মুহাম্মাদ সাদেকুল আমীন - ফেনী

২৭২৯. Question

আমি চামড়ার মোজা পরিধান করলে মুকীম অবস্থায় পূর্ণ একদিন মাসাহ করি। মাঝেমধ্যে অযু থাকাবস্থায় মাসহের সময়সীমা শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় পবিত্রতার জন্য পুনরায় অযু করতে হবে, নাকি মোজা খুলে শুধু পা ধুয়ে নিলেই চলবে?


Answer

অযু থাকা অবস্থায় মোজার উপর মাসহের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে মোজা খুলে শুধু পা ধুয়ে নিলেই চলবে। নতুন করে অযু করা জরুরি নয়। তবে এ অবস্থায় নতুনভাবে অযু করে নেওয়া উত্তম।

-কিতাবুল আছার ১/৫৪; কিতাবুল আছল ১/৯২; আলমাবসূত ১/১০৩; রদ্দুল মুহতার ১/২৭৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আদীব - ময়মনসিংহ

২৭৩০. Question

আমি মসজিদে যাচ্ছিলাম। এমন সময় চড়ুই পাখির বিষ্ঠা আমার শরীরের উপর এসে পড়ে। ফলে পাঞ্জাবি নষ্ট হয়ে যায়। তখন আমি টিস্যু দিয়ে তা মুছে নামায আদায় করে নেই। আমার জানার বিষয় হল, আমার ঐ নামায কি আদায় হয়েছে, না পুনরায় পড়তে হবে?


Answer

আপনার নামায আদায় হয়ে গেছে। পুনরায় পড়তে হবে না। কেননা চড়ুই পাখির বিষ্ঠা অপবিত্র নয়। তবে পরিচ্ছন্নতার জন্য তা ধুয়ে নামায পড়া ভালো।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৬১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩২০; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৯৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৯৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ তাবশীর নাঈম - নোয়াখালি

২৭৩১. Question

আমি মাগরিব নামাযের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ভুলক্রমে সূরা নাস পড়ে ফেলি। পরে দ্বিতীয় রাকাতেও সে সূরাই পাঠ করি। কিন্তু সাহু সিজদা আদায় করিনি।

প্রশ্ন হল, আমার উক্ত নামায সহীহ হয়েছে কি? ফরয নামাযের প্রথম রাকাতে কখনো সূরা নাস পড়ে ফেললে দ্বিতীয় রাকাতে আমার করণীয় কী?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত নামায যথানিয়মেই আদায় হয়েছে। কেননা প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেললে দ্বিতীয় রাকাতেও সূরা নাস পাঠ করা উচিত। তবে ইচ্ছাকৃত ফরযের উভয় রাকাতে একই সূরা পাঠ করা অনুত্তম। অবশ্য এ ভুলের কারণে সাহু সিজদা দিতে হয় না।

-আততাজনীস ১/৪৬৭; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৪০; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬

Sharable Link

এম যুবায়ের হুসাইন - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

২৭৩২. Question

আমরা জানি, দুজন মিলে জামাতে নামায পড়লে মুকতাদি ইমামের ডান পাশে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায় তৃতীয় ব্যক্তি আসলে তার কী করণীয়? সে ইমামের বাম পাশে দাঁড়াবে নাকি পিছনের কাতারে দাঁড়াবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

দুজন মিলে জামাতে নামায পড়া অবস্থায় তৃতীয় কেউ আসলে তার জন্য উত্তম হল, পিছনের কাতারে দাঁড়ানো। আর ইমামের ডান পাশের মুসল্লির উচিত নামায অবস্থায় কিবলামুখী থেকেই পেছনের কাতারে চলে আসা। কিন্তু ডান পাশের মুসল্লি যদি পেছনের কাতারে না আসে এবং এমন মনে হয় যে সে এ অবস্থার কারণীয় সম্পর্কে জানে না তাহলে এক্ষেত্রে ডান পাশের মুসল্লিকে পেছনে আসতে বাধ্য করবে না। কেননা এতে তার নামায নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। বরং সেক্ষেত্রে নিজেই ইমামের বাম পাশে দাঁড়িয়ে যাবে। আর এ অবস্থায় সামনে জায়গা থাকলে ইমামের জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়া ভালো।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৩০১০; রদ্দুল মুহতার ১/৫৬৮; ফাতহুল কাদীর ১/৩০৯

Sharable Link

সালাহ উদ্দীন - সাভার, ঢাকা

২৭৩৩. Question

আমরা হাদীস শরীফে শুনেছি যে, মৃত ব্যক্তিকে দাফন করে লোকজন যখন চলে আসে তখন মুনকার-নাকীর ফেরেশতা এসে মৃত ব্যক্তিকে উঠিয়ে বসায় এবং তিনটি বিষয়ে সওয়াল করে।

জানার বিষয় হল, এখানে মৃত ব্যক্তিকে উঠিয়ে বসানোর অর্থ কী? বাস্তবেই কি বসানো হয় নাকি এর অর্থ ও মর্ম অন্য কিছু? এবং বসালে তার ধরণ কীরূপ হয়? জানিয়ে উপকৃত করবেন।


Answer

সহীহ হাদীসে শুধু এতটুকু আছে যে, কবরে দুইজন ফেরেশতা এসে মৃত ব্যক্তিকে বসাবে এবং কয়েকটি বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করবে।

এখানে কীভাবে বসানো হবে, বসার ধরণ কেমন হবে তা হাদীস শরীফে উল্লেখ নেই। বসার বাহ্যিক রূপ হওয়াটা অবসম্ভব কিছু নয়। এটি তো এ জগতের বিষয় নয়। বরং একটি ভিন্ন জগতের বিষয়, যার নাম ‘বারযাখ’। তাই এটাকে এ জগতের বিষয়ের সাথে তুলনা করলে চলবে না।

এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হল, সহীহ হাদীসে যতটুকু বর্ণিত হয়েছে তা-ই বর্ণনা করা ও বিশ্বাস করা। এর ধরণ বা বাস্তব রূপ কী হবে তা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কে না জড়িয়ে বিষয়টিকে আল্লাহর উপর সোপর্দ করা।

-সহীহ বুখারী ১/১৭৮; শরহু সহীহ মুসলিম, নববী ১৭/২০১; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ৩১৫; মিরকাতুল মাফাতীহ ১/৩১৩; তাসীকনুস সুদূর, আল্লামা সরফরায খান সফদর রাহ.

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইসহাক - ঝালকাঠি

২৭৩৪. Question

আমার স্ত্রীর উপর তার নিজস্ব স্বর্ণালংকারের কারণে যাকাত ফরয। আমাদের বিবাহ হয়েছে প্রায় এক বছর হল। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী আমাকে বলছে যে, আমার অলংকারের যাকাত কিন্তু তুমি আদায় করবে।

আমার প্রশ্ন হল, স্ত্রীর অলংকারের যাকাত কার উপর ফরয? স্ত্রীর সম্পদের যাকাত আদায় করা কি স্বামীর দায়িত্ব?


Answer

স্ত্রীর অলংকারের যাকাত আদায় করা স্ত্রীর উপরই ফরয। যাকাত সম্পদের মালিকের উপরই ফরয হয়। অবশ্য স্বামী যদি স্ত্রীর অনুরোধে বা অনুমতিক্রমে খুশি মনে স্ত্রীর যাকাত আদায় করে দেয় তবে তা আদায় হয়ে যাবে। এবং স্বামী সওয়াবের ভাগী হবে। বরং সামর্থ্যবান স্বামীর জন্য অর্থের সাথে জড়িত ফরযগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীর সহযোগিতা করাই বাঞ্ছনীয়।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৪৭০, ৮/২৩০; আহকামুল কুরআন জাসসাস ৩/১০৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৮; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৫৬০

Sharable Link

মুজীবুল্লাহ - কুমিল্লা

২৭৩৫. Question

আমার এক ভাতিজা মাদরাসায় পড়ে। গত রমযানে আমার যাকাত বাবদ পাঁচ হাজার টাকা তাকে দিয়ে বললাম, তুমি এ টাকাটা তোমাদের মাদরাসার যাকাত ফান্ডে আমার নামে জমা করে দিও। কিন্তু ঘটনাক্রমে মাদরাসায় যাওয়ার পথে টাকাসহ তার ব্যাগটা গাড়ি থেকে চুরি হয়ে যায়। সে বিষয়টি আমাকে পরপরই জানায়। সামনে কয়েক মাস পর আবার রমযান মাস আসছে। আমি রমযানে যাকাত আদায় করি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, গত বছরের ঐ যাকাত কি আমার আদায় হয়েছে? নাকি তা পুনরায় আদায় করতে হবে।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রতিনিধির নিকট থেকে যাকাতের টাকা হারিয়ে যাওয়ার কারণে যাকাত আদায় হয়নি। সুতরাং আপনাকে পুনরায় ঐ যাকাত আদায় করতে হবে। হাম্মাদ রাহ.কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, কারো মাধ্যমে নিজের যাকাতের অর্থ যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করল। কিন্তু ঐ ব্যক্তির নিকট যাকাতের অর্থ পৌঁছার আগেই তা নষ্ট হয়ে গেল। তার সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি ঐ ব্যক্তির মতো যে তার পাওনাদারের নিকট ঋণের অর্থ পাঠাল কিন্তু ঐ অর্থ তার কাছে পৌঁছার আগেই তা নষ্ট হয়ে গেল। (তো এক্ষেত্রে যেমনিভাবে এ ব্যক্তির ঋণ আদায় হয়নি। তেমনিভাবে ঐ লোকের যাকাতও আদায় হবে না।)

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৫৩১; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২১২; আলবাহরুর রায়েক ২/২১১

Sharable Link

ইবরাহীম - রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

২৭৩৬. Question

আমার যাকাতের টাকা স্ত্রীর কাছে একসাথে দিয়ে বলে দেই যে, যারা বাসায় এসে যাকাত চায় বা কোনো অসহায় লোক আসে তাদেরকে এই টাকা থেকে দিবে। সে এই টাকাগুলো ভিন্ন ব্যাগে সংরক্ষণ করে। এবং সেখান থেকে ফকির মিসকীনকে দিতে থাকে। কিন্তু সে দেওয়ার সময় প্রায়ই যাকাতের নিয়ত করতে ভুলে যায়।

এ ব্যাপারে আমার প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে গরিবকে দেওয়ার সময় আমার স্ত্রীর জন্য যাকাতের নিয়ত করতে হবে? যদি সে নিয়ত ছাড়াই যাকাতের এই টাকা দিয়ে দেয় তাহলে তা আদায় হবে কি?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার যাকাত আদায় হয়ে যাবে। কেননা স্ত্রীর কাছে যাকাতের টাকা দেওয়ার সময় যেহেতু আপনি যাকাতের নিয়তেই দিয়ে থাকেন এবং স্ত্রীও তা পৃথকভাবে রেখে মিসকীনকে দেয় তাই এক্ষেত্রে ফকীর-মিসকীনকে দেওয়ার সময় স্ত্রী নিয়ত না করলেও সমস্যা নেই। যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭০-১৭১; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২১০

Sharable Link

আবদুর রহমান - কুমিল্লা

২৭৩৭. Question

এক ব্যক্তি রমযানুল মুবারকের শেষ দশকে মহল্লার মসজিদে ইতিকাফে বসেছে। তার খাবার দাবারের ব্যবস্থা তার নিজ ঘর থেকেই হয়। এছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। আর মসজিদে তার খাবার এনে দেওয়ার মতোও কেউ নেই। এমতাবস্থায় সে কি সাহরী ও ইফতার দু’ বেলা খাবার তার ঘরে গিয়ে খেয়ে আসতে পারবে?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ইতিকাফকারী লোকটির জন্য খাবার পৌঁছে দেওয়ার মতো কেউ নেই তাই সে খাবার আনার জন্য ঘরে যেতে পারবে। কিন্তু ঘরে বসে খাবার খাবে না; বরং সঙ্গে করে নিয়ে এসে মসজিদে বসে খাবে। আর খাবারের জন্য ঘরে গিয়ে বিলম্ব করতে পারবে না; বরং খানা নিয়ে তৎক্ষণাত ফিরে আসবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী ৩৮৪; ইমদাদুল আহকাম ২/১৪৯

Sharable Link

মুস্তাফিজুর রহমান - ঠাকুরগাঁও

২৭৩৮. Question

আমি রোযা অবস্থায় অযু করে কিংবা কুলি করে যখন মুখের পানি ফেলে দিই তখন কয়েকবার থুথু ফেলি। যেন মুখের পানি পুরোপুরি বের হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও আমার মনে হয় মুখে পানি রয়ে গেছে। তখন আবারও কয়েকবার থুথু ফেলি। কখনো আবার তা করি না।

প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? কুলি করার পর কতবার থুথু ফেলতে হবে?


Answer

রোযা অবস্থায় কুলি করার পর মুখের পানি ফেলে দেওয়াই যথেষ্ট। থুথু ফেলতে হবে না। কুলির পানি ফেলে দেওয়ার পর মুখে যে ভেজা ভাব থাকে এতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/২৩৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৩; মারাকিল ফালাহ ৩৬১

Sharable Link

আহমদ - কুমিল্লা

২৭৩৯. Question

আমার মরহুম পিতার উপর হজ্ব ফরয ছিল। তিনি প্রচুর সম্পত্তি রেখে মারা যান। নিজের ফরয হজ্বটা করে যেতে পারেননি। এবং বদলি হজ্ব করার অসিয়তও করে যাননি। ফলে তাঁর পক্ষ থেকে হজ্বের ব্যবস্থা না করেই সকল সম্পত্তি ভাগ করে নিয়েছি। এখন আমি একা তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করার জন্য চাকরির টাকা ও কিছু জমি বিক্রি করে হজ্ব করার মতো টাকা জমা করেছি। আমার নিয়ত হল, আগে পিতার হজ্ব করব এরপর আমার নিজের হজ্ব করব। কেননা আমার ধারণা যে আমার উপর হজ্ব ফরয হয়নি, কিন্তু একজন আলেম বললেন, আমার উপরও হজ্ব ফরয। তাই আগে নিজের হজ্ব আদায় কর। এরপর সম্ভব হলে তোমার পিতার বদলি হজ্ব আদায় করবে।

এখন আমি আমার নিজের হজ্ব আদায় করব নাকি পিতার বদলি হজ্ব আদায় করব? দয়া করে জানাবেন।

 


Answer

ওই আলেম ঠিকই বলেছেন। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার নিজের উপরই হজ্ব ফরয। তাই আগে আপনার নিজের হজ্ব আদায় করা জরুরি। এরপর কখনো সম্ভব হলে পিতার বদলি হজ্ব করবেন। আর আপনার পিতা যদিও বদলি হজ্বের অসিয়ত করে যাননি, কিন্তু তিনি যেহেতু ফরয হজ্ব আদায় না করে ইন্তেকাল করেছেন এবং পর্যাপ্ত সম্পদও রেখে গেছেন তাই তার ওয়ারিশদের উচিত হবে তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করানো। বালেগ ওয়ারিশদের স্বতঃস্ফূর্ত ব্যয়ের মাধ্যমে তার বদলি হজ্ব করানো উচিত। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, এক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমার মা হজ্বের মানত করেছিলেন। তিনি হজ্ব না করেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে হজ্ব করব?

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তাঁর পক্ষ থেকে হজ্ব কর। তোমার কী ধারণা, যদি তোমার মা কারো নিকট ঋণী হতেন তুমি কি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? তোমরা আল্লাহর হক আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহর হক তো আদায়ের বেশি উপযুক্ত।

-সহীহ বুখারী ১/২৪৯; মানাসিক, পৃ. ৪৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১৭৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম - ঢালকানগর, ঢাকা

২৭৪০. Question

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগেই স্ত্রীর সাথে থেকেছে এবং স্ত্রীসূলভ আচরণ করেছে। এরপর তারা তাওয়াফে যিয়ারত ও তাওয়াফে বিদা করার পর দেশে চলে আসে। এখন তাদের উক্ত ভুলের কারণে জরিমানা দিতে হবে কি? এক ব্যক্তি বলেছে, তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব। এটা কি ঠিক?


Answer

প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে জরিমানা-দম ছাগল বা দুম্বা মক্কার হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব প্রশ্নের এ মন্তব্য ঠিক নয়। কেননা মাসআলা হল, উকূফে আরাফার পর হালাল হওয়ার আগে স্ত্রী মিলন হয়ে গেলে প্রত্যেককে একটি করে উট বা গরু জরিমানা দিতে হয়। আর যদি হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগে এই ভুল হয়ে যায় তবে একটি করে ছাগল বা দুম্বা জরিমানা দিতে হয়।

-মানাসিক, পৃ. ৩৩৯; ইলাউস সুনান ১০/৩৪০

Sharable Link

শরীফুল ইসলাম - বরুড়া, কুমিল্লা

২৭৪১. Question

আদর সোহাগ করে বা ভুলে স্বামী স্ত্রীকে বোন বললে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা আছে কি না? এবং এতে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে কি না?

 

Answer

স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধন করা ঠিক নয়। কেননা হাদীস শরীফে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। হাদীসে আছে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করলে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা অপছন্দ করেন এবং এমনটি বলতে নিষেধ করেন। (সুনানে আবু দাউদ ১/৩০১; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৭/১৫২)

সুতরাং এমন সম্বোধন থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে এ কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৮; ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; আলবাহরুর রায়েক ৪/৯৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ শাহাদত হোসাইন - ২১০-২১১ নবাবপুর রোড, ঢাকা

২৭৪২. Question

আমাদের এলাকায় অনেক বিয়েতে বিশাল অংকের মোহরানা ধার্য করা হয়, যা পরিশোধ করা হয় না। অনেক সময় তা পরিশোধ করা ছেলের সাধ্যাতীত থাকে। ধার্যের সময় বলা হয়, মোহরানা দেয়ইবা কে, নেয়ই বা কে? তবে বংশ মর্যাদা অনুযায়ী বড় মোহরানা ধার্য করতে হবে। এটা কি বৈধ?


Answer

বিবাহের সময় যে মোহর ধার্য করা হবে স্বামীকে তার পুরোটাই পরিশোধ করতে হবে। কাবিনে লিখিত পুরো মোহর স্ত্রীর প্রাপ্য হক। যদি বাস্তবে মোহর আদায়ের ইচ্ছা না থাকে বরং শুধু লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে বেশি পরিমাণ মোহর ধরা হয় তবে তা জায়েয হবে না। কিন্তু এরপরও যেই মোহরই ধার্য করা হবে তা পুরোটাই পরিশোধ করতে হবে। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত মোহর ধার্যের সময়ের কথা মোহর দেয়ইবা কে, নেয়ই বা কে-বললেও মোহর হিসাবে যা ধরা হবে তা পুরোটাই আদায় করতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, মোহর ধার্য করার ক্ষেত্রে উত্তম পন্থা হল, স্ত্রীর বংশে তার সমমানের নারীদের বাস্তবসম্মত মোহর এবং স্বামীর আর্থিক সামর্থ্য এ দুটি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে মোহর নির্ধারণ করা এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্ত্রীকে তা পরিশোধ করে দেওয়া।

-রদ্দুল মুহতার ৩/১০২; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৭৫০৭; তাফসীরে কুরতুবী ৫/৬৭; ফাতহুল মুলহিম ৩/৪৭৬; মাজমূ ফাতাওয়া, লাখনবী ৩/৪৮; ইমদাদুল আহকাম ২/৩৬৫

Sharable Link

এম আর জোয়ার্দ্দার - ঈদগাহ পাড়া, চুয়াডাঙ্গা

২৭৪৩. Question

আমাদের গ্রামে ১৫-১৬ বিঘা জমির উপর ২০০ বছরের পুরাতন একটি ওয়াকফিয়া কবরস্থান আছে। কবরস্থানের সব স্থানেই কবর। এ যাবত গ্রামবাসী গ্রামের মাদরাসা-স্কুল মাঠে কিংবা ঈদগাহে জানাযার নামায আদায় করছে। কিছুদিন আগে কবরস্থান কর্তৃপক্ষ ঐ কবরস্থানের এক জায়গায় যেখানে ১৫-২০ বছর থেকে দাফন করা হয়নি। সেখানে জানাযার নামায আদায়ের জন্য সিমেন্ট দিয়ে পাকা মেঝে তৈরি করেছে। প্রশ্ন হল, এভাবে কবরের উপর মেঝে তৈরি করে জানাযার নামায আদায় করা জায়েয হচ্ছে কি?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কবরস্থানের বাইরে ঈদগাহে কিংবা মাদরাসায় মূল মাঠে জানাযার নামায পড়ার সুব্যবস্থা থাকলে কবরস্থানের ভিতর জানাযা আদায়ের পৃথক ব্যবস্থা করা উচিত হয়নি। কেননা ওয়াকফিয়া কবরস্থান কেবলমাত্র দাফনের জন্যই নির্ধারিত। অবশ্য পুরাতন কবরকে সমান করে দিয়ে তার উপর জানাযার নামায পড়লেও তা সহীহ হয়ে যাবে। সহীহ বুখারীতে আনাস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, মসজিদে নববী যে স্থানে নির্মিত হয়েছে সেখানে কোনো এক সময় কবর ছিল। (দেখুন : সহীহ বুখারী ১/৬১)

-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৭৯; শরহুল মুনইয়া ৫৬১; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - বড়ুরা, কুমিল্লা

২৭৪৪. Question

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি তার কিছু জমি মসজিদ ও মাদরাসার উন্নয়নের জন্য মৌখিকভাবে ওয়াকফ করেছিলেন। এবং জমিগুলো মসজিদ-মাদরাসার কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করেছিলেন। তখন থেকে কর্তৃপক্ষ ওয়াকফের স্বার্থে জমিগুলো ভাড়া দিয়ে আসছেন। কিন্তু চেষ্টা সত্ত্বেও দলিল করে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তিন-চার বছর পর ওয়াকফকারীর আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তখন তিনি নিজের বাড়ি এবং তার ওয়াকফকৃত উক্ত জমিগুলোও বিক্রি করে দেন। তবে ক্রেতাকে এখনো দলিল করে দেননি। প্রশ্ন হল, এ পরিস্থিতিতে তার জন্য ওয়াকফকৃত জমিগুলো বিক্রি করা কি বৈধ হয়েছে? আমাদের দাবি হল, সেই জমি যেন আবার ফিরিয়ে দেয়। দ্রুত উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মাদরাসার জন্য জমি দান করে দিয়ে তা আবার অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া খুবই অন্যায় হয়েছে। কারণ মসজিদ-মাদরাসার কর্তৃপক্ষের নিকট জমিটি হস্তান্তর করে দেওয়ার দ্বারা শরীয়তের দৃষ্টিতে ঐ জমির ওয়াকফ সম্পন্ন হয়ে গেছে এবং দাতার মালিকানা থেকে বেরিয়ে তা মসজিদ-মাদরাসার মালিকানায় এসে গেছে। সুতরাং ঐ জমি বিক্রি করা নাজায়েয হয়েছে। এখন তার কর্তব্য ঐ বিক্রি বাতিল করে জমিগুলো মসজিদ-মাদরাসার জন্য ফিরিয়ে দেওয়া এবং দলিলও করে দেওয়া।

-সহীহ বুখারী ১/৩৮৭; ফাতহুল কাদীর ৫/৪১৮, ৪৩২; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৯৮; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৩৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ মুতালিব - রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

২৭৪৫. Question

আমার ফুফাত ভাইয়ের একটি লাইব্রেরি আছে। তাতে বিভিন্ন ধরনের বইপত্র ও লেখাপড়ার সামগ্রী বিক্রি করা হয়। ফুফাত ভাই প্রয়োজনে কোথাও গেলে আমাকে দোকানে রেখে যান। এবং কোনটা কত বিক্রি করব তা বলে যান। আমিও তার বলা দামেই বিক্রি করি। কিন্তু আমি ইচ্ছা করলে ক্রেতার সাথে দরদাম করে কিছু পণ্য আর একটু বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পারি।

এখন আমি যদি তার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা নিজে রেখে দেই তাহলে এটা কি নাজায়েয হবে?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ফুফাত ভাই যে দামে বিক্রি করতে বলবে সে দামে বিক্রি করাই আপনার কর্তব্য। তথাপি কখনো কোনো পণ্য যদি বেশি মূল্যে বিক্রি করেন তবে পুরো টাকাই তাকে দিয়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত মূল্য নিজের জন্য রেখে দেওয়া জায়েয হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৫৭৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১২/৩৭৩

Sharable Link

মাওলানা হুসাইন আহমদ - কায়রো, মিসর

২৭৪৬. Question

সিদ্দীক সাহেব চীন থেকে গার্মেন্টসে তৈরি বিভিন্ন ধরনের মাল নিয়ে এসে মিসরে বিক্রি করেন। যদি চীন থেকে মাল সরাসরি মিসরে নিয়ে আসেন সেক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ মূল্যের উপর ৩০% ট্যাক্স দিতে হয়।

পক্ষান্তরে একই মাল আরবের কোনো দেশ থেকে নিয়ে আসলে ট্যাক্স দিতে হয় মাত্র ৫% থেকে ৭%। সেক্ষেত্রে বিক্রির সময়ও মূল্য অনেক কমে যায়, যা ক্রেতার জন্য সুবিধা হয় এবং তার লাভও একটু বেশি হয়। তাই সিদ্দীক সাহেব চীন থেকে মাল প্রথমে দুবাই নিয়ে আসেন। দুবাই এনে মালগুলোর সব লেভেল খুলে নতুনভাবে মেড ইন ইমারত লেভেল লাগান। পরবর্তীতে একই মাল যখন চীনের পরিবর্তে মেড ইন ইমারত লেভেলে মিসরে যায় সেক্ষেত্রে ট্যাক্স দিতে হয় মাত্র ৭%। এ ধরনের কাজ জায়েয কি না? দয়া করে দলিলসহ জানাবেন।


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী চীন থেকে মাল আনার জন্য এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা শরীয়তসম্মত নয়। কেননা চীনে তৈরিকৃত মালের উপর মেড ইন ইমারত লেভেল লাগানো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ধোঁকার শামিল। তাই এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাহবুবুল্লাহ - গোপালগঞ্জ

২৭৪৭. Question

আমি এক জায়গায় যাওয়ার ইচ্ছা করি। যেখানে আছি সেখান থেকে ঐ গন্তব্যে পৌঁছতে পায়ে হেঁটে ৩/৪ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু ঐ জায়গাটা ভালোভাবে চিনি না এবং এত কাছে তাও জানি না। আমার গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে এমন একটা অটো রিক্সাকে আমি হাত দিয়ে ইশারা দিলেই সে আমার নিকট এসে থামল। রিক্সাটি এমন, যা ৭/৮ জন লোক নিয়ে চলে। দেখলাম ভিতরে একজন লোক আছে বাকি সিটগুলো খালি। আমি তাকে বললাম, অমুক জায়গায় যাবেন? সে কয়েকবার জায়গাটির নাম জিজ্ঞাসা করার পর বলল যাব। আমি বললাম, ভাড়া কত? সে বলল ১০/- টাকা। আমি কিছু কমাতে চাইলে সে রাজি হল না। তখন আমি উঠলাম। আমাদের দুজনকে নিয়ে সে অনেক দূরে চলে গেল। এবং অপর লোকটি যেখানে নামল আমাকেও সেখানে নামতে বলল। আমি বললাম আমি তো অমুক জায়গায় যাব। সে বলল, তা তো অনেক পিছনে রেখে এসেছি। আপনি আর একটি গাড়ি নিয়ে চলে যান এবং সে আমার কাছে ভাড়া চাইল। আমি বললাম, আমার গন্তব্যে পৌঁছে দিন ভাড়া দিব। সে বলল, আমি তো মনে করেছি, আপনি এখানেই নামবেন। কেননা, যেখানে ছিলেন সেখান থেকে তো ওখানে ১ মিনিটের রাস্তা। এতটুকু কেউ গাড়িতে আসে? এরপর সে আমার সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাকে ৫/- টাকা দিতে চাইলাম। কিন্তু সে রাজি হল না এবং গালিগালাজ শুরু করল। আমি রাগ করে তাকে কোনো টাকা না দিয়ে চলে আসি।

প্রশ্ন হল, আমার এ কাজটি কি ঠিক হয়েছে? আমার করণীয় কী ছিল? এবং এখন আমার করণীয় কী? আমি তাকে চিনি না এবং তাকে খুঁজে পাওয়াও মনে হয় অসম্ভব।


Answer

না, আপনার জন্য এমনটি করা ঠিক হয়নি। প্রথমত আপনার গন্তব্যে নেমে যাওয়া আপনার দায়িত্ব ছিল। অথবা গাড়িতে উঠেই আপনি তাকে বলতে পারতেন আমি জায়গাটা চিনি না আপনি আমাকে নামিয়ে দিবেন, কিন্তু আপনি এর কোনোটিই করেননি। সুতরাং এ ব্যক্তির নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ না করে আপনি অন্যায় করেছেন। এখন যদি লোকটিকে পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তবে ১০/- টাকা কোনো গরীবকে সদকা করে দিন।

আরেকটি কথা মনে রাখা দরকার, তা হচ্ছে, রিক্সা, লোকাল বাস ও যাত্রীবাহী ছোট গাড়িগুলোর হেলপার, কন্ট্রাকটরদের অনেকেই থাকে অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত। গাল-মন্দ করা তাদের অনেকের কাছেই সাধারণ বিষয়। তাই এসব ক্ষেত্রে নিজের রাগ সংবরণ করা উচিত। যেন অল্প কিছু টাকার জন্য তারা গালমন্দ করার সুযোগ না পায়। 

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশরাফুল আলম - কেন্দুয়া, নেত্রকোণা

২৭৪৮. Question

কয়েক মাস আগে আমি অসুস্থ ছিলাম। তখন মানত করেছি, সুস্থ হলে আমাদের বাজার মসজিদে একটি আইপিএস কিনে দিব। আলহমাদুলিল্লাহ, আমি এখন সুস্থ হয়েছি। কিছুদিন পূর্বে আমাদের মসজিদে আইপিএস কেনা হয়েছে। এখন আমি অন্য কোনো মসজিদে আইপিএস কিনে দিলে ঐ মানত পুরা হবে কি? দয়া করে জানাবেন।


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার ঐ কথা মূলত নফল দানের ওয়াদা। নির্দিষ্ট মসজিদে না দিয়ে অন্য মসজিদে আইপিএস দিলেও ঐ ওয়াদা পূর্ণ হয়ে যাবে। এতে কোনো অসুবিধা হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪

Sharable Link

আবদুল মান্নান - ঢাকা

২৭৪৯. Question

শুনেছি, কোনো তালিবে ইলম যদি কোনো কবরস্থানের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে তবে আল্লাহ তাআলা তার বরকতে চল্লিশ দিন পর্যন্ত ঐ কবরস্থানের আযাব মাফ করে দেন। এটি কি হাদীস? যদি তা-ই হয় তবে তা কি সহীহ? জানিয়ে উপকৃত করবেন।


Answer

প্রশ্নোক্ত কথাটি হাদীস হিসেবে লোকমুখে প্রচলিত থাকলেও মূলত তা হাদীস নয়। হাদীস বিশারদগণ এটাকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও জাল বলে আখ্যায়িত করেছেন। অতএব এ ধরনের কথা বর্ণনা করা ও প্রচার করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

-আলমাছনূ’ ফী মারিফাতিল হাদীসিল মাওযূ’ পৃ. ৬৫; কাশফুল খাফা ১/১৯৮

Sharable Link

আসিফ হাসান - রাজশাহী

২৭৫০. Question

আমাদের এলাকায় নিয়ম আছে যে, বাচ্চার খতনা করার কিছুদিন পর তার পিতা-মাতা বা অভিভাবক তাদের নিকটাত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবদের দাওয়াত করে। তাতে বড় আকারে খাবারের আয়োজন করা হয় এবং আমন্ত্রিত মেহমানগণ বিভিন্ন ধরনের উপহার-উপঢৌকন দিয়ে থাকে।

জানার বিষয় হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে খতনা উপলক্ষে এ ধরনের দাওয়াতের আয়োজন করার বিধান কী? এবং এমন দাওয়াতে অংশগ্রহণ করার হুকুম কী?


Answer

খতনা উপলক্ষে দাওয়াতের আয়োজন করা একটি মুবাহ কাজ মাত্র। এটি সুন্নত বা মুস্তাহাব নয়। এ উপলক্ষে দাওয়াত করার মধ্যে বিশেষ কোনো ফযীলতও নেই।

হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, একবার হযরত উসমান ইবনে আবুল আছ রা.কে খতনার একটি দাওয়াতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু তিনি তাতে শরীক হতে অস্বীকৃতি জানান। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যমানায় আমরা খতনা উপলক্ষে (কোথাও) যেতাম না এবং সে জন্য আমাদেরকে দাওয়াতও করা হত না। (মুসনাদে আহমদ ৪/২১৭)

তবে কোনো কোনো সাহাবী খতনা উপলক্ষে কখনো খাবারের ব্যবস্থা করেছেন এমন বর্ণনাও আছে।

তাবেয়ী নাফে রাহ. বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বাচ্চাদের খতনা উপলক্ষে খাবার খাওয়াতেন।

অন্য বর্ণনায় আছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর পুত্র সালেম রাহ. বলেন, আমার বাবা আমার এবং নুআইম ইবনে আবদুল্লাহর খতনা করলেন। তিনি এ উপলক্ষে একটি ভেড়া জবাই করলেন। আর আমরা এর গোশত কেটে কেটে বাচ্চাদেরকে দিতে থাকলাম। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৯/৩৪১)

সুতরাং এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, খতনা উপলক্ষে দাওয়াতের আয়োজন করা সাধারণ দাওয়াতের মতো মুবাহ মাত্র। অতএব এতে শরীয়ত গর্হিত কোনো কিছু না হলে এ আয়োজন করা এবং তাতে শরীক হওয়া জায়েয। তবে একে রসমে পরিণত করা যাবে না। আর যদি এ দাওয়াতকে বিশেষ সওয়াবের কাজ মনে করা হয় কিংবা এতে শরীয়ত গর্হিত কোনো কাজ থাকে তাহলে এ আয়োজন করা এবং এতে শরীক হওয়া নাজায়েয।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৯/৩৪১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৫৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১৭৬; আলমুগনী ১০/২০৭; আলইসতিযকার ১৬/৩৫১

Sharable Link

আবু নুমান - শর্শদি মাদরাসা, ফেনী

২৭৫১. Question

আমরা জানি যে, পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। এখন প্রশ্ন হল, পুরুষকে স্বর্ণের গহনা উপহার দিলে সে কি তা উপহার হিসেবে নিতে পারবে? নাকি ব্যবহারের মত তা নেওয়া ও মালিক হওয়াও নিষিদ্ধ?


Answer

পুরুষের জন্য স্বর্ণের গহনা উপহার হিসেবে নেওয়া জায়েয। কেননা পুরষের জন্য শুধু স্বর্ণের ব্যবহার নিষিদ্ধ। মালিক হওয়া নিষিদ্ধ নয়। তাই তারা স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে, অন্যকে হাদিয়া দিতে পারবে এবং নিতেও পারবে।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৪৮৮০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৩২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৫৬৪৯

Sharable Link