বা ব রি ম স জি দ
অসাম্প্রদায়িক রায়!
অবশেষে গত ৯ নভেম্বর বাবরি মসজিদ নিয়ে চূড়ান্ত রায় দিল ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। বলা হচ্ছে যে, এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টির ১৩৪ বছর পর এই মামলার রায় হল। বিতর্কিত এ রায়কে অনেকে ভারতের ইতিহাসের একটি কলংকজনক অধ্যায় হিসেবে দেখছেন। সত্যকে পাশ কাটিয়ে উগ্র সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে রায় দেয়ার একটি লজ্জাজনক দৃষ্টান্তও বলা হচ্ছে একে। বাবরি মসজিদ মামলার রায়ের খবর ও মূল্যায়ন শুধু উপমহাদেশেই নয়, বিশ্ব মিডিয়াতেও যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্ব মিডিয়ায় এই রায়কে মোদি ও হিন্দু জাতীয়তাবাদের জয় হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ‘কয়েক শতাব্দীর বিতর্কিত জমি নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হিন্দুদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। মোদি এবং তার অনুগামীরা যে নতুন করে ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি থেকে সরিয়ে হিন্দুত্বের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন, তার পক্ষে এটা বড় জয়।’ ওয়াশিংটন পোস্ট-এ লেখা হয়েছে, ‘মুসলিমদের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বিতর্কিত জমি হিন্দুদের পুরস্কার দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বড় জয়।’ পত্রিকাটিতে একইসাথে ভারত প্রাথমিকভাবে ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ এবং তা ‘ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ নয়’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
মোগল সুলতান বাবরের শাসনামলে ৯৩৫ হিজরী/১৫২৮-২৯ ঈ. মুঘল সেনাপতি মীর বাকি অযোধ্যা শহরে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন, যা বাবরি মসজিদ নামে পরিচিত। মসজিদ নির্মাণের সময় অথবা অব্যবহিত পরে এ সম্পর্কে স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছিল না।
এর বহু পরে এসে একশ্রেণির হিন্দু দাবি করে বসে, অযোধ্যার যে স্থানে বাবরি মসজিদ নির্মিত, সে স্থানটি নাকি রামের জন্মভূমি। কিন্তু এর স্বপক্ষে ঐতিহাসিক কোনো প্রমাণ তারা আজো হাযির করতে পারেনি।
এই মসজিদ নির্মাণ অথবা এর পরবর্তী চার শতকের বেশি সময়ব্যাপী এটি নিয়ে কোনো কথা ওঠেনি। এই বিতর্ক বিশেষভাবে উত্থাপিত হয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের শেষের দিকে, যখন হিন্দু-মুসলিম দুই প্রধান সম্প্রদায়ের মধ্যে হিন্দুস্তানের স্বাধীনতা অর্জনের ব্যাপারে একধরনের ঐকমত্য সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতা আন্দোলনকে প্রলম্বিত করার জন্য তখনকার ব্রিটিশ নীতির একটি কৌশল ছিল, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে এসে তা চাঙা করা। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)সহ বেশ কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয় এ সময়েই।
১৮৫৩ সালে একদল হিন্দু ‘সাধু’ সর্বপ্রথম এর ওপর মালিকানা দাবি করেছিলেন। ফলে পরের দুই বছর এ নিয়ে মাঝেমধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায়ও প্রশাসন এখানে মন্দির নির্মাণের অনুমতি যেমন দেয়নি, তেমনি এটাকে প্রার্থনার জন্য ব্যবহার করতে দিতে চায়নি। ১৮৫৫ সালে হিন্দু-মুসলিম সংঘর্ষের পর মসজিদের সীমানায় দেয়াল তোলা হয়, যাতে বিবাদ এড়ানো যায়। এরপর মুসলমানরা দেয়ালের ভেতরে নামায পড়তেন এবং হিন্দুরা বাইরে একটি উঁচু চত্বরে পূজা করতেন।
১৯৪৯ সালে ‘নিখিল ভারতীয় রামায়ণ মহাসভা’ মসজিদের ঠিক বাইরেই ৯ দিন ধরে অবিরাম রামচরিতমানস পাঠের আয়োজন করে। এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার সাথে সাথে রাতের বেলায় কিছু মানুষ গোপনে মসজিদে ঢুকে রাম ও সীতার মূর্তি স্থাপন করে। পরদিন মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়, ‘বাবরি মসজিদের ভেতরে অলৌকিকভাবে মূর্তির আবির্ভাব ঘটেছে।’ এটা দর্শন করে পুণ্য সঞ্চয়ের জন্য ভক্তদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ফলে হাজার হাজার হিন্দু নর-নারী সেখানে আসতে শুরু করেন। পরবর্তীতে সরকার মসজিদটিকে ‘বিতর্কিত এলাকা’ ঘোষণা করে তালা লাগিয়ে দেয়।
১৯৮৪ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে রামের জন্মস্থান উদ্ধার এবং তার সম্মানে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তৎকালীন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি (পরবর্তীতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) ঐ প্রচারণার নেতৃত্ব দেয়। এ আন্দোলনের একটা ফল প্রকাশ পায় দু বছর পরই। ১৯৮৬ সালে জেলার বিচারক আদেশ দেন, যেন বিতর্কিত মসজিদের দরজা উন্মুক্ত করে দিয়ে হিন্দুদের সেখানে উপাসনার সুযোগ দেয়া হয়। আদালতের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিবিদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী, যিনি শাহ বানু বিতর্কের দরুন কট্টর হিন্দুদের সমর্থন হারানোর পর পুনরায় তাদের সমর্থন লাভের সুযোগ খুঁজছিলেন। মুসলিমরা এর প্রতিবাদে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি গঠন করে।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো ঐ বিতর্কিত স্থানে এক শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রায় শামিল হয়েছিল দেড় লাখ ভিএইচপি এবং বিজেপি ‘কর সেবক’। এছাড়া অনুষ্ঠানে আদভানি, মুরলি মনোহর জোশি ও উমা ভারতীর মত বিজেপি নেতা উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছিলেন। শোভাযাত্রা চলাকালীন সময়ে প্রথম দিকে জনতা ক্লান্তিহীনভাবে শ্লোগান দিচ্ছিল। সহিংসতা প্রতিরোধে স্থাপনাটির চারদিকে পুলিশি বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছিল। সেদিন আদভানি ও জোশির বক্তব্য আরো উন্মত্ত করে তুলেছিল জনতাকে । দুপুরের দিকে এক যুবক বেষ্টনী অতিক্রম করে স্থাপনাটির উপরে চলে যায় এবং গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করে। এই ঘটনা ছিল সহিংসতার সূচনা। এরপর উন্মাদ হয়ে ওঠে তারা। উন্মত্ত কট্টর হিন্দুদের সামনে নির্বিকার থাকে পুলিশ। পূর্ব পরিকল্পনা মত আগে থেকে সাথে আনা কুঠার, হাতুড়ি এবং গাইতি দিয়ে ইমারতটি ভাঙা শুরু করে তারা। কয়েক ঘণ্টার মাঝে ‘শহীদ’ করে ফেলে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ।
পৃথিবীজুড়ে মসজিদ ধ্বংসের এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। ভারতজুড়ে জ¦লে ওঠে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আগুন। নিহত হয় হাজার হাজার মুসলিম। বাংলাদেশেও এর তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রাহ.-এর নেতৃত্বে বাবরি মসজিদ অভিমুখে ঐতিহাসিক লংমার্চ করা হয়।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসযজ্ঞটি একশ্রেণির উন্মত্ত হিন্দুদের হঠাৎ ঘটানো কোনো বিষয় নয়; বরং এর পিছনে ছিল দীর্ঘ ষড়যন্ত্র। ২০০৫ সালের মার্চে সাবেক গোয়েন্দা প্রধান মলয় কৃষ্ণ ধর তার বইয়ে দাবি করেন যে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), বিজেপি এবং ভিএইচপির নেতারা ইমারতটি ভাঙার দশ মাস পূর্বেই এটি ভাঙার পরিকল্পনা করেছিলেন। ধর আরো বলেন যে, তিনি বিজেপি ও সংঘ পরিবারের ব্যক্তিদের একটি বৈঠকের নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্বে ছিলেন এবং বৈঠকটিতে নিঃসন্দেহে তারা (আরএসএস, বিজেপি, ভিএইচপি) ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় হিন্দুত্বের জিগির তুলে প্রলয় সৃষ্টির নীল নকশা রচনা করেছিলেন। আরএসএস, বিজেপি, ভিএইচপি এবং বৈঠকে উপস্থিত বজরং দলের নেতাদের সবাই সুসংগঠিতভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে চাইলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি ঐ বৈঠকের আলোচনা রেকর্ড করে তার উপরস্থ কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, তিনি নিশ্চিত যে, ব্যাপারটা তার উপরের কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রী (নরসিমা রাও) এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে (শঙ্কর রাও চবন) অবহিত করেছেন।
ভারতের বাবরি মসজিদকে রক্ষা করা যেত, যদি সেই সময়কার প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসীমা রাওয়ের সদিচ্ছা থাকত। এমনটাই মন্তব্য করেছেন সেই সময়কার দেশটির স্বরাষ্ট্র সচিব মাধব গোটবোলে।
বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার আগেই এক ব্যাপক পরিকল্পনা করেছিল ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তা গ্রহণ করেননি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। এমনটাই দাবি করেছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব গোটবোলে অযোধ্যা বিতর্ক নিয়ে তার বইয়ে।
সেখানে মাধব গোটবোলে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পর্যায়ে যদি রাজনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া হত, তাহলে বাবরি ধ্বংস এড়ানো যেত। ...১৯৯২ সালে বিভিন্ন সংস্থা এবং অফিসারদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে ব্যাপক ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে কঠোর নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা। ভারতের বিচার বিভাগও এবিষয়ে অবগত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেছেন, পরিকল্পনা ক্যাবিনেট সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শদাতা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা করেছিলেন তিনি। -দৈনিক নয়া দিগন্ত, ০৪ নভেম্বর ২০১৯
যাই হোক, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর দীর্ঘদিন আদালতে এ নিয়ে মামলা চলতে থাকে।
২০০৯ সালে লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সাথে ৬৮ জন জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়, যাদের অধিকাংশই ছিলেন বিজেপি নেতা। দোষী ব্যক্তিদের নামের তালিকায় বাজপেয়ী, আদভানি, জোশি এবং বিজয় রাজে স্কিন্দিয়ার নামও ছিল। উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের সমালোচনা করা হয় প্রতিবেদনটিতে। প্রতিবেদনটিতে সে সময়ে ইমারতটি ভাঙার সময় অযোধ্যার পুলিশ ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রতিবেদনসহ আরো অনেক কিছু বিবেচনা করে ২০১০ সালে এলাহাবাদ উচ্চ আদালত রায় দিয়েছিল, সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া, রামলালার মধ্যে জমি সমানভাগে ভাগ করে দেয়া হোক। এর ফলে হিন্দুরা পায় জমির তিন ভাগের দুই ভাগ। মুসলিমরা এক ভাগ। এর বিরুদ্ধে সব পক্ষই উচ্চ আদালতে আপিল করে। অবশেষে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর বাবরি মসজিদ নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেয়া হয় গত ৯ নভেম্বর । উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের রায়কে রদ করে ঘোষণা দেয় ২.৭৭ একরের পুরো জমিই এমন একটি ট্রাস্টকে দিতে হবে, যারা রাম মন্দির নির্মাণ করবে। একইসাথে আদালত সরকারকে নির্দেশ দেয়, সুন্নী ওয়াকফ বোর্ডকে বিকল্প ৫ একর জমি দিতে হবে মসজিদ নির্মাণের জন্য।
বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। এর দ্বারা একথা স্পষ্ট, সুপ্রিম কোর্টে এ মামলার শুনানির জন্য যে আরজি দাখিল করা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য এ মামলার কোনো ইনসাফপূর্ণ সমাধান নয়, বরং অপরপক্ষকে পরিস্থিতির সামনে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। ইউপি অ্যাসেম্বলির নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের পর আরএসএসের নীতিনির্ধারক এমজি বৈদ্য বলেছেন, উত্তরপ্রদেশে বিজেপির রমরমা জয় মূলত অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য জনগণের রায়।
বিতর্কিত এ রায়ের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের খ্যাতনামা সাবেক বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় অনেকগুলো আইনি প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, ইতিহাসের পুনঃনির্মাণ করা তো আদালতের কাজ নয়। আদালত সিদ্ধান্তে পৌঁছান অকাট্য প্রমাণ এবং প্রামাণ্য নথিপত্রের ভিত্তিতে। বাবরি মসজিদ যে ওখানে ছিল, পাঁচ শতাব্দী ধরে ছিল, তা আমরা সবাই জানি। এমনকি সুপ্রিম কোর্ট এ দিনের রায়েও মেনে নিয়েছেন যে, অন্যায়ভাবে মসজিদটি ভেঙে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৫২৮ সালের আগে ওখানে রামমন্দির ছিল কি না, আমরা কেউ কি নিশ্চিতভাবে জানি? রামমন্দির ভেঙেই বাবরি মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল- এমন কোনো অকাট্য প্রমাণ কি কেউ দাখিল করতে পেরেছিলেন? পারেননি। তা সত্ত্বেও যে নির্দেশটা শীর্ষ আদালত থেকে এল, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকা স্বাভাবিক নয় কি?
বাবরি মসজিদ কেবল সূচনামাত্র। হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতৃত্ব এবং বিশাল ভারতজুড়ে তাদের বিপুলসংখ্যক সমর্থকের মুসলমানদের ধর্মীয় স্থাপনা উচ্ছেদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাও লক্ষ করা যাচ্ছে।
আমাদের দেশে একদল লোক আছে, যারা প্রতিবেশী দেশের প্রতি দরাজদিল হলেও নিজ দেশের মানুষদের প্রতি সংকীর্ণমনা। বিশেষত যারা ইসলামকে ভালোবাসেন এবং জীবন ও জগতে ইসলামের কল্যাণ-আদর্শ অনুসৃত হোক এটা চান। এরা সমাজ বা রাষ্ট্রের কোথাও ইসলামের উপস্থিতি দেখলে তেলে বেগুনে জ¦লে ওঠেন। ধর্মনিরপেক্ষতা যায় যায় বলে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন। এ বীর মানুষগুলো কি তাদের প্রতিবেশী বন্ধুদের এসকল সাম্প্রদায়িক আচরণের ব্যাপারে কিছু বলবেন?