Shawal 1430   ||   October 2009

তাঁরাও আমাদের ভাই বোন

Ibne Naseeb

আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলিমগণ একদেহের ন্যায়, দেহের কোনো অঙ্গ যদি কষ্ট ভোগ করে তাহলে গোটা দেহ জ্বর ও অনিদ্রায় আক্রান- হয়।’ মুসলিমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছেন। বহু দেশে তারা সংখ্যালঘু। মুসলিম দেশেও যখন মুসলমানদের শানি- ও নিরাপত্তা নেই তখন অমুসলিম দেশে তাদের অবস'া কেমন হবে তা খুব সহজেই অনুমেয়। আর এই প্রতিকূলতা শতগুণ বৃদ্ধি পায় যখন তারা মুসলিম-পরিচয়ে থাকার চেষ্টা করেন। এশিয়া মহাদেশে ভারত, চীন, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, বার্মা, ফিলিপাইন ইত্যাদি দেশে বহু সংখ্যক মুসলিম বসবাস করেন। তবে তারা সংখ্যালঘু এবং প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের মুখোমুখি হয়ে থাকেন। আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন অমুসলিম দেশেও যেমন ইথিওপিয়া, তানজানিয়া, উগান্ডা, কেনিয়া, ঘানা, মাদাগাশকার, মোজাম্বিক ও জাম্বিয়ায় লক্ষ লক্ষ মুসলিম রয়েছেন। আমেরিকা মহাদেশেও প্রায় ৪ মিলিয়ন মুসলিম বসবাস করছেন। অস্ট্রেলিয়াতে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ। এই মহাদেশে মুসলিমদের আগমন অতি প্রাচীন। এই ভূখণ্ড যখন আবিষকৃত হয় তখন ইংরেজরা পাকিস-ান ও আফগানিস-ানের যেসব মুসলিম শ্রমিকদের উট চালানোর জন্য সেখানে নিয়ে গিয়েছিল তারা সেখানে ইসলাম প্রচার করেছেন। তাদের বংশধরদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বহু মসজিদ ও দ্বীনী প্রতিষ্ঠান। কিন' তাদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন। ইউরোপের শুধু আলবেনিয়া ছাড়া অন্য সকল দেশে মুসলিমরা সংখ্যালঘু। গোটা ইউরোপে প্রায় ১৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ কোটি ৫০ লক্ষ মুসলিম বসবাস করছেন। চমকে যাওয়ার মতো বিষয় এই যে, এই ১৫ মিলিয়ন মুসলিমকে খৃষ্টধর্মে দিক্ষিত করার জন্য বিভিন্ন আন-র্জাতিক সংগঠনের অধীনে প্রায় ১৭ মিলিয়ন খৃষ্টান কর্মরত রয়েছে! এক খৃষ্টান ধর্মপ্রচারকের উদ্ধত ঘোষণা এই যে, ‘ইউরোপে বসবাসকারী মুসলিমদের অন-র থেকে ইসলামকে বিলুপ্ত করে দিতে হবে। আর ইউরোপের ১০ মিলিয়ন মুসলিম তো আমাদের জন্য ঐশী উপহার!!’ পৃথিবীর বিভিন্ন অমুসলিম দেশে ছড়িয়ে থাকা বিপুল সংখ্যক মুসলিম শুধু তাদের ইসলামী পরিচয়ের কারণে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং প্রতিনিয়ত নির্যাতন ও নিপীড়নের মুখোমুখি হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, তাদের দ্বীন-ঈমানও হুমকির সম্মুখীন! মুসলমান পৃথিবীর যে কোনো ভূখণ্ডেই থাকুক না কেন ইসলামী ভ্রাতৃত্বের দাবি হচ্ছে তাদের সম্পর্কে জানা এবং তাদের দুঃখবেদনায় অংশীদার হওয়ার চেষ্টা করা। তাদেরকে কাফিরদের জুলুম-অত্যাচার থেকে এবং ঈমান হরণের সকল চক্রান- থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা। অন-ত কায়মনোবাক্যে আল্লাহর দরবারে দুআ করার সামর্থ্য তো আমাদের সবারই রয়েছে। আমরা কি ইসলামী ভ্রাতৃত্বের দাবি পূরণ করছি?

 

advertisement