মুহাম্মাদ আবদুর রহমান - নরসিংদী

১৮৭৩, ১৮৭৪, ১৮৭৫. Question

১৮৭৩. প্রশ্ন : ক) যদি কোনো ব্যক্তি ঈদের নামায নিজে আদায় করার পর ঈদের নামাযের দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করেন তাহলে তার উক্ত ইমামতি বৈধ হবে কি না? ১৮৭৪. প্রশ্ন : খ) যারা তার পিছনে ইক্তেদা করে ঈদের নামায আদায় করবেন তাদের নামায সহীহ হবে কি না? ১৮৭৫. প্রশ্ন : গ) ঈদের নামাযের প্রথম জামাতের মুক্তাদি দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করতে পারবে কি না-প্রশ্ন করা হলে এক আলেম সাহেব বৈধ বলে ফতোয়া প্রদান করেন। এ ফতোয়া সঠিক কি না? শরীয়তের দৃষ্টিতে ফতোয়ার নির্ভরযোগ্য কিতাবাদির উদ্ধৃতি সহকারে উত্তর দিলে কৃতজ্ঞ হব।

Answer

উত্তর : ক ও খ) যে ব্যক্তি একবার নামায আদায় করেছে তার জন্য দ্বিতীয় জামাতের ইমাম হওয়ার সুযোগ নেই। শরীয়তে ঈদের নামায একবার, দুইবার নয়। যে ব্যক্তি একবার নামায পড়েছে তার জন্য দ্বিতীয় নামায ঈদের নামায নয়; বরং তা নফল নামায হবে। আর নফল আদায়কারী ইমামের পিছনে, ঈদের নামায আদায়কারী মুসল্লির ইক্তেদা করা বৈধ নয়। উক্ত মাসআলায় যদিও বিভিন্ন ফিকহী মাযহাবে মতভেদ রয়েছে, কিন্তু দলীলের বিচারে উল্লেখিত সিদ্ধান্তই অগ্রগণ্য এবং অধিকাংশ ফকীহ এই সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। সহীহ বুখারীর এক হাদীসে আছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইমাম বানানো হয় তাঁর অনুসরণের জন্য অতএব তোমরা ভিন্নতা অবলম্বন করবে না।’-সহীহ বুখারী ১/১০ জানা কথা, ঈদের নামাযের মুক্তাদীগণ নফল আদায়কারী ইমামের ইক্তেদা করলে ইমামের অনুসরণ হয় না; বরং ইমাম মুক্তাদীর নামায ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। অন্য বর্ণনায় আছে, হযরত কাতাদাহ রাহ. থেকে বর্ণিত, হযরত সাঈদ ইবনুল মুসাইয়াব ও হাসান বসরী রাহ. বলেন, যে ব্যক্তি যোহরের জামাত মনে করে আসরের নামায আদায়রত জামাতে শরীক হল এবং নামাযের পর সে জানতে পারল, তারা আসর আদায় করেছে, উক্ত ব্যক্তি আসর ও যোহর উভয় নামায পুনরায় পড়বে।’-মুসন্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৩/৫২৪ আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় এই যে, ইমাম যখন ঈদের নামায পড়বেন, তিনি অতিরিক্ত তাকবীরের সাথে পড়াবেন। অথচ বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোনো নফল নামাযে ঈদের নামাযের মতো অতিরিক্ত তাকবীর নেই। বিশেষ করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ণ জীবনে কখনো আদায়কৃত ঈদের নামায পুনরায় পড়াননি। কোনো সাহাবীকে এমন করতে আদেশও করেননি বা কোনো সাহাবী এমন করেছেন তার প্রমাণ নেই; বরং হাদীস শরীফে এক নামায একাধিকবার পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো নামায একদিনে একাধিকবার পড়ো না।-আবু দাউদ ১/৮৫ উত্তর : গ) সম্ভবত তিনি অন্য কোনো মাযহাব অনুযায়ী ফতোয়া দিয়েছেন। এটা ঠিক হয়নি। এর প্রথম কারণ হল, যে মত অনুযায়ী তিনি ফতোয়া দিয়েছেন তা দলীলের বিচারে দুর্বল। দ্বিতীয় কারণ হল এতদাঞ্চলে ফিকহে হানাফী অনুযায়ী কুরআন ও হাদীসের উপর আমল করা হয়। তাই শরীয়তসম্মত প্রয়োজন ছাড়া বিপরীত ফতোয়া দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলা দ্বীনী মাসলাহাতের পরিপন্থী।-আততামহীদ ২৪/৩৬৭; আলমাজমূ’ ৪/১৬৯; ফাতহুল বারী ২/২২৬; কিতাবুল উম্ম ১/২০০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৯৬; যাখীরা ২/২৪২; আলমুনতাকা, ইবনে তায়মিয়া ১/৬৩২; তাসহীলুল মাসালিক ২/৪৯৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৩/৫২৪

আততামহীদ ২৪/৩৬৭; আলমাজমূ’ ৪/১৬৯; ফাতহুল বারী ২/২২৬; কিতাবুল উম্ম ১/২০০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৯৬; যাখীরা ২/২৪২; আলমুনতাকা, ইবনে তায়মিয়া ১/৬৩২; তাসহীলুল মাসালিক ২/৪৯৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৩/৫২৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ শাহ ইমরান - বারাহীপুর, ফেনী

১৮৭৬. Question

আমরা জানি যে, নামাযীর সামনে দিয়ে যাওয়া নিষেধ। কিন্তু অনেক সময় সালাম ফিরিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখি, আমার সোজা পিছনে একজন নামায আদায় করছে। এমতাবস্থায় আমি তার সামনে থেকে সরে যেতে পারব কি? এক্ষেত্রেও নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করার গুনাহ হবে কি?

Answer

কেউ যদি নামাযীর বরাবর সামনে থাকে তাহলে সেখান থেকে চলে যাওয়ার সুযোগ আছে। এটা নামাযের সামনে দিয়ে অতিক্রম করার অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে বিনা প্রয়োজনে এমন না করা উচিত। কেননা, এতে তার মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। আবার কেউ তার সামনে দিয়ে অতিক্রম করারও আশংকা রয়েছে।

সহীহ ইবনে হিব্বান ৬/১২৯; ইলাউস সুনান ৫/৮২; ফাতহুল বারী ১/৬৯৮; উমদাতুল ফিকহ ২/১৩৫; তুহফাতুল আহওয়াযী ২/২৫৪; রদ্দুল মুহতার ১/৬৩৬

Sharable Link

মাওলানা মুহাম্মাদ হুমায়ুন আহমাদ - বাইতুল আমান জামে মসজিদ, পটুয়াখালি

১৮৭৭. Question

জনৈক ব্যক্তির নিকট যাকাতযোগ্য ৬০,০০০/- টাকা রয়েছে। পাশাপাশি তার মালিকানায় পাঁচ ভরি স্বর্ণও আছে। সে শুধু টাকার যাকাত আদায় করবে, নাকি স্বর্ণের যাকাতও আদায় করতে হবে? মেহেরবানী করে ফিকহের কিতাবের উদ্ধৃতিসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ব্যক্তির নিকট ৬০,০০০/- টাকা থাকায় সে এমনিতেই যাকাতের নেসাবের অধিকারী। আর যাকাতের নেসাবধারী ব্যক্তির নিকট স্বর্ণ, রূপা ও ব্যবসার সম্পদ যে পরিমাণেই থাকুক তার যাকাত দিতে হয়। তাই ঐ ব্যক্তিকে তার মালিকানাধীন ৫ ভরি স্বর্ণেরও যাকাত দিতে হবে।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৩০; বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ নজরুল ইসলাম - কুমিল্লা

১৮৭৮. Question

গ্রামে সাধারণত বাজার-হাট দূরে থাকে। তাই প্রয়োজনের সময় বাড়ির মহিলারা একে অপরের কাছ থেকে আলু, পেয়াজ, বেগুন ইত্যাদি গণনার হিসাবে ধার নেয়। পরে নিজেদের বাজার এলে তা গণনা করে সমপরিমাণ পরিশোধ করে দেয়। এক্ষেত্রে সাধারণত ঐ বস'গুলো কিছু ছোট বড় হয়েই থাকে, তবে এর কারণে তাদের মাঝে কোনো ঝগড়া বা মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় না। এখন প্রশ্ন হল, এইভাবে করজ নেওয়া-দেওয়া জায়েয কি না?

Answer

কম-বেশির শর্ত না করে এমন লেনদেন করা জায়েয। তবে আগে শর্ত না করে সম্ভব হলে আদায় করার সময় কিছু বেশি দিয়ে দেওয়া ভালো।

আলমুগনী ইবনে কুদামা ৬/৪৩৫; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১১/৫৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০২; কিতাবুল মাজমূ’ ১২/২৬৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশরাফ আলী - ঢাকা

১৮৭৯. Question

একবার অস্ত্র-যাদুঘরের সামনে সিগনালের সময় এক পানিওয়ালার কাছ থেকে এক বোতল পানি কিনেছিলাম। কিন্তু মূল্য পরিশোধের আগেই গাড়ি ছেড়ে দেয়। ফলে তাকে পানির মূল্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। সিগনাল পার হয়ে গাড়ি থামিয়ে তাকে খুঁজেছি কিন্তু তাকে পাইনি। এখনও তাকে খুঁজি তবে ক্ষণিকের দেখায় তার চেহারাও আমার মনে নেই, হয়তবা আমার চেহারাও তার মনে নেই। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু বিক্রেতার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাই আপনার করণীয় হল ঐ পানির মূল্য বিক্রেতার পক্ষ থেকে ছদকা করে দেওয়া।

আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৮৩; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১০/১৩৯; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১০/৬৬৬; মওসূআহ, ইবনে মাসউদ রা. পৃ. ৪৪১; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৩, ১৫৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/২৭১, ৩১৭

Sharable Link

ফায়রুজা সাফফাত - সাভার

১৮৮০. Question

যদি কোনো মেয়ে ঋতুমতী হয় আর পরীক্ষার প্রশ্নে কোনো সূরার অর্থ লিখতে বলা হয় তাহলে সে যদি মনে মনে সূরা পড়ে অর্থ লেখে তাহলে জায়েয হবে কি না? আর যদি এ অবস্থায় কুরআন মজীদের আয়াত দেখে দেখে লেখে তবে কি কলমের মাঝে কোনো ব্যবধান আছে? যেমন অনেকে বলে, শীষওয়ালা কলমে লেখা যাবে, অন্য কলমের দ্বারা লেখা যাবে না। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানালে অনেক উপকৃত হব।

Answer

মাসিক চলাকালীন কুরআন মজীদ স্পর্শ করা, পড়া, লেখা সবই নাজায়েয। পরীক্ষার সময়ও একই হুকুম। তবে কুরআনের আয়াত উচ্চারণ না করে এবং লিখিত আয়াত স্পর্শ না করে শুধু অর্থ লেখা যাবে। অর্থ স্মরণ করার জন্য আয়াত মুখে উচ্চারণ না করে মনে মনে স্মরণ করতে দোষ নেই। তদ্রূপ কেউ কুরআন খুলে দিলে হাত না লাগিয়ে তা দেখা যাবে।

সুনানে দারাকুতনী ১/১১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৯; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ ১৮/৩২১; হেদায়া ১/১১৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/২৩৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৩২৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৪৯; ফাতাওয়া শরঈয়্যাহ ১৪/৫০; মাআরিফুস সুনান ১/৪৪৬

Sharable Link

ফায়রুজা সাফফাত - সাভার

১৮৮১. Question

আমরা জানি, মেয়েদের চুল কাটা নিষেধ। তবে প্রয়োজনের সময় চার আঙ্গুল পরিমাণ চুল কাটা যায়। এখন আমার প্রশ্ন হল : ক) মেয়েরা কতদিন পর পর চুল কাটতে পারবে এবং তার পরিমাণ কতটুকু? খ) বেশি কাটলে তার কাফফারা কী দিতে হবে এবং তা কী পরিমাণ? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

Answer

মহিলাদের চুলের ক্ষেত্রে শরীয়তের মৌলিক নীতিমালা হল : ১. মহিলারা চুল লম্বা রাখবে। হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, উম্মাহাতুল মুমিনীন রা. চুল লম্বা রাখতেন। ২. এ পরিমাণ খাটো করবে না যে, পুরুষের চুলের মতো হয়ে যায়। হাদীস শরীফে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিনী মহিলার প্রতি অভিসম্পাত করা হয়েছে। ৩. চুল কাটার ক্ষেত্রে বিজাতীয়দের অনুকরণ করবে না। কারণ হাদীসে বিজাতীয়দের অনুকরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব যে মহিলার চুল এত লম্বা যে, কিছু অংশ কাটলে পুরুষের চুলের সাথে সাদৃশ্য হবে না তার জন্য ঐ পরিমাণ কাটা জায়েয হবে। পক্ষান্তরে যার চুল তত লম্বা নয়; বরং অল্প কাটলেই কাঁধ সমান হয়ে যাবে এবং পুরুষের বাবরী চুলের মতো দেখা যাবে তার জন্য অল্প করেও কাটার অনুমতি নেই। তবে জটিল অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে চুল ছোট করা, এমনকি জরুরতবশতঃ কামানোরও অনুমতি রয়েছে। অতএব চার আঙ্গুল পরিমাণ কাটা যাবে-এ কথা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়; বরং চুল বেশি বড় থাকলে যেমন কোমর সমান চুল থাকলে চার আঙ্গুলের বেশি পিঠের মাঝামাঝি করে কাটা জায়েয। তবে সর্বাবস্থায় ফ্যাশনের অনুকরণ করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে মহিলারা তাদের চুল খাটো করতে পারবে। এর জন্য সময়েরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আর কেউ নাজায়েয পরিমাণ কেটে ফেললে বা বিজাতীয় অনুকরণে চুল কেটে করে ফেললে তাওবা ইস্তিগফার করতে হবে।

সহীহ বুখারী ২/৮৭৪; জামে তিরমিযী ১/১০৩; সহীহ মুসলিম ১/১৪৮; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৪৭২; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল মারআতি ওয়াল বায়তিল মুসলিম ৩/৪০০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২০৩; আলফাতাওয়াল মারআহ, শায়খ ইবনে বায পৃ. ১৬৫ আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু বকর - মিরপুর-১, ঢাকা

১৮৮২. Question

আমি একদিন তারাবীর নামায আদায় করছিলাম। মাঝে একটি জরুরতে মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসি। পুনরায় মসজিদে গিয়ে দেখি যে, ইমাম সাহেব নামাযরত। তবে তারাবীহ না বিতর এ বিষয়ে সংশয়ে পড়ি। তখন আমি এভাবে নিয়ত করি যে, যদি ইমাম সাহেব বিতরের মধ্যে থাকেন তবে বিতরের নিয়ত করলাম আর তারাবীতে হলে তারাবীর। প্রকৃতপক্ষে তা ছিল বিতরের নামায। আমার জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় আমার উক্ত নিয়ত ও নামায সহীহ হয়েছে কি না?

Answer

জ্বী, এক্ষেত্রে ঐভাবে নিয়ত করা সহীহ হয়েছে এবং বিতরের নামায আদায় হয়েছে।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২৮২; ফাতহুল কাদীর ১/২৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪৩০; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ১২০

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবুল কালাম রেজা - মিরপুর-১২, ঢাকা

১৮৮৩. Question

আমি একজন ব্যবসায়ী। শুনেছি যে, ব্যবসায় সুদের মিশ্রন হারাম। অনেক সময় পণ্য বাকিতে বিক্রয় করতে হয়। আর তা সাধারণত বাজারদর থেকে কিছু বেশিতে বিক্রি করি। এখানে আমার জানার বিষয় এই যে, বাকি বিক্রিতে মূল্য বৃদ্ধি কি সুদের আওতায় পড়ে? এই বর্ধিত মূল্য গ্রহণ করা কি আমার জন্য বৈধ?

Answer

নগদ বিক্রির তুলনায় বাকি বিক্রিতে মূল্য কিছু বেশি রাখা দোষের নয়। তবে সাধারণত বাকির ক্ষেত্রে যে হারে অতিরিক্ত নেওয়া হয় তার চেয়ে বেশি নেওয়া ঠিক হবে না। প্রকাশ থাকে যে, বাকি বিক্রির ক্ষেত্রে অধিক মূল্য নেওয়া সুদ নয়। অবশ্য মূল্য চুড়ান্ত করে চুক্তি সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে বা বিলম্বে মূল্য পরিশোধের কারণে যদি অতিরিক্ত গ্রহণ করা হয় তবে তা সুদ ও হারাম হিসাবে গণ্য হবে।

জামে তিরমিযী ১/২৩৩; হেদায়া ৩/৭৪; বুহুছ ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা ১/১০; আলবাহরুর রায়েক ৬/১১৪; আলমাবসূত সারাখসী ১৩/৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৫/১৪২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আলী - সাভার

১৮৮৪. Question

নামাযীর সামনে সুতরা স্থাপন না করলে তার সামনে দিয়ে যাওয়া নিষেধ। এখন কেউ যদি একজন নামাযী ব্যক্তির সামনে সুতরা রেখে অতিক্রম করার পর তা টান দিয়ে অন্য নামাযী ব্যক্তির সামনে দেয় তবে বিধান কী?

Answer

বিশেষ প্রয়োজনে ঐভাবে অতিক্রম করা জায়েয হবে। তবে এতে নামাযীর মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। তাই বিনা প্রয়োজনে এমন করবে না। উল্লেখ্য, নামাযী ব্যক্তির সামনে দিয়ে অন্যান্য মুসল্লি বা সাধারণ মানুষের চলাচলের সম্ভাবনা থাকলে নামায শুরুর আগে সুতরা সামনে রেখে নামাযে দাঁড়ানো সুন্নত।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৬৩১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ - কাকরাইল মসজিদ মাদরাসা

১৮৮৫. Question

আমি এক মাসের চুক্তিতে ২,৫০০/- টাকার বিনিময়ে ১টি রুম ভাড়া নিয়েছি। ৭/৮ দিন থাকার পর বাসার পানির পাইপ ফেটে যাওয়ার কারণে পানি এতই খারাপ হয়েছে যে, খাওয়া-দাওয়া, অযু-গোসল ইত্যাদি কোনো কাজে ব্যবহারের যোগ্য ছিল না। এমনকি এ কারণে আমার এক বাচ্চার ডায়রিয়া হয়েছে এবং আমার স্ত্রী ও আরেক বাচ্চা অসুস্থ হয়েছে। তারপরও আমি ৪/৫ দিন বাহির থেকে পানি এনে সকল কাজ করি। পরবর্তীতে পানির লাইন ঠিক না করার কারণে ১২ দিন পর বাসা ছেড়ে দিই। এখন বাড়িওয়ালা বলছে, ঐ মাসের পূর্ণ ভাড়া দেওয়ার জন্য। আমি বলছি যে, আমি যুক্তিসঙ্গত কারণে বাসা ছেড়েছি। বিনা কারণে বাসা ছাড়িনি। তাই যতদিন ছিলাম ততদিনের ভাড়া দিব। জানিয়ে বাধিত করবেন যে, শরীয়তের আলোকে কার কথা সঠিক?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাসার পাইপ ফিটিংসের ত্রুটির কারণেই যদি পানি খারাপ হয়ে থাকে, আর বাড়িওয়ালাকে অবগত করার পরও তা ঠিক না করে থাকে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পুরো মাসের ভাড়া দেওয়া আপনার জন্য জরুরি নয়; বরং ১২ দিনের পূর্ণ ভাড়া সকল বিলসহ আদায় করতে হবে। অবশ্য পানি যতদিন ব্যবহার উপযোগী ছিল ততদিনের পানির বিল আদায় করতে হবে।

হেদায়া ৩/২৯৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৯, ৮০ ও ৮১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১২২, ১৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩৫২; মাজমাউল আনহুর ৩/৫৫৫; আলকিফায়া ৮/৮৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩৫; ফাতাওয়া খায়রিয়া ২/২০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৮; শরহুল মাজাল্লা, খালিদ আতাসী ২/৬০৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ সোহেল চৌধুরী - মগবাজার, ঢাকা

১৮৮৬. Question

আমি কম্পিউটারের কিছু প্রোগ্রাম শেখার জন্য এক সেন্টারে ৩ মাসের জন্য ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভর্তি হয়েছিলাম। আমি প্রোগ্রামগুলো শেখা শুরু করি। কিন্তু দশ দিন যাওয়ার পর আমার কাছে আর তা ভালো লাগেনি। তাই সেখানকার প্রধানকে বলেছি যে, আমি শুধু দশ দিনের প্রোগ্রাম ফি দিব। সে এতে রাজি হয়েছে। জানালে কৃতজ্ঞ থাকব যে, শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আমার প্রস্তাব কি ঠিক হয়েছে? নাকি পুরা ৩ মাসের ফি দিতে হবে?

Answer

সেন্টার-প্রধান যেহেতু দশ দিনের ফি নিতে রাজি হয়েছেন তাই আপনি ঐ দিনগুলোর ফি দিলে দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবেন।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪১৩; শরহুল মাজাল্লাহ খালিদ আতাসী ২/৫৮৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১০৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম - ঢাকা

১৮৮৭. Question

আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরি করি। অফিসিয়াল কাজের জন্য আমাকে কোম্পানি থেকে একটি কম্পিউটার দিয়েছে। ঐ কম্পিউটারে কোম্পানির ফাইল রয়েছে, যা বিভিন্ন লোকের কাছে প্রিন্ট করে বিক্রি করা হয়। আমার জন্য তা দেখার অনুমতি আছে তাই আমি পেনড্রাইভ দিয়ে ঐ ফাইলটি নিজস্ব কম্পিউটারে তাদের অনুমতি ছাড়া কপি করে নিয়েছি। আমার জন্য কি তা জায়েয হয়েছে? না হলে এখন করণীয় কী? উল্লেখ্য, আমার উদ্দেশ্য ব্যবসা নয়। কোনো সময় প্রয়োজন হলে নিজের জন্য ব্যবহার করামাত্র।

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু তারা অফিসিয়াল কাজের জন্যই অফিসে প্রোগ্রামটি দেখার অনুমতি দিয়েছে, বাসায় বা অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার এবং কপি করার অনুমতি দেয়নি, তাই কোম্পানির অনুমতি ছাড়া নিজস্ব কম্পিউটারে ফাইলটি কপি করা জায়েয হয়নি। এখন আপনার করণীয় হল ফাইলটি নিজের কম্পিউটার থেকে ডিলিট করে দেওয়া।

আননুতাফ ফিলফাতাওয়া পৃ. ৩৫১; মাবসূত সারাখসী ১১/১১০, ১১১, ১১৯; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩১২; হেদায়া ৩/২৭৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৮০-২৮১; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ৫/২২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম - ঢাকা

১৮৮৮. Question

আমার এক বন্ধু বলেছে যে, আমাকে একটি প্লট কিনে দে। আমি তাকে আমার এলাকার একটি প্লট দেখিয়েছি। তা সে পছন্দ করেছে এবং দর-দাম ঠিক করে বায়না করেছে। তখন আমি তাকে বলেছি যে, তোকে আমি জায়গা কিনে দিলাম তুই আমাকে চার রুমের বিদ্যুত সরবরাহের ক্ষমতা ধারণ করে এমন একটি আইপিএস কিনে দে। সে বলেছে যে, জায়গা বুঝে নেই তারপর কিনে দিব। তো সে আমাকে একটি আইপিএস দিয়েছে। জানালে কৃতজ্ঞ হব যে, আমার জন্য কি তা নেওয়া ঠিক হয়েছে? আমি কি তা ব্যবহার করতে পারি?

Answer

হ্যাঁ, আপনার বন্ধু সন্তুষ্ট চিত্তে দিলে তা নেওয়া বৈধ হয়েছে। এক্ষেত্রে এটি আপনার কাজের পারিশ্রমিক গণ্য হবে। উল্লেখ্য, এ ধরনের কারবারে পারিশ্রমিক গ্রহণের ইচ্ছা থাকলে তা কাজের আগেই নির্ধারণ করে নেওয়া জরুরি। যেন পরবর্তীতে এ নিয়ে দ্বন্দ না হয়।

হ্যাঁ, আপনার বন্ধু সন্তুষ্ট চিত্তে দিলে তা নেওয়া বৈধ হয়েছে। এক্ষেত্রে এটি আপনার কাজের পারিশ্রমিক গণ্য হবে। উল্লেখ্য, এ ধরনের কারবারে পারিশ্রমিক গ্রহণের ইচ্ছা থাকলে তা কাজের আগেই নির্ধারণ করে নেওয়া জরুরি। যেন পরবর্তীতে এ নিয়ে দ্বন্দ না হয়।

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ মামুন - নোয়াখালী

১৮৮৯. Question

কোনো অমুসলিম মারা গেলে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বলা যাবে কি? আর প্রতিবেশী হলে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া যাবে কি?

Answer

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়তে হয় বিপদ-আপদ ও মসিবতের সময়। এতে মৃতের জন্য কোনো দুআ নেই। তাই অমুসলিম যদি বাহ্যত সমাজসেবী ও সৎ লোক হয় যার মৃত্যু মুসলমান আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের জন্য বাহ্যত মুসিবতের কারণ তাহলে সেক্ষেত্রেও ঐ দুআ পড়ার অবকাশ আছে। অবশ্য ভূপৃষ্ঠ থেকে কাফেরের সংখ্যা কমল এবং নাফরমানী হ্রাস পেল এসব বিবেচনায় ঐ দুআ না পড়ারও অবকাশ আছে। সুতরাং ঐ দুআ পড়া বা না পড়া নির্ভর করে দৃষ্টিভঙ্গি ও নিয়তের উপর। আর কোনো অমুসলিম পড়শী মারা গেলে সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিবারস্থ লোকদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার অবকাশ রয়েছে।

তাফসীরে রূহুল মাআনী ২/২৩; তাফসীরে কুরতুবী ২/১১৯ ও ১৮/৪০; আহকামুল কুরআন ৫/৪৫; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১৩/৫৬৫ ও ৭/৩৭৮; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৬/৪২; ইতহাফু সাদাতিল মুত্তাকীন ৬/২০৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭; আলমাবসূত সারাখসী ২/৫৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাদেকুল ইসলাম - মাদানী নগর, ঢাকা

১৮৯০. Question

আমি চাকুরিজীবী। অনেক সময় কাজের ঝামেলা থাকে। তখন আমার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মসজিদে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ার কারণে অফিস কক্ষে একাকী নামায আদায় করি। জানিয়ে বাধিত করবেন যে, এক্ষেত্রে আমি কি আযান-ইকামত দিয়ে নামায পড়তে পারব? না আযান-ইকামত ছাড়া পড়ব? শরয়ী সমাধান কী?

Answer

মসজিদের বাইরে একাকী নামায পড়ার সময় নিচু শব্দে আযান ও ইকামত দিয়ে নামায পড়া মুস্তাহাব। আর আযান-ইকামত না দিলেও নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ এলাকার মসজিদের আযান-ইকামত এলাকাবাসীর নামাযের জন্য যথেষ্ট।

মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১/৫১০; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৭৭; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬৫; আলমাবসূত সারাখসী ১/১৩৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৭৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১০১; ফাতহুল কাদীর ১/২২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৫২৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী পৃ. ১০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩; রদ্দুল মুহতার ১/৩৯০

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাসান মাসুদ - ঢাকা

১৮৯১. Question

আমার অনেকগুলো রিকশা আছে। অনেকে দুই বেলার জন্য ভাড়া নেয় আবার অনেকে এক বেলার জন্য। আমি তাদেরকে নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে ভাড়া দেই। দুই বেলা চালালে এত দিতে হবে আর এক বেলা চালালে এত দিতে হবে। জানিয়ে বাধিত করবেন যে, এই পন্থায় ভাড়া দেওয়া-নেওয়া এবং লাভবান হওয়া জায়েয আছে?

Answer

হ্যাঁ, ঐভাবে ভাড়া দেওয়া-নেওয়া বৈধ হয়েছে।।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪২৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৯-৩০; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া পৃ. ৩৩৮-৩৩৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১০২; শরহুল মাজাল্লা খালিদ আতাসী ২/৬৮৬; রদ্দুল মুহতার ৬/২৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ঢাকা

১৮৯২. Question

আমার গলায় বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। নামাযে কিরাত পড়ার সময় কয়েক শব্দ পর পর কেশে গলা পরিষ্কার করে নিতে হয়। আমার জানার বিষয় হল, এত বেশি কাশার কারণে নামায নষ্ট হয় কি না? আর নামায নষ্ট না হলে আমি ইমামতি করলে কোনো সমস্যা আছে কি? দয়া করে জানিয়ে উপকৃত করবেন।

Answer

কেরাত সঠিকভাবে উচ্চারণ করার জন্য ইচ্ছা করে কাশলেও নামায নষ্ট হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অধিক কাশার কারণে নামায নষ্ট হবে না। তবে যে ব্যক্তির নিয়মিত এমন সমস্যা হয় তার জন্য ইমামতি করা উচিত নয়। কেননা এতে মুসল্লীদের নামাযে একাগ্রতা নষ্ট হতে পারে।

সুনানে নাসায়ী ৩/১২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৬

Sharable Link

মুহাম্মাদুল্লাহ - কচুয়া, চাদপুর

১৮৯৩. Question

এক ব্যক্তি নামাযে দ্বিতীয় রাকাতে ফাতেহা না পড়ে ভুলে সূরার ৩-৪ আয়াত পড়ে ফেলেছে। এ সময় তার স্মরণ হয়েছে যে, ফাতেহা পড়া হয়নি। এখন তার কী করণীয়? এ ভুলের জন্য কি সিজদায়ে সাহু দিতে হবে?

Answer

এক্ষেত্রে স্মরণ হওয়ামাত্র সে সূরা ফাতেহা পড়বে। তারপর সূরা মিলাবে এবং এ ভুলের জন্য সিজদায়ে সাহু করবে।

আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩০৯; ফাতহুল কাদীর ১/৪৩৮; আলবাহরুর রায়েক ১/২৯৬; আসসিআয়াহ ২/১৩০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২১; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৪৭১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭১

Sharable Link

মুহাম্মাদ হেলাল উদ্দীন - ঢাকা

১৮৯৪. Question

আমি একটি মসজিদের মুআযযিন। আমার কামরা মসজিদের বাইরে উত্তর পার্শ্বে মসজিদের সাথে লাগানো। আযান দেওয়ার জন্য মাইক্রোফোন আমার কামরায় স্থাপন করা হয়েছে। আমি কি ইতেকাফ অবস্থায় আযান দেওয়ার জন্য মসজিদ হতে বের হয়ে আমার কামরায় যেতে পারব?

Answer

হ্যাঁ, ইতিকাফ অবস্থায় আযান দেওয়ার জন্য মসজিদের বাইরে যেতে পারবেন এবং আযান শেষ হলে অন্য কাজে লিপ্ত না হয়ে আবার মসজিদে ফিরে আসবেন। এতে আপনার ইতেকাফ নষ্ট হবে না।

বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪১২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৩; আলমাবসূত সারাখসী ৩/১২৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; ফাতহুল কাদীর ২/৩১১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ ঈসা নূর - মাদারীপুর

১৮৯৫. Question

কোনো মসজিদে একবার তারাবী হয়ে গেলে পুনরায় তারাবীর জামাত করা সহীহ কি না?

Answer

মসজিদে তারাবীর দ্বিতীয় জামাত করাও মাকরূহ।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৩৪; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৪০৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ঢাকা

১৮৯৬. Question

আমি দোকান থেকে এক হালি ডিম কিনে বাসায় নিয়ে আসি। ডিমগুলো ভাঙ্গার পর দেখা গেল, দুইটি ডিম নষ্ট, খাওয়ার উপযোগী নয়। জানার বিষয় হল, নষ্ট দুটি ডিমের টাকা দোকানির কাছ থেকে ফেরত নেওয়া জায়েয হবে কি না? উল্লেখ্য, বাসায় আনার সঙ্গে সঙ্গেই ডিমগুলো ভাঙ্গা হয়েছে।

Answer

হ্যাঁ, নষ্ট ডিমের টাকা দোকানি থেকে ফেরত নেওয়া জায়েয হবে।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৮৪; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/১২৫; হেদায়া ৩/৪৩; ফাতহুল কাদীর ৬/১৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/৫৪; রদ্দুল মুহতার ৫/২৫

Sharable Link

খন্দকার ছরওয়ার হোসেন গং - সাবালিয়া বটতলা, টাঙ্গাইল

১৮৯৭. Question

আমাদের দাদারা আমাদের গ্রামের বাড়ির সম্মুখে দক্ষিণ পার্শ্বে ৫৩ শতাংশ জমি মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য দান করে গিয়েছেন। জমিটি পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা। উত্তরাংশে পূর্ব দিকে একটি টিনের মসজিদ ঘর এবং মসজিদের পশ্চিম পার্শ্বে পারিবারিক কবরস্থান হিসেবে তারা ব্যবহার করে আসছেন। যার উত্তর দিক দিয়ে পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা এবং পূর্ব পার্শ্ব দিয়ে উত্তর দক্ষিনে লম্বা নিজ বাড়িতে ও মসজিদে চলাচলের রাস্তা আছে। রাস্তার উত্তর পার্শ্বে প্রায় চার একর জমির উপর দাদাদের বসতবাড়ি। মসজিদ-কবরস্থানের উল্লেখিত ৫৩ শতাংশ প্লটের অবশিষ্ট প্রায় অর্ধেক অংশে পূর্ব পার্শ্বে মসজিদের জন্য বিরাট ইঁদারা এবং ইঁদারার পশ্চিম পার্শ্বের অবশিষ্ট জায়গা খালি পড়েছিল। পরবর্তীতে ইঁদারার পশ্চিম পার্শ্বের খালি জায়গাটায় মসজিদ-ঘরটি স্থানান্তর করেন। ঐ সময় থেকে অদ্যাবধি মসজিদের সাবেক জায়গাটি খালি পড়ে আছে। আমাদের জামানায় ১৯৯২ ঈ. সালে এলাকায় সর্বশেষ ভূমিজরিপ এলে আমরা উক্ত ৫৩ শতাংশ জমি মসজিদ ও কবরস্থানের নামে ২৭ ও ২৬ শতাংশ করে আলাদা আলাদা ভাগ করে রেকর্ডের অন্তর্ভুক্ত করে দেই এবং যেহেতু দক্ষিণ পার্শ্বে ইঁদারা এবং মসজিদ-ঘর স্থানান্তরিত করা হয়েছে সে হিসাবে দক্ষিণের অংশ মসজিদের নামে এবং উত্তরের অংশ কবরস্থানের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু মসজিদের সাবেক জায়গাটি কবরস্থানের অংশে পড়েছে। মসজিদ এবং কবরের জায়গা মেপে বুঝ করতে গিয়ে দেখা গেল যে, মসজিদ ও কবরস্থানের উত্তর পার্শ্বে আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তাটি সম্পূর্ণ মসজিদ ও কবরস্থানের জায়গার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। এমনকি রাস্তার উত্তর পার্শ্বে আমাদের বাড়ির সীমা মনে করে আমাদের ভাইয়েরা (শরিক) সারিবদ্ধভাবে যে সমস্ত ফলের ও কাঠের গাছ লাগিয়েছিলেন সেগুলোও সারিবদ্ধভাবে মসজিদ-কবরস্থানের জায়গায় পড়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় ভাইয়েরা মসজিদ-কবরস্থানকে উল্লেখিত জায়গা ছেড়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের লাগানো গাছগুলোর কিছু গাছ কেটে কাজে লাগিয়েছে এবং কিছু গাছ বিক্রি করে দিয়েছে। অবশিষ্ট গাছগুলোও কেটে ফেলে জায়গাটি খালি করে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আর আমাদের বাড়িতে ও মসজিদে চলাচলের যে সরূ রাস্তাটি আছে, উক্ত রাস্তাটি প্রশস্ত করে অন্য বড় এক রাস্তার সঙ্গে সংযোগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অথচ এখন মাপের পর দেখা যাচ্ছে যে, রাস্তাটি মসজিদ-কবরস্থানের সীমার অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছে। এখন আমাদের জানার বিষয় হল : ১. মসজিদ ও কবরস্থানের উল্লেখিত ৫৩ শতাংশ জায়গা আমরা যেভাবে ১৯৯২ সালের রেকর্ডে ভাগ করে দিয়েছি তা সঠিক হয়েছে কি না? না হয়ে থাকলে এখন কী করণীয়? আর মসজিদের সাবেক স্থানটি কবরস্থানের জায়গায় পড়ে গিয়েছে, সে বিষয়ে করণীয় কী? ২. বর্তমানে মসজিদটি বড় ও পাকা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় যদি কবরস্থানের কিছু জায়গা ব্যবহার করতে হয় তাহলে তা করা যাবে কি না? ৩. আমার ভাইয়েরা মসজিদ-কবরস্থানের সীমায় পড়ে যাওয়া তাদের লাগানো গাছগুলো কেটে ব্যবহার করেছে ও বিক্রি করেছে। এটি সঠিক হয়েছে কি না? না হলে এখন কী করণীয়? আর অবশিষ্ট গাছের হুকুম কী? ৪. মসজিদ-কবরস্থানের সীমানায় পড়ে যাওয়া উল্লেখিত রাস্তাটি সকলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আরও প্রশস্ত করে অন্য বড় রাস্তার সঙ্গে মিলানো যাবে কি না? যদি না যায় তাহলে মসজিদ-কবরস্থানের অর্ধেক এবং আমাদের বাড়ির অংশ থেকে অর্ধেক জায়গার মাধ্যমে রাস্তাটি করা যাবে কি না? আর যদি তাও না হয় তাহলে যেভাবে রাস্তাটি ব্যবহার করে এসেছি অন্তত সেভাবে ব্যবহার করতে পারব কি না? কুরআন মজীদ ও হাদীসের আলোকে বিষয়গুলোর সমাধান দিলে ইনশাআল্লাহ আমরা সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Answer

(ক ও খ) প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ওয়াকফকারীগণ যেহেতু ৫৩ শতাংশ জায়গা মসজিদ এবং কবরস্থান উভয়ের জন্য যৌথভাবে ওয়াকফ করেছেন তাই মসজিদ এবং কবরস্থান উভয়ের জন্য সমান ভাগে অর্ধাঅর্ধি অর্থাৎ সাড়ে ছাব্বিশ শতাংশ করে ভাগ করতে হবে। আর ওয়াকফকারীগণ প্রথমে যে স্থানে মসজিদ করেছিলেন সেটিকেই মসজিদ হিসাবে বহাল রাখা জরুরি। উত্তর-দক্ষিণে কিংবা পূর্ব-পশ্চিমে যেভাবে সুবিধা হয় সাড়ে ছাব্বিশ শতাংশ মসজিদের জন্য রেখে বাকি অর্ধেক কবরস্থানের জন্য নির্দিষ্ট করে নিতে হবে। অতএব দক্ষিণ-পশ্চিমে নতুন করে যে মসজিদ বানানো হয়েছে তা মসজিদ থাকবে না। সেটা কবরস্থানের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। আর ১৯৯২ সালের রেকর্ড শুদ্ধ হয়নি। উপরে যেভাবে বলা হয়েছে সে অনুযায়ী সংশোধন করে নেওয়া জরুরি। উত্তর : (গ) আপনার ভাইদের লাগানো গাছগুলো নিজেদের ব্যবহার করা বা বিক্রি করা সঠিক হয়েছে। অবশিষ্ট গাছগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। আর মসজিদ কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের কাছ থেকে মসজিদের জমি ব্যবহারের জন্য ভাড়া নিতে পারবে। উত্তর : (ঘ) ওয়াকফের জায়গা যথাসম্ভব রাস-ার জন্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সেহেতু ব্যক্তিগত জমিতে রাস্তা বের করা সম্ভব হলে সেটাই করতে হবে। আর সম্ভব না হলে পূর্বে যতটুকু রাস্তা ব্যবহার করা হয়েছে তা ব্যবহার করা যাবে। রাস্তা বড় করতে চাইলে আপনাদের প্রস্তাব অনুযায়ী অর্ধেক বা বাকি অংশ নিজেদের জায়গা থেকে দিতে হবে। তবে সর্বাবস্থায় লক্ষণীয় যে, ওয়াকফের জায়গা থেকে এত বেশি জমি রাস্তার জন্য নেওয়া যাবে না যা ওয়াকফের ক্ষতি হয়।

প্রথম মাসআলা : সহীহ বুখারী ১/৩৮২;হেদায়া ২/৬৪৫; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৩৯ তৃতীয় মাসআলা : তানকীহুল ফাতাওয়া হামীদিয়া ২/১৮২ চতুর্থ মাসআলা : ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩০৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩৬৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ নূরুল্লাহ - পল্লবী, ঢাকা

১৮৯৮. Question

জনশ্রুতি আছে যে, হযরত বেলাল রা. আযানে ‘আশহাদু’-এর শীনকে ছীন-এর মতো উচ্চারণ করতেন। তাই তাকে একবার আযান দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়। তিনি ফজরের আযান না দেওয়ার কারণে নাকি সেদিন সূর্য উদিত হয়নি। একথা কি ঠিক? একাধিক বক্তাকে এমন বলতে শুনেছি।

Answer

প্রশ্নোক্ত ঘটনা সত্য নয়। আল্লামা ইবনে কাসীর, মোল্লা আলী কারী, হাফেয সাখাভী প্রমুখ মনীষীগণ একে সম্পূর্ণভিত্তিহীন বলেছেন।

আলমাওযূআতুল কুবরা পৃ. ৪১, ৭৫; আলমাসনূ ১১৩; আলমাকাসিদুল হাসানা ৩৯৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ জালালুদ্দীন (আরকাম) - বরুড়া, কুমিল্লা

১৮৯৯. Question

সূরা জুমআর ৯ নং আয়াতে জুমার আযানের পর ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করা হয়েছে। এখানে কোন আযান উদ্দেশ্যে প্রথম আযান নাকি দ্বিতীয় আযান? যদি প্রথম আযান উদ্দেশ্য হয় তাহলে প্রশ্ন হল, অনেক এলাকায় প্রথম আযান হয় সোয়া বারোটায় আর খুতবার আযান হয় একটায় বা সোয়া একটায়। তাহলে কি এ সময়ের ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই গোনাহগার হবে?

Answer

জুমআর আযানের পর ক্রয়-বিক্রয় নাজায়েয। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) ‘হে মুমিনগণ, জুমআর দিন যখন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটিই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (সূরা জুমআ : ৯) উক্ত আয়াতে আহ্বান বলতে মৌলিকভাবে দ্বিতীয় আযান (খুতবার আযান) উদ্দেশ্য হলেও। শব্দের ব্যাপকতার মাঝে জুমআর প্রথম আযানও অন্তর্ভুক্ত। তাই তাফসীরবিদ ও ফিকহবিদগণের নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী প্রথম আযানের পরও জুমআর প্রস্তুতিমূলক কাজ ব্যতীত অন্য কোনো কাজে লিপ্ত হওয়া উক্ত আয়াতের নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। অতএব তা নাজায়েয ও গুনাহের কাজ।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৪/১২০; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/২০৫; আদ্দুররুল মানছুর ২/২১৯; বয়ানুল কুরআন ৩/৫৪৭; তাফসীরে মাযহারী ১০/২৮১; তাফসীরে শায়খুল হিন্দ পৃ. ৭১৮; আহকামুল কুরআন, ইমাম ইসমাঈল ইবনে ইসহাক ২৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/১৬১; আততাসহীহ ওয়াত তারজীহ ১৮৫; ইলাউস সুনান ৮/৮৬; ফাতাওয়া উসমানী ১/৫৭৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইয়ামীন - পল্লবী, ঢাকা

১৯০০. Question

প্রত্যেক ফরয নামাযের পর মাথায় হাত দিয়ে যে দুআ পড়া হয় সেটি কোন দুআ? তা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত কি না জানতে চাই।

Answer

একটি দুর্বল বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শেষে তাঁর ডান হাত মাথায় বুলাতেন এবং নিম্নোক্ত দুআটি পড়তেন بسم الله الذي لا إله الا هو الرحمن، اللهم اذهب عني الهم والحزن বর্ণনাটির সনদ যেহেতু অনেক বেশি দুর্বল নয় আর বিষয়টিও নামাযের পর যিকির ও দুআর, যা মৌলিকভাবে অনেক দলীল দ্বারা প্রমাণিত তাই এর উপর আমল করার অবকাশ রয়েছে। উল্লেখ্য যে, উক্ত হাদীসে নামাযের পর দুআটি পড়ার কথা এসেছে। শুধু ফরয নামাযের পর পড়ার কথা আসেনি। অতএব ফরয, নফল সব নামাযের পরই তা পড়া যাবে।

তবারানী, আওসাত ৪/১২৬, হাদীস ৩২০২; মাজমাউয যাওয়াইদ, হায়ছামী ১০/১৪৪; তারীখে বাগদাদ ১২/৪৮০; নাতাইজুল আফকার ২/২০৭

Sharable Link

ক্যাপ্টেন আবদুল্লাহ - ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট

১৯০১. Question

আমাদের এলাকার এক লোক বলে, বিতর নামাযে আমরা যে দুআয়ে কুনূত পড়ে থাকি (আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা) তা নাকি ভিত্তিহীন, হাদীস ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। হাদীসের দুআ হল, আল্লাহুম্মাহদিনা ফীমান হাদাইতা ...। এ বিষয়ের হাদীস ও সুন্নাহর আলোকে সঠিক সমাধান জানতে চাই।

Answer

ঐ লোকের কথা ঠিক নয়। আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা ...’ এ দুআটি সহীহ হাদীস এবং সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীদের আমল দ্বারা প্রমাণিত।

এক হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জিবরীলে আমীন এসে কুনূত হিসাবে উক্ত দুআটি শিখিয়েছেন।-সুনানে কুবরা ২/২১০; মারাসীলে আবু দাউদ পৃ. ৮; ইলাউস সুনান ৬/১০৭

হযরত উমর রা. বিতরের কুনূতে রুকুর পূর্বে উক্ত দুআটি পড়তেন।-কিয়ামুল লায়ল পৃ. ৩০০

হযরত আবু আবদুর রহমান বলেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমাদেরকে কুনূতের দুআয় আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা ... দুআটি পড়ার তালীম দিয়েছেন। মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা (নতুন সংস্করণ) ৪/৫১৮

হযরত সুফিয়ান রাহ. বলেন, পূর্বসূরীগণ কুনূতের দুআয় আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা ...’ দুআটি পড়তেন।-আদ্দুররুল মানছুর ৬/৪২২

হযরত যুবায়ের ইবনে আদী রাহ. বলেন, হযরত ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বিতরের কুনূতে উক্ত দুআটি পড়তে পছন্দ করতেন।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/১২১

অতএব দুআটি সুপ্রমাণিত। এ বিষয়ে জনমনে সংশয় সৃষ্টি করা অন্যায়।

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাহমুদ হাসান - পটিয়া, চট্টগ্রাম

১৯০২. Question

আমরা ওয়াযে শুনে থাকি, নবীজী একবার আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করলে হযরত আবু বকর রা. নিজের সমুদয় সম্পদ পেশ করেছিলেন। আর হযরত ওমর রা. তার সম্পদের অর্ধেক পেশ করেছিলেন। এই কথাটি সহীহ হাদীসে আছে কি না? থাকলে সেই প্রসঙ্গটি কী ছিল? জানালে খুশি হব।

Answer

হ্যাঁ, এটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। পূর্ণ হাদীসটি এই, ওমর রা. বলেন, নবীজী একদিন আমাদের সদকার আদেশ দিলেন। সে সময় আমার সম্পদের পরিমাণও ভালো ছিল। আমি মনে মনে বললাম, আজ আমি ছওয়াবের কাজে আবু বকরের চেয়ে অগ্রগামী হতে পারব। অতএব আমি আমার অর্ধেক সম্পদ নিয়ে এলাম। নবীজী আমাকে বললেন, তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য কী রেখেছ? আমি বললাম, এর সমপরিমাণ। এরপর বলেন, হযরত আবু বকর তাঁর সমুদয় সম্পদ নিয়ে হাযির হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, পরিবারের জন্য কী রেখে এসেছ? তিনি বললেন, আমি তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে রেখে এসেছি। হযরত ওমর রা. বলেন, আমি বললাম, খোদার কসম! আমি কখনো তাঁকে অতিক্রম করতে পারব না।

ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি সহীহ-হাসান পর্যায়ের।-জামে তিরমিযী হাদীস ৩৯২১

Sharable Link

মুহাম্মাদ সালমান - রায়পুরা, নরসিংদী

১৯০৩. Question

আমাদের এলাকায় এক মুসলিম সন্তান গত দুর্গা পুজায় হিন্দুদের সাথে তালে তালে মূর্তিদের নাম নিয়ে তাদের মতো করে নমষ্কার করে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায় যে, এগুলো দুষ্টুমি করে করেছি। জানতে চাই, এতে কোনো ক্ষতি হবে কি না?

Answer

পূজার সময় সেখানে অংশগ্রহণ করা মূর্তির সামনে তাদের মতো আচরণ করা এবং মূর্তির নাম নিয়ে নমষ্কার জানানো সব কিছুই কুফরি কাজ। দুষ্টুমি করে করলেও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ঐ ব্যক্তিকে এক্ষুণি কৃত কর্মের জন্য তওবা-ইস্তেগফার করতঃ পুনরায় ঈমান আনতে হবে। এরপর সে বিবাহিত হয়ে থাকলে বিয়েও দোহরাতে হবে।

আলমুহীতুল বুরহানী ৭/৩৯৭; শরহুল ফিকহিল আকবার ১৮৬; আলবাহরুর রায়েক ৫/১২৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ ওমর ফারূক - ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

১৯০৪. Question

একবার আমার বোন খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আমার মা শাহজালালের মাজারে একটি ছাগল মেনেছিল। বোন পরে সুস্থ হয়েছে। কিন্তু মার মান্নতটি এখনো পূর্ণ করা হয়নি। জানতে চাই, আমাদের এখন কী করা উচিত। বিলম্বের কারণে কোনো গুনাহ হচ্ছে কি না?

Answer

‘মান্নত’ একটি ইবাদত। নামায, রোযা, দুআ করা এগুলো যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যেই তাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই করা জরুরি। তদ্রূপ ‘মান্নত’ও কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে তাঁর নামেই হতে হবে। কোনো মাজার, পীর বা কোনো সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বা তার সন্তুষ্ট কামনার্থে মান্নত করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তাই মাজারের জন্য ছাগল মানা সম্পূর্ণ নাজায়েয হয়েছে। শিরকি হয়েছে। এ থেকে বিরত থাকা জরুরি। অতএব মাজারে বা অন্য কোনো মাজারে ছাগল দেওয়া জায়েয হবে না। উপরন্তু মাজারে দেওয়ার নিয়তের কারণে আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। সুনানে আবু দাউদ ২/৪৬৯; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৬৪৩ প্রকাশ থাকে যে, কোনো মাখলুক, অলী-পীর বা মাজারবাসী কারো কোনো প্রয়োজন পূরণ করতে পারে না। কাউকে সুস্থতা দিতে পারে না। আরোগ্য দান করা, মসীবত দূর করা এগুলো কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলারই বৈশিষ্ট্য। কোনো মাখলুকের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য আছে মনে করা শিরক। মাজারে মান্নত করলে মাজারওয়ালা খুশি হবেন, অসুখ ভালো হয়ে যাবে এমন ধরাণা সম্পূর্ণ শিরক। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) আল্লাহ যদি তোমাদের উপর কোনো কষ্ট আরোপ করতে চান তাহলে তিনি ব্যতীত তা খণ্ডানোর মতো কেউ নেই। আর যদি তিনি কোনো কল্যাণ দিতে চান তাহলে তাঁর অনুগ্রহ রহিত করার মতো কেউ নেই। তিনি স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন । তিনিই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।-সূরা ইউনুস : ১০৭

Sharable Link