একটি চিঠি
সম্পাদক ভাইয়া
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
আলকাউসারের সাথে আমার এতদিন পরিচয় ছিল না। আমার উস্তাদ আমাকে আলকাউসার পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেন। আমি হুজুরকে আমার অক্ষমতার কথা জানালাম যে, আলকাউসারের গুরুগম্ভীর প্রবন্ধগুলো আমার বুঝে আসে না।
তবুও হুজুরের আদেশ পালনার্থে পর পর তিনটি সংখ্যা সংগ্রহ করেছিলাম এবং লেখাগুলির উপর হালকাভাবে নজর বুলিয়ে গেছি। আশ্চর্যের বিষয় এতেই আমার চিন্তার মোড় ঘুরে গেল এবং আমি আমার পূর্ব পছন্দের পত্রিকাটিকে আলকাউসারের সাথে তুলনা করতে লাগলাম।
এখন আমি আলকাউসারের একজন নিয়মিত পাঠক। আমার ইচ্ছা, একদিন আমি পাঠক থেকে লেখক হব। ইচ্ছাটি বুকের মধ্যেই লুকিয়ে রেখেছিলাম। একদিন কী মনে হল, সহপাঠীদের কাউকে না বলে চুপি চুপি একটি অভিব্যক্তিমূলক লেখা আলকাউসারে পাঠিয়ে দিলাম। বিষযটি গোপনই রেখেছিলাম, কিন্তু একদিন আবেগের আতিশয্যে আমার উস্তাদকে তা বলে ফেলি।
হুজুর বললেন, ‘এ ধরনের লেখা তো আলকাউসারের ছাপা হয় না। তবুও দেখ, তোমার লেখাটি ছাপা হয় কি না। তকন আমি তা ছাপার অক্ষরে দেখার আর আশাই করলাম না।
কিন্তু যখন ফেব্রুয়ারি ২০১০ সংখ্যাটি হাতে এল তখন পাঠকের পাতায় ‘ধুমপান ও পিতার অর্থ’ শিরোনামের লেখাটি দেখে আনন্দে ও লজ্জায় বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।
কতবার যে লুকিয়ে লুকিয়ে লেখাটি পড়েছি আর আলকাউসারের পাতায় ছাপা হওয়া আমার নামটি দেখে পুলকিত হয়েছি তার হিসাব নেই।
এ নিয়ে সহপাঠীদের কেউ কেউ অবশ্য উপহাসও করেছে, কিন্তু তা আমি গায়ে মাখিনি। ওদের উপহাসের অবশ্য যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে। আপনার সস্নেহ সম্পাদনায় লেখাটি যে সুন্দর ভাষা ও কাঠামো লাভ করেছে হয়তো সেটিই তাদের উপহাসের কারণ। আমি কিন্তু কিছু বিষয় শিখেছি। এখন বুঝতে পারছি যে, আমার লেখাটিতে উগ্রতা ছিল। আর এখন তাতে কল্যাণকামিতা প্রকাশ পাচ্ছে। লেখাটি পড়ে একজন ধুমপায়ী ধুমপানের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন হবে। লেখাটির ভাষা মার্জিত এবং সবশেষে একটি দোয়ার বাক্যও আপনি ব্যবহার করেছেন।
আপনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, লেখার শিরোনামটি আকর্ষণীয় হতে হবে। লেখার ভাষা উগ্র ও কর্কশ না হতে হবে। শেষে উপসংহার লাগবে।
আমি আপনার নিকট দোয়া প্রার্থী, যে চেতনাটুকু আপনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাকে দান করেছেন তা যেন ধরে রাখতে পারি। আল্লাহ তাআলা আপনাকে ও আলকাউসারের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জাযায়ে খায়ের দান করুন।
ওয়াসসালাম
ছানাউল্লাহ অলিউল্লাহ
মাদরাসা দারুল আফকার আলইসলামী
অক্সিজেন, চট্টগ্রাম