Rabiul Auwal 1438   ||   December 2016

নবীজীর শিক্ষা

মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, একদিন আমি (সওয়ারিতে) রাসূলের পিছনে বসা ছিলাম, তিনি আমাকে বললেন-

يَا غُلاَمُ إِنِّي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ : احْفَظِ اللَّهَ يَحْفَظْكَ، احْفَظِ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ، إِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلِ اللَّهَ، وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ، وَاعْلَمْ أَنَّ الأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ، وَلَوْ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْكَ، رُفِعَتِ الأَقْلاَمُ وَجَفَّتْ الصُّحُفُ .

বাছা! তোমাকে কয়েকটি কথা শেখাচ্ছি; তুমি আল্লাহকে রক্ষা করো, আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন। আল্লাহকে রক্ষা করো, তাকে তোমার সম্মুখে পাবে। তুমি যখন চাবে শুধু আল্লাহর কাছে চাবে, যখন সাহায্য প্রার্থনা করবে শুধু আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে। জেনে রাখ, যদি গোটা জাতির সকলে মিলে তোমার কোনো উপকার করতে চায় তাহলেও এর বেশি কিছুই করতে পারবে না, যা আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আর যদি সকলে মিলে তোমার কোনো ক্ষতি করতে চায় তাহলেও এর চেয়ে বেশি কিছু করতে পারবে না, যা আল্লাহ তোমার জন্য নির্ধারণ করে রেখেছেন। লেখনী তুলে ফেলা হয়েছে আর লেখা শুকিয়ে গেছে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৫১৬

 

সূত্র-আলোচনা

হাদীসটি ইমাম তিরমিযী রাহ. তাঁর সুনানগ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাটি সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য-

هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.

বর্ণনাটি হাসান সহীহ (নির্ভরযোগ্য)। ইমাম তিরমিযী রাহ. হাদীসটি যে সনদে বর্ণনা করেছেন তা ছাড়া আরো বিভিন্ন সনদে তা বর্ণিত হয়েছে। তবে ইমাম তিরমিযী রাহ. উল্লেখিত সনদটিই সবচেয়ে শক্তিশালী। এ কথাই বলেছেন আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী রাহ.-

وأصح الطرق كلها طريق حنش الصنعاني التي خرجها الترمذي، كذا قاله ابن مندة وغيره.

-জামেউল উলূমি ওয়াল হিকাম, পৃ. ২৩২

 

মর্ম ও শিক্ষা

 

এই হাদীসে ঈমান ও ইয়াকীন শেখানো হয়েছে, যা ছোট-বড় সবার জানা দরকার এবং আপনজন প্রিয়জনদের শেখানো দরকার।

 

আল্লাহকে রক্ষা কর, আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন

 

আল্লাহকে রক্ষা করা মানে কী? বান্দা কীভাবে আল্লাহকে রক্ষা করবে? আল্লাহ তো মহা পরাক্রমশালী। তিনি তো কারো মুখাপেক্ষী নন?

আল্লাহকে রক্ষা করার অর্থ নিজের জীবনে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ রক্ষা করে চলা, তাঁর নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন না করা।

এদেরই জন্য তাঁর প্রতিশ্রুতি, তিনি তাদের রক্ষা করবেন।

এখানে এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হচ্ছে, কর্তব্য-চেতনা। আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণ পেতে হলে বান্দাকে হতে হবে কর্তব্য-সচেতন। নিজ কর্তব্যপালন না করে অধিকারদাবি করা কিংবা কর্মনা করে প্রাপ্তিরআশা করা অন্যায় ও নির্বুদ্ধিতা।

কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াতে এ শিক্ষা আছে। ইরশাদ হয়েছে-

وَأَوْفُوا بِعَهْدِي أُوفِ بِعَهْدِكُمْ

তোমরা আমার সাথে কৃত অঙ্গিকার পূরণ কর, আমি তোমাদের সাথে কৃত অঙ্গিকার পূরণ করব। -সূরা বাকারা (২) : ৪০

فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ

তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদের স্মরণ করব। -সূরা বাকারা (২) : ১৫২

إِنْ تَنْصُرُوا اللهَ يَنْصُرْكُمْ

তোমরা যদি আল্লাহর নুসরত কর তাহলে তিনি তোমাদের নুসরত করবেন। -সূরা মুহাম্মাদ (৪৭) : ৭

 

আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন

 

অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার বিশেষ সুরক্ষা ও কৃপাদৃষ্টি তোমার সাথে থাকবে।

এই পৃথিবীতে আল্লাহর যে ব্যবস্থা তাতে জন্মের সাথে আছে মৃত্যু, লাভের সাথে ক্ষতি, সুখের সাথে দুখ- জগতের সকল মানুষ তাঁর এই নেযামের অধীন। সকলের জন্যই তিনি নির্ধারণ করে রেখেছেন আয়ু, জীবিকা ও অন্যান্য বিষয়। স্থূল দৃষ্টিতে এসব ক্ষেত্রে মুমিন-কাফিরের পার্থক্য দেখা না গেলেও বাস্তবে রয়েছে বিরাট পার্থক্য । এ কারণে একের ক্ষেত্রে যে আয়ু হয় শাস্তি-পূর্ব অবকাশ, অন্যের ক্ষেত্রে তা চিরস্থায়ী শান্তির উপায়। একের সুখ-দুঃখ হয় পাপাচার ও নৈরাশ্যের কারণ, অন্যের ক্ষেত্রে তা হয় শোকর ও সবরের উপায়। একের জীবন কাটে মালিকের না-রাজি ও ভ্রুক্ষেপহীনতায়  আর অন্য জনের তাঁর সুদৃষ্টি ও সুরক্ষায়। তো এই সুরক্ষা প্রধানত দ্বীন ও ঈমানের সুরক্ষা। আল্লাহর কাছে এরই মূল্য অধিক। বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী রাহ. পাপাচারীদের সম্পর্কে বলেছেন-

هانوا عليه فعصوه ولوعزوا عليه لعصمهم.

ওরা আল্লাহর কাছে হীন তাই তাঁর নাফরমান হতে পেরেছে। যদি তাঁর কাছে প্রিয় হত তাহলে তিনি তাদের রক্ষা করতেন। -জামেউল উলূমি ওয়াল হিকাম, পৃ. ২৩৬

সুতরাং আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে এই সুরক্ষা লাভের প্রত্যাশী ও প্রয়াসী হতে হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রার্থনাসমূহে এ শিক্ষা রয়েছে।

সহীহ বুখারীতে হযরত আবু হুরায়রা রা.-এর সূত্রে ঘুমের সময়ের যে দুআ বর্ণিত হয়েছে তার একটি বাক্য-

إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ.

আপনি যদি (এই ঘুমে) আমার প্রাণ কবজ করেন তাহলে তাকে রহম কোরেন আর যদি ছেড়ে দেন তাহলে তাকে ঐসব বিষয়ে সুরক্ষা দান কোরেন, যে বিষয়ে আপনার নেককার বান্দাদের সুরক্ষা দিয়ে থাকেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩২০

ওমর রা.-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে এই দুআ শিখিয়েছেন-

اللَّهُمَّ احْفَظْنِي بِالْإِسْلَامِ قَاعِدًا، وَاحْفَظْنِي بِالْإِسْلَامِ قَائِمًا، وَاحْفَظْنِي بِالْإِسْلَامِ رَاقِدًا، وَلَا تُطِعْ فِيَّ عَدُوًّا حَاسِدًا.

ইয়া আল্লাহ! আমাকে ইসলামের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখুন যখন আমি বসা থাকি, ইসলামের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখুন যখন দাঁড়ানো থাকি, ইসলামের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখুন যখন শায়িত থাকি আর আমার সম্পর্কে কোনো দুশমন হিংসুকের প্রত্যাশা পূরূণ কোরেন না। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯৩৪

সুতরাং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর  দৃষ্টিতে এই সুরক্ষাই বেশি প্রয়োজন ও বেশি মূল্যবান।

আল্লাহর ফরমাবরদারির মাধ্যমে পার্থিব সুরক্ষাও হয়ে থাকে। বান্দা কখনো তা উপলব্ধি করে, কখনো করে না। তদ্রূপ তা যেমন বান্দার নিজের জীবনে হয়, কখনো তার মৃত্যুর পর সন্তান-সন্ততির ক্ষেত্রেও হয়। সূরাতুল কাহ্ফে মূসা আ. ও খাযির আ. কর্তৃক পল্লীবাসী দুই ইয়াতীমের সম্পদ রক্ষার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে আর তার কারণ এই বলা হয়েছে- وَ كَانَ اَبُوْهُمَا صَالِحًا.

তাদের বাবা ছিলেন নেককার। -সূরা কাহ্ফ (১৮) : ৮২

ইবনুল মুনকাদির রাহ. বলেন-

ان الله يحفظ بالرجل الصالح ولده وولد ولده وعشيرته والدويرات اى أهلها حوله فلا يزالون فى حفظ الله وستره.

আল্লাহ তাআলা নেককার ব্যক্তির কারণে তার সন্তানকে, সন্তানের সন্তানকে এবং চারপাশের ঘরবাড়িগুলোকে হেফাযত করেন। ফলে তারা থাকে আল্লাহর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার চাদরে। -রূহুল বয়ান, সূরা কাহ্ফের ৮২ নং আয়াতের অধীনে

 

আল্লাহকে রক্ষা কর, তাঁকে তোমার সামনে পাবে

 

আল্লাহ তো কোনো অবস্থায় বান্দা থেকে দূরে নন। গোটা সৃষ্টিজগৎ সর্বাবস্থায় আল্লাহ তাআলার জ্ঞান ও কর্তৃত্বের ভেতরে। এই অর্থে তিনি সর্বাবস্থায় সবার সঙ্গে। এখানে যে বিশেষ সঙ্গ ও সান্নিধ্যের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে তাঁর সাহায্য ও পথনির্দেশ। বান্দা যখন আল্লাহর হুকুম মোতাবেক চলে তখন সে পদে পদে আল্লাহর নুসরত লাভ করে। জটিল ক্ষেত্রগুলোতে আল্লাহ তাকে সুপথ দেখান ও সঠিক পথে পরিচালিত করেন।

ইরশাদ হয়েছে-

اِنَّ اللهَ مَعَ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا وَّ الَّذِیْنَ هُمْ مُّحْسِنُوْنَ.

নিশ্চিত থাক, আল্লাহ তাদেরই সাথী, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, এবং যারা ইহসানের অধিকারী হয়। -সূরা নাহল (১৬) : ১২৮

যে আল্লাহকে স্মরণ রাখে, আল্লাহও তাকে স্মরণ রাখেন। সুখ ও সচ্ছলতায় যে আল্লাহকে স্মরণ রেখে তাঁর হুকুম মোতাবেক চলে দুখ ও অনটনে আল্লাহ তাকে স্মরণ রাখেন ও তার নুসরত করেন।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

تَعَرَّفْ إِلَيْهِ فِي الرَّخَاءِ، يَعْرِفْكَ فِي الشِّدَّةِ.

সুখের সময় তুমি আল্লাহর পরিচয় লাভে সচেষ্ট থাক, দুঃখের সময় আল্লাহ তোমাকে চিনবেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৮০৩

 

প্রার্থনা ও ফরিয়াদ শুধু আল্লাহর কাছে

 

এই শিক্ষাই তো দেয়া হয়েছে সূরা ফাতিহায়-  اِیَّاكَ نَعْبُدُ وَ اِیَّاكَ نَسْتَعِیْنُ

আমরা তোমারই ইবাদত করি, আর তোমারই কাছে সাহায্য চাই। -সূরা ফাতিহা (১) : ৪

আল্লাহই মানুষের সকল প্রয়োজন পূরণ করেন, সকল অভাব দূর করেন। ইরশাদ হয়েছে-

وَ اِنْ یَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهٗۤ اِلَّا هُوَ  وَ اِنْ یُّرِدْكَ بِخَیْرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضْلِهٖ یُصِیْبُ بِهٖ مَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ  وَ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ.

আল্লাহ যদি তোমাকে কোনও কষ্ট দান করেন, তবে তিনি ছাড়া এমন কেউ নেই, যে তা দূর করবে এবং তিনি যদি তোমার কোন মঙ্গল করার ইচ্ছা করেন, তবে এমন কেউ নেই যে তার অনুগ্রহ রদ করবে। তিনি নিজ বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ দান করবেন। তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা ইউনুস (১০) : ১০৭

مَا یَفْتَحِ اللهُ لِلنَّاسِ مِنْ رَّحْمَةٍ فَلَا مُمْسِكَ لَهَا  وَ مَا یُمْسِكْ  فَلَا مُرْسِلَ لَهٗ مِنْۢ بَعْدِهٖ   وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ.

আল্লাহ মানুষের জন্য যে রহমত খুলে দেন, তা রোধ করার কেউ নেই, আর যা তিনি রুদ্ধ করেন, এমন কেউ নেই যে এরপর তা উন্মুক্ত করতে পারে। তিনি ক্ষমতার মালিক, হেকমতেরও মালিক। -সূরা ফাতির (৩৫) : ২

সুতরাং যার হাতে সব তাঁর কাছে চাওয়াই তো বুদ্ধিমানের কাজ। এরপর তিনি কোন্ উপায়ে কার মাধ্যমে প্রয়োজন পূরণ করবেন তা তো তিনিই ভালো জানেন। সুতরাং যখন কোনো বৈধ উপায়ে বান্দার প্রয়োজন পূরণ হয় তখন সেই উপায়ের যথাযথ মূল্যায়ন করাও বান্দার কর্তব্য।

লাভ ও ক্ষতি তাকদীর অনুযায়ী। কমও নয়, বেশিও নয়

মানুষের জীবনে কী ঘটবে তা সবই তাকদীরে  লেখা আছে। কারো এমন কোনো ক্ষতি হবে না, যা তাকদীরে লেখা নেই। এমন কোনো লাভও হবে না, যা তার জন্য নির্ধারিত ছিল না।

قُلْ لَّنْ یُّصِیْبَنَاۤ اِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا.

বলে দাও, আল্লাহ আমাদের তাকদীরে যে কষ্ট লিখে রেখেছেন, তা ছাড়া অন্য, কোনো কষ্ট আমাদের কিছুতেই স্পর্শ করবে না। -সূরা তাওবা (৯) : ৫১

مَاۤ اَصَابَ مِنْ مُّصِیْبَةٍ فِی الْاَرْضِ وَ لَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ ...

পৃথিবীকে অথবা তোমাদের প্রাণের উপর যে মুসিবত দেখা দেয়, তার মধ্যে এমন কোনওটিই নেই, যা সেই সময় থেকে এক কিতাবে লিপিবদ্ধ না আছে, যখন আমি সেই প্রাণসমূহ সৃষ্টিও করিনি। -সূরা হাদীদ (৫৭) : ২২

দুনিয়ার সকল মানুষ মিলেও তাকদীরের বিপরীত কোনো কিছু করতে পারবে না। যা লেখা আছে তা ঘটবেই। আর যা লেখা নেই তা কখনো ঘটবে না। তাকদীরের উপর ঈমান হচ্ছে ঈমানিয়াতের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদীসে একে ঈমানের হাকীকত বলেছেন-

আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রত্যেক জিনিসেরই একটি হাকীকত আছে। আর ঈমানের হাকীকত পর্যন্ত কোনো বান্দা পৌঁছুতে পারে না, যতক্ষণ না তার এ দৃঢ় বিশ্বাস অর্জিত হয়েছে। যা কিছু (ভালো বা মন্দ) তাকে স্পর্শ করেছে তা ভ্রষ্ট হবার ছিল না। আর যা (তাকে স্পর্শ করেনি) লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে তা তাকে স্পর্শ করার ছিল না।-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৭৪৯০

যেহেতু সবকিছু তাকদীর অনুযায়ী হয় তাই বালা মুসিবতে অধৈর্য হওয়া উচিত নয়। মুমিনের পক্ষে তো কোনো অবস্থাই মন্দ নয়। সহীহ মুসলিমের এক রেওয়ায়েতে এসেছে

মুমিনের ব্যাপারটি সকল অবস্থাই কল্যাণকর। আর এ কেবল মুমিন বান্দার জন্যই। (কেননা) সুখের অবস্থায় থাকলে সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর দুঃখের অবস্থায় থাকলে ধৈর্য্য ধারণ করে, ফলে তাও তার জন্য কল্যাণকর হয়।-সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯৯৯

اِنَّمَا یُوَفَّی الصّٰبِرُوْنَ اَجْرَهُمْ بِغَیْرِ حِسَابٍ.

যারা সবর অবলম্বন করে তাদেরকে তাদের সওয়াব দেয়া হবে অপরিমিত। -সূরা যুমার (৩৯) : ১০

তাই তাকদীরে ঈমান রাখতে হবে। তাকদীরের ফয়সালায় নারাজ বা অসন্তুষ্ট হওয়া যাবে না। তাকদীরের প্রতি নারাজ হওয়া জায়েয নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক হাদীসে তাকদীরে সন্তুষ্টির জন্য দুআ শিখিয়েছেন। 

 

advertisement