আমাদের চরিত্র করে উন্নত হবে?
পৃথিবীটা এখন অনেক বদলে গেছে। সবকিছুই এখন উন্নত, আধুনিক। মানুষও আধুনিকতার জোয়ারে ভাসতে ভাসতে ধীরে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। আফসোস! সময়ের এই ব্যবধান আর আধুনিকতার ছোঁয়া অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি এখন মানুষের চরিত্র ও আচার-আচরণের উপরও প্রভাব ফেলছে বিরাটভাবে। মানুষের চরিত্র হয়ে গেছে হিংস্র থেকে হিংস্রতর। আচার-আচরণেও ক্রমশ অধঃপতন ঘটছে। একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা এখানে না বললেই নয়। একদিন বাসে যাচ্ছি। পথিমধ্যে সামান্য বিষয় নিয়ে এক যাত্রী আর চালকের মাঝে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হল। একপর্যায়ে চালক তার সিটের নিচে লুকিয়ে রাখা মোটা লাঠি বের করে এবং ভয়ানক মূর্তি ধারণ করে যাত্রীকে আঘাত করতে উদ্যত হয়। সাথে সাথে অন্য যাত্রীরা তাকে ধরে ফেলে। তখন সে আঘাত করতে ব্যর্থ হওয়ায় ধরা পাওয়া বাঘের মতো ফুঁসতে থাকে। কুৎসিত গালিগালাজ করতে ভুলে না। এই হল আমাদের বর্তমান মনোভাব। ধরুন, সম্পূর্ণ ভালো মনের একজন ভদ্রলোক রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। পথিমধ্যে এক জায়গায় এক লোককে দেখল, সে বেদম মার খাচ্ছে নানানজনের হাতে। ব্যস, তাকে আর পায় কে! বাছবিচার না করে সেও মারতে আরম্ভ করে। আমাদের মনোভাব কেমন যেন সর্বদাই মারমুখী এবং ঝগড়া বাঁধাতে উন্মুখ। কোথাও মার দেওয়ার মওকা পেলে অসুস্থ লোকও মহামূল্যবান সুযোগ মনে করে তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে ভোলে না। অথচ যদি অত্যন্ত সম্মানীয় শিক্ষকও তার ছাত্রকে বিনা কারণে বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রহার করে তাহলে তাকেও কেয়ামতের দিন এর জন্য আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। তাহলে সুযোগ পেলেই মারতে চাওয়া আমাদের মতো পাষণ্ড লোকের অবস্থা কেমন ভয়াবহ হবে! একটু চিন্তা করে দেখুন। চারদিকে এখন উন্নত রাষ্ট্র বানানোর অঙ্গিকার চলছে। কিন্তু বাহ্য পরিবর্তন যতই করা হোক না কেন অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন তথা নিজ চরিত্রকে উন্নত না বানালে কস্মিনকালেও বাস্তব উন্নয়নের সাক্ষাৎ পাওয়া সম্ভব নয়।
আমরা যদি আমাদের জীবনের সকল অঙ্গনে ইসলামের আহকাম মেনে চলি, সর্বোপরি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবন আদর্শ অনুযায়ী আমাদের জীবনকে পরিচালিত করি এবং তাঁর চরিত্রের সৌন্দর্যের ফুল দিয়ে আমাদের নষ্ট হয়ে যাওয়া চরিত্রকে শোভিত করার চেষ্টা করি তবেই কিছু উন্নতি হতে পারে। পাল্টে যেতে পারে সমাজ, দেশ এবং এ দেশের সকল জনগণ।
হাসিব হোসাইন
সফিউদ্দীন একাডেমী রোড
কলেজ গেট, টঙ্গী, গাজিপুর