মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ময়মনসিংহ

১৯০৫. Question

আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তির দাড়ি নাড়ানো অভ্যাস। প্রায় সময় সে দাড়ি নাড়াচাড়া করে। নামাযের মধ্যেও মাঝে মধ্যে অভ্যাসগত কারণে দাড়িতে চলে যায়। অবশ্য তিনি এ জন্য এক হাতই ব্যবহার করে থাকেন। জানতে চাই, এ কারণে তার নামাযের কোনো ক্ষতি হবে কি? আর তার জন্য কী করণীয়?

Answer

নামাযে খুশ-খুযু তথা নামাযের প্রতি পূর্ণ নিবিষ্টচিত্ত থাকা জরুরি। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) মুমিনগণ সফলকাম, যারা নিজেদের সালাতে বিনয়-নম্র।’ (সূরা মুমিনুন : ১-২) হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে নামায অবস্থায় দাড়ি নিয়ে খেলা করতে দেখে ইরশাদ করেন-যদি তার অন-র নিবিষ্ট থাকত তবে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও নিবিষ্ট হত। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/২৬৩) সুতরাং নামায অবস্থায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া হাত, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়া করা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। নামায অবস্থায় অযথা দাড়িতে হাত দেওয়া মাকরূহ। তাই এ অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি।

সূরা মুমিনুন : ১-২; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/২৬৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৫; শরহুল মুনইয়া পৃ. ৩৪৫ ও ৪৪১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯ ও ২/১১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৭; রদ্দুল মুহতার ১/৬২৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাসউদ - নেত্রকোণা

১৯০৬. Question

এক ব্যক্তি দু’বছর পূর্বে তার এক আত্মীয়ের বদলী হজ্ব করেছে। তখন তার উপর হজ্ব ফরয ছিল না। এখন তার কাছে হজ্ব করার মতো টাকা-পয়সা আছে। হজ্ব করার সামর্থ্য আছে। জানার বিষয় এই যে, এখন কি তাকে হজ্ব করতে হবে, না পূর্বে যে বদলী হজ্ব করেছিল তাই তার জন্য যথেষ্ট হবে?

Answer

তাকে এখন নিজের ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে। অন্যের বদলী হজ্ব করার দ্বারা নিজের ফরয হজ্ব আদায় হয় না।

সহীহ বুখারী ১/২০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৭; মাবসূত সারাখসী ৪/১৪৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৭৩; হেদায়া ২/২৯৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৫; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ঢাকা

১৯০৭. Question

এক ব্যক্তি ধনী মানুষ। তার উপর যাকাতও ফরয। কিন্তু তার স্ত্রীর কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। স্বামীর কাছ থেকে যে পরিমাণ মহর পেয়েছিল তা খরচ হয়ে গেছে। জানার বিষয় এই যে, ঐ মহিলাকে যাকাত দেওয়া যাবে কি না?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ মহিলাকে যাকাত দিলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে। তবে তার ভরণ-পোষণ ও জরুরি ব্যয় যদি স্বামী যথাযথভাবে দিয়ে থাকে তাহলে তাকে যাকাত না দিয়ে প্রয়োজন আছে এমন কোনো দরিদ্রকে দেওয়াই শ্রেয়।

মাবসূত সারাখসী ৩/১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৯; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৮৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২১৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৫৮; হেদায়া ২/২০৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৭৩; ফাতহুল কাদীর ২/২১১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪২৮; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৯৩; রদ্দুল মুহতার ২/৩৪৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ লুৎফুর রহমান (হাফিজ) - নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ

১৯০৮. Question

আমি যেখানে থাকি সেখানে কয়েকটি অমুসলিম পরিবার রয়েছে। তাদের কেউ অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া যাবে কি? এক্ষেত্রে শরয়ী কোনো বাধা আছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

অমুসলিম প্রতিবেশী বা আত্মীয়দের কেউ অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া, খোঁজখবর নেওয়া শুধু জায়েযই নয়; বরং ইসলামের নির্দেশ ও প্রতিবেশীর হক হিসাবে গণ্য। নিষিদ্ধ হল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়া, বা এমনভাবে মেলা-মেশা করা যে, নিজের দ্বীনের ক্ষতি হয়। তবে সেখানে গিয়ে নাজায়েয কোনো কিছুর সম্মুখীন হতে হলে যাবে না। এক্ষেত্রে দূর থেকেই খোঁজখবর নিবে। প্রয়োজনে সাহায্য-সহযোগিতাও করতে পারবে।

মুসনাদে আহমদ ৩/১৭৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৭১; হেদায়া (ফাতহুল কাদীর) ৮/৪৯৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৩৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৮ আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৮৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইমদাদুল্লাহ - কচুয়া, চাদপুর

১৯০৯. Question

নামাযের মধ্যে কতটুকু অংশ জোরের জায়গায় আস্তে বা আস্তের জায়গায় জোরে পড়লে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে?

Answer

ছোট তিন আয়াত বা বড় এক আয়াত পরিমাণ আস্তে পড়ার স্থানে জোরে বা জোরে পড়ার স্থানে আস্তে তিলাওয়াত করলে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।

তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৯৪; ফাতহুল কাদীর ১/৪৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাসান - জুরাইন, ঢাকা

১৯১০. Question

গায়রে মাহরাম মহিলার ঝুটা খাওয়া পুরুষের জন্য জায়েয কি না? এর হুকুম কী? তদ্রূপ পুরুষের ঝুটা গায়রে মাহরাম মহিলার খাওয়ার হুকুম কী?

Answer

গায়রে মাহরাম পুরুষ বা মহিলার ঝুটাও পাক। তবে কেউ গায়রে মাহরামের অবশিষ্ট খাবার বা পানীয় গ্রহণে স্বাদ বা আকর্ষণ বোধ করলে তার জন্য মাকরূহ হবে। আর আকর্ষণ না হলে, স্বাদ নেওয়ার উদ্দেশ্য না থাকলে মাকরূহ হবে না।

ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/২২২; আলবাহরুর রায়েক ১/১২৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/১২১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আহমদ আমীন - ফুলপুর, মোমেনশাহী

১৯১১. Question

আমাদের বাড়িতে একটি নির্দিষ্ট স্থানে গরুর গোবর জমা করা হয়। এভাবে বেশ কয়েক মাস জমা করার পর তা নার্সারির কাছে উপযুক্ত দামে বিক্রি করা হয়। জানতে চাই, এভাবে নাপাক বস্তু বিক্রি করা জায়েয কি না?

Answer

হ্যাঁ, গোবর বিক্রি করা জায়েয। কেননা, নাপাক হলেও তা ব্যবহারের অনেকগুলো বৈধ ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন সার হিসাবে, জ্বালানী কাজে ইত্যাদি।

খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৫৩; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১০২; আলইনায়া ৮/৪৮৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৯৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৮৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৯৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ বুরহান - কচুয়া, চাদপুর

১৯১২. Question

বিয়েতে যে সাক্ষী রাখা হয় তার জন্য কী কী শর্ত রয়েছে? একজন বললেন, মেয়ের মাহরামদের থেকে একজনকে সাক্ষী রাখা আবশ্যক। আরেক ব্যক্তি বললেন, সাক্ষী একজন ছেলের পক্ষ থেকে একজন মেয়ের পক্ষ থেকে রাখতে হয়। উক্ত শর্তগুলো কি সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য সাক্ষীর মাঝে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা আবশ্যক। ক) জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া খ) প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়া গ) মুসলমান হওয়া ঘ) শ্রবণশক্তিসম্পন্ন হওয়া ঙ) দুইজন পুরুষ, অন্যথায় একজন পুরুষ ও দুইজন নারী হওয়া ও চ) উভয় সাক্ষী একত্রে একই বৈঠকে সরাসরি ইজাব-কবুল শ্রবণ করা। বর বা কনেপক্ষ থেকে সাক্ষী থাকতেই হবে-এটা আবশ্যকীয় নয়। এ ধরনের শর্তের কোনো শরয়ী ভিত্তি নেই। সাক্ষী বর ও কনেপক্ষ থেকে না হয়ে অন্য কেউ হতে পারে।

মাবসূত সারাখসী ৫/৩১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৭; রদ্দুল মুহতার ৩/২১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশরাফ - হাজারীবাগ, ঢাকা

১৯১৩. Question

কয়েক মাস আগে আমি কেয়ারটেকারের একটি চাকুরি নিয়েছি। আমার মালিক একজন উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা। আমি অবগত হয়েছি যে, তার আয়ের একটি অংশ হচ্ছে সুদ-ঘুষ। জানতে চাই, এ মালিকের চাকুরি করার কী হুকুম হবে?

Answer

আপনার কর্তা যেহেতু একজন উচ্চপদস্থ অফিসার। তাই তার বেতনও বেশি হবে। যা থেকে আপনার বেতন দেওয়া সহজেই সম্ভব। এ হিসাবে সেখানে চাকুরি করা এবং তার দেওয়া বেতন গ্রহণ করা অবৈধ হবে না। হ্যাঁ, কখনো হারাম উপার্জন থেকে দেওয়া হচ্ছে এটা নিশ্চিত হলে তা গ্রহণ করা বৈধ হবে না। সেক্ষেত্রে হালাল উপার্জন থেকে আপনার প্রাপ্য দেওয়ার আবেদন জানাতে পারেন।

আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪২; ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ২৯/২৪২; হাশিয়া শরহে বেকায়া, ফাতাহ লখনভী ৪/৫৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইয়াসীন - মাদারীপুর

১৯১৪. Question

আমি একটি মসজিদের মুআযযিন। মসজিদ কমিটি আমাকে সকালে মক্তবে পড়ানোর দায়িত্বও দিয়েছে। আমার বেতন ধার্য করা হয়েছে চার হাজার টাকা, যা দিয়ে আমার সংসার কোনো মতে চলে যায়। একবার আমি বিপদে পড়ে মান্নত করি, বিপদ কেটে গেলে আমি এক মাস ইতেকাফ করব। আল্লাহ তাআলা আমার বিপদটি দূর করে দিয়েছেন। তাই মান্নত আদায়ের জন্য মসজিদে ইতেকাফে বসি। ইতেকাফের কারণে আমি মক্তবে পড়ানো বন্ধ করে দেই। কেননা, মক্তবটি মসজিদের বাহিরে অবস্থিত। কিন্তু মসজিদ কমিটি আমাকে বলল, প্রয়োজনে মসজিদে বসে মক্তব পড়ান। এক মাস পড়া বন্ধ রাখতে পারেন না। অন্যথায় আপনার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে। বেতন বন্ধ হলে বা কমে গেলে আমার সংসার চালানো মুশকিল হবে। তাই আমি মসজিদে বসে মক্তব পড়ানো শুরু করি। কোনো এক ব্যক্তি বলল, মসজিদে পড়িয়ে বিনিময় নেওয়া ঠিক নয়। আমার প্রশ্ন হল, উল্লেখিত কারণেও কি আমি মসজিদে পড়িয়ে পারিশ্রমিক নিতে পারব না? দয়া করে সঠিক বিষয়টি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

উল্লেখিত ওযরের কারণে আপনি ইতেকাফের দিনগুলোতে মসজিদে পড়াতে পারবেন এবং আপনার নির্ধারিত বেতনও নিতে পারবেন।

হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৮৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল কাদের - ঢাকা

১৯১৫. Question

একবার বাসে বসা ছিলাম। একজন হকার কিছু কাচের শো-পিস নিয়ে আমাদের বাসে উঠল। সে বলছিল, প্রত্যেকটির দাম দশ টাকা। যে কেউ হাতে নিয়ে দেখতে পারেন, কিনতে হবে না। যাত্রীদের অনেকেই হাতে নিয়ে দেখছিল। হঠাৎ বাস জোরে ব্রেক করলে এক যাত্রীর হাত থেকে একটি শো-পিস পড়ে ভেঙ্গে যায়। তখন হকার উক্ত যাত্রীর কাছে মূল্য দাবি করে এবং উক্ত যাত্রীর অস্বীকৃতি সত্ত্বেও তাকে মূল্য দিতে বাধ্য করে। আমার জানার বিষয় হল, ভাঙ্গা শো-পিসটির মূল্য দেওয়া উক্ত যাত্রীর জন্য জরুরি ছিল কি না? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ভেঙ্গে যাওয়া ঐ শো-পিসটির জরিমানা দেওয়া জরুরি ছিল না। কারণ প্রশ্নোক্ত বিবরণ অনুযায়ী সেটি ভেঙ্গে যাওয়ার পিছনে তার ত্রুটি ছিল না।

ফাতাওয়া খানিয়া ২/২৬৫; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৫৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৬/১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১১

Sharable Link

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - ঢাকা

১৯১৬. Question

কারো যদি অসময়ে গর্ভপাত হয়। যাতে একটি গোশতের টুকরা বের হয়েছে। কোনো অঙ্গ প্রকাশ পায়নি। এরপর যদি সে রক্ত দেখে। তাহলে উক্ত রক্ত কি নেফাস হিসাবে গণ্য হবে? দয়া করে জানিয়ে উপকার করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গর্ভপাত পরবর্তী রক্ত নেফাস নয়; বরং এই স্রাব শুরু হওয়ার আগে ১৫ দিন পবিত্র অবস্থায় কাটলে তা হায়েযের রক্ত হিসাবে গণ্য হবে। তবে যদি বর্তমান স্রাব তিন দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত না হয় তাহলে তা ইসতিহাযার রক্ত হিসাবে গণ্য হবে। এমতাবস্থায় হায়েয মনে করে ছেড়ে দেওয়া নামাযগুলো কাযা করে নিতে হবে।

আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৩৯৪; রদ্দুল মুহতার ১/৩০২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৪৫

Sharable Link

আয়েশা - দিলুরোড, ঢাকা

১৯১৭. Question

আমি একজন অবিবাহিতা মেয়ে। আমার বয়স আঠারো। আমি এ বছর হজ্ব করতে চাচ্ছি। আমি কি আমার খালা, খালুর সঙ্গে হজ্বে যেতে পারব? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

মহিলাদের জন্য মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর করাও নাজায়েয। এ ব্যাপারে সরাসরি হাদীসে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মহিলা যেন মাহরাম পুরুষ ছাড়া হজ্বের উদ্দেশ্যে না যায়।’ সুতরাং খালু যেহেতু মাহরাম নয়, তাই খালা সঙ্গে থাকলেও তাদের সাথে হজ্বে যাওয়া জায়েয হবে না। পরবর্তীতে কোনো মাহরামের সাথেই যেতে হবে।

সহীহ মুসলিম ১/৪৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; হেদায়া ১/২৩৩; ফাতহুল কাদীর ২/৩৩০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৫৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৩

Sharable Link

ফায়রুজা সাফফাত - সাভার

১৯১৮. Question

নামাযীর সামনে সুতরা স্থাপন না করলে তার সামনে দিয়ে যাওয়া নিষেধ। এখন কেউ যদি একজন নামাযী ব্যক্তির সামনে সুতরা রেখে অতিক্রম করার পর তা টান দিয়ে অন্য নামাযী ব্যক্তির সামনে দেয় তবে বিধান কী?

Answer

বিশেষ প্রয়োজনে ঐভাবে অতিক্রম করা জায়েয হবে। তবে এতে নামাযীর মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। তাই বিনা প্রয়োজনে এমন করবে না। উল্লেখ্য, নামাযী ব্যক্তির সামনে দিয়ে অন্যান্য মুসল্লি বা সাধারণ মানুষের চলাচলের সম্ভাবনা থাকলে নামায শুরুর আগে সুতরা সামনে রেখে নামাযে দাঁড়ানো সুন্নত।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৬৩১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম - বগুড়া

১৯১৯. Question

বগুড়া সদর উপজেলার অন্তর্গত গোকুল মধ্যপাড়া গ্রামে ১৯৮৪ সালে জনৈক ব্যক্তি একটি টেক্সটাইল মিল স্থাপন করেন। মিলের শ্রমিকদের নামাযের জন্য তিনি মিল সংলগ্ন একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এলাকার মুসল্লিরাও সেখানে নামায আদায় করেন। মসজিদের খেদমতের দায়িত্ব মিল মালিক কর্তৃপক্ষ বহন করতেন। পরবর্তীতে মিলে মন্দা দেখা দিলে মিল মালিক জনগণের উপর দায়িত্ব প্রদান করেন। সেই থেকে অদ্যাবধি অত্র এলাকার জনগণ মাসিক চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে মসজিদের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছেন। বর্তমানে মসজিদটির সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। এখানে উল্লেখ্য যে, মিল ও মসজিদ নির্মাণের পূর্বে মালিক সমুদয় সম্পত্তি সোনালী ব্যাংকের নিকট মর্গেজ রাখেন। যা বর্তমানে অনাদায়ী হিসাবে আদালতে ডিক্রি জারি মোকাদ্দমা চলছে। মসজিদ সংস্কারের জন্য ইতিপূর্বে মালিকের সাথে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে ওয়াকফ করে দেওয়ার ব্যাপারে। তিনি জানালেন, যেহেতু সমস্ত সম্পত্তি ব্যাংকের নিকট মর্গেজ আছে সেহেতু তিনি মৌখিকভাবে ওয়াকফ করে দিলেন মর্মে এলাকার মুসল্লিদের সামনে স্বীকার করেন। তিনি আরও জানালেন যে, পরবর্তীতে আমি বা আমার কোনো ওয়ারিশ এই মসজিদের দাবি করতে পারব না। মসজিদটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করতে এলাকার জনগণের সাহায্য ও সহযোগিতার প্রয়োজন। কিন্তু লিখিতভাবে ওয়াকফ না থাকায় সবার মনে যেসব বিষয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে তা হল : ১. অত্র মসজিদের মুসল্লীদের নামায জায়েয হয়েছে কি না? ২. লিখিতভাবে ওয়াফকফের প্রয়োজন আছে কি না? ৩. মর্গেজকৃত জমিতে মসজিদটির পুননির্মাণ কাজ করা জায়েয হবে কি না? ৪. মসজিদের নাম পূর্বে গোকুল টেক্সটাইল মিল জামে মসজিদ ছিল। এখন তা পরিবর্তন করে ‘গোকুল মধ্যপাড়া জামে মসজিদ’ রাখা যাবে কি না? ৫. যদি কোনো আইনী জটিলতার কারণে মসজিদ পুনর্নির্মাণ বা সংস্কার সম্ভব না্ হয় তাহলে ঐ মসজিদের জায়গার পরিবর্তে আশেপাশেই অন্য কোথাও নতুনভাবে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে কি না। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য আকুল আবেদন করছি।

Answer

মর্গেজকৃত জমির ওয়াফক কার্যকর হয় না; বরং ঝুলন্ত থাকে। তাই প্রশ্নোল্লিখিত মসজিদটি এখনো শরয়ী মসজিদ হিসাবে পরিগণিত হয়নি। তবে মর্গেজ ছুটে গেলে দাতার কথা মতো তা ওয়াকফিয়া সম্পত্তি হয়ে যাবে। বর্তমানে যেহেতু এটি বন্ধকি সম্পত্তি এবং প্রশ্নকারীর বক্তব্য অনুযায়ী মসজিদের জন্য ব্যাংক থেকে ক্রয়ের চেষ্টা করার পরও তা সম্ভব হয়নি তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐ জায়গায় মসজিদের পুনর্নির্মাণ জায়েয হবে না। এক্ষেত্রে এলাকাবাসীর কর্তব্য হল, ঐ জায়গার আশেপাশে মসজিদের জন্য জমি ক্রয় করে নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা। আর এই নতুন মসজিদের নাম গোকুল মধ্যপাড়া জামে মসজিদ রাখা যাবে। উল্লেখ্য যে, উক্ত মর্গেজের জায়গায় আদায়কৃত সকল নামায সহীহ হয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে, জমির মালিকের জন্য নৈতিক দায়িত্ব হল উক্ত জায়গা ব্যাংক থেকে অবমুক্ত করে ওয়াকফ কার্যকর করা।

জামে তিরমিযী ২/১১৭; তুহফাতুল আহওয়াযী ৮/১০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩৫৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪১২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫০৬; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৯৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আদিল - চট্টগ্রাম

১৯২০. Question

আমার ছোট ভাইয়ের বয়স ১৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরে রোগাক্রান্ত। খাওয়া-দাওয়া খুবই অল্প। তাই দুর্বলতা খুবই বেশি। সে রমযানের প্রথম রোযা রেখে সম্পূর্ণ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পেটের ব্যাথা ও অন্যান্য রোগ চরমে পৌঁছে যায়। এমতাবস্থায় রোযা রাখতে হবে কি? নাকি না রেখে পরে কাযা করবে? নাকি ফিদয়া দিবে?

Answer

অসুস্থতার কারণে রোযা রাখা কষ্টকর হলে রোযা রাখবে না। সুস্থ হলে রমযানের পর এই রোযাগুলো কাযা করে নিতে হবে। কাযা করার সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ফিদয়া দেওয়া যথেষ্ট নয়। এ ক্ষেত্রে কাযাই করতে হবে।

সূরা বাকারা : ১৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৯; আলমাবসূত সারাখসী ৩/৮৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ আদিল - চট্টগ্রাম

১৯২১. Question

কিছু কিছু মসজিদে দেখা যায়, ছোট ছোট সুরা দিয়ে তারাবীহ পড়ে। এরপরও এত দ্রুত পড়া হয় যে, রুকু-সিজদাও ঠিকমতো আদায় করা হয় না। আমি জানতে পেরে বললাম, এতো নামাযের নামে প্রহসন। হাদীস শরীফে এভাবে নামায পড়াকে মুরগের ঠোকরের সঙ্গে তুলনা দিয়ে তা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তখন একজন বলল, অনেকে তো নামাযই পড়ে না। তারা তো এই দ্রুত নামাযে শরীক হতে পারছে। তা মন্দ কি?

Answer

নামায ইসলামের অন্যতম রুকন। ঈমানের পর নামাযের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কিয়ামতের দিন ইবাদতের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেওয়া হবে। তাই নামায সুন্দরভাবে আদায় করার প্রতি যত্নবান হতে হবে। রুকু-সিজদা এবং অন্যান্য রোকন বেশি দ্রুত আদায় করতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। এক হাদীসে আছে-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে তাশরীফ আনলেন, এ সময় অপর এক ব্যক্তিও মসজিদে এসে নামায আদায় করল। অতঃপর তাঁর নিকট এসে সালাম করল। তিনি উত্তর দিয়ে বললেন, যাও, নামায পড়। কেননা, তুমি নামায পড়নি। সে গিয়ে নামায পড়ে পুনরায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম করল। এবারও তিনি বললেন, যাও, নামায পড়। কেননা, তুমি নামায পড়নি। এভাবে তিনবার হল। এরপর লোকটি আরয করল, সেই সত্ত্বার কসম, যিনি আপনাকে হক দিয়ে প্রেরণ করেছেন। আমি এর চেয়ে উত্তম নামায পড়তে পারি না। আপনি আমাকে নামায শিক্ষা দিন। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, যখন তুমি নামাযের জন্য দাঁড়াবে তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন মজীদ থেকে যা পার পড়বে। এরপর যখন রুকুতে যাবে, পূর্ণ শান্তভাবে রুকু আদায় করবে। তারপর রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। এরপর শান্তভাবে সিজদা করবে। তারপর সিজদা থেকে সোজা হয়ে বসবে। তুমি পুরো নামায এভাবে আদায় করবে। (সহীহ বুখারী ১/১০৯) উক্ত হাদীসের আলোকে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, রুকু ও সিজদায় সর্বনিম্ন এক তাসবীহ পরিমাণ সময় অপেক্ষা করা ওয়াজিব। এতটুকু বিলম্ব না করলে, অথবা রুকু থেকে সোজা হয়ে না দাঁড়ালে কিংবা দুই সিজদার মাঝে সোজা হয়ে না বসলে ঐ নামায পুনরায় পড়া ওয়াজিব। কেননা, এভাবে নামায পড়লে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এটা যে কোনো নামায আদায়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিমাণ। আর সুন্নত হল রুকু সিজদায় অন্তত তিন তাসবীহ আদায় করা। আর তারাবীর নামায তো রমযানের রাতের ফযীলতপূর্ণ আমল। রমযানের খায়র-বরকত ও মাগফিরাত হাসিলের জন্য এই নামায দান করা হয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। তাই তা যত্নসহকারে আদায় করা উচিত। অতএব তারাবীর নামাযে রুকু-সিজদা, কেরাত ইত্যাদি অতি দ্রুততার সাথে আদায় করা অন্যায়। রুকু-সিজদায় সর্বনিম্ন যতটুকু বিলম্ব করতে হয় ততটুকুও যদি না করা হয় তবে ঐ নামায পুনরায় পড়া ওয়াজিব হয়ে যায়। সুতরাং যেভাবে নামায পড়লে তা আদায় হবে, আল্লাহর দরবারে কবুল হবে সেভাবেই পড়া কর্তব্য। এ ব্যাপারে মুসল্লীদেরকে বুঝিয়ে নিতে হবে। প্রশ্নে যে বলা হয়েছে, অনেকে নামাযই পড়ে না, তারা এই উড়ন্ত নামাযে শরীক হতে পারছে এ ধরনের কথা ইবাদতের ক্ষেত্রে চলে না। কেননা, যারা নামায পড়ে না তারা তো গুনাহ করছেই এখন যারা নামায পড়বে তাদের নামাযও যদি যথাযথভাবে না হয় তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক বিষয় আর কী হতে পারে? সুতরাং নামায ভালো করেই পড়তে হবে। এটাই শরীয়তের নির্দেশ।

সহীহ বুখারী ১/১০৯; শরহুল মুনইয়্যাহ পৃ. ২৯৪; আলবিনায়া ২/২৬৫; মাআরিফুস সুনান ৩/১৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৬৪

Sharable Link

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

১৯২২. Question

আমি বিবাহের সময় স্ত্রীর মহর বাবদ ধার্য টাকা কিছু পরিশোধ করি এবং অবশিষ্ট টাকা পরে দেব বলে ওয়াদা দেই। আমার জানার বিষয় হল, আমি কি এখন আমার স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারব?

Answer

হ্যাঁ, পারবেন। মহরের টাকা বাকি থাকলে স্বামী স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারে না-এ ধারণা ভুল। তবে নগদ আদায়যোগ্য মহর পরিশোধ করা না হলে, স্ত্রী শুরু থেকেই স্বামীকে নিজের নিকট আসা থেকে বারণ করতে পারে। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নগদ মহর তো আপনি দিয়েই দিয়েছেন। সুতরাং স্পর্শ না করার বিষয়টি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৫৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১১৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৭৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৮০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩১৬; রদ্দুল মুহতার ৩/১১৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ জাবেদ হোসেন - নারায়ণগঞ্জ

১৯২৩. Question

জনৈক আলেম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা হযরত মুসা আ.-এর মাধ্যমে ফেরাউনকে নিম্নোক্ত প্রস্তাবগুলো দিয়েছিলেন : ক) ঈমান গ্রহণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত বাদশাহী দান করবেন। খ) ঈমান গ্রহণ করলে কিয়ামত পর্যন্ত জীবন ও যৌবন দান করবেন। গ) মৃত্যুর পর জান্নাত দান করবেন। উল্লেখিত কথাগুলো সঠিক সূত্রে প্রমাণিত কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

হাদীস, তাফসীর ও তারীখের নির্ভরযোগ্য ও প্রসিদ্ধ কিতাবসমূহে আমরা এই কথা খুঁজে পাইনি। তাই নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণিত হওয়া ছাড়া, এটা বলা এবং বয়ান করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু শুআইব - বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

১৯২৪. Question

ফুল সম্পর্কে জ্ঞানী-গুণীদের অনেক মন্তব্য পড়েছি, শুনেছি। নিশ্চয়ই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও ফুল সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। আমি এ বিষয়ে একটি সহীহ হাদীস জানতে চাই।

Answer

হ্যাঁ, ফুল নিয়ে নবীজীর অনেক কথা হাদীসের গ্রন্থসমূহে রয়েছে। তন্মধ্যে একটি সহীহ হাদীস হল, হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কাউকে যদি ফুল পেশ করা হয় তাহলে ফিরিয়ে দিও না। কারণ ফুল বহন করতে সহজ এবং এতে সুঘ্রাণ রয়েছে।’

সহীহ মুসলিম হাদীস ২২৫৩; ফাতহুল বারী ১০/৩৮৩-৩৮৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - উমরপুর বাজার মাদরাসা, সিলেট

১৯২৫. Question

একটি সীরাত-গ্রন্থের শুরুর দিকে লেখা হয়েছে, ‘প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা হযরত রূকাইয়্যা রা. নিঃসন্তান অবস্থায় দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।’ ঐ গ্রন্থেই শেষের দিকে লেখা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে উসমান নামে রূকাইয়্যা রা.-এর একজন পুত্রসন্তান ছিল। জানতে চাই, কোন তথ্যটি সঠিক?

Answer

প্রশ্নোক্ত গ্রন্থের দ্বিতীয় বক্তব্যই সঠিক। প্রথম বক্তব্যটি লেখা হয়েছে একটি দুর্বল বর্ণনার ভিত্তিতে, যা ঠিক নয়।

আলইসতিযকার ৪/১৮৪০; আলইসাবা ৭/৬৪৯; আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ৮/২৪২; সীরাতুন্নবী আল্লামা শীবলী নুমানী ২/২৭০; তারীখুল ইসলাম আল্লামা যাহাবী ৩/৬৭৭; আলমুনতাযাম ৩/১৩৮; উয়ূনুল আছার ২/৩৮০; আলকামিল ফিত তারীখ ২/১৭৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আদনান ফারূকী - গফরগাও, ময়মনসিংহ

১৯২৬. Question

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের পূর্বে যে অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলেন তা কোন দিন শুরু হয়েছিল? সফর মাসের শেষ বুধবার তিনি আরোগ্য লাভ করেছিলেন-এ কথা কি ঠিক? সফর মাসের শেষ বুধবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি এমন বক্তব্য দিলে শ্রোতাদের মধ্য থেকে একজন আপত্তি করে। সঠিক বিষয়টি কী জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

সফর মাসের শেষ বুধবার রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরোগ্য লাভ করেছিলেন-এ কথা ঠিক নয়; বরং সফর মাসের শেষ বুধবার তাঁর অসুস্থতা শুরু হয়েছিল এবং এই অসুখেই তিনি ইন্তেকাল করেন।

আসসীরাতুন নববিয়্যাহ, ইমাম যাহাবী পৃ. ৩৯৮; সুবুলুল হুদা ওয়াররাশাদ ১২/২৩৫; ফাতহুল বারী ৭/৭৩৫; আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ৮/২৫-২৬; আলকামেল ফিত-তারীখ ২/৩১৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান - ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

১৯২৭. Question

আমাদের দেশে কোনো কোনো পীরের সামনে সিজদা করতে দেখা যায়। পীর গদ্দীনাশীন আর মুরীদ তাকে সামনে নিয়ে যমিনের উপর সিজদাবনত। এই দৃশ্য আমাদের দেশের এক পীরের আস্তানায় দেখতে পেলাম। এটা দেখে আমার মনে খুব ঘৃণার উদ্রেক হয়েছে। তাই আমি সেখান থেকে চলে আসি। জানতে চাই, যে সিজদা করেছে তার ঈমান কি নষ্ট হয়ে গেছে?

Answer

আল্লাহ তাআলা আপনার ঈমানী গায়রত আরো বৃদ্ধি করে দিন। তাদের উক্ত কুফরী আচরণকে ঘৃণা করে সেখান থেকে চলে আসা আপনার ঈমানের দলীল। এরা ছোট দাজ্জাল। সুকৌশলে মানুষের ঈমানকে ধ্বংস করার জন্য প্রতারণার জাল বিছিয়ে রেখেছে। এদের ফাঁদ থেকে আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হেফাযত করুন। আমীন। সিজদা একমাত্র আল্লাহ তাআলারই হক। কোনো মানুষকে বা কারো মাজারকে কিংবা অন্য কোনো মাখলুককে সিজদা করা সম্পূর্ণ হারাম। যদি ইবাদত-উপাসনার নিয়তে সিজদা করে তাহলে কাফের হয়ে যাবে। যদি আদব ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য করে থাকে তাহলে শুধু এ কারণে সরাসরি কাফের না হলেও সে কুফুরির নিকটবর্তী হয়ে যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই কর্মের সঙ্গে এমন কিছু আকীদা-বিশ্বাসও থাকে, যা তাকে ঈমান থেকে খারিজ করে দেয়। তাই এ থেকে খালিস দিলে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৩; ইমদাদুস সায়েল পৃ. ১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬৮; ইমদাদুল মুফতীন পৃ. ১৬৭-১৭০

Sharable Link

মুহাম্মাদ মুহিউদ্দীন - গেন্ডারিয়া, ঢাকা

১৯২৮. Question

আমার বড় ভাইয়ের বিয়েশাদির আলোচনা চলছিল। পাত্রী দেখতে বিলম্ব হয়ে যায়। ইতিমধ্যে মুহররম মাস এসে পড়ে। কথা ছিল পাত্রী দেখে পছন্দ হলে ৫/১০ দিনের মধ্যে বিয়ে হয়ে যাবে। কিন্তু মুরব্বীগণ সতর্ক করে দিলেন, এটা মুহাররম মাস। এ মাসে বিয়ে অশুভ। তাই আমরা বিয়ের বিষয়টা স্থগিত রেখেছিলাম। জানতে চাই, এ ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা কী?

Answer

মুহাররম মাসে বিয়ে-শাদী অশুভ মনে করা একটি কু-ধারণা, যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। কোনো দিন বা মাসকে অলক্ষুণে মনে করা জাহেলী যুগের ধারণা। শরীয়ত এ ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও শিরকী ধারণা বলে অভিহিত করেছে। হাদীস শরীফে এসেছে, কুলক্ষণ গ্রহণ করা শিরক। (সুনানে আবু দাউদ ২/১৯০) মুহাররম মাসে হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদতের কারণে একশ্রেণীর লোক এ মাসকে অশুভ মনে করে থাকে, যা তাদের মনগড়া বিষয়। হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদত অবশ্যই মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত হৃদয় বিদারক, কিন্তু এ কারণে কোনো মাস বা সময়কে অশুভ মনে করার অবকাশ নেই। পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে সব আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটে। কোনো দিবস-রজনী, সপ্তাহ, মাসের এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। জাহেলী যুগে শাওয়াল মাসে বিবাহ-শাদি করাকে অশুভ মনে করা হত। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. এই ধারণাকে এই বলে খণ্ডন করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাওয়াল মাসেই বিয়ে করেছেন এবং এ মাসেই বিবাহ-রজনী উদযাপন করেছেন। অথচ তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে? (সহীহ মুসলিম হাদীস : ১৪২৩) অতএব প্রমাণিত হল, কোনো দিন বা মাসকে কোনো কাজের জন্য অশুভ মনে করা ঠিক নয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ অলীক, শিরকপ্রসূত।

Sharable Link