন মেয়েলোকের বিগত মাসে ৮ দিন করে হায়েয হয়েছিল। এ মাসে তার চার দিন হওয়ার পর দুই দিন হয়নি। এরপর আবার হয়েছে। জানার বিষয় হল, ৫ম ও ৬ষ্ঠ দিন তার কী করণীয় ছিল? সে কি অপেক্ষা করবে, নাকি গোসল করে নামায পড়া শুরু করবে?

 

Answer

উক্ত ক্ষেত্রে স্রাব বন্ধ হওয়ার পর গোসল করে ওয়াক্তের নামায পড়ে নিবে। কারণ স্বাভাবিক অভ্যাসের দিনগুলোর মধ্যেও কখনো স্রাব বন্ধ হয়ে গেলে ওয়াক্তের মধ্যে গোসল করে নামায পড়ে নেওয়াই কর্তব্য। কেননা এ পরিস্থিতিতে পরবর্তীতে আর রক্ত না এসে পূর্ণভাবে পবিত্র হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তার জন্য ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করা জরুরি। অবশ্য সে যেহেতু সপ্তম দিনে আবার রক্ত দেখেছে তাই মাঝের বিরতির দুই দিন হায়েয হিসাবেই গণ্য হবে। সুতরাং মহিলাটি যদি ঐ দুই দিন  নামায না পড়ে থাকে তবে যেহেতু তা মূলত হায়েযের দিন ছিল এ কারণে তা কাযাও করতে হবে না।

-ফাতহুল কাদীর ১/১৫১; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪০৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৫৯; আলবাহরুর রায়েক ১/২০৩; রদ্দুল মুহতার ১/২৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৯

Sharable Link

হাবীবুর রহমান - যশোর

২৭৯৬. Question

অযু বা গোসলের পর যদি সতর খুলে যায় তাহলে কি অযু ভেঙ্গে যাবে এবং পুনরায় কি অযু করতে হবে?

 

Answer

না, সতর খুলে গেলে অযু ভাঙ্গবে না। তবে কখনো সতর খুলে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা ঢেকে নিতে হবে।

Sharable Link

উবায়দুল্লাহ রিয়াদ - সাহিতপুর, কেন্দুয়া

২৭৯৭. Question

আমার বয়স তেইশ বছর। আমি নিয়মিত নামায পড়ি। কিন্তু মাঝে মাঝে নামায কাযা হয়ে গেলে তা আর পড়া হয় না। এভাবে আমার প্রায় ৫০ ওয়াক্ত কাযা নামায জমে গেছে। এখন আমি এ সকল কাযা নামায আদায় করতে চাই। জানতে চাই, এই নামাযগুলো আদায়ের ক্ষেত্রেও কি আমাকে তারতীব রক্ষা করতে হবে? কিন্তু বাস্তবতা হল, কোন ওয়াক্ত আগে কোন ওয়াক্ত পরে তা নির্ধারণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এ অবস্থায় আমার করণীয় কী?

 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার কাযা নামাযের সংখ্যা যেহেতু ছয় ওয়াক্তের বেশি তাই সেগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মাঝে তারতীব রক্ষা করতে হবে না। তাই আপনি ছুটে যাওয়া নামাযগুলো তারতীব রক্ষা করা ছাড়াই সুবিধামতো আদায় করে নিতে পারবেন। আর আপনার কাযা  নামাযগুলো পড়া শেষ না হলেও চলমান ওয়াক্তিয়া নামায যথাসময়ে পড়তে থাকবেন।

উল্লেখ্য, পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পাশাপাশি বিতর নামায ছুটে থাকলে তাও কাযা করতে হবে। আর কাযা আদায়ের ক্ষেত্রে এভাবে নিয়ত করতে পারেন যে, আমার যিম্মায় থেকে যাওয়া নামাযের মধ্যে সর্বপ্রথম ফজরের ফরয নামায আদায় করছি বা সর্বপ্রথম যোহরের ফরয নামায আদায় করছি।

প্রকাশ থাকে যে, যথাসময়ে নামায আদায় না করা মারাত্মক গুনাহ। তাই কোনো অবস্থায় নামায কাযা না হয় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কখনো কাযা হয়ে গেলে দ্রুত আদায় করে নিতে হবে। আর বিগত দিনের কাযার জন্য তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৬৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৮৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৪৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৫৮

Sharable Link

হাসান মাহমুদ - ফেনী

২৭৯৮. Question

আমাদের গ্রামে একটি ওয়াকফিয়া মসজিদ আছে। মুসল্লী কম বিধায় কোনো কোনো ওয়াক্তের আযান ও জামাত হয় না। তাই ছুটিতে আমি বাড়ি গেলে একটু দূরে অবস্থিত জুমআ মসজিদে নামায পড়ি। কিন্তু সেখানকার ইমাম সাহেব আমাকে মহল্লার মসজিদে নামায পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। এ অবস্থায় আমার জন্য কোন মসজিদে নামায পড়া অধিক উত্তম হবে? জানালে উপকৃত হব।

 

Answer

উক্ত ইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অন্য মসজিদে না গিয়ে মহল্লার ঐ মসজিদেই আপনার নামায পড়া উচিত। কেননা মহল্লার মসজিদ আবাদ করা মহল্লাবাসীর দায়িত্ব। তাই আপনি নিজেও সেখানে নামায পড়বেন এবং আশপাশের লোকজনকে ঐ মসজিদে গিয়ে নামায পড়তে এবং মসজিদটি আবাদ রাখতে উদ্বুদ্ধ করবেন।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৮; শরহুল মুনইয়া ৬১৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৬৭; রদ্দুল মুহতার ১/৬৫৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান - নোয়াখালী

২৭৯৯. Question

একদিন এশার নামাযে ইমাম সাহেব প্রথম বৈঠক না করে দাঁড়িয়ে যান। পরে আরো দুই রাকাত পড়ে যথারীতি উভয়দিকে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করেন কিন্তু সাহু সিজদা দেননি। তবে বিষয়টি মনে পড়ার সাথে সাথে নামায পরিপন্থী কোনো কাজ করার আগে তিনি সাহু সিজদা দেন এবং পুনরায় শেষ বৈঠক করে নামায শেষ করেন। এখন জানার বিষয় হল, উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পরেও কি ইমাম সাহেবের সাহু সিজদা দেওয়া শুদ্ধ হয়েছে?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় যেহেতু তিনি সালামের পর নামায পরিপন্থী কোনো কাজ করার আগেই সাহু সিজদা করেছেন, তাই তা সহীহ হয়েছে এবং ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে।

-কিতাবুল আছল ১/২৩২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯১; ফাতহুল কাদীর ১/৪৫১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩২৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৩

Sharable Link

আমাতুল্লাহ তামান্না - বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী

২৮০০. Question

আমি একদিন যোহরের নামায পড়ছিলাম। দুরাকাত পড়ার পর ভুলে তাশাহহুদের পর দরূদ শরীফ ও দুআ পড়ে চার রাকাত মনে করে সালাম ফিরিয়ে নিই। সালাম ফিরানোর পরপরই আমি দ্রুত সুন্নত পড়ার জন্য দাঁড়িয়ে যাই। সুন্নতের জন্য আলাদা নিয়তও বেঁধে ফেলি। কিন্তু এরপরই আমার স্মরণ হয়, আমার যোহরের ফরয পুরা হয়নি। তাই সুন্নতের নিয়ত বাদ দিয়ে মনে মনে ফরযের বাকি দু রাকাতের নিয়ত করে নিই। তারপর সাহু সিজদা দিয়ে নামায শেষ করি। এখন জানার বিষয় হল, আমার যোহরের নামায কি আদায় হয়েছে, নাকি পুনরায় পড়তে হবে?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার যোহরের নামাযটি আদায় হয়নি। তাই তা পুনরায় পড়ে নেওয়া জরুরি। কারণ দুই রাকাত পড়ে সালাম ফেরানোর পর সুন্নতের নিয়তে নামায শুরু করার দ্বারা যোহরের ফরয বাতিল হয়ে গেছে। অবশ্য ঐ নামাযগুলো নফল গণ্য হয়েছে।

-রদ্দুল মুহতার ১/৬২৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৯৬; ফাতহুল কাদীর ১/৩৫০; আলবাহরুর রায়েক ২/৯

Sharable Link

ইমরান হুসাইন - ফেনী

২৮০১. Question

রাশেদ কিছুদিন আগে তার নিজ বাড়ি (চট্টগ্রাম) থেকে ঢাকায় তিন দিনের সফরে আসে। সে সময় তার দ্বিতীয় দিনের আসরের নামায কাযা হয়ে যায়। এখন সে নিজ বাড়িতে এসে তা কাযা করলে চার রাকাত কাযা করবে না দুই রাকাত?

 

Answer

রাশেদ সেই দিনের আসরের নামায বাড়িতে এসে আদায় করলেও দুই রাকাতই পড়বে, চার রাকাত নয়। কারণ সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায কাযা হয়ে গেলে তা মুকীম অবস্থায় আদায় করলেও দুই রাকাতই পড়তে হয়।

-কিতাবুল আছল ১/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ২/১৩৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫১৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম - মিরপুর, ঢাকা

২৮০২. Question

 

আমি যোহরের প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদ পূর্ণ করার আগে ইমাম সাহেব তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যান। আমি তৎক্ষণাৎ না দাঁড়িয়ে তাশাহহুদ পূর্ণ করার পর দাঁড়াই। এরূপ করা কি আমার জন্য সঠিক হয়েছে? না ইমাম সাহেবের সাথেই দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত ছিল?

 

 

Answer

উক্ত ক্ষেত্রে তাশাহহুদ পূর্ণ করে দাঁড়ানোই সঠিক হয়েছে। কেননা মুকতাদির জন্যও পূর্ণ তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব। তাই মুকতাদির তাশাহহুদ শেষ হওয়ার আগে ইমাম তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেলেও মুকতাদি তখন দাঁড়াবে না। বরং সে তাশাহহুদ পূর্ণ করেই দাঁড়াবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৬; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১০৮; রদ্দুল মুহতার ২/১০; শরহুল মুনইয়া ৫২৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৩১

Sharable Link

আবদুল হাকীম - মুন্সীগঞ্জ

২৮০৩. Question

মুসাফির ব্যক্তি যদি চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযে দুই রাকাত কসর না পড়ে ভুলে চার রাকাত পড়ে ফেলে তাহলে তার নামায আদায় হবে কি?

 

Answer

মুসাফির ব্যক্তি কসর না করে যদি ভুলে চার রাকাতই পড়ে নেয় সেক্ষেত্রে দেখতে হবে সে দুই রাকাতের পর বৈঠক করেছে কি না, যদি করে থাকে তাহলে তার ঐ ফরয নামায আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাত ফরয এবং শেষ দুই রাকাত নফল হবে। আর ঐ ভুলের কারণে তাকে সাহু সিজদা করতে হবে। হাসান বসরী রাহ. বলেন, কোনো মুসাফির ভুলে যোহরের নামায চার রাকাত পড়ে নিলে সাহু সিজদা করবে।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৫৪১

আর দুই রাকাত শেষে যদি বৈঠক না করে তবে তার ফরয বাতিল হয়ে ঐ নামায নফল হয়ে যাবে। তাই এ অবস্থায় তাকে পুনরায় দুই রাকাত ফরয পড়ে নিতে হবে।-মারাকিল ফালাহ ২৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাহমুদ মিঞা - নড়াইল

২৮০৪. Question

আমার খালা ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন। এখন তার জ্ঞান-বোধ কিছুটা কমে গেছে। তিনি প্রায়ই নামাযে উল্টা পাল্টা করে ফেলেন। তবে নামাযের সময় কেউ তার পাশে থেকে পড়ার ও করার কাজগুলো স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি ঠিকমতো নামায পড়তে পারেন।

প্রশ্ন হল, নামাযের বাইরে থেকে কেউ বলে বলে নামায পড়ালে খালার নামায সহীহ হবে কি?

 

Answer

আপনার খালা যেহেতু নিজে নিজে নামায পড়লে ঠিকমতো পড়তে পারেন না, তাই এ অবস্থায় তার পাশে থেকে নামাযের রুকু, সিজদা ও কিরাত ইত্যাদির কথা বলে বলে নামায পড়ালে তার নামায সহীহ হয়ে যাবে। অবশ্য নামাযের সময় এ রকম বলে দেওয়ার মতো কেউ না থাকলে তিনি যেভাবেই পড়বেন আদায় হয়ে যাবে। জাহম রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যুবাইর ইবনুল আওয়াম রা.-এর নামাযের সময় তার পিছনে এক লোক বসত। সে তার নামাযের আমলগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিত।

রুকাইন রাহ. বলেন, আমি একবার আসমা রা.-এর নিকট গেলাম। তখন তিনি ছিলেন অতিশয় বৃদ্ধা। তিনি নামায পড়ছিলেন আর একজন মহিলা তাকে বলছিল, রুকু করুন, সিজদা করুন।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৩/১৯৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০০

Sharable Link

দিলরুবা উম্মে ইমরান - ভালুকা, ময়মনসিংহ

২৮০৫. Question

আমি ইস্তেঞ্জা থেকে ফারেগ হওয়ার পর অথবা অযু না থাকা অবস্থায়ই কখনো কখনো আযান শুরু হয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল, আযানের উত্তর দিতে হলে অযুর প্রয়োজন আছে কি?

 

Answer

আযানের জওয়াব দেওয়ার জন্য অযু জরুরি নয়। অযু না থাকলেও আযানের জওয়াব দেওয়া যাবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৯৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২৫৯; মারাকিল ফালাহ ১১০

Sharable Link

মাহমুদা সুলতানা - লক্ষ্মীপুর

২৮০৬. Question

আমার পিতামাতার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার মোহাম্মদপুর গ্রামে। আমার বিবাহ হয় রামগঞ্জ থানার হিরাপুর গ্রামে। স্বামী-সন্তানসহ আমি স্থায়ীভাবে হিরাপুরেই বসবাস করি। কখনো ঢাকায় এসে সফর শেষে আমার পৈত্রিক বাড়ি অর্থাৎ রামগঞ্জ থানাধীন মোহাম্মাদপুর গ্রামে এসে ৪-৫ দিন থেকে পরবর্তীতে স্বামীর সাথে হিরাপুর আসি। আমার জানার বিষয় হল, পৈত্রিক বাড়িতে অর্থাৎ মুহাম্মাদপুরে অবস্থানকালীন সময় আমি নামায পূর্ণ আদায় করব নাকি কসর করব?

 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনি যেহেতু স্থায়ীভাবে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করেন,  পিত্রালয়ে বসবাস করেন না, তাই সফর থেকে এসে আপনি স্বামীর গ্রামে প্রবেশ না করে যদি সরাসরি আপনার পিত্রালয়ে যান এবং সেখানে পনের দিন অবস্থানের নিয়ত না করেন তবে আপনি মুসাফির থাকবেন এবং নামায কসর পড়বেন। কিন্তু যদি সফর থেকে এসে স্বামীর বাড়ির এলাকায় আগে প্রবেশ করেন তাহলে ঐ গ্রামে যাওয়ামাত্র মুকীম হয়ে যাবেন। সুতরাং সেখান থেকে নিজ পিত্রালয়ে গেলে মুকীমই থাকবেন।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩৮৮; শরহুল মুনইয়াহ ৫৪৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২০৪

Sharable Link

দিলরুবা উম্মে ইমরান - ভালুকা, মোমেনশাহী

২৮০৭. Question

 

আমি মাগরিব নামাযের প্রতম রাকাতে সূরা হুমাযাহ ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা তাকাসুর পড়ি। পরে মনে পড়ে, আমার প্রথম রাকাতে সূরা তাকাসুর পড়া উচিত ছিল। ফলে সাহু সিজদা করে নেই। প্রশ্ন হল, আমার উক্ত নামায কি সহীহ হয়েছে?

 

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে সাহু সিজদা করার প্রয়োজন ছিল না। কেননা নামাযের মধ্যে সূরা আগে-পরে হয়ে গেলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না।

অবশ্য ইচ্ছাকৃত সূরার তারতীব উল্টো করে পড়া অনুচিত। যা হোক, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা করা ঠিক না হলেও আপনার ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে।

-আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৪৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৯৭; আততাজনীস ১/৪৬৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৭

Sharable Link

হাবীবুর রহমান - ফেনী

২৮০৮. Question

মাঝে মধ্যে ঘুম থেকে বিলম্বে উঠার কারণে অযু ছাড়া আযান দিয়ে দেই। জানতে চাই, অযু ছাড়া আযান দিলে কি সহীহ হবে?

 

Answer

বিনা অযুতে আযান দিলে আযান সহীহ হয়ে যাবে। তবে অযু অবস্থায় আযান দেওয়া মুস্তাহাব। অযুর সাথে আযান দেওয়ার ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। আবু হুরায়রা রা. বলেন, অযু অবস্থাতেই যেন আযান দেওয়া হয়।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ২০১

অবশ্য সময় কম থাকলে বা কোনো অসুবিধা হলে বিনা অযুতেও আযান দেওয়া যাবে। ইবরাহীম নাখায়ী, কাতাদা, হাসান বসরী, আতা রাহ. প্রমুখ তাবেয়ীন থেকে বিনা অযুতেও আযান দেওয়ার অনুমতি বর্ণিত আছে।

-সহীহ বুখারী ১/৮৮; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ২/৩৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৭৪; কিতাবুল মাবসূত, সারাখসী ১/১৩১; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ বুরহানুদ্দীন - চাঁদপুর

২৮০৯. Question

আমার দাদীর বয়স প্রায় পঁয়ষট্টি বছর। আলহামদুলিল্লাহ তিনি এখনও স্বাভাবিক চলাফেরা ও ইবাদত বন্দেগী করতে পারেন। গত কয়েক মাস আগে একবার খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখন কয়েকদিন তাঁর যবান বন্ধ ছিল। মুখে কোনো শব্দ উচ্চারিত হত না। তবে হুঁশ-জ্ঞান ছিল। তাই তিনি ওই অবস্থায়ও নামায আদায় করেছেন। কিন্তু কিরাত, দুআ ইত্যাদি পড়তে পারেননি। এখন তিনি সুস্থ আছেন।

প্রশ্ন হল, তার ওই কদিনের নামায কি আদায় হয়েছে? না তাকে পুনরায় ওই নামাযগুলো পড়তে হবে?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার দাদীর অসুস্থতার দিনগুলোর নামায আদায় হয়ে গেছে। তাকে পুনরায় ওই নামাযগুলো পড়তে হবে না। কেননা কিরাত পড়া যদিও ফরয কিন্তু কেউ অসুস্থতার কারণে কিরাত পড়তে না পারলে মাযুর গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে কিরাত ছাড়াই তার নামায আদায় হয়ে যাবে। যেমনিভাবে রুকু-সিজদা করতে পারে না-এমন অসুস্থ ব্যক্তি ইশারায় নামায পড়লে তার এ নামায আদায় হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে তা কাযা করতে হয় না।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১১৫; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ২৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইরফান হামীম - কিশোরগঞ্জ

২৮১০. Question

আমি একবার নৌকায় ভ্রমণ করছিলাম। মাঝপথে যোহরের নামাযের সময় হয়ে যায়। ঢেউয়ের কারণে নৌকাটি অস্বাভাবিক নড়াচড়া করছিল। ফলে দাঁড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব হচ্ছিল না। তাই আমি বসে রুকু-সিজদাসহ নামায আদায় করেছি। প্রশ্ন হল, আমার উক্ত নামায সহীহ হয়েছে কি?

 

Answer

হ্যাঁ, উক্ত নামায যথানিয়মেই আদায় হয়েছে। কেননা ওযরের কারণে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতে না পারলে বসে আদায় করা জায়েয আছে।

-আলমুজামুল কাবীর, তবারানী; মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৩৭১; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৯১; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাজিদ - কিশোরগঞ্জ

২৮১১. Question

আমি সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পূর্বে সফর থেকে বাসায় পৌঁছে আসরের নামায আদায় করছিলাম। দুই রাকাত পড়ার পর মাগরিবের আযান হয়ে গেছে। অতপর বাকি নামায আদায় করেছি।

আমার ঐ নামায কি সহীহ হয়েছে?

 

Answer

হ্যাঁ, আপনার আসরের নামায আদায় হয়ে গেছে। তবে যথাসময়ে আদায় না করার কারণে আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। যথাসময়ে নামায আদায়ে যত্নবান হতে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/১৫৪; কিতাবুল মাবসূত, সারাখসী ১/১৫২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আরমান আযীয - ফরিদপুর

২৮১২. Question

চক্ষুপীড়ার কারণে রোযা থাকা সত্ত্বেও চোখে ঔষুধ ব্যবহার করেছি। জানার বিষয় হল, এতে আমার রোযা ভেঙ্গে গেছে কি?

Answer

না। এ কারণে আপনার রোযা ভাঙ্গেনি। কারণ চোখে ঔষুধ ব্যবহার করলে রোযা নষ্ট হয় না। এমনকি চোখে ব্যবহৃত ওষধের স্বাদ বা তিক্ততা গলায় অনুভূত হলেও রোযার ক্ষতি হবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ রফিক - কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ

২৮১৩. Question

আমার ফুফুর চারজন ছোট ছোট সন্তান আছে। তার স্বামী একজন শ্রমিক। তিনি সারাদিন মজদুরি করে যে অর্থ পান তা দিয়ে  তাদের সংসারের ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হয় না। আর ভিটেমাটি ছাড়া তাদের অন্য কোনো সম্পদ নেই এবং আমার ফুফুর ব্যক্তিগতভাবে কোনো অলংকার বা নগদ টাকা-পয়সাও নেই। প্রশ্ন হল, আমি আমার যাকাতের টাকা উক্ত ফুফুকে দিতে পারব কি না?

Answer

হ্যাঁ, আপনি ঐ ফুফুকে যাকাত দিতে পারবেন। তাঁকে যাকাত দিলে যাকাত আদায়ের সওয়াব হবে এবং আত্মীয়তার হক আদায়েরও সওয়াব হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯০; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৩; ফাতহুল কাদীর ২/২০৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী ৩৯৩

Sharable Link

ইসমাঈল হুসাইন - মাগুরা

২৮১৪. Question

ঈদগাহের মাঠে খেলাধুলা, পিটি ইত্যাদির হুকুম কী?

 

Answer

ঈদগাহ যদি ওয়াকফিয়া হয় তাহলে তার যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা জরুরি। তাতে খেলাধুলা ও পিটি ইত্যাদি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা ঈদগাহের ওয়াকফ মূলত নামাযের জন্যই করা হয়। তাই এতে প্রশ্নোক্ত কাজগুলো করা একে তো ওয়াকফের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী, দ্বিতীয়ত এগুলো ঈদগাহের আদবেরও পরিপন্থী।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯১; ফাতাওয়ান নাওয়াযিল ৩৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬

Sharable Link

কামালুদ্দীন মিয়াজী - কুমিল্লা

২৮১৫. Question

 

আমি ও আমার বন্ধু মিলে দশ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি চালের আড়ৎ দিয়েছি। আমার পুঁজি চার লক্ষ টাকা আর বন্ধুর ছয় লক্ষ। ব্যবসা পরিচালনা আমি একাই করি। তাই তার সাথে আমার চুক্তি হয় যে, লাভের ৩৩% তোমার, আর বাকিটা আমার। আর লোকসান হলে অর্ধেক তুমি বহন করবে আর বাকি অর্ধেক আমি। সে এতে রাজি হয়। প্রশ্ন হল, এভাবে চুক্তি করা কি আমার জন্য বৈধ হয়েছে?

 

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লাভ বণ্টনের চুক্তি সহীহ হয়েছে। কিন্তু লোকসানের বণ্টন সহীহ হয়নি। কারণ যৌথমূলধনী কারবারে লোকসান হলে প্রত্যেককে মূলধন হিসাবেই দায়ভার বহন করতে হয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকসান হলে মূলধন অনুপাতে আপনি ৪০% বহন করবেন, আর আপনার বন্ধুকে ৬০% বহন করতে হবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/২৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৮৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৯৫; রদ্দুল মুহতার ৪/৩০৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৭৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ সুহাইল - কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ

২৮১৬. Question

আমি পাশের গ্রামের এক চাষীকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছি এই শর্তে যে, তিন মাস পর বোরো ধানের মৌসুমে সে আমাকে পাঁচশত টাকা দরে দুই শত মণ ধান দিবে। টাকা দেওয়ার একমাস পরেই আমার মা অসুস্থ হয়ে যান। ফলে চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন আমার মামা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা এ কথা বলে ধার নিলাম যে, দু মাস পরে ঐ কৃষক দুইশত মণ ধান দিলে আমরা দুজনে একশত মণ করে ভাগ করে নিব। আর এভাবে তার ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে। মামার সাথে আমার এই ঋণচুক্তিটি কি ঠিক হয়েছে? দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

 

Answer

আপনার মামা থেকে ঐভাবে টাকা নেওয়া বৈধ হয়নি। এটাকে ঋণ বলা হলেও বাস্তবে এটি ধানের আগাম খরিদচুক্তি, ঋণচুক্তি নয়। কারণ এক্ষেত্রে আপনি মামা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছেন এ শর্তে যে, পরবর্তীতে আপনি এর বিনিময়ে চাষী থেকে আপনার পাওনা ধানের অর্ধেক তাকে দিবেন। সুতরাং আপনার মামার সাথে ঐ টাকার বিনিময়ে ধানের আগাম ক্রয় চুক্তি করা হল। অথচ চাষী থেকে এখনো আপনি ঐ ধান হস্তগত করেননি। আর ক্রয়কৃত পণ্য হস্তগত করার আগেই তা বিক্রি করে দেওয়া জায়েয নয়। হাদীস শরীফে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করল তা হস্তগত করার আগেই যেন সে তা বিক্রি না করে। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৪৩৮)

সুতরাং এ চুক্তিটি বাতিল করে দেওয়া জরুরি।

-আলবাহরুর রায়েক ৬/১৬২; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৫১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/৫১৬

Sharable Link

হাসান হাফিজ - ফকিরবাড়ি, মোল্লাহাট

২৮১৭. Question

আমি একজন চাকুরিজীবী। দীর্ঘদিন আমি ঘুষের লেনদেন করেছি। বলা যায়, আমার সমুদয় সম্পদের এক তৃতীয়াংশই এ জাতীয় অর্থে গড়া। এখন আমার বিগত জীবনের অসৎ উপার্জন থেকে তওবা করতে চাই। এ অবস্থায় করণীয় কী? জানালে উপকৃত হব।

 

 

Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সম্পদের যে পরিমাণ অংশ অবৈধ বলে প্রবল ধারণা হয় ততটুকু অংশ তার প্রকৃত মালিকদের পক্ষ হতে গরীব-মিসকীনকে সদকা করে দিতে হবে। আর বিগত দিনের অবৈধ উপার্জনের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

উল্লেখ্য, যাদের থেকে উৎকোচ নেওয়া হয়েছে তাদেরকে বা ওয়ারিশ কাউকে যদি পাওয়া যায় তবে তাদের টাকা সদকা না করে মালিককে দিয়ে দিতে হবে।

-শরহুল মাজাল্লাহ ৬/৪১; আলবাহরুর রায়েক ৬/২৬১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১১/৮০; রদ্দুল মুহতার ৪/২৮৩; আলমওসূআ ৩৪/২৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৯

Sharable Link

মাসুম - মোমেনশাহী

২৮১৮. Question

রাজধানীর ব্যস্ততম মার্কেটগুলোর একটিতে পাঁচ বছরের জন্য একটি দোকান ভাড়া নিয়েছি। হঠাৎ একদিন সংবাদ পেলাম, মার্কেটের মালিক কোনো কারণে আমার পাশের দোকানটি অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। সাথে সাথে মালিককে ক্রয়ের ব্যাপারে আমার আগ্রহের কথা জানালাম। কিন্তু তিনি ততটা গুরুত্ব দিলেন না। এখন আমি প্রিএমশন-এর দাবি করতে চাচ্ছি। জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে শুফআ প্রিএমশন-এর ভিত্তিতে দোকানটি ক্রয়ের দাবি করতে পারব কি?

 

Answer

ভাড়াটিয়া শুফআ তথা অগ্রক্রয়ের অধিকারী হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার জন্য শুফআর দাবি করা বৈধ হবে না। কেননা শুফআর দাবি একমাত্র বিক্রিত সম্পত্তির মালিকানায় শরিকগণ বা পার্শ্ববর্তী মালিকগণই করতে পারে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১১২; আলমাবসূত, সারাখসী ১৪/৯৫; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ১০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/২১৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - কুড়িগ্রাম

২৮১৯. Question

আমাদের বাড়ি কুড়িগ্রাম। আমি স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকি। মাঝেমধ্যে স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার খুব প্রয়োজন দেখা দেয়। আমার ব্যস্ততার কারণে স্ত্রীর সাথে যেতে পারি না। আর মাহরাম কেউ নেই, যাকে তার সঙ্গে পাঠাতে পারি। তাই আমার স্ত্রীকে ভালো গাড়িতে মহিলার পাশে বসিয়ে দেই। এভাবে সে কয়েকবার বাড়িতে গিয়েছে। এতে তার কোনো সমস্যা হয়নি। এভাবে বাড়ি পাঠানো শরীয়তসম্মত কি?

 

Answer

মাহরাম ব্যতীত স্ত্রীকে এভাবে একাকী পাঠানো জায়েয নয়। কেননা এক্ষেত্রে বাহ্যত কোনো সমস্যা দেখা না হলেও মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের এভাবে একাকী সফর করা শরীয়তে নিষদ্ধ। কারণ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া সফর না করে।

-সহীহ মুসলিম ১/৪৩৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১১৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪০৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৪

Sharable Link

খায়রুল হক - ফুলপুর, ময়মনসিংহ

২৮২০. Question

একজন আলেমকে এক বয়ানে বলতে শুনলাম যে, জুতা-স্যান্ডেল বাম হাতে বহন করতে হবে। ডান হাতে বহন করা উচিত নয়। কেননা ডান হাতে বহন করা আদবের খেলাফ। তার এ কথা কতটুকু প্রমাণসিদ্ধ?

 

Answer

হ্যাঁ, ঐ কথা সঠিক। ব্যবহৃত জুতা-স্যান্ডেল বাম হাতে বহন করাই উত্তম। কেননা একাধিক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো ও উত্তম কাজে ডান হাত ব্যবহার করতেন। আর তুলনামূলক নিম্নমানের কাজে বাম হাত ব্যবহার করতেন।

তাছাড়া একটি বর্ণনায় একজন সাহাবী থেকেও এরূপ আমল বর্ণিত হয়েছে।

মুসনাদে আহমাদের একটি দীর্ঘ হাদীসে আছে, আনাস রা. বলেন, আমরা একদিন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি বললেন, তোমাদের কাছে এ পথ দিয়ে এক জান্নাতী ব্যক্তির আগমন ঘটবে।

বর্ণনাকারী বলেন, ইত্যবসরে এক আনসারী ব্যক্তি আগমন করল, যার দাড়ি থেকে অযুর পানি ঝরছিল। আর তিনি জুতা জোড়া বাম হাতে বহন করে রেখেছিলেন। অতপর তিনি সালাম করলেন।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১২৬৯৭; মিরকাত শরহে মিশকাত ৮/২৬৯; সুনানে আবু দাউদ-বযলুল মাজহূদ, ১৭/২১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - পাইকগাছা

২৮২১. Question

আমি একজন নও মুসলিম। কিছুদিন আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। আমার বয়স ২২ বছর। আমার খতনা করা লাগবে কি না? আর খতনা করা লাগলে খতনাকারীর সামনে সতর খোলা জায়েয হবে কি না? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

 

Answer

খতনা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এটি ইসলামের একটি শিআর তথা প্রতীক। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচটি বিষয় ফিতরাত তথা ইসলামের স্বভাবজাত বিধানাবলির

অন্তর্ভুক্ত। (তার একটি হল) খতনা করা।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮৮৯

সুতরাং আপনার জন্য খতনা করা আবশ্যক। আর এ উদ্দেশ্যে সতরের যতটুকু অনাবৃত করার প্রয়োজন তাও জায়েয হবে। এতে গুনাহ হবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭১৫, ৪/৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২০৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৭

Sharable Link