মুহাম্মাদ বুরহানুদ্দীন - মাদানী নগর

১৮২৫. Question

আমাদের মহল্লার মসজিদটি বেশ বড়। জুমআর নামায ছাড়া অন্য কোনো ওয়াক্তে মুসল্লী দ্বারা মসজিদ পূর্ণ হয় না। বিদ্যুৎ না থাকলে তাতে গরমের কারণে নামায পড়তে কষ্ট হয়। এ অবস্থায় গরমের তীব্রতা থেকে রক্ষার জন্য ইমাম সাহেব মেহরাব না দাঁড়িয়ে এক কাতার বা দুই কাতার ছেড়ে দাঁড়াতে পারবে কি না? কেউ কেউ এটিকে মাকরূহ বলেন। সঠিক মাসআলা জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

Answer

নামাযে ইমামের জন্য মেহরাবে দাঁড়ানো নিয়ম। বিনা ওজরে মেহরাব ছেড়ে দাঁড়ানো অনুচিত। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অল্প-স্বল্প গরমের কারণে ইমামের জন্য মেহরাব ছেড়ে দাঁড়ানো ঠিক হবে না। তবে যদি গরম এত বেশি হয় যে, মুসল্লীদের নামাযে একাগ্রতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ইমামের জন্য মেহরাব ছেড়ে ঐ বরাবর পেছনে দাঁড়ানো জায়েয হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন ইমামের ডানে-বামে কাতার সমান থাকে।

সুনানে আবু দাউদ ১/৯৯; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৩৬১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫৬৮; রদ্দুল মুহতার ১/৫৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৯; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৫/৩০৭; মাকালাতে কাওছারী পৃ. ১৪৫-১৪৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবুল কাশেম - বাসাবো, ঢাকা

১৮২৬. Question

বিষয় : মসজিদের বর্তমান আয়তন আনুমাণিক ১৫ হাত (উ. দ.) ২৭ (পূ. প.) এর সহিত (১৫হাত উ. দ.) (২০ হাত পূ. প.) সমপ্রসারিত টিনসেট ভবন সংযুক্ত মুসল্লীগণের স্থান সংকুলানের অসুবিধাহেতু এবং কতেক মুসল্লীগণের আসার জন্য চলাচলের পথের দূরত্ব বেশি বোধ হওয়া। উপরোল্লিখিত বিষয় ও কারণে বর্তমান মসজিদ ভবনের সমপ্রসারণ ও উন্নয়ণ ব্যাহত হচ্ছে মর্মে জনমনে আশঙ্কার প্রেক্ষিতে এলাকার উত্তর-পূর্ব কোণায় অবস্থিত বাসস্থানের মুসল্লীগণ কর্তৃক মসজিদ ভবন স্থানান্তরের উদ্যোগী হয়। বর্তমান অবস্থিত বসবত-বাড়ি এলাকার একান্ত অভ্যন্তরে যাতায়াতে দূরত্ব মহিলাদের পর্দা রক্ষা, মসজিদের সীমিত পরিসরে পুকুর ভরাট ব্যতীত উত্তর দক্ষিণে (কাতা/সারি দীর্ঘায়িত করার জন্য) সমপ্রসারন করা সম্ভব হচ্ছে না। ঐ এলাকার জনগণ আর্থিকভাবেও অধিক দান-খায়রাত ও চাঁদার মাধ্যমে বর্ধিত ভবন নির্মাণে অধিকতর অবদান রাখতে পারবে বলেও মতামত প্রকাশ করা হয়। উল্লেখ্য যে, ১। মসজিদ ভবন বসতবাড়ি সংলগ্ন বিধায়, মসজিদে আগত মুসল্লীগণের যাতায়াতে আশ পাশে অনেক সময় মহিলাদের উপস্থিতিতে পর্দা রক্ষার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ২। মসজিদ ভবনের অনতিদূরে কোনো কোনো স্থানে গোয়ালঘর থাকায় মাঝে মধ্যে পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাও কষ্টকর হচ্ছে। ৩। মসজিদ থেকে আবাসিক এলাকার পূর্ব উত্তর কোণের বাসিন্দা অর্থাৎ এক চতুর্থাংশ লোকের জন্য বিদ্যমান দূরত্ব বেশি এবং নতুন/প্রস্তাবিত এলাকায় নতুন ভবন নির্মিত হলে সদর খোলামেলা জনসাধারণের চলাচলের পথি পার্শ্বে অবস্থান হবে, ঐ এলাকাবাসীর যাতায়াত পথ ও কষ্ট হ্রাস হবে এবং সর্বসাধারণের চলাচল পথের পার্শ্বে মুসল্লী স্যাখ্যাও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা। ৪। স্থানান্তরে মসজিদ এলাকার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাংশের জনসাধারণ/মুসল্লীগণের জন্য কোনো সুবিধা হবে না (বরং অসুবিধা হতে পারে বিধায়) তারা এ ব্যাপারে উৎসাহী নয় বলে বোধ হয়। ৫। মসজিদ এলাকার উত্তর-পশ্চিম এলাকায় অবস্থিত মুসল্লীগণের কতক অংশ স্থানান্তরের পক্ষে কতক অংশ স্থানান্তরের উৎসাহী নয় বলে প্রতীয়মান হয়। পুরাতন মসজিদ ভবন নির্মাণকারী মরহুম চৌধুরী পাটারীর স্ত্রী এবং ওয়াকফদাত্রী মেহেরজান ভানু কর্তৃক সম্পাদিত রেজিষ্টার্ড দলিলের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ : ওয়াকফ সম্পত্তি মোতাওয়াল্লী কর্তৃক কাহারও নিকট স্থায়ীভাবে লাগিত পত্তন করতে পারিবে না, করিলে তাহা অগ্রাহ্য ও অশুদ্ধ হইবে। মোতাওয়াল্লী ওয়াফক সম্পত্তি দান বিক্রি বা রেহান বা কোনো প্রকার নামান্তর রূপান্তর এবং যে কার্যে সম্পত্তির হানি জনক হয় তাহা করিতে পারিবে না। মোতাওয়াল্লীর কৃত কার্যের ত্রুটিতে ওয়াকফ সম্পত্তির কোনো অংশের ক্ষতি হইলে মোতাওয়াল্লী তাহার ক্ষতিপূরণ করিতে মুসল্লী ও মহল্লার সরদারগণের নিকট বাধ্য থাকিবে। কোনো মোতাওয়াল্লী অন্যথা করিলে ওয়াকফ সম্পত্তি রেহান দিলে বা দান বিক্রি করিলে গ্রহীতা আমার ওয়াকফ নামার স্বত্ব ও মর্মানু-সন্ধান না করিয়া গ্রহণ করিলে গ্রহীতার পক্ষে তাহা অশুদ্ধ ও অকর্মন্য হইবে। আমার অত্র ওয়াকফ নামা সম্বলিত নিয়ম প্রণালী ও স্বত্ত্বসমূহ আমার কোনো ওয়ারিশগণ স'লবর্ত্তীগণ কর্তৃক কেহ কোনো প্রকার রদবাতিল বা পণ্ড করিতে পারিবে না। তাহা চিরকাল অক্ষুণ্ন ও বলবৎ থাকিয়া কার্যে পরিণত থাকিবে। এতদার্থে ওয়াকফ নামাপত্র লিখিয়া দিলাম। বর্ণিত পরিস্থিতিতে ওয়াকফ নামার শর্তের আলোকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদ্যমান মসজিদ ভবন নতুন স্থানে স্থানান্তরের শরীয়তসম্মত কি না সেই বিষয়ে মতামত/ফতোয় প্রদানের জন্য উপস্থাপন/দাখিল/পেশ করা হইল।

Answer

পূর্ব নৌওয়াগাঁও তিত্তল পাটারীবাড়ি জামে মসজিদ (থানা : রামগঞ্জ, জিলা : লক্ষীপুর) স্থানান্তরের সম্পর্কে উত্থাপিত প্রশ্নপত্রের বিবরণ ও প্রশ্নকারীর মৌখিক বর্ণনা এবং প্রশ্নপত্রের সাথে সংযুক্ত ওয়াকফ দলীলের বিশ্লেষণ দ্বারা যে বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যায় তা নিম্নরূপ : ১। ওয়াকফ দলীলের ৪ নং ধারার শেষাংশ : মোতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তি স্থায়ীভাবে কারো নিকট লাগিত পত্তন করতে পারবে না। করলেও তা অগ্রাহ্য ও অশুদ্ধ গণ্য হবে। ২। ৫নং ধারায় : মোতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তির দান, বিক্রি বা রেহান কিংবা কোনো প্রকার নামান্তর রূপান্তর এবং যে কার্যে সম্পত্তির হানি হয় তা করতে পারবে না। মোতাওয়াল্লীর কৃতকার্যের ত্রুটির কারণে ওয়াকফ সম্পত্তির কোনো অংশে ক্ষতি হলে সে মুসল্লী ও মহল্লার সরদারগণের নিকট তার ক্ষতিপূরণ আদায় করতে বাধ্য থাকবে। কোনো মোতাওয়াল্লী এর অন্যথা করলে ওয়াকফ সম্পত্তি রেহান দিলে বা দান বিক্রি করলে গ্রহীতা ওয়াকফ নামার শর্ত ও মর্মানুসন্ধান না করে গ্রহণ করলে তা অশুদ্ধ ও অগ্রাহ্য হবে। ৩। ৭ নং ধারা : ওয়াকফ নামার নিয়ম-প্রণালী ও স্বত্তসমূহ আমার কোনো ওয়ারিশ বা স'লবর্তীগণের কেউ কোনো প্রকার রদবদল বা পণ্ড করবে না ও করতে পারবে না। তা চিরকাল অক্ষুন্নভাবে বলবৎ থেকে বাস-ব কার্যে পরিণত হবে। ওয়াকফনামার উপরোল্লিখিত ধারাগুলো ও উত্থাপিত বিষয়টির সার্বিক অবস্থা যাচাই-বাছাই এবং বিশ্লেষণপূর্বক নিম্নে প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া হল। প্রথমতঃ শরীয়তসম্মত পন্থায় মসজিদ নির্মিত হয়ে গেলে তা সর্বদার জন্য মসজিদ হিসেবেই থাকবে। এর বিক্রি, স্থানান্তর রদবদল কোনোটিই জায়েয নয। হাদীস শরীফে এসেছে : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানায় তার একটি ভূ সম্পদ সদকা (ওয়াক্‌ফ) করতে চাইলেন। এটি ছিল একটি খেজুর বাগান এবং এর নাম ছিল ‘ছামাগ’। উমর রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি একটি উত্তম সম্পদের মালিক হয়েছি এবং আমি তা সদকা করতে চাই। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তা এভাবে সদকা (ওয়াকফ) কর যে, তা বিক্রি করা যাবে না, দান করা যাবে না এবং এতে উত্তরাধিকার চলবে না। তবে এ থেকে উৎপন্ন ফলফলাদী (নির্ধারিত খাতে) ব্যয় করা হবে। ফলে উমর রা. এভাবে তাঁর উক্ত সম্পদ সদকা করেন যে, তা জিহাদ, দাসমুক্তি, মিসকীন, অতিথি সেবা, মুসাফির এবং আত্মীয়-স্বজনের জন্য (ব্যয়িত হবে)। (সহীহ বুখারী ১/৩৮৭) দ্বিতীয়তঃ প্রশ্নে বর্ণিত ক্ষেত্রে ওয়াকফদাত্রী মহিলা স্পষ্ট ভাষায় ওয়াকফিয়া সম্পত্তির বিক্রি, রদবদল বা অন্য যে কোনো প্রকারের রূপান-র সম্পূর্ণ নিষেধ করে দিয়েছেন। আর শরীয়তে ওয়াকফকারীর শরীয়তসম্মত যে কোনো বৈধ শর্ত গ্রহণযোগ্য ও আমলযোগ্য। এর বরখেলাফ করা যাবে না। ইসলামী ফিকহবিদদের স্বীকৃত মূলনীতি হল : ওয়াকফকারীর (বৈধ) শর্তাবলি শরীয়তের দলীলের ন্যয় অবশ্য পালনীয়। তৃতীয়তঃ প্রশ্নে বর্ণিত ওজর বা সমস্যাগুলোও এমন গুরুতর ও জটিল নয়, যার ভিত্তিতে একটি মসজিদ স্থানান্তরের প্রস্তাব করা যেতে পারে। অতএব এসব দিক ও বিষয়ের বিবেচনায় উক্ত মসজিদ অন্য এলাকায় স্থানান্তরের করা জায়েয হবে না। আর বর্তমান মসজিদে যেহেতু মুসল্লীদের সংকুলান হচ্ছে না তাই উত্তর ও পূর্ব পার্শ্বে পুকুর থেকে মসজিদের যে জায়গা আছে তা ভরাট করে তাতে মসজিদ সমপ্রসারণ করা যেতে পারে। কিংবা প্রয়োজনে বহুতল মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে। এছাড়া অন্য যেসব সমস্যা রয়েছে মহল্লাবাসী ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ যৌথ উদ্যোগে সেগুলো সমাধানের ব্যবস্থা করবে। বিশেষ করে মসজিদে মুসল্লীদের যাতায়াতের দরুণ যেন মহিলাদের পর্দা বিঘ্নিত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধ থেকে মসজিদের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তারপরও যদি কিছু সমস্যা থেকে যায় তবে দ্বীনের খাতিরে তা সহ্য করে নিতে হবে।

মসজিদ স্থানান্তরের: আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৯; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৮৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৮; হিদায়া ২/৬৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৫৮; মাবসূত সারাখসী ১২/৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২৪; ফাতহু কাদীর ৫/৪৪৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৭০; মাজমাউল আনহুর ২/৫৯৬ মসজিদ সমপ্রসারণ : ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৫; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৭৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২১; আলইসআফ ফী আহকামিল আওকাফ পৃ. ৭৪; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৬

Sharable Link

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক -

১৮২৭. Question

একজন লোকের উপর যাকাত ওয়াজিব। তার এক ছেলে মাদরাসায় পড়ে এবং সে বালেগ। তার মাদরাসার পড়াশোনার খরচ কি তার বাবা যাকাতের টাকা থেকে দিতে পারবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

বালেগ সন্তান যাকাত গ্রহণের যোগ্য হলেও পিতা-মাতার যাকাত তাকে দেওয়া জায়েয নয়। পিতা নিজের যাকাতের অর্থ থেকে তাকে পড়ার খরচ দিলে যাকাত আদায় হবে না।

আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৫৮

Sharable Link

চংবিরই, মুখী - গফরগাও, ময়মনসিংহ

১৮২৮. Question

ভাতের মাড় যদি কোনো সুতি কাপড় বা অন্য কোনো কাপড়ে দেওয়া হয় তাহলে সে কাপড় পরে নামায পড়া জায়েয হবে কি না? ভাতের মাড় কি পাক?

Answer

জ্বী, ভাতের মাড় পাক। তা কোনো কাপড়ে দেওয়া হলে তা পরে নামায পড়তে কোনো অসুবিধা নেই।

Sharable Link

চংবিরই, মুখী - গফরগাও, ময়মনসিংহ

১৮২৯. Question

স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া হলে স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে, তুমি আমার বাবা অথবা আমি তোমার মা তাহলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক থাকে কি না?

Answer

এ ধরনের কথা বলা গুনাহ। তবে স্ত্রীর ঐ কথার কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। তাদের বৈবাহিক বন্ধন অটুট রয়েছে।

সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২২১০; আসসুনানুল কুবরা বায়হাকী ৭/৩৬৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০

Sharable Link

চংবিরই, মুখী - গফরগাও, ময়মনসিংহ

১৮৩০. Question

খালাত বা ফুপাত বোনের মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয আছে কি?

Answer

জ্বী, খালাত বা ফুফাত বোনের মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয।

সূরা নিসা : ২৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩০

Sharable Link

চংবিরই, মুখী - গফরগাও, ময়মনসিংহ

১৮৩১. Question

লটারির মাধ্যমে পাওয়া টাকা দ্বারা হজ্ব করা জায়েয আছে কি না?

Answer

কোন ধরনের লটারির মাধ্যমে টাকা পেয়েছেন তা স্পষ্ট করে লিখুন। লটারির অবস্থাভেদে হুকুমের ভিন্নতা রয়েছে।

Sharable Link

মুহাম্মাদ খালেদ - যাত্রাবাড়ি, ঢাকা

১৮৩২. Question

আমাদের এলাকার জনৈক মুরব্বী ওযুতে হাত কনুই থেকে ধোয়া শুরু করেন। তিনি বলেন, এভাবে ধোয়া সুন্নত। কিন্তু আমরা মক্তবে যেভাবে শিখেছি এতে তার কথা উল্টো মনে হয়। হাত ধোয়ার সুন্নত নিয়ম কি এমনই? সঠিক সমাধান জানালে উপকৃত হব।

Answer

ঐ মুরব্বীর কথা ঠিক নয়। অযুতে হাত ধোয়ার সুন্নত নিয়ম হল, আঙ্গুলের অগ্রভাগ থেকে কনুইয়ের দিকে ধৌত করা। কনুই এর দিক থেকে ধোয়া শুরু করা সুন্নত নিয়ম নয়।

সহীহ বুখারী ১/২৮; সহীহ মুসলিম ১/১২; বাদায়েউস সানায়ে ১/১১৪; ফাতহুল কাদীর ১/৩৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ ওমর ফারুক - কাপাসিয়া, গাজিপুর

১৮৩৩. Question

জনৈক ব্যক্তি তার ছেলেকে বললেন, আমার নিকট এখন জমা টাকা নেই। তুমি তোমার টাকা দ্বারা আমার যাকাত আদায় করে দাও। পরে তোমাকে দিয়ে দিব। ছেলে পিতার যাকাত আদায় করে দিল। এখন জানার বিষয় এই যে, ছেলে নিজের টাকা দ্বারা পিতার যাকাত আদায় করার দ্বারা পিতার যাকাত আদায় হয়েছে কি?

Answer

জ্বী, পিতার যাকাত আদায় হয়েছে। কেননা, এক্ষেত্রে ছেলে থেকে টাকা ঋণ নিয়ে তা দ্বারা যাকাত আদায় করা হয়েছে। আর ঋণের টাকা দিয়েও যাকাত আদায় করা যায়।

খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৬২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু হানীফ - সাভার, ঢাকা

১৮৩৪. Question

আমরা সম্পদের উপর এক মাস পূর্বে যাকাতের বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু তখন যাকাত আদায় করিনি। মাসখানেকের মতো দেরি হয়েছে। ইতিমধ্যে আরো কিছু টাকা আমার মালিকানায় এসেছে। জানার বিষয় হল, এই টাকার যাকাতও কি পূর্বের টাকার সাথে এখনই আদায় করতে হবে? না তার উপর বছর পূর্ণ হতে হবে?

Answer

যাকাতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার পর আপনি যে টাকার মালিক হয়েছেন তার যাকাত এখন ফরয নয়; পুনরায় বছর পূর্ণ হলে তখন যে স্থিতি থাকবে তার যাকাত দিতে হবে।

বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৭; মাবসূত সারাখসী ২/১৬৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ শহিদুল্লাহ - মানিকগঞ্জ

১৮৩৫. Question

আমাদের বাড়িতে একটি পিতলের গ্লাস আছে। আমরা তাতে পানি পান করি। কিছু দিন আগে একটি বইয়ে পেলাম যে, পিতলের পাত্রে পানি পান করা নিষেধ। এরপর থেকে আমি ঐ গ্লাসে পানি পান করি না। এ ব্যাপারে সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

Answer

পিতলের পাত্রে পানাহার করা জায়েয আছে। তাই পিতলের ঐ গ্লাসটি ব্যবহার করতে পারবেন।

সহীহ বুখারী ১/৩২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/২০

Sharable Link

মুহাম্মাদ নূর মুহাম্মাদ - ঢাকা

১৮৩৬. Question

দুই বছর পূর্বে চাচাত ভাইদের সাথে ঝগড়া হওয়ায় আমি কুরআন মজীদ হাতে নিয়ে বলেছিলাম, কুরআন মজীদের কসম, আমি চাচাত ভাইদের বাড়িতে আর যাব না। এখন তাদের সাথে আমার ঝগড়া মিটে গেছে। জানতে চাই, কুরআন মজীদের নামে কসম করলে তা কার্যকর হয় কি না এবং আমি তাদের বাড়িতে গেলে আমার কসম ভঙ্গ হবে কি না?

Answer

জ্বী, কুরআন মজীদের কসম করলে কসম সংঘটিত হয়ে যায়। তাই আপনি চাচাত ভাইদের বাড়ি গেলে কসম ভেঙ্গে যাবে এবং কাফফারা আদায় করা ফরয হবে। কসমের কাফফারা হল, দশ জন মিসকীনকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া কাপড় দেওয়া। আর তা সম্ভব না হলে এক নাগাড়ে তিন দিন রোযা রাখা। উল্লেখ্য, কসম একমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্য কোনো জিনিসের কসম করা নাজায়েয। এমনকি কুরআন মজীদের কসম করাও নিষিদ্ধ।

বাদায়েউস সানায়ে ৩/৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ মামুন - মানিকগঞ্জ

১৮৩৭. Question

জনৈক ব্যক্তি ত্রিশ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে একটি মেয়েকে বিয়ে করে এবং তার সাথে বাসর হয়। তবে তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী সূলভ কোনো আচরণ হয়নি। এ অবস্থায় লোকটি তাকে তালাক দেয়। জানতে চাই, মেয়েকে কি ইদ্দত পালন করতে হবে এবং ঐ ব্যক্তিকে কি মোহর দিতে হবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু বাসর হওয়ার পর তালাক দেওয়া হয়েছে তাই মেয়েটির উপর ইদ্দত পালন করা জরুরি এবং লোকটির উপর পূর্ণ মোহর (ত্রিশ হাজার টাকা) দেওয়াও জরুরি। কেননা, ইদ্দত হওয়া এবং পূর্ণ মোহর প্রাপ্তির জন্য স্বামী-স্ত্রী সুলভ আচরণ শর্ত নয়; একত্রে নির্জন কক্ষে অবস্থানই যথেষ্ট।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৯/২০৬; ইলাউস সুনান ১১/৮৯; হিদায়া ২/৩৪৫; ফাতহুল কাদীর ৩/২১৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৩৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫৪৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৫১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুর রহমান - বানারী পাড়া, বরিশাল

১৮৩৯. Question

আমি কয়েক দিন আগে বরিশালের উদ্দেশে সফর করেছিলাম। যাওয়ার সময় সদরঘাট থেকে লঞ্চে উঠলাম। তখন লঞ্চটি ঘাটের সাথে বাঁধা অবস্থায় ছিল। ইতিমধ্যে আসরের সময় হয়ে গেলে আমি কসর নামায পড়িনি; বরং পূর্ণ চার রাকাত পড়েছি। জানতে চাই, আসর নামায পড়া কি ঠিক হয়েছে? উপরোক্ত অবস্থায় কি আমি মুসাফির ছিলাম নাকি মুকীম?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লঞ্চটি ঘাট ত্যাগ না করা পর্যন্ত আপনি মুকীম ছিলেন। তাই ঘাটে থাকা অবস্থায় পূর্ণ নামায আদায় করা সহীহ হয়েছে।

আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯

Sharable Link

ড. মোতাহার হুসাইন -

১৮৪০. Question

আমাদের এলাকার মসজিদে কয়েকদিন আগে একটি মাহফিল হয়েছিল। আসর বাদ মোয়াযযিন সাহেব ঘোষণা দিলেন, আজ ইশার জামাত রাত সাড়ে আটটায় পড়া হবে। রাত আটটা বিশ মিনিটে জনৈক ওয়ায়েজ বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যমানায় ঘড়ি ছিল না। দায়েমী মুসল্লীগণ যখন হাজির হয়ে যেতেন তখন ইকামত দেওয়া হত। আজ এই মাহফিল উপলক্ষে এ সুন্নতকে যিন্দা করার জন্য আমরা এখন জামাত শুরু করে দিব। যেহেতু মসজিদ পূর্ণ হয়ে গেছে তাই ৮ টা ২০ মিনিটে ইকামত হয়ে গেল। মসজিদের দোতলা, তিন তলা তখনও খালি ছিল। জামাত ৮টা ৩০ মিনিটে হবে এ ঘোষণার কারণে যারা নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয়েছে তারা অনেকে জামাত পায়নি। অনেকে মাসবুক হয়েছে। এখন জানতে চাই, দশ মিনিট আগে ইকামত দেওয়ায় সুন্নতে নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিন্দা হল, নাকি ৮ টা ৩০ মিনিটে জামাত শুরু হওয়া উচিত ছিল? যদি ঘড়ির সময় অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় জামাত শুরু করা বেদআত হয়ে থাকে তাহলে প্রত্যেক মসজিদে নামাযের সময়সুচি ঝুলিয়ে রেখে ঘড়ির সময় হিসাবে জামাত শুরু করা কি উচিত হচ্ছে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইশার জামাত পূর্ব ঘোষিত সময়েই শুরু করা উচিত ছিল। কেননা, একে তো পূর্ব ঘোষিত সময়ের আগে জামাত শুরু করার কারণে অনেকেই জামাতে শরিক হতে পারেনি। আর নির্ধারিত সময়ে নামায শুরুর ঘোষণা একটি ওয়াদা। আর বিনা ওযরে ওয়াদা লঙ্ঘন করা গুনাহ। উল্লেখ্য, নামাযের নির্ধারিত সময়সুচি অনুযায়ী নামায পড়া উচিত। ওয়াজ নসীহতের কারণে সময়সুচি হঠাৎ করে পরিবর্তন করা ঠিক নয়। কেননা এতে অনেক নিয়মিত মুসল্লীর জামাত ছুটে যাওয়ার বা কষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম-এর যুগে ঘড়ি ছিল না এ যুক্তি দেখিয়ে তখন জামাতের জন্য সময় নির্ধারিত ছিল না-এ কথা বলা ঠিক নয়। কেননা তখনও বিভিন্ন আলমত লক্ষ্য করে জামাতের সময় নির্ধারণ করা এবং সে অনুযায়ী আযান ও জামাত শুরু হওয়ার বিবরণ বহু হাদীসে রয়েছে। তাই ঘড়ির সময় অনুযায়ী নামাযের সময়সূচি নির্ধারণ করা সুন্নত পরিপন্থী বা বিদআত বলা যায় না।

ফাতহুল বারী ২/৫১; উমদাতুল কারী ৫/৬২; ফয়যুল বারী ২/১২৯; বুলুগুল আমানী ১/২৯১; মাআরিফুস সুনান ১/৭৫; আউনুল মা’বুদ ২/১৭৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৯২; ফাতাওয়া উসমানী ১/৩৯৬

Sharable Link

আবদুল্লাহ - ঢাকা

১৮৪১. Question

আমাদের দেশের বাড়ির সব জমি বর্গা দেওয়া। বর্গাদার ফসলের অর্ধেক পায় আর আমরা অর্ধেক। বর্গাদারের চাষাবাদ বাবদ কোনো খরচ আমরা দিই না। এটাই প্রচলিত নিয়ম। সাধারণত বছরে ২ বার ধান চাষ হয় এবং নতুন ধান ওঠার আগ পর্যন্ত পুরানো ধান বিক্রি করা হয় না। নতুন ধান উঠলে পুরানো ধান বিক্রি করে নতুন ধান গোলায় রাখা হয়। নতুন ধান ঘরে উঠতে প্রায় ৫-৬ মাস সময় লেগে যায়। এখন জানার বিষয় হল : ক) কোনো খরচ না দিয়ে বর্গা দেওয়ার বিধান কী? খ) ধান ঘরে প্রায় ৫-৬ মাস থাকে। তারপর বিক্রি করা হয়। এটা মজুদদারীর পর্যায়ে পড়ে কি?

Answer

ক) হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে বর্গা দেওয়া জায়েয। জমির মালিকের জন্য বর্গা কারবারে খরচ দেওয়া জরুরি নয়। জমি মালিকের শুধু জমি আর চাষীর খরচ ও শ্রম এভাবে বর্গা চুক্তি বৈধ। খ) প্রাপ্ত ফসল এভাবে রেখে দেওয়া নাজায়েয নয় এটা শরীয়তে নিষিদ্ধ মজুদদারীর অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে খাদ্যসঙ্কটের সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ফসল বিক্রি না করে রেখে দেওয়া ঠিক নয়।

বর্গা চুক্তি: সহীহ মুসলিম ২/১৪; হিদায়া ৪/৪২৬; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/২৭৮; ফাতহুল কাদীর ৮/৩৮৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/৩৫২; ঘরে ধান রাখা : ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২১৪; হিদায়া ৪/৪৭১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩০৯; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৬/৩১৬; ফাতহুল কাদীর ৮/৪৯২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৯৯

Sharable Link

মাওলানা আবু আনাস - ঢাকা

১৮৪২. Question

জনৈকা বিধবা মহিলার কয়েকজন নাবালেগ সন্তান আছে। তাদের তিনি নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তার সাংসারিক খরচাদির কোনো ব্যস্থা নেই। তার ভাইরা তাকে সহযোগিতা করে। ভাইরা তার দূরাবস্থা দেখে তাকে যাকাতের টাকা থেকে দিয়ে আসছে। বড় ভাই একথা জানার পর অন্য ভাইদেরকে বললেন, তোমরা যে যাকাত দিচ্ছ তার কোনো টাকা-পয়সা বা গয়নাগাটি আছে কি না জান? তখন ভাইরা বলল, আরে না, সে গয়নাগাটি কোথায় পাবে? আমরা কোনোদিন তাকে গয়নাগাটি পরতে দেখিনি। আর তার সংসারই চলে না। সেখানে তার কাছে জমা টাকা থাকবে কি করে? পরে বোনকে জিজ্ঞাসা করে দেখা গেল তার কাছে ১ তোলা দুই আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন আছে। আর ৬ হাজার টাকা আছে। এখন জানতে চাই, তাকে যাকাত দেওয়া যাবে কি না? যদি যাকাত দেওয়া না যায় তাহলে এত দিন যা দেওয়া হয়েছে তার হুকুম কি? যাকাতদাতাদের যাকাত আদায় হয়েছে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

স্বর্ণের ঐ চেইনের মূল্য এবং ৬ হাজার টাকা মিলে নেসাবের (সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের) চেয়ে বেশি হয়ে যায়। আর এ পরিমাণ সম্পদশালী ব্যক্তিকে যাকাত দেওয়া যায় না। তাই উক্ত সম্পদ থাকা অবস্থায় তার জন্য যাকাত গ্রহণ করা কোনো ক্রমেই বৈধ নয়। তবে প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ভাইগণ এতদিন যেহেতু তাকে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত মনে করেই যাকাত দিয়েছে তাই তাদের বিগত দিনের যাকাত আদায় হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে যেন এ ধরনের ভুল না হয়।

বাদায়েউস সানায়ে ২/১৬৩; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম -

১৮৪৩. Question

আমাদের এলাকার জনৈক ব্যক্তি তার ছেলের নাম ‘আবদুন নবী’ রেখেছে। জানতে চাই, এই নাম রাখা বৈধ কি না? ‘নবীর বান্দা’ অর্থের কারণে ঈমান নষ্ট হবে কি না?

Answer

‘আবদুন নবী’ নাম রাখা জায়েয নয়। হাদীস শরীফে এ ধরনের নাম রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। ‘আবদ’ অর্থ বান্দা গোলাম। মানুষ আল্লাহর বান্দা, রাসূলের নয়। আল্লাহ তাআলার নামের শুরুতেই কেবল ‘আবদ’ সংযোজন করে নাম রাখা যায়। আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান, আবদুল করীম ইত্যাদি। আর আবদ শব্দ যেহেতু অনুগামী অর্থেও ব্যবহৃত হয় তাই এ ধরনের ব্যাখ্যার অবকাশ থাকার কারণে উক্ত নাম রাখা দ্বারা ঈমান নষ্ট হবে না।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১৩/২৪৩; তুহফাতুল মওদুদ পৃ. ১০০; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬২; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১৮

Sharable Link

মীর আবুল কাশেম - পল্লবী, ঢাকা

১৮৪৪. Question

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মাটির তৈরি না নূরের? দয়া করে বিস্তারিত দলীলসহ জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

Answer

হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন সত্ত্বা হিসাবে মানব-সমপ্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তিনি শ্রেষ্ঠ মানব ও সমগ্র মানব-জাতির সরদার। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, বলুন, আমি তোমাদের মতোই একজন মানুষ। আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, যে যেন সৎ কর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।-সূরা কাহাফ,: ১১০ স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি কিয়ামতের দিন আদম সন্তানদের সর্দার হব।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২২৭৮ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্ত্বা হিসাবে যেমন একজন পূর্ণ মানব তেমনি হেদায়েত ও নবুওয়তের নূরের ধারক হিসেবে তিনি বিশ্বমানবতার জন্য পরিপূর্ণ নূর ছিলেন। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব হয়েও নূর। আর এ দুয়ের মাঝে কোনো বৈপরিত্য নেই। কুরআন মজীদ ও হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, হে নবী আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি) আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে ও উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।-সূরা আহযাব : ৪৬ আর মানব সৃষ্টির সম্পর্কে কুরআন মজীদে এসেছে, আল্লাহ তাআলা আদম আ.কে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তাঁর বংশধরের প্রত্যেককেই এক ফোটা পানি থেকে পয়দা করেছেন। সুতরাং আদম সন্তান হিসাবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সৃষ্টিও সেভাবে হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তিনিই তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটি দ্বারা এরপর শুক্রবিন্দু দ্বারা। এরপর জমাট রক্ত দ্বারা। এরপর তোমাদের বের করেন শিশুরূপে। এরপর তোমরা যৌবনে পদার্পণ কর। তারপর বার্ধক্যে উপনীত হও।-সূরা মুমিন : ৬৭ স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বিষয়টির স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। হযরত ওয়াসিলা ইবনে আসকা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ইসমাঈল আ.-এর বংশধর থেকে কিনানাকে মনোনীত করেছেন। এরপর কিনানার বংশধর থেকে কুরাইশকে মনোনীত করেছেন এং কুরাইশের বংশধর থেকে বনী হাশিমকে মনোনীত করেছেন। আর বনী হাশিম থেকে আমাকে মনোনীত করেছেন।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২২৭৬ আবু জাফর বাকির রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার জন্ম বিবাহের মাধ্যমে হয়েছে। আদম থেকে নিয়ে (আমার পিতামাতা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে আমার বংশ পরম্পরা বিবাহের মাধ্যমে চলে এসেছে।) জাহেলিয়াতের কোনো নাজায়েয পদ্ধতি আমাকে স্পর্শ করেনি। আমার জন্ম একমাত্র পবিত্র তরীকায় হয়েছে।-তাবাকাতে ইবনে সা’দ ১/২৬; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৭/৩০৩ সুতরাং কুরআনের ভাষ্য ও হাদীসের বর্ণনার আলোকে প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন মানব এবং সর্বোত্তম মানব। তিনি সকল সৃষ্টির সেরা ব্যক্তি ও নবীকুলের সরদার।

Sharable Link

মুহাম্মাদ আশফাক - সিলেট

১৮৪৫. Question

গত কিছুদিন আগে আমাদের সিলেট শহরে একটি গানের আয়োজন করা হয়েছিল। এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ তাতে বাধা দিলেও তারা তা করেছে। একপর্যায়ে মুসলমান সন্তানদের কেউ কেউ গানকে খুব ভালো বলে হাত তালি দেয়। এতে এলাকার এক লোক বলেন, গুনাহকে ভালো বলার কারণে তাদের ঈমান নষ্ট হয়ে গেছে এবং তাদের বউ তালাক হয়ে গেছে। একথা ঠিক কি না? তাদের এখন করণীয় কী?

Answer

গান গাওয়া, গান শোনা এবং কোনো গানকে ভালো বলা নিঃসন্দেহে কবীরা গুনাহ। হাদীস শরীফে গান শোনা এবং গান গাওয়ার ব্যাপারে কঠোর শাস্তির কথা এসেছে। তবে কোনো গানকে ভালো বললেই ঈমান চলে যাবে একথা ঠিক নয়। কেননা গান ভালো বলার অর্থ এও হতে পারে যে, গানটি তাদের কাছে শুনতে ভালো লাগে। তাই প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী গানের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের তওবা-ইস্তিগফার করা জরুরি। তবে উপরোক্ত কথার দ্বারা তাদের ঈমান নষ্ট হয়নি এবং তাদের স্ত্রীও তালাক হয়নি।

সহীহ বুখারী ৮৩৭; ফাতহুল মুলহিম ২/৪৩৬; ফাতহুল বারী ১০/৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৭৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৪৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ মোস্তফা সোহাইল হেলালী - দরগাহ মাদরাসা, সিলেট

১৮৪৬. Question

...

Answer

শেয়ার সংক্রান্ত আপনার প্রশ্নটি স্পষ্ট নয়। আপনি ফোনে অথবা সরাসরি সাক্ষাতে মাসআলা জেনে নিতে পারেন।

Sharable Link

উম্মে আইমান - ধর্মপুর, কুমিল্লা

১৮৪৭. Question

...

Answer

আপনার প্রশ্নের উত্ত প্রদানের জন্য আপনার প্রথম বিবাহের কাবিননামা ও তালাকনামা দেখতে হবে। এগুলোর অনুলিপি পাঠালে উত্তর দেওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে কোনো ফোন নাম্বার ও পূর্ণ ঠিকানা দিন।

Sharable Link