Rabiul Akhir 1441   ||   December 2019

একটি ভিত্তিহীন কিসসা

আবু জেহেলের গর্ত খোঁড়ার কিসসা

লোকমুখে প্রসিদ্ধ, একবার আবু জেহেল নবীজীকে হত্যার ফন্দি আঁটল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে পথ দিয়ে যাতায়াত করেন সে পথে সারারাত জেগে সে একটি গর্ত খুঁড়ল। সে ভাবল, ফজরের সময় নবীজী এ পথ দিয়ে যাবেন আর...। সে গর্ত খুঁড়ে এর উপর দিয়ে হালকা ডালপালা, পাতা ও বালি দিয়ে ঢেকে দিল; সাধারণ পথের মত বানিয়ে রাখল। এদিকে নবীজী ফজরের নামাযের জন্য গেলেন এবং আবার ফিরে এলেন, কিন্তু নবীজীর কিছুই হল না। নবীজী কিছু টেরও পেলেন না; কারণ, নবীজী যাওয়ার সময় জিবরীল আমীন ঐ গর্তের উপর তাঁর ডানা বিছিয়ে দিয়েছিলেন।

এদিকে সারা রাত গর্ত খোঁড়ার কারণে আবু জেহেলের তন্দ্রা এল এবং সে কিছুই টের পেল না। সকাল হয়ে যাচ্ছে দেখে সে ভাবল, দেখি তো গর্তে পড়ল কি না? সে দেখতে গিয়ে তন্দ্রাভাবের কারণে নিজেই গর্তে গিয়ে পড়ল। সে বাঁচাও বাঁচাও করে চিৎকার করল। তার ছেলে তাকে গর্ত থেকে উঠানোর জন্য হাত এগিয়ে দিল কিন্তু সে একটুর জন্য হাত ধরতে পারল না। আনা হল বড় রশি। একটুর জন্য সেটিও ধরতে পারছিল না। রশি জোড়া দিতে দিতে ৭০ হাত বানানো হল তারপরও একটুর জন্য ধরতে পারে না। তখন আরো বড় রশি আনতে চাইলে সে বলল, রাখো; তোমরা ৭০ হাত কেন ৭০ হাজার হাত লম্বা রশি আনলেও আমাকে উঠাতে পারবে না।

এক কাজ কর, মুহাম্মাদকে ডাকো; কেবল সে-ই আমাকে এখান থেকে উঠাতে পারবে। নবীজী এসে বললেন, আমি আপনাকে উঠাব, আপনি শুধু একটি বার বলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ...। আবু জেহেল বলল, আগে উঠাও তারপর বলছি। নবীজী তখন হাত বাড়িয়ে দিতেই সে হাত ধরে ফেলল এবং উপরে উঠে এল। উপরে ওঠার সাথে সাথে বলল, দেখলে, মুহাম্মাদ কত বড় জাদুগর! সত্তর হাত রশি দিয়েও যেখানে আমি ঠাঁই পাচ্ছিলাম না, সেখানে তার হাত বাড়াতেই আমি ঠাঁই পেলাম। দেখেছ তোমরা, মুাহম্মাদ কত বড় জাদুগর!

এটি একটি ভিত্তিহীন কাহিনী। লোকমুখে বহুল প্রচলিত হলেও এর কোনো দালীলিক ভিত্তি নেই। সুতরাং আমরা তা বলা থেকে বিরত থাকব।

 

advertisement