হযরাতুল উস্তায মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি
Mawlana Muhammad Abdul Malek
মাদরাসায়ে আরাবিয়া খেড়িহড়, হাজীগঞ্জ, কুমিল্লা (বর্তমান শাহরাস্তি, চাঁদপুর) আমার মাদরে ইলমী। ভাইজান হযরত মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ছাহেব তো প্রথম দুই-এক জামাত মাদরাসায়ে হামীদিয়া কাশিপুর, লাকসাম, কুমিল্লা (বর্তমান মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা) পড়ে এসেছেন। এমনিভাবে তাঁর প্রিয় সহপাঠী হযরত মাওলানা দিলাওয়ার হুসাইন ছাহেব প্রথমে মুন্সিরহাট মাদরাসা, লাকসাম, কুমিল্লা (বর্তমান মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা) থেকে কয়েক জামাত পড়ে এসেছেন। এরপর তাঁরা মাদরাসায়ে আরাবিয়া খেড়িহড়-এ পড়েছেন। কিন্তু এই অধমের লেখাপড়া মুহতারামা আম্মাজানের ঘরের মাদরাসার পর খেড়িহড় মাদরাসায়ই হয়েছে। প্রথম বা দ্বিতীয় জামাত থেকে মেশকাত জামাত (যা এখনো এ মাদরাসার শেষ জামাত) পর্যন্ত আমার পড়ালেখা এখানেই হয়েছে।
আমাদের জন্য এই মাদরাসা ছিল আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অনেক বড় নিআমত। মাদরাসাটি একেবারে গ্রামে হওয়ার পরও আল্লাহ তাআলা এখানে মজবুত ইস্তিদাদের অধিকারী, আহলে দিল, শফীক ও নাশীত অনেক উস্তাযকে একত্র করেছেন। ফালিল্লাহিল হামদু হামদান কাছীরান তায়্যিবান মুবারাকান ফীহ।
আমাদের সেই আসাতিযায়ে কেরামের মধ্যে মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান রাহ.-এর ব্যক্তিত্ব ছিল তাঁর সহপাঠী ও সহকর্মীদের দৃষ্টিতে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী।
খুব সম্ভব ১৩৯৬ হিজরী/১৯৭৬ ঈসায়ীর শুরুতে তিনি খেড়িহড় মাদরাসায় এসেছিলেন। এবং ১৪০৯ হিজরী/১৯৮৮ ঈসায়ী পর্যন্ত এখানেই দ্বীনী খেদমত করে গেছেন। যেহেতু তিনি শুরু থেকেই মাদরাসার নাযেমে তালিমাত ছিলেন এজন্য মাদরাসার পরিবেশে তিনি নাযেম সাহেব হুযূর উপাধিতেই প্রসিদ্ধ। আবার তাঁর বাড়ি যেহেতু লাকসামের (বর্তমান মনোহরগঞ্জের) কাটুনীপাড়া গ্রামে সেজন্য কাটুনীপাড়ার হুযূর নামেও তিনি প্রসিদ্ধ ছিলেন।
খেড়িহড় মাদরাসায় নাযিমে তালিমাতের দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি সেখানের হিসাবরক্ষকের দায়িত্বও পালন করেছেন। হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পালনে তাঁর যোগ্যতা ও নিপুণতা স্বীকৃত ও খ্যাত ছিল। সেসময়ের নিয়ম ছিল, বড় উস্তাযগণও প্রাথমিক জামাতের বুনিয়াদী দরসগুলোতে খুব আগ্রহের সঙ্গে অংশ নিতেন। তাই একেবারে শৈশবেই আমরা হুযূরের দরস পাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছি। অধম তাঁর কাছে প্রাথমিক কিতাবগুলোর মধ্যে ফারসী কী পহেলী, পান্দেনামা খাকী ও হিদায়াতুন্নাহু পড়েছি। পরে শরহে জামীর বছর তরজমাতু মাআনিল কুরআনিল কারীম এবং জামাতে দুওমে জালালাইন শরীফের প্রথম অংশ পড়েছি। ভাইজান তাঁর কাছে নূরুল আনওয়ার পড়েছেন।
হুযূর সম্পর্কে ভাইজান একবার আমাকে আব্বাজান দামাত বারাকাতুহুম (মাদরাসার মুহতামিম)-এর এই কথা শুনিয়েছেন যে, “তিনি আমাদের ‘হার ফন্নী’ উস্তায”। অর্থাৎ নাযেম ছাহেব হুযূর সকল শাস্ত্রেরই একজন দক্ষ শিক্ষক। আব্বাজান একথা অনেকবার বলেছেন।
তাঁর মেযাজে তাহকীকের দিকটি প্রবল ছিল। ভুল উচ্চারণ, ভুল বানান ও ভুল তথ্যে তিনি খুব নারায হতেন। তাহকীক ও ইতকানের বিষয়ে খুব জোর দিতেন।
দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে তিনি দাওরায়ে হাদীসের আগে এক বা দুই বছর ফুনূন বিষয়েও পড়াশোনা করেছেন। জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যামিতির সঙ্গেও তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল। এছাড়া তিনি অনুমোদিত সার্ভেয়ারও ছিলেন। এ বিষয়ে তাঁর দক্ষতাও স্বীকৃত ছিল।
খেড়িহড়ের সময় একবার দেখেছি তিনি হাটহাজারী মাদরাসা থেকে ‘উকলীদস’ ও এ বিষয়ের আরেকটি কিতাব ধার চেয়ে পাঠিয়েছেন। তাঁর শাগরেদ মাওলানা হুসাইন আহমদ ছাহেব (বর্তমানের নায়েবে মুহাতামিম) এবং মাওলানা হাফেয মুফাযযাল ছাহেব (যিনি খেড়িহড় মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন, গত কয়েক বছর আগে ইন্তিকাল করেছেন) সে সময় খেড়িহড় থেকে পড়াশোনা সমাপ্ত করে হাটহাজারী গিয়েছিলেন। তাঁদের মাধ্যমে ঐ কিতাবগুলো চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। ধারের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর আমি ঐ কিতাবগুলো ডাকযোগে হাটহাজারী পাঠিয়েছিলাম। এখন মনে নেই, সেই কিতাবগুলো জ্যামিতির কোন্ বিষয়ের সমাধানের জন্য তিনি এনেছিলেন। অনেকদিন দেখেছি খুব গভীরভাবে কিতাবগুলো তিনি মুতালাআ করছেন।
কিতাব বোঝা এবং ইবারত বোঝার যোগ্যতা যেন মজবুত হয় সেই বিষয়ে তিনি খুব জোর দিতেন। অসম্পূর্ণ বুঝকে তিনি বলতেন ‘আনছটাক বুঝ’। এই বুঝের ব্যাপারে খুবই অসন্তোষ প্রকাশ করতেন।
‘এক মান ইলম রা দাহ মান আকল বায়াদ’ (এক মণ ইলমের জন্য দশ মণ আকল প্রয়োজন) এই ফারসী প্রবাদ অনেকবার তাঁর মুখে শুনেছি। তিনি চাইতেন, তালিবুল ইলম হবে আকলমন্দ এবং উদ্যমী। ‘লফযে রা তাহকীকে খানী তা শাভী মরদে কামাল’-এর যিন্দা নমুনা ছিলেন তিনি।
একবার তিনি খুবই চমৎকার একটি শে‘র শুনিয়েছিলেন। আমি সেটি লিখছিলাম। তিনি বললেন, কি লিখেছ শোনাও। শুনালাম। দেখলেন, কোথাও একটু ছুটে গেছে। বললেন, এজন্যই বলা হয় লেখার পর আরেকবার মিলিয়ে নেওয়া জরুরি। পরে দেখেছি উলূমুল হাদীসের কিতাবগুলোতে এ বিষয়ে স্বতন্ত্র অধ্যায় রয়েছে। এবং দীর্ঘ আলোচনার অধ্যায়। তো সেই শে‘রটি তিনি মুখস্থ করেছিলেন হামদর্দের কোনো কাগজ বা বিজ্ঞাপন থেকে।
مبتلائے درد کوئی جسم ہو روتی ہے آنکھ+ کس قدر ہمدرد سارے جسم کی ہوتی ہے آنکھ
শরীরে কোথাও ব্যথা হলে পানি চলে আসে চোখে। পুরো দেহের জন্য চোখের সমবেদনা কত!
জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তাঁর ইলম অন্বেষণের পিপাসা অব্যাহত ছিল। শাগরেদদের সঙ্গেও তিনি ফোনে ছোট ছোট ইলমী বিষয়ে কথা বলতেন। যখন শয্যাশায়ী তখনও তাঁর মুতালাআ ও লেখালেখি অব্যাহত ছিল।
একবার খেড়িহড় মাদরাসায় সাধারণ জ্ঞান বা এ জাতীয় কোনো বিষয়ের মজলিশে খুতবার পর তিনি এ কথা বলে আলোচনা শুরু করেছিলেন যে, ‘ইখলাসের সঙ্গে যদি হয় তাহলে আরবীর আলিফে যত সওয়াব ইংরেজির অ তেও সেই পরিমাণ সওয়াব।’ নিঃসন্দেহে এই কথা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ। তবে এখান থেকে অনুভব করা যায় যে, তিনি নিজে যেমন সচেতন ছিলেন তালিবুল ইলমরাও তেমনি সচেতন হোক এটা তিনি কামনা করতেন।
খেড়িহড় মাদরাসার আগে তিনি তাঁর বন্ধু মাওলানা আবদুল মালেক ফাইযী ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম-এর সঙ্গে মোমেনশাহীর (বর্তমান কিশোরগঞ্জের) বায়েযীদপুরে বাহিরবাড়ী নওয়াহাটা মাদরাসায় খেদমতে ছিলেন। সেখানে চার বছর শিক্ষকতা করেছেন।
তারও আগে নিজ এলাকা নাথেরপেটুয়া মাদরাসায় দশ বছর শিক্ষকতার খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন।
তিনি দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেছেন ১৩৮৫ হিজরী/১৯৬৫ ঈসায়ীতে দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা থেকে। সেখানে মুফতী ইযহারুল ইসলাম ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম তাঁর সহপাঠী ছিলেন। মুফতী ছাহেব তাঁর খুব প্রশংসা করেন। একবার আমাকে বলেছেন, আমি তাঁর বিপুল যোগ্যতার কথা স্বীকার করি।
তিনি মাদরাসায় এসেছেন অনেক দেরিতে। প্রায় বিশ একুশ বছর বয়সে। প্রথমে ভর্তি হয়েছেন শর্শদী মাদরাসায়। পরে হাটহাজারীতে। তবে ছোটবেলা কাটুনীপাড়া জামে মসজিদের পাশে হযরত মাওলানা আবদুল ওয়াদূদ রাহ. (উলূপাড়ার হুযূর) যে ইবতিদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেখানেও কিছুদিন পড়েছেন। কিন্তু আফসোস! সেই মাদরাসা একসময় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তাঁর পড়াশোনাও থেমে যায়। পরে ঘটনা এমন হয়েছে যে, কাটুনীপাড়ার এক ওয়ায মাহফিলে আযান শুনে তিনি খুব প্রভাবিত হলেন। লাকসামেরই পোরকরা গ্রামের এক তালিবুল ইলম আযান দিচ্ছিল। আল্লাহর মেহেরবানীতে সেই আযান দিলে এত প্রভাব সৃষ্টি করেছিল যে, তিনি সংকল্প করে নিলেন, আমাকেও ঐ তালিবুল ইলমের মতো মাদরাসায় পড়তে হবে। ঐ তালিবুল ইলম যেহেতু শর্শদী মাদরাসায় পড়তো, তাই তিনিও সেখানে চলে গেলেন। পরিবারের সবাই বিরোধিতা করল। বলল, বুড়ো বয়সে কী পড়বে?! কিন্তু অত্যন্ত ধৈর্য্যরে সঙ্গে তিনি তাঁর পড়াশোনা অব্যাহত রাখলেন। একসময় আল্লাহ তাআলা শেষ পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিলেন।
আমার আব্বাজানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল সেই ছাত্র যামানা থেকে। আব্বাজান যখন দাওরা সমাপ্ত করছেন তখন তিনি সম্ভবত হেদায়া বা জালালাইন পড়ছেন। আব্বাজানের দাওরা হয়েছে ১৩৮২ হিজরীতে। তবে বয়সে দুজনই কাছাকাছি ছিলেন। আল্লাহ তাআলা আব্বাজানের হায়াতে অনেক বরকত দান করুন। আফিয়াত সালামাত ও সিহহত কুওয়াতের সঙ্গে দীর্ঘ হায়াতে তায়্যিবা নসীব করুন। আলহামদু লিল্লাহ, এখন তাঁর বয়স নব্বইয়ের উপরে।
নাযেম ছাহেব রাহ. থেকে অনেক বার একটি ঘটনা শুনেছি, তিনি বাংলাদেশের কোনো বড় এক বুযুর্গের জানাযায় গিয়েছেন। সেখানে ঘটনাক্রমে বিখ্যাত কোনো এক আলেমের কাছে কেউ জিজ্ঞেস করল, আরবীতে স্বরবর্ণ কয়টি এবং কী কী? তিনি উত্তরে বললেন, আরবীতে কোনো স্বরবর্ণ নেই। কে জানে কেন তিনি এমন উত্তর দিয়েছিলেন। তো হযূর বলেন, আমি তাঁকে একান্তে জিজ্ঞেস করলাম, কীভাবে আপনি এই কথা বললেন? এই যে হরফে ইল্লত- ওয়াও আলিফ ইয়া (মদের হালতে) এগুলোই স্বরবর্ণ।
হযূর বলেন, এই ঘটনার পর আমার মনে হলো, সহজভাবে ‘যবত’ ও ‘ইতকানে’র সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার নেসাবের কিতাব তৈরী করা খুব প্রয়োজন।
নিঃসন্দেহে এটি অনেক বড় নেক জযবা। কিন্তু এই কাজ অনেক কঠিন। সেজন্য প্রথমে এ বিষয়ে বিদ্যমান কাজগুলোর প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে। এই ময়দানের ফিকিরমন্দ লোকদের সঙ্গে মুযাকারা করতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়াসায়েল আসবাবের ব্যবস্থাও থাকতে হবে। আর একথা পরিষ্কার যে, হুযূর যেই গ্রামীণ পরিবেশে তাঁর ইলমী জীবন পার করছিলেন সেখানে এইসব বিষয় সহজ ছিল না। তো তিনি তাঁর সীমাবদ্ধ পরিবেশে থেকেই এই নেক জযবা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছিলেন। ফলে মকতব ও প্রাথমিক শ্রেণিগুলোর জন্য তাঁর প্রস্তুতকৃত ও প্রকাশিত কিতাব পনেরোটিরও বেশি। আরো প্রায় বিশটি কিতাব এখনো পাণ্ডুলিপি আকারেই সংরক্ষিত আছে। তাঁর কোনো কোনো কিতাব সরকারি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডেও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১৪১৯ হিজরীর মুহাররম বা সফর থেকে ১৪২০ হিজরী পর্যন্ত তিনি হারামাইন শারীফাইনে অবস্থান করেছেন। সেসময় তিনি তাঁর প্রস্তুতকৃত আরবী জাদীদ কায়দার নোসখা সেখানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করে এসেছেন।
আমি চাচ্ছিলাম আদীব হুযূর দামাত বারাকাতুহুম যিনি বয়সে আমাদের হুযূরের চেয়ে ছোট হলেও তালিম তারবিয়তের ময়দানে মাশাআল্লাহ সুদীর্ঘ কাল যাবৎ শানদার খেদমত আঞ্জাম দিয়ে আসছেন এবং এখন তো আলহামদু লিল্লাহ মকতবের নেসাবের জন্যও তাঁর কয়েকটি কিতাব প্রকাশিত হয়ে গেছে, যেমন বাংলায় বিসমিল্লাহ প্রথম খ-, দ্বিতীয় খ-, কায়েদায় বিসমিল্লাহ, দ্বিতীয় সংস্করণ, এবং আমাদের আল্লাহ। তো আমি চাচ্ছিলাম উভয়ের মধ্যে যোগাযোগ হোক। কিন্তু এই যোগাযোগ হয়েছিল অনেক বিলম্বে, হুযূরের ইনতিকালের কয়েক মাস আগে। তখন নাহব শাস্ত্রের কোনো একটি বিষয়ে দুজনের মধ্যে মুযাকারা হয়েছিল- ফোনে। এটা ১৪৩৮ হিজরীর শাওয়াল বা যিলকদ মাসের কথা। এরপর ১৪৩৯ হিজরীর ১লা সফর (২২ অক্টোবর ২০১৭) হুযূরের ইনতিকাল হয়ে গেল।
নাযেম ছাহেব হুযূরের প্রসঙ্গে আমার স্মৃতি-অভিব্যক্তি অনেক দীর্ঘ, যা এই সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধের বিষয় নয়। ‘ছাবতুল মাশায়েখ’-এর বিষয়। এই প্রবন্ধে উল্লেখকৃত তথ্যগুলোর কিছু তো আমার ব্যক্তিগত, আর কিছু হুযূরের বড় ছাহেবযাদা জনাব আবদুশ শহীদ ছাহেব থেকে, কিছু তাঁর বন্ধু ও সহকর্মী মাওলানা আবদুল মালেক ফাইযী দামাত বারাকাতুহুম থেকে আর কিছু তাঁর সহপাঠী হযরত মাওলানা মুফতি ইযহারুল ইসলাম ছাহেব থেকে নেওয়া। আল্লাহ তাআলা তাঁদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন- আমীন।
হুযূরের নামে অধমের আরেকজন উস্তায আছেন। যিনি বর্তমানে খেড়িহড় মাদরাসার নাযেমে তালিমাত (বরুড়ার হুযূর হযরত মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান ছাহেব)। আল্লাহ তাআলা তাঁকে আফিয়াতের সঙ্গে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন- আমীন।
আফসোস! আমি হুযূরের জানাযায় হাজির হতে পারিনি। কিছুদিন আগে আমাদের আরেকজন আত্মীয় মাইজদী রশীদিয়া ও আলআমীন মাদরাসার সাবেক মুহতামিম হাফেয মাওলানা ফারূক ছাহেবও ইনতিকাল করেছেন। তাঁর জানাযায়ও হাজির হতে পারিনি।
গত রবিবার (২২ সফর) মাগরিবের পর আমার বড় ফুফুরও ইনতিকাল হয়ে গেছে। সেখানেও হাজির হতে পারিনি। এবং মুহতারাম আব্বাজান দামাত বারাকাতুহুমের খেদমতে তাযিয়াতের জন্যও হাজির হতে পারিনি। জানি না এসব কেবল হালাতের মজবূরীর কারণেই নাকি তাতে সুপ্তভাবে ওয়াফাদারীর কমতিও নিহিত আছে। আল্লাহ তাআলা আমাকে ক্ষমা করুন। পরপারের এই মুসাফিরদেরকেও পূর্ণ মাগফিরাত নসীব করুন। তাঁদের কবরে রহমতের বারিধারা বর্ষণ করুন। তাঁদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউসে জায়গা করে দিন। তাঁদের আত্মীয় স্বজনদের সবরে জামীলের তাওফীক দান করুন- আমীন।
اللهم اغفر لهم وارحمهم ووسع مدخلهم، وأكرم نزلهم، إن لله ما أخذ وله ما أعطى، وكل شيء عنده بمقدار، ولا نقول إلا ما يرضي ربنا.
২৫ সফর ১৪৩৯ হিজরী
বুধবার, যোহরের আগে