ইকবালের কাব্যে নারী
[ইকবালের কাব্য সম্পর্কে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। জ্ঞানী সমঝদারগণের মতে, যে কাব্য আসমানী শিক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে এবং যা ধর্ম, শিল্প ও জীবনকে এক মোহনায় মিলিত করে; আল্লামা ইকবালের কাব্য তা-ই। পশ্চিমা চিন্তা ও দর্শনের আগ্রাসন আমাদের সমাজেও ছড়িয়ে দিয়েছে ব্যাপক অবক্ষয়। ইকবালের কাব্য পশ্চিমা দর্শনের বিরুদ্ধে এক শানিত তরবারি। এখানে আছে আদর্শের জ্যোতি ও শিল্পের দ্যুতি। বলাই বাহুল্য, শিল্প ও আদর্শের এই আলোক চক্ষুষ্মান ও হৃদয়বানমাত্রেরই আরাধ্য; সে যে দেশের হোক, যে ভাষার হোক।
এখানে পাঠকের সামনে আছে عورت اقبال كے کلام میں শীর্ষক একটি প্রবন্ধের অনুবাদ, যা আল্লামা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.-এর ‘নুকূশে ইকবাল’ থেকে গৃহীত। এই গ্রন্থটি তাঁর আরবী ভাষায় লিখিত ‘রাওয়াইয়ে ইকবাল’ গ্রন্থের উর্র্দূ তরজমা। তরজমা করেছেন ড. শাম্স তিবরীয খান। عورت اقبال كے کلام میں শীর্ষক প্রবন্ধটি তরজমাকারের সংযোজন।
ইকবালের বাণীতে বাঙ্ময় হয়েছে নারীর মর্যাদা, মাতৃত্বের মাহাত্ম্য এবং জীবন ও সমাজ গঠনে তার গভীর ভূমিকা। সর্বোপরি তাঁর বাণীর ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে আছে উম্মাহর সোনালী অতীতের প্রতি উন্মুখ আবেগ আর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের গভীর প্রত্যাশা। রয়েছে নতুন প্রজন্মের প্রতি সত্যিকারের মমতা। ইকবালের ভাষায় জাতির প্রকৃত সম্পদ সোনা-চাঁদি নয়, জাতির সম্পদ হচ্ছে সুস্থ, মেধাবী ও কর্মঠ তরুণ। আর বলাই বাহুল্য যে, মাতৃত্বের কোলই প্রজন্মের বিদ্যালয়, এই বিদ্যালয় থেকেই সততা ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা গ্রহণ করা হয়!
قوم راسر ما يہ اۓ صاحب نظر + نيست از نقدو قماش وسيم وزر
مال او فرزند ہاۓ تندرست + تردماغ وسخت كوش وچاق وچست
حافظ رمزاخوت مادراں + قوت قرآن وملت مادراں (رموز بيخودی)ي
কাজেই উম্মাহর দরদী নারী ও পুরুষের কাছে তিনি প্রাসঙ্গিক। পাঠক, চলুন তবে ইকবালের কাব্যের ভুবনে : Ñঅনুবাদক]
আধুনিককালে সম্ভবত হালী ও ইকবালই এমন দুই কবি, যাদের কাব্য যৌনতা, অশ্লীলতা ও লক্ষ্যভ্রষ্টতা-মুক্ত। শুধু তাই নয়, নারীর মর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান বহাল করার ক্ষেত্রেও এ দুই কবির অবদান অনস্বীকার্য।
ইকবালের দৃষ্টিতে বর্তমানের নারীসমাজের জন্যও ইসলামের প্রথম যুগের নারীগণই আদর্শ, যাঁরা ছিলেন লজ্জাশীলতা ও চারিত্রিক পবিত্রতায় আজকের চেয়ে অনেক অগ্রসর এবং পূর্ণ শরয়ী পর্দার সাথেই জীবনের নানা অঙ্গনে ছিল তাদের বিচরণ ও অংশগ্রহণ।
১৯১২ সালে তরাবলুসের যুদ্ধে ১ আরব কিশোরী ফাতেমা বিনতে আব্দুল্লাহ যখন গাজীদের পানি পান করাতে গিয়ে শহীদ হয়ে যান তখন তার মাঝে ইকবাল খুঁজে পেয়েছেন প্রথম যুগের নারীদের নমুনা। তাঁর স্মরণে তিনি পাঠ করেন এক গভীর মর্মস্পর্শী মর্ছিয়াÑ
فاطمہ! تو آبروئے امت مرحوم ہے + ذرہ ذرہ تیری مشت خاک کا معصوم ہے
یہ سعادت ، حور صحرائی! تری قسمت میں تھی + غازیان دیں کی سقائی تری قسمت میں تھی
یہ جہاد اللہ کے رستے میں بے تیغ و سپر + ہے جسارت آفریں شوق شہادت کس قدر
یہ کلی بھی اس گلستان خزاں منظر میں تھی + ایسی چنگاری بھی یا رب، اپنی خاکستر میں تھی!
اپنے صحرا میں بہت آہو ابھی پوشیدہ ہیں + بجلیاں برسے ہوئے بادل میں بھی خوابیدہ ہیں!
فاطمہ! گو شبنم افشاں آنکھ تیرے غم میں ہے + نغمۂ عشرت بھی اپنے نالۂ ماتم میں ہے
رقص تیری خاک کا کتنا نشاط انگیز ہے + ذرہ ذرہ زندگی کے سوز سے لبریز ہے
ہے کوئی ہنگامہ تیری تربت خاموش میں + پل رہی ہے ایک قوم تازہ اس آغوش میں
অর্থাৎ ফাতিমা! তুমি এই উম্মাহর গৌরব। তোমার অস্তিত্বের প্রতিটি কণা নিষ্পাপ। আহা! কী সৌভাগ্য! আল্লাহর পথের মুজাহিদদের তুমি পানি পান করিয়েছ! সত্যি অন্তরে যখন জাগে শাহাদতের তামান্না তখনই হতে পারে খোদার পথে এই অস্ত্রবিহীন জিহাদ। আল্লাহ! আল্লাহ! যে জাতিকে ভেবেছিলাম হেমন্তের শুষ্ক বাগান তাতেও ছিল এই ‘ফুল-কলি’! যাদের ভেবেছি বিগত, নির্বাপিত, তাদের মাঝেও এই ‘অগ্নিকণা’! সত্যি আমাদের বনে এখনো আছে ‘হরিণ’ (বীর নারী)। ঝরে যাওয়া মেঘে এখনো আছে ‘বিদ্যুৎ’। ফাতিমা! তোমার স্মরণে আমার চোখে যে অশ্রু তা শুধু বেদনার অশ্রু নয়, আনন্দেরও অশ্রু। জিহাদের ময়দানে তোমার নির্ভীক বিচরণ কতই না প্রত্যাশাব্যঞ্জক! আমার বিশ^াস! তোমাদেরই নীরব সত্তায় আছে প্রচ্ছন্ন এক বিপ্লব, আছে অনাগত ভবিষ্যতের এক জীবন্ত প্রজন্ম!
* * *
শিল্প-সাহিত্যের ঐ সকল কলা-কুশলীর প্রতি তিনি ছিলেন অপ্রসন্ন, যারা নারীর নামের অপব্যবহার করে শিল্পের পবিত্রতা নষ্ট করে এবং একে লক্ষ্যভ্রষ্ট করে।
چشم آدم سے چھپاتے ہیں مقامات بلند + کرتے ہیں روح کو خوابیدہ ، بدن کو بیدار
ہند کے شاعر و صورت گر و افسانہ نویس + آہ ! بیچاروں کے اعصاب پہ عورت ہے سوار
অর্থাৎ (এরা) জীবনের মহৎ লক্ষ্য ভুলিয়ে দেয় এবং অন্তরকে ঘুম পাড়িয়ে দেহকে সজাগ করে। হায়! ভারত উপমহাদেশের কবি, ভাস্কর ও ঔপন্যাসিকদের ¯œায়ু আচ্ছন্ন হয়ে আছে ইন্দ্রিয়-চেতনায়।
মুসলিম নারীর জন্য রঙ্গ-রস ও লাস্য-লীলা তো এক অর্থে কুফরী। তাদের শানিত ব্যক্তিত্ব, বিপ্লবী-চেতনা ও নির্মল দৃষ্টির সম্মুখে নির্বাপিত হয়ে যাবে সকল লোলুপতা।
بہل اے دختر ک ایں دلبری ہا + مسلماں رانہ زیبد کافری ہا
منہ دل بر جمال غازہ برور + بیا موز از نگہ غارت گری ہا
অর্থাৎ বাদ দাও-বেটি! এই সকল রঙ্গ-রস। এ অনাচার তো মুসলিমকে সাজে না। প্রসাধন-সৌন্দর্যের চর্চা নয়, তুমি রপ্ত করবে দৃষ্টি দ্বারা বিপ্লব সাধনের বিদ্যা।
* * *
ইকবাল বলেন, জীবন ও সমাজ-গঠনেও থাকবে মুসলিম নারীর গভীর ভূমিকা। পর্দার ভেতরে থেকেও আপন কর্ম ও প্রতিভা দ্বারা তিনি ভূমিকা রাখবেন জীবন ও সমাজ গঠনে । যেমন আল্লাহ তাআলা রয়েছেন পবিত্রতার পর্দায়, কিন্তু সৃষ্টি জগতের প্রতিটি বস্তু তাঁরই অতুলনীয় গুণের সাক্ষর।
ضمیر عصر حاضر بے نقاب است + کشادش درنمود رنگ آب است
جہاں تابی ز نور حق بیا موز + کہ اوباصد تجلی در حجاب است
অর্থাৎ এই যুগ রূপ-সৌন্দর্যের মাঝেই আনন্দ খোঁজে। কিন্তু মুসলমানের কর্তব্য, ¯্রষ্টা থেকে শিক্ষা নেওয়া। পৃথিবীতে তাঁর সত্তা দৃষ্টির আড়ালে, কিন্তু আপন সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি প্রকাশিত।
ইকবাল মাতৃজাতিকেই মনে করেন পৃথিবীর কর্ম-চাঞ্চল্যের উৎস। তাঁর মতে, মায়েরাই হচ্ছেন সকল সম্ভাবনার আমানতদার, সকল বিপ্লবী বৈশিষ্ট্যের উৎস। যে সম্প্রদায় মাতৃজাতির মূল্য বোঝে না তাদের জীবন স্থিতিশীল হয় না।
جہاں را محکمی از امہات است + نہادِ شاں امین ممکنات است
اگر ایں نکتہ را قومے نداند + نظام کاروبارش بے ثبات است
ইকবাল নিজের কীর্তি ও প্রতিভাকে মনে করেন তাঁর মায়ের নেকনজর। সন্তানের বিশ^াস, আচার-আচরণ ও স্বভাব-চরিত্র শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে গঠিত হয় না, তা গঠিত হয় মায়ের কোলে।
مرا داد ایں خرد پرور جنونے + نگاہ مادر پاک اندرونے
ز مکتب چشم و دل نتواں گرفتن + کہ مکتب نیست جز سحر و فسونے
অর্থাৎ আমার পবিত্রাত্মা মায়ের তালীম-তরবিয়ত আমাকে দান করেছে ঐ ঈমানী চেতনা, যা সকল জ্ঞানের জননী। এখনের বিদ্যালয় তো চেতনা ও বিশ^াস নয়, শুধু তন্ত্র ও মন্ত্রই বিতরণ করে।
* * *
জাতি-গোষ্ঠীর বিপ্লবী ইতিহাস ও তার অতীত-বর্তমানকে তিনি মনে করেন মায়েদের অবদান। তিনি বলেন, মায়েদের ললাটেই লিখিত থাকে জাতির ভাগ্য-লিপি।
خنک آں ملتے کز وارد اتش + قیامت ہا بہ بیند کائناتش
چہ پیش آیدچہ پیش افتاد اورا+ تواں دید از جبینِ امہاتش
মিল্লাতের নারীসমাজের প্রতি তার আহ্বান, তারা যেন নজর দেন জাতির ভাগ্য-নির্মাণে এবং জাতির বেদনার সন্ধ্যাকে পরিণত করেন বসন্তের ভোরে। এই বিপ্লব ঘটতে পারে ঘরে কুরআনের ফলগুধারা প্রবাহিত করার দ্বারা; যেমন ওমর-ভগ্নির কুরআন পাঠ বদলে দিয়েছিল ওমর (রা.)-এর তাকদীর। আর তাঁর কথা ও ব্যথা বিগলিত করেছিল ওমর (রা.)-এর হৃদয়।
زشام مابروں آور سحر را + بہ قرآں باز خواں اہل نظر را
تو می دانی کہ سوز قرأت تو + دگرگوں کرد تقدیر عمرؓ را
ইকবাল মনে করেন, ঘরে ও পরিবারে মায়ের অবদানই মৌলিক। তাঁর মতে, পরিবারে মাতৃত্বের প্রেরণাই মূল। এ থেকেই ফুলে-ফলে সুশোভিত হয় মানব-বাগান । বাইরের জীবনে যেমন পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব, ঘরের ভেতর সন্তানের জীবন গঠনে মা-ই প্রধান। তাঁরই কোলে সন্তানের সৃজন-বর্ধন। মায়ের কোলই তার প্রথম বিদ্যালয়। মায়ের চেতনা ও আভিজাত্যই প্রতিফলিত হয় সন্তানের উপর। আর এভাবেই গড়ে ওঠে এক উত্তম ও উন্নত জাতি।
وہ فیضان نظر تھا یا کہ مکتب کی کرامت تھی + سکھائے کس نے اسماعیلؑ کو آداب فرزندی
* * *
ইকবালের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা ও বিশেষত্ব তার মাতৃত্বে। যে জাতি মাতৃত্বের মর্যাদা রক্ষা করে না, তার ভবিষ্যত হয়ে পড়ে ভঙ্গুর ও নড়বড়ে। ঘর শান্তি ও স্বস্তিহীন, পরিবারের সদস্যরা একে অপরের প্রতি আস্থাহীন, ছোট-বড়র পার্থক্য লুপ্ত এবং উন্নত চেতনা ও উত্তম আচার-ব্যবহার বিলুপ্ত।
ইকবাল মনে করেন, পাশ্চাত্যের চারিত্রিক অবক্ষয়ের জন্য দায়ী ঐ জাতির মাতৃত্বের মর্যাদা ও চারিত্রিক পবিত্রতার বিলুপ্তি। তিনি তথাকথিত নারী-স্বাধীনতার পক্ষে নন। কারণ বাস্তবে তা হচ্ছে নারীর বন্দিত্ব। এর দ্বারা নারীর বেদনার উপশম হবে না; বরং তা হয়ে উঠবে আরো তীব্র, আরো অসহনীয়। অন্যদিকে মানবজাতি বঞ্চিত হবে মাতৃত্বের মহা সম্পদ থেকে। এ কারণে তিনি মনে করেন, যে শিক্ষা নারীর নারীত্বকে ধ্বংস করে তা শিক্ষা নয়, মৃত্যু। প্রজন্মের মৃত্যু; এবং চেতনা ও বিশ^াসের অপমৃত্যু। পশ্চিমা সভ্যতা পৃথিবীকে এই অপমৃত্যুরই দাওয়াত দিচ্ছে।
تہذیب فرنگی ہے اگر مرگِ امومت + ہے حضرتِ انساں کے لیے اس کا ثمر موت
جس علم کی تاثیر سے زن ہوتی ہے نا زن + کہتے ہیں اسی علم کو ارباب نظر موت
بیگانہ رہے دیں سے اگر مدرسۂ زن + ہے عشق و محبت کے لیے علم و ہنر موت
ইকবাল মনে করেন, দ্বীনী চেতনা ও বিশ^াস-বঞ্চিত নারীর রূপ-সৌন্দর্য হয় ফিতনার প্রসূতি। সে বঞ্চিত থাকে আদর্শ মাতৃত্বের সম্পদ থেকে। ফলে জাতি তার কাছ থেকে লাভ করে না একটিও সুযোগ্য সন্তান। হায়! আমাদের বাগানে এই ‘ফুল’ যদি একটিও না ফুটত! মিল্লাতের আস্তীন যদি এই কালো দাগ থেকে সম্পূর্ণ পবিত্রই থাকত!
علم اوبارِ امومت برنتافت + برسرِ شاخش یکے اختر نتافت
ایں گل ازبستانِ مانا رستہ بہ + داغش از دامانِ ملت شستہ بہ
* * *
ইকবালের দৃষ্টিতে নারী-স্বাধীনতা ও পুরুষ-স্বাধীনতা দুই-ই অর্থহীন। এখানে কেউ স্বাধীন নয়। নারী-পুরুষের সম্পর্কে প্রয়োজন পরস্পরের প্রতি ত্যাগ ও সহযোগিতা। জীবনের দায়-দায়িত্ব পালনে এবং জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা একে অপরের পরিপূরক। তাদের পরস্পরের দ্বন্দ্ব ও অসহযোগিতা জীবনকে গতিহীন ও নিষ্প্রভ করবে এবং মানবজাতির সমূহ ক্ষতি সাধন করবে।
مرد و زن وابستۂ یک دیگر ند + کائنات شوق را صورت گرند
زن نگہ دارندۂ نارِ حیات + فطرت او لوحِ اسرارِ حیات
آتش مارا بجانِ خود زند + جوہر او خاک را آدم کند
در ضمیرش ممکناتِ زندگی + ازتب و تابش ثباتِ زندگی
ارجِ ما از ارجمندی ہائے او + باہمہ از نقشبندی ہائے او
ইকবাল বলেন, নারীর মর্যাদা সাব্যস্ত হওয়ার জন্য তাকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শিতার প্রমাণ দিতে হবে না, তার মাতৃত্বই তার মর্যাদার জন্যে যথেষ্ট। পৃথিবীর বিখ্যাত সব জ্ঞানী মায়ের কোলেই প্রতিপালিত। কে আছে এই অনুগ্রহ অস্বীকার করতে পারে?
وجود زن سے ہے تصویر کائنات میں رنگ + اسی کے ساز سے ہے زندگی کا سوزِ دروں
شرف میں بڑھ کے ثریا سے مشتِ خاک اس کی + کہ ہر شرف ہے اسی درج کا درِمکنوں
مکالمات فلاطون نہ لکھ سکی لیکن+ اسی کے شعلے سے ٹوٹا شرارِ افلاطون!
অর্থাৎ নারীর কারণেই এই মানববাগান ফুলে-ফলে বর্ণিল। আর তার সঙ্গই পুরুষকে দান করে কর্ম ও বিপ্লবের প্রেরণা। মর্যাদায়-আভিজাত্যে তার স্থান সপ্তর্ষিম-লেরও ঊর্ধ্বে এবং ঝিনুকের কোলে মুক্তার সৃজন-বর্ধনের মতো জগতের সকল প্রতিভা ও আভিজাত্য তার কোলেই প্রতিপালিত। প্লেটোর দর্শন তার কলমে লিপিবদ্ধ না হলেও খোদ প্লেটো এই অগ্নিরই এক স্ফূলিঙ্গমাত্র।
* * *
তথাকথিত নারী-স্বাধীনতা নারী-পুরুষের সম্পর্ক যে জায়গায় নিয়ে গেছে এবং এর যে কুফল প্রকাশিত হয়েছে, ইকবালের দৃষ্টিতে এর দায়-দায়িত্ব নারীর নয়, পশ্চিমা সংস্কৃতির।
‘মর্দে ফেরাংগ’ (ইউরোপীয় পুরুষ) শিরোনামে তিনি বলেনÑ
ہزار بار حکیموں نے اس کو سلجھایا+ مگر یہ مسئلہ زن رہا وہیں کا وہیں
قصور زن کا نہیں ہے کچھ اس خرابی میں+ گواہ اس کی شرافت پر ہیں مہ و پرویں
فساد کا ہے فرنگی معاشرت میں ظہور+ کہ مرد سادہ ہے بیچارہ زن شناس نہیں
অর্থাৎ পশ্চিমা সমাজের অবক্ষয়-অস্থিরতার বড় কারণ হচ্ছে, তারা এখনো এই প্রশ্নের সুরাহা করতে পারেনি যে, সমাজে নারীর প্রকৃত অবস্থান কী। ইউরোপের দার্শনিকেরা এ প্রশ্নে বহু-মতামত দিলেও সমস্যার প্রকৃত সমাধান সামনে আসেনি। সমাজের অবক্ষয়-অস্থিরতার জন্য নারীর সত্তা দায়ী নয়, তার আভিজাত্যের সাক্ষী তো এই দুনিয়া জাহান। আসল কথা হচ্ছে, ইউরোপের পুরুষ এখনো নারীকে চিনতেই পারেনি। ফিতরত নারীকে অর্পণ করেছে মাতৃত্বের ভার। আর এরই উপযোগী করে তৈরি হয়েছে তার দেহ-মন। ইউরোপ প্রকৃতির নিয়ম ও নারীর প্রকৃতি বিস্মৃত হয়ে তাকে পরিণত করেছে পণ্যে ও বিনোদনের সামগ্রীতে। ঐ সমাজের অবক্ষয়-অস্থিরতার সূত্র এখানেই।
کوئی پوچھے حکیم یورپ سے + ہندو یونا ہیں جس کا حلقہ بگوش
کیا یہی ہے معاشرت کا کمال + مرد بے کار وزن تہی آغوش
অর্থাৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষার কারণে পূর্ব-পশ্চিমের জাতিগোষ্ঠী যদিও পশ্চিমের শীর্ষ্যত্ব গ্রহণ করেছে, কিন্তু পশ্চিম মানবজাতিকে দিতে পারেনি যথার্থ জীবনব্যবস্থা ও সমাজ-ব্যবস্থা। ইকবালের প্রশ্ন, এই কি প্রগতি যে, সমাজে পুরুষ কর্মহীন আর নারী কোল-হারা?!
* * *
পর্দার বিধানকে সমর্থন করে ইকবাল বলেন, পর্দা নারীর প্রতিবন্ধক নয়। পর্দায় থেকেও নারীর জন্য সম্ভব, সকল বৈধ কর্ম-তৎপরতায় অংশ নেয়া এবং দায়-দায়িত্ব পালন করা। দেখুন, ¯্রষ্টা তো সবার দৃষ্টির অগোচরে, কিন্তু জলে-স্থলে অন্তরীক্ষে তাঁরই গুণের প্রকাশ।
ইকবাল নারীকে সম্বোধন করে বলেনÑ
جہاں تابی زنور حق بیاموز + کہ اوبا صد تجلی درحجاب است
অর্থাৎ পর্দায় থেকেও জীবন ও সমাজ গঠনে অবদান রাখা যায়। আল্লাহর নূর থেকে এ শিক্ষায়ই গ্রহণ করা কাম্য। সৃষ্টি জগতের সব কিছু তাঁরই সৃষ্টি, কিন্তু তিনি দৃষ্টির অগোচরে।
পর্দা-বিরোধীদের তিনি এই জবাব দিয়েছেন যে, পর্দা তো দেহের আবরণ মাত্র। নারীর কর্ম ও প্রতিভার বিকাশে কেন তা বাধা হবে? আসলে চেহারার আবরণে কিছুই যায় আসে না, ব্যক্তিত্ব ও সম্ভাবনার উপর যেন আবরণ না পড়ে।
بہت رنگ بدلے سپہر بریں نے + خدایا یہ دنیا جہاں تھی وہیں ہے
تفاوت نہ دیکھا زن وشو میں میں نے + وہ خلوت نشیں ہے، یہ جلوت نشیں ہے
ابھی تک ہے پردے میں اولادِ آدم + کسی کی خودی آشکارا نہیں ہے
অর্থাৎ এই পৃথিবী অনেক বিপ্লব দেখেছে, কিন্তু হায়! জীবন ও সমাজ যেখানে ছিল সেখানেই আছে। নারী-পুরুষে কোনো প্রভেদ তো দেখা যাচ্ছে না, যদিও এ পর্দার অন্তরালে অবস্থান করে, আর ও জনসমক্ষে অবস্থান করে। কারণ, পুরুষ ও নারী কারো সম্ভাবনাই এখনো প্রকাশিত নয়। চেহারার পর্দা নয়, মানবীয় প্রতিভা ও গুণাবলীর পর্দাই হচ্ছে নিন্দনীয় ও বর্জনীয়। এ পর্দারই অপসারণ কাম্য। তবে এ পর্দা ইসলামের নয়, পাশ্চাত্যের বৈশিষ্ট্য।
* * *
‘খালওয়াত’ শীর্ষক ইকবালের একটি কবিতা আছে। যার সারকথা হচ্ছে, পর্দার মাধ্যমে নারী একনিষ্ঠ হয়ে খান্দানের তরবিয়তে নিয়োজিত হতে পারে এবং নিজের সম্ভাবনাসমূহ উপলব্ধি করতে পারে। সমাজের ক্ষয় ও অবক্ষয় থেকে নিরাপদ হয়ে গৃহ-ব্যবস্থাপনা ও প্রজন্ম-বিনির্মাণে সক্ষম হতে পারে। নির্ঝঞ্ঝাট গৃহকোণে তার সুযোগ ঘটে জীবন ও সমাজের বিচিত্র বিষয়ে চিন্তা-ভাবনার। আর এভাবেই সে নিজের ও পরের জন্য উত্তম কীর্তি সম্পাদনে সক্ষম হয়।
رسوا کیا اس دور کو جلوت کی ہوس نے + روشن ہے نگہ آئینہ دل ہے مکدر
بڑھ جاتا ہے جب ذوق نظر اپنی حدوں سے + ہوجاتے ہیں افکار پراگندہ و ابتر
آغوش صدف جس کے نصیبوں میں نہیں ہے + وہ قطرۂ نیساں کبھی بنتا نہیں گوہر
خلوت میں خودی ہوتی ہے خود گیر ولیکن + خلوت نہیں اب دیر و حرم میں بھی میسر
অর্থাৎ প্রদর্শন-প্রবণতা এই জগতকে বরবাদ করেছে। এখন দৃষ্টি চকচকে, কিন্ত অন্তর ধুলিমলিন। দর্শনের লালসা যখন অনিয়ন্ত্রিত হয় তখন চিন্তা-ভাবনা এলোমেলো হয়ে যায়, আত্মগঠন ও জাতিগঠন অসম্ভব হয়ে পড়ে। কারণ, সৃজন-গঠনে প্রয়োজন নির্জনতা ও নিমগ্নতা। ঐ বারি-বিন্দুই মুক্তায় পরিণত হয়, যে লাভ করে ঝিনুকের কোলের নির্জনতা। আফসোস! এখন তো ‘উপাসনালয় ও ইবাদতখানায়’ নির্জনতা নেই। রূহ ও কলবের তরবিয়ত থেকে গাফিল হয়ে এখন নারী-পুরুষ মস্ত আত্মপ্রচারে ও আত্মপ্রদর্শনে।
* * *
এখানে একটি সামাজিক প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীর সকল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এক পক্ষ প্রাধান্য লাভ করে থাকে। নারী-পুরুষের সম্পর্কে নেতৃত্ব কার? নারী ও পুরুষ একে অপরের মুখাপেক্ষী ও পরিপূরক হলেও পুরুষ কিছু অগ্রগণ্যতা-বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এই অগ্রগণ্যতা শ্রেণি-বৈষম্যভিত্তিক নয়, নারীর মনোদৈহিক গঠন ও তার কল্যাণ ও অধিকার রক্ষাভিত্তিক। কাজেই নেতৃত্ব যেমন নারী-পুরুষ উভয়ের হাতে ন্যস্ত করা যায় না, তেমনি যায় না শুধু নারীর হাতেও।
ইকবাল পশ্চিমের তথাকথিত নারী-স্বাধীনতার কোনো পরোয়া করেননি বরং ইসলামী শিক্ষার পক্ষে জোরালো ভাষায় বলেছেন। ‘আওরত কী হেফাযত’ (নারীর সুরক্ষা) শিরোনামে তিনি বলেনÑ
اک زندہ حقیقت مرے سینے میں ہے مستور + کیا سمجھے گا وہ جس کی رگوں میں ہے لہو سرد!
نے پردہ نہ تعلیم، نئی ہو کہ پرانی + نسوانیت زن کا نگہباں ہے فقط مرد
جس قوم نے اس زندہ حقیقت کو نہ پایا + اس قوم کا خورشید بہت جلد ہوا زرد
অর্থাৎ সমাজজীবনের এক বাস্তবসম্মত দর্শন আমার বক্ষে রয়েছে। কিন্তু পৌরুষদীপ্ত চেতনা ছাড়া তা উপলব্ধি করা কঠিন। আসলে পর্দা বলুন কিংবা শিক্ষা, সেটা আধুনিক শিক্ষা হোক কিংবা প্রাচীন শিক্ষা, নারীর নারীত্বের (মাতৃত্বের) বিকাশ ও সুরক্ষা এসবের কোনোটা দ্বারাই নয়, এটা হয় একমাত্র পুরুষের দ্বারা। কাজেই নারী-পুরুষের সম্পর্কে পুরুষই কর্তা। যে জাতি নারী-স্বাধীনতার নামে নারীর উপরই তার নারীত্বরক্ষার ভার অর্পণ করেছে ঐ সমাজে পতন-অবক্ষয়ের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। কাজেই এদের পতন অবশ্যম্ভাবী।
কবিতাটি মূলত ঐ হাদীসের তরজুমানী, যাতে বলা হয়েছেÑ
لَنْ يفْلِحَ قَوْمٌ وَلّوْا أَمْرَهُمُ امْرَأَةً
ঐ কওম কখনো সফল হবে না যে নারীর উপর তাদের চালনার ভার অর্পণ করেছে। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৪৪২৫
جوہر مرد عیاں ہوتا ہے بے منتِ غیر + غیر کے ہاتھ میں ہے جوہر عورت کی نمود
راز ہے اس کے تب غم کا یہی نکتہ شوق + آتشیں لذتِ تخلیق سے ہے اس کا وجود
کھلتے جاتے ہیں اسی آگ سے اسرار حیات + گرم اسی آگ سے ہے معرکۂ بود و نبود
میں بھی مظلومی نسواں سے ہوں غمناک بہت + نہیں ممکن مگر اس عقدہ مشکل کی کشود
অর্থাৎ পুরুষ তার শৌর্য-বীর্য প্রকাশে ও দায়িত্ব পালনে অন্যের মুখাপেক্ষী নয়, কিন্তু নারী তার নারীত্বের (মাতৃত্বের) বিকাশে পুরুষের মুখাপেক্ষী। আর একারণেই পুরুষের প্রতি তার স্বভাবজাত আকর্ষণ এবং ‘সৃষ্টি’র আগুনে উল্লাস তার ব্যক্তিত্বের অনুষঙ্গ। এই উল্লাসেই নিহিত তার জীবন ও সত্তার তাৎপর্য এবং এরই বিকিরণে দুনিয়া-জাহান ফুলে ফলে সুশোভিত। প্রকৃতির এই নিয়মে নারী পুরুষের মুখাপেক্ষী।...
* * *
ইকবাল ঐ হাদীসেরও উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যাতে জগতের শ্রেষ্ঠ মানুষ নারীকে উল্লেখ করেছেন সুগন্ধি ও সালাতের সাথে এবং ঐ হাদীসেরও, যাতে বলা হয়েছে, জান্নাত মায়ের পায়ের নীচে।
آنکہ نازد بروجودش کائنات + ذکر او فرمود باطیب و صلوٰۃ
گفت آں مقصودً حرف کن فکاں + زیر پائے امہات آمد جناں
তিনি মাতৃত্বকে ‘রহমত’ আখ্যা দিয়েছেন এবং মাতৃ-মমতাকে তুলনা করেছেন পয়গম্বরের মমতার সাথে। কারণ, জাতি গঠনে মাতৃত্বও এক প্রভাবক অনুষঙ্গ এবং এর মাধ্যমে এক মিল্লাতের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
نیک اگر بینی امومت رحمت ست + زانکہ اور ابا نبوت نسبت ست
شفقتِ او شفقت پیغمبراست + سیرت اقوام را صورت گر است
از امومت پختہ تر تعمیر ما + در خط سیمائے او تقدیر ما
আর একারণেই উম্মাহর নারী-জাতির প্রতি ইকবালের নিবেদনÑ
آب بند نخل جمعیت توئی + حافظِ سرمایۂ ملت توئی
ہوشیار از دست برد روزگار + گیر فرزندانِ خودرا درکنار
অর্থাৎ উম্মাহর নারীগণই ইকবালের প্রত্যাশার জায়গা। এই ফিতনার যুগে তারাই পারেন জাতির সম্পদকে নিরাপদ রাখতে এবং প্রজন্মের মাঝে ইসলামী ভ্রাতৃত্বের চেতনা-বিস্তারের মাধ্যমে উম্মাহর ঐক্যের ভূমি সুজলা-সুফলা রাখতে। তারা যেন যুগের অবক্ষয় সম্পর্কে সচেতন হন এবং আপন সন্তানকে সঠিক তালীম-তরবিয়তের দ্বারা যমানার রাহাজানি থেকে আগলে রাখেন।
* * *
আল্লামা ইকবাল হযরত ফাতেমা যাহরা রা.-কে উম্মাহর মায়েদের আদর্শ মনে করেন। তিনি কীভাবে চাক্কি পেষার সাথে কুরআন তিলাওয়াতে মশগুল থাকতেন এবং গৃহস্থালী কাজে পানির মশকও অম্লান বদনে বহন করতেন।
مزرع تسلیم را حاصل بتولؓ + مادراں را اسوہ کامل بتولؓ
آن ادب پروردۂ صبر و رضا + آسیا گردان و لب قرآں سرا
তিনি মনে করেন, স্বভাব-চরিত্রের এই দৃঢ়তা ও পরিপক্কতার কারণেই হযরত হাসানাইন তাঁর কোলে জন্মলাভ করেছেন, যাদের একজন এই শ্রেষ্ঠ উম্মাহর একতা রক্ষাকারী, যিনি লড়াই ও শত্রুতার আগুন নেভানোর জন্য ত্যাগ করেছেন ‘রাজমুকুট’। আর অপরজন দুনিয়ার আযাদীপ্রিয়দের নৈতিক শক্তি, যার কাছে আহলে হক্ব পেয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামের শিক্ষা। বস্তুত সন্তানের জীবন গঠিত হয় মায়েদের কোলে, সত্যনিষ্ঠা ও পবিত্রতা অর্জিত হয় মায়েদের কোলে।
آں یکے شمعِ شبستانِ حرم + حافظِ جمیعتِ خیرالامؐم
تانشیند آتشِ پیکار و کیں + پشتِ پازد برسرِ تاج و نگیں
واں دگر مولائے ابرارِ جہاں + قوّتِ بازوئے احرارِ جہاں
در نوائے زندگی سوز از حسیؓن + اہلِ حق حریت آموز از حسینؓ
سیرتِ فرزندِ ہا از امّہات + جوہرِ صدق و صفا از امّہات
মুসলিম নারীদের প্রতি তাঁর আহ্বানÑ
فطرت تو جذبہ ہادارد بلند + چشم ہوش از اسوۂ زہراؓ بلند
تا حسینےؓ شاخ تو بار آورد + موسم پیشیں بہ گلزار آورد!
ইকবাল মনে করেন, নারীর সত্তায় উন্মুখ রয়েছে উন্নত প্রেরণাসমূহ, তবে তার সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন উত্তম নমুনা। ইকবাল হযরত ফাতিমা রা.-কে মাতৃজাতির আদর্শ মনে করেন এবং তাঁর জীবন ও বৈশিষ্ট্যকে গভীরভাবে ‘অধ্যয়ন’-এর পরামর্শ দেন। যাতে এযুগের মায়েদের কোলেও হযরত হুসাইন রা.-এর মতো সন্তান জন্ম লাভ করে। আর এরই মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ তার হারানো অতীত ফিরে পেতে পারে।
তিনি মুসলিম নারীদের উদ্দেশে বলেনÑ
اگرپندے ز درویشے پذیری + ہزار امت بمیرد تو نہ میری
بتولے باش وپنہاں شوازیں عصر + کہ در آغوش شبیرے بگیری
অর্থাৎ এই দরবেশের একটি উপদেশ যদি গ্রহণ করতে পারেন তাহলে জেনে রাখুন, হাজারো জাতির মৃত্যুর পরও আপনি অমর থাকবেন। তা এই যে, এই যুগের দৃষ্টির সমুখ থেকে আত্মগোপন করুন, যেন আপনারও কোল আলো করে এক খোদার শার্দুল।
[হযরত মাওলানা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদাবী রাহ.-এর ‘নুকূশে ইকবাল’ থেকে গৃহীত ও অনূদিত।
অনুবাদ ও সংযোজন : মুহাম্মাদ যাকারিয়া আবদুল্লাহ]