Shaban-Ramadan 1438   ||   May-June 2017

কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতি

Mawlana Muhammad Zakaria Abdullah

কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতির বিষয়টি একটি সম্পূর্ণ ইন্তিযামী ও ব্যবস্থাপনাগত বিষয়; এর ভালো-মন্দ বিজ্ঞ দায়িত্বশীলেরাই ভালো বুঝবেন। এতে ইতিবাচক বা আশাবাদের কী কী বিষয় আছে আর নেতিবাচক বা আশঙ্কার কী কী ব্যাপার আছে সেগুলোও এই নিবন্ধের আলোচ্য বিষয় নয়। এই সব নিয়ে বিস্তর আলোচনা ছিল, আছে এবং থাকবে। তবে ভবিষ্যতই বলে দিবে কোন অনুমানটা বাস্তব আর কোনটা অবাস্তব।

একজন ক্ষুদ্র তালিবে ইলম হিসেবে বন্ধুদের সাথে শুধু একটি কথার মুযাকারা করতে চাই। নতুন কোনো কথা নয়, অনেক পুরোনো কথা, কিন্তু শঙ্কা জাগে, স্বীকৃতির ডামাডোলে এ বিষয়েও না কারো বিস্মৃতি ঘটে যায়।

আমরা কারা? কেন আমাদের মাদরাসায় আসা? আর মাদরাসার নেসাব ও নেযামের মধ্য দিয়ে আমরা আসলে কীসের অন্বেষী?

আমরা তো কুরআন-সুন্নাহর তালিবে ইলম। ‘তাফাককুহ ফিদ্দীন’ আমাদের ইলমী সফরের মানযিল। ‘ইলম বিল্লাহ’ ও ‘ইলম বিআমরিল্লাহ’ আমাদের বিষয়বস্তু। আর আমাদের মানসিব? আমাদের মানসিব  -আল্লাহ তাআলাই নুসরতকারী- ‘আল মুয়াক্কিউনা আন রাব্বিল আলামীন’! জী, আল্লাহর পক্ষ হতে সাক্ষরকারী!

বন্ধুগণ! এই যে কথাগুলো বলা হল এ শুধু কিছু শব্দ-বাক্যের ঝংকার বাজাবার জন্য নয়, শুধু কিছু মধুর বাণী ও ধ্বনি শোনাবার জন্য নয়, কিংবা -আল্লাহ হিফাযত করুন- অবুঝ ‘পিনদার’১ তৈরি বা কল্পনার আকাশ-কুসুম রচনার জন্যও নয়; এ এক বাস্তবতার বৃত্তান্ত, যার বাস্তব উদাহরণ ছিলেন আমাদের সালাফ ও পূর্বসূরি। তাঁরা সত্যি সত্যিই তাফাককুহ ফিদ্দীনের অধিকারী ছিলেন, ইলম বিল্লাহ ও ইলম বিআমরিল্লাহর সত্যিকারের মাহির ছিলেন আর সত্যি সত্যিই তাঁরা ছিলেন ‘আলমুয়াক্কিউনা আন রাব্বিল আলামীন’।

জী না! আমাদের সালাফের কোনো রাজপ্রাসাদ ছিল না, রাজ-সিংহাসনও ছিল না, হিরে-জহরতখচিত দোয়াত-কলম ছিল না, কিন্তু তাঁরা যা লিখতেন তা মুছে ফেলার ক্ষমতাও পৃথিবীর কারো ছিল না।

কারণ, তাঁরা লিখেছেন আল্লাহর শাশ্বত বাণী ও বিধান, লিখেছেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চির-নবীন হাদীস ও সুন্নাহ। লিখেছেন দ্বীন ও শরীয়তের অটল ফয়সালা।

এঁদের মাধ্যমেই আল্লাহ তাঁর দ্বীন সংরক্ষণ করেছেন। এরা ‘নার’ বা ‘নূরে’র তৈরি জিন্ন বা ফিরিশতা ছিলেন না। ছিলেন মাটির মানুষ, রক্ত-মাংসের মানব, কিন্তু এঁদের সীনায় আল্লাহ যা দান করেছিলেন এবং এঁদের যবান ও কলম থেকে যা উৎসারিত করেছিলেন তা ছিল ইলমের নূর এবং নূরের ইলম।

বন্ধু! যুগে যুগে বহু ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে, বহু সাম্রাজ্য তছনছ হয়ে গেছে, এক জনপদ বিলুপ্ত হয়ে আরেক জনপদ গড়ে উঠেছে, এক সভ্যতার স্থান অন্য সভ্যতা দখল করেছে, কিন্তু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে যে দ্বীন ও শরীয়ত আল্লাহ দান করেছেন তা বদলায়নি, বিলুপ্ত হয়নি, বিকৃতও হয়নি। এই অটল, অমোঘ, চূড়ান্ত দ্বীনকে বহন করবার জন্য আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে নির্বাচন করেছেন এমন এক মানবম-লী, যাঁরা নিষ্ঠার সাথে এই আমানত বহন করেছেন। আমরা অক্ষম, দুর্বল, তবুও ঐ জামাতে শামিল হওয়ারই তো আশা রাখি।

এই জামাতের কর্ম ও বৈশিষ্ট্য কী? তাঁরা কি শুধু স্মৃতি ও হৃদয়েই এই দ্বীনকে ধারণ করেছেন? না। তাদের সীনা যেমন আলোকিত ছিল এই ইলমের আলোতে তাদের বাস্তব কর্ম ও জীবনও উদ্ভাসিত ছিল এই দীন ও শরীয়তের জ্যোতিতে। এরপর তারা এই বিধান অনুসারে পরিচালিত করেছেন আল্লাহর বান্দাদের। রাজা-প্রজা, আমীর-ফকীর, ধনী-গরীব, সকলকে তাঁরা ডেকেছেন এই দ্বীনের দিকে, শিখিয়েছেন এই দ্বীনের বিধান একটি একটি করে, আর নিজ নিজ দায়িত্ব ও সক্ষমতার গণ্ডির ভেতরে চর্চা করিয়েছেন এই দ্বীনের আদেশ-নিষেধ। যারা এই পথে অগ্রসর হয়েছে তাদের তাঁরা উৎসাহ জুগিয়েছেন, যারা ভুল করেছে তাদের শুধরে দিয়েছেন। এঁরাই সত্য ও ন্যায়ের স্বীকৃতি দিয়েছেন আর অসত্য ও অন্যায়কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। জীবন ও সম্মানের ভয়, অর্থ ও বিত্তের প্রলোভন, পদ ও পদবীর হাতছানি কোনো কিছুই তাঁদের এই পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি।

এঁরাই সমাজের স্বীকৃতি দানকারী জামাত। এঁরা দিয়েছেন সত্যের স্বীকৃতি ও সত্য পথের স্বীকৃতি এবং এঁরাই দিয়েছেন সত্যপন্থীর সনদ। যাকে ও যা কিছুকে এঁরা স্বীকৃতি দিয়েছেন তা স্বীকৃত হয়েছে আর যাকে ও যা কিছুকে এঁরা প্রত্যাখ্যান করেছেন তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এঁদের ফায়সালাতেই যুগে যুগে স্পষ্ট হয়েছে হকপন্থী ও না-হকপন্থীর পরিচয়।

বন্ধু! একি কল্পনার আখ্যান? না, প্রিয়! এ এক বাস্তব ইতিহাসের ধারাভাষ্য। আর এ সত্য আপনার চেয়ে ভালো আর কে  জানবে?

এখন প্রশ্ন হচ্ছে? কীসের বলে তাঁরা বলীয়ান ছিলেন? অর্থ-বিত্তের বলে? না। গোত্র ও সম্প্রদায়ের বলে? না। রাজ-ক্ষমতার বলে? না। রাজ-স্বীকৃতির বলে? জী না। তাহলে কীসের বলে? তারা বলীয়ান ছিলেন কুরআন-সুন্নাহর ইলমের বলে এবং আল্লাহর খিলাফত ও রাসূলের বিরাসতের বলে।

কুরআন-সুন্নাহর ইলমই তো ‘ফুরকান’ ও ‘সুলতান’। যুগে যুগে কত বিভ্রান্তির স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে এই ইলমের দ্বারা! কত বাতিলপন্থীর যুক্তি-তর্ক নস্যাৎ হয়ে গেছে এই ইলমের কষাঘাতে। ইলমের চাবুক কোনো অংশেই কম ছিল না এবং এখনো কম নয় শাসকের তরবারির চেয়ে।

বন্ধু! পৃথিবীতে এই জামাতটিই হচ্ছে হক ও হকপন্থীর স্বীকৃতিদাতা। তো এদের স্বীকৃতিদাতা কে? এঁদের স্বীকৃতিদাতা হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।

কে দিয়েছেন কুরআন-সুন্নাহর স্বীকৃতি? আল্লাহ। 

কে দিয়েছেন কুরআন-সুন্নাহর ধারক-বাহকদের স্বীকৃতি?  

আল্লাহ। 

আল্লাহর স্বীকৃতির পর আর কারো স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই- এই বাস্তবতা আমাদের বিস্মৃত হলে চলবে না।

কাজেই সরকারী এই স্বীকৃতি একান্তই একটি ব্যবস্থাপনাগত ব্যাপার। এর ভালো-মন্দ ও লাভালাভের বিচার ন্যস্ত আমাদের মুরব্বী ও দায়িত্বশীলদের বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার উপর।

এই স্বীকৃতির অর্থ কখনো এই নয় যে, এটা কুরআন-সুন্নাহর ইলমের স্বীকৃতি, ইলমে দ্বীনের ধারক-বাহকদের স্বীকৃতি, আর এই স্বীকৃতির আগ পর্যন্ত মাদরাসা-পড়ুয়াদের জীবন ছিল এক ‘ব্যর্থ’ ও ‘স্বীকৃতিহীন’ জীবন! কিংবা সরকারি স্বীকৃতি না থাকায় এতকাল তাঁরা ছিলেন অপারগ, অক্ষম, কর্মহীন! নাউযুবিল্লাহিল আযীম!

এই ধরনের চিন্তা যদি কারো থাকে কিংবা যদি কারো মনে জাগে তাহলে সে বোকার স্বর্গে বাস করছে। না তার আছে জীবনের অর্থ সম্পর্কে ধারণা, না জীবনের সফলতা-ব্যর্থতার স্বরূপ-জ্ঞান আর না কওমি মাদরাসার পড়াশোনার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগতি। 

কোন্ জীবনটা জীবন? দুর্নীতি ও পাপাচারে নিমজ্জিত জীবনটা, না সততা ও নির্মলতায় উদ্ভাসিত জীবনটি?

কোন্ জীবনটি সফল? অবিশ্বাস ও অনাচারে নিমজ্জিত জীবনটা, না ঈমান ও তাকওয়ায় সমুজ্জ্বল জীবনটি?

আর কে কাকে কৃতার্থ করে? শিক্ষকতার মসনদ কৃতার্থ করে যোগ্য শিক্ষককে, না যোগ্য শিক্ষক মহিমা দান করেন শিক্ষকতার মসনদকে?

মসজিদের কমিটি কৃতার্থ করে মিম্বার-মিহরাবের যোগ্য ইমামকে? না ইমাম-খতীব অর্থপূর্ণ করেন মিম্বার ও মিহরাবকে?

স্বীকৃতির ডামাডোলে এই বিষয়গুলো ভুলে গেলে চলবে না। কারণ, এই বোধ, এই চেতনা আমাদের আত্মপরিচয়ের অংশ এবং আমাদের আত্মপরিচয়ের রক্ষাকবচ।

কওমি মাদরাসার আমরা যারা তালিবুল ইলম তারা তো এই পথে এসেছিই চারপাশের জীবন ও জগতের ক্ষুদ্রতা ও দাসত্ব থেকে ওপরে ওঠবার জন্যে। অর্থ-বিত্তের দাসত্ব, পদ-পদবীর দাসত্ব, সুনাম-সুখ্যাতির দাসত্ব, ভোগ-উপভোগের দাসত্ব, ক্ষমতা ও চাকচিক্যের দাসত্ব- এই সর্ব প্রকারের দাসত্বকে অস্বীকার করেছি বলেই তো কওমি মাদরাসায় আসতে পেরেছি।

আমাদের দৃঢ় ঈমান, একমাত্র আল্লাহই রিযক দানকারী । কোন উপায়ে তিনি তা দান করবেন তা তিনিই ভালো জানেন। তবে মুত্তাকীদের জন্য তাঁর পক্ষ হতে রয়েছে সম্মানজনক রিয্কের প্রতিশ্রুতি।

জগতের অন্যান্য অঙ্গন ও শিক্ষালয়ের চিত্র যা-ই হোক, দ্বীনী ইলমের একজন ধারক-বাহক শিক্ষকতা এই জন্য করেন না যে, ‘মাস শেষে মাইনে পাবেন’। তিনি শিক্ষকতা করেন ইলমে দ্বীনের বিস্তারের জন্য এবং কিছু হামিলীনে ইলমে দ্বীন তৈরি করে রেখে যাওয়ার জন্য। একজন ইমাম ও খতীব এই জন্য মিম্বার-মিহরাবের খিদমতে নিয়োজিত হন না যে, ‘মাসের শেষে মাইনে আসবে’; তিনি নিয়োজিত হন দ্বীন ও ইলমের বিস্তারের জন্য এবং দ্বীনের এই মহান স্তম্ভটিকে সঠিকভাবে ধরে রাখবার জন্য। আর অন্যরা এঁদের পার্থিব প্রয়োজন পূরণ করে এই দ্বীনী খিদমতের অংশীদার হয়ে যান। এঁরা তখন প্রতিনিধিত্ব করেন ইসলামের স্বর্ণযুগের বাইতুল মাল-ব্যবস্থার। উভয় পক্ষ দ্বীনের খাদিম, দ্বীনের চর্চা ও বিস্তার, প্রয়োগ ও প্রতিষ্ঠার পথে একে অপরের সহযোগী। উভয়ে উভয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। আর সকলে আল্লাহর শোকরগোযার যে, দ্বীনের প্রচার-প্রসারে আল্লাহ তাদের যুক্ত করেছেন এবং একত্র করেছেন।

বন্ধু! দ্বীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় এভাবেই হাতে হাত ধরে এগিয়ে গেছেন মুসলিমেরা। এখানে কেউ প্রভু কিংবা ভৃত্য নয়, নয় কর্তা বা কর্মচারী। এখানে একে অপরের সতীর্থ ও সহযাত্রী। কাজেই ইলমে দ্বীনের কোনো অন্বেষী কখনো হীনতা ও হীনম্মন্যতাগ্রস্ত হতে পারে না, আর ইলমে দ্বীনের কোনো সেবক কখনো নীচতা ও ক্ষুদ্রতার শিকার হতে পারে না- যদি প্রত্যেকে স্ব স্ব কর্ম ও অবস্থানের স্বরূপ সঠিকভাবে উপলব্ধি করে থাকেন।

এই কথাগুলো কারো অজানা নয়। তবে একটি নতুন প্রেক্ষাপটে প্রসঙ্গক্রমে এর পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছেমাত্র। যেন কোনো পক্ষই আমরা স্বীকৃতির ভুল মূল্যায়ন না করি।

স্বীকৃতির লাভালাভ কোন্ পক্ষের কতটুকু তারও একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। আমাদের মনে হয়, এখানে গ্রহীতার চেয়ে দাতার নিজের লাভের পরিমাণ বেশি। না, আখিরাতের লাভের কথা বলছি না। দুনিয়ার লাভের কথাই বলছি। কওমি মাদরাসার সাথে সংশ্লিষ্টদের যে সংখ্যা ও অবস্থান, কওমি মাদরাসার প্রতি এ দেশের ইসলামপ্রিয় জনতার যে আস্থা ও ভালবাসা আর দ্বীনের নিসবতে কওমি আলিম-উলামার সাথে নানা শ্রেণী-পেশার লক্ষ কোটি জনতার যে সম্পৃক্ততা শুধু এই বিচারেও  তো মনে হয়, এটা বর্তমান সরকারের এক বৃহৎ সাফল্য। কাজেই সরকারেরই কর্তব্য কৃতজ্ঞ ও কৃতার্থ থাকা এবং কৃতজ্ঞতার দাবি পূরণ করে যাওয়া।

এই দাবিগুলোর একটি হচ্ছে, দ্বীনী শিক্ষার এই ধারাকে চাকুরি ও জীবিকার নামে বিকৃত ও বাধাগ্রস্ত না করে একে তার নিজস্ব লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে আরো এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করা। এই শিক্ষাধারা থেকে যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দায়ী ও মুসলিহ এবং বিশ্বমানের কুরআন-বিশারদ, হাদীস-বিশারদ, ফিকহ-বিশারদ, আরবী ভাষাবিদ ও অন্যান্য ইসলামী শাস্ত্রে গভীর বুৎপত্তিসম্পন্ন প-িত ও গবেষক তৈরি হওয়ার ধারা সহজ ও বিস্তৃত হয় এবং আমাদের এই ছোট্ট দেশটিতেও আন্তর্জাতিক মানের স্বীকৃত যথার্থ ইসলামী গবেষণার বিস্তার ঘটে এর জন্য সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা। কিন্তু এই বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন তো পরে, সঠিকভাবে বোঝার জন্যও তো প্রয়োজন বিজ্ঞ আলিম-উলামার সাহচর্য। যাই হোক, আপাতত, এই স্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে কওমি বোর্ডগুলোর ঐক্য একটি অর্জন। তবে তা বাস্তব অর্জনের ভূমিকামাত্র। যে কোনো ঐক্য শুধু তখনই অর্থপূর্ণ ও ফলপ্রসূ হয় যখন এর দ্বারা নিজেদের কল্যাণ ও স্বার্থের পথে দু’কদম এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।

বাকি থাকল, নানা সরকারি প্রতিষ্ঠানে দ্বীনী কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ, তো বর্তমান অবস্থায় এর দ্বারা কত শতাংশ কওমি আলিম বাস্তবেই উপকৃত হবেন বা হতে পারবেন তা-ও চিন্তা-ভাবনার বিষয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা এজন্য প্রয়োজন যে, ব্যবস্থাপনাগত এই স্বীকৃতিটিতে ইতিবাচক যে দিকগুলো আছে তা যেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগানোর চেষ্টা  করা যায় আর আশঙ্কার দিকগুলো সম্পর্কে সজাগ-সচেতন থাকা যায়। এখন চোখকান খোলা রাখা এবং প্রতিটি প্রস্তাব ও পরিস্থিতি খুব ঠাণ্ডা মাথায় বিচক্ষণতার সাথে বিবেচনা করা আমাদের কর্তা ও দায়িত্বশীলদের কর্তব্য হয়ে যাচ্ছে।

যাই হোক, মূল কথা ছিল, সনদের এই সরকারি স্বীকৃতিটি একান্তই একটি পরিস্থিতিগত ও ব্যবস্থাপনাগত ব্যাপার। আমাদের নীতি, আদর্শ এবং আমাদের পড়াশোনার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সাথে এর বড় কোনো সংযোগ নেই। আমাদের মেহনত ও মগ্নতার সফলতা-ব্যর্থতাও এর উপর নির্ভর করে না।

 

advertisement