Shawal-Zilqad 1428   ||   November 2007

বেশি বেশি ইস্তেগফার

হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. বেশি বেশি তওবা ও ইস্তেগফারের ফযীলত বর্ণনা করতে গিয়ে একবার বলেন, বেশি বেশি ইস্তেগফারের মাঝে দ্বীনের ফায়দা তো আছেই, দুনিয়ারও কল্যাণ রয়েছে। দ্বীনের উপকার তো স্পষ্ট যে, ইস্তেগফার দ্বারা গুনাহ মাফ হয়। আর গুনাহ-ই হচ্ছে সেই বস্তু যা কারণ হয়ে থাকে দোযখের আযাবের এবং আল্লাহ তাআলার ক্রোধের। অপর দিকে ইস্তেগফারের ফলে বহু গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং এসব গুনাহসমূহ থেকে মাফ- প্রাপ্তিটা কারণ হয়ে যায় আল্লাহর ক্রোধ থেকে বাঁচার এবং আখেরাতের আযাব থেকে নাজাত লাভের।

এতো হচ্ছে ইস্তেগফারের ফলে অর্জিত দ্বীনের উপকার। ইস্তেগফারের ফলে দুনিয়ার যেসব কল্যাণ হয় সেটা দুপ্রকার। প্রথমটি হচ্ছে অধিক ইস্তেগফারের কারণে দুনিয়াবী বিপদাপদ দূর হয়ে যায়। যেমন মেশকাত শরীফের হাদীসে রয়েছে, যে ব্যক্তি ইস্তেগফার করাকে নিজের জন্য অপরিহার্য করে নেয় আল্লাহ তাকে সব সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় বের করে দেন, সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হওয়ার প্রশস্ত পথ খুলে দেন এবং তাকে বে-হিসাব রিযিকের দরজা খুলে দেন। (আহমদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

ইস্তেগফারের দ্বিতীয় দুনিয়াবী উপকার হচ্ছে, মানুষের জন্য সবচেয়ে অস্বস্তিকর বিষয় হচ্ছে, পেরেশানী বা দুশ্চিন্তা, যা বিভিন্ন বিপদ-আপদের কারণেই হয়ে থাকে। বিশেষত ওইসব বিপদাপদ যা মানুষ নিজের হাতেই কামাই করে। অর্থাৎ সেই বিপদাপদের পেছনে যেসব কারণ রয়েছে সে কারণগুলোকে মানুষ নিজের ইচ্ছা ও এক্তিয়ারেই গ্রহণ করে থাকে। যেমন কাউকে বিনাকারণে উৎপীড়ন করল, জুলুম করল। ফলে ওই মজলুম জালেম ব্যক্তির শত্রু হয়ে গেল এবং জালেমের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিল।

এখানে যে বিপদটা আসল সেটাকে এক্তিয়ারীই বলা যায়, নিজের হাতেই এই বিপদ জালেম ব্যক্তি কিনে নিয়েছে। এ ধরনের বিপদাপদে আপনা থেকেই আসা কোনো বিপদাপদের চেয়ে পেরেশানী বেশি হয়ে থাকে। এমনিতেই কোনো বিপদ আসলে তার জন্য মনের মধ্যে পেরেশানী আসে তুলনামূলক কম।

ইস্তেগফার করার রীতি বজায় রাখলে এক্ষেত্রেও সংশোধন আসবে, মাফের ব্যবস্থা হবে। সুতরাং ইস্তেগফারের অনেক বড় একটি দুনিয়াবী উপকার হচ্ছে এই যে, ইস্তেগফার এই উভয় প্রকার পেরেশানীকে দূর করে দেয়।

 

(মালফূযাতে থানভী রহ. অনুসরণে)

রোযনামা ইসলাম-এর ম্যাগাজিন খাওয়াতীনে ইসলাম অবলম্বন

 

advertisement