একটি বানোয়াট কিসসা
মূসা আলাইহিস সালাম ও তিন ব্যক্তির কাহিনী
লোকমুখে প্রসিদ্ধ- একদিন মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর সাথে কথা বলতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ, যার পরনে শুধু এক টুকরো কাপড়। সে বলল, হে আল্লাহর নবী! আল্লাহকে জিজ্ঞেস করবেন, কীভাবে আমার অভাব দূর হবে। এরপর আরেক ধনী লোকের সাথে সাক্ষাৎ হল, যাকে আল্লাহ অঢেল সম্পদ দিয়েছেন। সে বলল, আল্লাহকে জিজ্ঞেস করবেন, কীভাবে আমার সম্পদ কমবে। আরেক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ হল, যার হাতও নেই, পা-ও নেই। সে বলল, আল্লাহকে জিজ্ঞেস করবেন, আমাকে কেন সৃষ্টি করা হয়েছে।
মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ বললেন, প্রথম ব্যক্তিকে (এক টুকরা কাপড়ওয়ালা) বলবে, বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করতে। দ্বিতীয় ব্যক্তিকে (সম্পদশালী) বলবে, বেশি বেশি না-শোকরি করতে। আর তৃতীয় ব্যক্তিকে বলবে, তোমাকে দিয়ে জাহান্নামের একটা ফুটা বন্ধ করার জন্য তোমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে (অর্থাৎ, আল্লাহর ফয়সালা মেনে না নেওয়া ও না-শোকরির কারণে সে জাহান্নামে যাবে)।
কেউ কেউ আরেকটু বাড়িয়ে বলে- প্রথম ব্যক্তিকে শুকরিয়া আদায় করার কথা বললে, সে বলল, আমি কিসের উপর শুকরিয়া আদায় করব? এ কথা বলাতে প্রচণ্ড বাতাস এসে তার পরনে যে এক টুকরো কাপড় ছিল, তাও উড়িয়ে নিয়ে গেল। দ্বিতীয় ব্যক্তিকে না-শোকরির কথা বললে সে বলল, আল্লাহ আমাকে এত সম্পদ দিয়েছেন- আমি কীভাবে তাঁর না-শোকরি করব। ফলে তার সম্পদ আরো বৃদ্ধি পেল।
শুকরিয়া আদায় করা-না করা বিষয়ে এ কিসসাটি বলা হয়। কিন্তু এটি একটি বানোয়াট কিসসা। এর নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র নেই। আমাদের সমাজে মূসা আলাইহিস সালামের সাথে যুক্ত করে বানানো অনেক কিসসা প্রচলিত আছে। সেই কিসসাসমূহের মধ্যে এটি অনেক প্রসিদ্ধ একটি কিসসা। এটি বলা যাবে না।
শুকরিয়া আদায়ের বিষয়ে কুরআনে কারীমের অসংখ্য আয়াত ও সহীহ হাদীস রয়েছে। আমরা সেগুলোই বলব, এসকল বানোয়াট কিসসা বলব না।