কুরআন মাজীদে সফলতার কথা
সফলতা ও ব্যর্থতা অতি পরিচিত দুটি শব্দ। সবার কাছে এর সংজ্ঞা এক না হলেও দুনিয়ার সবাই সফলতা লাভ করতে চায়। ছোট থেকে ছোট কোনো কাজে সফল হওয়া। বড় থেকে বড় কোনো উদ্দেশ্যে সফল হওয়া। সুচিন্তিত লক্ষ্য অর্জনে সফল হওয়া। জীবনে সফল হওয়া। দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হওয়া। এজাতীয় বিভিন্ন ভাগ-বিভাগে মানুষ সফলতাকে ভাগ করে থাকে। এর মাধ্যমে নিজেদের উন্নতি ও অগ্রগতির হিসাব করে। তবে একজন মুমিনের জীবনে প্রকৃত সফলতা সেটাই, যার মাধ্যমে সে দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ তাআলার রহমত ও সন্তুষ্টি লাভ করে। ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার জীবন পাড়ি দিয়ে চিরস্থায়ী আখিরাতের জীবনে সুখ ও শান্তি লাভ করে। আল্লাহ তাআলার নায ও নিআমতপূর্ণ জান্নাত লাভ করে। আযাব ও গযবের জাহান্নাম থেকে চিরমুক্তি লাভ করে।
যে কোনো মুসলমান জাগতিক বিষয়াদির প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে ফিকির করলে সফলতার এই সংজ্ঞায় একবাক্যে ঐকমত্য পোষণ করবে। এবং মনে-প্রাণে এই সফলতাকে কামনা করবে।
এই সফলতার কথা কুরআন মাজীদেও এসেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন-
كُلُّ نَفْسٍ ذَآىِٕقَةُ الْمَوْتِ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوْنَ اُجُوْرَكُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ وَ مَا الْحَیٰوةُ الدُّنْیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الْغُرُوْرِ.
প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে এবং তোমাদের সকলকে কিয়ামতের দিন (তোমাদের কর্মের) পূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। তখন যাকেই জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই প্রকৃত অর্থে সফলকাম। আর এই পার্থিব জীবন তো প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছু নয়। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৮৫
হযরত সাহল ইবনে সা‘দ রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
لَمَوْضِعُ سَوط أحَدكم فِي الْجَنّةِ خَيْرٌ مِنَ الدّنْيَا وَمَا فِيهَا.
قَالَ: ثُمّ تَلَا هَذِهِ الْآيَةَ: فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ.
তোমাদের কারও চাবুক (-এর দৈর্ঘ্য প্রস্থ) পরিমাণ জান্নাতের জায়গা, দুনিয়া ও দুনিয়ায় অবস্থিত সকল বস্তু অপেক্ষা উত্তম।
হযরত সাহল রা. বলেন, একথা বলার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নি¤েœাক্ত আয়াতটি তিলাওয়াত করেন-
فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ.
যাকেই জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই প্রকৃত অর্থে সফলকাম। -তাফসীরে ইবনে কাসীর, ২/১৭৮; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩০১৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৪১৭; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩১৭০
কুরআন মাজীদে আরও ইরশাদ হয়েছে-
مَنْ یُّصْرَفْ عَنْهُ یَوْمَىِٕذٍ فَقَدْ رَحِمَهٗ وَ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْمُبِیْنُ.
সেদিন (কিয়ামতের দিন) যে ব্যক্তি থেকেই তা (জাহান্নামের শাস্তি) দূর করে দেওয়া হবে তার প্রতি আল্লাহ বড়ই দয়া করলেন। আর সেটাই স্পষ্ট সফলতা। -সূরা আনআম (৬) : ১৬
সূরা মুমিনে মুমিনদের জন্য ফিরিশতাদের দুআর একটি অংশ লক্ষ করুন-
وَ قِهِمُ السَّیِّاٰتِ وَ مَنْ تَقِ السَّیِّاٰتِ یَوْمَىِٕذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهٗ وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
(হে আমাদের প্রতিপালক!) তাদেরকে সব রকম মন্দ বিষয় থেকে রক্ষা করুন। আর সেদিন আপনি যাকে মন্দ বিষয়গুলো (অর্থাৎ জাহান্নাম ও জাহান্নামের শাস্তি) থেকে রক্ষা করলেন, নিশ্চয় তার প্রতি দয়া করলেন। আর সেটাই মহা সফলতা। -সূরা মুমিন (৪০) : ৯
কিয়ামতের দিন জান্নাতের সুসংবাদ পাওয়ার মাধ্যমে মুমিনদের সফলতা লাভের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
یَوْمَ تَرَی الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ یَسْعٰی نُوْرُهُمْ بَیْنَ اَیْدِیْهِمْ وَ بِاَیْمَانِهِمْ بُشْرٰىكُمُ الْیَوْمَ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
(হে নবী) সেদিন আপনি মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে দেখবেন, তাদের সামনে ও ডান দিকে তাদের নূর ছুটাছুটি করছে। (তাদেরকে বলা হবে) আজ তোমাদের জন্য এমন জান্নাতের সুসংবাদ, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, যাতে তোমরা সর্বদা থাকবে। এটাই মহা সফলতা। -সূরা হাদীদ (৫৭) : ১২
যে সফলতা কুরআন মাজীদের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত, যে সফলতা হাদীসে নববীর বক্তব্য দ্বারা সাব্যস্ত এবং বিবেকবান প্রত্যেক মুসলমানের চিন্তা ও ভাবনায় যা সুপ্রতিষ্ঠিত, সেই সফলতার প্রতি প্রত্যেকেরই আগ্রহ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। সেই সফলতা একজন মুমিনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। অতএব এর জন্য যে কোনো ধরনের ত্যাগ ও সাধনাকে গ্রহণ করা উচিত। এর জন্য জীবন-প্রাণ বিলিয়ে কাজ করা উচিত। যেমন কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ، لِمِثْلِ هٰذَا فَلْیَعْمَلِ الْعٰمِلُوْنَ.
নিশ্চয় এটাই প্রকৃত অর্থে মহা সফলতা। এমন সফলতার জন্যই আমলকারীদের আমল করা উচিত। -সূরা সাফফাত (৩৭) : ৬০-৬১
আরও ইরশাদ হয়েছে-
وَ فِیْ ذٰلِكَ فَلْیَتَنَافَسِ الْمُتَنَافِسُوْنَ.
এক্ষেত্রেই প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা করা উচিত। -সূরা মুতাফফিফীন (৮৩) : ২৬
এই সফলতার প্রসঙ্গে কুরআন মাজীদে বেশ কয়েকটি গুণ ও বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখিত হয়েছে। এর মধ্য থেকে কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হল।
এক. ঈমান ও আমলে সালেহ
কুরআন মাজীদে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَهُمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْكَبِیْرُ.
নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। এটাই মহা সফলতা। -সূরা বুরূজ (৮৫) : ১১
আরও ইরশাদ হয়েছে-
فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فَیُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِیْ رَحْمَتِهٖ ؕ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْمُبِیْنُ.
সুতরাং যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তো তাদের প্রতিপালক নিজ রহমতের ভেতর দাখিল করবেন। এটাই সুস্পষ্ট সফলতা। -সূরা জাছিয়া (৪৫) : ৩০
ইরশাদ হয়েছে-
وَ مَنْ یُّؤْمِنْۢ بِاللهِ وَ یَعْمَلْ صَالِحًا یُّكَفِّرْ عَنْهُ سَیِّاٰتِهٖ وَ یُدْخِلْهُ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا ؕ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
আর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার নিচে নহর প্রবাহিত থাকবে। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। এটাই মহা সফলতা। -সূরা তাগাবুন (৬৪) : ৯
হাদীস শরীফে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
فَمَنْ أَحَبّ أَنْ يُزَحْزَحَ عَنِ النّارِ، وَيُدْخَلَ الْجَنّةَ، فَلْتَأْتِهِ مَنِيّتُهُ وَهُوَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَلْيَأْتِ إِلَى النّاسِ الّذِي يُحِبّ أَنْ يُؤْتَى إِلَيْهِ.
যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করা হোক এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হোক, তার কাছে যেন এমন অবস্থায় মৃত্যু আসে, যখন সে আল্লাহ ও কিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান রাখে এবং সে যেন মানুষের সাথে এমন আচরণ করে, তার প্রতি অন্যের যেমন আচরণ সে পছন্দ করে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৪৪
দুই. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য
কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَ مَنْ یُّطِعِ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ یُدْخِلْهُ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا وَ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ،وَ مَنْ یَّعْصِ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ وَ یَتَعَدَّ حُدُوْدَهٗ یُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِیْهَا ۪ وَ لَهٗ عَذَابٌ مُّهِیْنٌ.
যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, তিনি তাকে এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। তারা তাতে থাকবে চিরদিন। আর এটাই মহা সফলতা। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করবে এবং তাঁর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করবে, তিনি তাকে দাখিল করবেন জাহান্নামে, যাতে সে সর্বদা থাকবে এবং তার জন্য থাকবে লাঞ্ছনাকর শাস্তি। -সূরা নিসা (৪) : ১৩-১৪
ইরশাদ হয়েছে-
وَ مَنْ یُّطِعِ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِیْمًا.
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, তারা অবশ্যই মহা সাফল্য অর্জন করবে। -সূরা আহযাব (৩৩) : ৭১
তিন. তাকওয়া ও আল্লাহভীতি
আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَ مَنْ یُّطِعِ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ وَ یَخْشَ اللهَ وَ یَتَّقْهِ فَاُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْفَآىِٕزُوْنَ.
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর অবাধ্যতা পরিহার করে চলে (তাকওয়া অবলম্বন করে), তারাই সফলকাম। -সূরা নূর (২৪) : ৫২
ইরশাদ হয়েছে-
اَلَاۤ اِنَّ اَوْلِیَآءَاللهِ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ،الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ كَانُوْا یَتَّقُوْنَ، لَهُمُ الْبُشْرٰی فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ فِی الْاٰخِرَةِ لَا تَبْدِیْلَ لِكَلِمٰتِ اللهِ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ، وَ لَا یَحْزُنْكَ قَوْلُهُمْ ۘ اِنَّ الْعِزَّةَ لِلهِ جَمِیْعًا هُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ.
স্মরণ রেখ, যারা আল্লাহর ঘনিষ্ঠ তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না। তারা সেইসব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে। তাদের দুনিয়ার জীবনেও সুসংবাদ আছে এবং আখেরাতেও। আল্লাহর কথায় কোনো পরিবর্তন হয় না। এটাই মহা সফলতা। -সূরা ইউনুস (১০) : ৬২-৬৪
আরো ইরশাদ হয়েছে-
اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ مَقَامٍ اَمِیْنٍ، فِیْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍ، یَّلْبَسُوْنَ مِنْ سُنْدُسٍ وَّ اِسْتَبْرَقٍ مُّتَقٰبِلِیْنَ،كَذٰلِكَ وَ زَوَّجْنٰهُمْ بِحُوْرٍ عِیْنٍ،یَدْعُوْنَ فِیْهَا بِكُلِّ فَاكِهَةٍ اٰمِنِیْنَ،لَا یَذُوْقُوْنَ فِیْهَا الْمَوْتَ اِلَّا الْمَوْتَةَ الْاُوْلٰی وَ وَقٰىهُمْ عَذَابَ الْجَحِیْمِ، فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
নিশ্চয়ই মুত্তাকীগণ নিরাপদ স্থানে থাকবে। উদ্যানরাজিতে ও প্র¯্রবণে। তারা ‘সুনদুস’ ও ‘ইসতাবরাক’ তথা পাতলা ও মোটা রেশমী কাপড় পরিহিত অবস্থায় সামনা-সামনি বসা থাকবে। তাদের সাথে এরকমই ব্যবহার করা হবে। আমি ডাগর ডাগর চোখবিশিষ্ট হুরদের সাথে তাদের বিয়ে দেব। সেখানে তারা অত্যন্ত নিশ্চিন্তে সবরকম ফলের ফরমায়েশ করবে। (দুনিয়ায়) তাদের যে মৃত্যু প্রথমে এসেছিল, তা ছাড়া সেখানে (অর্থাৎ জান্নাতে) তাদেরকে কোনো মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে না এবং আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করবেন। এসব তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ হবে। এটাই মহা সফলতা। -সূরা দুখান (৪৪) : ৫১-৫৭
ইরশাদ হয়েছে-
اِنَّ لِلْمُتَّقِیْنَ مَفَازًا، حَدَآىِٕقَ وَ اَعْنَابًا، وَّ كَوَاعِبَ اَتْرَابًا، وَّ كَاْسًا دِهَاقًا، لَا یَسْمَعُوْنَ فِیْهَا لَغْوًا وَّ لَا كِذّٰبًا، جَزَآءً مِّنْ رَّبِّكَ عَطَآءً حِسَابًا، رَّبِّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ مَا بَیْنَهُمَا الرَّحْمٰنِ.
নিশ্চয় মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। উদ্যানরাজি ও আঙুর, সমবয়সী নব যৌবনা তরুণী এবং ছলকানো পান-পাত্র। সেখানে তারা কোনো অহেতুক কথা শুনবে না এবং কোনো মিথ্যা কথাও না। এসব হবে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পুরস্কার, (আল্লাহর) এমন দান, যা মানুষের কর্ম হিসাবে দেওয়া হবে। সেই প্রতিপালকের পক্ষ থেকে, যিনি আকাশম-লী, পৃথিবী ও এর মধ্যবর্তী সবকিছুর মালিক, দয়াময়। -সূরা নাবা (৭৮) : ৩১-৩৭
ইরশাদ হয়েছে-
وَ یُنَجِّی اللهُ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا بِمَفَازَتِهِمْ ؗ لَا یَمَسُّهُمُ السُّوْٓءُ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ.
যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে, আল্লাহ তাদেরকে মুক্তি দিয়ে সাফল্যমণ্ডিত করবেন। কোনো কষ্ট তাদেরকে স্পর্শ করবে না। এবং তাদের থাকবে না কোনো দুঃখ। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬১
চার. সত্যবাদিতা
ইরশাদ হয়েছে-
قَالَ اللهُ هٰذَا یَوْمُ یَنْفَعُ الصّٰدِقِیْنَ صِدْقُهُمْ لَهُمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا رَضِیَ اللهُ عَنْهُمْ وَ رَضُوْا عَنْهُ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
(কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তাআলা বলবেন, এটা সেই দিন, যেদিন সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যতা উপকৃত করবে। তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবহমান। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটাই মহা সফলতা। -সূরা মায়িদা (৫) : ১১৯
পাঁচ. মুমিনদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি
আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتُ بَعْضُهُمْ اَوْلِیَآءُ بَعْضٍ ۘ یَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَ یُقِیْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَ یُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ یُطِیْعُوْنَ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ اُولٰٓىِٕكَ سَیَرْحَمُهُمُ اللهُ اِنَّ اللهَ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ،وَعَدَ اللهُ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا وَ مَسٰكِنَ طَیِّبَةً فِیْ جَنّٰتِ عَدْنٍ وَ رِضْوَانٌ مِّنَ اللهِ اَكْبَرُ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
মুমিন নর ও মুমিন নারী পরস্পরে একে-অন্যের সহযোগী। তারা সৎকাজের আদেশ করে অসৎ কাজে বাধা দেয়, নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। তারা এমন লোক, যাদের প্রতি আল্লাহ নিজ রহমত বর্ষণ করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমতারও মালিক, হিকমতেরও মালিক।
আল্লাহ মুমিন নর ও মুমিন নারীদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এমন উদ্যানরাজির, যার তলদেশে নহর বহমান থাকবে। তাতে তারা সর্বদা থাকবে এবং এমন উৎকৃষ্ট বাসস্থানের (প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন), যা সতত সজীব জান্নাতে থাকবে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টিই সর্বশ্রেষ্ঠ জিনিস (যা জান্নাতবাসীগণ লাভ করবে)। এটাই মহা সফলতা। -সূরা তাওবা (৯) : ৭১-৭২
ছয় : আল্লাহর পথে জিহাদ
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-
اِنَّ اللهَ اشْتَرٰی مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اَنْفُسَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ بِاَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ فَیَقْتُلُوْنَ وَ یُقْتَلُوْنَ ۫ وَعْدًا عَلَیْهِ حَقًّا فِی التَّوْرٰىةِ وَ الْاِنْجِیْلِ وَ الْقُرْاٰنِ وَ مَنْ اَوْفٰی بِعَهْدِهٖ مِنَ اللهِ فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَیْعِكُمُ الَّذِیْ بَایَعْتُمْ بِهٖ وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও তাদের সম্পদের বিনিময়ে খরিদ করে নিয়েছেন যে, তাদের জন্য জান্নাত আছে। তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে। ফলে হত্যা করে এবং নিহতও হয়। এটা এক সত্য প্রতিশ্রুতি, যার দায়িত্ব আল্লাহ তাওরাত ও ইনজীলেও নিয়েছেন এবং কুরআনেও। আল্লাহ অপেক্ষা বেশি প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী আর কে আছে? সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ, সেই সওদার জন্য তোমরা আনন্দিত হও এবং এটাই মহা সফলতা। -সূরা তাওবা (৯) আয়াত : ১১১
আরও ইরশাদ করেন-
يٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا هَلْ اَدُلُّكُمْ عَلٰی تِجَارَةٍ تُنْجِیْكُمْ مِّنْ عَذَابٍ اَلِیْمٍ، تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ تُجَاهِدُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ بِاَمْوَالِكُمْ وَ اَنْفُسِكُمْ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ، یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَ یُدْخِلْكُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ وَ مَسٰكِنَ طَیِّبَةً فِیْ جَنّٰتِ عَدْنٍ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসার সন্ধান দেব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাময় শাস্তি থেকে রক্ষা করবে। তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটা তোমাদের পক্ষে শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। এর ফলে আল্লাহ তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন উদ্যানে, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত থাকবে। এবং এমন উৎকৃষ্ট বাসগৃহে বাস করাবেন, যা স্থায়ী জান্নাতে অবস্থিত। এটাই মহা সফলতা। -সূরা সাফ্ (৬১) : ১০-১২
ইরশাদ করেন-
اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ هَاجَرُوْا وَ جٰهَدُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ ۙ اَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللهِ وَ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْفَآىِٕزُوْنَ.
যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহর পথে হিজরত করেছে এবং নিজেদের জান-মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহর কাছে মর্যাদায় অনেক শ্রেষ্ঠ এবং তারাই সফলকাম। -সূরা তাওবা (৯) : ২০
এই সূরারই আরেক জায়গায় মুনাফিকদের বিপরীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদের অবস্থা তুলে ধরে ইরশাদ হয়েছে-
لٰكِنِ الرَّسُوْلُ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ وَ اُولٰٓىِٕكَ لَهُمُ الْخَیْرٰتُ ؗ وَ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ، اَعَدَّ اللهُ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
কিন্তু রাসূল এবং যেসকল লোক তাঁর সঙ্গে ঈমান এনেছে তারা নিজেদের জান-মাল দ্বারা জিহাদ করেছে। তাদেরই জন্য সর্বপ্রকার কল্যাণ এবং তারাই কৃতকার্য। আল্লাহ তাদের জন্য এমন জান্নাত তৈরি করে রেখেছেন, যার তলদেশে নহরসমূহ বহমান, যাতে তারা সর্বদা থাকবে। এটাই মহা সফলতা। -সূরা তাওবা (৯) : ৮৮-৮৯
সাত : সবর ও ধৈর্য
কিয়ামত দিবসের বিবরণ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
اِنِّیْ جَزَیْتُهُمُ الْیَوْمَ بِمَا صَبَرُوْۤا اَنَّهُمْ هُمُ الْفَآىِٕزُوْنَ.
তারা যে সবর করেছিল সে কারণে আজ আমি তাদেরকে এমন প্রতিদান দিলাম যে, তারা সফল হয়ে গেল। -সূরা মুমিনূন (২৩) : ১১১
ধৈর্যের বিনিময়ে জান্নাতের কথা কুরআন মাজীদের আরও বেশ কয়েকটি আয়াতে এসেছে। মূলত ধৈর্যের বড় একটি প্রকার হল, ইবাদত-বন্দেগী যথাযথভাবে আদায় করার ক্ষেত্রে ধৈর্য। আরেকটি প্রকার হল, গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে ধৈর্য। ধৈর্যের তৃতীয় প্রকারটি হল বালা-মুসিবত ও বিপদ-আপদে ধৈর্য। মোটকথা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ পালন ও নিষেধ থেকে বিরত থাকার জন্য ধৈর্যের গুণটি অপরিহার্য। ধৈর্য সম্পর্কে কুরআন মাজীদের আরেকটি আয়াত এই-
مَا عِنْدَكُمْ یَنْفَدُ وَ مَا عِنْدَ اللهِ بَاقٍ وَ لَنَجْزِیَنَّ الَّذِیْنَ صَبَرُوْۤا اَجْرَهُمْ بِاَحْسَنِ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ.
তোমাদের কাছে যা কিছু আছে তা নিঃশেষ হয়ে যাবে আর আল্লাহর কাছে যা আছে তা স্থায়ী। যারা সবর করে আমি তাদের উৎকৃষ্ট কাজ অনুযায়ী অবশ্যই তাদের প্রতিদান দিব। -সূরা নাহল (১৬) : ৯৬
মোটকথা, যারা কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে জাহান্নাম থেকে বেঁচে যাবে এবং চিরস্থায়ী সুখ ও শান্তির নিবাস জান্নাত লাভ করবে তারাই প্রকৃত অর্থে সফলকাম। যারা জান্নাত পাবে আর যারা পাবে না, উভয়ে সমান নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
لَا یَسْتَوِیْۤ اَصْحٰبُ النَّارِ وَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ هُمُ الْفَآىِٕزُوْنَ.
জাহান্নামবাসী আর জান্নাতবাসী সমান হতে পারে না। মূলত জান্নাতবাসীগণই সফল। -সূরা হাশর (৫৯) : ২০
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
إِنّ اللهَ يَقُولُ لِأَهْلِ الْجَنّةِ: يَا أَهْلَ الْجَنّةِ! فَيَقُولُونَ: لَبّيْكَ رَبّنَا وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْكَ! فَيَقُولُ: هَلْ رَضِيتُمْ؟ فَيَقُولُونَ: وَمَا لَنَا لَا نَرْضَى يَا رَبِّ! وَقَدْ أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَداً مِنْ خَلْقِكَ؟ فَيَقُولُ: أَلَا أُعْطِيكُمْ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ؟ فَيَقُولُونَ: يَا رَبِّ! وَأَيّ شَيْءٍ أَفْضَلُ مِنْ ذَلِكَ؟ فَيَقُولُ:أُحِلّ عَلَيْكُمْ رِضْوَانِي فَلَا أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَداً.
আল্লাহ তাআলা জান্নাতবাসীদেরকে ডেকে বলবেন, হে জান্নাতবাসীগণ!
উত্তরে তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমরা উপস্থিত এবং আপনার কাছে উপস্থিত হতে পেরে আমরা সৌভাগ্যবান! নিশ্চয় সকল কল্যাণ আপনার হাতে!
আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমরা কি (জান্নাত পেয়ে) সন্তুষ্ট হয়েছ?
তারা বলবে, কেন সন্তুষ্ট হব না হে আমাদের রব! আপনি তো আমাদেরকে এমন জিনিস দিয়েছেন, যা আপনার অন্য কোনো মাখলুককে দেননি।
আল্লাহ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়ে উত্তম জিনিস দিব না?
তারা বলবে, এর চেয়ে উত্তম জিনিস আর কী আছে হে আমাদের রব!
আল্লাহ বলবেন, আমি তোমাদের প্রতি আমার সন্তুষ্টি ঘোষণা করলাম। এরপর আর কখনো আমি তোমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হব না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৫১৮
আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টিই মহা সফলতা। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَعَدَ اللهُ الْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا وَ مَسٰكِنَ طَیِّبَةً فِیْ جَنّٰتِ عَدْنٍ وَ رِضْوَانٌ مِّنَ اللهِ اَكْبَرُ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
আল্লাহ মুমিন নর ও মুমিন নারীদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এমন উদ্যানরাজির, যার তলদেশে নহর বহমান থাকবে। তাতে তারা সর্বদা থাকবে এবং এমন উৎকৃষ্ট বাসস্থানের (প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন), যা সতত সজীব জান্নাতে থাকবে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টিই সর্বশ্রেষ্ঠ জিনিস (যা জান্নাতবাসীগণ লাভ করবে)। এটাই মহা সফলতা। -সূরা তাওবা (৯) : ৭২
এই হল কুরআন মাজীদে বর্ণিত সফলতা ও সফলতা লাভকারীদের গুণ-পরিচয়। এইসব গুণ ও সফলতা প্রত্যেক ঈমানদারেরই একান্ত আরাধ্য এবং সর্বোচ্চ কাক্সিক্ষত বিষয়। এই সফলতার মূল বিষয় হল, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভ, জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাতে প্রবেশের সৌভাগ্য।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই মহাসফলতা দান করুন। এই সফলতার জন্য জীবন-প্রাণ বিলিয়ে মেহনত করার তাওফীক নসীব করুন- আমীন।