গত বছর আমার আব্বা-আম্মার হজ্ব করার ইচ্ছা ছিল এবং টাকাও জমা দিয়েছিলেন। হঠাৎ রমযান মাসের শেষ দিকে আব্বা মারা যান। এ অবস্থায় আমার আম্মার হজ্বে যাওয়ার হুকুম কী? এক্ষেত্রে তার জন্য ইদ্দত পালন করাই জরুরি, না হজ্বে যাওয়া?
গত বছর আমার আব্বা-আম্মার হজ্ব করার ইচ্ছা ছিল এবং টাকাও জমা দিয়েছিলেন। হঠাৎ রমযান মাসের শেষ দিকে আব্বা মারা যান। এ অবস্থায় আমার আম্মার হজ্বে যাওয়ার হুকুম কী? এক্ষেত্রে তার জন্য ইদ্দত পালন করাই জরুরি, না হজ্বে যাওয়া?
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার আম্মার জন্য ইদ্দত পালন করা আবশ্যক। ইদ্দত অবস্থায় হজ্বে যাওয়া জায়েয নয়। খলিফায়ে রাশেদ হযরত ওমর ও ওসমান রা.সহ অনেক সাহাবী থেকে প্রমাণিত আছে যে, তাঁরা এমন অনেক মহিলাকে হজ্ব ও উমরা থেকে বারণ করেছেন, যারা ইদ্দত পালন করা অবস্থায় হজ্ব ও উমরার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন।
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৯১৭৮, ১৯১৭৯, ১৯১৮০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৯; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৪৮৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৫Sharable Link
একদিন কোনো একটি বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আমার ঝগড়া বেধে যায়। একপর্যায়ে আমি বলি, তুই যদি আর একটা কথা বলিস তাহলে তোকে ছেড়ে দেব। তারপরও সে কথা বলে। তখন আমি বলি, যা তোকে ছেড়ে দিলাম। উক্ত কথার দ্বারা আমার তালাক দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল না। তাকে চুপ করানোর জন্য বলেছিলাম। আমি জানতে চাচ্ছি, উক্ত কথার কারণে আমার স্ত্রী কি তালাক হয়ে গেছে?
আমাদের সমাজে তোকে ছেড়ে দিলাম বাক্যটি তালাকের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত কথা দ্বারা তালাকের উদ্দেশ্য না থাকলেও আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে। এখন আপনি পুণরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে ইদ্দতের মধ্যে রজআত অর্থাৎ স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবেন।
রজআতের উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, ইদ্দতের ভিতরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করা। যেমন, এ কথা বলবেন যে, তোমাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করলাম। এর দ্বারাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুণঃবহাল হয়ে যাবে।
আর যদি আপনি ইদ্দতের ভিতরে (ঋতুমতী মহিলার জন্য তিনটি হায়েয অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত আর অন্তঃসত্তা মহিলার জন্য সন্তান প্রসব পর্যন্ত) রজআত না করেন তবে ইদ্দত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবার ঘর-সংসার করতে
চাইলে নতুন মোহর ধার্য করে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে বিবাহ করতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, এই স্ত্রীকে ইদ্দতের ভিতরে কিংবা ইদ্দত শেষ হয়ার পর পুণরায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলে পরবর্তীতে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। তাই পরবর্তীতে এই স্ত্রীকে কখনো দুই তালাক দিলে পূর্বের এক তালাকের সাথে মিলে তিন তালাক হয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ করেও একত্রিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। তাই সামনে থেকে তালাক বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া অন্যায়। অনেক ক্ষেত্রে তালাক স্ত্রী-সন্তানের উপর এবং নিজের উপরও জুলুমের কারণ হয়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা কর্তব্য।
-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৩১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৬৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯৯; আলবাহরুররায়েক ৪/৫০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৮৮Sharable Link
আমি কি আমার পিতার আপন মামাতো বোনকে বিবাহ করতে পারব? সে বয়সে আমার ছোট। মাসআলাটি জানালে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ থাকব।
হাঁ, পিতার মামাতো বোনকে বিবাহ করা জায়েয। কেননা পিতার মামাতো বোন মাহরামের অন্তর্ভুক্ত নয়।
-সূরা নিসা (৪) : ২৪; তাফসীরে মাযহারী ২/২৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩১Sharable Link
আমার বিয়ের সময় মোহর নির্ধারণ করা হয় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। বিয়ের সময় আমার স্বামী পঞ্চাশ হাজার টাকা আদায় করে দেন। বাকি এক লক্ষ টাকা চার বছর পর দিয়েছেন। এখন আমার জানার বিষয় হল, ঐ চার বছরের যাকাত আদায় করা কী আমার উপর ফরয?
মোহরের টাকা হস্তগত হওয়ার আগ পর্যন্ত স্ত্রীর উপর যাকাত দেওয়া ফরয হয় না। তাই ঐ এক লক্ষ টাকার উপর বিগত বছরের যাকাত দিতে হবে না।
-কিতাবুল আছল ২/৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩৮Sharable Link
জনৈক ব্যক্তি এক লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য হয়নি। এ অবস্থায় লোকটি তাকে তালাক দেয়। জানতে চাই, ঐ ব্যক্তির উপর কি পূর্ণ দেন মোহর আদায় করা জরুরি?
হাঁ, প্রশ্নোক্তক্ষেত্রে স্বামীকে পূর্ণ মোহর আদায় করতে হবে। কেননা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মিলন না হলেও শুধু নির্জনবাসের দ্বারাই পূর্ণ মোহর ওয়াজিব হয়ে যায়। তবে যদি সহবাসের প্রতিবন্ধক কোনো ওজর থাকা প্রমাণিত হয় যেমন, স্ত্রী হায়েয অবস্থা থাকা বা উভয়ের কেউ যদি এমন অসুস্থ থাকে, যা সহবাসের প্রতিবন্ধক হয় তাহলে অর্ধেক মোহর আবশ্যক হবে।
-কিতাবুল আসল ৪/৪৩৬-৪৩৭; হেদায়া ফাতহুল কাদীর ৩/২১৭ বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৮৪, ৫৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১১৪, ১১৮Sharable Link
একবার আমি একটি বিষয়ে আল্লাহ তাআলার নামে শপথ করে বলি যে, আমি এ কাজ কখনো করব না। কিন্তু পরে আমি তা ভুলে যাই এবং কাজটি করে ফেলি। আমি জানতে চাচ্ছি যে, উক্ত কাজটি ভুলে করার দ্বারাও কি আমার কসম ভঙ্গ হয়ে গেছে? দয়া করে জানাবেন।
হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কসম ভঙ্গ হয়ে গেছে। কারণ কোনো বিষয় না করার শপথ করার পর ভুলে করার দ্বারাও কসম ভঙ্গ হয়ে যায়। তাই আপনাকে ঐ কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে।
-তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৪২৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮১; রদ্দুল মুহতার ৩/৭০৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/৩৪Sharable Link
আমার বড় ভাই কিছুদিন আগে একটি সমস্যায় পড়ে মান্নত করেছিলেন, যদি আল্লাহ আমার সমস্যা দূর করে দেন তাহলে আমি চিল্লায় বের হব। ভাইয়ার ঐ সমস্যাটা আল্লাহর রহমতে চলে গেছে। এখন জানতে চাচ্ছি, ভাইয়ার জন্য কি চল্লিশ দিনের চিল্লায় বের হওয়া আবশ্যক? বের না হলে কি গুনাহ হবে?
চিল্লায় বের হওয়ার মান্নত করলে শরীয়তের দৃষ্টিতে তা মান্নত হয় না। অতএব আপনার ভাইয়ের জন্য চিল্লায় বের হওয়া আবশ্যক নয়। তবে সমস্যা না থাকলে এমন ইচ্ছা পূরণ করাই উচিত।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫Sharable Link
চাকরি পাওয়ার জন্য কি মান্নত করা জায়েয আছে? কেউ যদি চাকরি পাওয়ার/ভবিষ্যতে কোনো কিছু পাওয়ার আশায় বলে, আমি পঞ্চাশ হাজার অথবা এক লক্ষ টাকা মসজিদ/এতিমখানা অথবা কোনো গরীব মানুষকে দেব। তার এই কথা কি শরীয়তসম্মত হবে?
কোনো বৈধ বস্তু অর্জনের আশায় মান্নত করা জায়েয আছে। তাই চাকরি পাওয়ার আশায় মান্নত করা যাবে এবং চাকরি পেলে তা পূর্ণ করতে হবে।
তবে মান্নত সহীহ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। সেসব শর্তের আলোকে মসজিদের জন্য মান্নত করা সহীহ নয়। তাই মসজিদের জন্য মান্নত করলে তা ওয়াজিব হয় না। তবে মান্নত না হলেও এ ধরনের ওয়াদা পূর্ণ করা উত্তম।
উল্লেখ্য যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে মান্নতের চেয়ে নগদ দান-সদকার ফযীলত ও গুরুত্ব অনেক বেশি। সদকা দ্বারা আল্লাহ অধিক সন্তুষ্ট হন। আর মান্নত শরীয়তসম্মত। তবে সদকার চেয়ে উত্তম নয়। হাদীসে আছে, মান্নত দ্বারা কৃপণের মাল বের হয়। অর্থাৎ মান্নত কৃপণ লোকের কাজ।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মান্নত এমন কোনো কিছুকে আদম সন্তানের নিকটবর্তী করে দিতে পারে না যা আল্লাহ তাআলা তার জন্য তাকদীরে নির্দিষ্ট করেননি। তবে মান্নত কখনো তাকদীরের সাথে মিলে যায়। এর মাধ্যমে কৃপণের নিকট হতে ঐ সম্পদ বের করে নিয়ে আসা হয় যা কৃপণ (এমনিতে) বের করতে চায় না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৪০
অতএব কাক্সিক্ষত বস্তু অর্জনের জন্য মানত করা জায়েয। তবে মানত করা ছাড়া সামর্থ্য অনুযায়ী পূর্বেই দান-খয়রাত করা অধিক উত্তম কাজ।
-সূরা হজ্ব ২৯; আলইখতিয়ার ৩/৪৪৫; আলমুগনী ১৩/৬২১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪১, ৪/২২৮; মিনহাতুল খালিক ৪/২৯৬Sharable Link
কিছুদিন আগে আমাদের মহল্লায় একটি নতুন মসজিদ হয়েছে। সভাপতি সাহেবের আদেশে আমাদের ইমাম সাহেব নামাযের সময় ব্যতীত অন্য সময় মসজিদ বন্ধ রাখেন। কিন্তু কিছু কিছু মুসল্লির দাবি হল, মসজিদ বন্ধ রাখা যাবে না। সব সময় মসজিদ খোলা রাখতে হবে। কারণ মসজিদ বন্ধ রাখার অর্থ হল, মানুষকে ইবাদত থেকে বাধা দেওয়া। জানার বিষয় হল, নামাযের সময় ব্যতীত অন্য সময় মসজিদ বন্ধ রাখা কি জায়েয?
মসজিদের মালামাল ও আসবাবপত্র হেফাযতের উদ্দেশ্যে নামাযের সময় ব্যতীত অন্য সময় মসজিদ বন্ধ রাখা জায়েয। এবং তা ইবাদতে বাধা দেওয়ার অন্তর্ভুক্ত নয়। অবশ্য নামাযের আগে পরে যতক্ষণ মুসল্লিগণ ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকে এমন একটা লম্বা সময় পর্যন্ত মসজিদ খোলা রাখার ব্যবস্থা করা উচিত। এজন্য বিশ্বস্ত খাদেম নিয়োগের মাধ্যমে মসজিদের মালামাল হেফাযতের ব্যবস্থা নিতে হবে। আর মসজিদের সাথে জায়গা থাকলে সেখানে বারান্দা বানানো যেতে পারে। যেন মসজিদ বন্ধ থাকলেও বারান্দা খোলা থাকে। এতে মসজিদের মালামালের হেফাযতও হবে আবার মুসল্লীগণ যে কোনো সময় ইবাদত-বন্দেগীও করতে পারবে।
-তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪১৯; শরহুল মুনইয়াহ ৬১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৩; ফাতহুল কাদীর ১/৩৬৭; রদ্দুল মুহতার ১/৬৫৬Sharable Link
দোকান থেকে কোনো কিছু কিনতে গেলে দোকানদার কখনো এ কথা বলে যে, যা দেখার এখনই দেখে নিন। পরে কোনো সমস্যার কারণে ফেরত দিতে পারবেন না। এভাবে বলার পর যদি পণ্যের মধ্যে কোনো দোষ ধরা পড়ে তাহলে কি ফিরিয়ে দেওয়ার অধিকার থাকবে?
বিক্রেতা প্রশ্নোক্ত কথাটি বলার পর ক্রেতা যদি তা মেনে নিয়ে পণ্য ক্রয় করে তাহলে পরবর্তীতে কোনো দোষের কারণে ঐ পণ্য ফেরত দেওয়ার অধিকার থাকবে না।
প্রকাশ থাকে যে, বিক্রিত পণ্য ফেরত নেওয়া বড় ফযীলতপূর্ণ কাজ। হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের সাথে বেচাকেনা করে তা ফিরিয়ে নেয় আল্লাহ তাআলা তার গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস৩৪৫৪; কিতাবুল আসল ২/৪৮৮; মাবসূত, সারাখসী ১৩/৯১; আলবাহরুর রায়েক ৬/৬৬; রদ্দুল মুহতার ৫/৪২Sharable Link
একদিন আমার বাসায় টমেটোর প্রয়োজন ছিল। বাসায় জরুরি কাজ থাকায় বাজারে না গিয়ে পাশের বাসা থেকে এক কেজি টমেটো ধার নেই। ঐ সময় টমেটোর কেজি ছিল আশি টাকা। এক সপ্তাহ পরে দাম কমে পঞ্চাশ টাকায় নেমে আসে। আমার জানার বিষয় হল, আমার জন্য কি পঞ্চাশ টাকার এক কেজি টমেটো দিয়ে দিলেই চলবে নাকি আশি টাকা বা আশি টাকার টমেটো ফেরত দিতে হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যে ধরনের টমেটো আপনি নিয়েছিলেন ঐ ধরনের এক কেজি টমেটো দেওয়াই কর্তব্য। আশি টাকা অথবা বর্তমানে আশি টাকার যতটুকু টমেটো পাওয়া যায় তা দেওয়া লাগবে না। ঋণদাতা আশি টাকার টমেটো দাবি করলে তা নাজায়েয হবে। তবে আপনি চাইলে নিজ থেকে কিছু বাড়িয়ে দিতে পারেন।
- ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৯/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬১; মাবসূত, সারাখসী ১৪/২৯; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরা ১/১৮৩-১৮৪Sharable Link
আমরা জানি, গোবর নাপাক। কিন্তু আমাদের এলাকার লোকেরা গোবর জমা করে তা বিক্রি করে। হুজুরের কাছে জানতে চাই, এভাবে নাপাক বস্তুর বেচাকেনা বৈধ কি না?
গোবর নাপাক হলেও তার ব্যবহারের বৈধ ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন, জ্বালানী কাজে ও মাটির সার হিসেবে তা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই গোবর বেচাকেনা করা জায়েয।
-আলজামিউস সগীর ৪৮০; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১০২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৮৫Sharable Link
কেউ যদি সন্তান ভাই বা এ জাতীয় কারো থেকে টাকা কর্জ নেয় এবং দেওয়ার সময় নিজ থেকে কিছু অতিরিক্ত দেয় তাহলে সেটা বৈধ হবে কি?
যদি কর্জ দেওয়ার সময় অতিরিক্ত দেওয়ার শর্ত না থাকে এবং ঋণদাতার পক্ষ থেকে কোনো চাহিদা না থাকে এবং শর্ত ছাড়াই অতিরিক্ত দেওয়ার প্রচলনও না থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে দেনা পরিশোধের সময় কর্জগ্রহণকারী যদি নিজ থেকে কিছু অতিরিক্ত দেয় তবে তা বৈধ হবে। হাদীস শরীফে এমন ব্যক্তিকে উত্তম পরিশোধকারী বলা হয়েছে। দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ২৩৯৩
আরেক হাদীসে এসেছে, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলাম- তিনি তখন মসজিদে ছিলেন- আল্লাহর রাসূল (আমাকে) বললেন, দু’রাকাত নামায পড়ে নাও। অতপর তার কাছে আমার পাওনা ছিল সেটা তিনি পরিশোধ করলেন এবং আমাকে আরো বাড়িয়ে দিলেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৩৯৪
তবে বর্তমান সময়ে যখন মানুষ সুদ ছাড়া ঋণ দিতে চায় না তখন এ ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা কাম্য। কেননা কোনো কোনো জায়গায় প্রচলন থাকে যে, ঋণ নিলে এ পরিমাণ অতিরিক্ত দিতে হবে বা অমুক সুবিধা দিতে হবে। এটাকে নীতি-নৈতিকতা মনে করা হয়। এমন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দিলে বা অন্য কোনো সুবিধা দিলে তা সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে। সাহাবী ফাযালা ইবনে উবায়েদ রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, যে ঋণ কোনো মুনাফা নিয়ে আসে তা সুদের প্রকারসমূহের একটি।
-সুনানে বায়হাকী ৫/৩৫০; রদ্দুল মুহতার ৫/১৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৬/১২২Sharable Link
আমি কুরবানীর সময় আমার মরহুম আব্বার পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতে ইচ্ছুক। প্রশ্ন হল, এ কুরবানীর গোশত কি সদকা করে দিতে হবে?
নিজ থেকে মৃত ব্যক্তির ইসালে সওয়াবের জন্য কুরবানী করলে ঐ গোশত সদকা করতে হবে না; বরং এই গোশত নিজেদের সাধারণ কুরবানীর মতোই নিজেরা খেতে পারবে এবং অন্যদেরকেও দিতে পারবে।
-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬Sharable Link