যদি কোনো মহিলার স্বামী মারা যায় অথবা মহিলাটি তালাকপ্রাপ্তা হয় তাহলে ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার আগে নিজের জন্য অথবা অন্য কারো জন্য তার বিয়ের আলাপ করা অথবা প্রস্তাব দেওয়া জায়েয আছে কি না? দলিলসহ জানালে উপকৃত হতাম।
যদি কোনো মহিলার স্বামী মারা যায় অথবা মহিলাটি তালাকপ্রাপ্তা হয় তাহলে ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার আগে নিজের জন্য অথবা অন্য কারো জন্য তার বিয়ের আলাপ করা অথবা প্রস্তাব দেওয়া জায়েয আছে কি না? দলিলসহ জানালে উপকৃত হতাম।
স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দতের মধ্যে কোনো ব্যক্তির নিজের জন্য কিংবা অন্য কারো জন্য ওই মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া জায়েয নেই। অবশ্য ইশারা-ইঙ্গিতে বিয়ের আগ্রহের কথা জানানো জায়েয। যেমন এরূপ বলা যে, তোমাকে পছন্দ হয়, আল্লাহর কাছে দুআ করি, তিনি যেন আমাদেরকে একত্র করে দেন। উপরোক্ত বিধানটি কুরআন মজীদের সূরা বাকারার ২৩৫নং আয়াতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে।
আর তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে ইদ্দত অবস্থায় শুধু তালাকদাতা নিজের জন্য বিয়ের প্রস্তাব করতে পারে। তালাকদাতা ছাড়া অন্য কারো জন্য ওই মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া জায়েয নেই। এমনিভাবে ইশারা-ইঙ্গিতেও বিয়ের কথা জানানো যাবে না।
উল্লেখ্য, তিন তালাকের পর যেহেতু তালাকদাতার জন্য ওই মহিলা সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে যায়, তাই এক্ষেত্রে তার সাথে যেমন বিয়ে নাজায়েয তেমনি তাকে প্রস্তাব দেওয়াও নাজায়েয।
Sharable Link-তাফসীরে কুরতুবী ৩/১২৪; ফাতহুল কাদীর ৪/১৬৫; আননাহরুল ফায়েক ২/৪৮৮; আলমুগনী ৯/৫৭২; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৫২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩৪; রদ্দুল মুহতার ৩/ ৫৩৪
মাগরিবের সময় কতক্ষণ থাকে? এনিয়ে আমাদের মাঝে বিতর্কের সৃষ্টি হলে আমাদের গ্রামের একজন আলেম বলেছেন, ইশার সময় হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মাগরিবের নামাযের সময় থাকে। তার কথার যথার্থতা জানতে চাই।
ওই আলেম যথার্থই বলেছেন। সূর্যাস্তের পর থেকে পশ্চিম আকাশের সাদা আভা থাকা পর্যন্ত মাগরিবের ওয়াক্ত থাকে। সাদা আভা চলে যাওয়ার পর থেকেই এশার ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়। মাগরিব আর এশার ওয়াক্তের মাঝে কোনো ফাঁকা সময় নেই। মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথেই এশার ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়। শীত-গ্রীষ্মকাল ভেদে মাগরিবের ওয়াক্ত কম-বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত মাগরিবের ওয়াক্ত এক ঘণ্টা বিশ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পঁয়ত্রিশ মিনিট পর্যন্ত দীর্ঘ হয়ে থাকে। তবে মাগরিবের নামায আউয়াল ওয়াক্তেই পড়া মুস্তাহাব। আর তারকাসমূহ উদ্ভাসিত হয়ে যায় এত বিলম্বে পড়া মাকরূহে তাহরীমী।
Sharable Link-রদ্দুল মুহতার ১/৩৬৮; কেফায়াতুল মুফতী ৩/২৯
...
আপনার প্রশ্নের সমাধান ফোনে বা ডাকে ফেরতখামসহ চিঠি পাঠিয়ে জেনে নিন।
Sharable Link
আমার একটি হজ্ব কাফেলা আছে। আমি প্রতি বছর কিছু হাজ্বী নিয়ে হজ্বে যাই। গত বছর একজন হাজ্বী সাহেব ১০ তারিখ বড় শয়তানকে পাথর মারার পর কুরবানী করে মাথা মুণ্ডানোর আগেই তাওয়াফে যিয়ারত করে ফেলেন। এতে তিনি কী ধরনের ভুল করেছেন, তার উপর কি দম ওয়াজিব?
তাওয়াফে যিয়ারত মাথা মুণ্ডানোর পরে করা সুন্নত। ধারাবাহিকতা ভঙ্গের কারণে তার সুন্নত ছুটেছে। তবে তার উপর কোনো অতিরিক্ত দম বা জরিমানা আসবে না।
Sharable Link-রদ্দুল মুহতার ২/৫১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৩৩
বেশ আগে এক মহিলার আচরণে বিরক্ত হয়ে তার স্বামী বলেছিল যে, তুমি এত ঘণ্টা পরে তালাক হয়ে যাবে। ফলে ওই মহিলার উপর এক তালাকে ‘রজয়ী’ পড়ে যায়। পরে মহিলা অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে উক্ত ঘটনার তিন মাসের মধ্যে স্বামী তাকে ‘রুজূ’ করে নেয়। কিন্তু তাদের সংসারে শান্তি আসে না। স্বামীকে কষ্ট দেওয়া, স্বামীর বিরোধিতা করা, স্বামীর সাথে দুর্ব্যবহার করা মহিলার স্বভাবে পরিণত হয়ে গেছে। তাই এক পর্যায়ে স্বামী রাগারাগি করাতে কয়েক মাস আগে মহিলা নিজের ইচ্ছায় ও সিদ্ধান্তে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে যায়। মেহেরবানী করে এই মাসআলার সমাধান বলে দিলে কৃতজ্ঞ হব।
প্রশ্নপত্রে বর্ণিত ঘটনা সম্পর্কে কোন্ বিষয়টির উত্তর চাওয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়। বাহ্যত মনে হচ্ছে, প্রশ্নকারী জানতে চাচ্ছেন যে, এমতাবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর করণীয় কী? স্বামীর ঘর থেকে এভাবে চলে যাওয়ার কারণে স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হয়েছে কি না?
উত্তর হল, স্ত্রী যদি স্বামীর অনুমতি ছাড়াই চলে গিয়ে থাকে তাহলে সেটা বৈধ হয়নি। তবে একারণে স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হয়নি; বরং আগের মত তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রয়েছে।
এখন মহিলার করণীয় হল, এ কাজের কারণে অনুতপ্ত হওয়া এবং এখনও যদি স্বামীর ঘরে ফিরে না এসে থাকে তাহলে তাড়াতাড়ি স্বামীর ঘরে ফিরে আসা এবং স্বামীকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করা। স্বামীর খেদমত ও তার কথা মান্য করার ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত কোনো ত্রুটি না করা।
হাদীস শরীফে আছে, ‘যে স্ত্রীর প্রতি স্বামী অসন্তুষ্ট তার কোনো নামায কবুল হয় না; কোনো নেক আমল উপরে উঠানো হয় না, যতক্ষণ স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট না হবে।’ -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫৩৫৫
অন্য হাদীসে আছে, ‘যে স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়, স্বামীর নিকট ফিরে আসা পর্যন্ত তার নামায মাথার উপরে যায় না। অর্থাৎ কবুল হয় না।’ -মুসতাদরাকে হাকেম ৪/১৭২; তাবারানী ১/১৭২
অবশ্য কোনো মহিলা যদি শরীয়তসম্মত কোনো ওযরে বের হয়ে যায় তাহলে তার হুকুম ভিন্ন। তবে এ অবস্থায়ও সাময়িক ওযর কেটে যাওয়ার পর ফিরে আসা জরুরি।
হুসাইন ইবনে মুহসিন থেকে বর্ণিত, তাঁর এক ফুফু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কোনো প্রয়োজনে এসেছিলেন। প্রয়োজন পূর্ণ হলে নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি বিবাহিতা? তিনি বললেন জী। নবীজী বললেন, তুমি স্বামীর সাথে কেমন আচরণ কর? তিনি বললেন, আমি একেবারে অপারগ না হলে তাঁর সেবা করতে ত্রট্টটি করি না। তখন নবীজী বললেন, ‘স্বামীর সাথে তোমার আচরণ কেমন তা ভেবে দেখ। কারণ স্বামীই তোমার জান্নাত কিংবা জাহান্নাম।’ -মুসনাদে আহমাদ ৪/৩৪১, ৬/৪১৯
আর স্বামীর করণীয় হল, স্ত্রীকে ফিরে আসার সুযোগ করে দেওয়া। তাকে ক্ষমা করে দেওয়া; বরং প্রয়োজনে নারীর দুর্বলতার দিকে তাকিয়ে তার মন খুশি করে তাকে নিজের নিকটে আনার চেষ্টা করা। স্বামীর হক আদায় সম্পর্কে উপদেশ দেওয়া। যথাসম্ভব ধৈর্যধারণ করা এবং সুন্দর ব্যবহার করা। কেননা মহিলারা সৃষ্টিগতভাবেই দুর্বল। আর আল্ল¬াহ তাআলা স্বামীকে মহিলার মুরব্বী বানিয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন যাপন কর। যদি তাদেরকে অপছন্দ কর তবে হয়তো তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ যাতে আল্লাহ তাআলা অনেক কল্যাণ রেখেছেন।’ -সূরা নিসা ১৯
হাদীস শরীফে আছে, ‘কোনো মুমিন পুরুষ যেন কোনো মুমিন নারীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ না করে। যদি তার একটি অভ্যাস অপছন্দ হয়, তাহলে আরেকটি তো পছন্দ হতে পারে।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৬৯
অন্য হাদীসে আছে, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম তারাই যারা তাদের পরিবারের কাছে সর্বোত্তম এবং আমি আমার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম।’ -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৮৯৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৪৯৭৭
অন্য হাদীসে আছে, ‘নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড্ডি দ্বারা। তুমি যদি তাকে সোজা করতে যাও তবে ভেঙ্গে ফেলবে। তাই তার মন রক্ষা করে চল। তাহলেই একসাথে জীবন যাপন করতে পারবে।’ -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৪১৭৮
আরেক হাদীসে আছে, ‘যে তোমার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখ। তোমাকে যে বঞ্চিত করে তাকে দান কর। যে তোমার উপর জুলুম করে তাকে ক্ষমা কর।’ -মুসনাদে আহমাদ ৪/১৫৮
Sharable Link
আমি একজন গরীব পরিবারের ছেলে। আপনাদের দুআর বরকতে আল্লাহ পাক আমাকে হাফেজ বানিয়েছেন। আমি জানি যে, তারাবীহ পড়িয়ে টাকা নেওয়া জায়েয নেই। কিন্তু আমার পিতা না থাকায় এবং আর্থিক দুর্বলতার কারণে টাকার জন্য কিতাবখানায় পড়তে পারছি না। এখন জানার বিষয় হল, তারাবীর নামাযের টাকা নিয়ে লেখা-পড়া করতে পারব কি না? জানালে উপকৃত হব।
তারাবীহ পড়িয়ে টাকা নেওয়া যে নাজায়েয একথা তো আপনি নিজেই জানেন। আবার অনেক গরীব ছেলের রমজানে এধরনের আয়ের ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা কোনো না কোনোভাবে হয়েই যাচ্ছে। এ বিষয়টিও আপনার অজানা থাকার কথা নয়। সুতরাং নাজায়েয আয় থেকে মনকে ফিরিয়ে ফেলুন। নিজের দরদী উস্তাদগণকে বিষয়টি খুলে বলুন এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে পড়া-লেখা চালিয়ে যান। দেখবেন আল্লাহ তাআলা রাস্তা খুলে দেবেন।
Sharable Link-মুসনাদে আহমাদ ৩/৪২৮; শিফাউল আলীল রাসায়েলে ইবনে আবেদীন ১/১৭৮
আমি বর্তমানে মাদরাসায় পড়ি। মাদরাসায় পড়ার আগে পাখি শিকার করতাম। এখনও মাদরাসা ছুটির দিনগুলোতে মাঝে মধ্যে পাখি শিকার করি। জানার বিষয় হচ্ছে পাখি শিকার করা আমার জন্য ঠিক হচ্ছে কি না? এবং পাখি শিকার করে খাওয়া ঠিক কি না? জানালে উপকৃত হব।
ব্যক্তি মালিকাধীন নয় এমন হালাল পাখি শিকার করা এবং তা খাওয়া জায়েয কিন্তু যদি এ ধরনের পাখি শিকার করা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হয়ে থাকে তবে অবশ্যই তা থেকে বিরত থাকতে হবে।
Sharable Link-আলবাহরুর রায়েক ৮/২২০; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৬১-৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪১৭-৪১৮
কোনো ইসলামী ব্যাংক যদি জমির দলিল বন্ধকস্বরূপ নিয়ে ওই জমিতে ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাণ করে কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে বাড়িটি জমির মালিককে হস্তান্তর করে, তবে এটা বৈধ হবে কি না? উল্লেখ্য, বন্ধক নেওয়ার অর্থ হল, কিস্তি পরিশোধে অপারগ হলে জমির মালিকানা ব্যাংক নিয়েও নিতে পারে অথবা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজস্ব তত্ত্বাবধানে রেখে ভাড়া দিয়ে প্রাপ্য টাকা আদায় হওয়ার পর মালিককে পুনরায় হস্তান্তরও করতে পারে।
‘বাইয়ে মুআজ্জাল’ -বিনিয়োগের বিপরীতে বন্ধক গ্রহণ করা জায়েয আছে। তবে কোনো ব্যাংকের এ ধরনের বিনিয়োগ শরীয়তসম্মত কিনা তা কেবল সংশ্লিষ্ট চুক্তিপত্রের বিস্তারিত শর্তাবলি শরীয়তসিদ্ধ এবং বাস্তবে তা পলিত হয় কি না সে সর্ম্পকে অবগত হওয়ার পরই বলা সম্ভব।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ৫/২০৬-২০৭ আলবাহরুর রায়েক ৮/২৩২
আমি প্রায়ই নামাযের রাকাতসংখ্যা স্মরণ রাখতে পারি না। ফলে নামাযের মধ্যেই এমন পরিস্থিতির শিকার হই যে, আর কয় রাকাত পড়ব তা স্থির করতে পারি না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমার করণীয় কী? নামায কীভাবে শেষ করব?
নামাযে রাকাতসংখ্যা নিয়ে সংশয়ে পড়লে নিয়ম হল, যে কয় রাকাত পড়েছেন বলে প্রবল ধারণা হয় সেটার উপর ভিত্তি করে অবশিষ্ট নামায পড়বেন। অতঃপর নামায শেষে সাহুসিজদা করবেন। আর যদি কত রাকাত হয়েছে এ ব্যাপারে কোনো দিকেই প্রবল ধারণা না হয়, তাহলে সম্ভাব্য রাকাত সংখ্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সংখ্যাটি ধরে অবশিষ্ট নামায আদায় করবেন। তবে এ ক্ষেত্রে অবশিষ্ট নামাযের প্রত্যেক রাকাতের পরে বৈঠক করতে হবে এবং তাশাহহুদ পড়তে হবে। অতঃপর সাহু সিজদার মাধ্যমে নামায শেষ করতে হবে। উল্লেখ্য, নামাযের মধ্যে এ ধরনের সংশয় সাধারণত খুশু খুজুর অভাবে হয়ে থাকে। তাই খুশু খুজুর সাথে নামায আদায় করার চেষ্টা করা উচিত। এ ব্যাপারে কোনো আল্লাহওয়ালা বুযুর্গের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
Sharable Link-সহীহ মুসলিম ১/২১১; সুনানে আবুদাউদ ১/১৪৭; কিতাবুল আস্ল ১/২২৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২০; ফাতহুল কাদীর ১/৪৫২; তাতারখানিয়া ১/৭৪৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬৯-১৭০
আমরা জানি আল্লাহ ব্যতীত কাউকেই সিজদা করা হারাম। এখন যদি আমাদের সামনে মুসল্লীদের জুতা এবং মসজিদে অবস্থানকারীদের আসবাবপত্রে কোনো প্রাণীর ছবি থাকে তাহলে জুতা এবং প্রাণীর ছবিকে সিজদা করা হবে কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
নামাযীর সামনে স্পষ্ট দৃশ্যমান কোনো প্রাণীর ছবি থাকলে নামায মাকরূহ হয়ে যায়। ওই ছবি এক হাতের কম হলেও নামায মাকরূহ হবে। আর মুসল্লীদের সামনে জুতা-সেন্ডেল থাকলে কিংবা কোনো কিছুতে প্রাণীর ছবি থাকলে ওই বস্তু বা ছবিকে সিজদা করা হয় না। কেননা সিজদা হওয়ার জন্য যাকে সিজদা করা হচ্ছে তাকে উদ্দেশ্য করাও জরুরি। সুতরাং একথা বলা বাহুল্য যে, নামাযী আল্লাহ তাআলাকেই সিজদা করে থাকে। অন্য কিছুকে নয়। তাই নামাযীর সামনে কোনো কিছু থাকলেই নামাযী ওই বস্তুকে সিজদা করছে এধারণা করা যায় না।
Sharable Link-আলবাহরুর রায়েক ২/২৭; আদ্দুররুল মহুতার ১/৬৪৮; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/১০৭
আব্দুল করীম আব্দুর রহীমের সাথে চুক্তি করল যে, আমি আপনার নিকট থেকে দশ মণ চাল কিনে আবার আপনার কাছে বিক্রি করে দিব। আব্দুল্লাহ-এর একটি সমিতি আছে। উক্ত সমিতি থেকে আব্দুল্লাহ আব্দুর রহিমের কাছ থেকে চুক্তির দশ মণ চাল কিনে আব্দুল করিমের কাছে বাকিতে বিক্রি করল। আব্দুল করীম উক্ত চাল আব্দুর রাহিমের কাছে পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী বিক্রি করল। এটা সুদ হবে কিনা?
বি.দ্র. চুক্তির সময় আব্দুল্লাহ সঙ্গে ছিল না। তবে সে চুক্তি সর্ম্পকে জানে।
প্রশ্নে চুক্তিটির পূর্ণ বিবরণ দেওয়া হয়নি। প্রদত্ত বিবরণ থেকে উক্ত কারবারের উদ্দেশ্য বুঝা যায় যে, আব্দুল কারীম আব্দুল্লাহর সমিতি থেকে টাকা ঋণ নিতে চায়। আব্দুল্লাহ লাভ ছাড়া ঋণ দিবে না। এখন এই কারবারকে বৈধ রূপ দেওয়ার জন্য আব্দুর রহিমের সাথে চুক্তি করা হয়েছে। এই কারবারের সাথে জড়িত সকলেই খুব ভালভাবেই জানে যে, এতে কারোই বেচা-কেনা উদ্দেশ্য নয়। এ কারণেই তো কারবারের শেষে যার মাল তার কাছেই ফিরে আসে। এ ধরনের কারবার দ্বারা মূলত ঋণ আদান-প্রদান করে বাড়তি টাকা সঞ্চয়ই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। সুতরাং এটি প্রকারান্তরে সুদী কারবারেরই একটি প্রকার। বেচা-কেনার ছুতা অবলম্বন করলেও কারবারটি হালাল হবে না।
Sharable Link-রদ্দুল মুহতার ৫/২৭৩; ফাতহুল কাদীর ৬/৩২৩; আলবাহরুর রায়েক ৬/৩২৫; আননাহরুল ফায়েক ৩/৫৭৫
আমার এক ভাই কিছু দিন আগে ফোনে বিবাহ করেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফোনে বিবাহ সহীহ হবে কি? ফোনে বিবাহের মাসআলা প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব।
টেলিফোনের মাধ্যমে সংঘটিত আপনার ওই ভাইয়ের বিবাহ সহীহ হয়েছে কি না তা জানতে হলে বিবাহটি কীভাবে হয়েছিল তার বিবরণ জানা জরুরি।
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় শর্ত হল দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতি। সাক্ষীদ্বয়কে বিবাহের পুরো প্রক্রিয়াটি (ইজাব-কবুল) বিবাহের মজলিসে উপস্থিত থেকে শুনতে হয়। এ ক্ষেত্রে ছেলে বা ছেলের প্রতিনিধি এবং মেয়ে বা মেয়ের প্রতিনিধির কথা, একই সাক্ষীর একই স্থানে উপস্থিত থেকে শ্রবণ করা আবশ্যক। পাত্র-পাত্রী বা তাদের প্রতিনিধি দুই জায়গায় থেকে সরাসরি টেলিফোনে বিবাহের ইজাব-কবুল করলে বিবাহ সহীহ হয় না। এ ক্ষেত্রে ফোনের স্পিকার খুলে দিলে এবং উভয় প্রান্তে দুইজন করে স্বাক্ষী পাত্র-পাত্রীর কথা শুনলেও বিবাহ সংঘটিত হবে না। এ ধরনের বিবাহ সহীহ তরীকায় সম্পন্ন করতে চাইলে পাত্র বা পাত্রীর কোনো একজন ফোনে কিংবা অন্য কোনোভাবে তার পক্ষ থেকে বিবাহের কার্য সম্পাদনের জন্য কাউকে উকিল বা প্রতিনিধি মনোনিত করবে। অতঃপর উকিল বিবাহের মজলিসে হাজির হয়ে অন্তত দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ স্বাক্ষীর সম্মুখে অপর পক্ষের নিকট ওই ব্যক্তির বিবাহের প্রস্তাব করবে অথবা উপস্থিত পক্ষের প্রস্তাবে ওই ব্যক্তির পক্ষ থেকে কবুল করবে। যেমন আরিফের প্রবাসী ছেলে আব্দুল্লাহ রফিকের মেয়ে খাদিজার সাথে তার বিবাহ সম্পাদনের জন্য শফিকুল ইসলামকে উকিল নিয্ক্তু করবে। অতঃপর উকিল শফিক বিয়ের মজলিসে হাজির হয়ে পাত্রীর নিকট স্বাক্ষীদ্বয়ের সামনে বলবে, আমি এত টাকা মহরানার বিনিময়ে আরিফের ছেলে আব্দুল্লাহকে তোমার বিবাহে দিচ্ছি তুমি কি কবুল করলে? তখন পাত্রী “কবুল” বলবে। এতেই বিবাহ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আর যদি পাত্রীর অভিভাবকের সামনে প্রস্তাব করতে হয় তাহলে বলবে আমি আরিফের ছেলে আব্দুল্লাহকে এত দেন মহরের পরিবর্তে রফিকের মেয়ে খাদিজার সাথে বিবাহের প্রস্তাব করছি, তখন অভিভাবক বলবে, আমি রফিকের মেয়ে খাদিজার পক্ষ থেকে কবুল করলাম।
Sharable Link-আলমুহীতুল বুরহানী ৪/২৪, ৩৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৪, ২১-২৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৮-৮৯
আমার দাদা দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থতায় ভুগছেন। সব সময় তাকে ওষুধ সেবন করতে হয় এবং তিনি একেবারেই দুর্বল। একাকী হাঁটতে পারেন না। কয়েক বছর যাবৎ আমরা তার পক্ষ থেকে রোযা রাখার জন্য একজন সাবালক, দরিদ্র ব্যক্তিকে নিয়োগ করেছি, যে পুরো রমজান আমাদের ঘরে থেকে রোযা রাখে। এখন কেউ কেউ বলছেন, দরিদ্র লোকটির রোযা কে রাখবে? এ অবস্থায় আমার দাদার রোযার বিধান কী? জানিয়ে চিন্ত-াম্ক্তু করবেন।
আপনার দাদার রোযার জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তা শরীয়তসম্মত হয়নি। এতে আপনার দাদার রোযা আদায় হয়নি। কাউকে দিয়ে রোযা রাখানো এবং এর বিনিমিয়ে তাকে পারিশ্রমিক হিসাবে কিছু দেওয়া সবই নাজায়েয। এতে যার পক্ষ থেকে রোযা রাখানো হয় তার ফরযও আদায় হয় না।
কেউ যদি রোযা রাখার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে তাহলে শরীয়তের নির্দেশ হল, প্রতিটি রোযার পরিবর্তে একজন ব্যক্তির পরিমিত পরিমাণে পূর্ণ দু‘বেলার খাদ্য দান মিসকীনকে করা। এ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে এসেছে:
وَ عَلَی الَّذِیْنَ یُطِیْقُوْنَهٗ فِدْیَةٌ طَعَامُ مِسْكِیْنٍ
অর্থ, আর যারা রোযা রাখতে সক্ষম নয় তারা রোযার পরিবর্তে ফিদইয়া দিবে। অর্থাৎ মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। -সূরা বাকারা ১৮৪
অতএব ওইভাবে অন্যকে দিয়ে রোযা রাখানোর দ্বারা আপনার দাদার রোযা আদায় হয়নি এবং ফিদইয়া বা কাফফারাও হয়নি। তার রোযাগুলোর কাফফারা নতুন করে আদায় করে দিতে হবে। আর ওই লোকটি আপনার দাদার পক্ষ থেকে যেই রোযাগুলো রেখেছে সেগুলো দ্বারা কেবল তার নিজের রোযাই আদায় হয়েছে।
Sharable Link-আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬৫; রদ্দুল মুহতার ২/৪২৬
আমি চকবাজারের একজন পাইকারী ব্যবসায়ী। মাসাআলা জেনেছি যে, আমার পণ্য যত বেশি মূল্যে ইচ্ছা বিক্রি করতে পারি। তবে পূর্ণ মূল্যই পণ্যের বিনিমিয়ে হতে হবে; সুদী পদ্ধতিতে নয়। এখন আমার প্রশ্ন একই পণ্য বেশি মেয়াদে বিক্রির কারণে মূল্য বেশি নিলে অতিরিক্ত মূল্য তো সময় বৃদ্ধির কারণে হল। তাই শুধু সময় বৃদ্ধির কারণে এই অতিরিক্ত মূল্য গ্রহণ করা বৈধ কিনা? এটি কি সুদ নয়?
কোনো পণ্যের বাকি অথবা কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য মূল্য নগদ মূল্য অপেক্ষা কিছু বেশি হওয়ার অবকাশ রয়েছে। ঠিক যেমনিভাবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সম্মতি ও সন্তুষ্টি থাকা অবস্থায় নগদের ক্ষেত্রেও বাজারমূল্য থেকে কিছু অতিরিক্ত দাম নেওয়া জায়েয আছে। এভাবে অতিরিক্ত মূল্যগ্রহণ সুদের আওতায় পড়ে না। অবশ্য পাওনা টাকা সময়মত আদায় না হওয়ার কারণে অতিরিক্ত টাকা দাবি করলে তা হবে সুদ। তাই বাকি বা কিস্তিতে বিক্রির ক্ষেত্রে দাম আদায়ের তারিখ, মূল্য কেনা-বেচার সময়েই নির্ধারিত হতে হবে। যেমন কেউ নগদে একটি বস্তু ১০ টাকায় এবং বাকিতে ১২ টাকায় বিক্রি করে। এখন যে বাকিতে নিতে চায় সে খরিদের সময়েই বলে নিবে যে, আমি বাকিতে ১২ টাকায় তা গ্রহণ করলাম। মনে রাখতে হবে, বিক্রি সম্পন্ন হওয়ার পর দেরিতে মূল্য আদায়ের কারণে দাম বৃদ্ধি করা যাবে না।
Sharable Link-হেদায়া ২/৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৬/১১৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১৩৬
যিলহজ্বের পাঁচদিন প্রত্যেক নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব। আমি জানতে চাই যে, ওই দিনগুলোতে যদি পিছনের কাযা নামায আদায় করি তাহলে তখন তাকবীর পড়তে হবে কি না? তেমনিভাবে ওই দিনগুলোর ছুটে যাওয়া নামায আদায় করার সময় তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে কি না? এ ব্যাপারে আমি কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করেছি, কিন্তু কোনো সন্তোষজনক উত্তর পাইনি।
বিগত দিনের কাযা নামায যিলহজ্বের ওই পাঁচদিনে আদায় করলে তখন তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে না। আর ওই পাঁচ দিনে কোনো নামায যদি কাযা হয়ে যায় এবং তা ওই পাঁচ দিনের মধ্যেই আদায় করা হয় তাহলে নামাযান্তে তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে। পক্ষান্তরে ওই দিনগুলোর কাযা হওয়া কোনো নামায পরবর্তীতে আদায় করলে তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে না।
Sharable Link-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২১৬; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৭৩; রদ্দুল মুহতার ২/১৭৯; ফাতহুল কাদীর ২/৫৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২৬৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৬
স্থানান্তরযোগ্য মাল দেখে-শুনে ক্রয় করার পর হস্তগত হওয়ার আগে বিক্রি করলে জায়েয হবে কি না শরীয়তের বিধান জানতে চাই।
ক্রয়ের আগে পণ্য দেখা আর খরিদ করার পর পণ্য হস্তগত করা এক কথা নয়। তাই কোনো পণ্য ক্রয় করার পর প্রচলিত নিয়মে তা হস্তগত করার আগে পুনরায় তা বিক্রি করা জায়েয নয়। অবশ্য ক্রেতা স্বয়ং বুঝে না নিয়ে প্রতিনিধির মাধ্যমেও হস্তগত করতে পারে।
Sharable Link-সহীহ বুখারী ১/২৮৬; সহীহ মুসলিম ২/৫; আলবাহরুর রায়েক ৬/১১৬; ফাতহুল কাদীর ৬/১৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৯৪
আমি যদি কোনো জিনিস ১০ টাকায় ক্রয় করে সময় সুযোগে ওই জিনিসটা ১০০ টাকায় বিক্রি করি তাহলে জায়েয হবে কি?
কোনো পণ্যের বাজারদর পূর্বের মূল্যের চেয়ে বৃদ্ধি পেলে তা বাজারদর অনুযায়ী বর্ধিত মূল্যে বিক্রয় করা জায়েয। যেমন, কেউ ৩ বছর আগে ১ ভরি স্বর্ণ কিনেছে ৬ হাজার টাকায় এখন বাজারদর অনুযায়ী তা বিক্রি করেছে ১৭,০০০ টাকায়। এমনিভাবে কেউ কয়েক বছর পূর্বে ১ কাঠা জমি কিনেছে ১ লক্ষ টাকায়। এখন তা বিক্রি করেছে ১০ লক্ষ টাকায়। কিন্তু খরিদদার ব্যক্তি পণ্যের গুণ ও বাজারদর সম্পর্কে অবহিত না হওয়ায় তাকে ধোঁকা দিয়ে ১০ টাকার পণ্য ১০০ টাকা বা অযৌক্তিক মূল্যে বিক্রি করা নাজায়েয। এতে বিক্রেতা গুনাহগার হবে। এ গুনাহ থেকে বাঁচতে হলে ক্রেতাকে পুরো মূল্য ফেরত দিয়ে পণ্য ফেরত নিয়ে নিবে কিংবা বাজারের স্বাভাবিক মূল্যের অতিরিক্ত অংশ ক্রেতাকে ফেরত দিতে হবে। এছাড়া মার্কেটে হঠাৎ সংকট সৃষ্টি হওয়ার কারণে স্বাভাবিক দামের চেয়ে অল্প কিছু বেশি নেওয়ার অবকাশ আছে। কিন্তু এ সংকটকে সুযোগ হিসাবে নিয়ে অযৌক্তিক মূল্য নেওয়া নৈতিকতা ও শরীয়তের নির্দেশনা পরিপন্থী কাজ।
Sharable Link-মুসনাদে আহমাদ ৫/৫০৭; সুনানে আবু দাউদ ৪৮৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/২৮; শরহুন নুকায়া ২/২৩৩; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৩১২-৩১৩; ফাতাওয়া মুআসিরা, ইউসুফ কারযাভী ২/৪২৪-৪৪৩; মাজাল্লাতুল মাজমায়িল ফিকহিল ইসলামী ৪/২৮৮৭
অনেকে বলে, কালামুল্লাহ হল ৯০ হাজার। ৩০ হাজার জাহেরী আর বাকি ৬০ হাজার বাতেনী। তারা বলে বাতেনী ৬০ হাজারের খবর বর্তমান আলেমরা জানেন না। একথা কতটুকু সত্য জানতে আগ্রহী। তাদের কথার প্রমাণ কুরআন-হাদীসে আছে কি? যদি থাকে আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি না থাকে তাহলে কোথা থেকে একথার জন্ম হয়েছে জানতে ইচ্ছুক। অনুগ্রহ করে জানিয়ে আমাদের সঠিক পথের দিশা দিবেন বলে আশা করি।
এখানে যে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করা হয়েছে তা একশ্রেণীর বেদ্বীন মানবরূপী শয়তান ফকীরদের ভাষ্য। তারা বলে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একমাত্র আলী রা. কে গোপনে ষাট হাজার কালাম শিক্ষা দিয়েছেন। আর হযরত আলী রা. হতে সিনাপম্পরায় তা এ ফকীরদের নিকট পৌঁছেছে, যা থেকে আলেমগণ বঞ্চিত। এ দাবি যে ঈমান পরিপন্থী তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। কারণ, প্রথমত এতে আল্লাহ তাআলার উপর মিথ্যারোপ করা হয় যে, তিনি মানুষকে দু’প্রকার শরীয়ত দিয়েছেন। একটি হল ত্রিশ হাজার কালামবিশিষ্ট শরীয়ত। অন্যটি হল, ষাট হাজার কালামবিশিষ্ট। আর উভয় শরীয়ত পরস্পর বিরোধী। এক শরীয়তে একটি বস্তু হালাল, অন্য শরীয়তে সে একই বস্তু হারাম। এরূপ পরস্পর বিরোধী কাজ, যা কোনো সৃষ্টিজীবের বেলায়ও নিকৃষ্ট, সেটিকে তারা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শানে চালিয়ে দিয়েছে। এর ফলে তারা ঈমানের সর্বপ্রথম রুকন ঈমান বিল্লাহ তথা আল্লাহ তাআলার প্রতি বিশ্বাসের গণ্ডি হতে বের হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত উক্ত দাবিতে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর মিথ্যারোপ করা হয়। তাঁর উপর এ অপবাদ আসে যে, তিনি দ্বীনের অধিকাংশ মৌলিক কথা যা সর্বস্তরের মুসলমানদের জানা জরুরি ছিল তা যথাযথ পৌঁছাননি। শুধু একজনকে কানে কানে বলে গেছেন। আর অন্যদেরকে তার বিপরীত বলে গেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যাপারে যে ব্যক্তির এরূপ ধারণা থাকবে, তার যে রাসূলের প্রতি ঈমান নেই তা বলাই বাহুল্য।
তৃতীয়ত “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলীকে দ্বীনের বিশেষ বিশেষ এমন কথা গোপনে বলে গেছেন যা অন্যদেরকে বলে যাননি।” এরূপ আকীদা মূলত সাবায়ী চক্রের ছিল। যারা উম্মতের সর্ববাদী সম্মত কাফের। হযরত আলী রা.-এর যুগে এ চক্র তাদের উক্ত আকীদা প্রচার করলে তখনই অন্যান্য লোকেরা সরাসরি হযরত আলী রা.-এর কাছে বিষয়টি তদন্ত করেন। তখন তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় তা অস্বীকার করেছেন। এ সর্ম্পকে অসংখ্য সহীহ রেওয়ায়াত বিদ্যমান রয়েছে। এখানে একটি মাত্র রেওয়ায়াত উল্লেখ করা হল। এক ব্যক্তি হযরত আলী রা. কে জিজ্ঞেস করল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মানুষের অগোচরে আপনাকে কিছু বলে গেছেন? আলী রা. এ কথা শুনে রাগান্বিত হয়ে গেলেন এবং তার মুখমণ্ডল লাল হয়ে গেল। অতঃপর বললেন,
مَا كَانَ يُسِرُّ إِلَيَّ شَيْئًا دُونَ النَّاسِ غَيْرَ أَنَّهُ حَدَّثَنِي بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ وَأَنَا وَهُوَ فِي الْبَيْتِ فَقَالَ لَعَنَ اللهُ مَنْ لَعَنَ وَالِدَهُ، وَلَعَنَ اللهُ مَنْ ذَبَحَ لِغَيْرِ اللهِ، وَلَعَنَ اللهُ مَنْ آوَى مُحْدِثًا، وَلَعَنَ اللهُ مَنْ غَيَّرَ مَنَارَ الْأَرْضِ.
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের আগোচরে আমাকে কিছুই বলে যাননি। তবে আমাকে তিনি চারটি কথা বলেছেন। তখন আমি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়েই ঘরের ভিতরে ছিলাম। তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার পিতাকে লানত করে আল্লাহ তাআলা তাকে লানত করুন। যে ব্যাক্তি গাইরুল্লাহর নামে জবাই করে আল্লাহ তাআলা তার উপর লানত করুন। যে ব্যক্তি বিদআতীকে সমর্থন করে আল্লাহ তাআলা তার উপর লানত করুন। যে ব্যক্তি জমির চিহ্ন (সীমানা) এদিক সেদিক করে আল্লাহ তাআলা তার উপর লানত করুন।” ¬সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৪২২
অতএব প্রশ্নোক্ত দাবির বাতুলতা ও মিথ্যা হওয়া দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট। আল্লাহ তাআলা সকলকে এ কুফরী ধারণা থেকে হেফাজত করুন আমীন।
Sharable Link
আমি ইফতেখার আলম নামক এক ব্যবসায়ীর সাথে এ মর্মে চুক্তি করি যে, আমি তাকে কিছু মেশিন ভাড়া দিব। প্রতি ৫টি মেশিনের মাসিক ভাড়া ৩ হাজার টাকা করে দিবে। পরবর্তীতে আমি ওই ব্যক্তিকে ২০টি মেশিনের মূল্য বাবদ কয়েক কিস্তিতে মোট ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করি। ওই ব্যক্তি সে টাকা দিয়ে মেশিন ক্রয় করে যথারীতি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত সে কখনো কোনো ভাড়া পরিশোধ করেনি। এখন শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বিগত দিনের ভাড়া পাই কি না? তার সাথে কারবার নিস্পত্তি করতে চাইলে সেটা কীভাবে করতে হবে? বিস্তারিত জানালে ভাল হয়।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনাদের ওই ভাড়া চুক্তিটি শরীয়তসম্মত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে ভাড়ার হিসাব ধর্তব্য হবে মেশিন কিনে তা ব্যবহারের উপযোগী হওয়ার পর থেকে। অর্থাৎ ইফতেখার আলম সাহেব যেদিন ভাড়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন সেদিন কিংবা টাকা গ্রহণের দিন থেকে ভাড়ার হিসাব হবে না; বরং মেশিন ব্যবহারের উপযোগী হয়ে তার কাছে পৌঁছার পর থেকে এটি কার্যকরী হবে। মনে রাখতে হবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ না করা মারাত্মক গুনাহ। এতে ওয়াদা খেলাফের গুনাহের সাথে সাথে বান্দার হক নষ্ট করার জুলুমও রয়েছে। তাই অবিলম্বে সমুদয় ভাড়া পরিশোধ করে দেওয়া জরুরি।
বর্তমানে মেশিনের মালিক কিংবা ভাড়াটে ভাড়াচুক্তি নিস্পত্তি করতে চাইলে চুক্তিনামার শর্তানুযায়ী অথবা উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে তা করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে সকল মেশিন যথাযথভাবে মালিককে ফেরত দিতে হবে। আর মেশিনের মালিক রাজি হলে উভয়ের সম্মতিতে নির্ধারিত মূল্যে ভাড়াটে ওই মেশিনগুলো খরিদ করে রেখেও দিতে পারে।
Sharable Link-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫-৬; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৯৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১০৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ২/১৪; বুহুস ১/২১২
বর্তমান মার্কেটে আযান, সালাম, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদির আওয়াজ সম্বলিত ঘড়ি, কলিংবেল ও মোবাইল সেট পাওয়া যায়। এগুলোতে ঘুম থেকে জাগানো, ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থণা এবং রিংটোন হিসাবে আযান, সালাম, তিলাওয়াত ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এখন আমার প্রশ্ন হল, এ ব্যাপারে শরয়ী কোনো বাধা আছে কি না?
কুরআন তিলাওয়াত, আল্লাহ তাআলার যিকির এবং আযান-এসব কিছুই অত্যন্ত মর্যাদা ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে রাজি খুশি করার উদ্দেশ্যেই যথাযথ আদব রক্ষা করে এগুলোর পঠন ও শ্রবণ এবং এগুলোর উপর আমল করা জরুরি। তবেই এগুলোর মর্যাদা রক্ষা হবে।
আগন্তুকের সংবাদের জন্য কলিংবেলে আল্লাহর যিকিরের ব্যবহার, ঘড়ির ঘণ্টা ও কোনো কাজের জন্য এলার্ম হিসাবে যিকির বা আযানের ব্যবহার এবং মোবাইলের রিংটোন হিসাবে যিকির বা কুরআন তিলাওয়াতের ব্যবহার মূলত আল্লাহ তাআলার যিকির, কুরআন ও আযানকে অপাত্রে ব্যবহারের মাধ্যমে এগুলোর প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের শামিল। দুঃখজনক হল, অনেকে এসব করে থাকেন উল্টো সওয়াব বা নেকী পাওয়ার জন্য। অথচ শরীয়তে আযান, তিলাওয়াত ও যিকির ইত্যাদিকে ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে। তাই এসব ক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহার থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
প্রকাশ থাকে যে, এতে উক্ত খারাবী ছাড়া আরও অনেক খারাবী রয়েছে। যেমন-
ক. ঘড়ির এলার্মের জন্য আযানের প্রথম বাক্য আল্লাহুআকবার বেজে উঠলে যিকিরের প্রতি ভ্রƒক্ষেপ না করেই এলার্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়। চাই তা “আল্লাহু”র ‘আল’ এ হোক বা “আকবার”-এর ‘আক’এ হোক। অথচ এতে যিকিরের অর্থই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। একইভাবে মোবাইলে রিংটোন হিসাবে যেই আয়াত সেট করা হয়েছে সে আয়াতের যে কোনো অক্ষরে গিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে আয়াতের অর্থ বিকৃত হলেও সেদিকে ভ্রƒক্ষেপ করা হয় না।
খ. মোবাইলে ইনকামিং কলে আয়াত বেজে উঠলে ফোন রিসিভ করতে ব্যস্ত হয়ে যায়। ফলে কুরআন শোনার আদব রক্ষা করে শোনা হয় না। যা এ সংক্রান্ত হুকুমের সুস্পষ্ট লংঘন।
গ. মোবাইল নিয়ে টয়লেটে গেলে সেখানে কল আসলে অপবিত্র স্থানে আল্লাহ তাআলার পবিত্র নাম ও কুরআনের আয়াত বেজে উঠে।
মোট কথা, এ ধরনের ব্যবহারের কারণে আল্লাহ তাআলার পবিত্র নাম ও তাঁর কালামে পাকের অসম্মানও করা হয়ে থাকে। অতএব এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া আবশ্যক।
Sharable Link-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩১৫; আলমুগনী ৪/৪৮২; আততিবইয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন (লিননববী) ৪৬; হককুত তিলাওয়াহ (হুসাইনী শাইখ উসমান) ৪০১; আলাতে জাদীদাহ কী শরয়ী আহকাম ১৭১; রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮
যে কামরায় শিশু ভূমিষ্ঠ হয় সেখানে নাপাকী থাকে এবং শিশুর মা অবস্থান করে। শুনেছি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ওই স্থান নাকি ৪০ দিন পর্যন্ত নাপাক থাকে। এ কথা কি ঠিক? ওই কামরায় প্রলেপ দেওয়ার আগে কি নামায পড়া যাবে? জানালে উপকৃত হব।
‘সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার ঘর বা স্থান ৪০ দিন পর্যন্ত নাপাক থাকে’ এ ধারণা ভুল। ঘরের যে অংশে নাপাক লেগে রয়েছে ওই অংশ পবিত্র করার আগে সেখানে নামায পড়া যাবে না। এছাড়া ঘরের অন্যস্থান, যেখানে কোনো নাপাকী লেগে নেই সেখানে নামায আদায় করতে অসুবিধা নেই। তদ্রƒপ নাপাক স্থানকে পবিত্র করে নিলে সেখানেও নামায আদায় করা যাবে। এ জন্য কালক্ষেপন করতে হবে না।
আপনার প্রশ্নের উত্তরের পর আরেকটি প্রয়োজনীয় কথা হল, হাদীস শরীফে মুসলমানদের নামের ব্যাপারে খুব সুন্দর নীতিমালা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাল নাম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং অসুন্দর নাম পরিবর্তন করে দিতেন। এদিকে আমাদের সকলেরই দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
মনে রাখবেন, কিয়ামতের দিন কিন্তু সকলকে তার নাম ধরেই আল্লাহর দরবারে ডাকা হবে।
Sharable Link
হযরত ইবরাহীম খলীল আ. এর সাহবেজাদার মধ্যে আমরা সাধারণত হযরত ইসমাঈল আ. ও হযরত ইসহাক আ. এর নামই জানি। ইবরাহীম আ. এর কি আরও কোনো পুত্র সন্তান ছিল? থাকলে তাদের নাম কী?
কোনো কোনো ঐতিহাসিক বর্ণনায় ইসমাঈল আ. ও ইসহাক আ. ছাড়াও ইবরাহীম আ. -এর আরও ১১ জন সাহেবজাদা ছিলেন বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এসব ঐতিহাসিক বর্ণনায় তাদের নামের ব্যাপারে যথেষ্ট মতপার্থক্য রয়েছে। তাদের নাম হল, ১. মাদয়ান, ২. যামরান, ৩. সারখ (সারজ), ৪. নিকশান (বিকশান), ৫. নাশক, ৬. নামোল্লেখ নেই, ৭. কীসান, ৮. সুরাজ, ৯. উমাইম, ১০. লুতান ও ১১. নাফেস।
Sharable Link-আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ১/২৫৫-২৫৬; আলকামিল ফিত তারিখ ১/১২৩; আররাওযুল উনুফ ফী শরহি সীরাতি ইবনে হিশাম ১/৮৪-৮৫
আশারা মুবাশশার বলতে কাদেরকে বোঝানো হয়েছে? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মাত্র এই ১০ জনকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন? তবে এই ১০ জন এই বিশেষণে প্রসিদ্ধ হওয়ার কারণ কী?
আশারা মুবাশশারা বলতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যবান মুবারক থেকে একই সাথে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন সাহাবায়ে কেরামকে বোঝানো হয়। তাঁরা হলেন ১. আবু বকর সিদ্দীক রা., ২. উমর ইবনুল খাত্তাব রা., ৩. উসমান ইবনে আফফান রা., ৪. আলী ইবনে আবী তালিব রা., ৫. ত্বলহা রা., ৬. যুবায়ের রা., ৭. আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রা., ৮. সাআদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রা., ৯. সাঈদ ইবনে যায়েদ রা., ১০. আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ রা.। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু এ দশজনকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেননি; বরং তিনি অনেক সাহাবায়ে কেরামকে ভিন্ন ভিন্নভাবে তাঁদের জীবদ্দশায় জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়েছেন। তবে এই দশজনের জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান একই সাথে হওয়ায় তাঁরাই আশারায়ে মুবাশ্শারা তথা সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ ব্যক্তি নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন।
Sharable Link-জামে তিরমিযী ২/২১৫ হাদীস ৩৭৪৭; মিরকাতুল মাফাতীহ ১১/৩৫৯; ফয়যুল কাদীর ১/৯০, হাদীস ৭৩৬; তুহফাতুল আহওয়াযী ১০/১৭১, হাদীস ৩৯৯৪
লোকমুখে প্রসিদ্ধ আছে যে, হযরত শীছ আ. জান্নাতের হুরকে বিয়ে করেছেন। কথাটি শুনতে যদিও অবিশ্বাস্য মনে হয় কিন্তু নবীদের অনেক অলৌকিক ঘটনা রয়েছে। তাই এ ব্যাপারটির বাস্তবতা সম্পর্কে জানিয়ে উপকৃত করবেন।
কথাটির কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। ইতিহাসে তো বরং হযরত শীছ আ. ‘মিশান’ নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন বলে পাওয়া যায়। সে ছিল আদমসন্তান।
Sharable Link-আলকামেল ১/৪৮