প্রশ্নোত্তর
[আনওয়ারুল কুরআন বিভাগের সর্বশেষ শিরোনাম প্রশ্নোত্তর। এর অধীনে প্রত্যেক সংখ্যায় ইনশাআল্লাহ তিন থেকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে।
সংক্ষেপের জন্য প্রশ্নকারীর নাম-পরিচয় অনুল্লেখ থাকবে।]
প্রশ্ন ৫৯ : যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি কাওয়াইদুত তাজভীদ সম্পর্কে মূল উৎসগ্রন্থ থেকে বিস্তারিত জানার জন্য মুতাকাদ্দিমীন ও সমকালীন আলেমাগণের লিখিত নির্ভরযোগ্য কিছু কিতাবের তালিকা ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি জানতে চাচ্ছি।
উত্তর : মাসিক আলকাউসারের অক্টোবর ও নভেম্বর-২০২১ সংখ্যার ‘আনওয়ারুল কুরআন : প্রশ্নোত্তর’ পর্বে এ বিষয়ে মুতাকাদ্দিমীন ও মুতাআখখিরীনের বেশ কিছু কিতাবের তালিকা ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো এ বিষয়ে উৎসগ্রন্থ হিসেবে বিবেচ্য। সে সংখ্যাদুটি দেখে নিতে পারেন। সেইসঙ্গে এখানে এ বিষয়ক আরও কয়েকটি কিতাবের নাম পেশ করা হচ্ছে।
১। الدر النضيد في علم التجويد – الإمام أبو العباس أحمد بن عبد الله الخابوري (690ﻫ)
ইমাম আবুল আব্বাস আলখাবূরী রাহ.-এর ‘আদদুররুন নাদীদ ফী ইলমিত তাজবীদ’ কিতাবটি মাকতাবা দারুয যামান, মদীনা মুনাওয়ারা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
ইমাম ইবনুল জাযারী রাহ. তাঁর غاية النهاية في طبقات القراء কিতাবে লিখেছেন, খাবূরী রাহ.-এর কিতাব এ শাস্ত্রে রচিত অন্যতম সেরা একটি কিতাব।
২।أحكام قراءة القرآن الكريم – الشيخ محمود خليل الحصري (1401 ﻫ)
শায়েখ মাহমূদ খলীল আলহুসারী রাহ. মিশরে ইলমুল কিরাআত ও তাজবীদের বড় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর ‘আহকামু কিরাআতিল কুরআনিল কারীম’ আলমাকতাবাতুল মাক্কীয়্যা, মক্কা মুকাররমা, থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ছাড়াও এ বিষয়ে তাঁর আরও কিতাব রয়েছে।
৩।الفوائد المكية – عبد الرحمن المكي (1341 هـ)
আবদুর রহমান আলমাক্কী রাহ. উপমহাদেশের ইলমুল কিরাআত ও তাজবীদের অনেক বড় আলেম ছিলেন। ভারত পাকিস্তানে এ শাস্ত্রের অনেক বড় বড় ব্যক্তিত্বই তার শাগরিদ। ‘আলফাওয়াইদুল মাক্কীয়্যা’ মূলত উর্দূ ভাষায় রচিত। পরবর্তীতে তা আরবীতে ভাষান্তর হয়েছে। উর্দূ সংস্করণটি মাকতাবা সাওতুল কুরআনসহ একাধিক মাকতাবা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। আরবী সংস্করণটি ইদারাতুল মাআরিফ করাচী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। উপমহাদেশের বহু মাদরাসায় এ কিতাব নেসাবের অন্তর্ভুক্ত।
আবদুর রহমান আলমাক্কী রাহ.-এর শাগরিদ যিয়াউদ্দিন আহমদ এলাহাবাদী রাহ. (১৩৭১ হি.)। তিনি হিন্দুস্তানে ইলমুল কিরাআত ও তাজবীদের বড় আলেম ছিলেন। তাঁরও এ বিষয়ে কিতাব আছে خلاصة البيان في تجويد القرآن নামে। এ কিতাবটিও হিন্দুস্তানের অনেক মাদরাসায় নেসাবভূক্ত।
প্রশ্ন ৬০ : হুজুর, আমার এক আত্মীয়ের নাম মুরসালীন। সূরা ইয়াসীনের শুরুতে এই শব্দটি আছে, এখান থেকে তার এই নাম রাখা হয়েছে। কিন্তু একজন আলেম বললেন, মুরসালীন কোনও নাম হয় না। আমি বিষয়টি আপনার নিকট জানতে চাচ্ছি।
উত্তর : মুরসালীন (مُرْسَلِیْن) শব্দটির মূলরূপ ‘মুরসালূন’ (مُرْسَلُوْنَ), যা মুরসালুন (مُرْسَلٌ) শব্দের বহুবচন। সূরা ইয়াসীনের উক্ত স্থানে আগের শব্দের কারণে ব্যাকরণগত পরিবর্তন হয়ে মুরসালীন ব্যবহৃত হয়েছে। এর শাব্দিক অর্থ ‘প্রেরিত ব্যক্তিগণ’। কুরআন কারীমে অনেক জায়গায় নবীগণ ও ফেরেশেতাদের ব্যাপারে মুরসালূন ও মুরসালীন শব্দদুটি এসেছে, অর্থাৎ তাদেরকে পাঠানো হয়েছে। কাজেই মুরসালীন কোনো নাম হয় না।