কুরআন মজীদের প্রতি ঈমান
আমাদের উপর কুরআন মজীদের বহু হক রয়েছে। তার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কুরআন মজীদের প্রতি পরিপূর্ণ উপলব্ধির সাথে ঈমান আনা। এ ঈমানের কয়েকটি দিক আছে। যথা -
ক. বিশ্বাস রাখতে হবে যে, এটা আল্লাহ তাআলার কালাম, যা তিনি তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি নাযিল করেছেন। এ কিতাব যে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ এবং এর যাবতীয় বিষয়বস' সত্য এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। এতেও কোনো সন্দেহ নেই যে, নাযিলের সময় থেকে আজ অবধি এই কিতাব যথাযথভাবে সংরক্ষিত আছে এবং কিয়ামতকাল পর্যন- সংরক্ষিত থাকবে। সুতরাং আমরা এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে, বর্তমানে গ্রন্থাকারে যে কুরআন আমাদের হাতে আছে যা সূরা ফাতিহা দ্বারা শুরু হয়ে সূরা নাসে সমাপ্ত হয়েছে এটাই আল্লাহ তাআলার সেই কিতাব, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি নাযিল হয়েছিল।
খ. বিশ্বাস রাখতে হবে যে, মানুষের হিদায়াত ও সফলতা কুরআনের প্রতি ঈমান আনার মধ্যেই নিহিত। এ ঈমানের মাধ্যমেই মানুষ তার স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভ করতে ও আখিরাতে মুক্তি পেতে পারে।
গ. কুরআনের প্রতি ঈমান কেবল তখনই গ্রহণযোগ্য হবে যখন সম্পূর্ণ কুরআনের প্রতি ঈমান আনা হবে। কুরআন মজীদের কিছু বিধান মানা ও কিছু না মানা এবং কুরআন মজীদকে জীবনের ক্ষেত্রবিশেষে সিদ্ধান্তদাতা বলে স্বীকার করা, ক্ষেত্রবিশেষে স্বীকার না করা সম্পূর্ণ কুফরী আচরণ। গোটা কুরআনকে অস্বীকার করা যে পর্যায়ের কুফর এটাও ঠিক সেরকমেরই কুফর।
ঘ. কুরআন মজীদের প্রতি ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য এটাও শর্ত যে, তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শিক্ষা মোতাবেক হতে হবে। যে শিক্ষা মহান সাহাবীগণ হতে প্রজন্ম পরম্পরায় চলে আসছে। সুতরাং কোনো আয়াতকে তার প্রজন্মপরম্পরায় চলে আসা সর্ববাদীসম্মত ব্যাখ্যার পরিবর্তে নতুন কোনো ব্যাখ্যায় গ্রহণ করলে সেটা কুরআন মজীদকে সরাসরি অস্বীকার করার নামান্তর ও সে রকমেরই কুফর বলে গণ্য হবে।
[তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন-এর ভূমিকা হতে]