সিজদায়ে তিলাওয়াত
কিছু মাসআলা
সিজদায়ে তিলাওয়াত কুরআন মাজীদের হক এবং গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ একটি ইবাদত। সিজদার আয়াত পাঠের পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম কতৃর্ক খুবই গুরুত্বের সাথে সিজদা আদায় করার কথা একাধিক হাদীস শরীফে এসেছে। সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন—
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ السَّجْدَةَ وَنَحْنُ عِنْدَهُ، فَيَسْجُدُ وَنَسْجُدُ مَعَهُ، فَنَزْدَحِمُ حَتّٰى مَا يَجِدُ أَحَدُنَا لِجَبْهَتِهِ مَوْضِعًا يَسْجُدُ عَلَيْهِ.
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করতেন। অতঃপর সিজদা করতেন। আমরাও তাঁর সাথে সিজদা করতাম। এতো ভিড় হতো যে, আমাদের মাঝে কেউ কেউ সিজদা করার জন্য কপাল রাখার জায়গা পেত না। —সহীহ বুখারী, হাদীস ১০৭৬
সিজদার ফযীলত সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—
إِذَا قَرَأَ ابْنُ آدَمَ السَّجْدَةَ فَسَجَدَ اعْتَزَلَ الشَّيْطَانُ يَبْكِي، يَقُولُ: يَا وَيْلَهُ - وَفِي رِوَايَةِ أَبِي كُرَيْبٍ: يَا وَيْلِي - أُمِرَ ابْنُ آدَمَ بِالسُّجُودِ فَسَجَدَ فَلَهُ الْجَنَّةُ، وَأُمِرْتُ بِالسُّجُودِ فَأَبَيْتُ فَلِيَ النَّارُ.
আদম সন্তান যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদায় যায়, তখন শয়তান কেঁদে কেঁদে দূরে সরে যায় এবং বলতে থাকে, দুর্ভাগ্য আমার! আদম সন্তানকে সিজদার জন্য আদেশ করলে সে সিজদা করে জান্নাত লাভ করল। আর আমাকে সিজদার জন্য আদেশ করা হলেও আমি সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানালাম; ফলে আমি জাহান্নামী হলাম। —সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৩
নিম্নে আমরা সিজদায়ে তিলাওয়াতের কিছু জরুরি মাসায়েল নিয়ে আলোচনার প্রয়াস পাবো ইনশাআল্লাহ।
কুরআন মাজীদে মোট সিজদার আয়াতের সংখ্যা
মাসআলা (১) : কুরআন মাজীদে সিজদার আয়াতের সংখ্যা মোট চৌদ্দটি। যেগুলো আমাদের উপমহাদেশে প্রকাশিত মুসহাফগুলোতে ‘সিজদা’ শব্দ লিখে ও আয়াতের সংশ্লিষ্ট অংশের উপরে বা নিচে লম্বা দাগ টেনে চিহ্নিত করা রয়েছে। এ আয়াতগুলোর কোনোটি তিলাওয়াত করলে বা কারো থেকে শ্রবণ করলে সিজদায়ে তিলাওয়াত করা ওয়াজিব হবে। —কিতাবুল আছল ১/২৭৩
মাসআলা (২) : সূরায়ে হজ্বের ৭৭ নং আয়াত, যার পাশে হিন্দুস্তানের মুসহাফগুলোতে ‘ইমাম শাফেয়ী রাহ.-এর মতে সিজদা’ বা এজাতীয় অন্য লেখা বা চিহ্ন থাকে, হানাফী মাযহাবসহ অনেক ফকীহগণের মতে তা সিজদার আয়াত নয়। ইমাম সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব ও হাসান বসরী রাহ. থেকে বর্ণিত, তাঁরা বলেন—
في الحج سجدة واحدة الأولى منها.
সূরায়ে হজ্বে সিজদা একটাই। আর সেটা হচ্ছে, প্রথম সিজদা। —মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৪৩০০
আরো দেখুন : কিতাবুল আছল ১/২৭৩
তাই এ আয়াত পাঠে সিজদা করা জরুরি বা আবশ্যক নয়। অবশ্য তা যেহেতু ইমাম শাফেয়ী রাহ.সহ অন্যান্য আরো ফকীহগণের মতে সিজদার আয়াত। তাই কোনো কোনো হানাফী ফকীহ এ আয়াতেও সিজদা করে নেয়ার কথা বলেছেন। সে হিসাবে এ আয়াত পাঠেও সিজদা করে নেয়া ভালো। —ইলাউস সুনান ৭/২৪৪-২৪৫
সিজদায়ে তিলাওয়াত কার উপর ওয়াজিব, কখন ওয়াজিব
মাসআলা : (৩) প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন মুসলমানের উপর সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব। এ ধরনের কেউ সিজদার আয়াত পাঠ করলে বা অন্য কারো থেকে শ্রবণ করলে তাকে সিজদা করতে হয়। নাবালেগ ও মস্তিষ্কবিকৃত ব্যক্তির উপর সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব নয়।
মাসআলা : (৪) হায়েয ও নেফাস অবস্থায় মহিলারা কারো থেকে সিজদার আয়াত শুনলে তাদের উপর সিজদা ওয়াজিব হয় না। তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
عَنْ إبْرَاهِيمَ أَنّهُ كَانَ يَقُولُ فِي الْحَائِضِ تَسْمَعُ السّجْدَةَ، قَالَ: لاَ تَسْجُدُ، هِيَ تَدَعُ مَا هُوَ أَعْظَمُ مِنَ السّجْدَةِ، الصّلاَة الْمَكْتُوبَةَ.
অর্থাৎ হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা করবে না। তার তো এর চেয়ে বড় বিধান ফরয নামাযই পড়তে হয় না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৪৩৪৭) —কিতাবুল আছল ১/২৭২; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩৯
যাদের থেকে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা ওয়াজিব হয় না
মাসআলা : (৫) অবুঝ নাবালেগ ছেলে ও মস্তিষ্কবিকৃত ব্যক্তি থেকে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা ওয়াজিব হবে না। তবে শিশু নাবালেগ হলেও বুঝমান হলে তার কণ্ঠে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা ওয়াজিব হবে। —কিতাবুল আছল ১/২৭২; বাদায়েউস সানায়ে; ১/৪৪০; রদ্দুল মুহতার ২/১০৭-১০৮
সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের পদ্ধতি
মাসআলা : (৬) সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, দাঁড়িয়ে নিয়ত করে হাত উঠানো ছাড়া আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যাবে। সিজদায় গিয়ে তিনবার سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلٰى পড়ে পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়িয়ে যাবে। এভাবে শুধু একটি সিজদা করবে। —আলবাহরুর রায়েক ২/১২৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৭; ইলাউস সুনান ৭/২৪৯-২৫০
মাসআলা : (৭) সিজদায়ে তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে তাকবীরের সময় হাত উঠানো, হাত বাঁধা, শেষে বৈঠক, তাশাহহুদ, সালাম ফিরানো এসবের কোনো নিয়ম নেই। তাই এক্ষেত্রে এমন কিছু করবে না। —আলমাবসূত, সারাখসী ২/১০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০৫ আলবাহরুর রায়েক ১/১২৬
মাসআলা : (৮) সিজদায়ে তিলাওয়াতের সময় দাঁড়ানো থেকে সিজদায় যাওয়া এবং সিজদা করে আবার দাঁড়িয়ে যাওয়া উভয়টিই মুস্তাহাব। সুতরাং একাধিক সিজদা আদায় করার ক্ষেত্রেও প্রতিটি সিজদা শেষে দাঁড়িয়ে যাবে তারপর আরেকটি সিজদা করবে। তবে না দাঁড়িয়ে যদি বসা থেকে সিজদায় যায় তাহলেও সিজদা আদায় হয়ে যাবে। —আলবাহরুর রায়েক ২/১২৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৭
মাসআলা : (৯) জমিনে সিজদা করতে সক্ষম নয় এমন অসুস্থ ব্যক্তি নামাযের সিজদার ন্যায় ইশারা করে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে পারবে। —কিতাবুল আছল ১/২৭৭; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫০১
মাকরূহ ওয়াক্তে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করা
মাসআলা : (১০) মাকরূহ ওয়াক্ত তথা সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও দ্বিপ্রহরের সময় সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করা নিষেধ। তাই এ সময়গুলোতে সিজদা আদায় থেকে বিরত থাকবে। মাকরূহ ওয়াক্তের আগে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে মাকরূহ ওয়াক্তে সিজদা করলে সিজদা আদায়ই হবে না, পুনরায় তা আদায় করতে হবে। তবে মাকরূহ ওয়াক্তেই যদি কারো উপর সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয় এবং সে এ সময়ে সিজদা আদায় করে তাহলে যদিও সিজদা আদায় হয়ে যাবে তবুও এসময়ে সিজদা আদায় করা অনুত্তম। এক্ষেত্রেও একটু দেরি করে মাকরূহ ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর তা আদায় করবে। নিষিদ্ধ সময়গুলো ছাড়া অন্য যে কোনো সময় সিজদা আদায় করা যায়। —আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৫৭; আলবাহরুর রায়েক ১/১৫০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৭৩
মাসআলা : (১১) ফজরের নামাযের আগে-পরে এবং আছরের পর সূর্য হলদে বর্ণ ধারণ করা পর্যন্ত (অর্থাৎ যে সময়গুলোতে নফল নামায পড়া যায় না সে) সময়গুলোতেও সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করা যাবে; এতে অসুবিধা নেই। তাবেয়ী ইকরিমা রাহ. বলেন—
إذا قرأت القرآن فأتيت على السجدة بعد العصر، وبعد الغداة فاسجد.
আছর বা ফজরের পর কুরআন তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত আসলে তখনই সিজদা করো। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৪৩২৬) —শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ১/৫৪৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৫; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৬৫৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৭৫
এক সিজদার আয়াত একাধিকবার পড়া
মাসআলা : (১২) একাধিক সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলে (চাই এক মজলিসে হোক বা ভিন্ন মজলিসে হোক) প্রতিটি আয়াত তিলাওয়াতের জন্য পৃথক সিজদা করতে হবে। —কিতাবুল আছল ১/২৮১
মাসআলা : (১৩) কোনো একটি নির্দিষ্ট সিজদার আয়াত এক বৈঠকে একাধিকবার পড়লে একটি সিজদাই ওয়াজিব হয়। অনুরূপ একই মজলিসে একই আয়াত একাধিকবার শুনলে (চাই এক ব্যক্তি থেকে হোক বা একাধিক ব্যক্তি থেকে হোক, যেমন হেফজ বা মক্তবের শিক্ষকগণের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে) একটি সিজদাই ওয়াজিব হয়। তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
إذا قرأت السجدة أجزأك أن تسجد بها مرة.
(এক বৈঠকে একাধিকবার একই) সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলে একটি সিজদাই আপনার জন্য যথেষ্ট হবে। —মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ৪২০০
আবু আব্দুর রহমান সুলামী রাহ. থেকে বর্ণিত—
أنه كان يعلمهم القرآن، فيقرؤون السجدة عليه مرارا، فلا يسجد لها إلا مرة واحدة.
তিনি তাঁর ছাত্রদের কুরআন শেখাতেন। ছাত্ররা একই সিজদার আয়াত বারবার তাঁর সামনে পড়ত। তিনি সবগুলোর জন্য কেবল একটি সিজদা আদায় করতেন। —কিতাবুল আছল ১/২৮১
তবে এক সিজদার আয়াতও ভিন্ন ভিন্ন মজলিসে একাধিকবার পড়লে বা একাধিকবার শুনলে প্রতিবার তিলাওয়াত করা বা শোনার জন্য আলাদা আলাদা সিজদা করতে হবে। —তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০৩
মাসআলা : (১৪) একই সিজদার আয়াত নিজে তিলাওয়াত করে ঐ বৈঠকেই অন্যজন থেকে তা শুনলে উভয়টির জন্য (নিজের তিলাওয়াত ও অন্যের থেকে শোনা) একটি সিজদাই যথেষ্ট হবে। —কিতাবুল আছল ১/২৭৩
সুতরাং দরস বা মুযাকারার সময় যে একজন নির্দিষ্ট সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে ও বাকিরা শোনে এবং পরবর্তীতে অন্যজন তিলাওয়াত করে এবং প্রথম তিলাওয়াতকারীসহ অন্যরা শোনে, এক্ষেত্রে একই বৈঠকে হলে প্রত্যেকে একটি করে সিজদা করাই যথেষ্ট।
মাসআলা : (১৫) মসজিদের ভেতরে বা কোনো ঘরে হেঁটে হেঁটে একটি সিজদার আয়াত বারবার পড়লে (যেমনটি হাফেজগণ করে থাকেন) একটি সিজদা ওয়াজিব হয়। হেঁটে হেঁটে পড়ার কারণে একাধিক সিজদা ওয়াজিব হবে না। কেননা মসজিদ ও ঘর একই মজলিস হিসাবে ধর্তব্য হয়। —ফাতাওয়া সিরাজিয়াহ, পৃ. ১৪; ফাতহুল কাদীর ১/৪৭৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৭১; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৫
মাসআলা : (১৬) সফর অবস্থায় যানবাহনে বসে একটি সিজদার আয়াত (মুখস্থ করা বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে) বারবার পড়লেও একটি সিজদা ওয়াজিব হবে। —বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩৩; রদ্দুল মুহতার ২/১১৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০৪; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৪৩
নামাযে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত সংক্রান্ত মাসায়েল
মাসআলা : (১৭) যেভাবে নামাযের বাইরে সিজদার আয়াত পাঠ করলে সিজদা ওয়াজিব হয় তেমনি নামাযেও সিজদার আয়াত পাঠ করলে সিজদা ওয়াজিব হয়। সুতরাং নামাযে সিজদার আয়াত পড়লে সাথে সাথে তাকবীর বলে সিজদায় চলে যাবে। এবং সিজদা থেকে উঠে যথারীতি বাকি নামায আদায় করবে। —শরহু মাআনিল আসার, বর্ণনা ২০৮৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩০
মাসআলা : (১৮) কেউ মসজিদে গিয়ে ইমামকে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করতে শুনল; কিন্তু সে নামাযে শরীক হওয়ার আগে ইমাম সিজদায়ে তিলাওয়াতটি আদায় করে ফেলেন। এমতাবস্থায় সে যদি ঐ রাকাতের (যে রাকাতে ইমামকে সিজদার আয়াত পড়তে শুনেছে) রুকুতে ইমাম সাহেবের সাথে শরীক হয়ে যায় তাহলে রুকুতে শরীক হওয়ার কারণে ইমামের কেরাত এবং সিজদা সবই পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। সেজন্য তাকে পরবর্তীতে আর এ সিজদা আদায় করতে হবে না। কিন্তু ঐ রাকাতের রুকুর পর শরীক হলে সেক্ষেত্রে নামাযের পর ইমাম থেকে শোনা সিজদাটি পৃথকভাবে আদায় করে নিতে হবে। —খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৭৫; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ১/৪৬৯; শরহুল মুনইয়া ৫০১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৩২৫; রদ্দুল মুহতার ২/১১০
মাসআলা : (১৯) নামাযে সিজদার আয়াত পাঠ করে সিজদা আদায়ের পর দাঁড়িয়ে এ রাকাতে কিংবা এ নামাযেরই দ্বিতীয় রাকাতে পুনরায় ঐ আয়াত তিলাওয়াত করলে পরবর্তী তিলাওয়াতের জন্য নতুন করে সিজদা করতে হবে না। আগের সিজদাই যথেষ্ট বিবেচিত হবে। —কিতাবুল আছল ১/২৮২
মাসআলা : (২০) ইমাম সিজদায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তাকবীর বললে কোনো মুক্তাদি যদি ইমাম রুকুতে গেছেন মনে করে রুকুতে চলে যায়। তাহলে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে বিষয়টি বুঝতে পারলে সাথে সাথে সে রুকু ছেড়ে ইমামের সাথে সিজদায় শরীক হয়ে যাবে। কিন্তু যদি ইমাম সাহেব সিজদা শেষ করে দাঁড়িয়ে যান তাহলে সেও দাঁড়িয়ে ইমামের সাথে বাকি নামায আাদায় করবে; একাকী সিজদাটি করবে না। এবং নামায শেষে পরবর্তীতেও পৃথকভাবে সিজদাটি আদায় করবে না। ভুলে এমনটি করার কারণে তার নামাযের ক্ষতি হবে না। —ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬০; আলবাহরুর রায়েক ২/১২১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১১২; ফাতাওয়া উসমানী ১/৫৪৩
মাসআলা : (২১) নামাযে সিজদার আয়াত পাঠের পর ভুলে সিজদায়ে তিলাওয়াত না করলে এবং পরবর্তীতে নামাযের মধ্যেই সিজদার কথা স্মরণ হলে সাথে সাথে সিজদাটি করে নেবে। অতঃপর বাকি নামায যথারীতি আদায় করবে এবং সিজদা আদায় বিলম্বের কারণে নামায শেষে সিজদায়ে সাহু করে নেবে। ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৪; রদ্দুল মুহতার ২/১১০
মাসআলা : (২২) নামাযে ভুলে সিজদায়ে তিলাওয়াত না করে সালাম ফিরিয়ে ফেললে, যদি নামায পরিপন্থী কোনো কাজ করার আগে বিষয়টি স্মরণ হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ তা আদায় করে বসে তাশাহহুদ পড়বে এবং সাহু সিজদা দিয়ে নামায শেষ করবে। তবে নামায পরিপন্থী কোনো কাজ করে ফেললে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে সিজদাটি আর পৃথকভাবে আদায় করবে না। নামাযের সিজদায়ে তিলাওয়াত নামাযেই আদায় করতে হয়। নামাযে আদায় না করলে পরবর্তীতে তা আদায়ের সুযোগ থাকে না। তবে সর্বাবস্থায় নামায আদায় হয়ে যাবে। —কিতাবুল আছল ১/২৭৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪১০
নামাযের সিজদা বা রুকুর মাধ্যমে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করা
মাসআলা : (২৩) নামাযে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলে স্বতন্ত্র সিজদার মাধ্যমেই তা আদায় করা উচিত। অবশ্য সিজদার আয়াত পাঠের পর যদি আরো দুই আয়াতের বেশি তিলাওয়াত করার পূর্বেই নামাযের রুকু-সিজদা করা হয় তাহলে নামাযের সিজদার মাধ্যমে ইমাম-মুক্তাদি সকলের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সিজদায়ে তিলাওয়াতের জন্য ভিন্নভাবে নিয়ত করা শর্ত নয়। এমনকি সিজদার আয়াত পড়া হয়েছে বা সিজদা ওয়াজিব হয়েছে একথা মুক্তাদিগণ না বুঝলেও তাদের সিজদা আদায় হয়ে যাবে। —খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৭; ফাতহুল কাদীর ১/৪৭০; রদ্দুল মুহতার ২/১১১
মাসআলা : (২৪) যেমনিভাবে নামাযের সিজদার মাধ্যমে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায় তেমনিভাবে সিজদায়ে তিলাওয়াতের পর অনুর্ধ্ব দুই আয়াত পড়ে রুকুতে চলে গেলে এবং রুকুতে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের নিয়ত করে নিলে নামাযের রুকুর মাধ্যমেও সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায়। তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. থেকে বর্ণিত—
أنه كان يقرأ السجدة في بني إسرائيل وما بعدها، ثم يركع.
তিনি নামাযে সূরা বনী ইসরাঈলের (শেষে) সিজদার আয়াত ও তার পরবর্তী অংশ )দুই আয়াত( পড়ে রুকুতে চলে যেতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, বর্ণনা ৪৩৬৯) —কিতাবুল আছল ১/২৭৪; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৮; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৩১; রদ্দুল মুহতার ২/১১২
নামাযী ব্যক্তি বাইরের কারো থেকে সিজদার আয়াত শুনলে
বা নামাযী ব্যক্তি থেকে বাইরের কেউ সিজদার আয়াত শুনলে
মাসআলা : (২৫) নামাযী ব্যক্তি থেকে বাইরের কেউ (যেমন ওযুকারী, সুন্নত নামায আদায়রত ব্যক্তি বা মসজিদের পাশ দিয়ে গমনকারী কেউ) সিজদার আয়াত শুনলে শ্রোতার উপরও সিজদা ওয়াজিব হয়। তাই শ্রবণকারীকে একাকী ঐ সিজদা আদায় করে নিতে হবে। শ্রোতা ঐ সময় যদি অন্য নামাযে থাকে তবে নামায শেষ করে সিজদা করবে। তবে অন্যদিকে মনযোগ থাকার কারণে এ ধরনের ব্যক্তি যদি সিজদার আয়াত পড়া হয়েছে— এ বিষয়টিই বুঝতে না পারে, তাহলে তার উপর সিজদা ওয়াজিব হবে না। —কিতাবুল আছল ১/২৭৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৬২; শরহুল মুনইয়া ৫০০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১১০
মাসআলা : (২৬) অনুরূপ নামাযরত অবস্থায় নামাযী ব্যক্তি অন্য কারো (পাশে বসে তিলাওয়াতকারী বা অন্য নামাযী) থেকে সিজদার আয়াত শুনলে তার উপরও সিজদা ওয়াজিব হয়। তবে তা আদায় করতে হয় নামাযের পর। তাবেয়ী ইবনে সীরীন রাহ. বলেন—
يسجد إذا انصرف.
নামায শেষ করে সিজদাটি করে নেবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ৪৩০৭)
আরো দেখুন : কিতাবুল আছল ১/২৭৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০২; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫০০; আলবাহরুর রায়েক ২/১২১
বিবিধ মাসায়েল
রেকর্ড থেকে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদায়ে তিলাওয়াত
মাসআলা : (২৭) সিজদার আয়াত শোনার কারণে সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হওয়ার জন্য বুঝমান, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন ব্যক্তি থেকে সিজদার আয়াত শ্রবণ করা শর্ত। পূর্বের রেকর্ড বা ধারণকৃত অডিও-ভিডিও থেকে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা ওয়াজিব হবে না। তবে এসব ক্ষেত্রেও সিজদা করে নেওয়া উত্তম। —বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪০; ফাতহুল কাদীর ১/৪৬৮; শরহুল মুনইয়া ৫০০; আলবাহরুর রায়েক ২/১২০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৪; রদ্দুল মুহতার ২/১০৮; জাওয়াহিরুল ফিকহ ৭/৪৫৬
লাইভ (সরাসরি সম্প্রচার) থেকে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদায়ে তিলাওয়াত
মাসআলা : (২৮) আর সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ) থেকে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হবে। সুতরাং বর্তমানে যেসব অনলাইনে ক্লাস বা তিলাওয়াত, বয়ান-বক্তৃতার লাইভ প্রচারিত হয় সেগুলোতে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করা হলে শ্রোতাদের উপর সিজদা করা ওয়াজিব হবে। মাইক বা লাউডস্পিকার এবং মোবাইলে সরাসরি (রেকর্ড নয়) কারো সিজদার আয়াত তিলাওয়াত শুনলে শ্রোতাদের উপর সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হবে। —জাওয়াহিরুল ফিকহ ৭/৪৫৬
সিজদার আয়াতের অনুবাদ পড়লে সিজদায়ে তিলাওয়াত
মাসআলা : (২৯) সিজদার আয়াতের অনুবাদ পাঠ করলে বা শ্রবণ করলে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সিজদা ওয়াজিব হবে না। অবশ্য কোনো কোনো ফকীহের মতে এক্ষেত্রেও সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয়ে যায়। তাই সতর্কতামূলক সিজদা করে নেয়া উচিত। —আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৩২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩০; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৮৮; মাজমুআতু রাসায়িলিল লাখনাভী ৪/৩৭৩
সিজদার আয়াত লিখলে বা টাইপ করলে সিজদায়ে তিলাওয়াত
মাসআলা : (৩০) সিজদা ওয়াজিব হয় মুখে উচ্চারণ করে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করার দ্বারা। তাই মুখে উচ্চারণ না করে সিজদার আয়াত শুধু লিখলে, টাইপ করলে বা মনে মনে পড়লে সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হবে না। —আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৬২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৪; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৫৩২; রদ্দুল মুহতার ২/১০৩
আয়াতের কতটুকু অংশ পড়লে সিজদা ওয়াজিব হবে
মাসআলা : (৩১) সিজদা ওয়াজিব হওয়ার জন্য সিজদার পূর্ণ আয়াত পাঠ করা আবশ্যক নয়; বরং যেমনিভাবে সিজদার পূর্ণ আয়াত পাঠ করলে সিজদা ওয়াজিব হয় তদ্রƒপ সিজদার আয়াত থেকে সিজদা সম্বলিত শব্দসহ তার আগে বা পরের শব্দ মিলিয়ে পড়লেও সিজদা ওয়াজিব হয়ে যায়। ফিকহের কিতাবাদিতে কোনো কোনো সিজদার আয়াতের পরিমাণ তিন/চার আয়াত পর্যন্তও উল্লেখ করা হয়েছে, তা মূলত সিজদা সংশ্লিষ্ট মাযমূনের প্রতি লক্ষ্য রেখে বলা হয়েছে। অর্থাৎ এসব জায়গায় তিন/চার আয়াত মিলে বিষয়বস্তু পূর্ণ হয়েছে। এর অর্থ এ নয় যে, সর্বক্ষেত্রে সিজদা ওয়াজিব হওয়ার জন্য পূর্ণ তিন/চার আয়াত পড়া আবশ্যক। —রদ্দুল মুহতার ২/১০৩; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ২৬১; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩৭২
বিলম্বে সিজদা আদায় করা
মাসআলা : (৩২) সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করার পর সম্ভব হলে তৎক্ষণাৎ সিজদা আদায় করা ভালো। বিলম্বে আদায় করলেও গুনাহ হবে না। তবে যথাসম্ভব তিলাওয়াতের নিকটবর্তী সময়ে আদায় করতে চেষ্টা করবে; বেশি দেরি করবে না। বিলম্ব করলে অনেক সময় স্মরণ নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ওয়াজিব ছুটে যাওয়ার কারণে গোনাহগার হবে। —আলবাহরুর রায়েক ২/২১৯; ফাতহুল কাদীর ১/৪৯০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২৯; রদ্দুল মুহতার ২/১০৯
উপস্থিত লোকজন সিজদা আদায়ে প্রস্তুত না থাকলে করণীয়
মাসআলা : (৩৩) অন্য মানুষের সামনে তিলাওয়াতের সময় যদি উপস্থিত লোকজন সিজদা আদায়ের জন্য প্রস্তুত না থাকেন কিংবা ভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন তাহলে সিজদার আয়াত উচ্চৈঃস্বরে পড়বে না। এসব ক্ষেত্রে সিজদার আয়াত অনুচ্চস্বরে তিলাওয়াত করা উচিত। —বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৫০; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/১১৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০৫
শ্রোতাদের সিজদায়ে তিলাওয়াতের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া
মাসআলা : (৩৪) অন্যদের সামনে উচ্চৈঃস্বরে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে ফেললে শ্রোতাদের সিজদার আয়াতের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া উচিত। যেন সিজদার আয়াতের বিষয়টি না বোঝার কারণে কারো সিজদা ছুটে না যায়।
অনাদায়ী সিজদার সংখ্যা স্মরণ না থাকলে করণীয়
মাসআলা : (৩৫) কারো সিজদায়ে তিলাওয়াত অনেক বেশি পরিমাণে অনাদায়ী থাকলে এবং কী পরিমাণ সিজদা অনাদায়ী রয়েছে সে সংখ্যাও নিশ্চিতভাবে জানা না থাকলে, প্রবল ধারণার ভিত্তিতে একটি সংখ্যা নির্ধারণ করে সে পরিমাণ সিজদা আদায় করে নেবে। —হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী, পৃ. ৪৪৭
কিছু ভুল আমল
সিজদার আয়াত বাদ দিয়ে তিলাওয়াত করা
মাসআলা : (৩৬) কোনো কোনো মানুষকে দেখা যায়, তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত আসলে তা বাদ দিয়ে তিলাওয়াত করেন; যাতে সিজদা করতে না হয়। এটি একটি ভুল পদ্ধতি। তিলাওয়াতের মাঝে সিজদার আয়াত বাদ দেওয়া কুরআনের আদব পরিপন্থী। আল্লাহর কালাম ধারাবাহিকভাবেই পড়ে যাওয়া কর্তব্য। তৎক্ষণাৎ সিজদা না করতে পারলে পরে সিজদা করে নেবে। —কিতাবুল আছল ১/২৭১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৪
সারা জীবনের জন্য চৌদ্দটি সিজদা
মাসআলা : (৩৭) কেউ কেউ মনে করেন, তিলাওয়াতের কারণে যত সিজদাই ওয়াজিব হোক, চৌদ্দটি সিজদা করে নিলে সবগুলো সিজদা আদায় হয়ে যাবে। এ ধারণাটি মারাত্মক ভুল। যতগুলো সিজদার আয়াত যতবার তিলাওয়াত করা হয়েছে সবগুলোর জন্য পৃথক সিজদা দিতে হবে। শুধু এক বৈঠকে একটি সিজদার আয়াত একাধিকবার পড়লে সেক্ষেত্রে একটি সিজদা ওয়াজিব হবে।
তাৎক্ষণিক সিজদা আদায় সম্ভব না হলে নির্দিষ্ট দুআ পড়া
মাসআলা : (৩৮) সিজদার আয়াত পাঠের পর কোনো কারণে তাৎক্ষণিক সিজদা আদায় সম্ভব না হলে অনেকে এক্ষেত্রে—
سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ اِلَیْكَ الْمَصِیْرُ.
—এ দুআটি পড়ে থাকেন। ফিকহের কোনো কোনো কিতাবে এক্ষেত্রে এমনটি পড়ার কথা আসলেও হাদীস-আছারে এরকম কিছু পাওয়া যায় না। সুতরাং এমন দুআ পড়ার প্রয়োজন নেই। এবং এটাকে জরুরি বা সুন্নত মনে করা যাবে না। —আলফাতওয়াল ফিকহিয়্যাতুল কুবরা, ইবনে হাজার হাইতামী ১/১৯৪