Shaban-Ramadan 1432   ||   July-August 2011

দ্বীনী বিবেচনায় বাজেট ২০১১-২০১২ : ঘুরে ফিরে সেই একই কথা

Mufti Abul Hasan Muhammad Abdullah

 

অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার পরদিন ১০ জুন ২০১১ শুক্রবারের একটি দৈনিক শিরোনাম করেছে পুরনো কথায় নতুন বাজেট। আমার মতে এ বাক্যটি ছিল যথাযথ ও বাস্তবসম্মত। বর্তমান সরকারের আমলে ঘোষিত তিনটি বাজেট পর্যালোচনা করলে বাক্যটির যথার্থতা ফুটে ওঠবে।

বাজেটের কতগুলো বিষয় এখন এত বেশি গতানুগতিক হয়ে গেছে যে, অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করার আগেই কেউ চাইলে জ্যোতিষী সেজে বড় বড় ভবিষ্যদ্বাণী করে ফেলতে পারবে। যেমন এবারের বাজেটের আকার গত বারের চেয়ে অন্তত ১৫-২০% বেশি হবে। এতে ঘাটতিও থাকবে আগের চেয়ে অনেক বেশি। আগের বছরের এডিপি সংশোধিত করে ছোট করার বিষয়টি রেওয়াজে পরিণত হয়ে গেলেও এবারও বড় সড় আকারের এডিপিই ঘোষিত হবে। বাজেটের অনুন্নয়ন খাতওয়ারি বরাদ্দের ক্ষেত্রে অন্যতম শীর্ষে থাকবে সুদ পরিশোধ খাত। জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ এর উপরে কত পয়েন্ট হল এ নিয়ে থাকবে তীক্ষ্ণ বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ এবং দুচার পয়েন্ট কম বলে ভিন্ন মত পোষণকারীদের প্রতি তীব্র আক্রমণ। আর দেশকে অচিরেই বিশাল উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করে ফেলার রূপকল্প ও প্রতিশ্রুতি। এছাড়া বছরের বিভিন্ন সময়ে গরীবের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য ৫০-৬০% এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে ১০০% বৃদ্ধি পেলেও মূল্যস্ফীতি ৭-৮% এর মধ্যে ধরে রাখার সংকল্পও হয়ত শোনানো হবে।  

উপরে বর্ণিত বিষয় ও কথাগুলো বর্তমান সময়ের বাজেট প্রস্তাবের  প্রায় নিয়মিত অংশ। তাই বাজেট নিয়ে যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করা জটিল কোনো বিষয় নয়, তেমনি এ বিষয়ে বছর বছর নতুন করে লেখারও তেমন কিছু থাকে না। ক্ষমতাসীনরা কারো সুপারিশও আমলে নেন বলে মনে হয় না।  

৯ জুন তারিখে জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতা পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহীত। বাজেটের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫ শত ৮৯ কোটি টাকা। আর রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৩শ ৮৫ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের ব্যবধান তথা ঘাটতি থাকছে ৪৫ হাজার ২ শত চার কোটি টাকা। অর্থাৎ যত টাকা আয় করার চিন্তা করা হয়েছে তার প্রায় ৩৯% অধিক খরচের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়ে গেছে। ৪৫ হাজার কোটি টাকার এ বিশাল অর্থ আহরণ করা হবে দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া সুদি ঋণের মাধ্যমে। আর যথারীতি সে সুদ আদায় করতেই রাখতে হবে পরবর্তী বাজেটের অন্যতম শীর্ষ বরাদ্দ। বর্তমান বাজেটেও ১৮ হাজার কোটি টাকার আর্থিক বরাদ্দ রয়েছে বিগত বছরগুলোর ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য। সাধারণ জনগণ ঋণ করা পছন্দ করুক বা না করুক, সুদ পরিহারের ব্যাপারে আম জনতার নীতি যতই কঠোর হোক, রাষ্ট্র তাদের নামে ঋণ করবেই এবং তাদের দেওয়া প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ করের টাকায়। কাগজে-কলমে যদিও প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের মূল্যবোধ ও মানসিকতাকে আমলে নেওয়ার কোনোই প্রয়োজন অনুভব করা হয় না। শুধু বর্তমান নাগরিকরাই নয়, ভবিষ্যতে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের কাঁধেও প্রতি বছর বাড়ছে ঋণ ও সুদের বোঝা। অথচ রাষ্ট্রীয় খরচাদিতে কৃচ্ছতাসাধন ও অপচয় রোধের মাধ্যমে ঋণনির্ভর বাজেট থেকে বের হয়ে আসা কোনোভাবেই অসম্ভব নয়। শুধু প্রয়োজন সৎ সাহস, আন্তরিকতা এবং আত্মনির্ভরশীল জাতি হওয়ার সুদৃঢ় বাসনা।

নাগরিকদের উপর করের চাপ কিভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে তার সামান্য চিত্র দেখা যাবে ভ্যাটের পরিমাণ দেখলে। ধনী-গরীব এবং আমীর-ফকীর নির্বিশেষে সকলকেই মুল্য-সংযোজিত কর বা ভ্যাট আদায় করতে হয়। এ ভ্যাটের পরিমাণ এবার ৭ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রাক্কলন করা হয়েছে। অন্যদিকে করমুক্ত আয়সীমা নির্ধারিত হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ১৫ হাজারের অধিক আয় করলেই তাকে প্রত্যক্ষ করের আওতায় এসে নিয়মিত রিটার্ণ দাখিল করতে হবে এবং নির্ধারিত ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে। লাগামহীন মূল্যস্ফীতি এবং উচ্চ বাড়ি ভাড়ার এ যমানায় মনে হচ্ছে ১৫ হাজার টাকাও শাসক শ্রেণীর কাছে অনেক বেশি আয়! অন্যথায় কোন যুক্তিতে করমুক্ত আয়সীমা এত কম রাখা হবে।

বাজেটে এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) বাবদ বরাদ্দ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। গতবারের তুলনায় তা ২৮.২% বেশি। আমাদের দেশে সাধারণত অনুন্নয়ন খাতে যা প্রাক্কলন করা হয় বছর শেষে দেখা যায়, তার চেয়ে বেশি খরচ করা হয়েছে। অন্যদিকে উন্নয়ন খাতে (এডিপি) বরাদ্দকৃত অর্থ প্রায় প্রতি বছরেই কাটছাট করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে অদক্ষতা, দলবাজি ও সীমাহীন দূর্নীতিই এ ক্ষেত্রে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়। চলতি অর্থ বছরেও বরাদ্দকৃত এডিপি কমানো হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যেও ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হচ্ছে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে। এত অল্প সময়ে এত টাকা খরচের কসরত যে কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তা অভিজ্ঞ মহলের বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। প্রকৃতপক্ষে দলবাজি ও টেন্ডারবাজি বন্ধ করে প্রকৃত যোগ্য লোকদের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করানো হলে উন্নয়ন বাজেট লক্ষমাত্রায় পৌঁছানো অসম্ভব কিছু নয়।

বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি) বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিগত বাজেটগুলোতে বড় অংকের বরাদ্দ রেখেছিল এবং এ নিয়ে বেশ হাঁক-ডাক করা হয়েছিল, অথচ সে সবের কোনো কিছুই আলোর মুখ দেখেনি।

অর্থমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় আগামীতে জিডিপি (দেশজ উৎপাদন)-এর প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা ধরেছেন ৭ শতাংশ। এ জিডিপি নিয়ে উচ্চ মহলের পন্ডিত ও কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে কি তুলকালাম কান্ডই না ঘটে গেল। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা দাবি করল জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.২-এর বেশি হবে না। অর্থমন্ত্রী বললেন ৬.৭ এর কম নয়। তিনি ঐ সংস্থার লোকদের মুন্ডুপাত করলেন তাদের বক্তব্য টোটালি রাবিশ আখ্যা দিয়ে। প্রতি বছর সরকারি-বেসরকারি মহলের মুখে এ জিডিপির কথা শুনলে, তাদের হিসাব-নিকাশ দেখলে এবং মাথাপিছু আয়ের পরিসংখ্যান দেখলে আমাদের মতো সাধারণ লোকজন নিজেদেরকে আরো বেশি অসহায় এবং বোকা ভাবা শুরু করে। তারা বুঝে যে, তাদের আকল-বুদ্ধি যৎসামান্য যা-ই থাকুক সরকারের কর্তা ব্যক্তি এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতির হিসাব-নিকাশের জাদুকররা ঠিকই তাদেরকে বড় বোকা ভাবে। যে দেশে এখনো এক তৃতীয়াংশ লোক চরম দারিদ্রে্যর মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন উচ্চমূল্য নাভিশ্বাস তুলে সীমিত আয়ের লোকদের, সে দেশের লোকদেরকে বছর বছর প্রবৃদ্ধির হিসাব শোনানোর কি-ই বা অর্থ থাকতে পারে। দিন এনে দিন খাওয়া, কখনো পূর্ণ আহার আবার কখনো অর্ধাহারে দিনাতিপাত করা হত-দরিদ্র লোকজনের কথা না হয় এড়িয়ে গেলেন, (তাদের ভাষায়) সংখ্যাগরিষ্ঠ নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকজনের প্রতিও কি এসব পরিসংখ্যান চরম উপহাস নয়?

আজ (২২ জুন ২০১১) যখন এ লেখাটি লিখছি তখন একটি অনলাইন পত্রিকা খুলে দেখতে পেলাম বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক ঘোষিত ধনী-দরিদ্র ও আয়-ব্যয়ের নতুন প্রতিবেদন। এতে দাবি করা হয়েছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ৩০৬৩৬/- টাকা বা ৪১৮ ইউএস ডলার। তাদের হিসাব অনুযায়ী ২০০৫ এ গড় আয় ছিল ১৭৮৩২ টাকা এবং গড় ব্যয় ব্যয় ছিল ১৪৭৭২/- টাকা। আর ২০১০-এ এসে গড় ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৯৩৬৪/- টাকা। তাদের হিসাব অনুযায়ী ২০০৫-এর তুলনায় ২০১০-এ এসে গড় আয় বেড়েছে ৭২%। পক্ষান্তরে গড় ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৯৯%। একই পত্রিকা ভিন্ন শিরোনামে আরেকটি তথ্যে জানিয়েছে যে, অর্থনৈতিক সমীক্ষার প্রতিবেদনে গড় আয় দেখানো হয়েছে বার্ষিক ৫৭ হাজার টাকার বেশি। পত্রিকাটি প্রশ্ন তুলেছে তাহলে কার তথ্য সঠিক।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরোর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পরিবার প্রতি বর্তমানে দেশের মানুষের গড় আয় ১০৬৪১/-টাকা। আর রেমিটেন্সসহ (অর্থাৎ বিদেশ থেকে পাঠানো টাকাসহ) পরিবার প্রতি গড় আয় ১৯৩৮৭/- টাকা।

দেশের নিম্নবিত্ত দরিদ্র ও হতদরিদ্র লোকজন উপরের প্রতিবেদন মন দিয়ে পড়লে নিশ্চয় তাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে। কোথায় তাদের পরিবার প্রতি আয় ১০৬০০/- টাকা, আর কোথায় প্রতিজনের মাথাপিছু আয় মাসিক ২৫৫৩/- টাকা (মাথাপিছু আয়ে পরিবারের ছোট-বড় সকল সদস্যের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত) অর্থাৎ একজন দিন মজুরের পরিবারে ১০ জন সদস্য থাকলে তার মাসিক আয় ২৫৫৩০/- টাকা, যদিও সে পরিবারে ১ জন অথবা সর্বোচ্চ ২ জন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আছে।

প্রিয় পাঠক! মাথাপিছু আয়-ব্যয়ের উপরোক্ত হিসাব অনেকটা অনুমান নির্ভর হলেও তার কোনো ভিত্তি নেই এমন নয়; বরং উক্ত পরিসংখ্যান এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, দেশে আসলে প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তাই তো গড় ব্যয় ৯৯% বাড়ার পরও তা গড় আয় থেকে কিছুটা হলেও কম। সমস্যা হচ্ছে, সম্পদের সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা না থাকায় তা কুক্ষিগত হয়ে রয়েছে অল্প কিছু লোকের হাতে। যদি সম্পদের সুষম বণ্টন হত তবে মাথাপিছু আয় হয়ত এমনি থাকত, কিন্তু তা শুনতে এত বেমানান লাগত না। কারণ তখন সমাজের অধিকাংশ লোকই দেখত যে ঘোষিত মাথাপিছু  গড় আয়ের সমান না হলেও এর কাছাকাছি পরিমাণ সম্পদ তাদের রয়েছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, সমস্যা মূলত সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও বণ্টনের ক্ষেত্রে, সম্পদের অপর্যাপ্ততায় নয়। পুঁজিবাদী অর্থনীতির মৌলিক সমস্যা এখানেই। আল্লাহ রাববুল আলামীন সকল বান্দার রিযিক ঠিকই দিয়েছেন, কিন্তু তার অধিকাংশটুকুই কুক্ষিগত হয়ে রয়েছে অল্প কিছু লোকের হাতে।

একথাগুলো বাজেট আলোচনা প্রসঙ্গে বলার কারণ হচ্ছে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার কেন ১০ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করলেও বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ দেখালেও গরীব জনসাধারণের ভাগ্য বদলাবে না, যতক্ষণ না অর্থনীতির মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন না করা হয়। দেশের অর্থনীতিকে ইসলামী ধাঁচে সাজানো এবং মানুষের মধ্যে ব্যাপক ধর্মীয় শিক্ষা বিস্তার ও সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে ইনসাফভিত্তিক সমাজ কায়েম করার বিকল্প কোনো পন্থা নেই। কিন্তু বাজেটের ধর্ম বিষয়ক খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ১%-এর কম। যারা বাজেট বক্তৃতার শুরুতে আরবীতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়তে লজ্জাবোধ করেন, যারা সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহর তরজমায় আল্লাহ-এর নাম উচ্চারণ করতে কুণ্ঠাবোধ করে সৃষ্টিকর্তা বলেন, যারা সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস বাক্যটি ছুঁড়ে ফেলা অনিবার্য মনে করেন, তাদের কাছে ইসলামের ইনসাফপূর্ণ অর্থ ও সমাজ ব্যবস্থা আশা করার কি-ইবা মানে হতে পারে। সংবিধানে আল্লাহর নাম বা আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস লেখা থাকলেই ইসলামী অর্থনীতি বাস্তবায়ন হয়ে যাবে না, যেমনটি হয়নি বিগত বছরগুলোতে। তবে এ অংশটুকু ছুঁড়ে ফেলা এক্ষেত্রে আরো বেশি পশ্চাদপদতার প্রমাণ বহন করে বৈকি।

বাজেট থেকে হঠাৎ করে সংবিধান প্রসঙ্গে যাওয়ার কারণ হল, আসলে ঠিক করতে হবে ঐ সংবিধানটিকেই। গোড়া থেকেই বদলে দিতে হবে এই সংবিধান। এ দাবিই এখন সিংহভাগ সচেতন ধর্মপ্রাণ দেশপ্রেমিক নাগরিকের। যদি একটি সংসদই সংবিধানের ৫০-এর বেশি ধারা সংশোধনের পথে এগুতে পারে, যদি একজন বিচারকই সংবিধানের অনেকগুলো বিষয় বাতিল ঘোষণা করতে পারেন তাহলে এটির মর্যাদা যে তাদের কাছে কতটুকু তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

সুতরাং বদলাবেন যখন তখন কাজের কাজটিই করুন। সংবিধান তৈরি করুন কুরআন-সুন্নাহর আলোকে এবং নিশ্চিত করুন ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র, সমাজ ও বিচার ব্যবস্থা। কায়েম করুন ইসলামের সুষম অর্থ ব্যবস্থা। তবেই বছর বছর পেশ করা বাজেট জনগণের কাছে আগ্রহের বিষয় হবে। সেক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বিদেশিদের থেকে কোনো ঋণ বা অনুদান নিতে হবে না এবং তাদের কোনো অযাচিত পরামর্শ-ফরমায়েশও শুনতে হবে না।

আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহে সংশ্লিষ্টদেরকে বিষয়গুলো চিন্তা করার এবং নাগরিকদেরকে সচেতন হওয়ার তাওফীক দিন। আমীন।

 

 

 

advertisement