ভিত্তিহীন বর্ণনা
রবিউল আউয়াল কেন্দ্রিক বানোয়াট আমল ও তার ফযীলত
বার চাঁদের আমল শিরোনামের কিছু পুস্তকে রবিউল আউয়াল মাস কেন্দ্রিক কিছু বানোয়াট আমল ও তার ফযীলত উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলোর একটিতে লেখা হয়েছে-
রবিউল আউয়াল মাসে নিম্নোক্তরূপে আমল করলে আল্লাহ পাকের কৃপায় যে কোনো বাসনা সফল এবং অশেষ নিআমত লাভ হয়।
আমল করার নিয়ম : মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গোসল করত একটি নির্ধারিত স্থান সুগন্ধযুক্ত করবে, অতঃপর নতুন পোশাক পরিধান করে ঐ সুগন্ধযুক্ত স্থানে বসে সর্বপ্রথম একচল্লিশবার নিম্নোক্ত দুআটি পাঠ করে একবার সূরা মুয্যাম্মিল পাঠ করে একচল্লিশবার নিম্নোক্ত দ্বিতীয় দুআটি পাঠ করবে...প্রথম দুআ... দ্বিতীয় দুআ...।
আরেকটিতে রবিউল আউয়ালের আমল হিসেবে লেখা হয়েছে-
যদি কেউ এই মাসের ১২, ১৩, ১৪ তারিখের রাত্রিতে বিতিরের নামাযের পর ৭ হাজার ৭ শত ৪১ বার উক্ত দরূদ (নির্দিষ্ট একটি দরূদ) শরীফ পাঠ করে, তহলে সে গরীব থাকলে ধনী হবে। শর্ত হল, ১২ তারিখ দোয়া পাঠের শুরুর দিনটি সোমবার, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার হওয়া চাই।
আরেকটি পুস্তকে লেখা হয়েছে-
হাদীসের কিতাবে আছে, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিনে বেশি পরিমাণে নফল নামায, কোরআন তেলাওয়াত, যেকের, তসবীহ-তাহলীল পাঠ, দান-খয়রাত ও তাঁর পবিত্র সীরাত আলোচনা করা, তাঁর সুন্নতের কথা মানুষকে জানিয়ে দেয়া অনেক সওয়াবের কাজ। এতে গোনাহ মাফ হয়, মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, অভাব দূর হয়।
এভাবে বার চাঁদের আমল শিরোনামের বিভিন্নটাতে বিভিন্ন আমল মনগড়াভাবে বলা হয়েছে।
এসবের কোনোটা উল্লেখ করতে গিয়ে তারা বলেছে, হাদীসের কিতাবে আছে...। অথচ হাদীসের কিতাবের সাথে এগুলোর ন্যূনতম কোনো সম্পর্ক নেই। মনগড়া কথাকে হাদীসের কিতাবে আছে বলে চালিয়ে দেয়া অনেক বড় অন্যায় ও গুনাহের কাজ।
এগুলোর বর্ণনাভঙ্গি ও ভাষা-উপস্থাপন থেকেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, এগুলো বানিয়ে বানিয়ে বলা হচ্ছে।
সবচেয়ে বড়কথা হল, শরীয়তে রবিউল আউয়াল মাসের সাথে যুক্ত কোনো আমলেরই অস্তিত্ব নেই, সেখানে আমলের বিশেষ সূরত ও তার ফযীলত তো দূরের কথা।
আল্লাহ আমাদের এজাতীয় ভিত্তিহীন বানোয়াট বিষয় বলা ও বিশ্বাস করা থেকে রক্ষা করুন।