মুমতাহিনা মাহদিয়া - কুষ্টিয়া

৬১০৫. Question

আমার কানে দুলের ছিদ্রটি এতই সূক্ষ্ম ও চিকন যে, দুল পরিধান করলে কান ব্যাথা হয়ে যায় এবং ফুলে যায়। তাই সাধারণত কান খালি থাকে। গোসলের সময় সে ছিদ্রে যেহেতু পানি পৌঁছে না তাই গোসল শেষে দুল বা এজাতীয় কোন বস্তুর সুঁচালো অংশ পানিতে ভিজিয়ে সেখানে পানি পৌঁছাই। বলাবাহুল্য, এতে বেশ কষ্ট হয়।

মুহতারামের নিকট আমার জানার বিষয় হল, ছিদ্রের মধ্যে এভাবে পানি না পৌঁছিয়ে শুধু বহিরাংশে হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করে পানি পৌঁছে দিলে কি আমার গোসল পূর্ণ হবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার জন্য গোসলের সময় কানের ছিদ্রে পানি পৌঁছানোর জন্য কোনো কিছু প্রবেশ করানো জরুরি নয়; বরং গোসলের সময় ভালভাবে হাত দিয়ে ঐ স্থান নাড়াচাড়া করবেন যেন ছিদ্র থাকলে এমনিতেই পানি পৌঁছে যায়। এতেই আপনার গোসল পূর্ণ হয়ে যাবে।

আলমুহীতুল বুরহানী ১/২২৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৭৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৪৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪; রদ্দুল মুহতার ১/১৫২

Sharable Link

হুযাইফা - নেত্রকোণা

৬১০৬. Question

আমাদের বাসায় ছারপোকার উপদ্রব খুব বেশি। তাই মাঝে মাঝে ঘুম থেকে উঠে দেখি, গেঞ্জিতে ছারপোকার রক্ত লেগে আছে। মুহতারামের কাছে জানতে চাচ্ছি, ছারপোকার রক্ত কি নাপাক? কাপড়ে লাগলে কি কাপড় নাপাক হয়ে যায়?

Answer

ছারপোকার রক্ত নাপাক নয়। কাপড়ে লাগলে কাপড় নাপাক হয় না। কেননা যেসব কীটপতঙ্গের শরীরে প্রবাহিত রক্ত নেই সেসব কীটপতঙ্গের রক্ত নাপাক নয়। তাই তা কাপড়ে লাগলে কাপড় নাপাক হবে না। তবে তা যেহেতু ময়লা তাই তা ধুয়ে নেওয়া সম্ভব হলে ধুয়ে নেওয়া ভালো।

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২০৩২; কিতাবুল আছল ১/৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৯৫; জামিউর রুমুয ১/১৫২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৬

Sharable Link

আবদুর রহমান - মিরপুর, ঢাকা

৬১০৭. Question

একবার আমি ওযু করে হাত পায়ের নখ কাটি। এরপর এ স্থানগুলো আর না ধুয়েই নামায আদায় করি। জানার বিষয় হল, আমার উক্ত নামায কি সহীহ হয়েছে, না পুনরায় আদায় করতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

হাঁ, আপনার উক্ত নামায আদায় হয়েছে; পুনরায় পড়তে হবে না। কেননা ওযুর পর নখ কাটা হলে তা নতুন করে ধৌত করার প্রয়োজন নেই। একারণে ওযুর কোনো ক্ষতি হয় না। তাবেয়ী ইউনুস রাহ. বলেন

عَنِ الْحَسَنِ؛ فِي الرَّجُلِ يَأْخُذُ مِنْ شَعْرِهِ وَمِنْ أَظْفَارِهِ بَعْدَ مَا يَتَوَضَّأُ؟ قَالَ : لاَ شَيْءَ عَلَيْهِ.

হাসান বসরী রাহ.কে জিজ্ঞাসা করা হল, ওযুর পর চুল ও নখ কাটলে (পুনরায় ঐ স্থান ধোয়া বা ওযু করা) কি আবশ্যক?

 তিনি বললেন, কোনো কিছুই আবশ্যক নয়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ৫৭৬)

কিতাবুল আছল ১/৩৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৪; দুরারুল হুক্কাম ১/১০; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৭২

Sharable Link

মাস্টার মোহাম্মাদ মাসুম - মুরাদনগর, কুমিল্লাহ

৬১০৮. Question

একজন নারীর প্রতি মাসে সাধারণত সাত দিন হায়েয আসে। কখনো কখনো ষষ্ঠ দিনে বন্ধ হয়ে যায়। প্রশ্ন হল, কোনো মাসে ষষ্ঠ দিনে রক্ত বন্ধ হয়ে গেলে কবে থেকে সে নামায শুরু করবে? তার আদত কিন্তু ৭ দিন।

Answer

ষষ্ঠ দিনে রক্ত বন্ধ হয়ে গেলে ঐ দিন থেকেই গোসল করে নামায পড়া শুরু করে দেবে। এক্ষেত্রে সপ্তম দিনের অপেক্ষা করবে না। তবে পূর্বের অভ্যাস যেহেতু সাত দিন ছিল তাই সপ্তম দিন অতিবাহিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সহবাস থেকে বিরত থাকবে।

কিতাবুল আছল ২/৪৩; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/২০৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৭১; আলমুহীতুর রাযাবী ২/৮৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৪

Sharable Link

রায়হান - ঢাকা

৬১০৯. Question

আমি একজন রাজমিস্ত্রী। পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার চেষ্টা করি। অনেক সময় নামায শেষে দেখি, আমার নখের ভেতর কাদা ঢুকে আছে। আমি জানতে চাচ্ছি, নখের ভেতর কাদা ঢুকে থাকলে কি ওযু হবে? আশা করি জানাবেন।

Answer

নখের ভেতর মাটি লেগে থাকলেও শরীরে পানি পৌঁছার ক্ষেত্রে তা প্রতিবন্ধক হয় না। তাই নখের ভেতর কাদা ঢুকে থাকলেও ওযু হয়ে যাবে। একারণে ওযুর সমস্যা হবে না।

আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ, পৃ. ১৮; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়্যা ১/৩৩৬; আলবাহরুর রায়েক ১/১৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪

Sharable Link

ওবায়দুল্লাহ - আলীপুর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

৬১১০. Question

১. দোতলা মসজিদের ইমাম জুমার নামাযে দোতলায় দাঁড়ালে নিচ তলার মুসল্লীদের নামাযে এক্তেদা সহীহ হবে কি না?

২. ইমাম দোতলায় দাঁড়ালে দোতলার সব কাতার পূরা না হওয়া সত্ত্বেও নিচ তলায় কাতার করলে নিচ তলার মুসল্লীদের নামায সহীহ হবে কিনা?

৩. ইমাম নিচ তলায় দাঁড়ালে নিচ তলার সব কাতার পুরা না হওয়া সত্ত্বেও দোতলায় কাতার করলে দোতলার মুসল্লীদের নামায সহীহ হবে কি না?

Answer

১. ইমাম মসজিদের দোতলায় দাঁড়ালে নিচ তলা থেকেও মুসল্লীদের জন্য উক্ত ইমামের ইক্তিদা সহীহ হবে। তবে দোতলা পূর্ণ হওয়ার পর মুসল্লীরা নিচ তলায় দাঁড়াবে। আর দোতলা ফাঁকা রেখে নিচে দাঁড়ালেও নামায আদায় হয়ে যাবে। তবে এমনটি করা মাকরূহ। আলমুহীতুর রাযাবী ১/৩০৬; আলগায়াহ, সারুজী ৩/৪০৫; আযযিয়াউল মানবী ২/৩০১

, ৩. হাদীস শরীফে ইমামের সংলগ্ন কাতারগুলো ধারাবাহিকভাবে পূর্ণ করে দাঁড়ানোর হুকুম এসেছে। তাই ইমাম যে তলায় দাঁড়াবেন সে তলায় কাতার ফাঁকা রেখে অপর তলায় দাঁড়ানো মাকরূহ। কেননা এটি সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পেছনের কাতারে দাঁড়ানোর মতোই। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৬৭১; শরহে মুসলিম, নববী ৪/১৬০; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, ইসবীজাবী ১/৪০১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২১১; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭০

Sharable Link

তায়্যিব - নেত্রকোণা

৬১১১. Question

আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছি। ওযরের কারণে ঘরেই ফরয নামায পড়তে হয়। আমার জানার বিষয় হল, ঘরে একাকী ফরয নামায পড়লে আযানইকামতের বিধান কী?

Answer

ঘরে একাকী ফরয নামায আদায় করলে ইকামত দেওয়া উত্তম। তাবেয়ী আতা রাহ. বলেন

عَنْ عَطَاءٍ؛ فِي الرَّجُلِ يُصَلِّيْ فِيْ بَيْتِهِ عَلٰى غَيْرِ إِقَامَةٍ، قَالَ : إِنْ أَقَامَ فَهُوَ أَفضل، وَإِنْ لَمْ يَفْعَلْ أَجْزَأَهُ.

যদি ঘরে নামায আদায়কারী ইকামত দিয়ে নেয়, তবে তা উত্তম। আর যদি ইকামত না দেয়, তাও ঠিক আছে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২৩০১)

তবে এক্ষেত্রে আযান দিতে হবে না; বরং এলাকার মসজিদের আযানই যথেষ্ট। তাবেয়ী ইকরিমা রাহ. বলেন

إذَا صَلَّيْت فِي مَنْزِلِكَ أَجْزَأَك مُؤَذِّنُ الْحَيِّ.

ঘরে নামায আদায় করলে মহল্লার মুআযযিনের আযানই যথেষ্ট। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২৩০৫)

কিতাবুল আছল ১/১১১; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৩৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৭৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৭২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২৫১; রদ্দুল মুহতার ১/৩৯৫

Sharable Link

শফীকুল ইসলাম - পাংশা, রাজবাড়ী

৬১১২. Question

আমার বড় চাচা জীবদ্দশায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পাবন্দ ছিলেন। মৃত্যুর আগে অসুস্থ হয়ে গেলে ওযরের কারণে অনেক সময় শুয়ে শুয়ে ইশারায় নামায পড়েছেন। কিন্তু মৃত্যুর তিন দিন আগে থেকে অবস্থা এতটাই গুরুতর হয়ে যায় যে, মাথা দিয়ে ইশারা করে নামায পড়াও তাঁর জন্য সম্ভব হয়নি। চোখ খুলে শুধু তাকাতে পারতেন এবং জ্ঞান থাকলেও নড়াচড়া, কথাবার্তা সবই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। হযরতের নিকট প্রশ্ন হল, এ তিন দিনের নামাযের ফিদইয়া দেয়া কি আবশ্যক?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচা মৃত্যুর আগের তিন দিন যেহেতু মাথা দিয়ে ইশারা করে নামায পড়তেও অক্ষম ছিলেন, তাই সেদিনগুলোর নামায তাঁর ওপর ফরয নয়। সুতরাং সে নামাযগুলোর ফিদইয়া দিতে হবে না।

ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭২; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৭৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৮৭; আলহাবিল কুদসী ১/২২৬; রদ্দুল মুহতার ২/৭২, ৯৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইমদাদুল্লাহ - নেত্রকোণা

৬১১৩. Question

ক. একবার সফরে আমি মুকিম ইমামের পেছনে যোহরের নামায আদায় করি । পরবর্তীতে জানতে পারি, আমি তখন ওযুবিহীন ছিলাম। এখন আমি এই নামাযের কাযা কীভাবে পড়ব? দুই রাকাত পড়ব (কারণ আমি মুসাফির) নাকি চার রাকাত পড়ব; (যেহেতু ইমাম সাহেবের পেছনে পূর্ণ নামাযই পড়েছিলাম।)

খ. নাপাক অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করলে কি সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয়?

Answer

ক. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত যোহর নামাযের কাযা দুই রাকাতই পড়তে হবে; চার রাকাত নয়। কেননা মুসাফির হওয়ায় আপনার উপর দুই রাকাত নামাযই ফরয ছিল। কিন্তু মুকিম ইমামের পেছনে ইক্তেদা করার কারণে তখন চার রাকাত পড়তে হয়েছিল। তবে ঐ নামায ফাসেদ হয়ে যাওয়ার পর তা পুনরায় আদায়ের ক্ষেত্রে কসরের বিধানই প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ ঐ নামায এখন আপনি দুই রাকাতই কাযা করবেন। কিতাবুল আছল ১/২৫৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২০১; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যা ১/১৩৫; ফাতাওয়া সিরাজিয়্যা, পৃ. ১২; রদ্দুল মুহতার ২/১৩০

খ. ওযুবিহীন অথবা গোসল ফরয অবস্থায় সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলেও সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হবে। তবে হায়েয-নেফাস অবস্থায় সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলে সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হবে না।

উল্লেখ্য, হায়েয-নেফাস ও গোসল ফরয অবস্থায় কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করা নাজায়েয। কিতাবুল আছল ১/২৭২; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৫; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৬৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৬৫; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫০০

Sharable Link

তারেক মাহমুদ - খুলনা

৬১১৫. Question

মাঝেমধ্যে আমার এমন হয় যে, চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামাযের তৃতীয় বা চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে ভুলে অন্য সূরা পড়ে ফেলি। এ অবস্থায় কি আমার উপর সাহু সিজদা আবশ্যক? এক ভাই বললেন, সাহু সিজদা আবশ্যক হবে, কারণ সূরা ফাতিহার পর সূরা মিলানোর কারণে রুকু করতে বিলম্ব হয়েছে। সঠিক সমাধান চাই।

Answer

চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামাযের শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা পড়লে সাহু সিজদা আবশ্যক হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার উপর সাহু সিজদা আবশ্যক হবে না। তবে কখনো ইচ্ছাকৃত শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলালে অনুত্তম হবে। আর প্রশ্নে ভুলবশত অন্য সূরা পড়লে সাহু সিজদা আবশ্যক হওয়ার যে কথা বলা হয়েছে তা ঠিক নয়।

আলমুহীতুর রাযাবী ১/৩২১; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৪০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৬; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৬০; আলবাহরুর রায়েক ২/৯৪; রদ্দুল মুহতার ১/৫১১

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাঈদুর রহমান - কুষ্টিয়া

৬১১৬. Question

আমার বাবা অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁর অবস্থা এমন যে, সবসময় তাঁর পাশে কেউ না কেউ থাকতে হয়, তাঁকে একা রেখে কোথাও যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কখনো এমন হয় যে, শুক্রবারে পাশে আমি ছাড়া কেউ থাকে না। এ অবস্থায় আমার জন্য কি জুমার পরিবর্তে যোহর নামায পড়ার অনুমতি আছে? যদি যোহর পড়ার সুযোগ থাকে তাহলে কখন পড়ব? মসজিদে জুমার নামায শেষ হওয়ার পরে, না আগে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার অসুস্থ বাবাকে একা রেখে জুমার নামায পড়তে যাওয়া যেহেতু ঝুঁকিপূর্ণ, তাই আপনার জন্য জুমার নামাযে যাওয়া আবশ্যক নয়। এক্ষেত্রে আপনার জন্য জুমায় না গিয়ে সেখানেই যোহর পড়ার সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে আপনার জন্য মসজিদে জুমার নামায শেষ হওয়ার পরই যোহর আদায় করা উত্তম হবে। কেননা ওযরের কারণে যারা জুমায় যেতে পারবে না তাদের জন্য মসজিদে জুমার নামায শেষ হওয়ার আগে যোহর পড়া মাকরূহ তানযীহী।

শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৪৯; আলগায়াহ শরহুল হেদায়াহ ৪/১৯২; আলজাওহারাতুন নাইয়িরাহ ১/১১৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৩৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫২, ১৫৪; রদ্দুল মুহতার ২/১৫৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবুল হাসান - নবীনগর, লালপুর, নাটোর

৬১১৭. Question

আমাদের এলাকায় অনেক দিন যাবৎ সিন্দুকের মতো করে কবর খনন করে কবরের নিচের অংশ একেবারে সমান করে দেয়া হয়। তার উপর লাশ চিত করে শোয়ানোর পর শুধু মাথা কিবলার দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। অতঃপর কবরের একেবারে উপরের অংশে বাঁশ দিয়ে তার উপর মাটি দেয়া হয়। যার কারণে লাশ এবং বাঁশের মাঝে অনেক দূরত্ব থাকে, ফলে হিংস্র প্রাণী কতৃর্ক লাশ নষ্ট করার বা বর্ষাকালে অল্প দিনে কবর নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে।

এ বিষয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা বলে, আমরা পূর্ব থেকে এমন করে আসছি এবং দেখে আসছি।

উল্লেখ্য, আমাদের এলাকায় অনেক বড় বড় আলেম রয়েছে, তারা এটা নিষেধ করলে এলাকাবাসী তাদের সাথে ফিতনা সৃষ্টি করে।

এখন আমাদের জানার বিষয় কয়েকটি

১. কবর খনন করার শরয়ী পদ্ধতি কয়টি এবং কী কী?

২. লাশ কবরে শোয়ানো এবং মাটি দেয়ার উল্লেখিত পদ্ধতি শরীয়তসম্মত কি না? যদি না হয় তাহলে তার শরয়ী পদ্ধতি কি?

৩. শরীয়তসম্মত পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের করণীয় কী?

Answer

১. কবর খনন করার শরয়ী পদ্ধতি দুইটি

এক. لحد (লাহ্দ)। কোনো কোনো এলাকায় একে বুগলী কবরও বলা হয়। এর পদ্ধতি হল, প্রথমে চার কোণা বিশিষ্ট একটি গর্ত খনন করবে। যা লম্বায় মায়্যিতের উচ্চতার চেয়ে একটু বেশি হবে এবং চওড়া হবে লম্বার অর্ধেক পরিমাণ। আর গভীরতার ক্ষেত্রে মায়্যিতের দেহ যতটুকু লম্বা ততটুকু গভীর হওয়া উত্তম। তবে সর্বনিম্ন তার অর্ধেক পরিমাণ গভীর হলেও চলবে। এরপর কিবলার দিকে করে মায়্যিতকে শোয়ানোর জন্য ঐ গর্তের ভেতরে ডান দিকে আরেকটি ছোট গর্ত খনন করবে। এই ছোট গর্তটির গভীরতা মায়্যিতের দেহের প্রশস্ততার চেয়ে একটু বেশি হবে এবং জমিনের অংশ এতটা ঢাল হবে যে, মায়্যিতকে শোয়ালেই তার সিনা কিবলামুখী হয়ে যায়। অতঃপর উক্ত গর্তের ভেতর মায়্যিতকে রেখে গর্তের মুখে বাঁশ ইত্যাদি খাড়া করে দিয়ে ছোট গর্তটি বন্ধ করে দেবে।

দুই. কবর খননের দ্বিতীয় পদ্ধতিকে বলা হয় : شق (শাক্ক)। যাকে অনেকে সিন্দুক কবরও বলে। এর পদ্ধতি হল, প্রথমে মায়্যিতের কোমর বা সিনা সমপরিমাণ একটি গর্ত খনন করবে। এরপর তার মাঝ বরাবর আরেকটি ছোট গর্ত খনন করবে। এই গর্তের প্রশস্ততা মায়্যিতকে কিবলামুখী করে শোয়াতে যতটুকু প্রশস্ততার প্রয়োজন হয় ততটুকু রাখবে এবং গভীরতা মায়্যিতের দুই কাঁধের প্রশস্ততার চেয়ে একটু বেশি রাখবে। এরপর উক্ত ছোট গর্তের উপর বাঁশ ইত্যাদি বিছিয়ে উপরের পুরো অংশ মাটি দিয়ে ভরে দেবে।

যেসব জায়গার মাটি শক্ত ও মজবুত সেখানে লাহ্দ তথা বুগলী কবর খনন করাই সুন্নত। তবে যেসব জায়গার মাটি নরম সেখানে সিন্দুক কবর খনন করবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৬৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২০০; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৬১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৬২২; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৪

২. প্রশ্নে কবর খনন ও মায়্যিতকে কবরে রাখার যে পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। কেননা সেখানে একটিই গর্ত করা হয় এবং বাঁশ ইত্যাদি কবরের একেবারে উপরে দেওয়া হয়। ফলে মাঝে অনেক ফাঁকা থেকে যায়। যার কারণে অল্পদিনে বা সামান্য বর্ষণে কবর ভেঙ্গে যাওয়ার এবং হিং¯্র প্রাণী কর্তৃক লাশ নষ্ট করার আশংকা তৈরি হয়। সে আশংকা প্রশ্নেও উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে নিচের জমিন একেবারে সমতল রাখা হয় এবং মায়্যিতকে চিত করে শোয়ানো হয়। অথচ মায়্যিতকে ডান কাতে কিবলামুখী করে শোয়ানো সুন্নত। আর কবর দেওয়ার শরয়ী ও নিরাপদ পদ্ধতি হল, যা উপরে প্রথম প্রশ্নের উত্তরে লেখা হয়েছে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১১৭৭৯, ১১৭৮৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৬৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬৬; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৯৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৬

৩. শরীয়তসম্মত পদ্ধতিতে কবর বানানোর প্রচলন করার জন্য এলাকার বিজ্ঞ আলেমগণ চেষ্টা চালাবেন এবং মানুষকে হিকমতের সাথে বোঝাবেন। তাদের সহযোগিতায় এক-দুটি কবর খনন করে নমুনাস্বরূপ দেখাবেন। এর উপকারিতাগুলো মানুষকে বলতে থাকবেন। এভাবেই ধীরে ধীরে শরীয়তসম্মত কবর খনন শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। কোনো এলাকার দীর্ঘদিনের প্রচলন এক-দুদিনের কথায় বা কঠোরতা করে পরিবর্তন করা যায় না; বরং হিকমতের সাথে বুঝিয়ে করতে হয়।

Sharable Link

আশরাফ - রংপুর

৬১১৮. Question

আমার নানা এ বছর রমযানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমাদের গ্রামের জামে মসজিদে ইতিকাফ না করে বাড়ির পাশে পাঁচ ওয়াক্ত নামায হয় এমন একটি মসজিদে ইতিকাফ করেন এবং চব্বিশ রমযানে জুমার নামায পড়ার জন্য জামে মসজিদে যান। কিন্তু এলাকার মানুষ নানাকে রাস্তায় দেখে বলে, আপনি ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ থেকে বের হয়েছেন কেন? আপনার ইতিকাফ তো নষ্ট হয়ে গেছে। মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হল, তাদের কথা কি ঠিক? এবং এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

জুমার জন্য বের হওয়ার কারণে আপনার নানার ইতিকাফ নষ্ট হয়নি। যারা ইতিকাফ ভেঙ্গে গেছে বলে মন্তব্য করেছে, তাদের কথা ঠিক নয়। কারণ পাঞ্জেগানা মসজিদে ইতিকাফকারীর জন্য জুমার নামাযের উদ্দেশ্যে বের হওয়া জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে এমন সময় বের হবে, যখন বের হলে জুমার স্থানে পৌঁছে জুমার নামাযের আগের চার রাকাত আদায় করা যায় এবং পরিপূর্ণ খুতবা পাওয়া যায়। জুমার নামায শেষে পরবর্তী সুন্নত আদায় করে বিলম্ব না করে চলে আসবে।

কিতাবুল আছল ২/১৮৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮২; ফাতহুল কাদীর ২/৩০৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৪৪; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫

Sharable Link

ইহতিশাম - কুমিল্লা

৬১১৯. Question

আমি গত রমযানে কোনো কারণ ছাড়া একটি রোযা ভেঙ্গে ফেলি এবং শাওয়ালের আঠার তারিখ থেকে কাফফারার রোযা রাখা শুরু করি। কুরবানীর ঈদ যখন ঘনিয়ে আসে তখন আমার কিছু রোযা বাকি ছিল। আমি জানতাম, কাফফারার রোযা লাগাতার রাখতে হয়। মাঝখানে বাদ দিলে আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। তাই আমি যিলহজ্বের ১০, ১১, ১২, ১৩ তারিখেও রোযা রাখি এবং ষাটটি রোযা পূর্ণ করি। মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হল, আমার কাফফারার রোযাগুলো কি সঠিকভাবে আদায় হয়েছে? জানালে উপকৃত হব।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার রোযার কাফফারাটি আদায় হয়নি। কেননা ঈদের দিনসহ আইয়ামে তাশরীকে সব ধরনের রোযা রাখা নাজায়েয। এ দিনগুলোতে কাফফারার নিয়তে রোযা রাখলেও তা কাফফারার রোযা হিসাবে আদায় হয় না। সুতরাং যিলহজ্বের দশ থেকে তের তারিখে রোযা রেখে থাকলে তা নাজায়েয হয়েছে এবং এর দ্বারা কাফফারার ধারাবাহিকতা বাতিল হয়ে গেছে।

প্রকাশ থাকে যে, যিলহজ্বের এ দিনগুলোতে যেহেতু রোযা রাখা নিষেধ তাই এ মাসে কাফফারার রোযা রাখা যাবে না। এ সময়ের আগে বা পরে ধারাবাহিক ষাটটি রোযা রাখতে হবে।

কিতাবুল আছল ২/১৫৮; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১২; আলবাহরুর রায়েক ৪/১০০

Sharable Link

আয়মান সাদিক - কক্সবাজার

৬১২০. Question

আমি একজন ইজিলোড, ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী। এ বছর আমি এতেকাফে বসতে চাচ্ছি। বিভিন্ন মানুষ আমাকে রাতে-দিনে বিভিন্ন সময়ে ইজিলোড, ফ্লেক্সিলোড ইত্যাদির জন্য ফোন করতে থাকে। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, ইতিকাফ অবস্থায় ইজিলোড, ফ্লেক্সিলোড ও অন্যান্য অনলাইন ব্যবসা করতে পারব কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

মসজিদ আল্লাহর ঘর। এতে বেচা-কেনা ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিষিদ্ধ। ইতিকাফ অবস্থায় তা আরো বর্জনীয় বিষয়। তাই ইতিকাফ অবস্থায় ইজিলোড, ফেক্সিলোড ও অনলাইনভিত্তিক অন্যান্য ব্যবসাও করা যাবে না।

ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২২; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/৪৪৪; আলজাওহারাতুন নাইয়িরাহ ১/১৮৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩ আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪৮

Sharable Link

মাসরুর - ঢাকা

৬১২১. Question

মসজিদের মুআযযিন ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ-সংলগ্ন আযানঘরে গিয়ে আযান দিতে পারবে কি? আমি যে মসজিদে মুআযযিন হিসেবে দায়িত্বরত আছি, সে মসজিদে এ বছর রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতে চাইলে মসজিদ কমিটি বলে যে, আপনি ইতিকাফ করলে আযান দিবেন কীভাবে? আমাদের মসজিদের আযানঘর তো মসজিদের অন্তভুর্ক্ত নয়।

Answer

ইতিকাফ অবস্থায় আযান দেয়ার জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে। তাই ইতিকাফ অবস্থায় প্রয়োজনে মসজিদের বাইরে গিয়ে আপনি আযান দিতে পারবেন। এতে আপনার ইতিকাফ নষ্ট হবে না।

কিতাবুল আছল ২/১৯১; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১২৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮০; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ১/২৪৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩

Sharable Link

মহবুব এলাহী - কক্সবাজার

৬১২২. Question

আমি গত রমযানে ১০ দিন ইতিকাফে থাকার মান্নত করেছিলাম। কিন্তু যে কোনো কারণে উক্ত মাসে ইতিকাফে থাকা হয়নি। আমি চাচ্ছি, আগামী রমযানে এর পরিবর্তে ১০ দিন ইতিকাফে থাকব। হযরতের কাছে জানার বিষয় হল, উক্ত মান্নতকৃত ইতিকাফের কাযা সামনের রমযানে আদায় করা যাবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

বিগত রমযানের মান্নত ইতিকাফের কাযা পরবর্তী রমযানে আদায় করা যাবে না। বরং রমযান ছাড়া অন্য কোনো মাসে তা কাযা আদায় করতে হবে। কেননা কোনো নির্দিষ্ট রমযানে ইতিকাফের মান্নত করলে এবং সে সময় তা আদায় করতে না পারলে পরবর্তীতে নফল রোযাসহ আদায় করা আবশ্যক হয়ে যায়। একারণেই পরবর্তী রমযানে মান্নতের উক্ত কাযা ইতিকাফটি আদায় করা যাবে না।

কিতাবুল আছল ২/১৯৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়্যাহ, পৃ. ১৭৩; আলমুহীতুর রাযাবী ২/৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭০; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০০

Sharable Link

শরীফ হাসান - নোয়াখালী

৬১২৩. Question

এক নারী এক বছরের একটি বাচ্চা মেয়ে রেখে মারা যায়। তখন মেয়েটির খালা তাকে লালন-পালনের দায়িত্ব নেন। মেয়েটিকে তিনি দুধ পান করাতে চান। তার স্বামী, সন্তানাদিও আছে। সন্তানরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। অনেক বছর যাবৎ তার দুধ আসে না। তখন চিকিৎসার মাধ্যমে তার দুধ আসে। ফলে মেয়েটিকে তার খালা দুধ পান করায়।

এখন জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় মেয়েটির খালু তার দুধপিতা হবেন কি না? এবং মেয়েটি বড় হওয়ার পর তার খালুর সাথে দেখাসাক্ষাৎ করতে পারবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত নারীর যে দুধ এসেছে তা যেহেতু বাচ্চা হওয়ার কারণে আসেনি; বরং চিকিৎসার মাধ্যমে এসেছে, তাই এই দুধ পান করার দ্বারা উক্ত নারীর সাথে শিশুটির দুধ সম্পর্ক সৃষ্টি হলেও মহিলার স্বামীর সাথে দুধ সম্পর্ক হয়নি। তাই তিনি শিশুটির দুধপিতা হবেন না।

কিন্তু মহিলার স্বামী শিশুর দুধপিতা না হলেও শিশুটি যেহেতু তার স্ত্রীর দুধমেয়ে তাই তিনি শিশুর মাহরাম হয়ে গিয়েছেন। কেননা স্ত্রীর মেয়ে চাই সে স্ত্রীর গর্ভজাত অন্য স্বামীর সন্তান হোক বা স্ত্রীর দুধমেয়েÑ সে উক্ত নারীর স্বামীর জন্য নিজ স্ত্রীর মেয়ে হিসেবে মাহরামের অন্তভুর্ক্ত। কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন

وَ رَبَآىِٕبُكُمُ الّٰتِیْ فِیْ حُجُوْرِكُمْ مِّنْ نِّسَآىِٕكُمُ الّٰتِیْ دَخَلْتُمْ بِهِنَّ .

অর্থাৎ (তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে)...  তোমাদের এমন স্ত্রীদের গর্ভজাত কন্যা, যাদের সাথে তোমাদের সহবাস হয়েছে। [সূরা নিসা (৪) : ২৩]

এই আয়াতের তাফসীরে ইমাম বাগাভী রাহ. বলেন

ويحرم عليه أيضا بنات المنكوحة وبنات أولادها، وإن سفلن من الرضاع والنسب بعد الدخول بالمنكوحة.

স্ত্রীর সাথে সহবাস হওয়ার পর স্ত্রীর নিজ গর্ভজাত মেয়ে ও দুধমেয়ে এবং তার বংশীয় ও দুধ সম্পর্কীয় সন্তানদের মেয়েরাও উক্ত স্বামীর জন্য মাহরাম হয়ে যায়। (তাফসীরে বাগাভী ১/৪১২)

আলআজনাস, নাতিফী ১/২৩৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৯৫, ৯৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৩১৩; দুরারুল হুক্কাম শরহু গুরারিল আহকাম ১/৩৫৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৬, ২২৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ সেলিম - সোনাগাজী, ফেনী

৬১২৪. Question

আমাদের গ্রামে এক বৃদ্ধ গরীব লোক আছে। যার এক ছেলে দুই মেয়ে। তারা সবাই বিবাহিত। ছেলেটি দেশের বাইরে থাকে। সে বাবার জন্য চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ বাবদ কিছু টাকা প্রতি মাসে তার স্ত্রীর নিকট পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু স্ত্রী তার বাবাকে সেই টাকা দেয় না। ফলে তার চলতে কষ্ট হয়ে যায়। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই, আমি কি সেই ছেলের বাবাকে যাকাতের টাকা দিতে পারব? জানিয়ে উপকৃত করবেন।

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু ঐ ব্যক্তি গরীব এবং তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই, তাই সে যাকাতের উপযুক্ত। সুতরাং আপনি তাকে যাকাত দিতে পারবেন। এতে সমস্যা নেই।

বাদায়েউস সানায়ে ২/১৫৮; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/৩৪২; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৪/৮৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৬

Sharable Link

মুনীরুল হক - ঢাকা

৬১২৫. Question

গত রবিউল আওয়াল মাসের শেষদিকে আমি মোবাইলে বেশ কিছু টাকা রিচার্জ করি। রবিউল আখিরের প্রথম তারিখে আমার যাকাতবর্ষ পূর্ণ হয়। তখন আমার মোবাইল ব্যালেন্সে এক হাজার টাকা ছিল। মুহতারামের কাছে জানতে চাচ্ছি, আমার অন্যান্য সম্পদের সাথে এই এক হাজার টাকারও কি যাকাত দিতে হবে?

Answer

মোবাইলের রিচার্জ ব্যালেন্সে যে টাকা দেখা যায়, তা মূলত টাকা নয়; বরং ঐ টাকা সমপরিমাণ টেলিযোগাযোগ সেবা, যা ব্যবহারের জন্য ক্রয় করা হয়েছে। তাই অন্যান্য ব্যবহারের পণ্যের ন্যায় মোবাইল রিচার্জ ব্যালেন্সেরও যাকাত দিতে হবে না। সুতরাং আপনার উক্ত ব্যালেন্স যাকাতের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য নয়।

আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৯৮; খিযানাতুল ফিকহ, পৃ. ৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২

Sharable Link

আব্দুল মালেক - ভোলা

৬১২৬. Question

এক ব্যক্তি ২০১৮ সালে হজ্বের জন্য একটি হজ্ব এজেন্সিতে টাকা জমা করেছে। কিন্তু করোনার কারণে হজ্বে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ বছর হজ্বে যাওয়া শুরু হলেও তার সিরিয়াল আসেনি। সুতরাং ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হজ্বের টাকা এজেন্সির কাছে জমা আছে। সামনে যখন তার নাম আসবে তখন হজ্বে যাবে। সে চাইলে টাকা ফেরত নিতে পারত। কিন্তু যেহেতু সে হজ্বে যাবেই, তাই টাকা উঠায়নি। এখন প্রশ্ন হল, তার এ টাকার কি যাকাত দিতে হবে?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি যেহেতু হজ্বে যাওয়ার জন্যই এজেন্সিতে টাকা জমা করেছে, তাই ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হজ্ব এজেন্সির কাছে জমা থাকা উক্ত টাকার উপর তার যাকাত আদায় করতে হবে না।

বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৮; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৫১৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আমীন শিকদার - সাইনবোর্ড, নারায়ণগঞ্জ

৬১২৭. Question

আমাদের একটি সমাজ কল্যাণ সংস্থা আছে। এ সংস্থার পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজ করে থাকি। আমাদের এলাকায় এমন অনেক লোক আছে, যারা প্রতি বছর যাকাত দিয়ে থাকে। আমরা চাচ্ছি, তাদের যাকাতের টাকাগুলো জমা করে একটি বড় ধরনের হোটেলের ব্যবসা করব। উক্ত ব্যবসার সমস্ত লাভ গরীব-মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করে দেওয়া হবে। আশা করা হচ্ছে, এতে গরীবদের উপকার  বেশি হবে। মাননীয় মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই, এভাবে যাকাতের টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে কি কোনো অসুবিধা আছে?

Answer

শরীয়তের বিধান হল, যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিকে সরাসরি যাকাতের মালিক বানিয়ে দেওয়া। তাই যাকাতের টাকা দিয়ে হোটেল বানিয়ে তার আয় গরীবদের দেওয়া বা অন্য কোনো ব্যবসায় এ টাকা বিনিয়োগ করা যাবে না। এসব ক্ষেত্রে যাকাতের টাকা ব্যয় করলে যাকাত আদায় হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, যাকাতের বিধান শরীয়তের গরীব-মিসকীনদের খোরপোষ, চিকিৎসা ও আপতকালীন সমস্যা দূর করা ও সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য প্রদান করা হয়েছে। তাই সরাসরি গরীবদেরকেই এ টাকা দিয়ে দিতে হবে। এ টাকা দিয়ে তাদের জন্য ব্যবসা করার মানসিকতা পরিহার করা উচিত।

বাদায়েউস সানায়ে ২/১৪২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৮; রদ্দুল মুহতার ২/২৭০

Sharable Link

মুফিজুল ইসলাম মৃধা - মাইজবাড়ী, ময়মনসিংহ

৬১২৮. Question

আমি প্রতি বছর স্ত্রী, সন্তান ও আমার নিজের সদকায়ে ফিতর আদায় করি। গত জুমায় খতীব সাহেবের বয়ানে শুনলাম, স্বামীর উপর স্ত্রীর সদকায়ে ফিতর আদায় করা আবশ্যক নয়; বরং স্ত্রী নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে নিজেই নিজের সদকায়ে ফিতর আদায় করবে। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, আমার স্ত্রী যেহেতু আগে থেকেই নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ছিল, তাই এখন কি তার বিগত বছরগুলোর সদকায়ে ফিতর আদায় করতে হবে, নাকি তার পক্ষ থেকে আমার আদায় করার দ্বারাই আদায় হয়ে গেছে?

Answer

স্ত্রী নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও স্বামী তার সদকায়ে ফিতর আদায় করতে পারে। সুতরাং আপনার জন্য স্ত্রীর পক্ষ থেকে বিগত বছরগুলোর সদকায়ে ফিতর আদায় করা সহীহ হয়েছে। তা পুনরায় আদায় করতে হবে না।

আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১০৫; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৪৫০; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮৭; রদ্দুল মুহতার ২/৩৬৩

Sharable Link

সফওয়ান হাবিব - মিরপুর, ঢাকা

৬১২৯. Question

আমি গত বছর নভেম্বর মাসের শুরুতে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হই। আমার ইচ্ছা ছিল, এ বছর নভেম্বর মাসে আমার সম্পদের হিসাব করে যাকাত আদায় করব। কিন্তু আমার এক বন্ধুর কাছে শুনলাম, যাকাতের বছর নাকি চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী গণনা করতে হয়। হুজুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, তার কথা কি ঠিক?

Answer

হাঁ, আপনার বন্ধু ঠিক বলেছে। যাকাতবর্ষের হিসাব চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী করতে হয়; সৌরবর্ষ অনুযায়ী নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গত বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে চান্দ্রমাসের কত তারিখ ছিল তা জেনে সে অনুযায়ী বছর গণনা করতে হবে।

ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ১/৩৭০; ফাতহুল কাদীর ৪/১৩২; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৪

Sharable Link

মোঃ সেলিম - চট্টগ্রাম

৬১৩০. Question

বর্তমানে আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকা জমা আছে। আমি জানি, এ কারণে আমার ওপর হজ্ব  ফরয হয়েছে। উক্ত টাকার ওপর কিছুদিন পূর্বে বছর অতিক্রম হয়েছে। জানতে চাচ্ছি, ঐ টাকার ওপর যেহেতু বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, তাই যাকাত আদায় করার সময় তা থেকে হজ্বের টাকা বাদ দিতে পারব, নাকি সব টাকারই যাকাত দিতে হবে?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত দশ লক্ষ টাকা যেহেতু আপনার কাছেই আছে এবং বছরও অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, তাই আপনার জিম্মায় হজ্ব ফরয হলেও পূর্ণ দশ লক্ষ টাকারই যাকাত দিতে হবে। এ থেকে হজ্বের টাকা বাদ দেওয়া জায়েয হবে না।

শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/২৪৯; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৫১৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪০; আলইখতিয়ার ১/৩৩১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৩

Sharable Link

আলতাফ হোসেন - মিরপুর, ঢাকা

৬১৩১. Question

কম্পিউটার সংক্রান্ত বিষয়ে আমার ভালো অভিজ্ঞতা আছে। তাই পরিচিতজনেরা কখনো কখনো আমাকে ল্যাপটপ ও বিভিন্ন কম্পিউটার সরঞ্জাম কিনে দিতে বলে। আমি যাদের কাছ থেকে কিনি তারা আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত হওয়ায় আমাকে বিশেষ ডিসকাউন্ট দেয়, যা অন্য কোনো সাধারণ ক্রেতাকে দেয় না। মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন হল, যাদের জন্য আমি কম্পিউটার সরঞ্জাম কিনি তাদের কাছ থেকে আমি প্রকৃত বাজারমূল্য নিয়ে ডিসকাউন্ট কি নিজে ভোগ করতে পারব?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি মূল ক্রেতা নন; বরং তাদের ক্রয় প্রতিনিধি। বিক্রেতা ডিসকাউন্ট দিলে তা মূল ক্রেতার প্রাপ্য, প্রতিনিধির নয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ডিসকাউন্ট তারাই পাবে, যারা আপনাকে কম্পিউটার ইত্যাদি কিনে দিতে বলে। আপনার জন্য গ্রহণ করা জায়েয হবে না। অবশ্য ডিসকাউন্টের পরিমাণ মূল ব্যক্তিকে বলার পর সে স্বতঃস্ফূর্ত আপনাকে দিয়ে দিলে তা গ্রহণ করতে পারবেন।

কিতাবুল আছল ১১/২৮৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১৯/৬০; আলমুহীতুল বুরহানী ১৫/৬৫; আলবাহরুর রায়েক ৭/১৫৫; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৫১৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশরাফ - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

৬১৩২. Question

সেলিমের একটি পোশাক তৈরির কারখানা ও মেশিনারিজ আছে। করিম তার সাথে চুক্তি করল, সেলিমের কারখানায় সে পোশাক তৈরি করবে। সুতা কেনা, কর্মচারীর বেতন ও অন্যান্য যাবতীয়  খরচ করিম বহন করবে। আর যা লাভ হবে তা দুইজনের মধ্যে অর্ধাঅর্ধি হারে বণ্টন হবে। মুহতারামের কাছে জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে এই চুক্তি সহীহ হয়েছে কি না?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনায় মনে হচ্ছে, কারখানা ও জমিন সেলিমের মালিকানায় রেখেই করিম তাতে উৎপাদন করতে চাচ্ছে। আর করিমের মূলধনও তার একারই থাকবে। শুধু লাভ দুইজনের মধ্যে ভাগাভাগি হবে। এক্ষেত্রে কারবারটি শিরকত বা মুযারাবা হবে না (যে কারবারগুলোতে লাভ ভাগাভাগি করা হয়); বরং তা শরীয়তের ইজারানীতির আওতাভুক্ত হবে, যাতে কারো জমি, কারখানা ইত্যাদি অন্যকে ভাড়া দেওয়া হয়। আর ভাড়াচুক্তিতে ভাড়া সুনির্ধারিত হওয়া জরুরি। কিন্তু প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কারখানা ও মেশিনারিজের কোনো ভাড়া সুনির্ধারিত করা হয়নি। তাই এই চুক্তিটি সহীহ হয়নি। চুক্তিটি সহীহভাবে করতে চাইলে কারখানা ও মেশিনারিজের ভাড়ার পরিমাণ ঠিক করে নিতে হবে। আর ব্যবসার লাভ-লোকসান যাই হোক, তা করিম একা ভোগ করবে।

কিতাবুল আছল ৪/১৪২; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৬২৫; আলমুহীতুর রাযাবী ৬/১১১; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২১৭; রদ্দুল মুহতার ৪/৩২৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ তানভীর - বাড্ডা, ঢাকা

৬১৩৩. Question

দুধ, চিনি, বিস্কুট, মিষ্টি ইত্যাদি খাবারের মধ্যে অনেক সময় পিঁপড়া থাকে। এসব খাদ্যের সঙ্গে কখনো কখনো দুয়েকটা পিঁপড়া মুখে চলে যায়। জানতে চাই, খাবারের সঙ্গে এসব পিঁপড়া খাওয়া কি জায়েয আছে?

Answer

পিঁপড়া খাওয়া নাজায়েয। কোনো খাবারের মধ্যে পিঁপড়া থাকলে সম্পূর্ণরূপে তা বেছে ফেলে দিতে হবে। জেনেশুনে একটি পিঁপড়াও খাওয়া যাবে না। তবে খাবারে পিঁপড়া পড়ে গেলে ঐ  খাবার খেতে কোনো অসুবিধা নেই। শুধু  পিঁপড়াগুলো বেছে ফেলে দেবে।

আলমাবসূত, সারাখসী ১১/২২০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩১৭; মুখতারাতুন নাওয়াযেল ৩/১৭৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৬৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৪

Sharable Link

ফাইয়াজ মাহমুদ - বনশ্রী, ঢাকা

৬১৩৪. Question

সম্মানিত মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাই, পুরুষের বুকে-পিঠে এমনিভাবে হাতে-পায়ে পশম বেশি হলে সেগুলো কেটে ফেলা অথবা লোমনাশক পাউডার দ্বারা উঠিয়ে ফেলা কি জায়েয হবে?

Answer

পুরুষের বুক-পিঠ বা হাত-পায়ের পশম কাটা কিংবা লোমনাশক পাউডার দ্বারা সেগুলো উঠিয়ে ফেলা নাজায়েয নয়, তবে তা পছন্দনীয় নয়। তাই প্রয়োজন না হলে এ থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।

ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২১১; তাকমিলাতুল বাহরির রায়েক ৮/২০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৪০৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২০৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাবিবুল্লাহ - মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ

৬১৩৫. Question

আমার বাড়ি ময়মনসিংহ। বাড়িতে যাওয়ার সময় অনেক সময় বাসে গান চলতে থাকে। তখন গানবাজনা থেকে মানোযোগ ফিরিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে আমি যিকির করতে থাকি। কিন্তু মনে মনে ভয় হয় যে, এতে আবার যিকিরের অসম্মান হয়ে যায় কি না! মুহতারামের নিকট জানতে চাই, এই পরিস্থিতিতে গানবাজনা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে যিকির করা কি জায়েয আছে? এতে কি যিকিরের অসম্মান হবে?

Answer

গানবাজনা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে যিকির করা জায়েয আছে। এতে যিকিরের অসম্মান হয় না; বরং উক্ত পরিস্থিতিতে কান ও মনকে গান থেকে বিরত রাখার জন্য যিকির-আযকারে মশগুল থাকা প্রশংসনীয় কাজ।

উল্লেখ্য, এ ধরনের পরিস্থিতিতে সম্ভব হলে গানবাজনা বন্ধ করার চেষ্টা করা যেতে পারে। 

ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৪; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/৭৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৭/৫০৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৩১; আলইখতিয়ার ৪/১৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩১৫

Sharable Link