মাকতাবাতুল আশরাফকে ধন্যবাদ
আমি যখন হিফযখানায় পড়ি আল্লাহ তাআলা তখন থেকেই বই পড়ার আগ্রহ দান করেছেন। তখন থেকেই মাকতাবাতুল আশরাফের বইয়ের সাথে আমি পরিচিত। মাকতাবার বইগুলো আমার ভালো লাগে। আলহামদুলিল্লাহ, মাকতাবাতুল আশরাফের প্রকাশিত ‘রাহে মানযিল’ পর্যন্ত অধিকাংশ বই আমার সংগ্রহে আছে এবং ইনশাআল্লাহ অন্য বইগুলোও সংগ্রহ করব।
অনেকদিন থেকে কুরআন করীমের তরজমা পড়ার সময় বাংলা তরজমাগুলো দ্বারা পুরাপুরি তৃপ্তি হচ্ছিল না মর্ম ও ভাষার জটিলতার কারণে। আলকাউসারে মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেব (তাঁর ছায়া আমাদের জন্য দীর্ঘ হোক, আমীন।) এর পরামর্শ ছিল এমদাদিয়া লাইব্রেরি ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তরজমা দেখার। আমার কাছে দ্বিতীয় তরজমাটি ভালো লাগত। তারপরও কোনো কোনো জায়গায় তরজমায় জটিলতা আছে বলে মনে হত। মুফতী তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমকৃত আসান তরজমায়ে কুরআনের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করে মাকতাবাতুল আশরাফ যেন তৃষ্ণার্ত মুসাফিরের হাতে ঠান্ডা পানির পেয়ালা তুলে দিয়েছে। আলকাউসারে বিজ্ঞাপন দেখার পর তা সংগ্রহ করার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলাম। প্রকাশিত হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই তা সংগ্রহ করি এবং পাঠ করতে থাকি। সামনে পরীক্ষা থাকায় এক মাসের মধ্যে তা সমাপ্ত হয়। সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করে আমাদের মনে হল, অন্য অনুবাদের চেয়ে এটি সহজ ও সাবলীল হয়েছে। যেমন: সূরা নিসার ২৩ নং আয়াতের তরজমা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তরজমার চেয়ে সহজ ও সাবলীল। কারণ ইসলামিক ফাউন্ডেশন যে শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করেছে সকল শ্রেণীর পাঠক তা সহজে অনুধাবন করতে পারবে না। আয়াতের তরজমা সহজে বোধগম্যের জন্য ব্যবহৃত বন্ধনী অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এটা যমীর এর মারজে বুঝতে সহায়ক হয়েছে। টীকা-পর্যালোচনাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেমন সূরা মায়িদার ৩৩ নং আয়াতে ডাকাতের শাস্তির যে বিধান বলা হয়েছে তা শুধু তরজমা থেকে বুঝে আসবে না। ২৬ নং টীকায় বিষয়টির উপর দীর্ঘ ও সুন্দর আলোচনা করা হয়েছে।
এভাবে আরো দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা যায়। তবে এ প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ভালবাসা থেকেই আমরা আশা করি, পূর্বের তরজমাগুলোতে যে ভালো দিকগুলো ছিল তা এ তরজমাতেও আনা যেতে পারে। যেমন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে আরবী পাঠ ও বাংলা পাঠ-এ সমতা রক্ষা, পৃষ্ঠার উপরে পারার নম্বর, সূরার নাম এবং মূল ইবারত থেকে টীকাগুলোর হরফ ছোট হওয়া-এটা আমার কাছে সুন্দর মনে হয়েছে। তাই এগুলো বিবেচনা করা যায় কিনা ভেবে দেখতে বলব।
আরেকটি কথা, টীকাগুলোতে কোনটা শানে নুযুল, কোনটা আয়াতের ব্যাখ্যা, কোনটা প্রাসঙ্গিক ঘটনা, বিধান, মাসআলা এগুলো যদি শিরোনাম আকারে এক-দুই শব্দে লিখা থাকত তাহলে বোধ হয় আরো সহজ হত।
আমি যেহেতু একজন তালিবে ইলম তাই আমার কথায় ভুল থাকতে পারে। কোনো কথা ভুল বা আদবের খেলাপ হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
আল্লাহ তাআলা সকল লেখক-পাঠক ও প্রকাশকের সকল আমল কবুল করুন। আমীন।