Rabiul Auwal 1444   ||   October 2022

প্রশ্নোত্তর

[আনওয়ারুল কুরআন বিভাগের সর্বশেষ শিরোনাম প্রশ্নোত্তর এর অধীনে প্রত্যেক সংখ্যায় ইনশাআল্লাহ তিন থেকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। সংক্ষেপের জন্য প্রশ্নকারীর নাম-পরিচয় অনুল্লেখ থাকবে।]

 

প্রশ্ন ৩৯ : সূরা ইউসুফের ৮৫ নং আয়াত-

قَالُوْا تَاللّٰهِ تَفْتَؤُا تَذْكُرُ یُوْسُفَ حَتّٰی تَكُوْنَ حَرَضًا اَوْ تَكُوْنَ مِنَ الْهٰلِكِیْنَ

বাংলা একটি তাফসীরে দেখলাম এ আয়াতের تَفْتَؤُا تَذْكُرُ یُوْسُفَ -এর অর্থ করা হয়েছে- আপনি তো ইউসুফকে ভুলবেন না। এই অর্থ কীভাবে করা হয়েছে, জানতে চাচ্ছি।

উত্তর : এখানে تَفْتَؤُا -এর শুরুতে একটি  لا النافية  উহ্য আছে। অর্থাৎ  لاتفتأ , এর অর্থ হল-  لاتزالতবে  تَفْتَؤُا تَذْكُرُ یُوْسُفَ  বাক্যটি যেহেতু  تَاللّٰهِ  (কসম)-এর জবাবে এসেছে, তাই لا -কে উল্লেখ করা হয়নি।  جواب القسم যদি  لا النافية যুক্ত  مضارع  হয়, তাহলে সেই لا উল্লেখ করা জরুরি নয়। তবে অর্থের মধ্যে সেই لا নিহিত থাকে। সে হিসেবে বাক্যটির অর্থ হল- আপনি তো ইউসুফকে স্মরণ করা থেকে ক্ষান্ত হবেন না। এটাকেই অন্যভাবে লেখা হয়েছে- আপনি তো ইউসুফকে ভুলবেন না। (মুগনিল লাবীব ১/৮৩৪; যাদুল মাসীর ৪/২৭১-২৭১)
 

প্রশ্ন ৪০ : হুজুর আমি শুনেছি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি হেরা গুহায় সর্বপ্রথম-

اِقْرَاْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِیْ خَلَقَ

-এই আয়াত নাযিল হয়েছে। কিন্তু তখন মোট কতগুলো আয়াত নাযিল হয়েছিল?

উত্তর : এ বিষয়ে সহীহ বুখারীতে আয়েশা রা. থেকে এক দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, সর্বপ্রথম নাযিলকৃত আয়াত হল সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত-

قْرَاْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِیْ خَلَقَۚ۝۱ خَلَقَ الْاِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍۚ۝۲ اِقْرَاْ وَ رَبُّكَ الْاَكْرَمُۙ۝۳ الَّذِیْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِۙ۝۴ عَلَّمَ الْاِنْسَانَ مَا لَمْ یَعْلَمْ

পড় তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি (সবকিছু) সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্ত দ্বারা। পড় এবং তোমার প্রতিপালক সর্বাপেক্ষা বেশি মহানুভব। যিনি কলম দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না। [সূরা আলাক (৯৬) : ১-৫] -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৯৫৩, ৬৯৮২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫২

 

প্রশ্ন ৪১ : সূরা যুখরুফের শেষদিকে আছে-

وَ قِیْلِهٖ یٰرَبِّ اِنَّ هٰۤؤُلَآءِ قَوْمٌ لَّا یُؤْمِنُوْنَ

এ আয়াতে وَ قِیْلِهٖ -এর লামে যের হল কেন? এছাড়া কুরআন শরীফে যত জায়গায় وَ قِیْل আছে, সব জায়গায় লামের উপরে যবর। 

উত্তর : সূরা যুখরুফের উল্লিখিত আয়াতটির অর্থ, এবং (আল্লাহ তাআলা রাসূলের) এ কথা সম্পর্কেও (অবগত) যে, হে আমার রব! এরা এমন সম্প্রদায়, যারা ঈমান আনবে না। সুতরাং লক্ষ করলে দেখা যাবে, এখানে  وَ قِیْلِهٖ (তার এ কথা)-এর قيل শব্দটি  قال-يقول ফেয়েলের মাসদার (مصدر)এটা ছাড়া কুরআন কারীমে অন্য যত জায়গায় وَ قِیْل শব্দ আছে, সব জায়গায় তা قال -এর মাজহূলের সীগা হিসেবে এসেছে। কিন্তু এখানে এটা قال -এর মাজহূলের সীগা নয়, বরং মাসদার। قال-يقول ফেয়েলের মাসদার যেমন قول , তেমনি قيل ও। তারপর এখানে যের বা কাসরাহ হওয়ার কারণ হল, قِیْلِهٖ শব্দটি এর তিন আয়াত আগে উল্লেখিত السّاعَةِ   শব্দটির উপর عطف হয়েছে। তাই  السّاعَةِ -এর মতো এখানেও কাসরাহ হয়েছে। (তাফসীরে কাবীর ৯/৬৪৯; তাফসীরে কুরতুবী ১৬/১২৩-১২৪)

 

প্রশ্ন ৪২ : কুরআন শরীফে আছে, মহাপ্লাবনের পরে হযরত নূহ আলাইহিস সালামের নৌকা জূদী পাহাড়ে থেমেছিল। সেই পাহাড়টা কোন্ জায়গায়?

উত্তর : জূদী পাহাড় বর্তমান তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। এই পাহাড় ইরাক-তুরস্ক সীমান্ত থেকে ইরান-আর্মেনিয়া সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত দীর্ঘ এক পর্বতমালার অংশ। (আতলাসুল কুরআন, পৃ. ৪৯)

 

প্রশ্ন ৪৩ : সূরা ফীলে যে হস্তিবাহিনীর কথা বলা হয়েছে, তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ তাআলা কি আবাবিল নামক ছোট পাখি পাঠিয়েছিলেন?

উত্তর : আল্লাহ তাআলা হস্তিবাহিনীকে ধ্বংস করার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট পাখি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি কোন্ পাখি, কুরআন কারীমে তার নাম বলা হয়নি। কুরআন কারীমে বলা হয়েছে- طَیْرًا اَبَابِیْلএর অর্থ, ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। اَبَابِیْل  শব্দের অর্থ ঝাঁকে ঝাঁকে, দলে দলে। এটি ওই পাখির নাম নয়। (তাফসীরে তবারী ২৪/৬২৭-৬২৮; তাফসীরে কুরতুবী ২০/১৯৬-১৯৭) হ

 

advertisement