মুহাম্মাদ রকীবুল ইসলাম - শিবচর, মাদারীপুর

১১৭৩. Question

ক. অনেক মহিলাকে দেখা যায় জায়নামাযের পাশে একটি মাটির ঢিলা বা পাথর রেখে দেয় এবং নামায বা কুরআন তেলাওয়াত করার আগে তা দ্বারা তায়াম্মুম করে নেয়। এরপর নামায পড়ে। সাধারণত শীতকালেই এমনটি বেশি করতে দেখা যায়। পানি থাকা সত্ত্বেও এভাবে পবিত্রতা অর্জন করে নামায পড়লে নামায হবে কি?

খ. গাছ ও ফলকে মানুষের বদনজর থেকে বাঁচানো জন্য গাছে ভাঙ্গা বা চুনকালী করা পাতিল, ঝাড়ু ইত্যাদি বাঁধা যাবে কি?

গ. চশমা চোখে দিয়ে নামায আদায় করা যাবে কি?

Answer

ক. তায়াম্মুম হল ওযুর বিকল্প ব্যবস্থা, যা একমাত্র শরীয়ত-স্বীকৃত ওযরের ক্ষেত্রে অবলম্বন করা যেতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওযু করার সামর্থ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তায়াম্মুম দ্বারা পবিত্রতা হাসিল হয় না। অতএব প্রশ্নোক্ত মহিলাটির ওযুর জন্য পানি ব্যবহার করলে যদি অসুস্থ হওয়া বা রোগ বৃদ্ধি পাওয়া কিংবা রোগ দির্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা না থাকে তবে সাধারণ ঠান্ডা বা ওযুর কষ্টের কারণে তায়াম্মুম করলে তা সহীহ হবে না। আর এ তায়াম্মুম দ্বারা নামায আদায় করলে সে নামাযও সহীহ হবে না। -সূরা নিসা ৪৩, আলবাহরুর রায়েক ১/১৪০, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/১৪৩

খ. বদনজর থেকে হেফাজত থাকার জন্য কুরআন হাদীসের দুআগুলো পড়বে। এ ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করা উত্তম কাজ নয়। তবে এগুলোকে সাধারণ উসীলা হিসেবে ব্যবহার করা নাজায়েযও নয়। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৫, মাযমাউয্ যাওয়ায়েদ ৫/১৮৭, কাশফুল আসতার ৩/৪০৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৬

গ. চশমা চোখে দিয়ে সেজদা করলে যদি কপাল ও নাক যথাযথভাবে জমিনে লাগানো যায় তবে চশমা চোখে দিয়ে নামায পড়তে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু যদি চশমার কারণে জমিনে নাক রাখা না যায় তাহলে বিশেষ ওযর ব্যতীত এ ধরনের চশমা পড়ে নামায আদায় করা যাবে না। জেনে রাখা প্রয়োজন যে, বিনা ওযরে নাক জমিনে না লাগিয়ে সেজদা করা মাকরূহ তাহরীমী। -সহীহ মুসলিম ১/১৯৩, আলবাহরুর রায়েক ১/৩১৭, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫০৬

Sharable Link

মুহা. মনির হোসেন - নগরখানপুর, নারায়ণগঞ্জ

১১৭৪. Question

ক. বিদেশী এক কোম্পানি ইঞ্জিনিয়ারকে একটা কাজ দিয়েছে এবং বলে দিয়েছে যে, আপনি ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট করে প্লেনে চলে আসেন। আপনাকে এখানে আসার পর ফার্স্ট ক্লাসের ভাড়া এবং হোটেল ভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার ডলার দেব। এগুলোর বিল দেখালেই আপনাকে টাকা পরিশোধ করে দেব। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব চাচ্ছেন, যেহেতু আমি ব্যবসায় যাচ্ছি এজন্য প্লেনের ফার্স্টক্লাসে না গিয়ে ইকোনমি ক্লাসে যাবো এবং হোটেল ভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার ডলারের জায়গায় তিন হাজার ডলার খরচ করব। তাহলে অতিরিক্ত টাকাটা আমার লাভ হবে। এখন প্রশ্ন হল, কোম্পানি যে পরিমাণ টাকা খরচ করার জন্য বলেছে উপরের বিবরণ অনুযায়ী তার চেয়ে কম খরচ করে কোম্পানির পক্ষ থেকে অনুমোদিত পরিপূর্ণ বিলের টাকা তার জন্য গ্রহণ করা জায়েয হবে কিনা? দলীলসহ বিস্তারিত জানতে চাই।

খ. আমি গ্রামের এক  লোককে ৫৬ শতাংশ জমি ২০,০০০ (বিশ হাজার) টাকার বিনিময়ে লিজ/ভাড়া দিই। তিনি উক্ত জমি আরেকজনের কাছে বর্গা দেন, কিন্তু আমার টাকার সমস্যার কারণে তাকে বলি যে, আপনি বর্গা হিসাবে এই জমি থেকে যে পরিমাণ ফসল পান ঐ পরিমাণ ফসল আমি আপনাকে দিয়ে যাব, উক্ত জমিটা পুনরায় অন্য আরেকজনকে লিজ হিসেবে দিতে চাই। এতে যদি তিনি সম্মত হন তাহলে এটা শরীয়তসম্মত হবে কি না, দলীলসহ অবগত করালে কৃতজ্ঞ হব।

Answer

ক. প্রশ্নের বর্ণনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, খরচের বিল জমা দিতে হবে। আর সে বিল অনুযায়ীই টাকা পাওয়া যাবে। সুতরাং বিলে যথাযথ খরচ না লিখে মিথ্যা বর্ণনা দিয়ে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা হালাল হবে না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি তিন হাজার ডলার খরচ করা হয় তবে এর অতিরিক্ত লেখা বা নেওয়া জায়েয হবে না। -সূরা বাকারা ১৮৮, তাফসীরে কুরতুবী ২/৩৩৮, তাফসীরে রুহুল মাআনী ২/৭০

খ. না, এ পদ্ধতিতে জমিটি অন্যত্র লিজ দেওয়া জায়েয হবে না। জমির মালিক যদি জমিটি অন্যত্র লীজ দিতে চায় তবে পূর্বের লীজ চুক্তি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাতিল করতে হবে এবং লীজগ্রহীতাকে তার পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। পূর্বের চুক্তি বহাল রেখে অন্যত্র লীজ দেওয়ার সুযোগ নেই।

Sharable Link

ফাতিমা খাতুন - উত্তরা, ঢাকা-১২৩০

১১৭৫. Question

শুনেছি পশ্চিম দিকে পা রেখে শোয়া নাকি হারাম। যদি হারাম না হয় তাহলে কী হবে? দয়া করে বলুন।

Answer

কোন ওযর ব্যতীত কিবলার দিকে পা দিয়ে শোয়া মাকরূহ। এতে কিবলার আদব রক্ষা হয় না।

-রদ্দুল মুহতার ১/৬৫৫, ফাতহুল কাদীর ১/৩৬৬, হাশিয়াতুত তাহতাবী ১/২৯১, আল-ইনায়া ১/৩৬৭, আলবাহরুর রায়েক ২/৩৩

Sharable Link

সোহরাব - আরজাবাদ, মিরপুর

১১৭৬. Question

ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট খোলার একটি পদ্ধতি আছে, যেখানে নির্ধারিত সময়সীমা থাকে, ঐ সময় হওয়ার আগে টাকা উত্তোলন করতে পারে না। আর এর সর্বনিম্ন সময় হল পনের দিন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একাউন্ট হোল্ডারকে নির্ধারিত শর্তানুযায়ী লভ্যাংশও দিয়ে থাকে। এভাবে যদি কারো টাকা ব্যাংকে নির্ধারিত মেয়াদের জন্য ফিক্সড ডিপোজিট করা থাকে তাহলে তার যাকাতের হুকুম কী? বর্তমানেই তাকে যাকাত আদায় করতে হবে, নাকি টাকা উত্তোলন করার পর? দলীলসহ বিস্তারিত জানতে চাই।

খ. বর্তমানে টাকা-পয়সা সাথে নিয়ে সফর করা বড়ই রিস্কের ব্যাপার। অনেক সময় টাকা-পয়সার সাথে জানও চলে যায়। এজন্য বিভিন্ন এলাকায় হুন্ডির ব্যবসা চালু আছে। এমনকি এক দেশ থেকে অন্য দেশে এ ধরনের হুন্ডির মাধ্যমে টাকা-পয়সার আদান-প্রদান করা হয়। এ সম্পর্কে শরীয়তের হুকুম কী? দলীলসহ জানতে চাই।

Answer

ক. ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা জমা থাকলেও তার যাকাত দিতে হবে। এটি হাতে থাকা নগদ অর্থের মতই। আর ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা জমাকারী চাইলেই উত্তোলন করতে পারে। অবশ্য নির্ধারিত মেয়াদের আগে উঠালে আশানুরূপ সুদ পায় না। -আলবাহরুর রায়েক ২/২০২, তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৫৬, ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫৭

খ. আপনি যে হুন্ডির হুকুম জানতে চেয়েছেন তার বিস্তারিত পদ্ধতি জানালে জবাব দেওয়া সহজ হবে।

Sharable Link

আহসান শরিফ - ফরিদাবাদ, ঢাকা

১১৭৭. Question

যদি কোনো মানুষ বিষ খায়, গলায় ফাঁস দিয়ে অথবা অন্য কোনোভাবে আত্মহত্যা করে তাহলে সে কি জাহান্নামী হবে? লোক মারফত জানতে পেলাম এমন লোক জাহান্নামী এবং এদের জন্য দুআ করা অনুচিত বা হারাম। কথাটা কতটুকু সত্য? সঠিক সমাধান পেলে উপকৃত হবো।

Answer

আপনার শোনা কথাটি ঠিক নয়। যদিও আত্মহত্যা কবীরা গুনাহ, অনেক ক্ষেত্রে এ গুনাহ থেকে তওবাও সম্ভব হয় না। তাই এর ভয়াবহতা খুব বেশী। কিন্তু এ ধরনের মুসলমান ব্যক্তিরও জানাযা পড়তে হবে। তবে সমাজের নেতৃস্থানীয়-অনুসরণীয় ব্যক্তিবর্গের এ জানাযায় শরীক না হওয়া ভাল। আর এদের জন্য মাগফিরাতের দুআ করা সম্পূর্ণ জায়েয।

-সহীহ বুখারী ১/১৮২, রদ্দুল মুহতার ২/২১১, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইমদাদুল হক - জামিয়া হোসাইনিয়া, নারায়ণগঞ্জ

১১৭৮. Question

জমি ক্রয়-বিক্রয়ের পর দলীল করার সময় ক্রেতা বিক্রেতাকে ভাড়া দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যায় এবং সেখানে যাওয়ার পর অনেক সময় বিক্রেতাকে খানা খাওয়ানো হয়। প্রশ্ন হল ক্রেতা কর্তৃক বিক্রেতাকে খাওয়ানো ও ভাড়া দিয়ে নিয়ে যাওয়া সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে কিনা?

Answer

না, খাওয়া-দাওয়া বা ক্রেতা কর্তৃক তার যাতায়াত ভাড়া দেওয়ার রেওয়াজটি সুদ নয় এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে করলে এটি না-জায়েযও হবে না।

Sharable Link

মুহা. আব্দুল আজিজ - নারায়ণগঞ্জ

১১৭৯. Question

ক. জনৈক ব্যক্তির অতনে আসলি বি-বাড়িয়া আর তার অতনে ইকামত ঢাকার যাত্রাবাড়ী। এখন সে যাত্রাবাড়ী থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে সফর করল, যোহর বা আসরের সময় গাড়ি বি-বাড়িয়া থামাল শুধু নামাযের জন্য, নামায শেষ করে আবার যাত্রা শুরু করবে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। এখন যোহর বা আসার বি-বাড়িয়ায় কসর পড়বে, না পুরো পড়বে?

খ. আমার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের পাগলায়। আমি জাহাজে চাকরি করি। জাহাজ কখনও চট্টগ্রাম বন্দরে, কখনও খুলনা, বরিশাল আবার কখনও ঢাকায় আসে। কোথাও দশ দিন, কোথাও পনের দিন আবার কোথাও ২০/২৫ দিন থাকতে হয়। জাহাজ ঢাকায় আসলেও আমি বাড়িতে আসি না। বরং ছয়-সাত মাস পর পর আসা হয়। এমতাবস্থায় আমি যখন একা নামায পড়ব, কসর পড়ব না পুরো পড়বো?

বি. দ্র. উভয় মাসআলা ফিকহি কিতাবের ইবারতসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

ঐ ব্যক্তির বাড়ি যে এলাকায় সে এলাকা দিয়ে গাড়ি অতিক্রম করলে সে মুকীম বলে গণ্য হবে। কিন্তু গাড়িটি যদি তার বাড়ির এলাকায় প্রবেশই না করে তবে সে মুসাফিরই থাকবে। -তাতারখানিয়া ২/২০

খ. জাহাজের অবস্থান ভেদে মুসাফির ও মুকীমের হুকুমও ভিন্ন হবে। ১. জাহাজ যতই বড় হোক চলন্ত অবস্থায় সেখানে ইকামতের নিয়ত শুদ্ধ নয়। তাই চলন্ত জাহাজে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করলেও আরোহী ব্যক্তি মুসাফির থাকবে। তদ্রূপ গভীর সমুদ্রে বা উপকূলের অনেক দূরে নোঙ্গর করলেও সেখানে ইকামতের নিয়ত শুদ্ধ নয়। ২. জাহাজ কোন বন্দর বা এলাকায় থামলে তাতে অবস্থানের হুকুম ঐ বন্দর বা এলাকায় অবস্থানের মতই। অর্থাৎ ঐ বন্দর বা এলাকায় নিজ আবাসস্থল হলে বন্দরে ভেড়ামাত্রই মুকীম হয়ে যাবে। আর যদি তা না হয় তাহলে সেখানে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করে তবেও মুকীম হবে। আর যদি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত হয় তাহলে মুকীম হবে না।

যদি আরোহী ব্যক্তির একথা জানা না থাকে যে, তাকে এ বন্দরে কত দিন অবস্থান করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষ থেকেও তা জানা সম্ভব না হয় তবে সে ক্ষেত্রেও ঐ বন্দরে লোকটি মুসাফির বলে গণ্য হবে। (যদি এটি তার নিজস্ব এলাকায় না হয়।) -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৭, আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১

Sharable Link

মুহিউদ্দিন - জোড়খানী, বগুড়া

১১৮০. Question

ক. নামক ব্যক্তির ছেলে ও মেয়ের ছেলের (নাতির) বৌ মাহরাম কিনা? উক্ত নাতি-বৌ-এর সঙ্গে পর্দা করতে হবে কি?

খ. স্থায়ী বাসস্থান হতে কত দূরে মারা গেলে লাশ এনে বাসস্থানের নিকটবর্তী গোরস্তানে বা পারিবারিক গোরস্তানে মুর্দাকে দাফন করা যাবে?

Answer

ক. ছেলে ও মেয়ের দিকের নাতির বউয়ের জন্য দাদা-নানা মাহরাম। উক্ত নাতির বউয়ের সাথে পর্দা জরুরি নয়। -সূরা নিসা ২৩, আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৪, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৬১৮

খ. নিয়ম হল মৃত্যুবরণ করার পর যত দ্রুত সম্ভব মৃতকে দাফন করে দেওয়া। এজন্য যে এলাকায় মৃত্যুবরণ করবে ওই এলাকার কবরস্তানে দাফন করা সম্ভব হলে সেখানেই করবে। সেখানে দাফন সম্ভব না হলে কিংবা উক্ত এলাকায় মুসলমানদের কবরস্তানে না থাকলে পার্শ্ববর্তী কোন এলাকার কবরস্তানে দাফন করতে হবে। মোটকথা, নিকটবর্তী স্থানে দাফনের সুযোগ থাকাবস্থায় বিনা ওযরে দূরে নিয়ে যাওয়া শরীয়তের নির্দেশনা পরিপন্থী। -জামে তিরমিযী ১/২০৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৭, আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৬

                                

Sharable Link

হাসান তারিক - বীরগঞ্জ, দিনাজপুর

১১৮১. Question

আমরা জানি কোন মাল নগদ বিক্রি করলে যে মূল্য ধরা হয় বাকিতে বিক্রি করলে নগদ মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য ধরা জায়েয আছে। কিন্তু আমাদের এলাকায় কিছু মানুষ এই সুযোগ গ্রহণ করে এলাকার অভাবী মানুষদের কাছে চাউল এভাবে বিক্রি করতে শুরু করেছে যে, আশ্বিন মাস থেকে এক বস্তা চাউলের বাজার মূল্য ১৮০০ টাকা কিন্তু তারা এই এক বস্তা চাউল বাকিতে অগ্রহায়ণ মাসে মূল্য দেওয়ার ভিত্তিতে বিক্রি করছে ২৭০০ থেকে ৩২০০ টাকা পর্যন্ত। আগে সুদের মাধ্যমে যেভাবে গরীবদের রক্ত চোষা হতো, এখন তারা চড়া মূল্যে বাকিতে বিক্রি করে গরীবদের রক্ত চুষে খাচ্ছে, শুধু রক্ত চোষার স্টাইল পাল্টে ফেলেছে। কেননা, সুদখোরদের কাছ থেকে ১৮০০ টাকা নিলে দিতে হতো ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা। আর এভাবে পণ্য (চাউল) বাকিতে ক্রয় করলে ১৮০০ টাকার বস্তা প্রতি দিতে হচ্ছে ২৭০০ থেকে ৩২০০ টাকা পর্যন্ত। এখন আমাদের জানার বিষয় হলো এরকম চড়া মূল্যে বাকিতে পণ্য বিক্রি করা জায়েয হবে কি না? যদি জায়েয হয় তবে এলাকার দীন-দরিদ্র মানুষের কী অবস্থা হবে? তারা সুদের অভিনব নতুন স্টাইল থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাবে? শ্রদ্ধেয় মুফতী সাহেবের প্রতি সবিশেষ অনুরোধ- এ বিষয়ে আলকাউসারে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।

Answer

না, এত চড়া মূল্যে বিক্রি করা জায়েয নয়। আর গরীবদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার এ প্রবণতা শরীয়ত-বিরোধী।

-রদ্দুল মুহতার ৫/১৪২, তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/২৮, হাশিয়াতুত তাহতাবী ৪/২০১, তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৩১২-৩১৩

Sharable Link

উছামা - ঢাকা

১১৮২. Question

হাফেজ সাহেবগণ রমযান মাসে তারাবীর নামাযে কুরআন শরীফ খতম করার পর সূরা বাকারার কিছু অংশ পড়ে থাকেন। এ ব্যাপারে শরীয়তের বিধান কী?

Answer

এটি একটি মুস্তাহাব আমল। হাদীস শরীফে কুরআন মাজীদ একবার খতম হলে পুনরায় তা শুরু করার কথা এসেছে। সুতরাং এ আমল যেমনিভাবে নামাযের বাইরে উত্তম তেমনিভাবে নামাযের খতমেও তা অনুসরণীয়। অবশ্য ১৯তম রাকাতে খতম করে ২০তম রাকাতে শুরু থেকে না পড়ে উত্তম হল ১৮তম রাকাতে খতম করে শেষ দুই রাকাতে শুরু থেকে কিছু তেলাওয়াত করে নেওয়া। যেন প্রথম ও দ্বিতীয় রাকাতে তেলাওয়াতের ধারাবাহিকতা বহাল থাকে।

-জামে তিরমিযী ২/১৪৩, আলইতকান ১/৩০০, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৯৮, আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৪৬

Sharable Link

মুহা. মাহবুবুর রহমান - দারুস সালাম মাদরাসা, মিরপুর, ঢাকা

১১৮৩. Question

আমি শুক্রবার পবিত্র জুমার নামায আদায় করার পর দেখি মাদরাসার এক পাশে কিছু লোক হৈচৈ করছে। সেখানে গিয়ে দেখি একটা বিশাল বড় কোয়ালে সাপ। কেউ মারতে চাইলে লোকেরা বাধা দেয়। তারা বলে সাপ মারা জায়েয নেই। আবার কেউ বলে সুন্নত, কেউ বলে কিছু কিছু সাপ মারা জায়েয আর কিছু কিছু সাপ মারা জায়েয নেই। আমি জানতে চাই সাপ মারা জায়েয কিনা? যদি জায়েয হয় তাহলে কোন সাপ মারা জায়েয, কোন সাপ মারা জায়েয নেই? এ সম্পর্কে চার মাযহাবের মত কী? কোনটি গ্রহণযোগ্য? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

লোকালয়ে দেখা যাওয়া সব ধরনের সাপ মারা জায়েয। হাদীস শরীফে কোন সাপকে খাস না করে সব ধরনের সাপ মারার নির্দেশ এসেছে। তাই কিছু সাপ মারা জায়েয আর কিছু সাপ মারা জায়েয নেই-এ ধরনের কথার কোন ভিত্তি নেই। অবশ্য লোকালয়ের বাইরে বন-জঙ্গলে গিয়ে খোঁজ করে করে সাপ মারার কথা শরীয়তে নেই।

-সহীহ বুখারী ১/৪৬৬, সহীহ মুসলিম ২/২৩৪, রদ্দুল মুহতার ১/৬৫১, ফাতহুল কাদীর ১/৩৬৪

Sharable Link

সুবর্ণা ইসলাম - দক্ষিণ পাইকপাড়া, মিরপুর, ঢাকা

১১৮৪. Question

আমার পিতা ২৫ জুন/২০০৫ ইন্তেকাল করেন। তার হাউজ বিল্ডিং-এর লোনে তৈরি একটি পাঁচতলা বাড়ী রয়েছে এবং তার রেখে যাওয়া ইন্সুরেন্সের টাকার পরিমাণ তিন লক্ষাধিক। আমার মা জীবিত। আমরা এক ভাই ও দুই বোন। আমি আমার সন্তানদের সুবিধার্থে উক্ত পাঁচতলা বাড়ীর একটি ফ্ল্যাট চাইলে তারা আমার সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে। এখন আমার প্রশ্ন-

১. এমতাবস্থায় আমি আমার অংশের দাবী করলে তা কি শরীয়ত সম্মত হবে?

২. আমাকে বঞ্চিত করে কি তারা গোনাহগার হচ্ছে না এবং গোনাহ হলে তা কোন প্রকৃতির গোনাহ?

৩. আমাকে বঞ্চিত ও নাখোশ রেখে অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনকে খাওয়ানো ও তাদের জন্য খাওয়া কি বৈধ?

৪. আমি আমার অংশের হকদার কি লোন পরিশোধ করার পর হবো? নাকি বাবার ইন্তেকালের পর থেকেই?

৫. ইন্সুরেন্সের তিন লক্ষ টাকা আমাকে না জানিয়ে ও না দিয়ে খরচ করা এবং ছোট বোনের বিবাহ বাবদ এক/দেড় লক্ষ টাকা এখান থেকে জমা করে রাখা জায়েয হবে? উল্লেখ্য যে, আমার ভাই হাফেয মাওলানা। তার বক্তব্য হচ্ছে, এখানে কোন হারাম-হালাল, জায়েয-নাজায়েয আর হক না-হকের কিছু নেই। একথাটি কতটুকু শরীয়তসম্মত? এ ব্যাপারে সঠিক মাসআলা প্রদানে বাধিত করবেন।

Answer

উল্লেখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর ধারাবাহিকভাবে প্রদান করা হলো-

১. পিতার ইন্তেকালের সাথে সাথেই ছেলেমেয়েরা হিস্যা অনুযায়ী তার সম্পদের মালিক হয়ে যায়। তাই আপনিও পিতার মৃত্যুর সাথে সাথে তার সকল সম্পদে আনুপাতিক হারে মালিক হয়ে গেছেন। সুতরাং আপনার প্রাপ্য-অংশের দাবী করা শরীয়ত পরিপন্থী নয়; বরং এটা শরীয়ত কর্তৃক প্রদত্ত আপনার অধিকার। তাই মা ও ভাইয়ের কর্তব্য, অনতিবিলম্বে সকল ওয়ারিসের হিস্যা নির্ধারণ করে বণ্টন করে দেওয়া। -সূরা নিসা ৭, সহীহ বুখারী ১/৩২২, ফাতহুল বারী ৫/৬৯

২. আপনাকে প্রাপ্য-অংশ থেকে বঞ্চিত করলে অবশ্যই তারা মারাত্মক গোনাহগার হবে। এটি আত্মসাতের অন্তর্ভুক্ত, যা কবীরা গোনাহ। এ হক আদায়ে গড়িমসি করাও মারাত্মক গোনাহ। -সূরা বাকারা ১৮৮, ফাতহুল বারী ৪/৫৪৩, সহীহ বুখারী ১/৩২৩

৩. কোন ব্যক্তির সম্পদ তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ছাড়া অন্যের জন্য ভোগ করা হারাম। সুতরাং অনিচ্ছা ও বিরোধিতা সত্ত্বেও আপনার সম্পদ ভোগ করা অথবা তা থেকে উপকৃত হওয়া তাদের জন্য সম্পূর্ণ অবৈধ। -মুসনাদে আহমাদ ৫/৭৩, শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৬৫

৪. পিতার মৃত্যুর পর মুহূর্ত থেকেই আপনারা নিজ নিজ অংশের মালিক হয়ে গেছেন। তাই প্রশ্নোক্ত বাড়ীটি ওয়ারিসদের প্রত্যেকের হিস্যা অনুযায়ী বণ্টন করে দিতে হবে। আর প্রত্যেকের অংশ অনুযায়ী হাউজ বিল্ডিং-এর লোনও ভাগ হয়ে যাবে, যা সংশ্লিষ্ট মালিককে আদায় করতে হবে। তাই আপনার অংশ অনুপাতে ওই লোন পরিশোধ করা আপনার জিম্মায় থাকবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২২১

৫. ইন্সুরেন্সে যে পরিমাণ টাকা আপনার বাবা নিজে জমা করেছিলেন আপনারা শুধু ততটুকুরই মালিক। সুতরাং আপনার পিতা কর্তৃক জমাকৃত সমস্ত টাকা সকল ওয়ারিসের মাঝে হিস্যা অনুযায়ী বণ্টন করতে হবে। বণ্টনের পূর্বে এখান থেকে সংসারের জন্য খরচ করা বা অপর বোনের বিবাহের জন্য রেখে দেওয়া জায়েয হবে না; বরং আপনার অংশের টাকা যথাশীঘ্র দিয়ে দেওয়া জরুরি।

উল্লেখ্য, আপনার পিতার জমাকৃত টাকা ছাড়া অতিরিক্ত টাকা যেগুলো ইন্সুরেন্স কোম্পানি দিয়েছে, সেগুলো সুদ এবং হারাম। এ টাকা ওয়ারিসদের ভোগ করা জায়েয হবে না। এ টাকা পুরোটাই সওয়াবের নিয়ত ছাড়া ফকীর-মিসকীনকে দিয়ে দেওয়া জরুরি। আরো উল্লেখ্য, শরীয়তে ওয়ারা্সাতের বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে অন্যান্য অনেক বিষয় যেখানে খুব সংক্ষেপে বলা হয়েছে সেখানে ওয়ারাসাতের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে; যা এ বিষয়টির গুরুত্বের পরিচায়ক। সুতরাং এক্ষেত্রে কোন রকম অবহেলা করা একজন মুসলমানের পরিচয়াক হতে পারে না। সেখানে আপনার বর্ণনা অনুযায়ী একজন আলেম কর্তৃক বোনের হক আটকে রাখা যে কত বড় অপরাধ তাতো বলার অপেক্ষা রাখে না।

-সূরা নিসা ৭, শরহুল মাজাল্লা ৪/৩১, সূরা বাকারা ২৭৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৮৬

Sharable Link

নোমান আহমদ - ভোলা

১১৮৫. Question

একদিন আমার বাসায় হঠাৎ চিনি শেষ হয়ে যায়। তাই আমার প্রতিবেশীর নিকট থেকে পরে ফেরত দেওয়ার কথা বলে এক কেজির একটি চিনির প্যাকেট নিয়ে আসি। যখন নিয়ে আসি তখন চিনির প্রতি কেজির মূল্য ছিল ৬০ টাকা। কিন্তু কিছু দিনের ব্যবধানে চিনির মূল্য কমে তা হয়েছে কেজি প্রতি ৩২ টাকা। প্রশ্ন হল এখন আমার প্রতিবেশীর ঋণ আদায়ের জন্য তাকে এক কেজি চিনি ফেরত দিলে হবে? নাকি ৬০ টাকা সমপরিমাণ মূল্যের চিনি দিতে হবে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

Answer

ঋণের ব্যাপারে শরয়ী মূলনীতি হল, যে বস্ত্ত যে পরিমাণ নেওয়া হয়েছে ওই বস্ত্ত ওই পরিমাণ ফেরত দেওয়া। মূল্য কম হোক বা বেশী হোক এটা লক্ষণীয় নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চিনির মূল্য পূর্বের চেয়ে কমে গেলেও এক কেজি চিনি দিলেই ঋণ আদায় হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে চিনি দাতার জন্য অতিরিক্ত তলব করা জায়েয হবে না। অবশ্য তার তলব ছাড়াই যদি গ্রহীতা স্বেচ্ছায় কিছু অতিরিক্ত দিয়ে দেয় তাহলে এতে দোষের কিছু নেই, বরং তা প্রশংসনীয়ও বটে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০২, মাবসুতে সারাখসী ১৪/৩০, আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬২

Sharable Link

ইসমাঈল - ঢাকা

১১৮৬. Question

কোন হাঁস-মুরগী বা গরু-ছাগল রোগে আক্রান্ত হয়ে বা অন্য কোনো কারণে হঠাৎ মৃত্যুর নিকটবর্তী হলে মৃত্যুর পূর্বে ওই হাঁস, মুরগী বা গরু, ছাগল জবাই করলে তা হলাল হবে কিনা? এবং তা খাওয়া যাবে কিনা? জানালে উপকৃত হব।

Answer

যে কোন হালাল প্রাণী কোন কারণে মৃত্যুর নিকটবর্তী হলেও জীবিত অবস্থায় তাকে জবাই করা হলে তা হালাল বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে জবাইয়ের পর যদি নড়ে চড়ে ওঠে তবে বুঝা যাবে যে, প্রাণীটি জীবিত অবস্থায় জবাই করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, রোগাক্রান্ত পশু জবাই করার দ্বারা হালাল হলেও তা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিনা তা সংশ্লিষ্ট বিষেশজ্ঞ ডাক্তার থেকে নিশ্চিত হওয়া কর্তব্য।

-সহীহ বুখারী ১/৩০৮, ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৩/৩০৫, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩০৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৬, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০৯

Sharable Link

মৌলভী আব্দুল হাকীম - কুমিল্লা

১১৮৭. Question

আমাদের এলাকায় প্রচলন আছে যে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে এক হাজার টাকা প্রদান করে। চার মাস পর তার কাছ থেকে বিনিয়োগকৃত এক হাজার টাকার পরিবর্তে ৬শ টাকা এবং তিনমন ধান গ্রহণ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন হল গ্রাহকের কাছে এভাবে টাকা বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া জায়েয হবে কি? বিস্তারিত জানালে চিরকৃজ্ঞ হব।

Answer

প্রশ্নোক্ত বিনিয়োগ পদ্ধতি শরীয়তের নির্দেশিত বিনিয়োগ পদ্ধতিগুলোর অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ, এক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশিত বিনিয়োগ পদ্ধতি হল, হয়ত গ্রাহককে নির্ধারিত মেয়াদে সুদবিহীন করজ দেওয়া হবে বা বাইয়ে সালাম তথা আগাম খরিদের ভিত্তিতে বিক্রেতার কাছে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করা হবে। কিন্তু প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গ্রহণ করা হয়েছে একটি মনগড়া পন্থা, যা মূলত ঋণ ও বাইয়ে সালামের নামে টাকা খাটিয়ে মুনাফাখোরীর একটি অপকৌশল মাত্র। এ ধরনের কারবার থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

-জামে তিরমিযী ১/২৩৩, মুয়াত্তা ইমাম মালেক ১/২৮৩, রদ্দুল মুহতার ৫/১৬৭, আলমুগনী ইবনে কুদামাহ ৬/১১৬

Sharable Link

রেজাউল করীম - ঢাকা

১১৮৮. Question

কারো উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও যদি কুরবানী না করে তাহলে পরবর্তীতে তার করণীয় কী? এমনিভাবে যদি কুরবানীর পশু ক্রয় করার পরেও নির্ধারিত দিনগুলোর মধ্যে কুরবানী না করে তাহলে যে পশুটি ক্রয় করা হয়েছিল সেটি কী করা হবে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

Answer

কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও কুরবানীর দিনগুলোতে তা আদায় না করলে পরবর্তীতে কুরবানীর যোগ্য একটি বকরীর মূল্য সদকা করতে হবে। আর কুরবানীর পশু ক্রয় করে থাকলে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কুরবানী না করতে পারলে জীবিত পশুটিকে সদকা করে দেবে কিংবা পশুটির ন্যায্য মূল্য সদকা করে দেবে।

উল্লেখ্য, যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় সে যদি কুরবানীর উদ্দেশ্যে পশু ক্রয় করে কুরবানীর দিনগুলোতে জবাই করতে না পারে তবে তাকে ওই পশুটি জীবিত সদকা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে পশুটি রেখে তার মূল্য দান করার সুযোগ নেই।

-ফাতহুল কাদীর ৮/৪৩২, আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৭

Sharable Link

হাসান মাহমুদ - ঢাকা

১১৮৯. Question

আমাদের এলাকায় মৃত ব্যক্তিকে দাফনের সময় উপস্থিত মুসল্লীগণ প্রত্যেকে কবরে তিন চাক মাটি দেয়। এখন আমার প্রশ্ন হল, এটি কি শরীয়ত নির্দেশিত কোন হুকুম? নাকি মানুষের উদ্ভাবিত কুসংস্কার? যদি শরীয়তের হুকুম হয় তাহলে মাটি কতটুকু দিতে হবে?

Answer

দাফনের সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের জন্য কবরে তিন মুষ্ঠি মাটি দেওয়া মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক সাহাবীর দাফনের সময় লাশের মাথার দিকে তিন মুষ্ঠি মাটি দিয়েছেন। -ইবনে মাজাহ ১১৩, বায়হাকী ৩/৪১০

উল্লেখ্য, তিন মুষ্ঠি মাটি দেওয়ার ক্ষেত্রে মাটির চাক দেওয়া কাম্য নয়, তদ্রুপ এক মুষ্ঠিতে তিন চাক মাটি দিলে তা এক মুষ্ঠিই গণ্য হবে।

-সুনানে ইবনে মাজাহ ১১৩, ইলাউস্ সুনান ৮/৩১৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ২/১৩৬, মারাকিল ফালাহ ৩৩৫

Sharable Link

মাহমুদুল হাসান - কুমিল্লা

১১৯০. Question

জনৈক মুসল্লীর উপর সেজদা সাহু ওয়াজিব। শেষ বৈঠকে বসে সে ভুলক্রমে উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে ফেলে। কিন্তু সালাম ফিরানোর সাথে সাথে তার সেজদা সাহুর কথা স্মরণ হয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হল, এখন কি তার জন্য সেজদা সাহু আদায় করার সুযোগ আছে? যদি সুযোগ থাকে তাহলে কতটুকু সময়ের ভেতরে সে সেজদা সাহু আদায় করতে পারবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটি সালাম ফিরানোর পর নামায-পরিপন্থী কোনো কাজ না করলে স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে সেজদা সাহু আদায় করে নেবে। আর যদি সালাম ফিরানোর পর নামায-পরিপন্থী কোন কিছু করে থাকে তাহলে সেজদায় সাহু আদায় করার সুযোগ থাকবে না। এক্ষেত্রে উক্ত নামায পুনরায় আদায় করে নিতে হবে।

-ফাতহুল কাদীর ১/৪৫০, আলবাহরুর রায়েক ২/১০৭, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৩, রদ্দুল মুহতার ২/৯১, শরহুল মুন্য়াহ ৪৬৪

Sharable Link

হুসাইন আহমদ - ঢাকা

১১৯১. Question

আমাদের এলাকায় মৃত ব্যক্তির দাফন শেষে কবরের উপর পানি ছিটানো হয়। এখন আমার প্রশ্ন হল শরীয়তে এর কি কোন ভিত্তি রয়েছে? নাকি এটি একটি কুসংস্কার?

 

Answer

কবরের মাটি ভাল করে জমার জন্য দাফন শেষে কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দেওয়া ভালো। তবে পানি ছিটানোকে জরুরি বা স্বতন্ত্র সওয়াবের কাজ মনে করা যাবে না। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় পুত্র ইবরাহীমকে দাফন করার পর কবরের উপর পানি ছিটিয়েছেন। -সুনানে বায়হাকী ৩/৪১১, মারাসীলে আবু দাউদ ১৮

এ ছাড়াও হযরত সাদ ইবনে মুয়াজ এবং উসমান ইবনে মাজউন রা.-এর কবরে পানি ছিটানোর বর্ণনা হাদীস শরীফে এসেছে।

-সুনানে ইবনে মাজাহ ১২২, মারাসীলে আবু দাউদ ১৮, সুনানে ইবনে মাজাহ ১১২, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৬, রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৬৯

Sharable Link

আরিফুল ইসলাম - সাতক্ষীরা

১১৯২. Question

মসজিদে জামাতে নামায আদায় করার সময় দেখা যায় যে, কখনো কোন কারণে নামায ফাসেদ হয়ে গেলে সালাম শেষে ইমাম সাহেবকে অবহিত করার পর পুনরায় জামাতে নামায আদায় করা হয়। প্রশ্ন হল এক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার নামায আদায়ের সময় কি পুনরায় ইকামত দিতে হবে? নাকি পূর্বের ইকামতই যথেষ্ট হবে? জানালে উপকৃত হব।

Answer

কোন কারণে নামায ফাসেদ হয়ে গেলে যদি দ্বিতীয়বার নামায শুরু করতে বেশি বিলম্ব না হয় তাহলে পুনরায় ইকামত দিতে হবে না। আর যদি প্রথম নামাযের পর আবার নামায শুরু করতে অনেক বেশি বিলম্ব হয়ে যায় তাহলে পুনরায় ইকামত দিতে হবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫২৪, আলবাহরুর রায়েক ১/২৬২, আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৯০, আলমুহীতুল বুরহানী ২/২০১

Sharable Link

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - ঢাকা

১১৯৩. Question

সন্ত্রাসীরা এক লোককে হত্যা করে দূরে নিয়ে গিয়ে অজানা এক ব্যক্তির জমিতে কবর দিয়ে চলে যায়। পরে জমির মালিক তা জানতে পারে। এখন জমির মালিক তার জমি থেকে লাশ বের করে সরিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। এ কাজ তার জন্য বৈধ হবে কি?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে জমির মালিক লাশটি স্থানান্তর করার অধিকার রাখে। তবে এজন্য তার কর্তব্য হল, মৃতের ওয়ারিশদেরকে লাশটি স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে পার্শ্ববর্তী কোন কবরস্থানে এ কবর স্থানান্তর করতে পারবে। এছাড়া কবরটি সমতল ভূমির সাথে মিশিয়ে দেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে জমির মালিক ওই স্থানে চাষাবাদও করতে পারবে।

-সুনানে নাসাঈ ১/২২০, আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫, তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২৪৬, আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৮

Sharable Link

আদনান সাইফ - মোমেনশাহী

১১৯৪. Question

আমার পিতা একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। তিনি নামায রোযা নিয়মিত আদায় করতেন। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তিনি হজ্ব আদায় করার সুযোগ পাননি। এখন তিনি বিছানায় শয্যাশায়ী এবং সুস্থ হবেন এই আশা করা দুরূহ। তাই আমরা তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করাতে চাচ্ছি। এদিকে আমাদের এক আত্মীয় সৌদিতে চাকরিরত আছেন। এক্ষেত্রে আমরা যদি তাকে আমাদের পিতার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করতে বলি এবং তিনি তা আদায় করেন তাহলে তা আদায় হবে কি না? এক্ষেত্রে সঠিক সমাধান জানালে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতার বদলি হজ্বের জন্য বাংলাদেশ থেকেই কাউকে পাঠাতে হবে। বাংলাদেশ  থেকে কাউকে পাঠানোর সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যদি সৌদিতে অবস্থানরত কাউকে দিয়ে বদলি হজ্ব করানো হয়, তবে বদলি হজ্ব আদায় হবে না। এক্ষেত্রে নিজ দেশ থেকে বদলি হজ্ব করানো জরুরি হবে।

-রদ্দুল মুহতার ২/৬০৫, মানাসেকে মোল্লা আলী ৪৪০, গুনইয়াতুন নাসেক ৩২৯

Sharable Link

আমিনুল ইসলাম - ময়লাপোতা, খুলনা

১১৯৫. Question

বর্তমান বাজারে ছবিবিহীন বস্ত্ত পাওয়া মুশকিল। প্রায় জিনিসেই প্রাণীর ছবি থাকে। এমতাবস্থায় ছবিযুক্ত বস্ত্ত ক্রয় করে চোখ মুছে বা কেটে ফেলে উক্ত বস্ত্ত ব্যবহার করার অবকাশ শরীয়তে আছে কি? জানালে উপকৃত হবো।

Answer

প্রাণীর ছবির শুধু চোখ কেটে বা মুছে দেওয়া যথেষ্ট নয়। শুধু চোখ মুছে দেওয়ার দ্বারা তা ছবির হুকুম থেকে বেরিয়ে যায় না। তাই স্পষ্ট ছবির পুরো চেহারা মুছে দেওয়া জরুরি। অবশ্য ছবি যদি এত ছোট হয় যে, তা নিচে থাকাবস্থায় দাঁড়িয়ে দেখলে চেহারা বুঝা যায় না, তাহলে সে ছবির চেহারা মোছা বা কাটা জরুরি নয়। তবে সম্ভব হলে এ ধরনের ছবির চেহারাও মুছে দেওয়া ভাল।

-জামে তিরমিযী ২/১০৮, বাদেউস সানায়ে ১/১১৫, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৮, রদ্দুল মুহতার ১/৬৪৮, ফাতহুল কাদীর ১/৩৬৩

Sharable Link

মুহা. আব্দুর রহমান জামী - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

১১৯৬. Question

অনেক লোককে দেখা যায় যে, তারা মৃত্যুর আগে নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে তার জানাযা নামায পড়ানোর জন্য অসিয়ত করে যায়। এখন আমার প্রশ্ন হলো, অসিয়তকৃত ব্যক্তির জন্য এই অসিয়ত কার্যকর করা জরুরি কি না? এবং এ অসিয়তের হুকুম কী?

Answer

জানাযার ইমামতি কে করবে এবং ইমামতির অধিক হকদার কে, তা শরীয়তে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সে নিয়মেই জীবিত লোকদের থেকে ইমাম বানানো হয়। এ ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তি অন্য কারো ব্যাপারে অসিয়ত করে গেলে তা পালন করা আবশ্যকীয় নয়। হ্যাঁ, যদি ইমামতির হকদার ব্যক্তি নিজেই মৃত ব্যক্তি যার নামে অসিয়ত করেছে তাকে ইমামতির সুযোগ দেয় এবং সে যোগ্যও হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ওই অসিয়তকৃত লোকটি ইমামতি করতে পারবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২, ফাতহুল কাদীর ২/৮৩, শরহুল মুন্য়াহ ৬০৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৩, রদ্দুল মুহতার ২/২২১

Sharable Link

আনোয়ার - বরিশাল

১১৯৭. Question

আমি তিন হাজার টাকায় একটি পুরাতন মোবাইল বিক্রি করি। ক্রেতার কাছে মোবাইলটি অর্পণ করলে সে আমার নিকট চার্জারের দাবি করে। অথচ মোবাইল বিক্রির সময় চার্জার দেওয়ার কোনো কথা হয়নি। আর না দিলে ১০০টাকা কম দিতে চাচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো, মোবাইলের সাথে চার্জার দেওয়া জরুরি কি না? শরয়ী সমাধান জানতে চাই।

Answer

চার্জার মোবাইল ফোনের একটি আবশ্যকীয় এক্সেসরিজ। যা সাধারণত মোবাইলের সাথেই দেওয়া হয়। তাই মোবাইল ক্রয়-বিক্রয়ের সময় চার্জার দেওয়ার কথা না থাকলেও তা দেওয়া জরুরি। তাই মোবাইল ক্রয়-বিক্রয়ের সময় চার্জারের উল্লেখ না থাকলেও চার্জার দেওয়া জরুরি। সুতরাং প্রশ্নোক্ত কারবারেও বিক্রেতার উপর চার্জার দেওয়া জরুরি। চার্জার না দিলে ক্রেতা চার্জারের দাম মোবাইলের মূল্য থেকে কর্তন করতে পারবে। তবে যদি বিক্রয়ের সময়ই এ কথা বলে দেওয়া হয় যে, আমি শুধু সেট বিক্রি করলাম, চার্জার নয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে চার্জার বিক্রিত দ্রব্যের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

-ফাতহুল কাদীর ৫/৪৮৩, বাদেউস সানায়ে ৪/৩৬৮, আলবাহরুর রায়েক ৫/২৯৩, শরহুল মাজাল্লাহ ২/১৩৮, রদ্দুল মুহতার ৪/৫৪৮

Sharable Link

মুহাম্মদ নোমান আহমদ - বরিশাল

১১৯৮. Question

আমি আমার চাচাকে দাফন করতে কবরে নামি। অজান্তে কবরে আমার জরুরি পাসপোর্ট পড়ে থাকে। ফলে বাধ্য হয়ে দাফনের পর কবর খনন করে তা তুলে আনি। এলাকার কতিপয় লোক বলছে, তোমার এ কাজটি কোন মতেই শরীয়ত সম্মত হয়নি। এতে তোমার গোনাহ হয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো, আমার এই কাজটি ঠিক হয়েছে কিনা? দলীলসহ জানানোর সবিনয় আবেদন করছি।

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা মতে যেহেতু জরুরি পাসপোর্টের জন্যই কবরটি খনন করা হয়েছে তাই তা নাজায়েয বা গোনাহের কাজ হয়নি। বরং এ ধরনের পরিস্থিতিতে কবর খনন করার অবকাশ রয়েছে। অবশ্য দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর শরীয়ত অনুমোদিত বিশেষ ওযর ছাড়া কবর খনন করা নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে।

-আলইসতিযকার ৮/৩৪২, মাবসূতে সারাখসি ১/৪৪১, ফাতহুল কাদীর ২/১০১, আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫, রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭

Sharable Link

সালমান মাহমূদ - যশোর

১১৯৯. Question

এক ব্যক্তি বিদেশে যাওয়ার আগে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য জায়গা দিয়ে আমাকে বাগান করার অনুমতি দিয়ে যায়। কিন্তু সে দীর্ঘ চার বছর পর এসে তার জমি চাচ্ছে। তাই আমার জন্য কি এখনই উক্ত জমি ফিরিয়ে দেওয়া জরুরি? যদি তাই হয় তাহলে আমার বাগান কী করতে হবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু জমির মালিক অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য আপনাকে জমি ভোগ করতে দিয়েছিল তাই জমির মালিক যখন ইচ্ছা তার জমি ফিরিয়ে নিতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে মালিক চাওয়া মাত্র তার জমি ফিরিয়ে দেওয়া জরুরি। আর বাগানের গাছগুলো যদি জমির মালিক কিনে নিতে চায়, তাহলে তার কাছে বিক্রি করে দেওয়া যাবে। কিন্তু যদি মালিক তা নিতে অসম্মত হয়, তাহলে গাছ কেটে নিয়ে হলেও তার জমি তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।

-ফাতহুল কাদীর ৭/৪৭৪, আলবাহরুর রায়েক ৭/২৮২, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৯৩, রদ্দুল মুহতার ৫/৬৮২, শরহুল মাজাল্লাহ ৩/৩৩৬

Sharable Link

আব্দুল হালীম হাওলাদার - হেসামদ্দি, বরিশাল

১২০০. Question

একদিন ফজরের সময় মসজিদে গিয়ে দেখি নামায শুরু হয়ে গেছে। এখন আমি সাথে সাথে জামাতে শামিল হব, নাকি আগে সুন্নত আদায় করবো? জানালে উপকৃত হব।

Answer

ফজরের সুন্নত অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এর আদায়ের ব্যাপারে হাদীসে বিশেষ তাকিদ দেওয়া হয়েছে। তাই জামাত শুরু হওয়ার আগে কখনো তা যদি আদায় করা না হয় তবে দ্রুত সুন্নত আদায় করে ইমাম সাহেবের সাথে শেষ রাকাতে একমকি তাশাহ্হুদে শরীক হওয়ারও প্রবল সম্ভাবনা থাকলে এ ক্ষেত্রেও সুন্নত আদায় করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। অবশ্য সুন্নত নামায জামাত থেকে দূরে ভিন্ন স্থানে যেমন বারান্দায় বা দেয়ালের আড়ালে পড়বে। জামাতের কাছাকাছি বা কাতারে দাঁড়িয়ে আদায় করবে না। আর যদি সুন্নত আদায় করলে ইমামের সাথে তাশাহ্হুদ পাওয়ারও সম্ভাবনা না থাকে তাহলে সুন্নত না পড়ে সরাসরি জামাতে শরিক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সূর্যোদয়ের পর (ঢলে যাওয়ার আগে) ওই সুন্নত পড়ে নেওয়া ভালো।

-সুনানে আবু দাউদ ১/১৭৮-১৭৯, আলবাহরুর রায়েক ২/৭৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২০, আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৩৪, রদ্দুল মুহতার ২/৫৬

Sharable Link