খালেদ হাসান - ৪৬৬৮

হবিগঞ্জ, সিলেট. Question

একদিন আমি আসরের নামাযে মাসবুক হই। ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর বাকি নামায আদায় করতে গিয়ে কত রাকাত পাইনি তা নিয়ে সন্দেহ হয়। পরে পাশের মাসবুক ব্যক্তি, যে আমার সাথেই নামাযে শরীক হয়েছিল- তাকে দেখে দেখে নামায আদায় করে নিয়েছি। এভাবে দেখে দেখে নামায আদায় করাতে কি কোনো সমস্যা হয়েছে?

Answer

আপনার উক্ত নামায সহীহ হয়েছে। ছুটে যাওয়া রাকাত সংখ্যা ভুলে গেলে পাশের মাসবুক ব্যক্তির প্রতি খেয়াল করে নিজের ছুটে যাওয়া রাকাত সংখ্যা স্মরণ করে নামায আদায় করতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে নামাযে আরো মনোযোগী হওয়া উচিত। যাতে রাকাত সংখ্যা ভুলে যাওয়ার মত বিষয়টি বারবার না ঘটে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৪; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/৭২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৯৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬৩; রদ্দুল মুহতার ১/৫৯

Sharable Link

হাসসান নাহিদ - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

৪৬৫৮. Question

আমার পা শুষ্ক হওয়ার কারণে সাধারণত আমি অযু শুরু করার পূর্বে পা ভিজিয়ে নেই। এতে অযুর শেষে আমার পা ধৌত করতে সুবিধা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত অনেকেই আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেছে যে, আপনি এমনটি করেন কেন? এতে তো অযুর তারতীব রক্ষা হয় না। পা তো অযুর শেষে ধৌত করতে হয়।

মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই, পায়ের শুষ্কতার কারণে আগে পা ভিজিয়ে নিলে কি অযুর তারতীব পরিবর্তন হয়ে যায়? আর এতে কি কোনো অসুবিধা আছে?

Answer

পা শুষ্ক থাকলে তা ধোয়ার সময় কিছু অংশ বাদ পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে এ কারণে কেউ যদি অযুর পূর্বে পা ভিজিয়ে নেয় তাতে কোনো অসুবিধা নেই এবং এতে অযুর তারতীবও ভঙ্গ হয় না। কেননা এক্ষেত্রে সে তো পা ধুচ্ছে পরেই। শুরুতে পা ভিজিয়ে নিচ্ছে শুধু এ জন্য যে, পায়ের শুষ্ক জায়াগাগুলো যেন ভিজে যায় এবং পরবর্তীতে পা ধোয়ার সময় সুবিধা হয়।

-আলবাহরুর রায়েক ১/১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৩১

Sharable Link

মুহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম - নাটোর

৪৬৫৯. Question

এক দুর্ঘটনায় আমি হাতে চোট পেলে তাতে ব্যান্ডেজ লাগানো হয় এবং প্রতিদিনই ড্রেসিংয়ের প্রয়োজন হয়। সে স্থানে পানি লাগানো নিষেধ। তাই আমি ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করি। জানার বিষয় হল, যদি আমি ড্রেসিংয়ের আগে ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করে থাকি তাহলে কী ড্রেসিংয়ের পর পুনরায় মাসাহ করতে হবে?

Answer

না, মাসাহ করার পর ড্রেসিং করা হলে এ কারণে পুনরায় মাসাহ করা জরুরি নয়। তবে ড্রেসিং করার সময় যদি আপনার ক্ষতস্থান থেকে গড়িয়ে পড়া পরিমাণ রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয় তাহলে আপনার অযু ভেঙ্গে যাবে। এক্ষেত্রে পুনরায় অযু করে ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করতে হবে। আর যদি গড়িয়ে পড়া পরিমাণ রক্ত, পুঁজ বা পানি বের না হয় তাহলে শুধু ব্যান্ডেজ পরিবর্তন বা ড্রেসিংয়ের কারণে আপনাকে অযু বা মাসাহ কিছুই করতে হবে না।

-কিতাবুল আছল ১/৪৪; ফাতাওয়া সিরাজিয়্যাহ পৃ. ২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯০; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৩৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৩৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ বাদল - কুষ্টিয়া

৪৬৬০. Question

পায়ের গোড়ালিতে একবার আমার ভীষণ চোট লাগে। এরপর চোট সারলেও সেখানে বেশি চাপ পড়লে পানি জমে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইনজেকশন দিয়ে সে পানি বের করে ফেলতে হয়। আমার জানার বিষয় হল, আমার যদি অযু থাকে তাহলে কি ইনজেকশন দ্বারা সে পানি বের করার দ্বারা আমার অযু ভেঙ্গে যাবে?

Answer

হাঁ, ইনজেকশন দিয়ে তা বের করা হলেও অযু ভেঙ্গে যাবে। তাই এক্ষেত্রে পুনরায় অযু করে নিবেন।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৮; শরহুল মুনয়া পৃ. ১৩৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০; ফাতাওয়া বায্যাযিয়াহ ১/১৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৪৫; রদ্দুল মুহতার ১/১৩৯

Sharable Link

মাহমুদুর রহমান - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৪৬৬১. Question

আমরা জানি, গোসল ফরয অবস্থায় শরীর নাপাক থাকে। আমার প্রশ্ন হল, এই অবস্থায় শরীর থেকে বেরিয়ে আসা ঘাম কি নাপাক?

Answer

না, গোসল ফরয অবস্থায় শরীর থেকে বের হওয়া ঘাম নাপাক নয়।

-আলআওসাত, ইবনুল মুনযির ২/৩০৩; কিতাবুল আছল ১/৩৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৭০; খিযানাতুল আকমাল ১/৩২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৪৭৫

Sharable Link

আরিফুল ইসলাম - বরিশাল

৪৬৬২. Question

আমার বাসা ঢাকা। মাস দুয়েক আগে একটি কাজে সিলেট যাই। সিলেট শহরের নিকটে একটি ছোট মসজিদে জুমা আদায় করি। জুমার খুতবা দেওয়ার পর হঠাৎ খতীব সাহেব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন মুসল্লিরা আমাকে ইমামতির জন্যে অনুরোধ করলে আমি নামায পড়াই।

এখন মুফতী সাহেবের কাছে আমার জানার বিষয় হল, মুসাফির হয়েও আমি যে জুমার নামাযে ইমামতি করেছি তা কি সহীহ হয়েছিল? না হলে এখন আমার করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

হাঁ, প্রশ্নোক্ত  ক্ষেত্রে আপনার ইমামতি করা সহীহ হয়েছে। কেননা মুসাফিরের জন্য জুমার নামায আদায় করা জরুরি না হলেও তার জুমা আদায় করা সহীহ এবং তার ইমামতি করাও সহীহ আছে।

-কিতাবুল আছল ১/৩১৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৯৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৩৩; আলইনায়াহ ২/৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশরাফ - বাগেরহাট

৪৬৬৩. Question

মাঝে মাঝে ইমামের পিছনে প্রথম বৈঠকে দরূদ শরীফ পড়ে ফেলি। জানার বিষয় হল এ ভুলের কারণে আমি সাহু সিজদা কীভাবে আদায় করব?

Answer

মুকতাদি সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার মতো কোনো ভুল করে ফেললেও তার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে আপনাকে সাহু সিজদা করতে হবে না। তবে ইচ্ছা করে এমনটি করবেন না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, বর্ণনা ৪৫৬০; কিতাবুল আছল ১/১৯৭; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/১৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৫৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৮

Sharable Link

ফারহান আহমদ - খুলনা

৪৬৬৪. Question

আমি মসজিদ থেকে ফরয নামায পড়ে বাড়িতে এসে সুন্নত-নফল পড়ি। এ সময় কখনো কখনো আমার স্ত্রী আমার পাশে দাঁড়িয়ে তার নামায পড়ে। জানার বিষয় হল, পাশাপাশি দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে নিজ নিজ নামায পড়লে কি আমাদের নামায নষ্ট হয়ে যাবে? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে নিজ নিজ নামায পড়লে নামাযের ক্ষতি হবে না।

-কিতাবুল আছল ১/১৬৩; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৫০; ফাতহুল কাদীর ১/৩১৯

Sharable Link

আবুল হাসান - ফরিদপুর

৪৬৬৫. Question

ফরয নামায পড়ানোর সময় জাহান্নামের আয়াত পড়তে গিয়ে আমার কান্না চলে আসে এবং কেরাত থেমে যায়। পরে কেরাতের বাকি অংশ শেষ করে নামায পূর্ণ করি। জানার বিষয় হল, এভাবে কান্নার কারণে আমার নামায কি নষ্ট হয়ে গেছে? মাসআলাটির সমাধান জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

না, আপনার নামায নষ্ট হয়নি। জাহান্নামের স্মরণ বা আখেরাতের ভয়ে কান্না চলে আসলে নামাযের ক্ষতি হয় না।

-আলজামেউস সাগীর পৃ. ৯২; খিযানাতুল আকমাল ১/১০১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৪০; আলবাহরুর রায়েক ২/৫

Sharable Link

খাইরুল ইসলাম - পটুয়াখালী

৪৬৬৬. Question

ইশার পরবর্তী দুই রাকাত সুন্নত আদায় করার সময় আমার হাঁচি চলে আসে এবং সাধারণ অভ্যাস অনুযায়ী আলহামদু লিল্লাহ বলে ফেলি। জানার বিষয় হল, আলহামদু লিল্লাহ বলার কারণে আমার নামায কি নষ্ট হয়ে গেছে? নামাযে হাঁচি এলে করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

নামাযে হাঁচি আসলে আলহামদু লিল্লাহ বলতে হয় না। তবে কেউ বলে ফেললে নামায নষ্ট হবে না। তাই আপনার উক্ত নামায নষ্ট হয়নি।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৩৬; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ১/৭৮; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৩৯৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী ১৭৮

Sharable Link

আরিফ আহমদ - শেরপুর

৪৬৬৭. Question

আমি গত ঈদে ঈদগাহে গিয়ে দেখি ইমাম সাহেব রুকুতে চলে গেছেন।  আমি নামাযের নিয়ত করে রুকুতে চলে যাই এবং বাকি নামায আদায় করি। জানার বিষয় হল, ইমাম সাহেবকে ঈদের নামাযের রুকুতে পেলে কীভাবে তাকবীর বলব? মাসআলাটির সমাধান জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

ঈদের নামাযে ইমাম সাহেবকে রুকুতে পেলে তাকবীরে তাহরীমা বলার পর সরাসরি রুকুতে চলে যাবে এবং হাত উঠানো ছাড়া রুকুতেই অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলবে। এক্ষেত্রে সময়ে না কুলালে রুকুর তাসবীহ বলতে হবে না।

উল্লেখ্য, যদি অতিরিক্ত তাকবীরগুলো দাঁড়ানো অবস্থায় বলে ইমাম সাহেবকে রুকুতে পাওয়া যায় তাহলে তাকবীরগুলো দাঁড়িয়ে বলে রুকুতে শরিক হবে।

-আলজামেউল কাবীর পৃ. ১১; খিযানাতুল আকমাল ১/৯১; ফাতহুল কাদীর ২/৪৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬১; রদ্দুল মুহতার ২/১৭২

Sharable Link

রাশেদ হাসান - মগবাজার

৪৬৬৯. Question

আমি ইশার নামাযে ইমামতি করছিলাম। প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদের বদলে ভুলে সূরা ফাতিহা পড়ে ফেলি। পরে তাশাহহুদ পড়ে যথানিয়মে নামায শেষ করার পূর্বে সাহু সিজদা দিয়ে নিই। আমার নামায কি হয়েছে?

Answer

তাশাহহুদের পূর্বে ভুলে সূরা ফাতিহা পড়ার কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছিল। আপনি যেহেতু নামায শেষে সাহু সিজদা দিয়েছেন তাই আপনার উক্ত নামায সহীহ হয়েছে।

-আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৪১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৭; মাজমাউল আনহুর ১/২২০

Sharable Link

সরোয়ার হুসাইন - শরীয়তপুর

৪৬৭০. Question

হঠাৎ করে  আমার স্ত্রী খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করতে হয়। সেখানে সে সাত দিন অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। এখন আলহামদু লিল্লাহ সে সুস্থ। ঐ সময়ের নামাযগুলো সে কীভাবে আদায় করবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রী যে কয়দিন অজ্ঞান অবস্থায় ছিল সে দিনগুলোর নামায কাযা করতে হবে না। কেননা এক দিন এক রাত বা তার বেশি সময় অজ্ঞান থাকলে সে নামাযগুলো মাফ হয়ে যায়।

-কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মদ, বর্ণনা ১৬৯; কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনাহ ১/১১০; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০২; ইলাউস সুনান ৭/২২২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুর রব - শার্শা, যশোর

৪৬৭১. Question

একদিন আসরের নামাযে মসজিদে যেতে বিলম্ব হয়ে যায়। মসজিদে গিয়ে দেখি ইমাম সাহেব রুকুতে আছেন। আমি তাড়াতাড়ি তাকবীর বলা অবস্থায় রুকুতে শরীক হয়ে যাই। যেন ইমামকে রুকুতে পেয়ে পূর্ণ রাকাত পেতে পারি। আমার তাকবীর রুকুতে গিয়ে শেষ হয়। এ অবস্থায় আমার নামায কি সহীহ হয়েছে? যদি সহীহ না হয়, তাহলে এ অবস্থায় আমার করণীয় কী ছিল?

Answer

নামাযে দাঁড়ানো অবস্থায় তাকবীরে তাহরীমা বলা ফরয। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার তাকবীরে তাহরীমা যেহেতু রুকুতে গিয়ে শেষ হয়েছে তাই আপনার নামায সহীহ হয়নি। এক্ষেত্রে আপনার করণীয় ছিল, দাঁড়ানো অবস্থায় আল্লাহু আকবারবলা শেষ করা। এরপর রুকুতে যাওয়া।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৩৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৩; হালবাতুল মুজাল্লী ২/১৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৯; রদ্দুল মুহতার ১/৪৫২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুর রহমান - বাগেরহাট, খুলনা

৪৬৭২. Question

নেক সময় মসজিদে যাওয়ার পর ইমামকে সিজদা অবস্থায় পাই। তখন দেখা যায়, কেউ কেউ ওই অবস্থায় ইমামের সঙ্গে নামাযে শরীক হয়ে যায়। আবার অনেকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে। যখন ইমাম সিজদা  থেকে দাঁড়ান, তখন নামাযে শরীক হয়। জানার বিষয় হল, ইমামকে সিজদা অবস্থায় পেলে করণীয় কী? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

ইমাম সিজদা অবস্থায় থাকেন বা অন্য অবস্থায় থাকেন, মাসবুক এসে পরবর্তী রাকাতের জন্য অপেক্ষা না করে ইমামের সঙ্গে নামাযে শরীক হয়ে যাবে। একাধিক হাদীসে এ ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِذَا جِئْتُمْ وَنَحْنُ سُجُودٌ فَاسْجُدُوا، وَلَا تَعُدّوهَا شَيْئًا، وَمَنْ أَدْرَكَ الرّكْعَةَ فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلَاةَ

অর্থাৎ তোমরা (মসজিদে) এসে যখন আমাদেরকে সিজদায় পাবে, তখন তোমরাও সিজদা করবে। তবে একে (রাকাত) গণ্য করবে না। আর যে (ইমামের সঙ্গে) রুকু পেল, সে ওই নামায (রাকাত) পেল। (সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ১৬২২)

সুতরাং ইমাম সিজদায় থাকলে পরবর্তী রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা ভুল।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১

Sharable Link

আবুল বাশার - পিরোজপুর

৪৬৭৫. Question

জনৈক ব্যবসায়ী এই পরিমাণ সম্পদের মালিক যে, তা দ্বারা হজে¦র যাবতীয় খরচ ও হজ¦ থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারের খরচাদি আদায় করা সম্ভব। কিন্তু হজ¦ করলে তার ব্যবসার মূলধন থাকবে না। এমতাবস্থায় তার উপর হজ¦ ফরয হবে কি?

উল্লেখ্য যে, ঐ ব্যক্তি  ও তার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ এই ব্যবসা দ্বারাই হয়ে থাকে।

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ব্যক্তির সাংসারিক মৌলিক খরচাদি যেহেতু এ ব্যবসার উপরই নির্ভরশীল তাই এ টাকা খরচ করে ঐ ব্যক্তির জন্য হজে¦ যাওয়া ফরয নয়।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭২; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬২; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ১৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাইদ আহমদ - মুন্সীগঞ্জ

৪৬৭৬. Question

আমাদের মসজিদের ফান্ডের টাকা মসজিদ কমিটি নিজস্ব কাজে ব্যবহার করে। পরবর্তীতে মসজিদের প্রয়োজন পড়লে তা দিয়ে দেয়। শরীয়তে এটা কতটুকু জায়েয?

Answer

মসজিদ ফান্ডের টাকা কমিটির হাতে আমানত হিসাবে থাকে। মসজিদ কমিটির জন্য ওই টাকা কোনো অবস্থায় নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করা জায়েয হবে না; বরং তা খেয়ানত হবে। তাই মসজিদের প্রয়োজনের সময় ফিরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও কমিটি নিজ প্রয়োজনে ওই টাকা ব্যবহার করতে পারবে না। তাদের দায়িত্ব সকল টাকা মসজিদ ফান্ডে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া।

-ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২৭০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৩৯

Sharable Link

এলাকাবাসীর পক্ষে আবু আহমদ - ঢাকা

৪৬৭৭. Question

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি কবরস্থানের জন্য দুই বিঘা জমি ওয়াকফ করে। এলাকাবাসি সকলে মিলে জমিটির চারপাশ দিয়ে দেয়াল করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জমিটির ওয়াকফ দলীল করা হয়নি। ইতিমধ্যে জমিটির এক পাশ দিয়ে কয়েকটি কবরও করা হয়েছে। এখন জমিটির ওয়াকফ দলীল করা হবে। তবে ওয়াকফকারী বিশেষ একটি প্রয়োজনের কারণে এক বিঘা জমি নিজের জন্য রেখে যে অংশে কবর দেওয়া হয়েছে শুধু ঐ এক বিঘা দলীল করতে চায়। আর যে এক বিঘা সে ফেরত নিতে চায় ঐ অংশের দেয়াল নির্মাণ বাবদ খরচ কবরস্থানের ফান্ডে দিয়ে দিবে।

আমরা জানতে চাই, তার জন্য ঐ এক বিঘা জমির ওয়াকফ প্রত্যাহার করার সুযোগ আছে কি? সঠিক মাসআলাটি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

মৌখিকভাবে ওয়াকফ করার দ্বারাই ওয়াকফ সম্পন্ন হয়ে গেছে। সুতরাং ওয়াকফকৃত জমি থেকে এক বিঘা বা অন্য কোনো অংশ প্রত্যাহার করার সুযোগ নেই। ওয়াকফকারীর কর্তব্য উক্ত দুই বিঘা জমিই কবরস্থানের নামে ওয়াকফ দলীল করে দেওয়া। হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে উমর রা. নিজের কিছু সম্পত্তি সদকা করেছিলেন। তা ছিল ছামগ নামক একটি খেজুর বাগান। উমর রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি একটি সম্পদ পেয়েছি, যা আমার নিকট খুবই পছন্দনীয়। আমি এটি সদকা করতে চাচ্ছি। রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

تَصَدَّقْ بِأَصْلِهِ، لاَ يُبَاعُ وَلاَ يُوهَبُ وَلاَ يُورَثُ، وَلَكِنْ يُنْفَقُ ثَمَرُهُ.

মূল সম্পদটি এভাবে সদকা কর যে, তা বিক্রি করা যাবে না, দান করা যাবে না এবং কেউ এর ওয়ারিশ হবে না। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৬৪)

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩২৬; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৪৯-৩৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৬৫

Sharable Link

খালেদ সাইফুল্লাহ - ধামরাই, সাভার

৪৬৭৮. Question

একটি মাসআলার সমাধান জানতে চাই-

بيع الوفاء কী? بيع الوفاء -এর ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য মত কী? আমাদের সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলন রয়েছে যে, ঋণগ্রহিতা তার জমি ঋণদাতার কাছে বন্ধক রেখে ঋণ নেয়। আর ঋণদাতা ঋণ পরিশোধ হওয়ার আগ পর্যন্ত জমিটি ভোগ করে। আমরা জানি, এমন লেনদেন অবৈধ। সমাজকে অবৈধ লেনদেন থেকে বাঁচানোর জন্য بيع الوفاء -এর পরামর্শ দেওয়া যাবে কি?

Answer

بيع الوفاء হল, বিক্রেতা কর্তৃক ক্রেতার সাথে এভাবে চুক্তি করা যে, আপনার কাছে আমার অমুক সম্পদ বিক্রি করলাম শর্তে যে, আমি যখন এই মূল্য ফেরত দেব তখন আপনিও সে সম্পদ আমার কাছে ফেরত দিবেন। নির্ভরযোগ্য মতানুসারে بيع الوفاء অবৈধ। কেননা একে যদিও ক্রয়-বিক্রয় ধরে নেওয়া হয় কিন্তু অবৈধ শর্তের কারণে (অর্থাৎ বিক্রিত পণ্য পরবর্তীতে ফেরত দেওয়ার শর্তের কারণে) তা নাজায়েয হবে। আর বাহ্যিকভাবে যদিও এটিকে ক্রয়-বিক্রয়ের রূপ দেওয়া হয়েছে কিন্তু এর বাস্তবতা হল ঋণের বিনিময়ে পণ্য বন্ধক রাখা, আর উক্ত বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া। অর্থাৎ بيع الوفاء -কে ঋণের মুনাফা অর্জনের কৌশল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ধরনের হীলা বা অপকৌশলের আশ্রয় নেওয়া জায়েয নয়। সুতরাং ঋণ দিয়ে বন্ধকী জমি ভোগ করার যে প্রচলন সমাজে আছে একে بيع الوفاء -এর রূপ দেওয়া হলেও তা জায়েয হবে না। কেননা এটা সুদ গ্রহণের হীলা-বাহানা। অনেক ফকীহ بيع الوفاء -কে সরাসরি সুদ গ্রহণের হীলা পদ্ধতি বলে আখ্যা দিয়েছেন।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৬৯; জামিউল ফুসুলাইন /২৩৪; রদ্দুল মুহতার /২৮০; মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা ৭৩/৫৫৭

Sharable Link

রাসেল - বহুলা, সিলেট

৪৬৭৯. Question

আমি একজন প্রবাসী। এখানের একটি ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে কাজ করি। যতটুকু সম্ভব হালাল-হারাম বেছে চলার চেষ্টা করি। এই রেস্টুরেন্টে অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি মদও বিক্রি হয়। তবে আমি এখানে খাবার প্রস্তুত করার কাজ করি। খাবার প্রস্তুত করার জন্য আমাকে কখনো মদ স্পর্শ করতে হয় না।

এমতাবস্থায় আমার জানার বিষয় হল, আমার জন্য কি উক্ত রেস্টুরেন্টে চাকরি করা বৈধ হচ্ছে? এখান থেকে বেতন নেওয়া বৈধ হচ্ছে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার দায়িত্ব যদি হয় কেবল হালাল খাবার প্রস্তুত করা, কোনো প্রকার হারাম খাবার আপনাকে তৈরি করতে না হয় তবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা আপনার জন্য নাজায়েয হবে না এবং প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ আয় যদি হালাল বস্তু বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত হয় তবে এ থেকে বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করাও বৈধ হবে।

উল্লেখ্য যে, ইসলামের দৃষ্টিতে মদ নিকৃষ্টতম হারাম এবং মদ থেকে বেঁচে থাকা ইসলাম ও মুসলিমের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাই মদ বিক্রি হয় এমন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা থেকে মুসলমানদের বিরত থাকাই ঈমানী মূল্যবোধ ও তাকওয়ার পরিচায়ক।

-জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৮০১

Sharable Link

মাছুম বিল্লাহ - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৪৬৮০. Question

আমি আমার প্রতিবেশী আবদুস সাত্তার সাহেবের কাছ থেকে মুযারাবার ভিত্তিতে ৮ লক্ষ টাকা নিয়েছি। উনাকে ৪০% লভ্যাংশ দেওয়ার চুক্তি করে তা দিয়ে একটি লাইব্রেরী দিয়েছি। আর বর্তমানে এ ধরণের ব্যবসার প্রচার-প্রসার না হলে দেখা যাবে ভালো ব্যবসা হবে না। তাই ব্যবসার স্বার্থেই প্রাথমিকভাবে এর পরিচিতির জন্য প্রচারণা ও বিজ্ঞাপনে কিছু টাকা খরচ হয়েছে।

তাই হুজুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, এ টাকাগুলো যেহেতু ব্যবসার স্বার্থেই খরচ হয়েছে তা ব্যবসার ব্যয় ধরে ব্যবসা থেকে নিতে পারব কি না?

Answer

আপনি যে ধরনের লাইব্রেরী দিয়েছেন এতে সাধারণ প্রচলন অনুযায়ী যেমন বিজ্ঞাপন ও প্রচারের প্রয়োজন হয় তা করতে পারবেন এবং এর খরচও ব্যবসার টাকা থেকে নিতে পারবেন। কিন্তু বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে যেভাবে বহুমুখী বিজ্ঞাপন ও প্রচারণার ছড়াছড়ি পরিলক্ষিত হয় তা অতিরঞ্জনের শামিল। এগুলো করা যাবে না। তাই মুযারাবার ভিত্তিতে পরিচালিত ব্যবসায় জরুরি প্রয়োজন রয়েছে এমন দু-একটি বিজ্ঞাপন ন্যায্যমূল্যে প্রদান করার এখতিয়ার মুযারিবের থাকবে। আর এর বেশি দিতে চাইলে বিনিয়োগকারীর অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। বিনিয়োগকারীর অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন দিলে এর খরচ ব্যবসার টাকা থেকে নেওয়া যাবে না।

প্রকাশ থাকে যে, মুযারাবা ব্যবসায় প্রচারণা ও বিজ্ঞাপন নীতি কী হবে তা বিনিয়োগকারীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১৬৩; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দা ১৪১৪; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩৩৯

Sharable Link

আবদুল্লাহ - গফরগাঁও, মোমেনশাহী

৪৬৮১. Question

১. আমাদের এলাকায় হলুদএভাবে ক্রয়-বিক্রয় হয় যে, ক্রেতা হলুদ ক্ষেতের এক-দু জায়গায় খনন করে দেখে যে, কী রকম ফলন হয়েছে তারপর ক্রেতা অনুমান করে বলে, এক কাঠায় পাঁচ হাজার টাকা দিব। এভাবে মাটির নিচে লুকায়িত জিনিস বিক্রি করা জায়েয আছে কি?

২. আমাদের এলাকায় এভাবে গরু-ছাগল বর্গা দেওয়া হয় যে, বর্গা দেওয়ার সময় পশুর যে মূল্য থাকে সে মূল্যের পর থেকে বছর শেষে যতটুকু মূল্য বাড়বে তা দুভাগে ভাগ করা হবে। এ সূরত জায়েয আছে কি?

৩. আমার আনারস বাগানের আনারস যখন ছোট ছিল তখন দশ টাকা মূল্যে সমগ্র আনারস বিক্রি করেছি। তবে ক্রেতা শর্ত করে যে, আনারস পাকা পর্যন্ত আমার বাগানে রাখবে। এভাবে বিক্রয় জায়েয আছে কি? দলীল প্রমাণসহ জানালে চির কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

১. হাঁ, হলুদের প্রশ্নোক্ত ক্রয়-বিক্রয় সহীহ। কেননা জমিনের কিছু অংশের ফলন প্রত্যক্ষ করার পর অভিজ্ঞ ক্রেতা-বিক্রেতাগণ পুরো জমিনের হলুদের মোটামুটি একটি পরিমাণ বুঝে নিতে পারে। বিষয়টি তাদের কাছে তেমন অস্পষ্ট থাকে না। এবং এ কারণে ঝগড়া-বিবাদও হতে দেখা যায় না। সুতরাং এ লেনদেন জায়েয। -মাজমাউল আনহুর ৩/৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৯০; তানকীহুল ফাতাওয়াল হামিদিয়্যাহ ১/২৫১; ফাতাওয়া কারিইল হিদায়াহ পৃ. ১১৭

২. গরু বর্গার প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি শরীয়তসম্মত নয়। এক্ষেত্রে সহীহ পদ্ধিত হল, গরুর মালিক লালন-পালনকারীর সাথে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চুক্তি করবে। সেক্ষেত্রে গরু থেকে প্রাপ্ত যাবতীয় আয় গরুর মালিক পাবে আর লালন-পালনকারী খাবারের খরচ ও নির্ধারিত পারিশ্রমিক পাবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৯৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৪৫; ফাতাওয়া তাতারখনিয়া ৭/৫০৫

৩. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় বৈধ হয়নি। অপরিপক্ক ফল পাকা পর্যন্ত বাগানে রাখার শর্ত করে বিক্রি করা জায়েয নয়। একারণে ক্রয় চুক্তি ফাসেদ হয়ে  যায়। তাই কখনো অপরিপক্ক ফল বিক্রি করতে হলে তা কোনো প্রকার শর্ত করা ছাড়া ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে। এরপর বাগানের মালিক যদি তা কিছুদিন রাখার অনুমতি দেয় তবে সেক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। -মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/২৮০; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ৩/১৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/৩০২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১০৬

Sharable Link

আবদুল খালেক - সাভার, ঢাকা

৪৬৮২. Question

হেমায়েতপুরে আমার একটি ছোটখাটো মুরগীর খামার আছে। খামারে প্রতি সপ্তাহে প্রায় দেড় হাজার ডিম উৎপাদন হয়। আমার একক খরচে খামার পরিচালনা সম্ভব হয়ে উঠে না বিধায় মাঝে মাঝেই ঋণ করতে হয়। ব্যাংক থেকে লোন নিতে গেলে সেখানে তো সুদের কারবার আছে। তাই সাধারণত পরিচিতজনদের থেকে স্বল্প সময়ের জন্য করয করে থাকি।

কিছুদিন আগে কারওয়ান বাজারের এক আড়ৎ মালিক আমাকে বিনা সুদে ঋণ দিতে চেয়েছে। তবে তার শর্ত হল, আমার খামারের উৎপাদিত সকল ডিম তার আড়তে বিক্রি করতে হবে।

জানতে চাই, আমার জন্য তার থেকে এ শর্তে ঋণ নেওয়া জায়েয হবে কি না?

Answer

ঋণ প্রদাণ করে ঋণ গ্রহীতা থেকে কোনো প্রকার উপকৃত হওয়া  নাজায়েয। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার খামারে উৎপাদিত সকল ডিম ঐ ব্যক্তির আড়তে বিক্রি করতে হবে- এ শর্ত দ্বারা আড়তের মালিক (ঋণদাতা) উপকৃত হচ্ছে। সুতরাং এ ধরনের শর্তে আপনার জন্য  তার থেকে ঋণ নেওয়া জায়েয হবে না। অবশ্য ঋণদাতা কর্তৃক যদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো শর্তারোপ না করা হয় এবং অন্য জায়গায় মাল বিক্রি করার অধিকার থাকে আর ঋণ গ্রহীতা সেচ্ছায় তার আড়তে মালামাল বিক্রি করতে নিয়ে যায় তাহলে সেটি নাজায়েয হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/২১০; আলবাহরুর রায়েক ৬/১২২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০২

Sharable Link

মুনীরুল ইসলাম - সিরাজগঞ্জ

৪৬৮৩. Question

আমি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ফ্যাকাল্টির ডিন অফিসে চাকরি করি। আমার নিয়মিত অফিস ডিউটির বাইরে ডিন স্যার আমাকে অতিরিক্ত একটি প্রজেক্টের দায়িত্ব দিয়েছেন। এর জন্য আমাকে অতিরিক্ত কোনো ভাতা দেওয়া হবে না।

আর এ প্রজেক্টটি বাস্তবায়ন করতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এরচেকম খরচে কাজটি করা সম্ভব; কাজের কোনো ত্রুটি ছাড়াই। অর্থাৎ শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দরদাম করে কিছুটা কমিয়ে টাকা বাঁচানো সম্ভব।

আমি জানতে চাচ্ছি, বেঁচে যাওয়া টাকাগুলো আমার জন্য নেওয়া বৈধ হবে কি না?

উল্লেখ্য, এ প্রজেক্টের তদারকী করা আমার নিয়মিত অফিস ডিউটির অতিরিক্ত ডিউটি। অথচ আমি নিয়মিত বেতনের অতিরিক্ত কোনো ভাতা পাব না। তাই আমি অতিরিক্ত কাজের ভাতা হিসাবে বেঁচে যাওয়া টাকাগুলো নিতে চাচ্ছি। এতে কোনো অসুবিধা আছে কি না? দয়া করে জানাবেন।

Answer

আপনি যেহেতু ঐ অফিসেরই একজন কার্মচারী। ডিন সাহেব আপনাকে ঐ প্রকল্পের দায়িত্ব দিয়েছেন তাই প্রকল্পের কোনো টাকা বেঁচে গেলে তা আপনার রেখে দেওয়া জায়েয হবে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর যা বাঁচবে কর্তৃপক্ষকে তা ফেরত দিতে হবে।

উল্লেখ্য যে, আপনার বক্তব্য অনুযায়ী এ প্রকল্পের কাজ যেহেতু আপনার নিয়মিত দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয় তাই আপনি কিছু নিতে চাইলে কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে তারা যদি কিছু  দেন তা নেওয়া আপনার জন্য জায়েয হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে তা নেওয়া যাবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১৫/৬৫; আলবাহরুর রায়েক ৭/১৫৫; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৪/৪৭৮

Sharable Link

সাঈদ আহমদ - বন্দর বাজার, সিলেট

৪৬৮৪. Question

 

বিগত কয়েক বছর থেকে আমি নিয়মিত কুরবানী আদায় করছি। কিন্তু এর আগে কয়েক বছর কুরবানী আবশ্যক হওয়া সত্ত্বেও না জানার কারণে তা আদায় করতে পারিনি। তাই জানার বিষয় হল, এখন কি অনাদায়ী কুরবানীগুলো আদায় করা লাগবে? এবং তা করার শরীয়তসম্মত পদ্ধতি কী?

Answer

কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার পরও কোনো কারণে তা আদায় না করলে পরবর্তীতে তার কাযা করতে হয়। আর কাযা করার পদ্ধতি হল, প্রত্যেক বছরের জন্য কুরবানীযোগ্য একটি ছাগলের মূল্য গরীবদেরকে সদকা করতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২০

Sharable Link

শাবীব তাশফী - খিলগাঁও, ঢাকা

৪৬৮৫. Question

আমার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী। তাঁর উপর কুরবানী ওয়াজিব ছিল। এবং কুরবানীর জন্য একটি খাসিও ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু ঈদের আগের দিন রাতে (২১ আগস্ট) বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় কার এক্সিডেন্টে মারাত্মকভাবে আহত হন। সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে অপারেশন করা হয়। কিন্তু পরদিন বিকাল ৫টায় তিনি ইন্তেকাল করেন। যেহেতু বাবার মৃত্যুতে পুরো পরিবার শোকাহত ছিল, তাই এ অবস্থায় পশু কুরবানী করা সম্ভব ছিল না। তাই কুরবানীর তিন দিনের মধ্যে আর তা কুরবানী করা হয়নি।

এখন আমরা জানতে চাচ্ছি, এ খাসিটি আমরা কী করব? একজন বললেন, এটা সদকা করে দিতে হবে। আবার কেউ বলছে, আগামী বছর কুরবানীর জন্য এটা রেখে দিতে হবে। তাই হুযুরের কাছে আকুল আবেদন, এ বিষয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে আমাদের কৃতজ্ঞ করবেন।

 

Answer

আপনার বাবা যেহেতু কুরবানীর সময় শেষ হওয়ার (১২ যিলহজ¦) আগেই ইন্তেকাল করেছেন, তাই তার উপর এ বছরের কুরবানীর হুকুম আরোপিত হয়নি। সুতরাং তার কেনা খাসিটি তার পক্ষ থেকে কুরবানী বা সদকা করতে হবে না; বরং তার মৃত্যুর পর সেটি তার মীরাসী সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। অতএব অন্যান্য সম্পত্তির মতো ছাগলটিও তার ওয়ারিশদের মাঝে বণ্টিত হবে।

অবশ্য সকল ওয়ারিশ যদি বালেগ হয়  এবং সকলে স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে খাসিটি সদকা করতে চায় তবে সেটি সওয়াবের কাজ বলে বিবেচিত হবে।

-শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ আহমাদ শাকের - ভোলা, মেহেরগঞ্জ

৪৬৮৬. Question

জনৈক ব্যক্তি মুসলমান ছিল। কিন্তু লোকটি মারা যাওয়ার চার মাস পূর্বে কাদিয়ানীদের দাওয়াত পেয়ে কাদিয়ানী হয়ে গিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ। এ অবস্থাতেই সে মারা গেছে। আল্লাহ তাআলা তার স্ত্রী, সন্তানদের ও অন্যান্য আত্মীয়দের এ ফিতনা থেকে রক্ষা করেছেন।

জানার বিষয় হল, লোকটির মুসলমান ওয়ারিশরা কি তার থেকে মীরাস পাবে? অনেকে বলে, ‘কাফেররা যেমন মুসলমানদের থেকে মীরাস পায় না তেমনি মুসলমানরাও কাফেরদের থেকে মীরাস পায় না। অতএব উক্ত লোকটির মুসলামন ওয়ারিশরা তার থেকে মীরাস পাবে না।তাদের এ কথা কতটুকু সঠিক বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

মৃত কাফের থেকে মুসলমান ঐ ক্ষেত্রে মীরাস পায় না যখন মৃত্যুবরণকারী ধর্মান্তরিত কাফের না হয়, বরং পূর্ব থেকেই কাফের থাকে। প্রশ্নোক্ত মৃত ব্যক্তি মুরতাদ তথা ধর্মান্তরিত কাফের তাই এক্ষেত্রে উক্ত মাসআলাটি প্রযোজ্য নয়। তার মুসলমান ওয়ারিশরা তার থেকে মীরাস পাবে। এ ক্ষেত্রে নিয়ম হল, প্রশ্নোক্ত লোকটির কোনো ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করার পর অবশিষ্ট সম্পদের মধ্যে যা সে মুসলমান অবস্থায় উপার্জন করেছে তা তার মুসলমান ওয়ারিশরা পাবে আর যা মুরতাদ হওয়ার পর উপার্জন করেছে তা গরীবদেরকে দিয়ে দিবে বা অন্য কোনো জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করতে পারবে।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১০১৩৯; ফাতহুল কাদীর ৫/৩১৩; আততাজরীদ, কুদুরী ৮/৩৯৫৮; আলমাবসূত, সারাখসী ৩০/৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৬/১২৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৩০

Sharable Link