আবদুল হালিম - ঢাকা

৩৩২২. Question

আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। আমি উচ্চস্বরে নামাযের নিয়ত করার বিধান সম্পর্কে জানতে চাই। দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

নিয়ত হল মনে কোনো কাজের দৃঢ় ইচ্ছা করা।

হযরত উমর রা. থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনসকল আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। ... (সহীহ বুখারীহাদীস ১)

সহীহ বুখারীর ভাষ্যকার আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রাহ. বলেনহাদীসে নিয়ত দ্বারা উদ্দেশ্য হল,কোনো কাজের ব্যাপারে মনের দৃঢ় ইচ্ছা। (উমদাতুল কারী ১/২৩)

তাই নামাযের নিয়তও মনে মনে করাই যথেষ্ট। মুখে উচ্চারণ করে বলা জরুরি নয়। তবে কেউ যদি অন্তরের নিয়তের পাশাপাশি নিয়তের বিষয়টি মুখেও উচ্চারণ করতে চায় তবে তারও অবকাশ আছে। কেননা শরীয়তের কোনো দলিল দ্বারা এটি নিষিদ্ধ নয়। তাই কেউ করলে তা নাজায়েয বা বেদআত হবে না।  

-আদ্দুররুল মুখতার ১/৪১৫; শরহুল মুনইয়াহ ২৫৪; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ১২০; আলবাহরুর রায়েক ১/২৭৭-৮

Sharable Link

হাবীব আদনান - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৩২৩. Question

নামাযের বৈঠকে দু হাত কীভাবে রাখব? বসা অবস্থায় হাত হাঁটু স্পর্শ করবে নাকি করবে না?

জানিয়ে উপকৃত করবেন।


Answer

নামাযের বৈঠকে দুই হাত দুই উরুর উপর কীভাবে রাখবে এ ব্যাপারে একাধিক হাদীস রয়েছে। যেমনহযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেনআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহহুদের জন্য বসতেন তখন ডান হাত ডান উরুর উপর এবং বাম হাত বাম উরুর উপর রাখতেন।... -সহীহ মুসলিমহাদীস : ৫৮০ (১১৬)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে আরেক বর্ণনায় এসেছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহহুদের জন্য বসতেন তখন বাম হাত বাম হাঁটুর উপর এবং ডান হাত ডান হাঁটুর উপর রাখতেন। -সহীহ মুসলিমহাদীস : ৫৮০ (১১৫)

উভয় হাদীসের উপর যেন আমল হয়ে যায় এজন্য উপরোক্ত হাদীসের আলোকে ফিকহবিদগণ বলেছেন যেউভয় হাত এমনভাবে উরুর উপর রাখবে যেন হাতের আঙ্গুলগুলো হাঁটুর নিকটবর্তী থাকে।

-ইলাউস সুনান ৩/১০৯; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ১/২৭১; আসসিআয়াহ ২/২১৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩২৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৮১; শরহুল মুনইয়াহ ৩২৮

Sharable Link

আবদুল আউয়াল - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৩২৪. Question

 

জুমার দ্বিতীয় আযানের জওয়াব দেওয়া ও দুআ পড়ার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কী? জানিয়ে উপকৃত করবেন।


 

Answer

 

নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী জুমার দ্বিতীয় আযানের জবাব মৌখিকভাবে দেওয়া জায়েয।

আবু উমামা ইবনে সাহল ইবনে হুনাইফ রাহ. বলেনআমি মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রা.-কে মিম্বরের উপর বসা অবস্থায় দেখেছিমুয়াযযিন যখন আযানে আল্লাহু আকবার বললেন তখন তিনিও আল্লাহু আকবার বলেছেন ...। এরপর আযান শেষ হলে তিনি বললেনহে লোক সকল! আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই মজলিসে অর্থাৎ যখন মুয়াযযিন আযান দেন- এমনটিই বলতে শুনেছিযেমনটি আপনারা আমাকে বলতে শুনলেন। -সহীহ বুখারীহাদীস : ৯১৪

অন্য বর্ণনায় সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব রাহ. বলেনইমাম খুতবার জন্য বের হলে নামায পড়া যাবে না আর ইমাম খুতবা শুরু করলে কথা বলা যাবে না। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস : ৫৩৪২

আর খুতবার সময় যেহেতু চুপ থাকা ও মনোযোগ সহকারে খুতবা শোনা ওয়াজিব তাই আযানের পরপরই ইমাম খুতবা শুরু করে দিলে আযানের দুআ পড়া যাবে না। কিন্তু যদি ইমাম খুতবার জন্য দাঁড়াতে বিলম্ব করেন তবে এ সময় আযানের দুআও পড়া যাবে। 

 

-ফাতহুল বারী ২/৪৬০; ইলাউস সুনান ২/৮০; আসসিআয়াহ ২/৫৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ২৮২; আততাজরীদ ২/৪৭৭; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৩/২০০

Sharable Link

রফিকুল ইসলাম - গফরগাও, ময়মনসিংহ

৩৩২৫. Question

আমাদের মসজিদে এক ব্যক্তি অসুস্থতার কারণে কোনোভাবেই মাটিতে বসতে পারে না। শুধু চেয়ার বা এ জাতীয় উঁচু স্থানে বসতে পারে। তবে তিনি স্বাভাবিকভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। জানার বিষয় হল, এমন ব্যক্তি কীভাবে নামায আদায় করবে?


Answer

প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি মাটিতে বসতে না পারলেও যেহেতু সে দাঁড়াতে সক্ষম তাই সে দাঁড়িয়েই নামায শুরু করবে। এরপর সম্ভব হলে দাঁড়ানো থেকেই রুকুতে যাবে। আর সিজদার সময় চেয়ার বা এ জাতীয় কিছুতে বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করবে।

উল্লেখ্য যেদাঁড়ানো থেকে রুকু করা অধিক কষ্টকর হলে চেয়ারে বসে ইশারার মাধ্যমে রুকু করতে পারবে। সেক্ষেত্রে রুকুর তুলনায় সিজদায় মাথা কিছুটা বেশি ঝুঁকাতে হবে। অবশ্য বার্ধক্য বা অন্য কোনো কারণে দাঁড়ানো থেকে সোজা চেয়ারে বসা যদি অসম্ভব বা অধিক কষ্টকর হয় তাহলে তার জন্য শুরু থেকেই চেয়ারে বসে নামায পড়ার সুযোগ আছে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২৭; শরহুল মুনইয়াহ ২৬২

Sharable Link

রাকিব রাইহান - কলাবাগান, ঢাকা

৩৩২৬. Question

একদিন কোনো এক মসজিদে জুমার নামায পড়ছিলাম। ইমাম সাহেব যখন খুতবা পড়ছিলেন তখন এক লোক পেছনের কাতার থেকে মানুষদেরকে ডিঙিয়ে সামনের দিকে আসতে থাকে। ইমাম সাহেব তা দেখে খুতবা পড়া বন্ধ করে তাকে সামনের দিকে আসতে বারণ করেন এবং যেখানে আছে সেখানেই থেমে যেতে বলেন।

আমি জানি, খুতবার মাঝে কোনো কথা বলা নিষেধ। তাই আমার প্রশ্ন হল, ইমাম সাহেবের উক্ত কাজটি ঠিক হয়েছে কি?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে খতীব সাহেবের জন্য ঐ ব্যক্তিকে নিষেধ করা অন্যায় হয়নিবরং তা শরীয়তসম্মতই হয়েছে। কেননা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীগণ থেকে খুতবা প্রদানকালে প্রয়োজনে সৎ কাজের আদেশমূলক কোনো কথা বলা বা অন্যায় কাজ দেখলে খুতবার মাঝেই নিষেধ করা প্রমাণিত আছে।

অবশ্য খতীব ছাড়া কোনো মুসল্লির জন্য খুতবা অবস্থায় এ ধরনের কথা বলাও নিষেধ। 

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১১১১; নাইলুল আওতার ৩/২৫২; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৮৪৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৯৫; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৫৬৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/৩৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৪৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৭৩

Sharable Link

ফাহিমা আক্তার - ফেনী

৩৩২৭. Question

আমার নিকট নগদ কোনো টাকা নেই। কেবল বিয়ের সময় মহর এবং উপঢৌকন হিসেবে পাওয়া তিন ভরি স্বর্ণ আছে। আর আমার ভাইয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া একটি পাথর সেট আছে। এটি অনেক দামি পাথর দ্বারা তৈরি, যার মূল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া যাকাতযোগ্য আর কোনো সম্পদ আমার নেই। হুজুরের নিকট জানতে চাই যে, এ অবস্থায় আমার উপর যাকাত ফরয কি না?


Answer

ব্যবহৃত পাথর দামি হলেও তার উপর যাকাত আসে না। তাই আপনার উক্ত পাথর সেটের উপর যাকাত আসবে না। সুতরাং আপনার নিকট যদি বাস্তবেই তিন ভরি স্বর্ণ ছাড়া যাকাতযোগ্য অন্য কোনো সম্পদ (তথা নগদ টাকারূপা বা ব্যবসার পণ্য) না থাকে তাহলে শুধু ঐ স্বর্ণের কারণে আপনার উপর যাকাত ফরয হবে না। কেননা শুধু স্বর্ণের উপর যাকাত ফরয হওয়ার জন্য সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের মালিক হতে হবে। এরচেয়ে কম স্বর্ণ থাকলে এবং যাকাতযোগ্য অন্য

কোনো সম্পদ (যেমননগদ টাকারূপা বা ব্যবসার পণ্য) না থাকলে যাকাত ফরয হবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯৯৬৬, ১০১৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৫৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৯৭; আলবাহরুর রায়েক ২/২২৬, ২/২২৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৮, ১/১৮০; বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭৩; দুরারুল হুককাম ফী শরহি গুরারিল আহকাম ১/১৭৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আনওয়ার হুসাইন - হারিয়াখালি, টেকনাফ

৩৩২৮. Question

আমি একজন চাকরিজীবী। গত বছরের শুরুর দিকে আমার কাছে যাকাতের নেসাব পরিমাণ সম্পদ ছিল। দুতিন মাস পর আমার ছেলে গাড়িতে এক্সিডেন্ট করে। তখন তার চিকিৎসার পিছনে আমার সব টাকা খরচ হয়ে যায়। আরো কিছু টাকা ঋণও করতে হয়। পরবর্তীতে আবার আল্লাহর রহমতে নেসাবের চেয়েও বেশি টাকা-পয়সার মালিক হয়ে যাই।

শুনেছি, যাকাত ফরয হওয়ার জন্য নাকি বছরের শুরু আর শেষে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা যথেষ্ট। পুরো বছর থাকা জরুরি নয়। তাহলে উক্ত অবস্থায় বছরের শুরু-শেষ নেসাবের মালিক হওয়ার কারণেই কি আমার উপর যাকাত ফরয হয়ে গেছে?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার নিকট তখন যদি টাকা-পয়সা ছাড়া যাকাতযোগ্য আর কোনো সম্পদ না থেকে থাকে তাহলে আপনার উপর গত বছরের যাকাত ফরয হয়নি। কারণ বছরের মাঝে কিছু সময় আপনার কাছে যাকাতযোগ্য কোনো সম্পদই ছিল না। অথচ যাকাত ফরয হওয়ার জন্য বছরের শুরু-শেষ নেসাবের মালিক হওয়ার সাথে সাথে পুরো বছর অল্প হলেও প্রয়োজন অতিরিক্ত যাকাতযোগ্য সম্পদ থাকা জরুরি। বছরের মাঝখানে কখনো যাকাতযোগ্য সম্পদ সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেলে ঐ বছরের হিসাবও বাদ হয়ে যায়।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে গত বছরের যাকাত দিতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনি যখন থেকে পুনরায় নেসাবের মালিক হয়েছেন তখন থেকে নতুন করে যাকাতবর্ষ গণনা শুরু করতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৮; রদ্দুল মুহতার ২/৩০২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৮১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - গফরগাঁও, ময়মনসিংহ

৩৩২৯. Question

আমি এ বছর হজ্বে যাওয়ার নিয়ত করেছি। আমার কাছে হজ্বের খরচ পরিমাণ টাকা আছে। তবে আমার উপর স্ত্রীর মোহর বাবদ ১ লক্ষ টাকা ঋণ আছে, যা বিয়ের সময় পরে আদায়ের কথা হয়েছিল। এখন মহরের ঐ টাকা আদায় করলে হজ্বের যথেষ্ট পরিমাণ টাকা অবশিষ্ট থাকবে না।

এ অবস্থায় আমার উপর কি হজ্ব করা ফরয হবে, নাকি আগে মোহর আদায় করতে হবে? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রীর মোহর বাকি থাকলেও তা আদায়ের আগে হজ্বে যেতে পারবেন এবং এর দ্বারা আপনার ফরয হজ্বই আদায় হবে। বকেয়া মোহর যেহেতু আপনাকে এখনই আদায় করতে হচ্ছে না তাই এ কারণে হজ্ব বিলম্বিত করা ঠিক হবে না। হ্যাঁআপনি যদি এ টাকা থেকেই স্ত্রীর মোহর আদায় করে দেন তাহলে অবশিষ্ট টাকা দ্বারা যেহেতু হজ্বের খরচ হবে না তাই এক্ষেত্রে হজ্বও ফরয হবে না। কিন্তু যদি এখন মোহর আদায়ের নিয়ত না থাকে তবে ঐ টাকার কারণে হজ্ব ফরয হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬১; আলমানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৩; আলবাহরুল আমীক ১/৩৭৭; ইরশাদুস সারী ৫৯; আলজাওহারাতুন নাইয়্যিরাহ ১৯২

Sharable Link

উম্মে আয়েশা - কেরানীগঞ্জ

৩৩৩০. Question

আমার নিকট এ পরিমাণ টাকা আছে যে, আমার উপর হজ্ব ফরয। আমার স্বামীর দ্বীনের বুঝ নেই। তার উপর হজ্ব ফরয হওয়া সত্তে¡ও তিনি হজ্ব করছেন না। আমি অনুমতি চাচ্ছি আমাকেও অনুমতি দিচ্ছেন না। আমার জানার বিষয় হল, আগামী বছর আমার ভাই হজ্বে যাবেন। স্বামীর অনুমতি ছাড়াই আমি ভাইয়ের সাথে হজ্বে যেতে পারব কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

হজ্ব আল্লাহ তাআলার মহান হুকুম। শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ ফরয। হজ্ব ফরয হলে বিলম্ব করা গুনাহ। তাই আপনাদের উভয়েরই অনতিবিলম্বে হজ্বে যাওয়া আবশ্যক। কোনো কারণে স্বামীর যেতে যদি বিলম্ব হয় আর আপনার মাহরামের ব্যবস্থাও হয়ে যায় তবে স্বামীর জন্য আপনাকে বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। তাই স্বামীকে এ বিষয় বোঝাতে চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে তাকে রাজি করে তার সাথেই হজ্বে যান। যদি তিনি না যান তবে আপনি ভাইয়ের সঙ্গে ফরয হজ্ব আদায়ের জন্য যেতে পারবেন। কেননা ফরয হজ্ব আদায়ের ক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতি বাধ্যতামূলক নয়। তবে নফল হজ্ব কিংবা ওমরা আদায়ের জন্য সফর করতে চাইলে অবশ্যই স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। তার অনুমতি ছাড়া যাওয়া যাবে না। 

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৫; গুনইয়াতুন নাসিক ২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আদনান - টাঙ্গাইল

৩৩৩১. Question

আমার আব্বা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন রয়েছে, যেগুলোর ফসল ছাড়াই আমাদের খোরাকির প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়। জমিজমা ব্যতীত আব্বার বাড়তি কোনো আয় নেই। জানতে চাই আমার আব্বার উপর কি হজ্ব ফরয?


Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সংসারের খরচের জন্য প্রয়োজন হয় না এমন জমিগুলো বা তার অংশবিশেষ বিক্রি করলে যদি আপনার আব্বার হজ্বের খরচ হয়ে যায় তাহলে আপনার আব্বার উপর হজ্ব করা ফরয। এক্ষেত্রে জমি বিক্রি করে হলেও তাকে হজ্বে যেতে হবে। 

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আমীরুল - পান্থপথ,ঢাকা

৩৩৩২. Question

 আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী মাঝেমধ্যেই ঝগড়া করে। স্ত্রী সর্বদা ঝগড়ার সময় বলে,আমাকে ছেড়ে দাও। এ কথাটি তার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আবদুল্লাহ একবার রাগের মাথায় বলে ফেলে যে,এই কথা তুমি আর একবার বললে তুমি তালাক। এখন জানার বিষয় হল,

ক) স্ত্রী যদি আবার রাগের মাথায় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কথাটি বলে তবে তার কী হুকুম? তালাক হলে কয় তালাক হবে এবং সেক্ষেত্রে তারা একত্রিত হতে চাইলে কী করণীয়?

খ) স্বামীর জন্য তার উক্ত কথা থেকে ফিরে আসার কোনো উপায় আছে কি?

দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আবদুল্লাহ ঐ কথা বলার পর তার স্ত্রী যদি পরবর্তীতে কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ঐ কথা বলে তবে তার উপর এক তালাক রজয়ী পতিত হয়ে যাবে। এরপর ইদ্দতের ভেতরেই আবদুল্লাহ যদি তাকে আবার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নেয় তবে সে তার স্ত্রী হয়ে যাবে। নতুন করে বিবাহ করা লাগবে না। কিন্তু ইদ্দতের ভেতরে যদি স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ না করে বা স্বামী-স্ত্রী সুলভ আচরণও না হয় তবে তালাকটি বায়েন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে উভয়ে একত্রিত হতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করত পুনরায় বিবাহ করতে হবে।

এভাবে এক তালাক হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে আবদুল্লাহ দুই তালাকের অধিকারী থাকবে। এক্ষেত্রে স্ত্রী যদি আবারও ঐ কথা বলে তাহলে পূর্বের শর্তের কারণে পুনরায় তালাক হবে না। আরো উল্লেখ্য যেআবদুল্লাহর ঐ শর্ত একবার কার্যকর হওয়ার আগে তা বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই। তাই তালাক থেকে বাঁচতে চাইলে স্ত্রীকে উক্ত কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪২০, ১/৪১৬;ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৫৪;আলবাহরুর রায়েক ৪/৮,৪/১৪;আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৫৫

Sharable Link

মাজেদুল হক - বড়লেখা,মৌলভীবাজার,সিলেট

৩৩৩৩. Question

কারীমার ৫ ছেলে। ফাতেমার ২ মেয়ে ও ১ ছেলে। ফাতেমার বড় মেয়ে বুশরা কারীমার দুধ পান করেছে। এখন জানার বিষয় হল, কারীমার বড় ছেলের সাথে বুশরার বিবাহ শুদ্ধ হবে কি না? আর ফাতেমার ছোট মেয়ে শরীফার সাথে কারীমার কোনো ছেলের বিবাহ বৈধ হবে কি না?


Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ফাতেমার পরিবারের বড় মেয়ে বুশরা যেহেতু কারীমার দুধ পান করেছে তাই কারীমা তার দুধ মা হয়ে গেছে। তার সকল ছেলে বুশরার দুধ ভাই ও মাহরাম।

কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ ... وَأَخَوَاتُكُمْ مِنَ الرَّضَاعَةِ

(তরজমা) তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা ... তোমাদের দুধ বোন। -সূরা নিসা ৪ : ২৩

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বর্ণনা করেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনদুধ পানের দ্বারা ঐ সব সম্পর্ক হারাম হয়ে যায়,যা বংশের কারণে হারাম হয়। -সহীহ মুসলিম ১/৪৬৬

সুতরাং ফাতেমার বড় মেয়ের সাথে কারীমার কোনো ছেলের বিবাহ জায়েয হবে না।

তবে ফাতেমার ছোট মেয়ে শরীফা যেহেতু কারীমার দুধ পান করেনি তাই কারীমার ছেলেরা তার মাহরাম নয়। তাই কারীমার যে কোনো ছেলের সাথে তার বিবাহ বৈধ।

-সূরা নিসা ৪ : ২৩;তাফসীরে কুরতুবী ৫/৭৪;তাফসীরে রাযী ১০/৩০;সহীহ মুসলিম ১/৪৬৬;মুসনাদে আহমদ,হাদীস : ২৪১২;ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৫;বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৬,৩/৪০০;আলমাবসূত,সারাখসী ৪/১৯৯, ৫/১৩৭;আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭

Sharable Link

নাজির আহমদ - পিরোজপুর

৩৩৩৪. Question

আমাদের গ্রামের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। গত তিন মাস আগে দুই পক্ষের মুরব্বিরা বসে উভয়কে বিবাহ পড়িয়ে দেয়। বিবাহের তিন মাস পরেই উক্ত মেয়ে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে। এ নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আমরা জানতে চাচ্ছি যে, উক্ত সন্তানের নসব কি ঐ ছেলের দিকে সাব্যস্ত হবে? আর গর্ভবতী অবস্থায় সংঘটিত উক্ত বিবাহ কি সহীহ হয়েছে?


Answer

হ্যাঁপ্রশ্নোক্ত বিবাহ সহীহ হয়েছে। আর ঐ নারীর স্বামী (বিবাহের পূর্বে যার সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল সে) যদি  নবজাতককে নিজের সন্তান হিসেবে মেনে নেয় তাহলে শিশুটি তার সন্তান বলেই বিবেচিত হবে এবং এ সন্তানের বংশসূত্র তার সাথেই সম্পৃক্ত হবে। 

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৬৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৭২-১৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৪০

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল গাফফার - খুলশি, চট্টগ্রাম

৩৩৩৫. Question

এক ব্যক্তি আমার থেকে তিন বছরের জন্য ২ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছে।  তার থেকে বন্ধক হিসেবে আমি একটি জমি নিয়েছি। হুজুরের কাছে জানতে চাই, ঐ জমি আমার কাছে বন্ধক থাকা অবস্থায় ভাড়া চুক্তির ভিত্তিতে ব্যবহার করতে পারব কি না? জানালে উপকৃত হব।


Answer

ঋণ দিয়ে বিনিময়ে গ্রহীতা থেকে কোনো ধরনের উপকৃত হওয়া জায়েয নেই। তা সুদের অন্তর্ভুক্ত। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বন্ধকি জমি থেকে আপনার জন্য কোনো প্রকার উপকৃত হওয়া জায়েয হবে না। তবে বন্ধকী চুক্তি বাতিল করে ন্যায্য মূল্যে তা ভাড়া নিতে পারবেন। ঋণের কারণে ভাড়া কম করা যাবে না। তদ্রƒপ ঋণের সাথে ভাড়া চুক্তিকে সম্পৃক্তও করা যাবে না। বরং ভাড়া চুক্তিটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও ঋণের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে হবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,হাদীস : ২১০৭৮ ১৩/৬৪৮; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ২৯৬;বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৮;ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৫৯৬;ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/৭৪;রদ্দুল মুহতার ৬/৫২৩;আলফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ৫/৬৯;মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ৩৭৮৩; ফাতহুল কাদীর ৬/৮০-৮১

Sharable Link

শিবলী হুসাইন - মধ্যবাড্ডা

৩৩৩৬. Question

আমি জালালাইন জামাতের ছাত্র। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লাইব্রেরী থেকে কিতাব সংগ্রহ করে থাকি। অনেক সময় লাইব্রেরিওয়ালারা নতুন কোনো কিতাব প্রকাশ করার আগে (বিশেষ করে বড় কিতাব হলে) আমাদের বলে, তোমরা যদি এখন অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখ তাহলে স্বাভাবিক ক্রয়মূল্য থেকে দশ পার্সেন্ট ছাড়ে পাবে। অর্থাৎ যে কিতাব তারা স্বাভাবিকভাবে ২,০০০/- টাকায় বিক্রি করবে অগ্রিম টাকা দিলে সেটা আমরা ১,৮০০/- টাকায় পাব। কখনো আরো অধিক ছাড়ও দেয়। জানার বিষয় হল, এভাবে আমাদের চুক্তি ও কিতাব সংগ্রহ করা কি বৈধ হবে?


Answer

লাইব্রেরিওয়ালাদের থেকে ঐভাবে অগ্রিম টাকা দিয়ে কিতাব নেওয়া বৈধ। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চুক্তির সময় ক্রয়কৃত কিতাবের ছাপাবাঁধাইকাগজের মান ইত্যাদি বিষয় স্পষ্ট করে নিতে হবে। যাতে ক্রয়কৃত কিতাবের ব্যাপারে অস্পষ্টতা না থাকে এবং পরবর্তীতে ঝগড়া বা মনোমালিন্য হওয়ার আশঙ্কা না থাকে।

-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দাহ : ২৮৯; শরহুল মাজাল্লাহ, মাদ্দাহ : ৩৮৯-৩৯০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৪৪; ইতরে হেদায়া ২০৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল হাই - চট্টগ্রাম

৩৩৩৭. Question

আমি দুবাই থাকি। আমার এক প্রতিবেশী আমাকে কল করে দেশে ফেরার সময় তার জন্য একটা উন্নতমানের ভেন্ডার মেশিন আনতে বলে। আমি আসার সময় তার জন্য একটি ভেন্ডার মেশিন কিনে আমার আসবাবপত্রের সাথে সেটাও লাগেজের মধ্যে বেঁধে দেই। বাড়িতে এসে লাগেজ খুলে দেখি মেশিনের গ্লাসটা ভেঙ্গে গেছে। এখন আমার প্রতিবেশী ঐ ভেন্ডার মেশিনটি গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় আমার জন্য শরীয়তের বিধান কী? উক্ত মেশিনের ক্ষতিপূরণ আমাকে বহন করতে হবে কি? দয়া করে বিস্তারিত জানাবেন।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর জন্য মেশিনটি কেনার পর থেকে তা আপনার কাছে আমানত হিসেবে ছিল। মেশিনটি যত্নসহকারে নিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব ছিল। অতএব আপনি যদি লাগেজের মধ্যে যত্নসহকারেই তা নিয়ে থাকেন তাহলে গ্লাসের ক্ষতিপূরণ আপনাকে দিতে হবে না। প্রতিবেশীকে মেশিনটি ত্রুটিসহই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু যদি লাগেজে যেভাবে নেওয়া দরকার ছিল সেভাবে না নেওয়ার কারণে বা আপনার ত্রুটির  কারণে তা ভেঙ্গে থাকে তবে এর ক্ষতিপূরণ আপনাকে বহন করতে হবে। ক্ষতিপূরণের সাথে আপনার প্রতিবেশী মেশিনটি গ্রহণ করতে বাধ্য। এক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরও মেশিন গ্রহণ না করা বৈধ হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩৮; মাজাল্লাহ, মাদ্দাহ : ১৪৬৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৫৬৭; রদ্দুল মুহতার ৭/৩৬৭

Sharable Link

আহমাদ ইবনে আবদুল্লাহ - নাটোর

৩৩৩৮. Question

আমাদের এলাকায় ব্যাপকভাবে রেওয়াজ আছে যে, কোনো ব্যক্তির ইন্তেকাল হলে তার পরিবার খতমে কুরআন বা খতমে তাহলীলের ব্যবস্থা করে। এবং যারা পড়ে তাদের জন্য খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করা হয়। আবার অনেক সময় টাকাও দেওয়া হয়।

জানার বিষয় হল, মৃতের উদ্দেশ্যে তাহলীল খতম পড়ে বা কুরআন তিলাওয়াত করে টাকা নেওয়া বা খাবার খাওয়া বৈধ হবে কি? দয়া করে বিস্তারিত জানাবেন।


Answer

ঈসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করে কিংবা কালিমা তায়্যিবা বা কোনো যিকির করে কোনো ধরনের বিনিময় গ্রহণ করা জায়েয নেই। হাদীস শরীফে এসেছেআবদুর রহমান ইবনে শিবল রা. থেকে বর্ণিতরাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনতোমরা কুরআনের বিনিময় গ্রহণ করো না এবং এর দ্বারা সম্পদ বৃদ্ধি করো না।-মুসনাদে আহমাদহাদীস : ১৫৫২৯

অন্য বর্ণনায় এসেছেহযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেনআমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিতোমরা কুরআন পড়ো এবং বিনিময় আল্লাহ তাআলার কাছে চাও। তোমাদের

পরে এমন জাতি আসবেযারা কুরআন পড়ে মানুষের কাছে বিনিময় চাইবে। -মুসনাদে আহমাদ,হাদীস : ১৯৯১৭

আরেক বর্ণনায় আছেতাবেয়ী যাযান রাহ. বলেনযে ব্যক্তি কুরআন পড়ে মানুষ থেকে এর বিনিময় গ্রহণ করে সে যখন হাশরের মাঠে উঠবে তখন তার চেহারায় কোনো গোশত থাকবে না। শুধু হাড্ডি থাকবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস : ৭৮২৪

উক্ত হাদীসসমূহের আলোকে ফকীহগণ বলেনকোনো কিছুর বিনিময়ে ঈসালে সওয়াবের জন্য কুরআন তিলাওয়াত করলে কিংবা কোনো যিকির করলে কোনো সওয়াব হবে না। বরং বিনিময় নিয়ে পড়ার কারণে টাকাদাতা ও গ্রহীতা উভয়ে গুনাহগার হবে।

উল্লেখ্যযদি শুধু তিলাওয়াতকারী বা তাহলীল পাঠকারীর জন্যই খাবারের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তা বিনিময় হিসেবে গণ্য হবে এবং পাঠকারীর জন্য তা খাওয়া নাজায়েয হবে। আর যদি ব্যাপকভাবে দাওয়াতের আয়োজন করা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে খতম পাঠকারীদের জন্য খাবার খাওয়াটা বিনিময় হিসেবে গণ্য হবে না।

-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১৫৫২৯, ১৯৯১৭; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৭৮২৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৫৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৫/২৬০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২০/৫৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৪১

Sharable Link

মুহাম্মাদ মুসলিম - লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম

৩৩৩৯. Question

আমি এক ব্যক্তি থেকে একটি অফসেট মেশিন ১০ বছরের জন্য এই চুক্তিতে ভাড়া নিয়েছি যে, মেশিনটি আমার রিস্কে থাকবে। মেশিন নষ্ট হলে বা মেশিনের কোনো জিনিস পরিবর্তন করতে হলে তার খরচ আমি বহন করব এবং প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা মেশিনের ভাড়া দিব।

আমার আরো একটি অফসেট মেশিনের সাথে ঐ মেশিনটি তৃতীয় ব্যক্তিকে ১০ বছরের জন্য এই চুক্তিতে ভাড়া দিতে চাচ্ছি যে, সে প্রতি মাসে আমাকে ৬০ হাজার টাকা মেশিনের ভাড়া দিবে। কোনো সময় মেশিন নষ্ট হলে ঠিক হওয়া পর্যন্ত ভাড়া মওকুফ থাকবে এবং মেশিন ঠিক করতে হলে বা মেশিনের কোনো জিনিস পরিবর্তন করতে হলে তার খরচ আমাকেই বহন করতে হবে।

তাই জানার বিষয় হল, উপরে উল্লেখিত নিয়মে মেশিন ভাড়া নেওয়া এবং তৃতীয় পক্ষকে ভাড়া দেওয়া জায়েয হবে কি না? জানালে উপকৃত হব।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ভাড়া গ্রহীতার উপর মেশিনের রিস্ক থাকা এবং মেশিন নষ্ট হলে বা মেশিনের কোনো জিনিস পরিবর্তন করতে হলে তা ভাড়া গ্রহীতার খরচে ঠিক করার শর্ত করা শরীয়তসম্মত হয়নি। ভাড়ার ক্ষেত্রে নিয়ম হলভাড়াকৃত বস্তুর হেফাযতের দায়িত্ব ভাড়া গ্রহীতার থাকবে। কিন্তু এর রিস্ক এবং এর মেরামত বা যন্ত্রাংশ ক্রয় ও সার্ভিসিং খরচ মালিককেই বহন করতে হবে। হ্যাঁ,ভাড়া গ্রহীতার অবহেলা বা ত্রুটির কারণে কোনো খরচ হলে  তা ভাড়া গ্রহীতাকে বহন করতে হবে। এছাড়া কোনো মেরামত খরচ ভাড়া গ্রহীতার উপর চাপানো যাবে না।

তাই এখন আপনাদের কর্তব্য হলপূর্বের চুক্তি বাতিল করে দিয়ে নতুনভাবে সঠিক নিয়মে চুক্তি করা। শরীয়তসম্মতভাবে চুক্তিটি নবায়ন করে নিলে ঐ মেশিনটির সাথে নিজের মেশিনটি প্রশ্নে বর্ণিত উপায়ে তৃতীয় ব্যক্তির নিকট ভাড়া দেওয়া জায়েয হবে।

-আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ কুয়াইতিয়্যাহ ২৮/৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৩৯, ৪/৪৪২; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩০; শরহুল মাজাল্লাহ ১/৭০৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৫৫; কিতাবুল আছল ৩/৪৬৩; শরহুল মাজাল্লাহ ২/২৮৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২৬৮; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৫/৫৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফরহাদ - আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম

৩৩৪০. Question

আমি একজন কাগজ ব্যবসায়ী। দুই সপ্তাহ আগে আমি এক ব্যক্তিকে এ শর্তে দুই লক্ষ টাকা দিয়েছি যে, সে দুই মাস পর আমাকে ঐ টাকার বিনিময়ে ৭০ গ্রামের ১০০ রিম অফসেট কাগজ দিবে। এ মুহূর্তে আমার ঐ টাকার প্রয়োজন হলে আরেক ব্যক্তি থেকে এ শর্তে এক লক্ষ টাকা নিয়েছি যে, দুই মাস পর কাগজ হস্তগত হলে তাকে চল্লিশ রিম কাগজ দিব।

জানার বিষয় হল, উপরোক্ত লেনদেন দুটি শরীয়তসম্মত হয়েছে কি না? জানালে উপকৃত হব।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দুই মাস পর ৭০ গ্রামের ১০০ রিম অফসেট কাগজ দিবে এ চুক্তিতে অগ্রিম মূল্য দেওয়া সহীহ হয়েছে। এটাকে শরীয়তের পরিভাষায় বাইয়ে সালাম বলা হয়।

কিন্তু দ্বিতীয় ব্যক্তি থেকে আপনার জন্য এ শর্তে টাকা নেওয়া জায়েয হয়নি যেদুই মাস পর কাগজ হস্তগত হলে সেখান থেকে ৪০ রিম কাগজ দিবেন। কেননা ক্রয়কৃত পণ্য হস্তগত করার আগে তা বিক্রি করা নাজায়েয।

সুতরাং দ্বিতীয় চুক্তিটি বাতিল করে দেওয়া জরুরি। 

- সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৫২৫; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৫১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/১১৯; আমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ ২৫/২১৮-২১৯; আদ্দুররুল মুখতার ৫/২১৮

Sharable Link

রূপা - সাভার, ঢাকা

৩৩৪১. Question

আমি একটি বাড়ির ২টি ফ্লোর ৩ বছর মেয়াদে বন্ধক নিয়ে বাড়ির মালিককে ৪০ লক্ষ টাকা প্রদান করতে চাই। বিনিময়ে ২ ফ্লোরের ভাড়া নিয়ে আমি লাভবান হব। মেয়াদ শেষে আমি সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাব। এখন আমি জানতে পারলাম যে, উল্লেখিত লেনদেনটি নাজায়েয। এখন আমার জানার বিষয় হল, আমাদের এই লেনদেনটি সহীহ করার কোনো পদ্ধতি আছে কি? জানালে উপকৃত হব।


Answer

প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে লেনদেন করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। কেননা ঋণ দিয়ে বিনিময়ে গ্রহীতা থেকে কোনো প্রকার উপকার গ্রহণ করা সুদের অন্তর্ভুক্ত। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতা থেকে ঋণের বিপরীতে দুটি ফ্লোর বন্ধক নিয়ে তা থেকে উপকৃত হওয়া আপনার জন্য কোনোক্রমেই জায়েয হবে না।

এক্ষেত্রে বৈধভাবে লেনদেন করতে চাইলে ঋণ ও বন্ধকী চুক্তি না করে শুরু থেকেই ভাড়া চুক্তি করতে পারেন। অর্থাৎ ফ্লোর দুটি আপনি দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ভাড়া নিবেন এবং সমুদয় ভাড়া এককালীন অগ্রিম পরিশোধ করে দিবেন। আর দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ভাড়া নিলে পারস্পরিক সম্মতিক্রমে স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে কিছুটা কমেও চুক্তি করতে পারবেন। উল্লেখিত চুক্তিতে ফ্লোর দুটির মালিক অগ্রিম যে টাকা গ্রহণ করবে তা যেহেতু ভাড়া হিসেবে নিবে তাই ঐ টাকা সে নিজ কাজে লাগাতে পারবে। আর আপনিও অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় ফ্লোর দুটিতে বসবাস করতে পারবেন কিংবা ফ্লোর দুটিতে উন্নয়নমূলক কোনো কাজ (যেমন টাইলস ফিটিংসডেকোরেশন ইত্যাদি) করে তা অন্যের নিকট অধিক টাকায় ভাড়া দিতে পারবেন।

অবশ্য পরবর্তীতে কখনো ভাড়া চুক্তি বাতিল হলে ভাড়াদাতার জন্য হিসাব করে অবশিষ্ট মাসসমূহের অগ্রিম ভাড়া ভাড়াগ্রহীতাকে ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যক হবে।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৫০৭১; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৩/১৪৯; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৩৭৬০; কিতাবুল আছল ৩/৪৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২৬৮; আলবাহরুর রায়েক ৭/২০৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/২৮; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরা ১/১০৯

Sharable Link

মাসউদুর রহমান - হবিগঞ্জ, সিলেট

৩৩৪২. Question

 

আমাদের গ্রামের পূর্ব পাড়ায় একটি মসজিদ আছে। যা ৫০-৬০ বছর পুরনো। আমাদের পশ্চিম পাড়ায় ঐ মসজিদেরই একটি জমি আছে। যা এক ব্যক্তি ঐ মসজিদের খরচ নির্বাহের জন্য ঐ মসজিদের নামে ওয়াকফ করেছিল। বর্তমানে মুসল্লি সংখ্যা বাড়ায় ঐ মসজিদে জায়গা সংকুলান হয় না। দ্বিতীয়ত প্রতি ওয়াক্তে পশ্চিম পাড়া থেকে পূর্ব পাড়ায় আসাও কষ্টকর। তাই এলাকার লোকজন চাচ্ছে পশ্চিম পাড়ায় অবস্থিত জমিটিতে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করতে।

জানার বিষয় হল, এলাকাবাসীর জন্য এমনটি করা কি বৈধ হবে? ঐ মসজিদের জায়গায় আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করা কি জায়েয হবে?


 

Answer

প্রশ্নের বক্তব্য অনুযায়ী পশ্চিম পাড়ার জায়গাটি যেহেতু পূর্ব পাড়ার ঐ মসজিদের আয়ের জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে তাই এ জমিতে পৃথক মসজিদ নির্মাণ করা বৈধ হবে না। ওয়াকফের শর্ত অনুযায়ী এ জায়গাটি পূর্ব পাড়ার মসজিদের উন্নয়ন ও আয়ের জন্যই ব্যবহার করতে হবে। পশ্চিম পাড়ায় নতুন মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজন থাকলে ভিন্ন জায়গার ব্যবস্থা করে নির্মাণ করতে হবে।

-রদ্দুল মুহতার ৪/৩৬০; দুরারুল হুক্কাম ২/১৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান - লাকসাম, কুমিল্লা

৩৩৪৩. Question

 

আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ প্রয়োজন। তাই মসজিদ কমিটি এ মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আমরা এ বারের কুরবানীতে এলাকার মানুষকে অনুরোধ করব, সকলেই যেন তাদের কুরবানীর পশুর চামড়ার পুরো না হলেও অন্তত অর্ধেক মূল্য যেন মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য দান করেন।

আমার জানার বিষয় হল, মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত কি সঠিক হয়েছে? চামড়ার মূল্য কি মসজিদ নির্মাণ কাজে লাগানো যাবে? শরীয়তের নির্দেশনা জানাতে অনুরোধ রইল। 


 

Answer

মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য মসজিদে দান করা জায়েয নয়। এ টাকা মসজিদ নির্মাণের জন্য ব্যয় করা কিংবা মসজিদের অন্য কোনো কাজে লাগানো নাজায়েয। কেননা কুরবানীর পশুর চামড়ার টাকা গরীব-মিসকীনের হক। তা যাকাত গ্রহণের উপযুক্তদেরকেই দিতে হবে। আর মসজিদ মুসলমানদের স্বতঃস্ফর্ত নফল দান দ্বারাই নির্মাণ করতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৫৭

Sharable Link

আহমাদ আলী - হোমনা, কুমিল্লা

৩৩৪৪. Question

 

কুরবানীর সময় আমরা কুরবানীর পশু কিনতে হাটে যাই। প্রত্যেক পশু কেনার পর হাসিল দিতে হয়। এখন জানার বিষয় হল, হাসিল কুরবানীর পশুর হক, নাকি হাটের ট্যাক্স? কেউ যদি হাসিলের টাকা না দিয়ে চলে আসে তাহলে তার কুরবানীতে কোনো সমস্যা হবে কি না?


 

Answer

হাসিল হাটের ভাড়া। এটি হাট কর্তৃপক্ষের হক। যা হাটের সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে নেওয়া হয়। তাই এ টাকা পরিশোধ করা জরুরি। হাসিল না দিলে হাট কর্তৃপক্ষের হক নষ্ট করার গুনাহ হবে। তাই কেউ হাসিল না দিয়ে থাকলে হাট কর্তৃপক্ষের নিকট তা পৌঁছে দিতে হবে। অবশ্য  হাসিল না দেওয়ার কারণে কুরবানী নাজায়েয হয়ে যাবে না। 

Sharable Link

রেযাউল করীম - ঝালকাঠি

৩৩৪৫. Question

আমার বোনের শাশুড়ি কিছুদিন আগে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর আগে আমার বোনকে বলেছিলেন, বৌ, আমার গলার হারটা তুমি নাও। আমার বোন তখন নেয়নি। বলেছিল, আম্মা, এখন রাখেন। পরে নিব। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি ইন্তেকাল করেন। এখন তার মেয়েরা বলছে যে, আম্মা ভাবিকে কখনো এমন কথা বলেনি। সুতরাং ভাবি এটা নিতে পারবে না। আমার প্রশ্ন হল, এ অবস্থায় ঐ হারটি কি আমার বোন পাবে?


Answer

হেবাকৃত বস্তু হস্তগত করার পূর্বে তাতে মালিকানা সাব্যস্ত হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বোনের শাশুড়ি যদি তাকে ঐ হারটি নেওয়ার কথা বলেও থাকেন তবুও সে ঐ হারটির মালিক হবে না। কেননা প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার বোন ঐ হারটি তখন গ্রহণ করেনি এবং পরবর্তীতে শাশুড়ির জীবদ্দশাতেও তা নেয়নি। তাই ঐ হারটি মরহুমার মীরাছের অন্তর্ভুক্ত হবে। সকল ওয়ারিশ তাদের অংশ অনুযায়ী এর মালিক হবে। 

-শরহুল মাজাল্লাহ ৩/৩৬২; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৯০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৩৭৪

Sharable Link

মুশতাক আহমদ - টাঙ্গাইল

৩৩৪৬. Question

আমি একবার মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমাকে পুত্রসন্তান দান করেন তাহলে দুটি গরু দিয়ে তার আকীকা করব। আল্লাহ আমাকে পুত্রসন্তান দিয়েছেন। পরে আমি জানতে পেরেছি যে, ছেলেসন্তানের আকীকার জন্য দুটি ছাগলই যথেষ্ট। তাই জানার বিষয় হল, আমার জন্য দুটি গরু দিয়ে আকীকা করা কি জরুরি? নাকি দুটি ছাগল দিলেই মান্নত আদায় হয়ে যাবে?


Answer

আকীকা করার মান্নত করলে তা মান্নত হয় না। তাই গরু দ্বারা আকীকা করা অপরিহার্য হয়ে যায়নি। বরং ছাগলদুম্বা ইত্যাদি পশু দ্বারাও আকীকা করা যাবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৬-৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ রায়হানুল করিম - কমলগঞ্জ, মৌলভী বাজার

৩৩৪৭. Question

আশা করি ভালো আছেন। আমি তাবেঈদের ঈমানদীপ্ত জীবন বইয়ে মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন রাহ.-এর জীবনানোলচনায় দেখতে পেলাম যে তিনি হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর তত্ত্বাবধানে তার দাসী সাফিয়্যাহকে বিবাহ করেছিলেন। কিন্তু তার জন্মালোচনায় বলা হয়েছে যে, তিনি হযরত উসমান রা.-এর খেলাফতের দুই বছর অবশিষ্ট থাকাকালে জন্মগ্রহণ করেন। আবার আলোচনার শেষদিকে বলা হয়েছে তিনি আনাস বিন মালিক রা.-এর অসিয়ত মুতাবিক তার জানাযার নামাযের ইমামতি করেছেন। একটু পরে বলা হয়েছে তিনি সাতাত্তর বছর বেঁচে ছিলেন। জানার বিষয় হল যিনি আবু বকর রা.-এর তত্ত্বাবধানে বিবাহ করেছেন তার জন্ম কীভাবে উসমান রা.-এর খেলাফতকালে হয়। আবার যদি সঠিক মেনে নেয়া হয় যে, তিনি আবু বকর রা.-এর তত্ত্বাবধানে বিবাহ করেছেন তাহলে আনাস বিন মালিক রা.-এর মৃত্যুকালে তার বয়স ৭৭ থেকে অনেক বেশি হয়। আর যদি তিনি ৭৭ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন সঠিক হয় তাহলে উসমান রা.-এর খেলাফতকালে তার জন্ম মেনে নিতে হয়। এটি মেনে নিলে আবু বকর রা.-এর তত্ত্বাবধানে বিবাহ হওয়া অসম্ভব। এসব তথ্য নিয়ে আমি বিভ্রান্তিতে আছি।


Answer

আমাদের কাছে রাহনুমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তাবেঈদের ঈমানদীপ্ত জীবন’-এর যে কপিটি রয়েছে তার ১২৭ পৃষ্ঠায় মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন শীর্ষক আলোচনা এসেছে। সেখানে মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন সম্পর্কে আলোচনার পূর্বে প্রথমে তাঁর পিতা সিরীন ও মাতা সাফিয়্যার পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিবাহ আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়।

বিবাহের প্রায় দীর্ঘ বিশ বছর পর উসমান রা.-এর খেলাফতের শেষ দিকে সিরীন ও সাফিয়্যাহর ঔরসে মুহাম্মাদ জন্মগ্রহণ করেন। ইনিই সেই বিখ্যাত তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন। যিনি শুধু ইবনে সিরীন নামেও পরিচিত।।

আমরা মূল কিতাব ছুয়ারুম মিন হায়াতিত তাবিয়ীন-এর সাথে অনূদিত কিতাবের ঐ অংশটি মিলিয়ে দেখেছি। মূল কিতাবের বক্তব্যের সাথে অনূদিত অংশের কোনো অমিল পাইনি।

সম্ভবত আপনার কপিটিতে সিরীনের সাথে সাফিয়্যাহর বিবাহের আলোচনার অংশে ছাপার ভুলের কারণে সিরীনের স্থলে ইবনে সিরীন বা মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন উল্লেখ হয়ে থাকতে পারে। এমনটি হয়ে থাকলে ঐ অংশটি ঠিক করে নিলেই আর কোনো অসামঞ্জস্যতা থাকবে না।

Sharable Link