ঈদের নামায : জরুরি মাসায়েল
আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের দুটি ঈদ দান করেছেন; ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। মুসলিমদের ঈদ ও উৎসব অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীর উৎসব থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এবং অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। আল্লাহর যিকির ও তাঁর বড়ত্বের ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হয় মুসলিমদের ঈদ। ঈদের দিনে মুসলিমদের প্রথম ও প্রধান আমল হল ঈদের নামায। ঈদুল আযহার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
إِنّ أَوّلَ مَا نَبْدَأُ بِهِ فِي يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ، ثُمّ نَرْجِعَ، فَنَنْحَرَ...
আজকের দিনে আমরা সর্বপ্রথম ঈদের নামায আদায় করব। এরপর কুরবানী করব...। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৬৮
আজকের নিবন্ধে ঈদের দিনের প্রধান আমল ঈদের নামায-এর কিছু জরুরি মাসআলা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
ঈদের নামায কাদের উপর ওয়াজিব
মাসআলা : যাদের উপর জুমার নামায ফরয, তাদের উপর ঈদের নামায ওয়াজিব। অর্থাৎ, প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন, যেসকল মুসলিম পুরুষ, জামাতে উপস্থিত হয়ে ঈদের নামায আদায়ের সক্ষমতা রাখে তাদেরকে ঈদের নামায পড়তে হবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৭৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৭; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৬৫
মাসআলা : মহিলাদের উপর ঈদের নামায ওয়াজিব নয়। অনুরূপ এমন অসুস্থ পুরুষ, যে ঈদগাহে উপস্থিত হয়ে ঈদের নামায আদায়ের সক্ষমতা রাখে না, তার উপরও ঈদের নামায ওয়াজিব নয়। -কিতাবুল আছল ১/৩২৩; মাবসূত, সারাখসী ২/৪০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৭
মাসআলা : মুসাফির তথা যে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কি. মি. দূরত্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকা ত্যাগ করেছে- এমন ব্যক্তির উপর ঈদের নামায ওয়াজিব নয়। তবে সে যদি ঈদের নামায পড়ে তাহলে তা সহীহ হবে এবং এর সওয়াবও পাবে। -আততাজরীদ, কুদুরী ২/৯৮১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৭; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/৩৯৬
মাসআলা : হজ্বের সফরে থাকা লোকদের জন্য ঈদুল আযহার নামাযের বিধান নেই। -আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/৩৯৪
ঈদের নামাযের ওয়াক্ত
মাসআলা : ঈদের নামাযের ওয়াক্ত হচ্ছে- সূর্য উদিত হয়ে (নামাযের) নিষিদ্ধ সময় শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু করে যাওয়াল তথা সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার আগ পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যেই ঈদের নামায পড়তে হবে। যাওয়ালের পর আর ঈদের নামায সহীহ হবে না। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৩৫; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া, পৃ. ৬৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৭৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৯
মাসআলা : ঈদুল আযহার নামায ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর দেরি না করে একটু তাড়াতাড়ি পড়া মুস্তাহাব। যাতে কুরবানীর কাজ দ্রুত শুরু করা যায়। আর ঈদুল ফিতরের নামাযও ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি আদায় করে নেবে। -মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, বর্ণনা ৫৬৫১; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া, পৃ. ৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া; ১/১৫০
ঈদের নামাযের স্থান
মাসআলা : ঈদের নামায ঈদগাহে ও খোলা মাঠে পড়া সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং খোলাফায়ে রাশেদীন সকলেই ঈদের নামায ঈদগাহে পড়তেন। হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَخْرُجُ يَوْمَ الفِطْرِ وَالأَضْحَى إِلَى المُصَلّى.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন (ঈদের নামাযের জন্য) ঈদগাহে যেতেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৬৫
হযরত আলী রা. বলেন-
الْخُرُوجُ إِلَى الْجَبّانِ فِي الْعِيدَيْنِ مِنَ السّنّةِ.
দুই ঈদে (ঈদের নামাযের জন্য) খোলা মাঠে যাওয়া সুন্নত। -আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৪০৪০
মাসআলা : মাঠে ঈদের নামায পড়ার ব্যবস্থা থাকলে বিনা ওযরে মসজিদে ঈদের জামাত করবে না। তবে কোথাও বিনা জরুরতে এমনটি করা হলে ঈদের নামায আদায় হয়ে যাবে।
প্রকাশ থাকে যে, বর্তমানে শহরে ঈদগাহ কম, বিধায় অধিকাংশ মসজিদে ঈদের জামাত হয়। জায়গা সংকুলান না হওয়া বা বৃষ্টি ইত্যাদির কারণে মসজিদে ঈদের নামায পড়লে সুন্নতের খেলাফ হবে না। ওযরের সময় মসজিদে পড়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
أَصَابَهُمْ مَطَرٌ فِي يَوْمِ عِيدٍ، فَصَلّى بِهِمُ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ صَلَاةَ الْعِيدِ فِي الْمَسْجِدِ.
কোনো এক ঈদের দিন বৃষ্টি তাঁদেরকে পেয়ে বসে। ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের নিয়ে মসজিদে ঈদের নামায আদায় করেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৫৩
ঈদের নামাযে তায়াম্মুম
মাসআলা : নামাযে শরীক হওয়ার আগ মুহূর্তে কারো ওযু না থাকলে এবং ওযু করতে গেলে জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলে তায়াম্মুম করে ঈদের নামায আদায় করা যাবে।
হযরত আব্দুর রহমান ইবনুল কাসিম রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
يَتَيَمّمُ وَيُصَلِّي إِذَا خَافَ.
(ঈদের নামায) ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলে তায়াম্মুম করে নামায পড়ে নেবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ৫৮৬৯)
হযরত ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-
يَتَيَمّمُ لِلْعِيدَيْنِ وَالْجِنَازَةِ.
ঈদ ও জানাযার ক্ষেত্রে (ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায়) তায়াম্মুম করা যাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ৫৮৬৮) -কিতাবুল আছল ১/৩২০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৫০২
তবে জুমা ও ওয়াক্তিয়া নামাযে জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুমের উক্ত বিধান প্রযোজ্য নয়।
ঈদের নামাযে আযান-ইকামত নেই
মাসআলা : ঈদের নামাযে আযান-ইকামতের বিধান নেই। হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
صَلّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ الْعِيدَيْنِ، غَيْرَ مَرّةٍ وَلَا مَرّتَيْنِ، بِغَيْرِ أَذَانٍ وَلَا إِقَامَةٍ.
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একাধিকবার ঈদের নামায পড়েছি এবং আযান-ইকামত ছাড়া পড়েছি। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৭৮
তবে কেউ অজ্ঞতাবশত ইকামত দিয়ে দিলে এর কারণে নামায মাকরূহ হবে না। -কিতাবুল আছল ১/৩১৯; আলহাবীল কুদসী ১/২৪২; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৬৭
নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা
মাসআলা : ঈদ বা যে কোনো নামায, রোযা বা অন্যান্য আমলের ক্ষেত্রে অন্তরের সংকল্পই নিয়ত হিসাবে যথেষ্ট। মুখে উচ্চারণ করে বলা জরুরি নয় এবং এর প্রয়োজনও নেই। তবে অন্তরের নিয়তের সাথে মুখে উচ্চারণ করা নিষেধও নয়। কেউ ইচ্ছার দৃঢ়তার জন্য মুখেও উচ্চারণ করে নিলে তা দূষণীয় হবে না। মুখে নিয়ত উচ্চারণ করলে নিজের মাতৃভাষায়ই করবে। প্রচলিত আরবী নিয়তের পেছনে পড়ার দরকার নেই। -উমদাতুল কারী ১/৩৩; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ২৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪১৫
ঈদের নামাযের নিয়ম
মাসআলা : ঈদের নামায দুই রাকাত। নিয়ত করে তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায শুরু করে ছানা পড়বে। ছানা পড়ার পর ‘আল্লাহু আকবার’ ‘আল্লাহু আকবার’ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে আরো তিনটি তাকবীর বলবে। প্রথম দুই তাকবীর বলার সময় উভয় হাত কানের লতি পর্যন্ত উঠিয়ে হাত না বেঁধে ছেড়ে দেবে। তৃতীয় তাকবীর বলার সময় কানের লতি পর্যন্ত হাত উঠিয়ে বেঁধে নেবে। অতঃপর সূরা-কেরাত পড়ে রুকুতে যাবে। দ্বিতীয় রাকাতে দাঁড়িয়ে সূরা-কেরাত পড়ে রুকুতে যাওয়ার পূর্বে আগের নিয়মে তিনটি তাকবীর বলবে। তবে দ্বিতীয় রাকাতে তৃতীয় তাকবীর বলার সময়ও হাত না বেঁধে ছেড়ে দেবে। অতঃপর চতুর্থ তাকবীর বলে রুকু করবে। এরপর অন্যান্য নামাযের ন্যায় যথারীতি নামায শেষ করবে। -কিতাবুল আছল ১/৩১৯; আলহাবীল কুদসী ১/২৪৩
ঈদের নামাযের কেরাত
মাসআলা : ঈদের নামাযে প্রথম রাকাতে ‘সূরা আ‘লা’ এবং দ্বিতীয় রাকাতে ‘সূরা গাশিয়াহ’ বা প্রথম রাকাতে ‘সূরা কফ’ এবং দ্বিতীয় রাকাতে ‘সূরা কমার’ পড়া সুন্নত। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের নামাযে এ সূরাগুলো পড়তেন। তবে অন্য যে কোনো সূরাও পড়া যেতে পারে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৭৮; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১৫৬৭; কিতাবুল আছল ১/৩২১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৫০০
মাসআলা : জুমার নামাযের ন্যায় ঈদের নামাযের কেরাতও উচ্চৈঃস্বরে পড়া ওয়াজিব। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَجْهَرُ بِالْقِرَاءَةِ فِي الْعِيدَيْنِ وَفِي الِاسْتِسْقَاءِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদ ও ইস্তেসকার নামাযে কেরাত উচ্চৈঃস্বরে পড়তেন। (সুনানে দারাকুতনী, হাদীস ১৮০৩) -জামে সগীর, পৃ. ১১৪
তাই ইমাম সাহেব উভয় রাকাতেই কেরাত উচ্চৈঃস্বরে পড়বেন।
ঈদের দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর তাকবীর
মাসআলা : ঈদের দ্বিতীয় রাকাতে রুকুর তাকবীরও অন্যান্য নামাযের রুকুর তাকবীরের মতো সুন্নত।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা দেখার জন্য মাসিক আলকাউসার জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যায় প্রকাশিত ‘দৃষ্টি আকর্ষণ’ শিরোনামের লেখাটি পড়া যেতে পারে।
ঈদের নামাযের অতিরিক্ত তাকবীর সংক্রান্ত মাসায়েল
তাকবীরের সংখ্যা
মাসআলা : অন্যান্য নামাযের চেয়ে ঈদের নামাযে আরো কিছু বেশি তাকবীর রয়েছে। এ তাকবীরগুলোর সংখ্যা কতটি- এ ব্যাপারে হাদীস-আছারে একাধিক সংখ্যার কথা এসেছে। কোনো কোনো বর্ণনায় যেমন দুই রাকাতে মোট বারো তাকবীরের কথা এসেছে, অন্য বর্ণনায় দুই রাকাতে মোট ছয় তাকবীরের কথা এসেছে। এ দুটি ছাড়াও আরো দু-একটি সংখ্যার কথা কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে। হাদীসে বর্ণিত এসব সংখ্যার সবগুলোই সঠিক ও আমলযোগ্য। বারো তাকবীরের নিয়ম যেভাবে হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, তেমনি ছয় তাকবীরের নিয়মও হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিত। একাধিক জলিলুল কদর সাহাবী এই পদ্ধতির উপর আমল করছেন। ইমাম আহমাদ রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
اخْتَلَفَ أَصْحَابُ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي التّكْبِيرِ وَكُلّهُ جَائِزٌ.
তাকবীরের সংখ্যা নিয়ে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। (সাহাবীদের থেকে প্রমাণিত এ) সবগুলো সংখ্যাই জায়েয ও আমলযোগ্য। -আলফুরুউ, মাকদিসী ৩/২০১
সুতরাং আমাদের দেশে ফিকহে হানাফীর অনুসরণে যে ছয় তাকবীরে ঈদের নামায পড়া হয় সেটাকে কোনো কোনো গায়রে মুকাল্লিদ ভাই কর্তৃক খেলাফে সুন্নত ও ভিত্তিহীন আখ্যা দেয়া হাদীস ও আছারের স্বল্প পড়াশোনাকেই প্রমাণ করে। এ সম্পর্কে দলীলভিত্তিক বিস্তারিত জানার জন্য মাসিক আলকাউসার অক্টোবর-নভেম্বর ২০০৫ সংখ্যা অথবা মাকতাবাতুল আশরাফ কর্তৃক প্রকাশিত ‘সহীহ হাদীসের আলোকে তারাবীর রাকাত সংখ্যা ও সহীহ হাদীসের আলোকে ঈদের নামায’ পুস্তিকাটি পড়া যেতে পারে।
মাসআলা : ঈদের অতিরিক্ত তাকবীরের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে কম সংখ্যা ধরে বাকি তাকবীর আদায় করবে। যেমন, তিন তাকবীর হয়েছে, নাকি দুই তাকবীর- এ নিয়ে সন্দেহ হলে দুই তাকবীর ধরে অবশিষ্ট একটি তাকবীর বলে নেবে।
মাসআলা : ইমাম যদি প্রথম রাকাতে ভুলে অতিরিক্ত তাকবীর না বলে কেরাত শুরু করে দেয় তাহলে কেরাত অবস্থায় তাকবীরের কথা স্মরণ হলে কেরাত ছেড়ে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলে নেবে। অতঃপর পুনরায় কেরাত পড়ে নেবে। কেরাত শেষ হওয়ার পর তাকবীরের কথা স্মরণ হলে তাকবীর বলে রুকুতে চলে যাবে। -আততাজরীদ, কুদুরী ২/৯৮৪; আলমুহীতুর রেযাবী ১/৪১৭; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৭২
মাসআলা : ইমাম ঈদের অতিরিক্ত তাকবীর ভুলে রুকুতে চলে গেলে (চাই প্রথম রাকাতের তাকবীর হোক বা দ্বিতীয় রাকাতের) তাকবীর বলার জন্য আর রুকু থেকে ফিরে আসবে না। এবং বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী রুকুতেও তাকবীর বলবে না। এক্ষেত্রে নামায শেষে সিজদায়ে সাহু করে নেবে। (যদি জামাত ছোট হয়) -আততাজরীদ, কুদুরী ২/৯৮৬; আলমুহীতুর রেযাবী ১/৪১৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬১; মিনহাতুল খালিক ২/১৪৭; রদ্দুল মুহতার ২/১৭৪
মাসআলা : ঈদের অতিরিক্ত তাকবীর ভুলে রুকুতে চলে যাওয়ার পর তাকবীর আদায়ের জন্য রুকু থেকে ফিরে আসলে যদিও কোনো কোনো ফকীহ নামায ফাসেদ হয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তবুও বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী কাজটি ভুল হলেও এ কারণে নামায নষ্ট হবে না। -রদ্দুল মুহতার ২/১৭৪
মাসআলা : হানাফী মাযহাবের কেউ অন্য মাযহাবের ইমামের পেছনে নামায পড়লে (এবং ইমাম সাহেব বারো তাকবীর বা অন্য কোনো সংখ্যা অনুযায়ী নামায পড়ালে) ইমামের অনুসরণে সেও অতিরিক্ত তাকবীর ইমামের মতোই বলবে। -কিতাবুল আছল ১/৩২৪; মাবসূত, সারাখসী ২/৪২; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৭২
ঈদের নামাযে মাসবুক হওয়া সংক্রান্ত মাসায়েল
মাসআলা : কেউ প্রথম রাকাতে ঈদের অতিরিক্ত তাকবীর বলার পর ইমামের সাথে শরীক হলে সে তাকবীরে তাহরীমা বলে নামাযে শরীক হওয়ার পর নিজে নিজে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলে নেবে; চাই এক্ষেত্রে ইমাম সাহেব কেরাত পড়া অবস্থায় থাকুন না কেন। সুফিয়ান ছাওরী রাহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-
وَلَوْ وَجَدَ الْإِمَامَ يَقْرَأُ كَبّرَ كَمَا يُكَبِّرُ الْإِمَامُ.
ইমামকে কেরাত অবস্থায় পেলে সে (নিজে নিজে) ইমামের ন্যায় তাকবীর বলে নেবে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, বর্ণনা ৫৭১৪)
কিন্তু এক্ষেত্রে নামাযে শরীক হওয়ার পর দাঁড়ানো অবস্থায় (রুকুর আগে আগে) তাকবীর আদায়ের সুযোগ থাকা সত্তে¡ও যদি আদায় না করে তাহলে পরে আর রুকুতে তাকবীর বলবে না। -আলবাহরুর রায়েক ২/১৬১; রদ্দুল মুহতার ২/১৭৪
মাসআলা : ইমামকে রুকুতে পেলে সেক্ষেত্রে যদি প্রবল ধারণা হয়, দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বললেও ইমামের সাথে রুকুতে শরীক হতে পারবে তাহলে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলে ইমামের সাথে রুকুতে শরীক হবে।
আর যদি প্রবল ধারণা হয়, দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত তাকবীর বলতে গেলে ইমামকে রুকুতে পাওয়া যাবে না, তাহলে তাকবীরে তাহরীমা বলে রুকুতে চলে যাবে। রুকুতে গিয়ে ছুটে যাওয়া অতিরিক্ত তাকবীরগুলো হাত উঠানো ছাড়া বলে নেবে। এরপর যদি সময় থাকে তাহলে রুকুর তাসবীহ আদায় করবে। -আততাজরীদ, কুদুরী ২/৯৮৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৮৮-৮; আলহাবীল কুদসী ১/২৪৩; আলবাহরুর রায়েক ১/১৬১; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/৪০০; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৭২
মাসআলা : ইমামের সাথে রুকুতে শরীক হওয়ার পর অতিরিক্ত তাকবীর বলার মত সময় না পেলে আর তাকবীর বলতে হবে না। ইমামের সাথে রুকু পাওয়ার কারণে সে ঐ রাকাত পেয়েছে এবং সাথে সাথে তাকবীরও পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৬১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫১
মাসআলা : কেউ দ্বিতীয় রাকাতে ইমামের সাথে শরীক হলে ইমামের সালাম ফেরানোর পর ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে প্রথমে সূরা-কেরাত পড়ে তারপর রুকুর আগে অতিরিক্ত তাকবীর বলবে। অর্থাৎ ছুটে যাওয়া রাকাতেও দ্বিতীয় রাকাতের ন্যায় রুকুর আগে অতিরিক্ত তাকবীর বলবে। হাসান বসরী রাহ. বলেন-
يكَبِّرُ فِيهَا مِثْلَ تَكْبِيرِ الْإِمَامِ فِي الرّكْعَةِ الثّانِيَةِ.
ঈদের নামাযে মাসবুক ব্যক্তি ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের সময় ইমামের দ্বিতীয় রাকাতের ন্যায় তাকবীর বলবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ৫৮১৩
অবশ্য যদি কেউ এক্ষেত্রে সূরা-কেরাতের আগে অতিরিক্ত তাকবীর বলে নেয় তাহলেও তার নামায আদায় হয়ে যাবে। -কিতাবুল আছল ১/৩২২; আলহাবীল কুদসী ১/২৪৪
মাসআলা : দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর পর এমনকি শেষ বৈঠকের তাশাহহুদের পরও কেউ জামাতে শরীক হলে সে ঈদের জামাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। এক্ষেত্রে ইমামের সালাম ফেরানোর পর দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক নিয়মেই উভয় রাকাত আদায় করবে। অর্থাৎ প্রথম রাকাতের পর দাঁড়িয়ে কেরাতের পূর্বে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলবে। আর দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের পর অতিরিক্ত তাকবীর বলবে। -কিতাবুল আছল ১/৩২২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৫০০
ঈদের নামাযে সাহু সিজদা
মাসআলা : অন্যান্য নামাযের ন্যায় ঈদের নামাযেও জামাত ছোট হলে এবং বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা না থাকলে ওয়াজিব ছুটে গেলে সিজদায়ে সাহু দিতে হয়। তবে যেহেতু ঈদের জামাতে সাধারণত অনেক বড় জমায়েত হয়ে থাকে, অনেক মানুষ সিজদায়ে সাহুর নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জ্ঞাত থাকে না, তাই সিজদায়ে সাহু আদায় করতে গেলে অনেক সময় বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। এজন্য কোনো কোনো ফকীহের মতে ঈদ, জুমা বা এরকম বড় কোনো জামাতের ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব সিজদায়ে সাহু করতে গেলে যদি মুসল্লীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে সিজদায়ে সাহু মাফ হয়ে যাবে। ইমাম স্বাভাবিক নিয়মে নামায শেষ করবে। -কিতাবুল আছল ১/৩২৪ ; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৫০১
ঈদের নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক
মাসআলা : ঈদুল আযহার নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক বলা যেতে পারে। তবে ফরয নামাযের মত ঈদের নামাযের পর তাকবীর বলা ওয়াজিব বা আবশ্যকীয় নয়। -আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২; রদ্দুল মুহতার ২/১৮০
ঈদের খুতবা সংক্রান্ত মাসায়েল
মাসআলা : ঈদের নামাযের পর খুতবা দেয়া সুন্নত। আর উপস্থিত মুসল্লীগণের জন্য তা শ্রবণ করা ওয়াজিব। মুসল্লীগণ মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনবেন। -কিতাবুল আছল ১/৩১৮; আলহাবীল কুদসী ১/২৪২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৮; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৬৬
মাসআলা : জুমার নামাযের ন্যায় ঈদের নামাযেও দুই খুতবা। এবং দুই খুতবার মাঝে বসাও সুন্নত। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উবায়দুল্লাহ ইবনে উতবা রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
السّنّةُ أَنْ يَخْطُبَ الْإِمَامُ فِي الْعِيدَيْنِ خُطْبَتَيْنِ يَفْصِلُ بَيْنَهُمَا بِجلُوسٍ.
সুন্নত হচ্ছে, ইমাম ঈদে দুটি খুতবা দেবে। দুই খুতবার মাঝখানে বসার দ্বারা একটিকে আরেকটি থেকে আলাদা করবে। (সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ৬২১৩) -মাবসূত, সারাখসী ২/২৬২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৯
কোনো কোনো গায়রে মুকাল্লিদ ভাইয়েরা যে বলে থাকেন- ‘দুই ঈদে একটি করে খুতবা হবে’ তাদের এ কথা সহীহ হাদীস ও মুসলিম উম্মাহর যুগ পরম্পরায় চলে আসা আমলের পরিপন্থী।
মাসআলা : ঈদের খুতবার আগে আযানের কোনো বিধান নেই।
মাসআলা : খুতবার সময় ইমাম তাকবীর বললে মুসল্লীগণ চুপ থেকে খুতবা শুনবেন। নিজেরা তাকবীর বলবেন না। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
وَجَبَ الْإِنْصَاتُ فِي أَرْبَعَةِ مَوَاطِنَ: الْجُمُعَةِ، وَالْفِطْرِ، وَالْأَضْحَى، وَالِاسْتِسْقَاءِ.
চারটি স্থানে চুপ থাকা ওয়াজিব। জুমা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা এবং ইসতিসকার খুতবার সময়। -মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, বর্ণনা ৫৬৪২
ঈদের নামায ছুটে গেলে
মাসআলা : ঈদের নামাযে কাযার বিধান নেই। তাই কারো ঈদের নামায ছুটে গেলে সে আশপাশের অন্য কোনো ঈদের জামাতে শরীক হওয়ার চেষ্টা করবে। এমনটি সম্ভব না হলে তওবা-ইস্তেগফার করবে। -শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/১৬১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৯৮; আলহাবীল কুদসী ১/২৪৪
ঈদের নামাযের আগে-পরে নফল পড়া
মাসআলা : হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন-
أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ صَلّى يَوْمَ الفِطْرِ رَكْعَتَيْنِ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন দুই রাকাত ঈদের নামায পড়ছেন। ঈদের নামাযের আগে বা পরে কোনো নামায পড়েননি। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৬৪)
এজাতীয় হাদীসের আলোকে ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, ঈদের নামাযের আগে বাড়িতে বা ঈদগাহে/মসজিদে পুরুষ মহিলা সকলের জন্যই নফল নামায পড়া মাকরূহ। তাই এসময় কেউ ইশরাক বা অন্য কোনো নফল নামায পড়বে না। -কিতাবুল আছল ১/৩২৮; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/৩৮১-৩৮২; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৬৭
বিবিধ মাসায়েল
ঈদ ও জুমা একই দিনে হলে
মাসআলা : জুমার দিন ঈদ হলে ঈদ ও জুমা উভয়টিই পড়তে হবে। ঈদের নামায পড়লে জুমা পড়তে হবে না- এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কেননা ঈদের নামায ও জুমার নামায দুটি পৃথক পৃথক আমল। অন্যদিকে ঈদের নামায ওয়াজিব আর জুমার নামায ফরয। সুতরাং একটি আদায় করে আরেকটি বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর স্বপক্ষে হাদীসের অনেক সুস্পষ্ট প্রমাণও রয়েছে। জুমার দিন ঈদ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় নামাযই পড়তেন। সহীহ হাদীস দ্বারা এটিই প্রমাণিত। এক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জুমার নামায না পড়ার কোনো প্রমাণ নেই। (দেখুন : সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৭২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৭৮; মুসনাদুশ শাফেয়ী, হাদীস ৫০০; শরহু মুশকিলিল আছার ৩/১৮৭; আততামহীদ ১৪/২৭৪)
এ সম্পর্কে মাসিক আলকাউসার মে ২০২২ (প্রশ্ন নং ৫৬৭৯)-এ একটি বিস্তারিত ফতোয়া প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহী পাঠকগণ চাইলে তা দেখে নিতে পারেন ।
ঈদের জামাতে মহিলাদের উপস্থিতি মাসআলা
ঈদের নামায প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন পুরুষের উপর ওয়াজিব। মেয়েদের উপর ঈদের নামায ওয়াজিব নয়। এবং মেয়েরা ঈদের নামাযের জন্য ঈদগাহে যাবে না। সাহাবায়ে কেরাম অনেকেই মেয়েদের ঈদগাহে যেতে নিরুৎসাহিত করেছেন।
عَنْ نَافِعْ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أنَّهُ كَانَ لَا يُخْرِجُ نِسَائَهُ فِي الْعِيْدَيْنِ.
অর্থাৎ নাফে রাহ. আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি তাঁর পরিবারের নারীদেরকে দুই ঈদে ঈদগাহে যেতে দিতেন না। -আলআওসাত ৪/৩০১
অন্য বর্ণনায় এসেছে-
عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنّهُ كَانَ لَا يَدَعُ امْرَأَةً مِنْ أَهْلِهِ تَخْرُجُ إِلَى فِطْرٍ، وَلَا إِلَى أَضْحَى.
উরওয়া তাঁর পিতা (যুবাইর রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নিজ পরিবারের নারীদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযাহাতে যেতে দিতেন না। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ৫৮৪৬
ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আলআনসারী রাহ. বলেন-
لَا نَعْرِفُ خُرُوْجَ الْمَرْأةِ الشَّابَّةِ عِنْدَنَا فِي الْعِيْديْنِ.
আমাদের সময়ে দুই ঈদের জন্য যুবতী নারীদের বের হওয়ার প্রচলন ছিল না। -আলআওসাত ৪/৩০২; উমদাতুল কারী ৩/৩০৫
ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-
يُكْرَهُ خُرُوجُ النِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْن.
উভয় ঈদে মহিলাদের (নামাযের জন্য) বাইরে যাওয়া মাকরূহ। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ৫৮৪৬
সৌদি আরবে ঈদ করে ঐ দিনই দেশে চলে এসে দেশে ঈদের জামাত পেলে
মাসআলা : কেউ যদি এক দেশে ঈদের নামায পড়ার পর পূর্ব দিকের কোনো দেশে গিয়ে পরের দিন ঈদের জামাত হতে দেখে যেমন, কেউ সৌদি আরবে ঈদ করে ঐ দিনই বাংলাদেশে চলে আসে এবং এখানে পরের দিন ঈদ হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির জন্য দ্বিতীয়বার দেশের ঈদের জামাতে শরীক হওয়া আবশ্যক নয়। -ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১৮