কুরআন অধ্যয়ন
ইসমাঈল ইবনে ইসহাক রা. একজন কাযি ছিলেন। তার ইলমী আলোচনামজলিসের একজন সঙ্গী ছিলেন আবু বকর মুহাম্মাদ ইবনে দাউদ। একদিন কাযি ইসমাঈল রহ.-এর আদালতে আবু বকর ও অন্য এক ব্যক্তির একটি মামলা উত্থাপিত হল। কাযি সাহেব বাদীর নিকট সাক্ষ্য তলব করলেন। সে সাক্ষ্য উপস্থিত করতে অক্ষম হলে বিবাদী আবু বকরের কসমের পালা এল। কাযি সাহেব তাকে কসম করতে বললে তিনি কসমের জন্য প্রস্তুত হলেন। এ অবস্থা দেখে কাযি সাহেব বললেন, আপনি কি কসম করে ফেলবেন? কাযি সাহেবের এই প্রশ্নের কারণ ছিল, সাধারণত খোদাভীরু মানুষেরা সত্য কসমের ব্যাপরেও সংকোচবোধ করে থাকেন। আবু বকর কাযি সাহেবের এই প্রশ্নের উত্তরে তৎক্ষনাৎ জবাব দিলেন, প্রয়োজনের মুহূর্তে কসম করতে আমি সংকোচবোধ করব কেন? স্বয়ং আল্লাহ তাআলা কুরআনের তিন জায়গায় তাঁর রাসূলকে কসম করতে আদেশ করেছেন। কাযি সাহেব অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন, কোন কোন জায়গায় আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে কসম করতে বলেছেন? আবু বকর জবাবে বললেন, দেখুন আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَ یَسْتَنْۢبِـُٔوْنَكَ اَحَقٌّ هُوَ قُلْ اِیْ وَ رَبِّیْۤ اِنَّهٗ لَحَقٌّ .
তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, এটি কি সত্য? আপনি বলুন, হ্যঁা, আমার রবের শপথ! অবশ্যই সত্য। -সূরা ইউনুস : ৫৩
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لَا تَاْتِیْنَا السَّاعَةُ قُلْ بَلٰی وَ رَبِّیْ لَتَاْتِیَنَّكُمْ .
কাফেররা বলে, আমরা কিয়ামতের সম্মুখীন হব না। আপনি বলুন, কক্ষনো নয়, আমার রবের কসম! অবশ্যই তোমরা তার সম্মুখীন হবে। -সূরা সাবা : ৩
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
زَعَمَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اَنْ لَّنْ یُّبْعَثُوْا قُلْ بَلٰی وَ رَبِّیْ لَتُبْعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلْتُمْ.
কাফেররা ভেবেছে, তাদেরকে পুনরায় জীবিত করা হবে না। আপনি বলুন, কক্ষনো নয়, আমার রবের কসম! তোমাদেরকে জীবিত করা হবে। অতপর তোমাদেরকে তোমাদের কর্ম সম্পর্কে অবগত করা হবে। -সূরা তাগাবুন : ৭
কাযি ইসমাঈল ইবনে ইসহাক তার এই উপস্থিত জবাব শুনে অভিভূত হয়ে গেলেন এবং তার কুরআনসংলগ্নতার পরিচয় পেয়ে তাকে ফকীহ উপাধিতে ভূষিত করলেন। -যাদুল মাআদ ১/৫৮