খবর ... অতঃপর ...
(মন্তব্য : আবুন নূর)
প্রতীক্ষা
অনেকদিন বন্ধ ছিল ‘খবর... অতঃপর...’ বিভাগ। অনেক পাঠক ফোনে বারবার তাগাদা দিয়েছেন এবং প্রতীক্ষায় আছেন।
# এ বিভাগের প্রতি পাঠকের আগ্রহ কতটুকু, তাও তো বোঝা দরকার ছিল।
سَأَطْلُبُ بُعْدَ الدَارِ عَنْكُمْ لِتَقْرُبُوْا
তোমাদের আরো কাছে পেতে চাই বলে চলে গিয়েছিলাম দূরে।
জাতীয়
ভারতে গণতন্ত্র পরিপক্ব, বাংলাদেশে নয় : সিইসি
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১০ জুন ২০২৪
# তাকে তো এখন সাবেক সিইসি বলতে হবে। ভারতে গণতন্ত্র কতটা পরিপক্ব- সেটাও প্রশ্নের বিষয়। সংখ্যালঘুদের ওপর যেভাবে নির্যাতন হয়, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান- মসজিদ, মাদরাসা, গীর্জাগুলোতে যেভাবে আক্রমণ হয় এবং এদেশের মতো কিছু ব্যবসায়ীকে হাত করে অনুগত একদল মিডিয়ার মাধ্যমে যেভাবে মিথ্যাচারের রাজত্ব চলছে, সেখানে যে গণতন্ত্র কতটুকু পরিপক্ব- সেটাও প্রশ্নের বিষয়। তবে বাংলাদেশ থেকে যে অনেক পরিপক্ব সেটা ঠিক।
হাবিবুল আউয়াল বাকি কথা কেন বললেন না? ভারতে তার মতো লোকদেরকে নির্বাচন কমিশনার বানানো হয় না, যারা গণতন্ত্র বিরোধী এবং গণতন্ত্রের নামে, নির্বাচনের নামে প্রহসন চালায়, যারা মিথ্যাচার, ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা করতে রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ভুয়া নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করে। এমন নির্বাচন কমিশনাররা ওখানে নিয়োগ পায় না। সেকারণেই তো সেখানে কিছুটা হলেও পরিপক্ব আর এখানে নয়।
বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে ভারতে অপতথ্যের প্রচার
প্রথম আলো, ১১ আগস্ট ২০২৪
# ভালো। পত্রিকাটি অবশেষে এ বিষয়েও মুখ খুলল। এটা ছাড়াও ভারত সংক্রান্ত কয়েকটা খবর ইদানীং তাদের পত্রিকায়ও এসেছে। অন্তত ভারতের চেহারাটা চেনা যায়, এমন কিছু খবর তারাও দিচ্ছেন। যা এ ধরনের পত্রিকাতে এতদিন অনেক কম পাওয়া যাচ্ছিল।
অপতথ্যের প্রচার ভারত এই প্রথম করছে এমন না। বরাবরই এমনটা করে আসছে। অথচ খোদ আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে কোনো হিন্দু ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেনি। (প্রথম আলো)
তার পরেও ভারতে একাধারে দীর্ঘদিন পর্যন্ত জিগির তোলা হয়েছে। বিশেষ করে হাসিনা তাদের দেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে। এটা হল ভারতের আসল চেহারা। অথচ এদেশের পত্রিকাগুলো! ভারতে যে মুসলিম নির্যাতন হয়, মুসলমানদের ওপর আক্রমণ, মসজিদগুলো ধ্বংস করা হয় আরো কত কী! এ ধরনের বাস্তব সংবাদগুলোও আমাদের দেশের পত্রিকাগুলোতে তেমন একটা পাই না! সেগুলো ভারত বা অন্য কোনো দেশের পত্রিকা থেকে আমাদের জানতে হয়। অন্যদিকে ভারতের পত্রিকাগুলো আমাদের দেশের এই একই ইস্যুতে বানিয়ে বানিয়ে কত শত নিউজ করে ফেলল!
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী আটক
প্রথম আলো, ২৪ আগস্ট ২০২৪
# আটকের পরে তো অনেক কাণ্ডও ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। ডিমের দাম বাড়তি থাকার এসময়েও আদালতে যাওয়ার পথে তার গায়ে অনেকগুলো ডিম অপচয় করা হয়েছে। ভদ্রলোক কেন ভারতে যেতে চেয়েছিলেন এবং যাওয়ার পথে সীমান্তে কেন তিনি শুয়ে পড়েছিলেন?
জানা গেছে, মাত্র ৭০ লাখ টাকা নিয়ে তিনি যেতে চেয়েছিলেন। তার ভাষায় এক ছোকড়া নাকি তার টাকা নিয়ে চলে গিয়েছিল। তাকে ধোঁকা দিয়ে বলেছিল, তাকে বর্ডার পার করে দেবে। পরে নাকি সে টাকা ফেরত পাওয়া গেছে। একজন বিচারপতি মানুষ, যাকে বিচারপতি না বলার কারণে আদালত অবমাননার হুমকি দেওয়া হত। যিনি মানুষকে ভয় দেখাতেন এই বলে যে, অবসরপ্রাপ্ত হলে কী হয়েছে, নামের আগে সবসময় ‘বিচারপতি’ শব্দ যোগ করতে হবে।
সম্ভবত সেই ভয়েই এখনো দেশের বড় বড় পত্রিকাগুলো- যারা মানিকসহ এধরনের মানুষদেরকে আশকারা দিয়েছিল, যে গণমাধ্যমগুলো তাদের হঠকারিতা ও দাম্ভিকতা এবং মানুষের প্রতি তাদের তাচ্ছিল্য ভাবসহ অসংখ্য অপকর্ম দেখেও তাদের প্রমোট করে গিয়েছিল, যারা সবসময় তাদের নামগান গেয়ে গেছে- তারা এখনো এ ধরনের লোকদের নাম খুব সম্মানের সাথে বলে থাকে। তারা কিন্তু একবারও প্রশ্ন তোলে না যে, একজন বিচারপতি যিনি তার নামের আগে ‘বিচারপতি’ শব্দ না যোগ করলে রাগ করেন, যিনি সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি ছিলেন, তিনি কীভাবে দালাল ঠিক করে বর্ডার ক্রস করতে যান? এ প্রশ্ন কেউ করছে না! তিনি এমন কী কী বড় অন্যায় করেছেন, যার কারণে তার এত ভয় যে, ভিসা নিয়ে লিগ্যাল প্রসেসে বিদেশ যেতে চাইলেন না! তাকে কি কেউ বলেছে, বিমানবন্দরে তাকে আটকে দেওয়া হবে! তিনি বর্ডারে কেন গেলেন?
তারপর আবার সঙ্গে করে ৭০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়া! তিনি যে টাকাগুলো নিয়ে রওয়ানা দিয়েছিলেন; এটা দেশের আইনে বৈধ কি না? তার পরও শুনলাম যে, তার জামিন নাকি হয়ে গেছে! এটা কি শুধু তার প্রতি আদালতের অনুকম্পা, নাকি তার নামে যারা মামলা করেছে, তারাই বুঝে শুনে করেছে, যেন তাড়াতাড়ি বের হয়ে যেতে পারেন।
যাইহোক, এখন তার নামে অন্য মামলাও আছে। হয়তো তিনি আরো কিছুদিন কারাগারে থাকবেন। এ ধরনের লোকেরা বাংলাদেশে ছিল এবং এমন লোক আরো আছে বলেই জাতির এই দুর্দশা।
বানোয়াট পরিসংখ্যানের প্রধান পরিকল্পনাকারী লোটাস কামাল
বণিকবার্তা, ২৫ আগস্ট ২০২৪
# এই পরিকল্পনাগুলো- মিথ্যা জিডিপি, মিথ্যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মিথ্যা রপ্তানির হিসাব, মিথ্যা উন্নয়ন- এ সবকিছুর কারিগর তো এরাই ছিল। এখন বলা হচ্ছে, এসব কিছুর পরিকল্পনাকারী লোটাস কামাল ছিল। এটা বাস্তবসম্মতও মনে হয়। কিন্তু প্রশ্নটা হল, এত বছর তাদের এ কথাগুলোর প্রচার দিয়ে গেছে কে? গণমাধ্যমই তো দিয়ে গেছে।
এটা অবশ্য বণিকবার্তার রিপোর্ট। তাদেরকে দোষ দিতে চাইব না। কারণ ওই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বণিকবার্তা বিভিন্ন সময় অন্তত ইশারা-ইঙ্গিতে হলেও তাদের দোষগুলো বলেছিল। অর্থনীতির ফাঁকগুলো, কী কী অন্যায় হচ্ছে, কী কী ক্ষতি হচ্ছেÑ তা নিয়ে আলোকপাত করেছিল। কিন্তু অন্যান্য গণমাধ্যম! তারা কী করেছে?
বাংলাদেশ যখন জ্বলছিল ঢাকেশ্বরী মন্দির পাহারায় ছিলেন মুসলিমরা, নিত্যভোগও হয়েছে
হিন্দুস্তান টাইমস, ২৫ আগস্ট ২০২৪
# একদিকে তো এই খবর। অন্যদিকে ভারতে মোদি সরকারের মন্ত্রী হুমকি দিয়েছে যে, মুসলমানদের তিন লক্ষ মসজিদ তারা ভেঙে দেবে, ধ্বংস করে দেবে। এগুলো নাকি সব অবৈধ মসজিদ! এই হল দুই দেশের পার্থক্য!
আসলে এখন মন্দির পাহারা দিতে হবে কেন? বিগত কথিত সরকারের আমলে এর প্রয়োজন ছিল। কারণ তারা ভোটও নিত সংখ্যালঘুদের থেকে, আবার নিরীহ সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনও চালাত। আপনি যে কোনো নিরীহ ও সাধারণ সংখ্যালঘুকে জিজ্ঞেস করে দেখেন, তার যদি জমি খোয়া গিয়ে থাকে, তাহলে সে বলবে, এটা আওয়ামী নেতা নিয়েছে। তারা ওদের ওপরও ব্যাপক নির্যাতন করে গেছে, সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। এটা বলছি সংখ্যালঘুদের মাঝে যারা নিরীহ ও সাধারণ- তাদের কথা; নেতৃস্থানীয়রা না। তারা তো সরকার থেকে আগ থেকেই বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রেখেছে। তাদের নিরীহদের ওপর সব ক্ষতি তারাই করেছে। সুতরাং এই মন্দিরে হামলা হলে তারাই করত। তবে এবার পাহারা না দিলেও এই মন্দিরগুলো অক্ষতই থাকত। বাংলাদেশের মানুষ এমন হয়নি যে, আরেকজনের মন্দিরে গিয়ে হামলা করবে এবং ভাঙবে। এটা শুধু কুচক্রী ও মতলবাজ লোকদেরই কাজ হতে পারে।
নজরুল ইসলাম মজুমদারকে বাদ দিয়ে এক্সিম ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন
প্রথম আলো, ২৯ আগস্ট ২০২৪
# শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যাংক জগৎ থেকে নিস্তার পেলেন অথবা ব্যাংক জগৎ তার থেকে নিস্তার পেল। তিনি শুধু ওই ব্যাংকেরই চেয়ারম্যান ছিলেন না; বরং ব্যাংক এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান পদও তিনি দখল করে রেখেছিলেন এতদিন পর্যন্ত। কার দাপটে, কার আশকারায় তিনি তা দখল করে রেখেছিলেন সেটা বুঝতে কারো অসুবিধা হবে না। ক্ষমতা ছাড়ার দুই-তিন দিন আগে যখন ব্যবসায়ীদেরকে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেকে আনে এবং তার অপকর্মের পক্ষে তাদেরকে পাওয়ার জন্য বক্তব্য দেয়, তো সেখানে যে দুই-তিনজন আগ্রাসী বক্তব্য দিয়েছিল, তাদের মধ্যে একজন ছিল এই নজরুল ইসলাম মজুমদার।
অনেকেই আওয়ামী লীগের কারো মাথায় টুপি ও দাড়ি দেখলে এবং কেউ মাদরাসা করেছে শুনলে মনে করে ফেলে, উনি মনে হয় ভালো আওয়ামী লীগার। মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগার আওয়ামী লীগারই। দাড়ি-টুপিওয়ালাগুলোরই এই অবস্থা! সেদিন তিনি কী বক্তব্য দিয়েছিলেন সেটা সকলেরই জানা আছে।
এদেশের বড় শিল্পগোষ্ঠীর দাবিদার, যিনি আগে ভূমি ব্যবসা দিয়ে বড় হয়েছেন, তাদের নামে বিভিন্ন খেতাবও মানুষের মুখে মুখে আছে, সে গ্রুপের কর্ণধার এবং নাসা গ্রুপের এই মজুমদার সাহেব ও বেক্সিমকো প্রধান- তারা তিনজন সেদিন যে বক্তব্য দিয়েছিলেন- তা ফলাও করেই প্রচার করা হয়েছে।
এ তিনজন সেদিন আগ্রাসী বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং জুলুম-নিপীড়ন বহাল রেখে সরকারকে সেদিন শক্ত হাতে দমনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। এমনিতে তো আর তারা এসব বলেননি। তারা যে মিঠাইগুলো পেতে থাকে এবং সরকারের সাথে যোগসাজশ করে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা তারা নিতে পেরেছে, এতদিন পর্যন্ত ব্যাংক জগৎকে তারা দখল করে রেখেছে, সেটারই প্রতিদান ছিল সেদিনের ঐ চাটুকারিতা।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৪৯ শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে
প্রথম আলো, ৩১ আগস্ট ২০২৪
# খবরটা যারা দিয়েছেন, তারা বিষয়টা বিশ্লেষণ করেছেন কি না। এই সংখ্যালঘু শব্দটা এখানে ঠিক আছে কি না? পদত্যাগ তো দেশের অনেক ভিসিও করেছে। অন্য অনেক শিক্ষকও করেছে। তারা কারা ছিল? যারা এতদিন পর্যন্ত ইতিহাসের নিকৃষ্টতম দুর্নীতি ও শিক্ষাবিরোধী কাজে লিপ্ত ছিল, যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজের ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছিল, যারা নিজেদের লোকদের নিয়োগ দেওয়া, অন্যদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো ইত্যাদি নানা অপকর্মে বছরের পর বছর জড়িত ছিল, যারা দলীয় বাহিনীর ছাত্র ছাড়া অন্যদের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি; বরং বিভিন্ন নামে এদেরকে দমন-পীড়নের জন্য দলীয় গুণ্ডাবাহিনী লাগিয়ে রেখেছিল। তারাই তো বিভিন্ন জায়গার ভিসি ও অন্যান্য দায়িত্বশীল পদ থেকে পদত্যাগ করেছে বা তাদেরকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে; এখন যাদেরকে বলা হচ্ছে- সংখ্যালঘু সম্প্রদায়!
‘সংখ্যালঘু’ হওয়ার কারণে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন, নাকি তারা ওই স্বৈরাচারের দোসর ও দালাল হওয়ার কারণে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন! সেটা কি একটু খতিয়ে দেখা দরকার না? তাহলে কি সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের অসংখ্য ভিসি, প্রিন্সিপাল এবং শিক্ষক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন?
মনিরুলের আনা ২৫ কোটি টাকা গেল কোথায়?
মানবজমিন, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# সেটাই তো প্রশ্ন। এত টাকা গেল কোথায়? হয়তো তার লোকেরাই খেয়েছে। মনির তখন এসবি প্রধান ছিল। তার সাথে আরো যারা সহকারী হিসেবে ছিল, এগুলো ভাগ-বটোয়ারা করার দায়িত্বে যারা ছিল, তারাই নিয়েছে। কারণ তখন তো মনিরের দপ্তরে বাইরের কোনো লোক যাওয়ার সুযোগ ছিল না।
কিন্তু এ কথাটা জানা দরকার, এ টাকাগুলো কীসের? এখান থেকেই একটা নমুনা পাওয়া যাবে, একদিনেই একটা এসবির কার্যালয়ে ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এরকম খবর বেরিয়েছে, বস্তায় বস্তায় টাকা গণভবনে জমা করা হয়েছিল, যেন আন্দোলনকারীদের দমানো যায়, তাদেরকে মেরে শেষ করা যায়। সেজন্য সে টাকা বিভিন্নজনকে ভাগ করে দেওয়া হবে।
এটা অনেকের হয়তো জানা নেই, এ ধরনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে রাষ্ট্র যে টাকা দেয়, তার কোনো হিসাব তাদেরকে দিতে হয় না। তারা শুধু টাকা আনে আর কাজের দায়িত্ব নেয়। সেটা কোথায় কত খরচ করা হল, কাকে কী পরিমাণ দেওয়া হল, সেটার কোনো হিসাব তাদের দিতে হয় না। শুধু এসবি না, আরো একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার ক্ষেত্রে একথা প্রযোজ্য।
তো একদিনেই একজন এসবির লোক ২৫ কোটি টাকা এনেছে! অন্য এজেন্সিগুলো কত পেয়েছে! তারা নিয়মিত এভাবে রাষ্ট্রের কত হাজার কোটি টাকা নিয়ে নিয়ে ক্ষমতাসীনদের যারা সমালোচক ও বিরোধী তাদের বিপক্ষে খরচ করেছে, এটার হিসাব হয়তো কোনো সময় ঠিকই বেরিয়ে আসবে।
সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় ছিল দুই সরকারের মাঝে, জনগণের মাঝে এ সম্পর্ক চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মাদ তৌহিদ হোসেন
প্রথম আলো, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# হাঁ, কথা তো একেবারেই ঠিক। এই সম্পর্কটাকে তিনি ‘সোনালি’ শব্দে ব্যক্ত করেছেন। সাধারণত ‘সোনালি’ শব্দ ভালো ক্ষেত্রেই হয়তো ব্যবহৃত হয়। বলা যায়, সেটা ছিল ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব। মোদি-হাসিনা বন্ধুত্ব। একই মেজায, একই চরিত্র, দমন-পীড়নের একই নমুনা! তো সবাই জানে যে, সম্পর্কটা কাদের মাঝে ছিল।
উপদেষ্টা মহোদয় জনগণের মাঝে এ সম্পর্ক চেয়েছেন। এটা সকলেরই চাওয়া। প্রতিবেশী হিসেবে তাদের সাথে বাংলাদেশের মানুষের সুসম্পর্ক থাকবে, সৌহার্দ্য থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক। তাদের দেশের যেসব ধর্মের লোকেরা আছে, বাংলাদেশেও সেসব ধর্মের লোকেরা আছে। ইতিহাস-ঐতিহ্য অনেক কিছুর ক্ষেত্রেই তো কাছাকাছি এই দুই দেশ। কিন্তু সম্পর্কটা হওয়া উচিত ছিল কেমন? পারস্পরিক বোঝাপড়া ও লেনদেনের ভিত্তিতে।
সম্পর্কটা যদি হয় একতরফা, খালি আপনি দিতে থাকলেন, নিলেন না কিছুই! চাইতে আপনার লজ্জা লাগে! সেটাকে তো সম্পর্ক বলে না। সেটাকে বলে আত্মসমর্পণ বা দাসত্ব। সেটাই এতদিন হয়ে আসছে। এখন যদি সুসম্পর্ক ফেরাতে হয়, তাহলে দুই দেশকেই পারস্পরিক বোঝাপড়া করতে হবে। তারা যেমন তাদের সুবিধাগুলো চাইবে, আমাদেরকেও আমাদের বিষয়গুলো বুঝে নিতে হবে। তবেই কেবল জনগণের সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে।
সরকারি কর্মকর্তা ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদদের অপকর্মে ব্যবহার হয় দ্য ওয়েস্টিনের ২৬ কক্ষ
বণিকবার্তা, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# এটা হল ফাইভ স্টার সন্ত্রাস। পাঁচ তারকা হোটেলের রুম ভাড়া করে সেখানে তারা বিভিন্ন লোকদের নিয়ে নিয়ে তাদের পক্ষে কাজ করাত। সেখানে যেতে হত বিভিন্ন ব্যবসায়ী, অফিসারদের। যাদেরকে যেভাবে পারত ব্যবহার করত। কাউকে লোভ-লালসা দেওয়া হত, কাউকে সেখানে রেখে অত্যাচার করত। একদিকে যেমন আয়নাঘরের জায়গাগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, অন্যদিকে এই পাঁচ তারকা হোটেলের কামরাগুলোও ব্যবহৃত হয়েছে।
সৌদিতেও এমবিএস তার ক্ষমতার শুরুর দিকে নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য তার চাচাতো ভাই, চাচাসহ অসংখ্য ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী বহু লোককে নিয়ে রিয়াদের এরকম একটি বিলাস বহুল হোটেলে আটকে রেখেছিল। কথিত আছে, তাদের থেকে চেকে দস্তখত নিয়ে, বন্ডে সই করিয়ে, সামনে মুখ খুলবে না- এমন মুচলেকা নিয়ে দীর্ঘদিন আটকে রেখে তারপর ছেড়েছে। পৃথিবীতে এক দেশের শোষক গোষ্ঠী থেকে আরেক দেশের শোষকরা নীতি-আদর্শ(?) শিখে থাকে।
নারিতা ফ্লাইটে প্রতি মাসেই লোকসান ২০ কোটি টাকা
প্রথম আট মাসে লোকসান ১৬৬ কোটি টাকা। অর্ধেকের মতো আসন ফাঁকা থাকে। লোকসান হচ্ছে রোম ফ্লাইটেও।
প্রথম আলো, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# প্রতি মাসে যদি একটা রুটেই বিশ কোটি লোকসান হয়, তাহলে বছর শেষে ২৪০ কোটি। এ শুধু একটা রুটের লোকসানের হিসাব। কিন্তু এখনো সে ফ্লাইট চালু আছে। শুধু নারিতা একা না। জাপান রুটের ফ্লাইটেই শুধু লোকসান হচ্ছে এমন না। ‘বাংলাদেশ বিমান’ সম্পর্কে তো সকলেই জানে, ওয়েবসাইটে টিকিট নাই, ফ্লাইটে গেলে দেখা যায়, সীট খালি পড়ে আছে। সেইসাথে এ ফ্লাইটের সেবার মান সম্পর্কেও তো সকলের জানা আছে। তার পরও সেখানে লস দিতেই থাকবে। যেখানে এত দুর্নীতি সেখানে তো লস হওয়া অনিবার্য।
প্রশ্ন হল, তার পরও রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে এত লোকসান দিয়ে এটা কেন চালানো হচ্ছে? এছাড়া কেনার সময়ও যে কত প্রকার দুর্নীতি করা হয়েছে, সে হিসাব তো মাত্রই বের হওয়া শুরু হয়েছিল। যে ড্রিম লাইনারগুলো কেনা হয়েছে, সেগুলোতে নানা ত্রুটি ধরা পড়ছে। এছাড়া বিমানে বসলেই আপনি দেখবেন, অত্যাধুনিক জানালাগুলো কাজ করে না। সেগুলোর সুইচ সিস্টেম অকেজো হয়ে আছে। সীটগুলো নষ্ট হয়ে আছে। ডিসপ্লেগুলো নষ্ট।
এই যে কেনার সময়ই প্রথমত কম কোয়ালিটির জিনিস বেশি দামে কেনা- এ এক সমস্যা। এরপর তা যথাযথ পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়া! এভাবে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা, জনগণের কষ্টার্জিত টাকা ব্যয় করে বিমান সেক্টরসহ অন্যান্য আরো বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দিয়ে দিয়ে শেষ করা হয়েছে।
বর্তমান সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে, সেখানে বাংলাদেশ বিমান এবং এ ধরনের আরো যেসব রাষ্ট্রীয় লস প্রজেক্ট রয়েছে, যেগুলোতে এখনো রাষ্ট্র ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে এবং দিনের পর দিন লসের খাতা ভারি হচ্ছে, সেগুলোকে অবশ্যই যথাযথ মূল্যে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা দরকার। সেটা না পারলে কমপক্ষে দুর্নীতির জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো কীভাবে বন্ধ করা যায়, সে চেষ্টা করা দরকার।
ভারতে এমন একবার টাটা গ্রুপ থেকে এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল, সরকার পারছে না। লোকসানই হচ্ছে অনবরত। তখন আবার টাটাকে তারা ফেরত দিয়েছে। তারা বেশ ভালোই চালাচ্ছে। এখন সেটা চিপ ফ্লাইট হয়ে গেছে। ফ্লাইট সার্চ দিলে এয়ার ইন্ডিয়ার নাম আগে আসে। কম টাকায় টিকিট। লাভজনক হোক আর লস হোক, যখন সেটা বেসরকারি খাতে দেওয়া হবে তখন আর তাকে শ্বেতহস্তী বানাতে পারবে না। সে এটা দিয়ে ব্যবসা করতে পারলে করবে, নইলে ছেড়ে দেবে বা অন্য কারো কাছে বিক্রি করে দেবে।
হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসির পদত্যাগ।
সব জাতীয় দৈনিক, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# যাক, শেষ পর্যন্ত তারা গদি ছাড়লেন। এ ধরনের ব্যক্তিরা রাষ্ট্রের জন্য বড় ক্ষতির কারণ। এরা শুধু শুধু রাষ্ট্রের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাই নেয় না, বরং মিথ্যাবাদী, স্বৈরাচারদেরকে সম্পূর্ণ ভুয়া নির্বাচনের একটা তামাশা মঞ্চায়ন করতে যাবতীয় সহযোগিতার জন্য কাজ করে থাকে। এই হাবিবুল আউয়াল কমিশন এবং এর আগে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিশন সকলেই তো একই পাপের অপরাধী। এদের লজ্জা-শরম কোথায়! তারা আবার মানুষকে চেহারাও দেখায়!
এরা ঠিক সেসকল রাজনীতিবিদদের মতো, যারা সকাল-বিকাল মিথ্যা বলতে থাকত; মিথ্যাটাই যাদের কাছে মূল ছিল। মাঝে মাঝে সত্য বলত। একই কাজ নির্বাচন কমিশনগুলোও দীর্ঘদিন থেকে করে আসছে। তারা মানুষকে বুঝাচ্ছে, এত পার্সেন্ট ভোট কালেক্ট হয়েছে, অমুক পাশ হয়েছে, অমুক হেরে গেছে। সবাই জানত, এগুলো সব বানোয়াট কাহিনী। এগুলোর সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। কিন্তু তারা তো সুশিক্ষিত। তাদের অনেকেই নির্বাচন কমিশনার হওয়ার আগে রাষ্ট্রের বড় বড় পদ অলঙ্কৃত করে আসেন। বিভিন্ন দায়-দায়িত্ব তারা পালন করে থাকেন।
হাবিবুল আউয়ালসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি নির্বাচন কমিশন খুব ভালোভাবেই দেখিয়েছে, শিক্ষা অর্জন বা সুশিক্ষিত হওয়া কিংবা উচ্চ ডিগ্রি নেওয়া সততার কোনো নিশ্চয়তা দেয় না; বরং উচ্চ শিক্ষা নিয়েও নির্লজ্জের মতো কাজ করা যায়।
যাক, শেষ পর্যন্ত তারা পদত্যাগ করেছেন। তারা পদত্যাগ না করলে আইনগতভাবে তো কিছু করার ছিল না। কারণ তাদের সরাতে হলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল লাগত। তাদের অসদাচরণ প্রমাণ করে দেখাতে হত; যা বেশ দীর্ঘ মেয়াদি ব্যাপার ছিল। শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকারের চাপ প্রয়োগ কাজে দিয়েছে। মাসিক আলকাউসারের গত সংখ্যায়ও লেখা হয়েছিল, অযথাই তারা রাষ্ট্রের অর্থ ভোগ করছেন। তাদের দিকে একটু নজর দেওয়া উচিত। তো সে নজর তাদের ওপর পড়েছে। তবুও ভালো যে, তারা গদি ছেড়েছেন।
এখন এটা নিশ্চিত হওয়া দরকার, ভবিষ্যতে এ ধরনের নির্বাচন কমিশন যেন জাতি আর না দেখে। আর এই নির্বাচন কমিশনারগণ এবং তাদের পূর্ববর্তী দুটি নির্বাচন কমিশনকে মিথ্যাচার ও বানোয়াট কর্মের জন্য বিচারের আওতায় আনাও সময়ের দাবি।
চলমান আইনে যদি কাজ না দেয়, নতুন করে যদি আইনও বানিয়ে নিতে হয় এবং সেভাবে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা যায়, তাহলে সেভাবেই যথাযথ বিচার করা প্রয়োজন। তবেই তা থেকে শিক্ষা নিয়ে হয়তো ভবিষ্যতে কেউ রাষ্ট্রের বড় একটা সাংবিধানিক দায়িত্ব পেয়ে এ ধরনের অপকর্ম করার সাহস করবে না।
বর্তমান সরকারের সাংবিধানিক বৈধতা কেমন
প্রথম আলো, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতা খোঁজার আগে পেছনেরটা একটু দেখা দরকার। যে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে, সেটা কোন্ পন্থায় হয়েছে? যে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে- তা কি সাংবিধানিকভাবে হয়েছে? পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার তো সাংবিধানিক নিয়ম আছে- প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে এডভাইস দেবেন। তার পরামর্শে রাষ্ট্রপতি পার্লামেন্ট ভাঙবেন। এরপর নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন দেবে। এরপর আসবে পরবর্তী ধাপ।
এসব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে বা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কোনো ফায়েদা আছে বলে মনে হয় না। কারণ কোনো বিপ্লব সংবিধান রক্ষা করে কিংবা সাংবিধানিক কোনো নিয়মে আসে না। বিপ্লবের মানেই হল, প্রচলিত নিয়মের সব দুর্বলতাকে পাশ কাটিয়ে সামনে অগ্রসর হওয়া।
এই সংবিধান, দেশের আইন- এ সমস্ত জিনিসের নাম দিয়েই তো দেশে দেশে জালেমরা টিকে থাকে। এদেশেও এরকম সংবিধান রক্ষা করার নামে নির্বাচন হয়েছে, ভুয়া নির্বাচন। দেশের আইনের নাম করে ভুয়া বিচার, ভুয়া আদালত, কত কিছুই না হয়েছে! এজন্য বিপ্লবের পর এসব বিশ্লেষণ অনেকটা অর্থহীন। সাংবিধানিক বৈধতা থাক বা না থাক, দেশের জনগণের অভিপ্রায়েই এ সরকার বসেছে। সরকারের ব্যক্তিদের নিয়ে কথাবার্তা হতে পারে। যাদেরকে বসানো হয়েছে তাদের সকলের ক্ষেত্রে জনগণের সমান সম্মতি না-ও থাকতে পারে; কিন্তু এ ধরনের একটা সরকার বসুক এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করুক- এ ব্যাপারে তো জনগণের রায় আছে।
মনে রাখা দরকার, সংবিধান মানুষের জন্য, দেশের জন্য, জনগণের জন্য; সংবিধানের জন্য জনগণ নয়। সুতরাং এখন এ ধরনের বিতর্কে না যাওয়াই সমীচীন।
শেখ মুজিব পরিবারের নিরাপত্তা আইন বাতিল
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# রাষ্ট্রটাকে তো খেয়ে ফেলার চেষ্টা সেই ৭২ সন থেকেই করা হয়েছিল। ৭৪ সনে একদলীয় শাসন এনে, একনায়কতন্ত্র কায়েম করে তখন থেকেই সব বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। তখন থেকেই শেখ মুজিব পরিবারের হাতে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব। তারা একেকজন যেন রাষ্ট্রের মালিক বনে গিয়েছিল। এরপর যখন তার মেয়ে ক্ষমতায় আসলেন তখন সবকিছু তাদের নিজেদের নামে লিখে নিলেন। সবার জন্য বাড়ি, আলাদা এলিট ফোর্সের নিরাপত্তা। তাদের পুরো গোষ্ঠীর জন্য সব বন্দোবস্ত করে গেলেন।
একদিকে তারা রাষ্ট্রের সকল বিভাগ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে রাষ্ট্রকে দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি নিয়ে ইতিহাসের বড় ধ্বংসযজ্ঞ চালাল এ দেশ ও জাতির ওপর, অন্যদিকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আইনও বানিয়ে নিল। কারণ তারা জানত, এ নিরাপত্তা ছাড়া তারা বের হতে পারবে না। তারা যেখানেই যাবে, সেখানেই মজলুমদের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে আক্রান্ত হবে। তাদের গোষ্ঠীরা আক্রান্ত হবে। সেজন্য তারা মনে করেছিল, রাষ্ট্রের টাকায় তাদেরকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হলে তারা বেঁচে যাবে।
কিন্তু তাদের কি জানা ছিল- এই পরিণতি হবে? রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা তো মাত্র বাতিল হল। নিরাপত্তা থাকতেই তারা কীভাবে পালাল! প্রকাশ্যে যেতে পারল না। এই এসএসএফ নিরাপত্তা নিয়ে তো প্রকাশ্যেই যেতে পারত। গেল না কেন? এতটুকু সাহসই তো তাদের কারো হয়নি। মূল ক্ষমতাধরই তো একেবারে চোরাই দরজা দিয়ে পালালেন। দুনিয়ার দাম্ভিকরা এবং জোরজবরদস্তি যারা মানুষের ঘাড়ের ওপর বসে থাকে, তারা কিন্তু ভাবে না তাদের পরিণতির কথা।
নিক্সন চৌধুরী ‘মর্মাহত’ হওয়ায় মাদ্রাসার ২৮ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন দুই বছর ধরে বন্ধ
প্রথম আলো, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# হাঁ, শুধু এমন এক নিক্সন না। বিগত সরকারের আমলে নিক্সন কেন্দ্রিক গর্জন-হুঙ্কার চলছিলই। শেখ হাসিনা মূলত বিভিন্ন জায়গায় ডাবল গেম খেলেছিল। দেখা গেল, উনি একজনকে নৌকায় মনোয়ন দিচ্ছেন, কিন্তু তার সাথে আরেকজন গডফাদারকেও দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। তার উদ্দেশ্য থাকত, ওই গডফাদারই পাশ করুক। অন্যদিকে নৌকা নিয়ে যাকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন তিনি তার দলের বড় নেতা। তাই সেও মনোনয়ন পেয়ে খুশি থাকুক।
গডফাদারদের পাশ করানো হত এ ধরনের হুঙ্কার দেওয়ার জন্য। চতুর্দিকে আতঙ্ক তৈরি করার জন্য। নিক্সন তার পুরো অঞ্চলটাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে রেখেছিল। তারই সামান্য একটা নজীর হল, এই সংবাদ। সরকারি অনুদানে পরিচালিত (এমপিওভুক্ত) একটা মাদরাসার এতজন শিক্ষককে তার কারণে এতদিন বিনা বেতনে থাকতে হয়েছে!
বাংলাদেশ ব্যাংকে অনেক কিছুরই অদৃশ্য নীতিনির্ধারক ছিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়
বণিকবার্তা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪
# শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক কেন, দেশের কোন্ সেক্টর তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকেছে? মানুষ প্রকাশ্যে না বললেও অনেকের মুখে মুখে ছিল, এটা জয় নিয়ন্ত্রণ করে। ওটা রেহানা নিয়ন্ত্রণ করে। বড় বড় কোনো কিছুই তাদেরকে মোটা অংকের ভাগ না দিলে হয় না। সে সময়ের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক তো সম্ভবত বন্দীই আছেন। যে তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিগত বছরগুলোতে হাজার হাজার কোটি টাকার তসরুফ হয়েছে বলে শোনা যায়, সে বিভাগের মন্ত্রী পদমর্যাদার উপদেষ্টা ছিলেন হাসিনা পুত্র জয়। তার অধীনে কাজ করতেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক।
তো সে পলককে ঠিকঠাক মতো জিজ্ঞেস করলেই তো জয়ের কাণ্ড-কারখানা সম্পর্কে অবগত হওয়া যাবে।
মেট্রোরেল মেরামতে ‘৩৫০ কোটি’ টাকার জায়গায় এখন কত টাকা লাগছে?
বিবিসি, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশন সংস্কার : ১০০ কোটির কাজ ১ কোটিরও কমে হচ্ছে
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# এখান থেকেও অনুমান করা যায়, যদি তারা টিকে যেত, তাহলে তারা পারলে আরো দুই-চারটা মেট্রোস্টেশনও ভাঙত। রাষ্ট্রের আরো বিভিন্ন জায়গায় তারা নিজেরাই ক্ষয়-ক্ষতি করত। এখানেও সন্দেহ জাগে, তারাই ভেঙেছে কি না। অন্যথায় তারা কেন এসব কথা সেদিন বলেছিল? ওবায়দুল কাদের সেখানে গিয়ে বলেছিল, এটা বছরেও ঠিক করা যাবে না। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, মাসেরও কম সময়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে। কাজ তো ধরেছেও অনেক পরে। কাজ শুরু হওয়ার পর হয়তো এক মাসও লাগছে না ঠিক করে ফেলতে।
পুরোটা ঠিক করতে তারা বলেছে, ৩৫০ কোটিরও বেশি খরচ হবে। শুরু করেছে ৩৫০ কোটি দিয়ে। পরে দেখা যেত, সংস্কার কাজ শেষ করার মেয়াদ এক বছর থেকে দেড় বছরে গিয়ে ঠেকেছে এবং ৩৫০ কোটি থেকে হাজার কোটি টাকায় গিয়ে উঠেছে। অথচ সেটা এক থেকে দুই কোটি টাকার কাজ। একটা স্টেশন ঠিক করতে এক কোটিরও কম খরচ হয়েছে। দুইটা করতে হয়তো তিন কোটি টাকাই খরচ হবে! সেটাকেই তখন তারা ৩৫০ কোটি টাকা বানিয়েছে।
এখান থেকে দুটো বিষয় সামনে আসে : একটা হচ্ছে, প্রতিটা প্রজেক্ট থেকে তারা কী পরিমাণ দুর্নীতি করত! কত পরিমাণ হারে ধার্য করত! এর একটা সামান্য খতিয়ান এখান থেকে দেখা যায়। তিন কোটির জায়গায় ৩৫০ কোটি! কত গুণ বেশি!
দ্বিতীয় যে বিষয়টা সামনে আসে তা হল, অনেক কিছু এভাবে তারা নিজেরাই ধ্বংস করে আবার তারাই পুনঃনির্মাণ করতে গিয়েছে। এগুলোও এ ধরনের ঘটনা ও বক্তব্য থেকে বোঝা যায়।
মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিশ্ব মানবতার জন্য অনুসরণীয় আদর্শ : প্রধান উপদেষ্টা
ইত্তেফাক, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# আমরা যদি বিষয়টা শুধু মুখের মধ্যে না রেখে আমলেও নিয়ে আসি, তাহলে বিশ্ব মানবতা যে মুক্তি পাবে এবং সমৃদ্ধ হবে, এতে তো সন্দেহ করার কোনো অবকাশ নেই।
দুস্থদের তালিকায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রীর স্বজনেরা
সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বোন নূরন নাহার আনোয়ার। তাঁর স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। অথচ দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের বিশেষ অনুদানপ্রাপ্ত (ব্যক্তি পর্যায়ে) ব্যক্তিদের তালিকায় নূরন নাহারের নাম আছে।
প্রথম আলো, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# শুধু সমাজ কল্যাণমন্ত্রী একা নয়; এমন বহু মন্ত্রী, বহু এমপি, বহু চেয়ারম্যান আছে, যাদের আত্মীয়-স্বজনরাই বেশি দরিদ্র। কারণ গরীব ও দুস্থদের নামে ফান্ড পাশ হয়। সেটার ভাগ তারা নিয়ে নেয়। তো তারাই হল দেশের ফকীর-মিসকীন। এক তো হল লুটপাট করে, দুর্নীতি করে সম্পদ লুটে নেওয়া আরেক হল দরিদ্রদের নামে যেটা বরাদ্দ, সে সম্পদেও হস্তক্ষেপ করা।
নিজেরা নিজেদের আত্মীয় ও আপনজনদেরকে দরিদ্র-ফকীর-অনাথ দেখিয়ে সে টাকাগুলোও মেরে খেয়েছে।
অর্থাৎ ভিক্ষুকের টাকা, অনাথের টাকাতেও তাদের নজর ছিল। দুর্নীতি করতে করতে মানুষের যখন লোভ লালসা বেড়ে যায়, তখন সে কিছুই ছাড়তে চায় না। তার কাছে তখন দরিদ্র-অসহায় এসব শিরোনামও ধোপে টেকে না। তখন সে শুধু টাকাই খোঁজে।
সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিনের সম্পদবিলাস
ফ্ল্যাটের পরও ১০ কাঠার প্লট
দেশ রূপান্তর, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# তার দলের অন্যরা যদি দুর্নীতির সকল মাত্রা অতিক্রম করেন, তাদের যদি গাড়ি ও বাড়ির ভরসার থাকে, তাহলে স্পিকার পদে থেকে তিনি পিছিয়ে থাকবেন কেন?
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনীতে ব্যয় ৮৯ কোটি, দু’প্রান্তে ম্যুরাল-উদ্বোধনী স্থাপনায় ১১৬ কোটি
যমুনা টিভির ওয়েব সাইট, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# এসব অপচয় ও লুটপাটের কথা নতুন করে বলার কী আছে? কিন্তু দেখার বিষয় হচ্ছে- এখন এসব কথা যারা প্রচার করছেন তারা তো বহু বছর পর্যন্ত শুধু পদ্মা পদ্মা জিগিরেই ছিলেন।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র
ভারতে আদানিকে আরো সুবিধা, মওকুফ হয়েছে ঋণ
প্রথম আলো, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# আদানি-এস আলমদের মতো গোষ্ঠেীগুলো সুবিধা পেতেই থাকবে। কারণ এদেরকে দিয়েই দেশে দেশে ক্ষমতায় টিকে থাকে জালেম স্বৈরশাসকরা। তাদেরকে দিয়ে তারা বিভিন্ন তথাকথিত গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করিয়ে থাকে। রাতদিন সেখানে মিথ্যা গল্প শোনানো হতে থাকে। উন্নয়ন, শান্তি-শৃঙ্খলা এবং সাম্য নিয়ে তারা প্রতারণামূলক বিভিন্ন মিথ্যা গল্প শোনাতে থাকে।
ভারতের পতাকা নামিয়ে সেভেন সিস্টার্সের পতাকা উড়ালো মণিপুরের শিক্ষার্থীরা
নয়া দিগন্ত, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# হয়তো বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের সফলতা দেখে ওরাও উদ্বুদ্ধ হয়েছে। এ কথা তো আর অস্বীকার করার উপায় নেই, দেশে দেশে জালেম স্বৈরশাসকরা মানুষকে যখন কোণঠাসা করে রাখে, যখন পৃথিবীর কোনো এক অঞ্চলে কোনো মজলুম গোষ্ঠীর একটু বিজয় হয়, তা সকলকেই ছুঁয়ে যায়। সকলেই বেশ আশাবাদী হয়ে ওঠে। ভাবে, হয়তো আমাদের জালেমেরও এভাবে পতন হবে। তবে সেভেন সিস্টারস মোদিদের যে আরো ভোগাবে তাতে সন্দেহ নেই।
প্রয়োজনে মুসলমানদের অবৈধ তিন লাখ মসজিদ ধ্বংস করব : মোদির মন্ত্রী
এক্সপ্রেস নিউজ, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# আগেই বললাম, একদিকে এখানে মুসলমানরা মন্দির রক্ষা করছে, এমনকি মাদরাসার লোকেরাও নাকি পাহারা দিয়েছে, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের সংখ্যাগুরুরা নতুন করে সংখ্যালঘুদের মসজিদ ধ্বংস করার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতদিন যা ধ্বংস করেছে, তাতে তাদের পেট ভরেনি। এটা হল মোদি বাহিনী এবং বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে সুস্পষ্ট তফাত।
আন্তর্জাতিক
গাজায় যুদ্ধবিরতি একটি কৌশলগত সুযোগ : ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# তারা তো এটাকে একটা প্রতারণা হিসেবেই গ্রহণ করতে চায়। যেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে তারা আরো ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পুনরায় মারতে পারে, হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে। এ ধরনের যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
যুদ্ধবিরতি দিতে হলে দীর্ঘমেয়াদি করতে হবে। যেন এ বিপুল ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায়। অসুস্থরা সুচিকিৎসা পায়। বর্তমানে সেখানে যারা আছে, একেবারে মানবেতর জীবনযাপন করছে, তীব্র অপুষ্টি ও খাদ্যাভাবে ভুগছে, তৃষ্ণায় কাতরাচ্ছেÑ তাদের জন্য যেন যাবতীয় সুব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়; যাদের পড়াশোনা আটকে আছে, স্কুল-মাদরাসা বন্ধ হয়ে আছে, তাদের পড়াশোনা যেন চালু করা যায়। জাতিসংঘসহ অন্য যারা যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা করছে, তাদেরকে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপের পথে হাঁটতে হবে।
ইসরাইলের জন্য সুবিধা হয় এমন কোনো বিরতি দিয়ে লাভ নেই। ইতিমধ্যে পত্রিকায়ও এসেছে, ইসরাইলের হঠকারিতা দেখে হামাস বলেছে তারা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। আসলে যদি বিশ্বসভা বা বিশ্বের যারা যুদ্ধ বন্ধের জন্য সচেষ্ট আছেন, তারা যদি সুদৃঢ় কোনো ব্যবস্থা না নিতে পারে এবং ফিলিস্তিনীরা এভাবে মার খেতেই থাকে, তাহলে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ চিন্তা করা ছাড়া আর তো কোনো উপায় থাকে না। তাদের আত্মরক্ষার জন্য এটা না করে তো কোনো উপায় নেই।
বিচ্ছেদের পর ‘ডিভোর্স’ নামের সুগন্ধি নিয়ে হাজির রাজকুমারী
যুগান্তর, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# এটি আসলে কী? সে কি এটা মনের আনন্দে স্বেচ্ছায় করছে? নাকি এটা স্ট্রেস থেকে হচ্ছে? কিছু লোক এভাবে হতাশার প্রকাশ ঘটায়। মধ্যপ্রাচ্যের রাজা-বাদশাহরা যখন পশ্চিমা ধাঁচের সভ্যতা-সংস্কৃতিতে নিজেদের সন্তানদের বড় করা শুরু করেছে, সেটার প্রভাব তো পড়বেই তাদের ওপরে।
তার বাবা হচ্ছেন দুবাইয়ের শাসক, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী। তার মেয়ে এ ধরনের কাণ্ড ঘটাচ্ছে। বছর দুয়েক আগে কী হাঁকডাক দিয়ে তাদের বিয়ে হল। এরই মধ্যে একতরফাভাবে তালাকও নিয়ে নিয়েছে সে। আবার সেই তালাককে বিভিন্নভাবে উদ্যাপনের ভাব দেখাচ্ছে। এমনকি এ নামে একটা পারফিউমও নিয়ে এসেছে! এটাকে কেউ হয়তো দেখবে, তিনি মনে হয় বিচ্ছেদে খুব খুশি; কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা এমন না। এ উদ্যাপন মেকি। নিজের দাম্পত্য জীবন টেকাতে না পারার হতাশা ও ব্যর্থতা।
মুসলমানরা নিজেদের সভ্যতা-সংস্কৃতি ছেড়ে উন্নতির নামে যত বেশি ওদের সংস্কৃতি গ্রহণ করবে, নিজেদেরটা থেকে যত দূরে সরবে, ততই এ ধরনের পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যায় পড়বে। তখন হতাশা ঢাকার জন্য এমন কত কী করতে হবে!
বৃটেনের কারাগারে জায়গা না থাকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে ১৭৫০ জন বন্দিকে
মানবজমিন, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# কী বুঝা গেল? পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ধনী কিংবা দরিদ্র রাষ্ট্র, উন্নত কিংবা অনুন্নত রাষ্ট্র, তথাকথিত সভ্য রাষ্ট্র কিংবা কথিত অসভ্য রাষ্ট্র সকলের গতি কিন্তু একদিকেই ছুটছে। দেশে দেশে হানাহানি, জুলুম নির্যাতন এবং মানুষের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা, অন্যের ওপর চড়াও হওয়ার প্রবণতা- সবকিছুই বাড়ছে। এসব তো বাড়বেই, আপনি ধন-সম্পদের দিক দিয়ে বড় হতে পারেন, শিক্ষায় বড় হতে পারেন, এভাবে আপনি যত বড়ই হোন, আপনার যদি গোড়া ঠিক না থাকে, আপনার প্রতিপালক ও স্রষ্টার প্রতি যদি বিশ্বাস ও তাকে ভয় করার প্রবণতা আপনার মাঝে না থাকে, তাহলে আইন আপনাকে ফেরাতে পারবে না, শিক্ষা আপনাকে প্রবৃত্তির দাসত্ব গ্রহণ করা থেকে ফেরাতে পারবে না। আর তখন ঝামেলা হবেই, জেলগুলো ভরে উঠবেই। এমন না যে, শুধু অনুন্নত দেশের জেল ভরবে, কম শিক্ষিত দেশের কারাগার ভর্তি হবে; বরং শিক্ষিত লোকদের এবং উন্নত রাষ্ট্রের জেলও ভরতে পারে- সেটাই প্রমাণ করল ব্রিটেন। তাদের জেল ভরে যাওয়ার পর তারা কায়েদি ছেড়ে দিতে বাধ্য হওয়া একথারই প্রমাণ বহন করছে।
এইতো কয়েক মাস আগে ব্রিটেনের উগ্রপন্থিদের ভয়াবহ সন্ত্রাসের কথা তো মানুষ ভুলে যায়নি। অথচ এদেশে বহু লোক আছে, যাদের দেখবেন, তারা পশ্চিমাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বলতে থাকে, আমাদের এসমস্ত দেশে তো অনেক ঝামেলা, অমুক দেশের মানুষ উন্নত। সেখানকার মানুষ অনেক সভ্য, অনেক ভালো।
শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখবে অস্ট্রেলিয়া
যুগান্তর, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
#এতদিন পরেও যদি হুঁশ আসে সেটা তো ভালো। অবশ্য সব আয়োজন করে ফেলার পর আর দূরে রাখা কতটুকু সম্ভব হবে, সেটা বিবেচনার বিষয়। কিন্তু এটা যে আবশ্যকীয় এবং তারা যদি এটা কার্যকর করতে পারে, তাহলে তা যে বড় উপকারী হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পৃথিবীটা এখন চলছেই এভাবে। আপনি একটা প্রযুক্তি নিয়ে আসলেন, একটা শিক্ষাসামগ্রী আবিষ্কার করলেন, একটা তথাকথিত বিনোদনসামগ্রী এনে হাজির করলেন, এরপর ঘোষণা করলেন যে, শিশুরা এটা থেকে দূরে থাকবে! এটা কীভাবে সম্ভব হবে?
তথাকথিত পচা বিনোদন বাজারে ছড়িয়ে দিলেন এবং বললেন যে, এটা ১৮+ -এর জন্য, এটা এডাল্টদের জন্য। তখন তো শিশুদের জন্য আরো সুবিধা হয়। তাদের অনেকে তখন আর তার জন্য তৈরি শিশুদের জিনিসগুলো দেখে না; সরাসরি এডাল্ট বিষয়গুলোই বেছে বেছে দেখে। তো আয়োজন আপনি করলেন, সব ব্যবস্থা উন্মুক্ত রাখলেন, এরপর বললেন, তুমি এটা করো না! তুমি ওটা করো না!
আরবী সাহিত্যে একটা প্রবাদ আছে-
الإنسان حريص فيما منع
মানুষকে যা থেকে বাধা দেওয়া হয়, মানুষ সেদিকেই আকৃষ্ট হয়।
তাকে যখন বাধা দেওয়া হবে, তখন সে চুরি করে হলেও সেটা পেতে চাইবে। তবুও অস্ট্রেলিয়ার এ উদ্যোগ ভালো। যদি তারা সফলকাম হয়, অন্যরাও তাদের অনুসরণ করতে পারবে।
গাজা যুদ্ধের অবসানের পাশাপাশি ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার’ অধিকারের পক্ষে কথা বললেন কমলা
প্রথম আলো, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
# কমলা বলেন আর ট্রাম্প-বাইডেন বলেন, সবাই একই! যার কথাই বলেন, আমেরিকান নেতাদের কট্টর ইহুদীদের বাতানো পথে হাঁটা ছাড়া গত্যন্তর নেই। তারা ভয়ে থাকে, যদি ইসরাইলের বিপক্ষে কোনো কথা বলে তাদের ভোট কমে যায়। আমেরিকায় ইসরাইলের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা আছে, থিংক ট্যাঙ্করা আছে; তারা যদি তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়- এসমস্ত ভয় থেকে তারা এসব কথা বলে। এমনকি সে যদি বোঝেও যে, ফিলিস্তিনীদের সাথে যা হচ্ছে সেটা চরম অন্যায়, তবুও সে বিপরীতে সমর্থন দিয়ে থাকে।
একথা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হলেও সে আমেরিকার পাহারাদার; আমেরিকা ও পশ্চিমাদের ভাড়াটে রাষ্ট্র- আমেরিকার জন্য সে খাটে, চৌকিদারি করে।
গ্রন্থনা : ওয়ালিউল্লাহ খান