আলকুরআনের আয়নায়
إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَنْ تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آَمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآَخِرَةِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ (19) وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ وَأَنَّ اللَّهَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ (20) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ وَمَنْ يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ مَا زَكَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ أَبَدًا وَلَكِنَّ اللَّهَ يُزَكِّي مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ (21)
উপরোক্ত আয়াতগুলি সূরা নূরের ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর আয়াত। সূরা নূরের বিষয়বস্তু হল, সমাজ থেকে অশ্লীল ও অশালীন কর্মকাণ্ডের বিলোপ সাধন এবং সচ্চরিত্রতা ও শালীনতার প্রসারদান সংক্রান্ত বিধানাবলি পেশ করা এবং সে সম্পর্কে জরুরি দিকনির্দেশনা দেওয়া।
১৯. যারা পসন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচারের প্রসার হোক(২৫) তাদের জন্যে রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি দুনিয়াতে এবং আখিরাতে।(২৬) আল্লাহ জানেন, কিন্তু তোমরা জান না।(২৭)
২০. আল্লাহর মেহেরবানী ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকলে এবং আল্লাহ দয়ালু ও মেহেরবান না হলে (কত কিছুই হয়ে যেত)।
২১. হে ঈমানদারগণ! শয়তানের পদচিহ্ন অনুসরণ করো না। যে ব্যক্তি শয়তানের পদাংক অনুসরণ করবে, সে তো অশ্লীলতা ও মন্দেরই নির্দেশ দিবে।(২৯) আল্লাহর মেহেরবানী ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকলে তোমাদের কেউ কখনো পরিশুদ্ধ হতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পরিশুদ্ধ করেন আর আল্লাহ সব শুনেন, জানেন।
তাফসীর
অশ্লীলতার প্রসারকামীদের জন্যে রয়েছে শাস্তি
২৫. অর্থাৎ যারা চায় ব্যভিচারের প্রসার ঘটুক অথবা ব্যভিচার সম্পর্কিত সংবাদের প্রচার ঘটুক। মুনাফিকরাই এরূপ কামনা করে। কিন্তু মুনাফিকদের প্রসঙ্গ আলোচনা করে ঈমানদারদেরকেও সতর্ক করে দেওয়া হল যে, মনে কর, কারো অন্তরে কোনো মন্দ কথা উদিত হয়েছে এবং অসতর্কতা হেতু মুখে তা প্রকাশও করে ফেলেছে তাহলে তখনই ঐ কথার চর্চা বন্ধ রাখতে হবে। যদি ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সে কোনো ঈমানদার লোকের মানহানি করে বসে তবে ভালো করে জেনে রাখুক যে, তার নিজের মান্তইযযতও অক্ষুণ্ন থাকবে না। আল্লাহ তাআলা তাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেই তবে ছাড়বেন। যেমনটি মুসনাদে ইমাম আহমদ রাহ. গ্রনে' রয়েছে।
২৬. অন্যায় অপবাদ প্রদানের শাস্তি দুনিয়াতে হল অপমান্তলাঞ্ছনা ও বিভিন্ন প্রকারের দণ্ড আর আখিরাতে তার শাস্তি হল জাহান্নাম।
২৭. অর্থাৎ এরূপ ফেতনাবাজ লোকদেরকে আল্লাহ তাআলা খুব ভালো করেই চিনেন, যদিও তোমরা তাদেরকে চেন না। আল্লাহ তাআলা এও জানেন কার অপরাধ কতটুকু এবং কার উদ্দেশ্য কি?
অশ্লীলতা কামনা শয়তানী কুমন্ত্রণার ফসল
২৯. অর্থাৎ শয়তানের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থেকো। জিন ও মানুষ জাতিভুক্ত শয়তানদের পদাংক অনুসরণ করা মুসলমানের কাজ নয়। ঐ অভিশপ্তদের তো মিশন্তই এই যে, মানুষকে অশ্লীলতা ও মন্দের দিকে নিয়ে যাবে। তোমরা জেনে-শুনে তাদের ফাঁদে পা দেবে কেন? দেখ তো শয়তান একটু চাকা ঘুরিয়ে কত বড় ঝড় তুলে দিল। আর কয়েকজন সহজ-সরল মুসলমান মানুষ কিভাবে তার পদাংক অনুসরণ করল?
[সূত্র : তাফসীরে উসমানী, তৃতীয় খণ্ড, প্রকাশনা : ইসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ।]