Rabiul Akhir 1445   ||   November 2023

মজলুম গাজাবাসীর কথা : আল্লাহ্ই যথেষ্ট তাদের জন্য

মাওলানা মাসউদুযযমান শহীদ

দু-ফোঁটা অশ্রু আর বিগলিত মুনাজাত- এ ছাড়া আমাদের আর কী আছে! ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। সন্তানহারা মায়ের আহাজারি, বাবার কান্না আর বাবা-মা হারানো শিশুদের আর্তচিৎকারে গাজার বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। বাড়ছে লাশের মিছিল, ধুলোয় মিশে যাচ্ছে নগরী। অবরুদ্ধ গাজা আজ হয়ে উঠেছে ভয়াল মৃত্যুপুরী। পানি নেই, খাবার নেই, বিদ্যুৎ নেই, হাসপাতালে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই; তার মাঝেই বাড়ছে আহত-নিহতের সংখ্যা।

যারা এখনো বেঁচে আছে, তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন নেই। জীবিত বা মৃত কোনোভাবেই যেন এ কারাগার থেকে ছাড়া পাবার উপায় নেই। বাইরে থেকে কোনো দেশ তাদের সাহায্য করবে, খাবার ও ওষুধ পৌঁছাবে কিংবা তারা নিজেরাই নিরাপদ কোনো আশ্রয়ে পাড়ি জমাবে- সে রাস্তাও বন্ধ...।

মানুষের শোক সেখানে কোন্ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, সুদূর বাংলাদেশ থেকেও আমরা বুঝতে পারছি। তাহলে যারা রয়েছে ইহুদী আগ্রাসনে ঘেরা সেই আকাশের নিচে, প্রতি মুহূর্তেই যারা রয়েছে মৃত্যুর আশঙ্কায়- এই বুঝি দখলদারদের বিমান এল, এই বুঝি চোখের পলকে বিশাল ভবন গুঁড়িয়ে গিয়ে তার নিচে চাপা পড়তে হল- এমন আতঙ্ক আর শঙ্কায় কাটছে যাদের প্রতিটি প্রহর- চিন্তা করুন তাদের অবস্থা। মানুষ আগ্রাসী হয়, তাই বলে এত হিংস্র! এত নির্মম! এত নিষ্ঠুর!!

বেছে বেছে জনসমাগমপূর্ণ এলাকাগুলো টার্গেট করা হচ্ছে। অফিস-আদালত, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন ও স্থাপনা তো বটেই; মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি, আশ্রয়কেন্দ্র ও হাসপাতাল- যুদ্ধের মুহূর্তে যে জায়গাগুলোকে মানুষ নিরাপদ ভেবে আশ্রয় নেয়, সে স্থানগুলোই ইহুদী বর্বরতার শিকার হচ্ছে বেশি।

সূত্রমতে, এবার ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর শুধু প্রথম দশদিনেই শহীদানের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে, যাদের এক তৃতীয়াংশ শিশু। আহত হয়েছেন বারো হাজারের উপরে।

বাবা-মার কোলে অসংখ্য শহীদ শিশুর লাশ দেখে কোনো সহৃদয় ব্যক্তির স্থির থাকা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। আর হাসপাতালের বিছানায় যখমের যন্ত্রণায় কাতরানো শিশু-নারীদের আহাজারি তো চারপাশের পরিবেশ ভারী করে তুলছেই!

শোক হয়েছে শক্তি!

আজকের যে ফিলিস্তিনী যুবকেরা তূফানুল আকসানামে মুসলিম উম্মাহ্র ইতিহাসে নতুন ঝড়ের সূচনা করেছে, তারা কিন্তু এমন বিভীষিকার মধ্যেই বড় হয়েছে। আজ তারাই ফিলিস্তিনীদের অভয় দিয়ে বলছে, তোমরা একা নও, বিশ্বদরবারে অসহায় হয়ে কাটানো দিনের অবসান হয়েছে। আজ তোমরা একা নও, আমরাও আছি তোমাদের সাথে। আল্লাহ আছেন আমাদের সাথে।

গত ৭ অক্টোবর স্বাধীনতাকামী হামাস বীরদের ঝড়ে পর্যদুস্ত হওয়া দখলদার ইসরাইল নিজের পরাজিত চেহারাটা লুকানোর যে কাপুরুষোচিত পন্থা বেছে নিয়েছে এবং গাজা উপত্যকাজুড়ে একের পর এক যে ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে- ফিলিস্তিনের ঈমানদার জনগোষ্ঠী তাতে একটুও বিচলিত হয়নি। এটাই হল অর্জন। এখানেই তাদের জয় এবং দখলদারের পরাজয়। গাজার তাণ্ডবলীলার দিনগুলোতে শহীদদের স্বজনকে এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরকেও বারংবার বলতে শোনা গেছে হাসবুনাল্লাহ ওয়া নিমাল ওয়াকীল।অর্থাৎ আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট। তিনিই উত্তম অভিভাবক।

আকসা তুফানের মাধ্যমে আজ হামাস যোদ্ধারাও বিশ্ববাসীকে এ কথারই জানান দিলেন যে, আল্লাহ্ই যথেষ্ট আমাদের জন্য। যেমনটা বলে এসেছেন বিগত সত্তর বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের পূর্বপুরুষেরা! যখন আক্রান্ত হয়েছেন তখনও, যখন আঘাত হেনেছেন তখনও। সত্তর বছর ধরে মার খেয়ে খেয়ে তাদের মনোবল আরো বেড়েছে। সেইসাথে বৃদ্ধি পেয়েছে রণকুশলতা ও রণাঙ্গনের প্রস্তুতি। তাই আজ তারা নেমেছেন চূড়ান্ত ঝড়ের প্রস্তুতি নিয়ে, আকসা তুফান যার নাম!

পালাবে দখলদার

হামাসের এই তুফান প্রমাণ করেছে, মুসলিম উম্মাহ যদি ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে, বুদ্ধিমত্তার সাথে শত্রুর বিরুদ্ধে নিজেদের সামর্থ্যরে সবটুকু নিয়ে দাঁড়ায়, তাহলে অবশ্যই কুরআন কারীমের এই বাণীর সত্যতা বারবার আমাদের দৃষ্টিগোচর হবে-

سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَ يُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ.

(সত্য কথা এই যে,) এই দল অচিরেই পরাস্ত হবে এবং তারা পিছন ফিরে পালাবে। -সূরা কামার (৫৪) : ৪৫

হাঁ, আজ কিংবা আগামীকাল দখলদার ইসরাইলকে অবশ্যই পাততাড়ি গুটিয়ে পালাতে হবে। না আমেরিকা ও পশ্চিমাশক্তি, না আরব কোনো মিত্র- কেউই তাদের বাঁচাতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা কুরআনে যেমন বলেছেন-

مَا ظَنَنْتُمْ اَنْ يَّخْرُجُوْا وَ ظَنُّوْۤا اَنَّهُمْ مَّانِعَتُهُمْ حُصُوْنُهُمْ مِّنَ اللهِ فَاَتٰىهُمُ اللهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوْا.

তোমরা কল্পনাও করনি, তারা বের হয়ে যাবে। তারাও মনে করেছিল, তাদের দুর্গগুলি তাদেরকে আল্লাহ থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহ তাদের কাছে এমন দিক থেকে এলেন, যা তারা ধারণাও করতে পারেনি। -সূরা হাশর (৫৯) : ২

সেদিন আসন্ন, যেদিন সূরা হাশরের এই আয়াতের দৃশ্যপট আবারো সামনে আসবে- ইনশাআল্লাহ। শুধু প্রয়োজন মুসলমানদের একতা, ঈমানী দৃঢ়তা ও সর্বাত্মক প্রস্তুতি। আর বিশেষভাবে, মুসলমানদের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা মুনাফিক দল সম্পর্কে সচেতন ও সোচ্চার থাকা।

কেন এই তুফান

অনেকে ভাবতে পারেন, হামাস এই সময় এই তুফানশুরু না করলে তো ইসরাইলও এই তাণ্ডব চালাত না- তাদের উদ্দেশে বলব, এখনো ঘুমিয়ে না থেকে চোখ খুলুন। কী হচ্ছিল, কী চলছিল, কী হতে যাচ্ছিল- অন্তরালের সেই খবরটা; বরং খবরগুলো জানতে চেষ্টা করুন। ২০১৮-এর মে মাসে জেরুজালেমকে, যেখানে রয়েছে মুসলমানদের এক সময়ের কিবলা বাইতুল মাকদিস, ফিলিস্তিনের সেই হৃৎপিণ্ডকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দিল আমেরিকা। সেটা কি শুধুই তার মোড়লিপনা আর পেশির জোরে, নাকি আলআকসা ভূমির চারদিক ঘিরে রাখা আরবদেরও তাতে সায় ছিল, এমনকি সহযোগিতাও ছিল?! হাঁড়ির খবর জানতে হবে। এবং এরপর থেকে কতগুলো মুসলিম দেশ ইসরাইলের সাথে স্বাভাবিক মেলামেশাশুরু করেছে? কোনোরকম চক্ষুলজ্জা ছাড়া, বিগত সত্তর বছরের শহীদানের রক্তের ঋণ ভুলে গিয়ে এমন বেইমানী তারা কীভাবে করতে পারল?! অবস্থা যে পর্যায়ে গিয়েছিল, হামাসের এই তুফান না হলে আল্লাহ জানেন, হয়তোবা বিশ্বমঞ্চ থেকে ফিলিস্তিন উপাখ্যানটি চিরদিনের জন্য হারিয়ে যেত, মাটিচাপা পড়ে যেত! মুসলমানদের এই গৌরবময় পিতৃভূমি একদিন জোর করে ইহুদীরা কেড়ে নিয়েছিল, যে ভূমির অধিকার ফিরে পেতে সাতটি দশক ধরে লড়ছে মজলুম ফিলিস্তিনীরা- এ গল্প মানুষ ধীরে ধীরে ভুলে যেত...।

সবশেষে সৌদি আরবও যখন খোলাখুলি ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাচ্ছিল বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে- ঠিক সেই মুহূর্তেই হামাসের প্যারাগ্লাইডারউড়ে এসে পুরো দৃশ্যপট পাল্টে দিল। আলহাদু লিল্লাহ।

তাছাড়া ইসরাইলের ক্ষমতাসীন সরকার সম্প্রতি খুব খারাপ সময় পার করছে। বাইরে যতই আগ্রাসী হোক, ওদের ভেতরের অবস্থা নড়বড়ে। নিজের দুর্বলতা ঢাকতেই নেতানিয়াহু গাজার দুর্বল মানুষদের ওপর চড়াও হয়েছে। এখন প্রয়োজন সাহস নিয়ে ওর গালে ওর প্রাপ্য চড়টা কষে দেওয়া। আকসা তুফান সেদিকেই আগাচ্ছে। নিরীহ মানুষ মেরে পিশাচের শেষ রক্ষা হবে না, ইনশাআল্লাহ।

যে ঘটনায় কেঁদেছে সবাই

গাজার মামাদানী আলআহলী হাসপাতালে (আলমুসতাশফা আলআহলী আলআরাবী আলমামাদানী) আগ্রাসন চালিয়ে শত শত নিরীহ নারী ও শিশুকে শহীদ করার দৃশ্যে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এ হামলায় শহীদ হয়েছেন অন্তত পাঁচ শ জন, যাদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী। হাসপাতালের প্রাঙ্গণে একটু আগেও খেলা করছিল ফুল-পাখীদের দল- একদিকে এ দৃশ্য আর অন্যদিকে বোমার আঘাতে জ¦লেপুড়ে ছাই হবার পর এখানে-ওখানে পড়ে থাকা কিছু দেহাবশেষ আর কিছু ছেঁড়া রঙিন জামাকাপড়!...

সকল বিবেকবান মানুষকেই এই পিশাচী কাণ্ড কাঁদিয়েছে। বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে মানুষ দেশে দেশে, শহরে শহরে।

তবুও হাসি, উষ্ণ আলিঙ্গন!

গাজা উপত্যকায় ইতিহাসের এই ভয়াবহতম অমানবিক আগ্রাসনের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন ইসরাইল সফর করেছেন এবং আরো বিধ্বংসী হতে আর কী করতে হবে- শিষ্যকে কানে কানে বলে  গিয়েছেন।

এই কঠিন অবস্থায়ও দখলদার ইহুদী রাষ্ট্রের প্রধান নেতানিয়াহুর সাথে বিমান বন্দরে প্রথম সাক্ষাতেই বাইডেনের উষ্ণ করমর্দন আর গভীর আলিঙ্গন এবং পরে পাশাপাশি বসে দুজনের সহাস্য আলাপ-আলোচনা- এসব থেকে বোঝা যায়, এ যুদ্ধে তিনি জালিমের কত কাছে এবং মজলুম মানুষের কান্না ও হাহাকার থেকে কত দূরে!

কাদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে ইসরাইল আজ এত উগ্র, এত দুর্বিনীত ও কুছপরোয়াহীন- সেটা আরো একবার বিশ্ববাসী স্বচক্ষে দেখতে পেল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদিও ইসরাইলের মন যোগাতে খুবই নির্লজ্জভাবে আলআহলী হাসপাতালের ঐ বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের দায় চাপিয়েছে বিপ্লবী যোদ্ধাদের ঘাড়ে, কিন্তু প্রমাণ তা সমর্থন করেনি এবং বিশ্ববাসীও বিশ্বাস করেনি।

সান্ত্বনা কুরআনে

যতদিন পৃথিবীর বুকে কাগজ ও কলম থাকবে, মানুষ ও মানবতা থাকবেলেখা থাকবে এ নির্মম হত্যার ইতিহাস। আল্লাহর ফেরেশতারা তো লিখেই রেখেছেন। আল্লাহ্ই যথেষ্ট সাক্ষী হিসেবে, যেমন সাক্ষী ছিলেন সূরা বুরুজে বর্ণিত আসহাবুল উখদুদের সেই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের দিনে!

 কুরআন কারীম খুলে সূরাটি একবার পড়ে দেখুন। তাতে শক্তি পাবেন, সান্ত্বনা পাবেন। জানবেন, আমাদেরও আছে একজন, যিনি জালিমকে কঠিন আযাবে দগ্ধ করবেন আর মজলুম মুমিনদের দেবেন চিরস্থায়ী সুখদ কানন! এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী! এরপর আর কোনো চাওয়া থাকে কি?! শুধু ধৈর্য ধরা। সবকিছুরই বিচার হবে। উপরে-নিচে, সামনে-পিছনে সকল দিক থেকে আল্লাহ দুশমনদের ঘিরে রেখেছেন। সময় হলেই ধরবেন। আল্লাহর ধরা বড় শক্ত ধরা। ফেরাউনও পার পায়নি। পার পাবে না এ যামানার ফেরাউন যারা!

অসহায় মানবতা

গাজাবাসীর ওপর অমানবিক যুদ্ধের জন্য পশ্চিমেরও বিবেকবান মানুষ রাস্তায় নেমে আসছে। থামাও যুদ্ধ বাঁচাও মানুষ শ্লোগানে শ্লোগানে রাজপথ মুখরিত হচ্ছে। ব্যথিত মনের আকুতি আর বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সম্বলিত ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনে দুনিয়া ছেয়ে যাচ্ছে। কিছুতেই তারা সহ্য করতে পারছে না এ যুদ্ধাপরাধ। বোঝা যায়, এখনো পৃথিবীতে মানুষ আছে। এখনো মানুষের ব্যথায় মানুষের মন কাঁদে! দাজ্জালি বিশ্বব্যবস্থা ও তার মোড়লদের সামনে মানবতা আজ বড় অসহায়। ব্যানার, ফেস্টুন আর শ্লোগান ও নিন্দাবাদ এটুকুই যেন আজ নিরুপায়ের কিছুমাত্র উপায়!... 

খলনায়কেরা ধরা পড়বেই

মুসলিম বিশ্বের শাসকগোষ্ঠীর যদিও খুব অল্প সংখ্যকই এ যুদ্ধে নিজের দৃঢ় সাহসী অবস্থান ব্যক্ত করতে পেরেছেন; তবে বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনের অনুকূলে মুসলিম সর্বসাধারণের সহমর্মিতা ও সমর্থন শাসকদল অবশ্যই আমলে নেবেন এবং নিচ্ছেনও। কারণ তারা জেনে গেছেন, এ তুফান সর্বনাশী, সর্বপ্লাবী। তাই ইতিমধ্যেই-দৃশ্যত-সৌদির কণ্ঠেও সুরটি নরম। ইরান হাত বাড়িয়েছে। তুরস্ক মাথার ওপর ছাতা ধরেছে। আর মিশরের সিসি এখনও থু থু কাণ্ডই করে যাচ্ছেন। আর মাহমুদ আব্বাস, তিনি তো মনে হয় কোনো দিশাই খুঁজে পাচ্ছেন না!

হবে জয়!

অনেক দুঃখের মাঝে কিছু আনন্দের খবরও আছে। ইসরাইলের মতো বেসামরিক লোকজনকে হামাস লক্ষ্যবস্তু বানায়নি। বরং ওদের সৈন্য ও সামরিক শক্তি ধ্বংসের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। হামাসের তৈরি ড্রোন থেকে ক্ষুদ্র বোমা ফেলে ইসরাইলের অত্যাধুনিক ট্যাংক ধ্বংসের চিত্র প্রকাশ করেছে হামাস। যা কোটি কোটি মুসলিম হৃদয়ে জখমের মলম হয়েছে।

ঘটনা চূড়ান্ত পরিণতি পাওয়া পর্যন্ত আমাদের দম থাকা চাই। শুধু অপেক্ষা করে বসে থাকা নয়। নির্লিপ্তভাবে পর্দায় বা  সংবাদপত্রে চোখ রাখা নয়; বরং মুমিনের বিশ্বাস নিয়ে, আসমানের মালিকের কাছে মজলুম ফিলিস্তিনী ভাইদের জন্য সাহায্য কামনা আর তাদের বীর যোদ্ধাদের জন্য, তাদের শক্তি, বুদ্ধি, সাহস ও দৃঢ়তার জন্য অশ্রুসিক্ত মুনাজাত- হে আল্লাহ! তুমিই তো আমাদের সহায়। তুমিই সাহায্য করো। দখলদারদের পরাজিত করো। আলআকসা মুক্ত করো!...

 

প্রভাতের আকাশ হয় রক্তরাঙা

 

জানি তো পারিনি বলতে

যা দরকার এই বেলা,

ব্যথার পাহাড় বুকে নিয়ে

কথা কি যায় বলা!

 

তবু মনে চায় বলে যাই

দুটো লাইন আরো,

চোখটি যেন খোলে তোমার

জেগে উঠতে পারো! 

 

কী দিতে পারল এই আকসা তুফান

ভাবো কি সেই কথা?

প্রভাতের আকাশ হয় রক্তরাঙা

বুঝলে না তুমি তা!

 

সাত দশকের ঝরানো খুনের দাম

গিয়েছিলে ভুলে,

কত সহজেই কতজন গেল

শত্রুর সাথে মিলে!

 

কী যে ভয়ানক দখলদারেরা

চোখ মেলে দেখে নাও,

পায়ে পড়ে কাঁদে মানবতা-

থামে না নিধন তাও!

 

কেন অসহায় গাজাবাসী আজ?

চলছে গোপন আঁতাত!

ছেঁড়ো কাঁটাতার ভাঙো কারাগার

বাড়িয়ে তোমার হাত।

 

আর কোনো ছাড় নয় তো এবার

দিতেই হবে জবাব,

তোমার হাতেই আল্লাহ ওদের

দেবেন কঠিন আযাব।

হাত দুটো তবে শক্ত করো

ঈমান ও তাকওয়া দিয়ে,

আসমানী দ্বার খুলবে তখনই

পালাবে শত্রু ভয়ে।

আছে মানুষ আজও এই দুনিয়ায়

কেন মিছে মন ভার?!

আদালতে আছে জমা নালিশ

জালিম পাবে না পার।

 

 

advertisement