নূরুল আলম - শরীয়তপুর

৩২৬০. Question

 

এক ব্যক্তির কাছে শুনলাম, গোসল ফরয অবস্থায় কবর যিয়ারত করা জায়েয নেই। বিষয়টি কি সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন।


 

Answer

নাপাক অবস্থায় কবর যিয়ারত না করাই শ্রেয়। একান্ত কখনো গোসল করতে বিলম্ব হলে যিয়ারতের আগে অন্তত অযু করে নিবে। অবশ্য গোসল ফরয অবস্থায়ও কবর যিয়ারত নিষিদ্ধ নয়। তবে কেউ এ অবস্থায় যিয়ারতে গেলে কুরআন মাজীদের কোনো আয়াত পড়তে পারবে না। মৃতের জন্য দুআ-দরূদ পড়তে পারবে।

-রদ্দুল মুহতার ১/২৯৩; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪৮১; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/১৫১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আব্দুল কাদের - লোহাগড়া, চট্টগ্রাম

৩২৬১. Question

হুজুরের কাছে একটি মাসআলা জানতে চাই, অনেক সময় আমি নামাযে মাসবুক হই, ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর আগমুহূর্তে গিয়ে জামাতে শরীক হই তখন আমি তাশাহহুদ শেষ না করে উঠে যাই। জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় আমার জন্য কী করা উচিত? তাশাহহুদ শেষ করে দাঁড়াবো নাকি তাশাহহুদ শেষ না করে ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যাবো?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব সালাম ফিরিয়ে দিলেও আপনি তাশাহহুদ শেষ করেই দাঁড়াবেন। অবশ্য তাশাহহুদ শেষ না করে দাঁড়ালেও নামায আদায় হয়ে যাবে। তবে ইচ্ছাকৃত এমনটি করা ঠিক নয়। 

-রদ্দুল মুহতার ১/৪৯৬; তাতারখানিয়া ২/১৯২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯০

Sharable Link

মারুফ হুসাইন - মেহেন্দিগঞ্জ, বরিশাল

৩২৬২. Question

 

একদিন আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব যোহরের নামাযের ১ম রাকাতে উচ্চস্বরে সূরা ফাতেহার ১ম আয়াত তেলাওয়াত করেন। তারপর নিম্নস্বরেই অবশিষ্ট কেরাত পাঠ করেন। সর্বশেষে তিনি সাহু সিজদা না দিয়েই নামায শেষ করেন। এ নিয়ে মুসল্লিদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমনকি তারা পরস্পরে ঝগড়া বিবাদেও লিপ্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক বেশি চিন্তিত। মেহেরবানী করে সমাধান জানিয়ে চিন্তামুক্ত করবেন।

 

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত নামায সহীহভাবেই আদায় হয়েছে। ইমাম সাহু সিজদা না করে ঠিকই করেছেন। কেননা নিম্নস্বরে কেরাত বিশিষ্ট নামাযে সূরা ফাতিহার এক-দুই আয়াত উচ্চস্বরে পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়নি। প্রকাশ থাকে যে, দ্বীনী বিষয়ে সংশয় বা মতানৈক্য দেখা দিলে বিজ্ঞ আলেম বা মুফতীর শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫১; রদ্দুল মুহতার ২/৮২; ইলাউস সুনান ৭/১৯১; ফাতহুল কাদীর ১/৪৪১

Sharable Link

মুনীফ আম্মার - ১৭৭/সি গ্রীন রোড, ঢাকা

৩২৬৩. Question

 

জন্মস্থান কি ওয়াতনে আসলী? আমি আমার নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেছি আমি কি তাহলে নানা বাড়ীতে গেলে মুকীম থাকব? প্রকাশ থাকে যে, আমি আমার পিতা-মাতার সাথে তাদের বাড়িতেই থাকি। নানা বাড়িতে থাকি না।

 

 

Answer

কোথাও জন্মগ্রহণের দ্বারাই ঐ স্থান ওয়াতনে আসলী হয়ে যায় না। বরং স্থায়ীভাবে বসবাস করলে তা ওয়াতনে আসলী হিসেবে গণ্য হয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু নানা বাড়ী বসবাস করেন না বরং পিত্রালয়ই হচ্ছে আপনার স্থায়ী আবাসস্থল তাই পিত্রালয়ই আপনার ওয়াতনে আসলী গণ্য হবে এবং সেখানে আপনি মুকীম হবেন।

-আলমাবসূত ১/২৫২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/১৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইসমাইল - কক্সবাজার, চট্টগ্রাম

৩২৬৪. Question

আমি নতুন হাফেয। ছোট ছাত্রদের নিয়ে গত রমযানে তারাবীর নামায পড়িয়েছি। যখন আটকে যেতাম তখন রুকুতে চলে যেতাম। এরপর রুকু এবং সিজদায় চুপে চুপে আয়াতগুলো পড়ে পরবর্তী আয়াত স্মরণ করতাম। জানার বিষয় হল, এ কারণে কি নামাযের কোনো অসুবিধা হয়েছে?


Answer

 

 

নামাযে কুরআন মাজীদ থেকে পড়ার নির্ধারিত স্থান হল কিয়াম। অর্থাৎ রুকুর আগের সময়। এই নির্ধারিত স্থান ব্যতীত রুকু-সিজদা বা অন্য কোনো সময় কুরআন থেকে পড়া মাকরূহ। আয়াত স্মরণ করার উদ্দেশ্যেও পড়া যাবে না। অবশ্য মুখে উচ্চারণ না করে মনে মনে আয়াতের খেয়াল করলে নামাযের ক্ষতি হবে না।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রুকু-সিজদায় আয়াত পড়ার কারণে নামায মাকরূহ হয়েছে। তবে সকলের নামায আদায় হয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, আয়াত স্মরণ না হলে কিংবা অন্য কারণে লোকমা নেওয়ার প্রয়োজন হলে লোকমা নিবে। মনে রাখা দরকার যে, একেবারে লোকমা ছাড়া পড়ানো জরুরি কোনো হুকুম নয়; বরং মাসআলাসম্মত পড়া এবং আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির খেয়াল রেখে পড়াই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। 

 

 

-শরহুল মুনইয়াহ ৩৫৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২০৯; রদ্দুল মুহতার ১/৬৫৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১১৮

Sharable Link

ইবনে সাঈদ - মিরপুর, ঢাকা

৩২৬৫. Question

চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামাযের শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতেহার পর কখনো কখনো আমি ভুলে সূরা মিলিয়ে ফেলি। একারণে নামাযের কোনো অসুবিধা হবে কি? আর এক্ষেত্রে সূরা মিলানোর কারণে কি সাহু সিজদা দিতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

না, এক্ষেত্রে ভুলে সূরা মিলিয়ে ফেললে সাহু সিজদা দিতে হবে না। তবে ইচ্ছাকৃত এমনটি করবেন না। কারণ, ফরযের শেষ দুই রাকাতে সূরা মিলানো সুন্নাহ পরিপন্থি।

-রদ্দুল মুহতার ১/৪৫৯; আলজাওহারাতুন নাইয়েরাহ ১/৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১০

Sharable Link

ইকবাল আনওয়ার - তেজগাঁও, ঢাকা

৩২৬৬. Question

আমি এশার দুরাকাত সুন্নতের পর সাধারণত দুচার রাকাত নফল পড়ে তারপর বিতর পড়ি। মাঝে মাঝে আবার সুন্নতের পরই বিতর পড়ে ফেলি। তো কখনো এমন হয় যে, সুন্নত পড়ে আবার নামাযে দাঁড়িয়েছি কিন্তু নফল পড়ব না বিতর পড়ব কোনোটাই মনে স্থির করিনি। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী? আমি কি নফল বা বিতর যে কোনো একটি স্থির করে সে অনুযায়ী নামায পূর্ণ করতে পারব।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাকবীরে তাহরীমার আগে যেহেতু সুনির্দিষ্টভাবে বিতরের নিয়ত করা হয়নি তাই তা নফল হিসেবে ধর্তব্য হবে। এক্ষেত্রে তাকবীরে তাহরীমার পর বিতরের নিয়ত করলেও তা ধর্তব্য হবে না। 

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮১; আলবাহরুর রায়েক ১/২৮২; রদ্দুল মুহতার ১/৪১৭

Sharable Link

রাইসুল হাসান - উত্তরা, ঢাকা

৩২৬৭. Question

আমার বোন একদিন চাশতের নামায পড়ছিল। আমি তা খেয়াল না করেই ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, আমার জামাটা কোথায়? পরে ওর দিকে তাকিয়ে দেখি, সে নামায পড়ছে। কিন্তু নামাযের ভিতরেই সে হাতের ইশারায় আমাকে বুঝাল, জামা ওয়্যারড্রবে আছে। তাই জানার বিষয় হল, এ কারণে কি তার নামায ভেঙ্গে গিয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হাত দ্বারা ইশারা করার কারণে আপনার বোনের নামায ভাঙ্গেনি। তবে কাজটি মাকরূহ হয়েছে। নামাযের মধ্যে হাত দ্বারা ইশারা করা মাকরূহ। তাই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এমনটি করবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৮৫৮৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১২৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৯৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৮-৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ ওলিউল্লাহ - লাকসাম, কুমিল্লা

৩২৬৮. Question

প্রশ্ন : আমি প্রতিদিন বাদ আসর কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করি। জানার বিষয় হল, এ সময়ে সিজদার কোনো আয়াত তিলাওয়াত করা যাবে কি? শুনেছি, আসরের পর কোনো নফল নামায পড়া নিষেধ তাহলে সিজদা করাও কি নিষিদ্ধ হবে? দয়া করে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।


Answer

হাঁ, আসরের পর সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করা যাবে এবং সূর্য হলুদ বর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিলাওয়াতে সিজদাও আদায় করা যাবে। কিন্তু সূর্য হলুদ হয়ে গেলে অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সিজদা তিলাওয়াত আদায় করা যাবে না। 

 


-শরহুল মুনয়া পৃ. ২৩৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৭৩-৩৭৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ তারেক সাঈদ - কাকরাইল, ঢাকা

৩২৬৯. Question

আমাদের অফিসে জামাতের সাথে নামায আদায় করা হয়। এতে ইমামতির জন্য একজন হুযুরও আছেন। অসুস্থতার কারণে একদিন তিনি না আসায় আমাদের জিএম স্যার ইমামতি করেন। তিনি কয়েক বছর আগে হজ্ব করেছেন এবং তখন থেকেই দাড়ি রাখছেন। তবে কোমরে ব্যথার কারণে তিনি চেয়ারে বসে নামায আদায় করেন এবং ইশারায় রুকু-সিজদা করেন। সেদিনও তিনি চেয়ারে বসেই নামায পড়িয়েছেন। এতে আমাদের মনে কিছুটা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তাই জানার বিষয় হল, আমাদের ঐ নামায কি সহীহ হয়েছে? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

 


Answer

না, ঐ নামায সহীহ হয়নি। চেয়ারে বসে নামায আদায়কারীর পিছনে সুস্থ ব্যক্তির ইকতিদা করা সহীহ নয়। কারণ চেয়ারে নামায আদায়কারী ইশারায় নামায আদায়কারীর অন্তর্ভুক্ত। আর ইশারায় নামায আদায়কারীর পিছনে সুস্থ ব্যক্তির ইকতিদা সহীহ নয়। অতএব সকল মুকতাদিকে সেদিনের ফরয নামাযটি কাযা করে নিতে হবে। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৮০; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৬০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৭৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ - লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম

৩২৭০. Question

 

আমাদের মহল্লার মসজিদ ভেঙ্গে নতুনভাবে মসজিদ নির্মাণের কাজ চলছে। প্রথম তলা ও দ্বিতীয় তলার ছাদে ফাঁকা রাখতে হবে কি না-এ নিয়ে কমিটির সদস্যদের মাঝে মতানৈক্য হয়েছে। কেউ বলছে, ফাঁকা রাখতে হবে, কেউ বলছে, রাখতে হবে না। এ বিষয়ে শরীয়তের বিস্তারিত হুকুম জানালে উপকৃত হব।

 


 

Answer

একাধিক তলাবিশিষ্ট মসজিদ হলে প্রত্যেক তলায় ইমামের আওয়াজ ভালোভাবে পৌঁছার ব্যবস্থা করা জরুরি। যেন সকল তলা থেকে মুসল্লিগণ নির্বিঘ্নে ইমামের অবস্থা জানতে পারে এবং যথাযথভাবে ইমামের অনুসরণ করতে পারে। বর্তমানে মাইক বা লাউড স্পিকার দ্বারা এ প্রয়োজন অনেকটা পূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু কখনো বিদ্যুৎ চলে গেলে কিংবা মাইকে কোনো সমস্যা হলে সেক্ষেত্রে অন্যান্য তলার মুসল্লিগণ ইমামের অবস্থা জানতে পারবে না। ফলে তাদের নামায নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এমন সময়ও যেন ইমামের অবস্থা উপর থেকে ভালোভাবে জানা যায় এজন্য ইমাম বরাবর প্রত্যেক তলার ছাদে কিছু অংশ ফাঁকা রাখা ভাল। 

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৯৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৪; রদ্দুল মুহতার ১/৫৮৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ রঈসুদ্দিন - পটিয়া, চট্টগ্রাম

৩২৭১. Question

সিজদা আদায়ের ক্ষেত্রে নাক আগে মাটিতে রাখবে নাকি কপাল? এ বিষয়ে হাদীস শরীফের নির্দেশনা কী? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।


 

 

Answer

হাদীস শরীফে নাক ও কপাল দ্বারা সিজদা করার নির্দেশ এসেছে। কিন্তু নাক ও কপালের মধ্যে কোনটি আগে রাখবে-এ বিষয়ের সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা হাদীস-আছারে পাওয়া যায়নি।

অবশ্য ফকীহগণ থেকে এ বিষয়ে দুই ধরনের বক্তব্যই আছে। কোনো কোনো ফকীহ আগে কপাল রাখা অতপর নাক রাখার কথা বলেছেন। যেমন আলাউদ্দীন সমরকান্দী রাহ. (তুহফাতুল ফুকাহা ১/১৩৪), ইমাম কাসানী রাহ. (বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৯২), দামাদ আফেন্দী রাহ. (মাজমাউল আনহুর ১/১৪৭), আলেম ইবনুল আলা রাহ. (ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭২), ইবনে আবেদীন শামী রাহ. (রদ্দুল মুহতার ১/৪৯৮)

আবার কোনো কোনো ফকীহ আগে নাক রাখার কথা বলেছেন। যেমন ফখরুদ্দীন যায়লায়ী রাহ. (তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩০২), যাইন ইবনে নুজাইম রাহ. (আলবাহরুর রায়েক ১/৩১৭), উমর ইবনে নুজাইম (আননাহরুল ফায়েক ১/২১৫), আলাউদ্দীন হাসকাফী রাহ. (আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৯৮)

সুতরাং এ সম্পর্কে যেহেতু সুস্পষ্ট কোনো বর্ণনা নেই এবং ফকীহগণ থেকেও দু ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায় তাই যে কোনোটির উপর আমল করা যাবে। উভয় পদ্ধতিই সহীহ। এর কোনোটিকে ভুল বলা যাবে না।

অবশ্য আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ. সিজদার মধ্যে কপাল আগে রাখার মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আর আল্লামা যফর আহমদ উসমানী রাহ. ইমদাদুল আহকামে এ মতের উপর ফাতাওয়াও দিয়েছেন। (ইমদাদুল আহকাম ১/৪৮৪)

Sharable Link

সেলিম মেহদী - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩২৭২. Question

ইশার নামাযে ইমাম সাহেব সূরা তীন তিলাওয়াতের সময়

 لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ   এরপর إِلَّا الَّذِينَ  পড়া আরম্ভ করলেন। এতে কি নামাযের কোনো ক্ষতি হবে? জানালে উপকৃত হব।


Answer

উক্ত আয়াত ভুলে ছুট যাওয়ার কারণে নামাযের কোনো ক্ষতি হয়নি। কারণ এতে অর্থের বিকৃতি ঘটেনি। সুতরাং নামায সহীহভাবে আদায় হয়েছে।

-আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৩২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আতাউল মাতীন - মহেশখালী, চট্টগ্রাম

৩২৭৩. Question

 

আমাদের দেশে প্রচলিত দুটি বিষয় সম্পর্কে হুযুরের কাছে জানতে চাই-

১. মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর সূরা বাকারার প্রথম এবং শেষের কয়েকটি আয়াত পড়া কি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?  

২. দাফনের পর বা কবর যিয়ারতের পর মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ করা এবং দুআর সময় হাত তোলাও কি সহীহ? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো।  


 


 

Answer

 

(১) : হাঁ, মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার মাথার নিকট সূরা বাকারার প্রথম এবং শেষের কয়েকটি আয়াত পড়া সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আলা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমাকে আমার আববা বলেছেন, বৎস! আমি যখন ইন্তিকাল করব আমার জন্য একটি লাহাদ কবর খনন করবে এরপর যখন আমাকে কবরে রাখবে তখন এই দুআ পড়বে   بسم الله و على ملة رسول الله (অর্থ) আল্লাহর নামে এবং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দ্বীনের উপর আপনাকে দাফন করছি। তারপর আমার কবরে মাটি দিয়ে দিবে এবং আমার শিয়রে সূরা বাকারার প্রথম এবং শেষের কয়েকটি আয়াত পড়বে। কেননা আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উক্ত আয়াতগুলো পড়তে শুনেছি। -তাবারানী কাবীর ১৯ : ২২; মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৬২; আসারুস সুনান, হাদীস ১১০৮

(২) : আর দাফন করার পর বা কবর যিয়ারতের পর মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ করা এবং দুআ করার সময় হাত তোলাও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হযরত ওসমান রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মৃত ব্যক্তিকে কবর দিতেন তখন তার কবরের পাশে কিছুক্ষণ অবস্থান করতেন এবং বলতেন তোমাদের ভাইয়ের জন্য মাগফিরাতের দুআ কর এবং সওয়াল-জওয়াবের সময় অবিচল থাকার দুআ কর। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২১৩

অন্য হাদীসে এসছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি আমি যেন আজও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তাবুক যুদ্ধের সময় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ যুলবিযাদাইন রা.-এর কবরে নেমেছেন, সাথে আবু বকর ও ওমর রা.-ও আছেন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দাফন করার পর কেবলামুখী হয়ে দুহাত তুলে বলছেন- হে আল্লাহ আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট আপনিও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান...। -হিলয়াতুল আউলিয়া ১: ১২২; ফাতহুল বারী ১১/১৪৯

আরেক হাদীসে এসেছে, হযরত আয়শা রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে আমার বাড়িতে ছিলেন। গভীর রাতে তিনি যখন বুঝলেন আমি ঘুমিয়ে পড়েছি তখন আস্তে আস্তে দরজা খুলে বাহিরে বের হলেন। আমি তখনও ঘুমাইনি তাই আমি তাঁর পেছনে পেছনে বের হলাম এবং দেখলাম তিনি বাকীতে গিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং (দুআর জন্য) তিনবার হাত তুললেন...। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৭৪

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর রা. বলেন, হযরত আনাস রা. যখন কোনো মৃত ব্যক্তিকে কবর দিতেন তখন কবরের পাশে দাঁড়াতেন এবং বলতেন, হে আল্লাহ! আপনার বান্দাকে আপনার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে সুতরাং আপনি তাকে দয়া করেন এবং রহম করেন। হে আল্লাহ! তার কবরকে তার জন্য প্রশস্ত করে দিন এবং তাকে উত্তম রূপে কবুল করে নিন। হে আল্লাহ! সে যদি আপনার নেক বান্দা হয়ে থাকে তাহলে তার ছাওয়াব আরো বাড়িয়ে দিন আর যদি সে গুনাহগার হয়ে থাকে তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৩৪; সুনানে বায়হাকী ৩/১৬২; মাজমাউয যওয়ায়েদ ৩/১৬২; ইলাউস সুনান ৮/৩৪২

 

Sharable Link

আহসান হাবীব - আশরাফাবাদ, ঢাকা

৩২৭৪. Question

গত রমযানে আমি একটি রোযা রেখে ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেলেছিলাম। আমাদের ইমাম সাহেবকে ঐ রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন যে, আপনাকে একটি রোযা কাযা করে নিতে হবে এবং কাফফারাস্বরূপ লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। পরবর্তিতে আমি যখন রোযা রাখতে শুরু করবো তখন মনে হল যে, চান্দ্রমাস তো কখনো ঊনত্রিশে হয় আবার কখনো ত্রিশেও হয়। সুতরাং আমি দুই মাস হিসেবে রোযা ৬০ টা রাখবো না আরো কম? তো হুযুরের কাছে আমি এর সমাধান জানতে চাই।

 


Answer

আপনি যদি চান্দ্রমাসের প্রথম তারিখ থেকে কাফফারার রোযা রাখা শুরু করেন তবে পরপর দুই মাস রোযা রাখলেই কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে কোনো চান্দ্রমাস ঊনত্রিশে হওয়ার কারণে ৬০ দিন পূর্ণ না হলেও কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু যদি প্রথম তারিখ থেকে রোযা শুরু না করেন তবে ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোযা রাখতে হবে। 

-আদ দুররুল মুখতার ৩/৪৭৬; মাবসূত ৭/১৪; ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৫১২; আলবাহরুর রায়েক ৪/১০৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ শাওকাত - নোয়াপাড়া, সাবরাং

৩২৭৫. Question

আমার এক বোন তার স্বামী থেকে মহর হিসাবে দেড় লক্ষ টাকা পাবে। কিন্তু তার স্বামী গরীব হওয়ার কারণে মহর আদায় করতে পারছে না। জানার বিষয় হল, আমার ঐ বোনকে কি যাকাত দেওয়া জায়েয হবে?

 


Answer

আপনার ঐ বোনের নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো সম্পদ কিংবা সোনা-রূপার অলংকারাদী নেসাব পরিমাণ না থাকলে তাকে যাকাত দেয়া জায়েয হবে এবং এক্ষেত্রে তাকে যাকাত দেওয়ার কারণে যাকাত আদায়ের পাশাপাশি আত্মীয়কে সহায়তা করারও সওয়াব হবে। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২১৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২১০; রদ্দুল মুহতার ২/৩৪৪

Sharable Link

রাসেল শরীফ - জুরাইন, ঢাকা

৩২৭৬. Question

আমার আববা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন রয়েছে যেগুলোর ফসল ছাড়াই আমাদের খোরাকীর প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়। জমি-জমা ব্যতীত আববার বাড়তি কোনো সম্পদ নেই। জানতে চাই যে, এমতাবস্থায় আমার আববার উপর হজ্ব ফরয হবে কি না?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সংসারের প্রয়োজনে আসে না এমন জমি বা তার অংশবিশেষ বিক্রি করলে যদি হজ্বের খরচ হয়ে যায় তাহলে আপনার আববার উপর হজ্ব করা ফরয। এ ক্ষেত্রে জমি বিক্রি করে হলেও তাকে হজ্বে যেতে হবে। 

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮; কাযী খান ১/২৮২; গুনইয়াতুন নাসিক ২০

Sharable Link

মুহাম্মাদ শহীদুদ্দীন - পুরাতন পুলিশ লাইন, ফেনী

৩২৭৭. Question

জনৈক ব্যক্তি তাওয়াফে বিদা না করে দেশে চলে এসেছে। এখন তার কী করণীয়? আগামী রমযানে তিনি ওমরায় যাওয়ার নিয়ত করেছেন। তখন কি ঐ তাওয়াফে বিদা আদায় করার সুযোগ আছে? বিস্তারিত জানাবেন।

 


Answer

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি ওমরার পর তাওয়াফে বিদা করে নিতে পারবে। এর দ্বারা তার ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে এবং বিলম্বে আদায়ের কারণে কোনো জরিমানা আসবে না। আর যদি সেখানে যাওয়া না হয় তাহলে তাকে তাওয়াফে বিদা না করার কারণে একটি দম দিতে হবে। অর্থাৎ হেরেমের ভিতরে কুরবানীযোগ্য একটি ছাগল বা দুম্বা কারো মাধ্যমে জবাই করতে হবে।

উল্লেখ্য, প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি যদি উক্ত হজ্বের তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াফ করে থাকে তবে তার ঐ তাওয়াফ দ্বারা তাওয়াফে বিদার ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তাকে পুনরায় তাওয়াফ করতে বা দম দিতে হবে না।

-গুনইয়াতুন নাসিক ১৯১; আল বাহরুল আমীক ৪/১৯২০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৩

Sharable Link

আহমাদ নাফীস - আশরাফাবাদ, ঢাকা

৩২৭৮. Question

 

দুই মাস আগে আমার এক সহকর্মীর স্ত্রী মারা যান। মারা যাওয়ার পর এক লোক আমার ঐ সহকর্মীকে বলেছে যে, স্ত্রী মারা গেলে স্বামী আর শাশুড়ির সাথে দেখা দিতে পারে না। এখন আমার সহকর্মী জানতে চাচ্ছে, ঐ লোকের কথা কি ঠিক? স্ত্রী মারা যাওয়ার পর স্বামী কি স্ত্রীর মায়ের সাথে দেখা দিতে পারবে?

 


 

Answer

শাশুড়ি (স্ত্রীর আপন মা) স্থায়ী মাহরামের অন্তুর্ভুক্ত। স্ত্রী মারা গেলে কিংবা তালাকপ্রাপ্তা হলেও স্বামীর জন্য স্ত্রীর মার সাথে দেখাসাক্ষাৎ করা বৈধ এবং তাকে বিবাহ করা হারাম। 

-সূরা নিসা, ৪ : ২৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৬৭; রদ্দুল মুহতার ৩/২৮

Sharable Link

আসেম ওমর - রংপুর

৩২৭৯. Question

আমি ছোট বেলায় যার দুধ পান করেছি তার স্বামীর ছোট বোন অর্থাৎ আমার দুধ মায়ের ননদের সাথে আমার বিবাহের আলোচনা চলছে। গ্রামের এক মুরুববী এসে বললেন, এ বিয়ে শুদ্ধ হবে না। কারণ, সে আমার মাহরাম। আবার অন্য এক মুরুববী বললেন, এতো দূরের সম্পর্কে বিবাহ হতে কোনো সমস্যা নেই। শরীয়তের দৃষ্টিতে এই বিবাহের হুকুম কী? আমার দুধ মাতার ননদের সাথে আমার বিবাহ কি শুদ্ধ হবে?

 


Answer

আপনার দুধ মাতার স্বামী আপনার দুধ পিতা। তার বোন আপনার দুধ সম্পর্কের ফুফু। আপন ফুফুর মতোই দুধ ফুফুর সাথে বিবাহ হারাম। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জন্ম সূত্রের কারণে যাদের সাথে বিবাহ হারাম, দুধের সম্পর্কের কারণেও তাদের সাথে বিবাহ হারাম। 

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৪৪; শরহে মুসলিম, নববী ১০/১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৯৩-৯৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইশতিয়াক - চকবাজার, চট্টগ্রাম

৩২৮০. Question

কয়েক সপ্তাহ আগে আমার ছোট ছেলে জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হলে আমি মান্নত করি আমার ছেলে সুস্থ হলে এক খতম কুরআন শরীফ পড়ব। হুজুরের কাছে জানতে চাই এমতাবস্থায় কি এক খতম কুরআন শরীফ পড়া আমার উপর ওয়াজিব?


Answer

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছেলে সুস্থ হলে এক খতম কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা ওয়াজিব হবে। 

-রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৮; বেহেশতী যেওর ৩/২৪১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আলী মুর্তজা - ইনানী, উখিয়া, কক্সবাজার

৩২৮১. Question

আমরা বিশজন মিলে একটা সংগঠন করেছি। উদ্দেশ্য হল, সবাই সমানভাবে টাকা জমা করে তা নিয়ে শিরকতের পদ্ধতিতে ব্যবসা করবো এবং লাভ সবার মধ্যে সমানভাবে বণ্টন হবে। আর উক্ত টাকা দিয়ে ব্যবসা করার দায়িত্ব আমি বহন করেছি। এজন্য আমি কোনো বেতনও নিই না। গত বছর এক লোককে তিনমাস পর চাল দিবে এই চুক্তিতে পনের হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে দিই। পরে ঐ লোক থেকে চাউল বা টাকা কোনোটা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এখন সংগঠনের বাকি সদস্যরা আমার কাছে এই টাকা দাবি করছে।

জানার বিষয় হল, উক্ত টাকা সম্পর্কে শরীয়তে বিধান কী? এই টাকার দায় কি শুধু আমার উপরই আসবে?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি সংগঠনের শর্ত অনুযায়ী যথাযথ যাচাইয়ের পর ঐ ব্যক্তির সাথে লেনদেন করে থাকেন তবে ঐ ব্যক্তি থেকে টাকা উসূল করা না গেলে তার জরিমানা আপনার উপর আসবে না। বরং তার ক্ষতি সকল সদস্যকেই মূলধন অনুপাতে বহন করতে হবে। কিন্তু যদি যথাযথ যাচাই-বাছাই ছাড়াই দিয়ে থাকেন এবং এ ব্যাপারে আপনার অবহেলা বা ত্রুটি প্রমাণিত হয় তবে এর ক্ষতিপূরণ আপনাকে বহন করতে হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩১৯; আল বাহরুর রায়েক ৫/১৮০; রদ্দুল মুহতার ৪/৩০৫; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ পৃ. ২৫৯, ২৬৩

Sharable Link

মেরাজুল ইসলাম - আল মেহেদী টেইলার্স, লালবাগ, ঢাকা

৩২৮২. Question

মান্যবর মুফতী সাহেব, আমার একটি পাঞ্জাবী টেইলার্সের দোকান আছে। লোকেরা কাপড় ও মাপ দিয়ে যায়। বানানো হলে মজুরী দিয়ে পোশাক নিয়ে যায়। জানার বিষয় হল, অনেকে অর্ডার দিয়ে পরে আর পোশাক নিতে আসে না। কেউ কেউ এক বছর পরে নিতে এসেছে- এমনও হয়েছে। এভাবে আমার টেইলার্সে কিছু জামা প্রস্তুত হয়ে পড়ে আছে। অন্যদিকে অর্ডার রসিদে স্পষ্ট লেখা আছে ডেলিভারির তারিখের দুইমাস বা ষাট দিনের মধ্যে জামা না নিলে পরে যদি তা হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায় তবে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

যেহেতু প্রত্যেকটি প্রস্তুতকৃত জামার মজুরী কারিগরকে পরিশোধ করা দায়িত্ব তাই এসকল কাপড় বিক্রি করে আমার জন্য মজুরী আদায় করার কোনো সুযোগ আছে কি না? পরে অর্ডারকারী আসলে আমার কী করণীয়? আমার অবস্থা বিবেচনা পূর্বক করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত পরামর্শ চাই।

 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা যনুযায়ী ডেলিভারি তারিখের পর দুই মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও যে সব কাপড়ের মালিক আসেনি এবং চেষ্টা করেও মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়নি সেসব কাপড় আপনি বিক্রি করে দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আপনার নির্ধারিত মজুরী রেখে অবশিষ্ট টাকা মালিকের পাওনা হিসাবে আপনার নিকট জমা রাখবেন এবং এর হিসাব কোনো খাতায় লিখে রাখবেন। পরবর্তীতে মালিক আসলে তাকে এ টাকা দিয়ে দিবেন। আর যদি কোনোভাবেই মালিকের সন্ধান পাওয়া না যায় তবে ঐ টাকা সদকা করে দিবেন।

আর ভবিষ্যতে এ সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য অর্ডার দাতার নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার অবশ্যই লিখে রাখবেন। সাথে অর্ডার রশিদে মালিক থেকে এ ব্যাপারে স্বাক্ষরও নিয়ে রাখতে পারেন যে, নির্ধারিত মেয়াদের ভিতর কাপড় না নিলে মেয়াদের পর কর্তৃপক্ষ তা বিক্রি করে দেওয়ার অধিকার রাখবে। 

-আলমাবসূত, সারাখসী ১১/৩; রদ্দুল মুহতার ৪/২৭৮; ফাতহুল কাদীর ৫/৩৫১; আল বাহরুর রায়েক ৫/১৫৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ জাবের রফিক - তালতলা অফিস, টঙ্গি

৩২৮৩. Question

এখন ঢাকা শহরে নতুন গ্যাস সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে অনেকে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থাপনের দিকে ঝুঁকছে। আমার একটি নতুন বাড়িতেও বহুদিন ধরে সংযোগ পাচ্ছি না। এ অবস্থায় আমি কি কিছু টাকা-পয়সা দিয়ে সংযোগ নিতে পারব? এভাবে সংযোগ নিলে তা ব্যবহার করা কি জায়েয হবে? দয়া করে বিস্তারিত জানাবেন।

 


Answer

যথাযথ কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমোদন ছাড়া গ্যাস সংযোগ নেওয়া জায়েয হবে না। কেননা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া গ্যাস ব্যবহার করা চুরির শামিল। তাছাড়া এতে ঘুষ, মিথ্যা, ধোঁকা ইত্যাদির গুনাহ তো আছেই। তাই অবৈধ গ্যাস সংযোগ থেকে বিরত থাকতে হবে।


Sharable Link

মুহাম্মাদ কামাল হুসাইন - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩২৮৪. Question

বিদেশে অনেকে ব্যাংক থেকে লোন নেয়। নেওয়ার সময় ব্যাংক কিছু টাকা কেটে রাখে ইন্সুরেন্স বাবদ। যাতে লোন গ্রহীতা মারা গেলে বা কোনো কারণে দেশে চলে গেলে লোনের টাকা ইন্সুরেন্স পরিশোধ করবে।

জানার বিষয় হল, ইন্সুরেন্স যেহেতু লোন গ্রহীতার অনুপস্থিতিতে লোনের টাকা পরিশোধ করার শর্তে ব্যাংকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় এবং ব্যাংক ইন্সুরেন্স বাবদ একটা নির্দিষ্ট অংকের টাকা লোন গ্রহীতার নিকট থেকে প্রথমেই কেটে রাখে তাই লোন গ্রহীতা লোনের টাকা পরিশোধ না করে যদি দেশে চলে যায় আর চুক্তি অনুযায়ী ইন্সুরেন্স তা পরিশোধ করে তবে কি লোন গ্রহীতা এই ঋণ থেকে দায়মুক্ত হয়ে যাবে? নাকি আখিরাতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হক নষ্টের কারণে জবাবদিহি করতে হবে?

 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ব্যাংকের লোনের উপর ইন্সুরেন্স করা থাকলেও এবং লোন গ্রহীতা টাকা না দিলে ইন্সুরেন্স কোম্পানি তা পরিশোধ করে দিবে- এমন ব্যবস্থা থাকলেও লোন গ্রহীতার জন্য কোনো অবস্থায়ই লোনের টাকা ফেরত না দেওয়া জায়েয হবে না। সর্বাবস্থায় লোনের টাকা ফেরত দেওয়া তার জন্য জরুরি। এ টাকা ফেরত না দিলে অন্যের হক আত্মসাৎ করার গুনাহ হবে। প্রকাশ থাকে যে, সুদি লোন যেমন হারাম তেমনি ইন্সুরেন্সও হারাম। এতে সুদ ও জুয়া দুটিই রয়েছে। কুরআন মাজীদ ও হাদীস শরীফে সুদ ও জুয়ার বিষয়ে কঠোর ধমকি এসেছে। আর সুদের মধ্যে বাহ্যিক দৃষ্টিতে অর্থনৈতিক কিছু সাময়িক ফায়েদা দেখা গেলেও এতে রয়েছে চরম বেবরকতি ও খোদায়ী অভিশাপ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং সদকা বৃদ্ধি করেন। (সূরা : বাকারা : ২৭৬)

তাই অনতিবিলম্বে সকল সুদি কারবার নিষ্পত্তি করা এবং এ থেকে খালেস দিলে তাওবা করা জরুরি।

-জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৬৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২০০৪৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম - ধর্মাদি, বরিশাল

৩২৮৫. Question

আমি যশোরে থাকি। ঢাকার এক লাইব্রেরি থেকে ৩০,০০০/- টাকার কিতাব ক্রয়ের ইচ্ছা করি। সেমতে তার সাথে এ মর্মে চুক্তি হয় যে, আমি তার ঠিকানায় টাকা পাঠাব আর তিনি কোনো ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে কিতাব পাঠাবেন। এরপর চুক্তি অনুযায়ী আমি লাইব্রেরি মালিকের ঠিকানায় ৩০,০০০/- টাকা পাঠাই। আর তিনিও তাদের নিয়ম অনুযায়ী কিতাবগুলো কার্টুনে ভরে তাদের পরিচিত ভ্যানের মাধ্যমে ট্রান্সপোর্টের জন্য পাঠায়। কিন্তু ঘটনাক্রমে ভ্যান থেকে সবগুলো কিতাব ছিনতাই হয়ে গিয়েছে। তাই জানার বিষয় হল, এ ক্ষতির দায় কার উপর বর্তাবে? লাইব্রেরি মালিক কি এই ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন? উল্লেখ্য, অন্য সময়ও এ রকম পরিচিত ভ্যানের মাধ্যমে মালামাল ট্রান্সপোর্টে পাঠানো হত।


 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ক্রেতা তার কিতাবাদি যেহেতু ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য বলেছে এবং বিক্রেতাও তাতে সম্মত হয়েছে তাই ট্রান্সপোর্টে জমা হওয়ার আগ পর্যন্ত তা বিক্রেতার জামানত ও দখলে থাকবে। অবশ্য ট্রান্সপোর্টে জমা দিয়ে রশিদ গ্রহণ করলে বিক্রেতা এর জামানত ও দখল থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় কিতাবগুলো যেহেতু ট্রান্সপোর্টে জমা হওয়ার আগেই ভ্যান থেকে ছিনতাই হয়ে গেছে তাই এটি লাইব্রেরি মালিকের মাল নষ্ট হয়েছে বলেই ধরা হবে। অতএব লাইব্রেরি মালিককে ক্রেতার নির্দিষ্ট মাল পুনরায় পাঠাতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, ক্রেতার কথামতো ট্রান্সপোর্ট বা কুরিয়ার সার্ভিস ইত্যাদি পার্সেল প্রেরণ/বহনকারী কোনো প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়ার পর কোনো মাল হারালে কিংবা নষ্ট হয়ে গেলে বিক্রেতা দায়ী হবে না। এক্ষেত্রে মালের দায়-দায়িত্ব ক্রেতার উপরই বর্তাবে। অবশ্য ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ত্রম্নটির কারণে মাল ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর ক্ষতিপূরণ তাদের জিম্মায় থাকবে।

Sharable Link

শাহাদত - নীলক্ষেত, ঢাকা

৩২৮৬. Question

 

আমাদের গ্রামে অনেক বড় একটি ঈদের মাঠ আছে। সাথে একটি পুকুরও আছে। ঈদের দিন ছাড়া অন্য সময় সেগুলো এমনিতেই পড়ে থাকায় নিষেধ করা সত্ত্বেও অনেক মানুষ মাঠে গরু চরায়। ছেলেরাও তাতে নিয়মিত খেলাধুলা করে। আবার প্রায়ই দেখা যায়, সকাল বেলা কিছু মানুষ মাঠের পুকুর ঘাটে এসে তাদের গাড়ি ধৌত করে। এ কারণে মাঠের ঐ অংশ সব সময় কাদাযুক্ত হয়ে থাকে। জানার বিষয় হল, এ সকল বিষয়ে শরীয়তের নির্দেশনা কী? ঈদের মাঠকে এ ধরনের কোনো কাজে ব্যবহার করা কি বৈধ হবে?

 


 

Answer

ওয়াকফকৃত ঈদগাহ মর্যাদাপূর্ণ ও পবিত্র স্থান। এর পবিত্রতার প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি। এতে খেলাধুলা করা, গরু-ছাগল চরানো, গাড়ি ধোয়া ইত্যাদি ঠিক নয়। কেননা এর দ্বারা ঈদগাহের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এবং গরু-ছাগল চরালে তা অপবিত্রও হয়ে যায়। তাছাড়া এটি যেহেতু ঈদের নামাযের জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে তাই সেখানে উপরোক্ত কাজগুলো করা ওয়াকফের উদ্দেশ্যেরও পরিপন্থী। এ দৃষ্টিকোণ থেকেও ঈদগাহে এ ধরনের কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯১; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬

Sharable Link

আবু বকর মুহাম্মাদ সিদ্দীক - আশুলিয়া, ঢাকা

৩২৮৭. Question

আমি সবার সাথে মাঠে না গিয়ে আমার নিজ বাড়িতে কুরবানী করি এবং  কুরবানীর পশু আমি নিজেই যবাই করি। সবার সাথে মাঠে কুরবানী না করায় এবং হুযুরকে দিয়ে যবাই না করার কারণে শরয়ী কোনো অসুবিধা হয়েছে কি?

 


Answer

সবার সাথে মাঠে গিয়ে কুরবানী করা জরুরি নয়। নিজ বাড়িতে কিংবা প্রত্যেকের সুবিধা মত স্থানে কুরবানী করা যাবে। আর কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা উত্তম। এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হৃষ্ট-পুষ্ট দুটি ভেড়া দিয়ে কুরবানী করেছেন। আমি তাঁকে ভেড়ার উপর কদম মুবারক রেখে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলতে দেখেছি। অতপর তিনি নিজ হাতে ভেড়া দুটি জবাই করেছেন।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২১; কাযী খান ৩/৩৫৫; আদ্ দুররুল মুখতার ৬/৩২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু আজাদ - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩২৮৮. Question

আমি ২১ দিনের মধ্যেই আমার ছেলেসন্তানের আকীকা করতে মনস্থ করেছি। কিন্তু আমার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায়  কোনো অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আকীকার নিয়তে আমি কোনো এতিমখানায় দুটি ছাগল দিতে চাই। আমার পিতামাতা ও শ্বশুর-শাশুড়িও এতে একমত হয়েছেন। তাই জানার বিষয় হল, এভাবে ছাগল দিলে কি আকীকা আদায় হবে? দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণের আলোকে জানাবেন।


 


Answer

আকীকার পশু কোনো প্রতিষ্ঠানে দিলে এবং আকীকার জন্য তা যবাই করা হলে আকীকা আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, আকীকার জন্য অনুষ্ঠান করা জরুরি নয়; বরং আকীকার উদ্দেশ্যে পশু যবাই করলেই তা আদায় হয়ে যায়। আর আকীকার গোশতের ব্যবহার ও বণ্টনের নিয়ম কুরবানীর গোশতের মতোই।

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল মালেক - ধানমন্ডি, ঢাকা

৩২৮৯. Question

আমার পিতার ইন্তেকালের সময় তার একজন স্ত্রী জীবিত ছিলেন। তবে পিতার জীবদ্দশাতেই তার আরো দুইজন স্ত্রী ইন্তেকাল করেন। পিতার মৃত্যুর সময় জীবিত স্ত্রীর এক ছেলে, মৃত স্ত্রী খোদেজা খাতুনের ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে এবং অপর মৃত স্ত্রী তমিজা খাতুনের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে যান। তারা সবাই আমার পিতারই ঔরসজাত। ২০০৭ সালে ওয়ারিসদের মাঝে মিরাস বণ্টন করা হয়েছে এবং মৃতের অপর দুই স্ত্রী আগেই ইন্তেকাল করার কারণে তাদেরকে কোনো অংশ দেওয়া হয়নি।

কিন্তু কিছুদিন আগে একজন বললেন, উপরোক্ত দুই স্ত্রী মৃতের আগে ইন্তেকাল করলেও তারা মৃতের ওয়ারিস হবে এবং জীবিত স্ত্রীর সাথে তারাও মিরাস পাবে। আর তাদের অংশটুকু তাদের সন্তানরা লাভ করবে।

এর ফলে আমাদের মাঝে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই এ বিষয়ে শরীয়তসম্মত সমাধান কামনা করছি।

 


Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় মৃতের বর্তমান স্ত্রী এককভাবে মৃতের সমুদয় সম্পদের এক-অষ্টমাংশ পাবে। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে, (তরজমা) তোমাদের সন্তান না থাকলে তাদের (স্ত্রীদের) জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পদের এক-চতুর্থাংশ। আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের (স্ত্রীদের) জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পদের এক-অষ্টমাংশ; তোমরা যা অসিয়ত করবে তা দেওয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর।-সূরা নিসা (৪) : ১২

প্রকাশ থাকে যে, মৃতের পূর্বে কোনো ওয়ারিস মৃত্যুবরণ করলে সে মৃতের ওয়ারিস হয় না। কেননা ওয়ারিস ঐ ব্যক্তিকেই বলা হয়, যে সংশ্লিষ্ট লোকের মৃত্যুর সময় জীবিত থাকে। তাই এক্ষেত্রে মৃতের পূর্বে মৃত্যুবরণকারী দুই স্ত্রী স্বামীর সম্পদের অংশিদার হবে না। সুতরাং তাদের সন্তানদের জন্য মার অংশ দাবি করা অবৈধ হবে। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মৃতের সমুদয় সম্পদে তার জীবিত ওয়ারিসগণ নিম্নবর্ণিত হারে হিস্যা পাবেন-

১। স্ত্রী =  শতকরা ১২.৫ ভাগ।

২। প্রত্যেক ছেলে = শতকরা ৭.৯৫৪ ভাগ।

৩। প্রত্যেক মেয়ে = শতকরা ৩.৯৭৭ ভাগ।

সুতরাং এ অনুযায়ী সকলের মাঝে সম্পদ বণ্টন করা হয়ে থাকলে কারো জন্য আপত্তি করা ঠিক হবে না। আর এক্ষেত্রে পূর্বে মৃত্যুবরণকারীনী স্ত্রীদের জন্য অংশ দাবি করার শরয়ী বা আইনগত কোনো ভিত্তি নেই।

-সূরা নিসা (৪) : ১২; আহকামুল কুরআন জাসসাস ২/৮০; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/৩৬৪

Sharable Link