তালহা বিন মাসউদ - দোহার, ঢাকা

৬০৯৯. Question

এক বছর আগে আমি আমার ভাইকে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে বলি, এই টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করো। যা লাভ হবে তার অর্ধেক আমার আর অর্ধেক তোমার। এখন সে নিজে ঐ ব্যবসায় ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। হুযুরের কাছে জানতে চাই, এই ৫০ হাজার টাকার লাভ কি আমাদের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বণ্টিত হবে, না অন্য কোনো হারে বণ্টিত হবে? সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

মুযারাবা অর্থাৎ একজনের পুঁজি আরেকজনের শ্রম কারবারে শ্রমদাতা বা ব্যবসা পরিচালনাকারী পুঁজিদাতার সম্মতি সাপেক্ষে নিজের টাকাও ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারে। আর এক্ষেত্রে লাভ বণ্টনের নিয়ম হল, শ্রমদাতা বা ব্যবসা পরিচালনাকারী (মুযারিব) নিজের বিনিয়োগকৃত অংশের পুরো খরচ তার নিজের উপর থাকবে এবং এর লাভও সে এককভাবে পাবে। সেই অংশের লাভে পুঁজিদাতার কোনো অংশ থাকবে না।

সুতরাং আপনার ভাইয়ের ৫০ হাজার টাকার লাভ পুরোটাই সে পাবে। আর আপনার বিনিয়োগকৃত ২ লক্ষ টাকার লাভ আপনি ও আপনার ভাইয়ের মাঝে চুক্তি অনুযায়ী বণ্টিত হবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ২২/৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৪১৩; মাজাল্লাতুল আাহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা : ১৪১৭২; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৪/৩৪৯৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ শামসুল আলম - আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর

৬১০০. Question

গত রোযার ঈদে আমাদের এলাকায় চার-পাঁচ জন লোক মিলে কয়েকটি গরু যবাই করে। তারা গরু কেনার পর এলাকার যারা ঐ গরুর গোশত নিতে আগ্রহী তাদের অনেকের থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে নেয়। আবার কারো থেকে শুধু গোশত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি নেয়। সে সময় তারা এতটুকু বলে যে, কোন্ গরুর দাম কত, তা কত ভাগ করা হবে এবং প্রতি ভাগে তারা কত দাম দেবে। প্রতি ভাগে কী পরিমাণ গোশত হবে- অনুমান করে এর একটি ধারণাও দেয়।

মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই যে, এভাবে অগ্রিম টাকা নিয়ে গোশত বিক্রি করা বৈধ হবে কি?

Answer

প্রশ্নে বর্ণিত পদ্ধতিতে অগ্রিম টাকা নিয়ে পরবর্তীতে গোশত দেওয়া জায়েয আছে। এক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় সংঘটিত হবে মূলত গোশত প্রদানের সময় ক্রেতার বুঝে নেওয়ার মাধ্যমে। এর আগে বিক্রেতারা যে টাকা সংগ্রহ করেছে তা বিক্রির ওয়াদা হিসাবে ধর্তব্য হবে।

-ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ৩/১৪৯ফাতাওয়া খানিয়া ২/১১৬; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৭৪; রদ্দুল মুহতার ৪/৫১৬

Sharable Link

ফয়জান ইকবাল - বিসিক, গোপালগঞ্জ

৬১০১. Question

ভিক্ষুকরা ঘরের দরজায় এসে সালাম দিয়ে থাকে। আবার রাস্তা-ঘাটেও তারা ভিক্ষা করার সময় সাধারণ মানুষদেরকে সালাম দিয়ে থাকে। জানার বিষয়, ভিক্ষুকদের এই সালামের জবাব দেওয়া কি ওয়াজিব? বিষয়টি জানতে চাই।

Answer

সাধারণত ভিক্ষুকরা ভিক্ষা করার সময় মানুষদেরকে সালাম দেয় মূলত তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যেই; সালাম দেওয়া মূল উদ্দেশ্য থাকে না। তাই এমনটি মনে হলে সেই সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব নয়। কিন্তু কখনো যদি মনে হয় যে, সে বাস্তবে মন থেকে সালাম দিয়েছে তাহলে সেক্ষেত্রে তার সালামেরও জবাব দিতে হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৩; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৭২; আলইখতিয়ার ৪/১৪৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১৭; ফতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/৩৫৪; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২০৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ এহসানুল হক - নোয়াখালী

৬১০২. Question

কয়েকদিন আগে আমাদের গ্রামের বাড়ীর এক মহিলা গর্ভবতী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার গর্ভে নয় মাসের সন্তান ছিল। মৃত্যুবরণ করার পর তার পেটের ভেতর নড়াচরা দেখে ধারণা করা হয় তার  গর্ভের সন্তানটি এখনো জীবিত আছে। তখন তাকে দ্রুত অপারেশন করা হয়। বাচ্চা বের করে দেখা যায় বাস্তবেই বাচ্চাটি জীবিত। জানার বিষয় হল, মৃত মহিলাটিকে এভাবে অপারেশন করা কি জায়েয হয়েছে? এ সময় শরীয়তের বিধান কী ছিল?

Answer

হাঁ, উক্ত অবস্থায় মৃত মহিলাকে অপারেশন করে বাচ্চা বের করা জায়েয হয়েছে। কেননা এমন অবস্থায় গর্ভস্থ সন্তানকে জীবিত বের করা সম্ভব হলে দ্রুত অপারেশন করে বের করে আনাই বিধান।

-তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৩৫৪; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/২৪৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮৮ফাতহুল কাদীর ২/১০২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫৭আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৮

Sharable Link

সালমান আযীয - ফুলগাজী, ফেনী

৬১০৩. Question

ঈদ, বিবাহ-শাদী ইত্যাদি বিভিন্ন সময়ে দেখা যায় অনেক মহিলা নিজের হাতে মেহেদী লাগানোর সময় নাবালেগ ছেলেদের হাতেও মেহেদী লাগিয়ে দেয়। জানতে চাই, এ কাজটি কি জায়েয আছে?

Answer

নাবালেগ ছেলেদের হাতে-পায়েও মেহেদী লাগানো নিষিদ্ধ। কারণ, হাতে-পায়ে মেহেদী লাগানো নারীদের সাজ। নারীদের সাজ গ্রহণ করা বালেগ পুরুষের জন্য যেমন নিষেধ, তেমনি নাবালেগ ছেলেদেরকেও নারীদের সাজে সাজানো নিষেধ। তাই নাবালেগ ছেলেদেরকে মেহেদী লাগিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৮৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২১৫; তাকমিলাতুল বাহরির রায়েক ৮/১৮৩; জামিউ আহকামিস সিগার ১/২১৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২        

Sharable Link

সাঈদ আহমাদ - নওগাঁ

৬১০৪. Question

ক. আমি একটি কলেজে শিক্ষকতা করি। কলেজের অনেক হিন্দু ছাত্র আমাকে সালাম দিয়ে থাকে। আমি তাদের সালামের উত্তর দিতে পারব কি না?

খ. আমি কখনো কখনো নিম্নস্বরে সালামের উত্তর দিয়ে থাকি। একবার একজন বলল যে, সালামের উত্তর  সালামদাতাকে শুনিয়ে দিতে হয়। অন্যথায় উত্তর আদায় হয় না। এখন জানতে চাই, উক্ত ব্যক্তির কথা সঠিক কি না?

Answer

ক. কোনো হিন্দু বা অমুসলিম সালাম দিলে শুধু وعليكم বলে উত্তর দিতে পারবেন। এর অতিরিক্ত পূর্ণ সালাম বলা যাবে না।

খ. হাঁ, ওই ব্যক্তির কথা সঠিক। সালামের উত্তর সালামদাতাকে শুনিয়ে দেওয়া সম্ভব হলে তাকে শুনিয়েই উত্তর দিতে হবে। অন্যথায় ওয়াজিব আদায় হবে না।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৬২৫৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৩৪; আলইখতিয়ার ৪/১৪৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়েখ, পৃ. ৭০২; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/৩৫৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১

Sharable Link