Muharram 1428   ||   February 2007

সাদ্দামের ফাঁসি হতে পারলে ট্রুম্যান নিক্সন, বুশ ও ওলমার্টকে কেন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না

গত ঈদুল আযহার দিন সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হল। তার যে অপরাধের বিচারের নামে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হল, সে অপরাধে কি এই প্রহসনের বিচারের মূল বিচারকগণই  বড় অপরাধী নয়? দৈনিক ইনকিলাবের একটি লেখায় এই প্রশ্নটিই বাঙময় হয়েছে। আলকাউসারের পাঠকদের জন্য লেখাটি পূনর্মুদ্রিত হল। -বি.স.

 

অবশেষে কারাবন্দি ইরাকী নেতা সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসি দিয়েই ছাড়ল সাম্রাজ্যবাদীরা ও তাদের দোসররা। আজ থেকে প্রায় সোয়া তিন বছর আগে যেভাবে ইরাকী নেতাকে গ্রেফতার করে দীর্ঘদিন ধরে তাকে একটি অজ্ঞাত স্থানের গোপন বন্দিশিবিরে আটক রাখা হয়েছিল তা সকলেরই জানা আছে। তারপর যেভাবে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে প্রহসনের বিচারের ব্যবস্থা করা হয় সে কথাও সকলে জানেন। বিচারের নিরপেক্ষতা ও ফাঁসির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করার আগে যে কথাটি বলা প্রয়োজন তা হল যুদ্ধবাজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তার মত প্রতিহিংসাপরায়ণ অল্প কিছু ব্যক্তি ছাড়া পৃথিবীর কোনো সচেতন মানুষ এই ফাঁসি মেনে নেয়নি। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ, জাতি, গোষ্ঠী, গ্রুপ, সংগঠন ও তাদের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সকলে একবাক্যে এই ফাঁসির নিন্দা জানিয়েছেন এবং এর নৈতিক অধিকারের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই ফাঁসির ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে তাদের অধিকাংশই এটাকে অবৈধ ও অন্যায় বলে উল্লেখ করেছেন। এই ফাঁসি নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে তারা মন্তব্য করেন। যুক্তরাষ্ট্রের শাসকরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ইরাকের সংখ্যালঘু শীয়া নিয়ন্ত্রিত তাবেদার সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে বলেও অনেকে মন্তব্য করেন। যেদিন ইরাকী নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল সেই দিনটিকে ইতিহাসের একটি কলংকজনক অধ্যায়  হিসেবে লিপিবদ্ধ করে রাখার জন্য বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ মত প্রকাশ করেন। অনেক বিবেকবান মানুষ এটাকে ন্যক্কারজনক কাজ হিসেবে উল্লেখ করেন। আবার কেউ কেউ এই জঘন্য অপরাধের জন্য বুশ এবং ইরাকী প্রধানমন্ত্রী নূরী আল মালিকীকে গ্রেফতার ও তাদের বিচারের আওতায় এনে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের দাবি জানান। তবে ইরাকের তাবেদার সরকারের প্রধান ও সেখানকার মার্কিন দালালদের দোষারোপ করার আগে এসব অপকর্মের নাটের গুরু বুশ এবং প্রশাসনে তার কিছু সহযোগীকে যে সকলের আগে বিচারের আওতায় আনা উচিত এ বিষয়ে প্রায় সকলেই একমত বলে সম্প্রতি নির্ভরযোগ্য একাধিক জনমত জরিপের ফলাফলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়। গণতন্ত্র নস্যাৎ, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার মত অপরাধের জন্য শুধু বুশই নয় আরও কয়েকজন মার্কিন রাষ্ট্রনায়কের বিচার হওয়া উচিত বলে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিবেকবান, নিরপেক্ষ রাজনৈতিক ভাষ্যকারগণ মনে করেন। তারা বলেন, প্রায় দেড়শ শিয়ার মৃত্যু দণ্ডাদেশে স্বাক্ষর প্রদান করা এবং কেমিক্যাল অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে কয়েকজন কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অপরাধে যদি সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়, তাহলে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পারমাণবিক বোমা মেরে নারী ও শিশুসহ লাখ লাখ নিরপরাধ মানুষকে হত্যার জন্য প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানের মরণোত্তর বিচার করা এবং তার বিরুদ্ধে ক্যাপিটাল পানিশম্যান্টের রায় প্রদান করা যাবে না কেন? ইসরাইলের ইহুদী শাসকরা যে লেবানন ও ফিলিস্তিনে অবিরাম হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তার বিচার করা যাবে না কেন? লেবাননের সাব্রা শাতিলায় গণহত্যার কথা আজও সকলের মনে আছে। বৃহত্তম ফিলিস্তিনী উদ্বাস্তু শিবির দুটিতে নিরীহ নারী ও শিশুদের হত্যার জন্য তৎকালীন ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রীর ফাঁসি হবে না কেন? কানায় গণহত্যার জন্য ওলমার্টের বিচার হবে না কেন? ভিয়েতনামে গণহত্যার জন্য রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং কোরিয়া ও লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ডের জন্য তৎকালীন মার্কিন নেতৃবৃন্দের বিচার হবে না কেন? সর্বশেষ ইরাক ও আফগানিস্তানে কোনো কারণ ছাড়া আগ্রাসন চালিয়ে সেখানে যুদ্ধজাহাজ ও বোমারু বিমান দ্বারা নির্বিচারে বোমাবর্ষণ ও নারকীয় হত্যাকাণ্ডের জন্য বুশ, ডিক চেনি, ডোনাল্ড রামসফেল্ড ও টনি ব্লেয়ারের মতো যুদ্ধবাজ, রক্তপিপাসুদের বিচার হবে না কেন? সাদ্দাম হোসেনের কাছে মারণাস্ত্র রয়েছে এই ডাহা মিথ্যা কথা বলে ইরাকের তেল সম্পদ লুণ্ঠনের জন্য তারা ২০০৩ সালের মার্চ মাসে আত্মরক্ষায় অসমর্থ, দুর্বল দেশটির বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়ে এই পর্যন্ত আট লক্ষাধিক ইরাকীকে হত্যা করেছে। এর জন্য কি তারা মৃত্যুদণ্ড পেতে পারে না? শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে অযৌক্তিক এই যুদ্ধে ৩১শে ডিসেম্বর ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিন সহস্রাধিক মার্কিন সৈন্য নিহত এবং অপর ২২০৫৭ জন দখলদার সেনা আহত হয়েছে। ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে ৫৪ হাজার ৯শ কোটি মার্কিন ডলার, যা দিয়ে গোটা পৃথিবীর দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব বলে অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন।

এদিকে সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মেরে ফেলার খবরটি প্রচারের সময় মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আশশারকিয়ার সংবাদ পাঠক শোকের প্রতীক হিসেবে কালো কাপড় পরেন। এজন্য সেই টিভির বাগদাদ অফিসটি ১লা জানুয়ারি বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র অধিষ্ঠিত ইরাক সরকার। উল্লেখ্য, ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের নিয়ন্ত্রণাধীন রেডিও ও টিভির প্রধান কর্মকর্তা আশশারকিয়ার মালিক। মার্কিন আগ্রাসনের পরে এই টিভি স্টেশনের মালিকের মতো আরও অনেকে ইরাক ত্যাগ করে অন্য দেশে চলে যান। আশশারকিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত সোমবার ইরাকের তাবেদার সরকারের লোকজন বাগদাদ অফিসে হানা দিয়ে সবকিছু বন্ধ করে দেয়। তবে দুবাই থেকে টিভির অনুষ্ঠান সম্প্রচার অব্যাহত রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সাদ্দামকে ফাঁসি দেওয়ার প্রতিবাদে ইরাকসহ সারা বিশ্বে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে আশশারকিয়া সে খবর দুবাই থেকে যথারীতি প্রচার করছে বলে ক্ষুব্ধ হয়েছে পাশ্চাত্যের তথাকথিত মানবতাবাদীরা। -দৈনিক ইনকিলবের সৌজন্যে

 

কনে সংকটে চীন

বর্তমান সময়ের একটি ভয়ঙ্কর ব্যাধি এইডস। এর প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। আক্রান্ত হওয়ার আগে সতর্কতা ও প্রতিরোধই এইডস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় মনে করা হচ্ছে। তাই এইডস প্রতিরোধে পারিবারিক বন্ধন ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে দৃঢ়তর করার কথা বলা হচ্ছে। আজ প্রাণ রক্ষার তাগিদে যে ব্যবস্থায় ফিরে আসার কথা বলা হচ্ছে, সেই নিষ্কলুষ জীবন যাপন ও ধর্মীয় চেতনার প্রতি আস্থাশীল থাকার শিক্ষা অনেক আগেই নবীয়ে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়ে গেছেন। এই শিক্ষার প্রতি যারা আস্থাশীল হয়েছেন তারা শুধু এইডস থেকে প্রাণ রক্ষার জন্য নয়; বিশ্বাসের সম্পদে সম্পদশালী হয়েই এই শিক্ষাকে গ্রহণ করেছেন। ফলে এইডসের মত আরও অসংখ্য ব্যাধি থেকে তারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়েছেন। যারা এইডসের ভয়ে সংযত জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন তারা যদি অবিশ্বাসের ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভ করতে পারেন তবে এটা তাদেরকে আরও অনেক অনাগত বিপদ থেকেও রক্ষা করতে পারে।

এ ধরনের হোঁচট খেয়ে ফিরে আসার আরও একটি গল্পের ইঙ্গিত পাওয়া গেল গত ১৩ জানুয়ারির দৈনিক আমার দেশে প্রকাশিত একটি সংবাদে। সংবাদের শিরোনাম ছিল কনে সংকটে চীন।পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল চীনে পুরুষের সংখ্যা বাড়লেও নারীর সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। গবেষকরা অনুমান করছেন, ২০২০ সাল নাগাদ চীনে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের সংখ্যা প্রাপ্তবয়স্কা নারীর চেয়ে তিন কোটি বেশি হতে পারে। সেক্ষেত্রে সমাজে এক মারাত্মক ধরনের অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা করছেন তারা। নারীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে মেয়ে ভ্রূণ হত্যা। চীনে এই ঘৃণ্য কর্মটির রেওয়াজ রয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলেও এই রেওয়াজ আছে বলে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্টিং হয়েছে। নারীর সংখ্যা হ্রাস পেয়ে সামাজিক সমস্যা যাতে প্রকট রূপ ধারণ করতে না পারে এজন্য চীন সরকার কন্যা সন্তান গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচী আরম্ভ করার কথা চিন্তা ভাবনা করছে বলে সেই রির্পোটে বলা হয়েছে। আজকের এই সভ্যতার যুগে যখন নারীর সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার শ্লোগানে দশদিক প্রকম্পিত তখনও একটি দেশে নতুন করে কন্যা সন্তান গ্রহণে উদ্ধুদ্ধ করণ কর্মসূচী আরম্ভ করার প্রয়োজনীয়তা কেন দেখা দিচ্ছে তা খুব ভালোভাবে ভেবে দেখা দরকার। কোনো মুসলিম দেশে কিংবা মুসলিম অধ্যুষিত কোনো অঞ্চলে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা কোনো কালে হয়েছিল এমন কোনো নজির ইতিহাসে পাওয়া যায় না। এর কারণ কি এই নয় যে, আরবের উম্মী নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে এমনই এক মানসিকতা ও মূল্যবোধের অধিকারী করে গেছেন যে, হাজার বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও তার সুফল খুব স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। মুসলিমদের নিকটে তাদের কন্যাগুলো কেবল সামাজিক সঙ্কট নিরসনের হাতিয়ার নয়, এরা তাদের শান্তি ও প্রশান্তি, তাদের বরকত ও প্রাচুর্যের ইশারা, সর্বোপরি জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায়রূপে বরিত। উম্মী নবীর সেই বিশ্বাস ও মূল্যবোধের শিক্ষাই যে জীবন ও জগতের যথার্থ শান্তিবিধানে সক্ষম তা এইভাবে বিভিন্ন দুর্যোগে-দুর্ভোগে বারবার প্রমাণিত হয়েছে।

 

ওদের জীবন-সংগ্রাম ও আমাদের করণীয়

দরিদ্র মানুষের জীবনসংগ্রামের অনেক চিত্র আমাদের চারপাশেই রয়েছে। আমরা জীবন যাপন করি, ওরা জীবন ধারণ করে। তাদের সেই জীবন ধারণের যন্ত্রণা কখনো আমাদের নাড়া দেয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা এই দৃশ্যগুলোকে সাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের মতোই বিবেচনা করি। কিন্তু আসলেই কি এই দৃশ্য স্বাভাবিক। জীবন যাত্রার মানে এই যে দুস্তর ব্যবধান তা কখনো স্বাভাবিক নয়। এ ধরনের অস্বাভাবিক একটি চিত্রই ফুটে উঠেছে ১২ জানুয়ারি দৈনিক আমার দেশে প্রকাশিত একটি সংবাদে। সংবাদটির শিরোনাম ছিল হালের বলদের অভাবে লাঙ্গল টানছে দরিদ্র কৃষকপুত্র।সংবাদটিতে এক দরিদ্র কৃষকের জীবন সংগ্রামের কাহিনী বিবৃত হয়েছে। আমাদের গ্রাম বাংলার কৃষকদের ন্যূনতম সম্বল এক জোড়া হালের বলদ। এই সম্বলটুকুও জোগাড় করতে না পারায় ষাটোর্ধ্ব কৃষক পিতা তার দুই পুত্রের হাতে জোয়াল তুলে দিয়েছেন। এভাবেই বৃদ্ধ পিতা ও পুত্রদ্বয়ের সম্মিলিত পরিশ্রমে চাষ হয় অন্যের জমি। এরপর জমির মালিককে তার পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে যা থাকে তা নিতান্তই অপ্রতুল। এভাবেই সাত-আট বছর যাবত তারা হালের বলদ ছাড়া জমি কর্ষণ করে চলেছেন একান্তই জীবন ধারণের তাগিদে।

এ ধরনের কাহিনী এ দেশে এ যুগে কম নয়। আমাদের চারপাশেই এমন বিস্তর উদাহরণ মজুদ আছে যে, এর জন্য পত্রিকার পাতা খুলতে হয় না। এ দরিদ্র মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। কিন্তু এদের দ্বারা দরিদ্র জনতার কতখানি উপকার হচ্ছে তার একটি দৃষ্টান্তও উপরোক্ত সংবাদটিতে রয়েছে। বৃদ্ধ কৃষকটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এনজিও থেকে ঋণ নিচ্ছেন না কেন? তিনি এর উত্তরে আঞ্চলিক ভাষায় বলেছেন, এনজিও দিয়া ঋণ নেলে সুদ গোনতে গোনতে শেষ অইয়া যাওয়া লাগে। -আমার দেশ ১১ জানুয়ারি ০৭ পৃষ্ঠা ১২

আর সরকারিভাবে এই দরিদ্র শ্রেণীর জীবন মানের উন্নয়ন হবে এই প্রশ্নে না যাওয়াটাই ভাল। প্রতি মওসুমে বীজ, সার, কীটনাশক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ কৃষকদের হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রতিটি পর্যায়ে যে পরিমাণ র্দুনীতি হয় তার সম্পূর্ণ দুর্ভোগ পোহাতে হয় এই দরিদ্র কৃষকদেরকেই। এ ব্যাপারে পত্র-পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়। দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতিও সমান তালে চলতে থাকে আর কৃষকরাও যেই তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই থাকেন। এভাবেই চলছে। এ অবস্থা পরিবর্তনের আশু সম্ভাবনা নেই। এজন্য দেশের ঈমানদার ব্যক্তিবর্গই এখন শেষ ভরসা। তারা যদি নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ী এসব দরিদ্র মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় সচেষ্ট হন তবে এদের দুঃখ-কষ্ট কিছুটা লাঘব হতে পারে।

 

advertisement