Jumadal Akhirah 1430   ||   June 2009

অবচেতনে ভুল চিন্তা : দেশের রাজনৈতিক পরিচিতির কারণে আপনজনকে পর মনে করা

মুসলিম উম্মাহ তাওহীদ মিল্লাতে হানীফিয়্যাহর মেলবন্ধনে আবদ্ধ। তাঁরা দ্বীনে তাওহীদ শরীয়তে মুহাম্মদীর অনুসারী, যা আল্লাহ তাআলা আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর নাযিল করেছেন। এই উম্মতের একতার মূল সূত্র হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। এই কালেমায় বিশ্বাসীরা যে ভূখন্ডেরই অধিবাসী হোক, যে ভাষা বর্ণেরই হোক, যে গোত্র সম্প্রদায়েরই হোক পরস্পর ভাই ভাই। তাদের বৈশিষ্ট্য তা- যা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলিম জাতি প্রীতি ভালবাসায় এক দেহের ন্যায়। দেহের এক অঙ্গে কষ্ট হলে গোটা দেহ জ্বর অনিদ্রায় ভুগতে থাকে।’-সহীহ মুসলিম /৩২১

যতদিন ইসলামী খিলাফত অটুট ছিল ততদিন সকল মুসলিম জনপদ একই কেন্দ্রের অধীন ছিল কিন্তু ইসলামী খিলাফত দুর্বল হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পর মুসলিম জনপদগুলোকে বিভক্ত করা হল। সুবিশাল মুসলিম সাম্রাজ্যকে টুকরা টুকরা করে ফেলা হল। এখন যদি এই ভূখন্ডগত বিভক্তির দ্বারা মুসলিম উম্মাহকেও বিভক্ত করে ফেলা যায় তবেই মুসলিম উম্মাহর সর্বনাশের ষোলকলা পূর্ণ হয়। ইসলামের দুশমনরা এই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, বর্তমান অবস্থায় যদিও প্রত্যেক দেশের সীমান্ত রক্ষাও অপরিহার্য কিন্তু এই রাজনৈতিক বিভক্তি যে আমাদের অনেকের মনে এই ধারণা বদ্ধমূল করে দিয়েছে যে, আমরা অন্যান্য মুসলিম দেশের সমস্যাকে নিজেদের সমস্যা মনে করি না, অন্যান্য মুসলিম দেশের বিপদ আপদে আমাদের মনে সামান্য অস্থিরতাও সৃষ্টি হয় না-এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য দ্বীনের মৌলিক চিন্তাধারাকে লালন করা। চিন্তায় আলোচনায় তা পরিমাণ চর্চা করা প্রয়োজন যাতে পরিস্থিতির কারণে আমরা দ্বীনের মৌলিক চেতনা বিস্মৃত না হই।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কালেমায় বিশ্বাসী মুসলিম যেখানেই বাস করুক, আমারই মতো সে আল্লাহর বান্দাসে আল্লাহর যমীনেই বাস করছে। তাওহীদের বন্ধনই মুসলমানদের প্রীতি একতার সবচেয়ে বড় বন্ধন, সবচেয়ে দৃঢ় স্থায়ী বন্ধন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এর হক আদায় করার তাওফীক দান করুন। আমীন। #

 

advertisement