আবু হুরায়রার থলে
ছোট্ট একটা খেজুরের থলে। সেখান থেকে আবু হুরায়রা রা. নেন আর খান; এক মুঠ, দুই মুঠ, দশ মুঠ। এক কেজি, দুই কেজি, দশ কেজি; ছোট্ট সেই থলে থেকে আবু হুরায়রা রা. নিতেই থাকেন; নিজে খান, অন্যদের খাওয়ান- তবু ফুরোয় না থলের খেজুর।
কী বিষয়, ছোট্ট একটা থলেতে কতটুকু খেজুরই বা থাকতে পারে? এতটুকুন থলেতে এত খেজুর কোত্থেকে এল!
এসো, আবু হুরায়রা রা.-এর মুখ থেকেই শোনা যাক ঘটনা-
তিনি বলেন, একবার আমি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কিছু খেজুর নিয়ে এলাম। বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ খেজুরগুলোতে বরকতের দুআ করে দিন। নবীজী সেগুলো একসাথ করে বরকতের দুআ করে দিলেন। বললেন, তুমি এগুলো এ থলেতে রাখ। যখন তোমার প্রয়োজন হবে থলের ভেতর থেকে খেজুর নিবে, কিন্তু থলের সব খেজুর ঢেলে ফেলবে না।
নবীজীর কথা মতো আবু হুরায়রা রা. প্রয়োজন হলেই থলে থেকে খেজুর নেন। নিজে খান, অন্যদের খাওয়ান। নবীজীর দুআর বরকতে এতে এত বরকত হল যে, আবু হুরায়রা রা. বলেন, এ থলে থেকে আমি অনেক ওয়াসাক (বিশেষ একটি পরিমাপ-প্রায় পাঁচ মন সমান) খেজুর আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছি।
এভাবে অনেকদিন চলল। আবু হুরায়রাও বরকতময় থলেটি সবসময় কাছে কাছে রাখেন। নিজের লুঙ্গিতে গুঁজে রাখেন, যাতে না হারায়। কিন্তু থলেটি একদিন হারিয়ে গেল। হযরত উসমান রা.-নিহত হওয়ার দিন থলেটি যেন কোথায় পড়ে গেল। আর খুঁজে পাওয়া গেল না। আবু হুরাইরা রা.-এরও আর আফসোসের সীমা রইল না। কিন্তু আবু হুরায়রা রা.-এর এ থলের মাধ্যমে নবীজীর এক মুজেযা প্রকাশ পেল। নবীজীর দুআর বরকতে, আল্লাহর কুদরতে ছোট্ট একটা থলে থেকে মনকে মন খেজুর বের হল। ঈমানদারের ঈমান মজবুত হল। (দ্র. জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৮৩৯)