Safar 1428   ||   March 2007

একটি ভুল ধারণা
মনগড়াভাবে কোনো মসজিদকে বিশেষ ফযীলতের মসজিদ মনে করা

কোনো কোনো মানুষের মধ্যে বিশেষত মহিলাদের মধ্যে এই প্রবণতা লক্ষ করা যায় যে, কোনো মসজিদ অনেক পুরানো হলে, কিংবা কোনো মসজিদকে জাতীয় মসজিদ আখ্যা দেওয়া হলে অথবা কোনো মসজিদের সঙ্গে মাজার থাকলে অথবা অন্য কোনো দিক দিয়ে তাতে কোনো বিশেষত্ব থাকলে ওই মসজিদকে ফযীলতের মসজিদ মনে করা হয়। ধারণা করা হয় যে, এই মসজিদে নামায পড়ায় অন্য কোনো মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে বেশি ছওয়াব। কোনো কোনো মানুষ তো এই উদ্দেশ্যে সফর পর্যন্ত করে থাকে। মহিলাদেরকে দেখা যায়, তারা এ জাতীয় মসজিদের জন্য মান্নত করেন এবং বাচ্চাদেরকে বরকতের জন্য বা অসুস্থদেরকে সুস্থতার জন্য সেসব মসজিদে স্পর্শ করিয়ে নিয়ে আসেন।

মনে রাখতে হবে, এগুলো হল ভিত্তিহীন ধারণা ও অর্থহীন কাজ। উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো বা এ জাতীয় আরও কোনো বৈশিষ্ট্য কোনো মসজিদের শরয়ী মর্যাদা ফযীলত বৃদ্ধি করে না। সকল মসজিদই আল্লাহর ঘর এবং ফযীলতের দিক থেকে সবগুলোর মর্যাদা এক সমান। কোনো ঐতিহাসিক বিশেষত্বের কারণে কিংবা অন্য কোনো কারণে কোনো মসজিদ বিশেষ স্বাতন্ত্রে্যর অধিকারী হতেই পারে, কিন্তু এতে করে আল্লাহর ঘর হওয়ার দিক থেকে এবং ছওয়াব ও ফযীলতের দিক থেকে কোনো ব্যবধান সৃষ্টি হয় না। সকল মসজিদ এক মর্যাদার। ফযীলত ও অধিক ছওয়াবের বিষয়টি শুধু তিন মসজিদের ক্ষেত্রে প্রমাণিত।

এক. মসজিদে হারাম, দুই. মসজিদে নববী, তিন. মসজিদে আক্বসা। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلَاثِ مَسَاجِدَ: إِلَى الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ، وَمَسْجِدِي هَذَا، وَالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى.

শুধু তিন মসজিদের উদ্দেশেই সফর করা যাবে। মসজিদে হারাম, আমার এই মসজিদ (মসজিদে নববী) এবং মসজিদে আক্বসা। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৯৭

কোনো মসজিদকে জাতীয় মসজিদ আখ্যায়িত করা একটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এর কারণে ওই মসজিদে বিশেষ ফযীলত কীভাবে সৃষ্টি হতে পারে? তদ্রূপ মসজিদের ভিতরে মাজার হওয়া তো জায়েজই নেই, মসজিদের আশেপাশেও মাযার থাকা উচিত নয়। তাহলে মাযার থাকার কারণে মসজিদের ফযীলত বৃদ্ধি পায় কীভাবে?

উপরোক্ত আলোচনার উদ্দেশ্য এটা নয় যে, মহল্লার মসজিদ ছেড়ে অন্য কোনো মসজিদে নামায পড়া যাবে না; বরং উদ্দেশ্য হল, উপরোক্ত ভুল ধারণাটি সংশোধন করা উচিত। একটি উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যে মসজিদে কোনো বুযুর্গ আলেম ইমাম হিসেবে আছেন এবং সেখানে দ্বীনী তালীম ও মোযাকারার ব্যবস্থা রয়েছে সেই মসজিদ যদি অন্য কোনো মহল্লায়ও হয় তবুও সেখানে দ্বীনী ও ইলমী উন্নতির স্বার্থে যাওয়া মোটেই নিষেধ নয়।

 

advertisement