তাহিয়া তাসকীন - ময়মনসিংহ

১৫৯০. Question

কিছুদিন পূর্বে আমি ভীষণ অসুস্থ থাকার কারণে দুদিন পর্যন্ত ফরয-ওয়াজিব নামায ব্যতিত কোনো সুন্নত নামায আদায় করতে পারিনি। এখন আমি সুস্থ, কিন্তু সুন্নত পরিত্যাগের কারণে খুব খারাপ লাগছে। জানতে চাই, এর ক্ষতিপূরণের কোনো উপায় আছে কি?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছুটে যাওয়া সুন্নত নামাযগুলো আদায় করতে হবে না। আর অসুস্থতার সময় সুন্নত না পড়ার কারণে কোনো গুনাহ হবে না; বরং হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী সুস্থতার সময় যত আমল করা হত অসুস্থতার কারণে উক্ত আমল ছুটে গেলেও আল্লাহ তাআলা  সুস্থতার আমলের পরিমাণ সওয়াব দান করবেন। তাই এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

-সহীহ বুখারী ১/৪২০; ফাতহুল বারী ৬/১৫৯; উমদাতুল কারী ১৪/৩৪৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৩৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১২; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৩৯৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান - খুলনা

১৫৯১. Question

আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত পুরাতন কবরস্থান রয়েছে। তাতে ১০ থেকে ৩০ বছরের পুরানো কবর আছে। এখন আমি সেখানে বাড়ি নির্মাণ করতে চাচ্ছি। এটি ছাড়া বাড়ি করার উপযোগী আর কোনো স্থান নেই। জানার বিষয় হল, সে স্থানে বাড়ি করতে শরীয়তের কোনো নিষেধ আছে কি না?

 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ কবরস্থানটি যেহেতু অধিক পুরাতন এবং আপনাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন তাই কবরগুলো সমান করে দিয়ে তাতে বাড়ি নির্মাণ করা জায়েয হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ তোফাজ্জল - উত্তরা, ঢাকা

১৫৯২. Question

আমি একটি এনজিওতে কর্মসূচি সংগঠক পদে চাকরি করছি। এই চাকরির উপর আমার পরিবার নির্ভরশীল। আমার কাজ হল, মানুষের মাঝে টাকা ঋণ দেওয়া এবং সে টাকা কিছু বেশিতে আদায় করা। যেমন কাউকে ৫,০০০/-টাকা ঋণ দিলে তার কাছ থেকে কিস্তির মাধ্যমে ৬,০০০/- টাকা আদায় করা হয়। আর এ কাজের জন্য আমাকে মাসিক ৭,০০০/-টাকা বেতন দেওয়া হয়। আমার প্রশ্ন হল, এ বেতন ও এই ধরনের চাকরি কি বৈধ হবে? এ টাকা দিয়ে জীবন ধারণ করে ইবাদত করলে তা কি গ্রহণযোগ্য হবে?

  

Answer

আপনি যে পন্থায় লেনদেন করে থাকেন তা সুদেরই একটি প্রকার। আর সুদ হচ্ছে নিকৃষ্টতম হারাম। তাই এ পদে চাকরি করা জায়েয হবে না এবং এর বেতন ভোগ করাও নাজায়েয। অতএব যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে উপার্জনের কোনো বৈধ পন্থা খুঁজে বের করতে হবে এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

-সূরা বাকারা : ২৭৫; সহীহ বুখারী ১/২৮০; সুনানে আবু দাউদ ২/১১৭; আলবাহরুর রায়েক ৬/১২২; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬৬; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৬১৯; বুহুছ ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা ১/৩৩৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশরাফ আলী - ৩/৬ পাটুয়াটুলী লেন, ঢাকা

১৫৯৩. Question

 

আমি একজন উলূমুল হাদীস অধ্যয়নরত ছাত্র। আমি কিছু দ্বীনী কিতাবে নখ কাটার তারতীবের মধ্যে সুন্নত আছে বলে পেয়েছি। এরপর উক্ত বিষয়ে আমি নিজে তাহকীক করি। কিন্তু কোনো স্পষ্ট হাদীস বা আছার পাইনি। এ সম্পর্কে কোনো দলীল-প্রমাণ থাকলে কিংবা উক্ত বিষয় সুন্নত কী না জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

 

 


 

 

Answer

হুফফায ও নুক্কাদে হাদীস যেহেতু দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে, এ বিষয়ে কোনো কিছুই প্রমাণিত নেই; তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, এ বিষয়ে যা কিছু লোকমুখে প্রসিদ্ধ আছে  বা যা কিছু সনদ ও হাওয়ালাবিহীন আছে সবই ভিত্তিহীন। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত গবেষণার প্রয়োজন নেই। অতএব নখ কাটার কোনো মাসনুন তরীকা থাকলে তা শুধু এই যে, এ কাজটি ডানদিক থেকে শুরু করবে। হাদীস শরীফে এসেছে- 

كان النبي صلى الله عليه وسلم يعجبه التيمن في تنعله وترجله وطهوره وفي شانه كله


সহীহ বুখারী ১/২৯; মুসনাদে আহমদ ১৭/৬২২; সুনানে বায়হাকী ১/৮৬; শরহুল মুহাযযাব ১/৩৩৯; ফাতহুল বারী ১০/৩৫৭; উমদাতুল কারী ২২/৪৫; ফাতহুল মুলহিম ১/৪১৯; আলমাসনূ’ ফী মারেফাতিল হাদীসিল মাওযূ’ পৃ. ১৩০; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১০৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪০৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুর রকিব খান - ঢাকা

১৫৯৪. Question

 

আমাদের প্রকল্পের ভেতর সাবেক জমির মালিক থেকে কোম্পানির ক্রয়কৃত জমিতে প্রায় ১০/১২ বছর পূর্বে ৩টি কবর ছিল। গত ২ মাস আগে এলাকার নিরীহ লোক কোম্পানির অনুমতি ব্যতীত আরেকটি কবর স্থাপন করে। জায়গাটিতে এখন ভবন করা প্রয়োজন। আমাদের প্রকল্পে কোম্পানির নির্ধারিত কবরস্থান ও মসজিদের জায়গা রয়েছে। সেহেতু কোম্পানি উক্ত কবর ৪টি স্থানান্তর করে কোম্পানির নির্ধারিত কবরস্থানে পুনরায় দাফন করতে চাচ্ছে। অতএব এ বিষয়ে কুরআন হাদীসের সঠিক সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।

 


 

Answer

জমির মালিক তথা কোম্পানির অনুমতি ব্যাতীত এলাকাবাসীর জন্য সেখানে নতুন করে কবর দেওয়া  বৈধ হয়নি। আর ঐ জমি যেহেতু কোম্পানির মালিকানাধীন তাই কোম্পানি কর্তৃপক্ষের জন্য নতুন কবরগুলো স্থানান্তর করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে ওয়ারেশদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে স্থানান্তরের কাজ করা ভালো।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭; খানিয়া ১/১৯৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলাল মারাকী ৩৩৭; শরহুল মুনইয়াহ ৬০৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল মালেক - মির্জাপুর, টাঙ্গাইল

১৫৯৫. Question

বর্তমান বিশ্বে বিড়িসিগারেটের ব্যাপক ব্যবহার চলছে। এ ব্যাপারে ইসলামের হুকুম কী? দ্বিতীয়ত বিড়ি-সিগারেট খাওয়া ও বিক্রির ব্যাপারে ইসলামের হুকুম কী?

Answer

বিড়িসিগারেট পান করা নাজায়েয। কেননা এতে নিজের শারীরিক ক্ষতি তো আছেই, পাশাপাশি অন্যেরও ক্ষতি করা হয়। মুখের দুর্গন্ধের দরুন মানুষ ও ফেরেশতাকে কষ্ট দেওয়া হয়। অপচয়ের বিষয়টিও রয়েছে। তাই তা যেমনিভাবে পান করা যাবে না। তেমনিভাবে তা বিক্রি করাও যাবে না।

-আদ্দররুল মুখতার ৬/৪৫৯; রদ্দুল মুহতার ৫/২৯৫; তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২২৭; ফাতাওয়া ফী শুরবিন দুখান

Sharable Link

মুহাম্মাদ ওমর ফারুক মিয়াজী - শাহরাস্তি, চাঁদপুর

১৫৯৬. Question

আমি একজন ব্যবসায়ী। আমি আমার দোকানের কাস্টমারের কারো কাছ থেকে বেশি মূল্য রাখি। অর্থাৎ ন্যায্যমূল্য রাখি। আবার একান্ত আপনজনদের কাছে খুব কমমূল্যে বিক্রি করি। এভাবে বেশিকম করে বিক্রি করা জায়েয হবে কি? এর জন্য কি হাশরের ময়দানে জবাবদিহি করতে হবে?


Answer

আপনজনদের থেকে ন্যায্যমূল্যের কম রাখা এবং সাধারণ ক্রেতাদের থেকে ন্যায্যমূল্য নেওয়া দোষনীয় নয়। তবে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি যেন না নেওয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

-সূরা নিসা : ২৯; তাফসীরে মাযহারী ২/৮৭; হেদায়া ৩/৭৫; ফাতহুল কাদীর ৬/১৪৩; আলবাহরুর রায়েক ৬/১২০

Sharable Link

মুহাম্মাদ মুস্তাফিযুর রহমান - তামীরুল হায়াত ইনস্টিটিউট মিরপুর, ঢাকা

১৫৯৭. Question

মসজিদের ইমাম সাহেব মাসআলার আলোচনায় বললেন, নামাযে কেরাতের তারতীব ঠিক রাখা ওয়াজিব। আমরা জানি যে, ওয়াজিব তরক করলে সাহু সিজদা করতে হয়। এক্ষেত্রে সাহু সিজদা করতে হবে কি না? যদি সাহু সিজদা করতে না হয় তাহলে নামাযে সূরার তারতীব ঠিক রাখা ওয়াজিব হল কীভাবে? বিস্তারিত জানাবেন।

 


Answer

নামাযে সূরাসমূহের তারতীব ঠিক রাখা উত্তম। নামাযে সূরার তারতীব ঠিক রাখা ওয়াজিব হওয়ার কথা ঠিক নয়। হ্যাঁ, এটা ইলমে তাজবীদের মাসআলা হতে পারে। কিন্তু এটি নামাযের ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই ফরয-ওয়াজিব নামাযে ইচ্ছাকৃত সূরার তারতীব ভঙ্গ করা মাকরূহ তানযীহী। কিন্তু অনিচ্ছাকৃত হয়ে গেলে মাকরূহ  হবে না। সুতরাং এর কারণে সাহু সিজদাও ওয়াজিব হবে না।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪৫৩; শরহুল মুনইয়াহ ৪৯৪; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলালমারাকী ১৯৩; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৭

Sharable Link

আবুল কালাম - গাজীপুর

১৫৯৮. Question

আমি শুনেছি যে, ছেলে আর মেয়ে শুধু তারা দুজনে এক হয়ে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিবাহ করলে তা জায়েয হবে। কথাটি কতটুকু সত্যি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

 


Answer

না, এভাবে বিবাহ সংঘটিত হবে না। বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার জন্য অন্তত দুজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার উপস্থিতিতে তাদেরকে শুনিয়ে ইজাব কবুল হওয়া আবশ্যক। অন্যথায় বিবাহ শুদ্ধ হবে না। 

-ইলাউস সুনান ১১/১৭; জামে তিরমিযী ১/২১০; ফাতহুল কাদীর ৩/১১০; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফেরদৌস আলী - চরমোনাই, বরিশাল

১৫৯৯. Question

 

আমি গত বছর ভীষণ অসুস্থ ছিলাম। তখন আমি মান্নত করেছিলাম যে, যদি আমি সুস্থ হই তবে গরীব-দুঃখীকে একটি ছাগল ছদকা করব। সে অনুযায়ী গত সপ্তাহে আমাদের এলাকার সেলিম ফকিরকে একটি এক বছর বয়সী ছাগল ছদকা করি। সে তা নিজের কাছে রেখে বড় করার নিয়ত করে। কিন্তু ঘটনাক্রমে গত রাতে তার বাড়ি থেকে ছাগলটিকে শিয়াল খেয়ে ফেলে। এখন জানতে চাই, আমার মান্নত পূর্ণ হয়েছে কি না? আমার উপর ছাগল যবাই করে গোশত করে দেওয়া জরুরি ছিল কি? এলাকার কেউ কেউ এমন মন্তব্য করেছেন। বিষয়টি বুঝিয়ে বলবেন।

 


 

Answer

ওই গরীব ব্যক্তিকে ছাগলটি দেওয়ার দ্বারাই আপনার মান্নত পূর্ণ হয়ে গেছে। তা যবাই করে গোশত করে দেওয়া আপনার উপর জরুরি ছিল না। সুতরাং তাকে দেওয়ার পর শিয়াল নিয়ে যাওয়ার কারণে আপনার মান্নত আদায়ে কোনো ত্রুটি আসেনি। 

-আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫১; আননাহরুল ফায়েক ৩/৬২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৪০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২০

Sharable Link

মুহাম্মাদ শরীফুল্লাহ - ডিওএইচএস, বনানী, ঢাকা

১৬০০. Question

একাধিক সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে চাইলে উত্তম নিয়ম কী? প্রত্যেক সিজদার জন্য কি দাঁড়াতে হবে? তিলাওয়াতে সিজদার তাকবীর বলা কি ফরয? দাঁড়ানোর হুকুম কী? সিজদা আদায়ের পর না দাঁড়ালে কোনো সমস্যা আছে কি? সিজদার আয়াত পড়ার পর যদি কেউ সাথে সাথে সিজদা না করে তবে  কোনো  অসুবিধা  আছে  কি?  বিস্তারিত জানতে চাই।

 


Answer

তিলাওয়াতের সিজদার সময় দাঁড়ানো থেকে সিজদায় যাওয়া এবং সিজদা করে আবার দাঁড়িয়ে যাওয়া উভয়টিই মুস্তাহাব। তাই একাধিক তিলাওয়াতের সিজদা আদায় করতে চাইলেও এভাবেই করা উচিত। তবে বসে বসে সিজদা করলেও সিজদা আদায় হয়ে যাবে। আর তিলাওয়াতের সিজদার জন্য তাকবীর অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যাওয়া সুন্নত। আর সিজদার আয়াত পড়ে তৎক্ষণাৎ সিজদা করা সম্ভব হলে তা করে নেওয়াই ভালো। পরে করলেও কোনো গুনাহ নেই।

-মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা ৩/৩৮৩ হা: ৪২০৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৬; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলালমারারকী ২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৭

Sharable Link

মাওলানা আবদুল্লাহ - মাদানী নগর মাদরাসা

১৬০১. Question

আমার দাদা আমার অসুস্থতার সময় মান্নত করেছিলেন যে, নাতি ভালো হলে মসজিদের মুসল্লীদেরকে মিষ্টি খাওয়াব।

আল্লাহর রহমতে আমি সুস্থ হয়েছি। এখন আমার দাদার ওই মান্নত কি পূরণ করা জরুরি? জানতে চাই, এ মসজিদের সর্বস্তরের মুসল্লীগণ তা খেতে পারবে কি? নাকি শুধু গরীব শ্রেণীর লোকজন খেতে পারবে? বিস্তারিত জানাবেন।

 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ওইভাবে বলার দ্বারা গরীব মুসল্লীদের অংশ পরিমাণ মান্নত হয়েছে। তাই তা পূর্ণ করা জরুরি। আর মসজিদের সর্বস্তরের মুসল্লীদেরকে দেওয়া হলে ধনী-গরীব সকলেই ওই মিষ্টি খেতে পারবে। কারণ এক্ষেত্রে ধনীদের অংশ হাদিয়া গণ্য হবে। আর গরীবদের অংশ মান্নত ধর্তব্য হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৭; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৫৫৯-৫৬০

Sharable Link

মুহাম্মাদ আমীনুল হক - কোতয়ালী, ময়মনসিংহ

১৬০২. Question

আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তি বজ্রপাতে মারা গেছে। যেহেতু এ ধরনের লাশ চুরি হয়ে যায়। তাই ওয়ারিশগণ স্থানীয় আলেমের পরামর্শে তার কবরের উপর চওড়া কাঠের তক্তা বিছিয়ে দিয়ে তার উপর মাটি দিয়েছে। জানতে চাই, আমাদের এ কাজ কি ঠিক হয়েছে?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লাশের হেফাযতের উদ্দেশ্যে কবরের উপর কাঠের তক্তা ব্যবহার করা ঠিক হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ অবস্থায় কবরে কাঠ ব্যবহার করা ঠিক নয়।

-মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা ৬/৩৫১-৩৫২ হাদীস নং ১১৮৯২, ১১৮৮৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৯২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৬৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৪; মাজমাউল আনহুর ১/২৭৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদুল্লাহ - ডিআইটি প্লট গেন্ডারিয়া, ঢাকা

১৬০৩. Question

নামাযে মোবাইল বেজে উঠলে যদি নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে তা বন্ধ করা হয় তাহলে নামাযের হুকুম কী হবে? কোন সুরতে নামায ভাঙ্গবে আর কোন সুরতে ভাঙ্গবে না। জানালে উপকৃত হব।

১. পাঞ্জাবি বা প্যান্টের পকেটে মোবাইল আছে। তা বের করা ছাড়াই পকেটের উপর থেকে চাপ দিয়ে কিংবা হাত ঢুকিয়ে সেখানেই এক হাত দ্বারা তা বন্ধ করা।

২. পাঞ্জাবি বা প্যান্টের সাইড পকেট থেকে বের করে এনে দেখে দেখে বন্ধ করা।

৩. বুক পকেট থেকে এনে দেখে বন্ধ করা।

৪. পকেট থেকে ফোল্ডিং সেট বের করে খুলে তারপর বন্ধ করা।

 


Answer

১. মোবাইলের দিকে না তাকিয়ে এক হাত দিয়ে দ্রুত বন্ধ করে দিলে নামায ফাসেদ হবে না। চাই পকেটের উপর থেকে বন্ধ করা হোক বা ভেতরে হাত দিয়ে বন্ধ করা হোক। নামায অবস্থায় মোবাইল বেজে উঠলে তা বন্ধ করার এটি উত্তম ব্যবস্থা।

২. পকেট থেকে বের করে দেখে দেখে বন্ধ করলে, এক হাত দিয়ে বন্ধ করলেও নামায ভেঙ্গে যাবে। কারণ এ অবস্থায় কোনো আগন্তুক তাকে দেখলে সে নামাযে নেই বলেই প্রবল ধারণা করবে।

৩. বুক পকেট থেকে বের করে দেখে দেখে বন্ধ করলেও নামায ভেঙ্গে যাবে।

৪. ফোল্ডিং সেটও না দেখে এক হাত দ্বারা দ্রুত বন্ধ করে দিলে নামায ভাঙ্গবে না। কিন্তু যদি দুই হাত ব্যবহার করে কিংবা দেখে দেখে বন্ধ করে তবে নামায ভেঙ্গে যাবে। তেমনিভাবে এক হাত দিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে যদি তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় ব্যয় হয়ে যায় তবুও নামায ফাসেদ হয়ে যাবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫৬৪; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৪৪৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১১, ১২; রদ্দুল মুহতার ১/৬২৪, ৬২৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবুল কাসেম - দুর্গাপুর, নেত্রকোনা

১৬০৪. Question

জনৈকা মহিলা নিজ ঘরেই সুন্নত ইতিকাফ শুরু করেছে। তিন দিন পর তার মাসিক শুরু হয়ে যায়। এখন তার করণীয় কী? পরবর্তী সময়ে এই ইতিকাফের অবশিষ্ট দিনগুলো কাযা করতে হবে কি না?

 


Answer

মাসিক শুরু হওয়ার কারণে তার ইতিকাফ ভেঙ্গে গেছে। যে দিন মাসিক শুরু হয়েছে শুধু সেই একদিনের ইতিকাফ কাযা করে নেওয়া জরুরি। এই এক দিন কাযা করার নিয়ম হল, একদিন সূর্যাস্তের আগে ইতিকাফ শুরু করতে হবে। পরবর্তী দিন রোযা থাকতে হবে। সূর্যাস্তের পর ইতিকাফ শেষ হবে। এভাবে একদিন রোযাসহ ইতিকাফ করলেই কাযা আদায় হয়ে যাবে। পুরো দশ দিনের ইতিকাফ কাযা করতে হবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭; জামিউর রুমুয ১/৩৮৫; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫; আলজাওহারা পৃ. ১৮৬; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৭/২৮৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদ দুস্তাম - হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ

১৬০৫. Question

আমাদের এলাকায় সরিষার বিনিময়ে সরিষার তেল আদানপ্রদান করা হয়। এককেজি সরিষা দিলে ২০০ গ্রাম তেল দেয়। মিলে গিয়ে ভাঙ্গানো ঝামেলা, তাই এমন কারবারের প্রচলন হয়েছে। এককেজি সরিষা ভাঙ্গালে প্রায় ২২০ থেকে ২২৫ গ্রাম তেল হয়।

এখন জানতে চাই, আমাদের এলাকার কারবারটি বৈধ কি না?

 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনাদের এলাকার ওই কারবারটি বৈধ নয়। তা সুদি কারবারের অন্তর্ভুক্ত। কারণ সরিষার বিনিময়ে সরিষার তেল নিতে চাইলে সরিষা ভাঙ্গালে যতটুকু তেল পাওযা যাবে তার চেয়ে বেশি তেল দিয়ে লেনদেন করতে হবে। তাই এক কেজি সরিষার বিনিময়ে ২২০ বা ২২৫ গ্রামের বেশি তেল দিতে হবে। যেন সরিষার মধ্যে যতটুকু তেল আছে সেটারও বিনিময়ে সমপিরিমাণ তেল  হয়ে যায়। আর অতিরিক্ত যতটুকু থাকবে তা খোলের পরিবর্তে হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনারা সরিষা ও তেলে লেনদেন না করে উভয়টি টাকার মোকাবেলায় বেচাকেনা করতে পারেন। অর্থাৎ সরিষার দাম নির্ধারণ করে টাকায় তা বিক্রি করবেন। এর পর তা দ্বারা তেল ক্রয় করবেন।

-আলবাহরুর রায়েক ৬/১৩৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪১৩; ফাতহুল কাদীর ৬/১৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৮৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ খুরশিদ - অষ্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ

১৬০৬. Question

মক্কায় অবস্থানকারী এক ব্যক্তি যার বাড়ি বাংলাদেশে সে জুমাদাল উলা মাসে বাংলাদেশ থেকে মক্কা মুকাররমা যায়। উমরার নিয়ত করে প্রবেশ করে। এরপর সে রমযানে মদীনা মুনাওয়ারা যায়। সেখানে ইতিকাফ করে। এরপর সে শাওয়াল মাসে মক্কা মুকাররমা যেতে চায়। এ ব্যক্তির এ বছর হজ্ব করার ইচ্ছা। যেহেতু হজ্বের আর মাত্র দুই মাস বাকি আছে, আর মক্কাতে প্রবেশের সময় ইহরাম করে প্রবেশ করেতে হবে, তাই তামাত্তুর উদ্দেশ্যে ওমরার ইহরাম করতে পারবে কি না? তার জন্য কি তামাত্তু করা জায়েয হবে? শুনেছি, মক্কীদের জন্য নাকি তামাত্তু করা জায়েয নেই। তামাত্তু করলে দমে জেনায়েত ও দমে শোকর দেওয়া লাগবে কি না?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ওই ব্যক্তির জন্য তামাত্তু করা জায়েয। অর্থাৎ শাওয়াল মাসে মক্কা মুকাররমা প্রবেশের সময় তামাত্তুর নিয়তে উমরা করতে পারবে এবং এক্ষেত্রে তার উপর তামাত্তুর দমে শোকর ওয়াজিব হবে। জেনায়েত আসবে না। কারণ মক্কায় অবস্থানকারী ব্যক্তি যদি শাওয়ালের আগেই মীকাত থেকে বের হয়ে যায় তাহলে আফাকী তথা মক্কার বাইরে অবস্থানকারীদের হুকুমে হয়ে যায়। তাই ওই ব্যক্তি মক্কীর হুকুমে থাকবে  না। তার জন্য কিরান-তামাত্তু সবই করা জায়েয।

-মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা ৮/৬৯০ হাদীস : ১৫৬৩২; মানাসিকে মোল্লা আলী পৃ. ১৭৬, ২৮১; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৫/৩৫৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ খালেদ - বাসাইল, টাঙ্গাইল

১৬০৭. Question

আমাদের এলাকায় এ পদ্ধতিতে ধান বেচাকেনা হয় যে, আপনি ১০০০/-টাকা দিবেন। ৪ বা ৫ মাস পরে আপনাকে ৩ বা ৪ মণ ধান দেবে। আলেমগণ এভাবে ধান বেচাকেনাকে জায়েয বলেন। আমরা শুনেছি যে, ধান ক্ষেত থেকে এভাবে বিক্রি করা নাকি নাজায়েয। বিষয়টি বুঝিয়ে বলবেন। আমাদের এলাকার ওই পদ্ধতিতে ধান বেচাকেনা শরীয়তসম্মত হবে কি না? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ওই কারবারটি বাইয়ে সালামের (আগাম খরিদ) অন্তর্ভুক্ত। বাইয়ে সালাম জায়েয হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে।  যেমন-

১. পণ্য ও মূল্য সুনির্দিষ্ট করা। অর্থাৎ ধান বেচাকেনার ক্ষেত্রে ধানের প্রকার, গুণগত মান এবং পরিমাণ সুনির্ধারিত হওয়া এবং সে অনুযায়ী মূল্যও চূড়ান্ত হওয়া।

২. পূর্ণ মূল্য চুক্তির সময়ই হস্তগত করা এবং পণ্য প্রদানের তারিখ ও স্থান নির্ধারিত করে নেওয়া।

৩. কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেতের ধান দেওয়ার শর্ত না করা ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, নির্দিষ্ট ক্ষেতের ধান দেওয়ার শর্ত করে আগাম বেচাকেনা করলে চুক্তি নাজায়েয হয়ে যাবে। সুতরাং প্রশ্নের শোনা কথাটি ঠিক আছে।

এখানে আরো উল্লেখ্য যে, বাইয়ে সালাম তথা আগাম বেচাকেনার ক্ষেত্রেও মূল্য হওয়া উচিত যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ের। অগ্রিম দাম দেওয়ার কারণে মূল্যের মধ্যে অনেক বেশি তফাত করা ঠিক নয়। এটি শরীয়তের ভাষায়  গাবনে  ফাহেশের অন্তর্ভুক্ত। ১০০০/-টাকার বিনিময়ে ৫/৬ মাস পরে ৩/৪ মণ ধান দেওয়ার বিষয়টি এ পর্যায়ে পড়ে।

-ইলাউস সুনান ১৪/৪১২; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৬০; রদ্দুল মুহতার ৫/২১৪

Sharable Link

মাওলানা আবুল কালাম - গাজিপুর

১৬০৮. Question

 

একব্যক্তি দরিদ্র লোককে যাকাতের নিয়ত ছাড়া এমনি সদকা করেছে। পরক্ষণেই লোকটির হাতে টাকা থাকতেই সে তা যাকাত হিসাবে দেওয়ার নিয়ত করল। এর দ্বারা তার যাকাত আদায় হবে কি না?

 


 

Answer

লোকটি ঐ টাকা খরচ করার আগেই দাতা যদি প্রদত্ত টাকা যাকাত হিসেবে নিয়ত করে তবে তা যাকাত হিসাবে গণ্য হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/২১০; আননাহরুল ফায়েক ১/৪১৮; মাজমাউল আনহুর ১/২৯০; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭১

Sharable Link

আরমান - নান্দাইল, ময়মনসিংহ

১৬০৯. Question

আমার পিতা বার্ধক্যের দরুণ রোযা রাখার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন। জানতে চাই, তার ফিদয়া আদায় করতে হবে কি না? আমার পিতার উপর যাকাত ফরয নয়। তিনি খুব একটা স্বচ্ছল নন। এ অবস্থায় কি তাকে ফিদয়া আদায় করতে হবে? এক রোযার ফিদয়া একাধিক ব্যক্তিকে দেওয়া জায়েয হবে কি না?

 


Answer

হ্যাঁ, তাকে রমযানের প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে ফিদয়া আদায় করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- (তরজমা) আর যাদের রোযা রাখার সামর্থ্য নেই তারা একজন মিসকীনের খানা সমপরিমাণ ফিদয়া দিবে। (সূরা বাকারা : ১৮৪)

এমন ব্যক্তির উপর যাকাত ফরয না হলেও ফিদয়া দিতে হবে। কারণ ফিদয়া দেওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা জরুরি নয়। আর এক রোযার ফিদয়া একাধিক ব্যক্তিকেও দেওয়া যায়। তবে একজনকে দেওয়া উত্তম।

-আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৭; রদ্দুল মুহতার ২/৪২৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ হুসাইন আহমদ - কাপাসিয়া, গাজীপুর

১৬১০. Question

আমি ইটের ব্যবসা করি। ইটের ভাটা আছে। জানতে চাই, ভাটার যাকাত আদায় করব কীভাবে? কিছু ইট কাঁচা কিছু ইট ভাটায় পুড়ছে আর কিছু পরিপূর্ণ ইট। আবার মাটিও কিনে রাখি। লাকড়ি ও কয়লার স্টক থাকে। এগুলোর উপর যাকাত দিতে হবে কি না? দিলে কী উপায়ে।

 


Answer

কাঁচা, পাকা ইট এবং যে ইট পুড়ছে এগুলোর যাকাত দিতে হবে। তদ্রূপ ইট তৈরির জন্য যে মাটির মজুদ রাখা হয়েছে তারও যাকাত দিতে হবে। এসব কিছু পাইকারী বিক্রি করে দিলে যে দাম পাওয়া যায় সে হিসেবে যাকাত দিবে।

আর ভাটার জ্বালানী হিসাবে যে কয়লা বা লাকড়ির স্টক থাকবে তার যাকাত দিতে হবে না।

-হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪০৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২, ১৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/২২৮; আননাহরুল ফায়েক ১/৪৩৯; ফাতহুল কাদীর ২/১৬৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - উত্তরা, ঢাকা

১৬১১. Question

আমার কয়েক রাকাত তারাবীর নামায ছুটে যায়। ছুটে যাওয়া রাকাতগুলি ইমামের সাথে বিতর আদায়ের পর পড়ে নিয়েছি। কিন্তু আমার জানা নেই যে, ছুটে যাওয়া তারাবীর নামাযগুলো বিতরের আগে পড়তে হয় না পরে পড়তে হয়। সুতরাং আমার জানার বিষয় হল, আমার নামায সহীহ হয়েছে কী?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বিতর নামায জামাতে পড়ার পর ছুটে যাওয়া তারাবী পড়া নিয়মসম্মতই হয়েছে এবং পরবর্তী তারাবীগুলোও সহীহ হয়েছে। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী যদিও বিতর নামায তারাবীর পরে পড়াই উত্তম; কিন্তু এক্ষেত্রে জামাতের সাথে বিতর পড়ার স্বার্থে তারাবির বাকি অংশ বিতরের পরে পড়ে নেওয়া ঠিকই হয়েছে।

- হিদায়া ১/১৫১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৩৫; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ১/২৯; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৪০৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১৭, বাদায়েউস সানায়ে ১/৬৪৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৫২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আরমান - খিলগাও, ঢাকা

১৬১২. Question

জনৈক ব্যক্তি যোহরের নামায আদায় করেন। সালাম ফিরানোর পর তার পাশে নামায আদায়কারী ব্যক্তি তাকে বলল, আপনি তিন রাকাত পড়েছেন। তখন তিনি বললেন, না। আমি চার রাকাতই পড়েছি। নিজের কথার উপর এখনও অসুস্থ। জানতে চাই, তিনি এখন নিজের উপর ভরসা করবেন, নাকি ঐ ব্যক্তির কথা অনুযায়ী আমল করবেন?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির কথা শোনার পরও যদি নিজের কথা অর্থাৎ চার রাকাত পড়া হয়েছে-এ ধারণাই প্রবল থাকে তাহলে নামায পরিপূর্ণ হয়েছে বলেই গণ্য হবে। এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির কথা ধর্তব্য হবে না এবং তদনুযায়ী আমল করাও জরুরি হবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৪; হাশিয়াতুত্ত্বাহতাবী আলালমারাকী পৃ. ২৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু সাদেক নূর - বসুন্ধরা, ঢাকা

১৬১৩. Question

আমাদের মসজিদের মুয়াযযিন একদিন ফজরের নামাযের সময় হয়েছে ভেবে আযান দিয়ে দেয়। পরবর্তীতেও স্থির করা যায়নি যে, আযান সময়মতো দেওয়া হয়েছে না পরে। তবে আগে হয়েছে বলেই প্রবল ধারণা। এরপর আমরা ফজরের ওয়াক্তের মধ্যে ঐ আযান দ্বারা নামায আদায় করি।  আমাদের নামায সহীহ হয়েছে কি না?

 


Answer

ওয়াক্তের পূর্বে আযান দিলে আযান সহীহ হয় না। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনাদের আযান হয়নি। এক্ষেত্রে ওয়াক্ত হওয়ার পর আবার আযান দেওয়া উচিত ছিল। আযান না দেওয়ার কারণে মাকরূহ হয়েছে। অবশ্য আযান ছাড়া ফরয নামায পড়লেও যেহেতু নামায হয়ে যায় তাই আপনাদের ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে। 

-আলবাহরুর রায়েক ১/২৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫২২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৮১; মাবসূত সারাখসী ১/১৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৮৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - বাগেরহাট, খুলনা

১৬১৪. Question

আমার বাড়ি কুমিল্লা। সেখানে আববা, আম্মাসহ পরিবারের অন্যরা থাকে। আমি ঢাকায় মাদরাসায় পড়ি। সেখানে আমার থাকা-খাওয়ার পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে। যেহেতু ঢাকায় পনেরো দিনের বেশি থাকা হয় তাই ওয়াতনে ইকামত হিসাবে পূর্ণ নামায পড়ি। মাঝেমধ্যে কিছু দিনের জন্য কুমিল্লায় যাওয়া হয় এবং কয়েক দিন সেখানে থাকি। জানার বিষয় হল, কুমিল্লায় যাওয়ার কারণে ঢাকার ওয়াতনে ইকামত বাতিল হয়ে যায় কি না? আর পনেরো দিনের কম থাকার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসা হলে নামায কসর করব কি না?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কুমিল্লায় সাময়িক সময়ের জন্য যাওয়ার কারণে ঢাকার ওয়াতনে ইকামত বাতিল হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ঢাকা পরিপূর্ণ ত্যাগ করার নিয়তে মালপত্র নিয়ে যাওয়া না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ঢাকা ওয়াতনে ইকামত হিসেবে বহাল থাকবে।

আর ঢাকা যেহেতু ওয়াতনে ইকামত হিসাবে বহাল থাকছে তাই এখানে পনেরো দিনের কম থাকার উদ্দেশ্যে আসা হলেও পুরো নামায পড়তে হবে। কসর করা যাবে না।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; মাজমাউল আনহুর ১/২৪৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আম্মার হুসাইন - কটিয়াদি, কিশোরগঞ্জ

১৬১৫. Question

এক ব্যক্তি বাস থেকে পড়ে কপালে খুব আঘাত পেয়েছে, তাই সে কপালের উপর সিজদা করতে সক্ষম নয়। সে নাকের উপর সিজদা করে। জানতে চাই, ঐ ব্যক্তির নাকের উপর সিজদা করার কারণে তার নামায হয়েছে কি না?

 


Answer

সিজদায় কপাল এবং নাক রাখা জরুরি। কোনো ওযরের কারণে সিজদায় কপাল জমিনে রাখা সম্ভব না হলে শুধু নাক দ্বারা সিজদা করা জায়েয। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি যেহেতু কপাল রাখতে সক্ষম নয় তাই তার জন্য শুধু নাকের উপর সিজদা করা জায়েয হয়েছে এবং তার নামায সহীহ হয়েছে।

-আলমাবসূত সারাখসী ১/২১৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩৫; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ২৮৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ শাকিল খান - ইব্রাহিমপুর, ঢাকা

১৬১৬. Question

আমাদের এলাকার খতীব খুতবা ছাড়াই জুমার নামায পড়িয়েছেন। জানতে চাই,এ জুমার নামায আদায় হয়েছে কি না এবং জুমার দিন খুতবা পড়ার কী হুকুম?

 


Answer

জুমার নামায সহীহ হওয়ার জন্য খুতবা অন্যতম শর্ত। খুতবা ব্যতীত জুমার নামায আদায় হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে জুমার নামায আদায় হয়নি। সকলকে ঐ দিনের যোহরের নামায কাযা করে নিতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৪৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২১৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮২; মাজমাউল আনহুর ১/২৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর

১৬১৭. Question

 

এক ব্যক্তি মাগরিবের ফরযের মধ্যে এক রাকাতে সূরা কুরাইশ ও সূরা মাউন পড়েছে এবং মাঝে বিসমিল্লাহও পড়েছে। এভাবে এক রাকাতে একাধিক সূরা পড়লে কোনো সমস্যা আছে কি না?

 


 

Answer

একই রাকাতে পর পর দুই বা ততোধিক সূরা পড়লে নামাযের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে ফরয নামাযে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা না করাই ভালো।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৯৭; আননাহরুল ফায়েক ১/২৩৭; তাতারখানিয়া ১/৪৫২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৭; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবুল বাশার শিকদার - মোড়েলগঞ্জ, বাগেরহাট

১৬১৮. Question

 

আমি একজন ড্রাইভার। ঢাকায় থাকি। কিন্তু দৈনিক গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম আসা-যাওয়া করতে হয়। সেখানে নামায কসর পড়ব না পূর্ণ পড়ব? উল্লেখ্য, সেখানে আমার থাকার নির্ধারিত স্থান নেই। হোটেলে থাকি।

 


 

Answer

চট্টগ্রাম সফরকালে পথিমধ্যে আপনি মুসাফির  গণ্য হবেন।  আর গন্তব্যস্থলে পৌঁছে এক এলাকায় ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত না থাকলে সেখানেও মুসাফির হিসাবে নামায কসর করবেন।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল গাফফার - বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ

১৬১৯. Question

আমি একদিন মাগরিবের নামাযে  প্রথম রাকাতে সূরা ইখলাছ ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফীল পড়েছি। আমার নামায সহীহ হয়েছে কি? না হলে কী করতে হবে?

 


Answer

আপনার নামায সহীহ হয়েছে। তবে ফরয নামাযে ইচ্ছাকৃতভাবে সূরার ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ণ করা অনুত্তম। অবশ্য ভুলবশত হলে ক্ষতি নেই।

-শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৪৯৪; ফাতহুল কাদীর ১/২৯৯; আলমুগনী ২/১৬৯; ইলাউস সুনান ৪/১৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৪৬-৫৪৭

Sharable Link