মুহাম্মাদ - আগারগাঁও, ঢাকা

২৭৭০. Question

 আমি অযু অবস্থায় চামড়ার মোজা পরিধান করেছি। তার উপর আবার কাপড়ের মোজা পরেছি। এখন মাসেহ করার সময় কি সেই কাপড়ের মোজার উপর মাসেহ করলেই চলবে, নাকি কাপড়ের মোজা খুলে সরাসরি চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

Answer

চামড়ার মোজার উপর পরিহিত কাপড়ের মোজায় মাসেহ করা জায়েয হবে না। বরং কাপড়ের মোজা খুলে সরাসরি চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করতে হবে।

-রদ্দুল মুহতার ১/২৬৮; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮২; শরহুল মুনইয়াহ ১১১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫২

Sharable Link

হাবীবুর রহমান - ফেনী

২৭৭১. Question

অযু থাকা অবস্থায় আমার হাতের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বেরিয়ে গড়িয়ে পড়ার উপক্রম হয়। রক্ত পড়া বন্ধ করার জন্য আমি ক্ষতস্থানে স্যাভলন ক্রীম লাগিয়ে দিলে রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার রক্ত বের হতে দেখে খুব পুরু করে স্যাভলন ক্রীম লাগিয়ে দিই। এতে করে ঐ রক্ত স্যাভলন ক্রীমের সাথে মিশে সম্পূর্ণ ক্রীমকে লালচে বর্ণের করে ফেলে এবং ক্রীমের উপরও কিছু রক্ত বেরিয়ে আসে। কিন্তু কোনো রক্ত গড়িয়ে পড়েনি। আমার জানার বিষয় হল, এক্ষেত্রে কি আমার অযু ভেঙ্গে গেছে?

 

Answer

ক্ষতস্থান থেকে যদি এ পরিমাণ রক্ত বের হয় যা কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলে গড়িয়ে পড়ত তাহলে অযু ভেঙ্গে যাবে।

প্রশ্নের বর্ণনা দ্বারা বোঝা যাচ্ছে যে, যদি পুরু করে ক্রীম না লাগানো হত তাহলে রক্ত ক্ষতস্থানকে অতিক্রম করে গড়িয়ে পড়ত। সুতরাং এ ক্ষেত্রে আপনার অযু ভেঙ্গে গেছে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৯৬; রদ্দুল মুহতার ১/১৩৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/১২৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ রেজওয়ান মাহমুদ - জামিআতুস সুন্নাহ মাদারীপুর

২৭৭২. Question

ফরয নামাযের আগে ও পরে যে সুন্নত আছে তা আদায়ের সময় আমি যদি পেছনের কাযা নামায এবং এই ওয়াক্তের সুন্নত আদায়ের জন্য একসাথে নিয়ত করি তাহলে সুন্নত ও কাযা দুটোই আদায় হবে কি না?

 

Answer

একসাথে কাযা ও সুন্নতের নিয়তে নামায শুরু করলে শুধু কাযাই আদায় হবে। সুন্নত আদায় হবে না। তাই সুন্নতের সাথে কাযার নিয়ত করা যাবে না। সুন্নত পৃথকভাবে আদায় করতে হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ১/২৮১; রদ্দুল মুহতার ২/১৮; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৪৩৮; উমদাতুল ফিকহ ১/৩৯৬

Sharable Link

খাববাব আহমদ - বিশ্বনাথ, সিলেট

২৭৭৩. Question

 

গত ইদুল ফিতরের নামাযে আমি ইমামতি করেছিলাম। নামাযের পর অন্যজনকে দিয়ে খুতবা পড়িয়ে নেই। যিনি আমাদের চেয়ে বয়সে ও ইলমে বড়। তিনি যখন খুতবা পাঠ করতে উঠলেন তখন অন্য একজন বাধা দিলেন এবং বললেন, এভাবে একজন নামায পড়াবে আর অন্যজন খুতবা পাঠ করবে তা জায়েয নেই।

তাই প্রশ্ন হল, এরূপ করাটা সহীহ হয়েছে কি?

 

Answer

যিনি নামায পড়াবেন তারই খুতবা দেওয়া উত্তম। বিনা ওজরে এর ব্যতিক্রম করা উচিত নয়। কিন্তু কেউ করলে তা নাজায়েয হবে না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিনা ওজরে তা করে থাকলে অনুত্তম হয়েছে। ইলম ও আমলে বড় ব্যক্তিকে খুতবার জন্য দিতে চাইলে প্রথম থেকেই দিবে। যেন তিনি নামাযও পড়ান এবং খুতবাও পেশ করেন।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৪৮; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী ২৭৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৬২; মাজমাউল আনহুর ১/২৫৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম - চাপরতলা, বি. বাড়িয়া

২৭৭৪. Question

 

কাকরাইল মসজিদ থেকে ৪০ দিনের জন্য কোনো জামাত ৪৮ মাইলের বেশি দূরের এলাকায় গেলে তারা কি সেখানে মুসাফির গণ্য হবে না মুকীম হবে? 

 

 

Answer

 

কোনো জামাত সফরসম দূরত্ব অতিক্রম করে কোনো এলাকায় পৌঁছার পর যদি একটি গ্রাম বা সিটিতে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করে, তবে তারা মুকীম গণ্য হবে এবং পূর্ণ নামাযই আদায় করবে। 

 

আর যদি এক ইউনিয়নের কয়েক গ্রামে কিংবা শহর ও গ্রাম মিলে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করে তবে তারা মুসাফির গণ্য হবে। তখন মুসাফির ইমামের পিছনে অথবা একাকী নামায পড়লে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দুই রাকাত কছর পড়বে। অবশ্য মুকীম ইমামের পিছনে জামাতে নামায আদায় করলে পুরো চার রাকাতই পড়তে হবে।

 

-কিতাবুল আছল ১/২৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৭০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৯১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩০; শরহুল মুনইয়াহ ৫৪২; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩২

Sharable Link

শামীমা আক্তার - বগুড়া

২৭৭৫. Question

 

আমার ছেলের বয়স আড়াই বছর। সারাক্ষণ কোলে কোলেই থাকতে চায়। আমি নামাযে দাঁড়ালে সে কোলে ওঠার জন্য কাপড় ধরে টানাটানি করে। এতে কখনো আমার হাত কনুই পর্যন্ত এমনকি কখনো বাহুও খুলে যায়। হাতের কব্জি পর্যন্ত পুরো  হাত যেহেতেু নামাযে ঢেকে রাখা জরুরি, তাই তা খুলে গেলে আমি নামায ছেড়ে দেই। এখন বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানো ছাড়া আমার নামাযে দাঁড়ানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় আমার করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ হব। 

 

Answer

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হাত খুলে যাওয়ার সাথে সাথে তা আবার ঢেকে নিবেন। তৎক্ষণাৎ ঢেকে নিলে নামায নষ্ট হবে না। তাই প্রশ্নোক্ত অবস্থায় নামায ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। 

প্রকাশ থাকে যে, নামাযের মধ্যে শরীরের যেসব অঙ্গ ঢেকে রাখা জরুরি এগুলোর কোনো একটির এক চতুর্থাংশ বা তার চেয়ে বেশি খুলে গেলে এবং তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় তা খোলা থাকলে নামায নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু তিন তাসবীহর চেয়ে কম সময় খোলা থাকলে নামায নষ্ট হবে না।

 

-আদ্দুররুল মুখতার ১/৪০৮; ফাতহুল কাদীর ১/২২৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৮; আলবাহরুর রায়েক ১/২৭২

Sharable Link

ইসমাঈল হুসাইন - মাগুরা

২৭৭৬. Question

 

ঈদগাহের মাঠে খেলাধুলা, পিটি ইত্যাদির হুকুম কী?

 

Answer

ঈদগাহ যদি ওয়াকফিয়া হয় তাহলে তার যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা জরুরি। তাতে খেলাধুলা ও পিটি ইত্যাদি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা ঈদগাহের ওয়াকফ মূলত নামাযের জন্যই করা হয়।। তাই এতে প্রশ্নোক্ত কাজগুলো করা একে তো ওয়াকফের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী, দ্বিতীয়ত এগুলো ঈদগাহের আদবেরও পরিপন্থী।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯১; ফাতাওয়ান নাওয়াযিল ৩৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাসান মাহমুদ - নোয়াখালী

২৭৭৭. Question

 

জনৈকা মহিলার জানাযায় দেখলাম, তার পিতার উপস্থিতিতে তার পুত্র জানাযার ইমামতি করছেন। অথচ তার পিতাও নামায পড়ানোর যোগ্য ছিলেন। এতে আমার মনে সংশয় সৃষ্টি হয় যে, বস্ত্তত এক্ষেত্রে নামায পড়ানোর বেশি হকদার কে? দয়া করে বিষয়টি জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

 

Answer

মৃতের পিতা ও পুত্র উভয়ে যদি ইমামতির যোগ্য হয় এবং দুজনেই উপস্থিত থাকে তবে সেক্ষেত্রে পিতাই জানাযা পড়ানোর বেশি হকদার। অবশ্য এক্ষেত্রেও পিতা যদি মৃত ব্যক্তির পুত্রকে জানাযা পড়াতে অনুমতি দেন তাহলে তার জন্য জানাযা পড়াতে কেনো অসুবিধা নেই। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পিতা অনুমতি দিয়ে থাকলে পুত্রের জানাযা পড়ানো অনুত্তম হয়নি।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৬৩৭০; কিতাবুল আছল ১/৪২৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৮০; ফাতহুল কাদীর ২/৮৩

Sharable Link

মাসুম - দিনাজপুর

২৭৭৮. Question

 

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব একবার জানাযা নামাযে চার তাকবীরের পর ভুলে আরও এক তাকবীর বলে ফেলেন। জানতে চাই, ঐ জানাযা কি আদায় হয়েছে? আর এক্ষেত্রে মুকতাদিদের করণীয় কী?

 

Answer

 

জানাযা নামাযে চার তাকবীরের বেশি বলা ভুল। তাবে এ ভুলের কারণে নামায নষ্ট হয় না। তাই ঐজানাযা আদায় হয়ে গেছে। 

আর ইমাম কখনো চার তাকবীরের বেশি বলে ফেললে মুকতাদিগণ অতিরিক্ত তাকবীরে ইমামের অনুসরণ না করে চুপ থাকবে। অতপর ইমাম যখন সালাম ফেরাবেন তখন মুকতাদিগণও তার সাথে সালাম ফেরাবে।

 

-শরহুল মুনইয়া ৫৮৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/২১৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৭৫

Sharable Link

রহমতুল্লাহ ইবনে নূরুল ইসলাম - পল্লবী, ঢাকা

২৭৭৯. Question

 

এক ব্যক্তির ঢাকা শহরে বেশ কিছু জমি আছে। যার বর্তমান মূল্য কয়েক কোটি টাকা। ঐ জমিগুলো ক্রয় করার সময় তার বিক্রি করা উদ্দেশ্য ছিল না। বরং তিনি সম্পত্তি গড়ার উদ্দেশ্যে ক্রয় করেছিলেন। অবশ্য পাশাপাশি এই নিয়তও ছিল যে, কখনো ভালো দাম পাওয়া গেলে বিক্রি করে দিবেন। তার ঐ জমিগুলোর উপর যাকাত আসবে কি না? জানালে খুশি হব।

 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি যেহেতু জমিগুলো মূলত সম্পদ গড়ার উদ্দেশ্যেই ক্রয় করেছে, বিক্রি তার মূল উদ্দেশ্য ছিল না তাই উক্ত জমির উপর তাকে যাকাত দিতে হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/১১১; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭৩; কিতাবুল আছল ২/৯৭

Sharable Link

শাহ ইরফান - ফেনী

২৭৮০. Question

 

আমার ভগ্নিপতির অস্বচ্ছলতার কারণে ভাগ্নে-ভাগ্নিদের নিয়ে বোন অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছে। পাশাপাশি ভগ্নিপতির মানসিক সমস্যা। এ কারণে আরো জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় আমি কি আমার বোনকে যাকাতের টাকা দিতে পারব? জানালে উপকৃত হব।

 

Answer

বোন যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে তাকেও যাকাত দেওয়া যায়। তাই আপনার বোনের নিকট প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ কোনো সম্পদ (যেমন-টাকা-পয়সা, স্বর্ণ অলঙ্কার কিংবা প্রয়োজন অতিরিক্ত মূল্যবান অন্যান্য সম্পদ) না থাকলে তাকে যাকাত দিতে পারবেন। বরং এমন গরীব নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দেওয়া উত্তমও বটে। কিন্তু যদি তার নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ কোনো সম্পদ থাকে তাহলে যাকাত দেওয়া যাবে না। বরং সেক্ষেত্রে তাদেরকে নফল দান-সদকা দ্বারা সহায়তা করবেন।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭১৭১; কিতাবুল আছল ২/১৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৬২

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফারুক আসলাম - বগুড়া

২৭৮১. Question

 

প্রশ্ন : আমি ছোটবেলা থেকেই প্রতিবছর রমযানের সবকটি রোযা রেখে আসছি। কিন্তু গতবছর বন্ধুদের তালে পড়ে দুদিন রোযা অবস্থায় খেয়ে ফেলি। এর জন্য আমি খুবই অনুতপ্ত। এখন আমাকে এ দুটির পরিবর্তে কয়টি রোযা রাখতে হবে? এবং কীভাবে রাখতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

Answer

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে দুটি রোযা কাযা করতে হবে এবং উভয়ের জন্য একটি কাফফারা আদায় করতে হবে। কাফফারার পদ্ধতি হল, রমযান ছাড়া লাগাতার পূর্ণ দু’ মাস রোযা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে চান্দ্র মাসের প্রথম তারিখ থেকে রোযা রাখলে কোনো মাস ত্রিশ দিনের কম হলেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আর এ  দু’ মাসের মধ্যে ইচ্ছাকৃত কিংবা ওজরবশত কোনো রোযা ভেঙ্গে ফেললে কাফফারা আদায় হবে না। এক্ষেত্রে পুনরায় নতুন করে দু’ মাস রোযা রাখতে হবে। আর যদি কারো লাগাতার দু মাস রোযা রাখার শক্তি-সামর্থ্য না থাকে তাহলে ষাটজন মিসকীনকে দু’ বেলা খাওয়াবে অথবা তার মূল্য প্রদান করবে। 

প্রকাশ থাকে যে, রমযানুল মুবারকে ইচ্ছাকৃত রোযা ভাঙ্গা অনেক বড় গুনাহ। এর জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে 

ইস্তিগফার করা আবশ্যক।

হাদীস শরীফে এসেছে, আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ওজর ও অসুস্থতা ছাড়া ইচ্ছাকৃত রমযানের কোনো রোযা ভেঙ্গে ফেলে সে আজীবন রোযা রাখলেও তার সমতুল্য হবে না।

 

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১০০৮১; সহীহ বুখারী ১/২৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩, ৩/৪৭৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৩০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ৩৬৬

Sharable Link

শাহ ইরফান - ফেনী

২৭৮২. Question

 

গত বছর আমি ইহরাম অবস্থায় ভুলে আমার মোচ কাটা শুরু করি। স্মরণ হওয়া মাত্রই কাটা বন্ধ করে দিই। তখন এক চতুর্থাংশের চেয়েও কম পরিমাণ মোচ কাটা হয়েছিল। জানতে চাই, আমার উপর কি কোনো সদকা বা দম ওয়াজিব হয়েছে? যদি ওয়াজিব হয়ে থাকে তবে তা দেশে আদায় করলে কি চলবে?

 

Answer

উক্ত ভুলের কারণে আপনার উপর সদকাতুল ফিতর পরিমাণ নির্দিষ্ট খাদ্য বা ঐ দেশের হিসাবে তার মূল্য সদকা করা ওয়াজিব হয়েছে। আর তা দেশে আদায় করলেও চলবে। হেরেমের এলাকায় আদায় করা জরুরি নয়। তবে হেরেমে আদায় করা উত্তম।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৬; কিতাবুল আছল ২/৪৩২; ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৭৭

Sharable Link

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - ইশ্বরদী, পাবনা

২৭৮৩. Question

 

জনৈক ব্যক্তির বিবাহের কথাবার্তা চলছিল। অতপর পাত্রী দেখতে গিয়ে কথা প্রসঙ্গে মেয়েকে বলে ফেলে যে, বিয়ের পর আমার কথা (হুকুম) না শুনলে তালাক। এখন তার জানার বিষয় হল, সত্যিই কি তার সঙ্গে বিয়ের পর যদি কখনো ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় বা ভুলে তার হুকুম না মানে তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে? যদি হয় তাহলে কয় তালাক পতিত হবে এবং সে অবস্থায় করণীয় কী?

 

Answer

 

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মেয়েটি যদি বিয়ের পর কখনো স্বামীর কথা অমান্য করে তবুও ঐ কথার কারণে কোনো তালাক পতিত হবে না। 

উল্লেখ্য যে, এ ধরনের কথাবার্তা বলা অন্যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে তা বিবাহ নষ্ট হওয়ার কারণও হয়ে যায়। তাই এরূপ বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

-আলবাহরুর রায়েক ৪/৮; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ ২৯/২০; হীলায়ে নাজেযা ২০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৪৪

Sharable Link

এ কে. এম আবদুল মালেক - রূপনগর, টিনশেড, মিরপুর

২৭৮৪. Question

আমি মাসিক একটি পত্রিকার প্রশ্নোত্তর বিভাগে পেয়েছি যে, নানীর সৎ বোনকে বিবাহ করা জায়েয। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে একথাটি সঠিক নয়। তাই আমি আপনাদের নিকট এর সঠিক সমাধান জানতে চাই।

 

Answer

পত্রিকার ঐ বক্তব্যটি ঠিক নয়। নানীর (বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয়) সৎ বোন মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। তার সাথে বিবাহ হারাম। কুরআন মজীদে যে চৌদ্দ শ্রেণীর মহিলার সাথে বিবাহ হারাম বলা হয়েছে। এর মধ্যে এক শ্রেণী হল ‘খালা’। নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থসমূহে ও ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবে রয়েছে যে, উক্ত আয়াতে খালা দ্বারা যেমনিভাবে নিজের আপন ও সৎ (বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয়) খালা উদ্দেশ্য। তেমনিভাবে মার আপন ও সৎ খালাও এর অন্তর্ভুক্ত।

এছাড়া এ বিষয়টি সকল ইমাম ও ফকীহগণের ইজমা দ্বারাও প্রমাণিত।

-তাফসীর ইবনে আতিয়্যাহ ৪/৬৯; তাফসীরে মাযহারী ২/২৬৫; মাআরিফুল কুরআন ২/৩৫৬; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৯/৫১৫; আলমাজমূ ১৭/৩১৪; তুহফাতুল মুহতাজ ৯/২১৮; আলমুহাল্লা ৯/১৩১; আলইকনা ফী মাসাইলিল ইজমা ২/৬১; মারাতিবুল ইজমা ১১৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩০; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৩

Sharable Link

জুয়েল রানা - (ওয়েব থেকে প্রাপ্ত)

২৭৮৫. Question

বড় ভাইয়ের বিয়ের জন্য প্রস্তাব এসেছে। ছোট ভাই বা ভগ্নিপতি বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে চায়। তারা কি পাত্রীকে দেখতে পারবে? পাত্র পক্ষের পুরুষদের মধ্যে কে কে পাত্রী দেখতে পারবে?

 

Answer

পাত্রপক্ষের কোনো পুরুষ পাত্রীকে দেখতে পারবে না। প্রয়োজনে পাত্রের মহিলা আত্মীয়দের দিয়ে পাত্রী দেখিয়ে নিতে পারবে।

সুতরাং পাত্রের ভাই-ভগ্নিপতি পাত্রী দেখতে পারবে না। এমনকি বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার আগে পাত্রের পিতার জন্যও মেয়েকে দেখা জায়েয নয়।

-সূরা নূর : ৩০-৩১; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৩৪২৪; রদ্দুল মুহতার ৫/২৩৭; রওজাতুত তালেবীন ৭/২০

Sharable Link

মাওলানা আবদুল আওয়াল - বি.বাড়িয়া

২৭৮৬. Question

আমাদের বাড়ির সাথে আমাদের পারিবারিক একটি কবরস্থান আছে। যা ওয়াকফকৃত নয়। এতে প্রায় ১৩/১৪ বছর যাবত কাউকে দাফন করা হয়নি। এবং ভবিষ্যতেও দাফন করার ইচ্ছা নেই।

এখন আমাদের জানার বিষয় হল, উক্ত কবরস্থানে মসজিদ কিংবা মাদরাসা বানানো যাবে কি না? বা প্রয়োজনে নিজস্ব কাজে ব্যবহার করা যাবে কি না জানালে কৃতজ্ঞ হব।

 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী কবরস্থানের জায়গাটি যেহেতু ওয়াকফকৃত নয়; বরং তা মালিকানাধীন জায়গা এবং তাতে কোন নতুন কবরও নেই তাই মালিকগণ চাইলে সেখানে মসজিদ-মাদরাসা বানাতে পারবে। তদ্রূপ অন্য কোনো কাজেও ব্যবহার করতে পারবে।

-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৪২৮; উমদাতুল কারী ৪/১৭৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৮৯; শরহুল মুনইয়াহ ৫৬১

Sharable Link

মাসুম - পাবনা

২৭৮৭. Question

আমাদের এলাকায় একটি ওয়াকফিয়া বড় কবরস্থান আছে। তাতে অনেক ফলের গাছ আছে। ফল বিক্রি করে অনেক টাকা আয় হয়। কবরস্থানের জন্য ব্যাংকে একটা একাউন্ট খোলা হয়েছে। যাতে ঐ টাকা প্রতি বছর জমা রাখা হয়। এভাবে অনেক টাকা জমা হয়েছে। উক্ত কবরস্থানের জন্য বর্তমানে এই টাকার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই টাকাগুলো এলাকার মসজিদের প্রয়োজনে ব্যয় করা যাবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

Answer

কবরস্থানের ঐ টাকাগুলো মসজিদে ব্যয় করা যাবে না। বরং তা কবরস্থানের কাজেই ব্যয় করতে হবে। আর জমানো টাকা ভবিষ্যতেও এ কবরস্থানের জরুরত না হলে নিকটবর্তী কোনো কবরস্থানের প্রয়োজনে তা ব্যয় করা যাবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৫৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৫১; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ২/৫৩৮

Sharable Link

হুসাইন আহমদ - মিরপুর, ঢাকা

২৭৮৮. Question

এক ব্যক্তি ঢাকায় সরকারি চাকরি করে। তাকে তার পিতা অনেক টাকা পয়সা খরচ করে পড়াশোনা করিয়েছে এই আশায় যে, সে বড় হয়ে চাকরি করে তাদেরকে টাকা-পয়সা উপার্জন করে দিবে। এখন তার স্ত্রী, স্বামীর মাতাপিতার সঙ্গে যৌথ পরিবারে থাকে। ছেলে পিতা থেকে আলাদা হয়নি। ছেলে, স্ত্রী ও মাতাপিতার খরচ বাবদ প্রতি মাসেই টাকা পাঠিয়ে থাকে। তারপরও তার কাছে অনেক টাকা থেকে যায়। জানার বিষয় হল, তার অতিরিক্ত টাকার মালিক কে? এক ব্যক্তি বলেছেন, যৌথ পরিবারে থাকা অবস্থায় সন্তানের সব উপার্জনের মালিক পিতা। এ কথাটি কতটুকু ঠিক? এ সম্পর্কে বিস্তারিতত জানালে কৃতজ্ঞ হব।

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ছেলে চাকরি থেকে যা উপার্জন করবে এর মালিক ছেলেই। সংসারের জন্য খরচ করার পর যা অবশিষ্ট থাকবে সেগুলোর মালিকানা ছেলের। অবশ্য ছেলের দায়িত্ব হল, মা-বাবার প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রাখা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আর প্রশ্নে বর্ণিত ঐ ব্যক্তির কথা ঠিক নয়। শুধু যৌথ পরিবারে থাকলেই পিতা ছেলের উপার্জনের মালিক হয়ে যায় না। বরং এর জন্য আরো কিছু শর্ত রয়েছে, যা এক্ষেত্রে বিদ্যমান নেই।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৩০/১৩৯; শরহুল মাজাল্লা ৪/৩২০; আলফাতাওয়াল খাইরিয়্যাহ ২/৯৩

Sharable Link

লিমন - (ওয়েব থেকে প্রাপ্ত)

২৭৮৯. Question

আমার বাবা একজন রিটায়ার্ড অফিসার। তিনি বিশ লাখ টাকা পেনশন স্কীমে সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন। এর ফলে গভঃমেন্ট তাকে তিন মাসে ৬২,৫০০/- টাকা দেয়। এটা কি সুদ?

আমার বাবা বলেন যে, এটা রিটায়ার্ড লোকদের জন্য করা হয়েছে। অন্যরা এটা করতে পারে না। এটাকে ‘‘গভঃমেন্ট পেনশন স্কীম’’ নাম দেওয়া হয়েছে। আসলেই কি এটা পেনশনের মতো হালাল, নাকি সুদ?

বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

Answer

‘‘গভঃমেন্ট পেনশন স্কীম’’ যদিও সরকারি ব্যবস্থাপনায় রিটায়ার্ড অফিসারদের জন্য করা হয়েছে, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ সুদি স্কীম। কারণ সরকার মেয়াদী সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে গৃহিত টাকার উপর নির্দিষ্ট অংকে সুদ দিয়ে থাকে। তাই পেনশন নাম দেওয়ার কারণে তা হালাল হয়ে যাবে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সুদুভিত্তিক মেয়াদী জমা হিসাবকেও তো ডি.পি.এস বা ডিপোজিট পেনশন স্কীম বলা হয়ে থাকে। অথচ সেটিও হারাম।

সুতরাং আপনার পিতার সঞ্চয়পত্র কেনা সম্পূর্ণ নাজায়েয হয়েছে এবং এ স্কীম থেকে তিনি অতিরিক্ত যে অর্থ গ্রহণ করেছেন তা সুদ হয়েছে। ক্রয়কৃত সঞ্চয়পত্র জমা দিয়ে এ স্কীম প্রত্যাহার করা জরুরি। অতপর মূল টাকার অতিরিক্ত অংশ ফকীর-মিসকীনকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করে দেওয়া আবশ্যক। আর কৃত গুনাহের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

-সূরা বাকারা : ২৭৫; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/৪৬৫; তাফসীরে তবারী ৩/১০৪; শরহুল মাজাল্লা ২/৪৫৫; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা ২/১১০, ২৩৩

Sharable Link

সালমান বিন যুবাইর - জোড়াখালি, বগুড়া

২৭৯০. Question

শুনেছি, মাখলুকের নামে কসম করা জায়েয নয়। অথচ কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জিনিসের নামে কসম করেছেন। এর দ্বারা কি মাখলুকের নামে কসম করার বৈধতা প্রমাণিত হয় না? তাছাড়া এ সকল জিনিস দ্বারা কসম করার কারণই বা কী? যদি মাখলুকের নামে কসম করা হারাম হয় তাহলে তার দলিল কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

 

Answer

মানুষের জন্য কোনো মাখলুকের নামে কসম করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এ ব্যাপারে হাদীস শরীফে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এবং এটাকে শিরকতুল্য গুনাহ বলা হয়েছে।

আর আল্লাহ তাআলা মাখলুকের নামে কসম করেছেন-এর দ্বারা মানুষের জন্য মাখলুকের নামে কসম করা জায়েয প্রমাণিত হয় না। কেননা আল্লাহ তাআলা শরীয়তের বিধানদাতা। তার দেওয়া বিধান মানুষের জন্যই প্রযোজ্য। আল্লাহ তাআলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তিনি মাখলুকের নামে কসম করতে পারেন। এটা তার ইচ্ছাধীন। যেমন অহংকার তার বৈশিষ্ট্য। কিন্তু মানুষের জন্য তা হারাম।

মানুষের জন্য মাখলুকের নামে কসম করা হারাম হওয়া সম্পর্কে কিছু দলিল নিম্নে পেশ করা হল।

১. হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, (অর্থ) নিশ্চই আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে তোমাদের পূর্বপুরুষের নামে (সুনানে আবু দাউদের বর্ণনা অনুযায়ী, মাতা ও মূর্তির নামেও) কসম করতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং কসম করতে হলে কেবল আল্লাহ তাআলার নামে করবে, অন্যথায় চুপ থাকবে।-সহীহ মুসলিম ১/৪৬

২. আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. এক ব্যক্তিকে কাবা শরীফের নামে কসম করতে শুনে বললেন, আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত কারো নামে কসম করার অবকাশ নেই। আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করল সে নির্ঘাত একটি কুফরী বা শিরকী কাজ করল।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫৩৫

আর মাখলুকের নামে আল্লাহ তাআলার কসম করার মাঝে কী রহস্য ও তাৎপর্য নিহিত আছে, তা তিনিই ভালো জানেন। অবশ্য মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণ কিছু কিছু হেকমত বয়ান করেছেন। যেমন, একটি হেকমত হল, কসমকৃত বস্ত্তর গুরুত্ব ও মহত্ব বুঝানো। উদারহণ স্বরূপ, আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে সময়ের কসম করেছেন। এর দ্বারা সময়ের মূল্য ও গুরুত্ব বুঝানো উদ্দেশ্য।

-তাফসীরে কুরতুবী ২০/১২২; রূহুল মাআনী ৩০/২২৮; ফাতহুল বারী ১১/৫৪৪; উমদাতুল কারী ২৩/১৭৫; আলইসতিযকার ৪/২০৩

Sharable Link

কাউসার আহমদ - চাদপুর

২৭৯১. Question

এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পাশের বাড়িতে এক মহিলার সাথে কথা না বলার জন্য কসম করতে বলে। স্বামীর আদেশ পালনার্থে মহিলাটি বলে যে, আল্লাহর কসম, আমি ঐ মহিলার সাথে কোনো কথা বলব না।

দুদিন পর পাশের বাড়ির ঐ মহিলা তার কাছে আসলে সে বলে যে, আমার স্বামী তোমার সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছে। তাই আমি তোমার সাথে কোনো কথা বলতে পারব না।

একথা শুনে ঐ মহিলাটি কোনো কথা না বলে চলে যায়। এখন ঐ কথা বলার দ্বারা তার কসম কি ভঙ্গ হয়ে গেছে?

 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ মহিলাকে সম্বোধন করে উক্ত কথা বলার কারণে কসমটি ভঙ্গ হয়ে গেছে। কেননা কাউকে সম্বোধন করে কিছু বলাই তার সাথে কথা বলার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তাকে কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে।

কসমের কাফফারা হল, দশজন মিসকীনকে তৃপ্তিসহকারে দু বেলা খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। আর এ দুটির সামর্থ্য না থাকলে এক নাগাড়ে তিনটি রোযা রাখতে হবে।

-আরবাহরুর রায়েক ৪/৩৩২; মাবসূত, সারাখসী ৯/২২; ফাতহুল কাদীর ৪/৪১৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম সুমন - চাপরতলা, বি.বাড়িয়া

২৭৯২. Question

আমাদের দুটি কবুতর ছিল। হঠাৎ একটি কবুতর হারিয়ে যায়। কিছুদিন পর যে কবুতরটি ছিল তার সাথে বাইরের অন্য একটি কবুতর এসে মিলিত হল। এরপর বাইরের কবুতরটি ডিম পেড়ে অনেকগুলো বাচ্চা ফুটিয়েছে। আমরা ঐ বাচ্চাগুলোর কিছু খেয়েছি, কিছু বিক্রি করেছি। এখন আমার জানার বিষয় হল, এ দুটি কবুতরের একটি আমাদের, অন্যটি কার- তা জানা যায়নি। এমন অবস্থায় বাচ্চাগুলি খাওয়া বা বিক্রি করা কি ঠিক হয়েছে? যদি ঠিক না হয়, তাহলে আমরা কী করতে পারি? ঐ কবুতর এবং তার অবশিষ্ট বাচ্চাগুলিই বা কী করব?

বিস্তারিত জানালে খুশি হব।

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কবুতরটির মালিক পাওয়া গেলে ঐ কবুতর এবং তার অবশিষ্ট বাচ্চাগুলো মালিককে দিয়ে দিতে হবে। আর যা খাওয়া বা বিক্রি করা হয়েছে সেগুলোর মূল্যও তাকে দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু যদি মালিক না পাওয়া যায় এবং ভবিষ্যতেও পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, আর আপনারা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত গরীব হয়ে থাকেন তাহলে নিজেরাই ঐ কবুতর এবং অবশিষ্ট বাচ্চাগুলো রেখে দিতে পারবেন। আর যা খেয়েছেন বা বিক্রি করেছেন, তার মূল্যও সদকা করতে হবে না।

কিন্তু যদি আপনারা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত দরিদ্র না হয়ে থাকেন তাহলে ঐগুলো মালিকের পক্ষ থেকে সদকা করে দিতে হবে। আর যা বিক্রি করা হয়েছে সেগুলোর মূল্যও সদকা করে দিতে হবে।

-মাবসূত, সারাখসী ১১/১০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৪২২; আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ৫/২৫২

Sharable Link

ইবরাহীম ইবনে ইমাম - নরসিংদী

২৭৯৩. Question

আমার ছোট বোন পায়ে মেহেদী ব্যবহার করলে কিছু মহিলার তার সমালোচনা করে এবং বলে, মেহেদী যেহেতু দাড়িতে ব্যবহার করা হয় তাই তা পায়ে ব্যবহার করা আদব পরিপন্থী। জানতে চাই, আসলেই কি মেয়েদের জন্য পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা আদব পরিপন্থী? আবার কখনো ছেলেদেরকেও বিয়ে, খতনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় হাতে-পায়ে মেহেদী ব্যবহার করতে দেখা যায়। এটি কতটুকু সঠিক?

 

Answer

মেয়েদের জন্য পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা জায়েয, আদব পরিপন্থী নয়। আর প্রশ্নোক্ত যুক্তিটিও ঠিক নয়। দাড়িতে লাগানো হয় এ কারণে পায়ে লাগানো যাবে না-এটি মনগড়া কথা। আর পুরুষদের জন্য হাতে-পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা জায়েয নেই। তবে তারা চুল ও দাড়িতে ব্যবহার করতে পারবে।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪৮৯০; ফাতহুল বারী ১০/৩৬৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৪২২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭৩; সহীহ মুসলিম ২/১৯৯

Sharable Link