কোনো কোনো বক্তাকে এই ধরনের ঘটনা বলতে শোনা যায় যে, হযরত ঈসা আ.কে বাল্যকালে তাঁর মা মারইয়াম আ. যখন মকতবে পাঠিয়েছিলেন তখন মকতবের শিক্ষক তাঁকে বললেন, বল, আলিফ, বা ...। ঈসা. প্রশ্ন করলেন, আলিফ অর্থ কী? শিক্ষক ছোট ছেলের অনাকাঙ্খিত প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারলেন না। তখন ঈসা আ. নিজেই শিক্ষকের চেয়ারে বসে আলিফ থেকে শুরু করে ইয়া পর্যন্ত প্রতিটি বর্ণের ব্যাখ্যা করলেন এবং প্রত্যেকটি বর্ণ থেকে আল্লাহর বিভিন্ন মহিমার বর্ণনা দিলেন। আবার অনেক বক্তার মুখে বিসল্লিাহির রাহমানির রাহীমের প্রতিটি বর্ণের আলাদা আলাদা ব্যাখ্যা দেওয়ার কথাও শোনা যায়।
কিন্তু বাস্তবতা হল, এই সংক্রান্ত ঘটনা ও বর্ণনা কোনোটিই প্রমাণিত নয়। যে সকল বর্ণনায় এই ধরনের ঘটনা রয়েছে তাকে হাদীস-বিশারদরা প্রমাণিত নয় বলে আখ্যা দিয়েছেন। আল্লামা ইবনুল জাওযী রাহ. বলেছেন,
ما يصنع مثل هذا إلا ملحد يريد شين الأسلام أو جاهل في غاية الجهل وقلة المبالاة بالدين
(আলমাওযূআত ১/৩২৮-৩৩০)
হাফেয সুয়ূতী রাহ.সহ অন্যান্য মুহাদ্দিসও তার সাথে একমত। আল্লামা শাওকানী রাহ. বলেছেন,
هو موضوع كما قال ابن الجوزي وفي اسناده اسماعيل بن يحي كذاب
আলফাওয়াইদুল মাজমূআহ পৃ. ৪৯৭। আরো দেখা যেতে পারে : আলকামিল ১/৩০৩; মিযানুল ইতিদাল ১/২৬৯-২৭০; লিসানুল মিযান ২/১৮১-১৮২; তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/১৯; আললাআলী ১/১৭২; তানযীহুশ শরীয়াহ ১/২৩১)
এছাড়া সেই সময় ঐ এলাকার ভাষাও আরবী ছিল না যে, মকতবে আরবী বর্ণমালার পাঠদান চলবে। আর বাল্যকাল থেকে হযরত ঈসা আ. থেকে প্রমাণিত ও সত্য আশ্চর্যজনক ঘটনাবলি বা মুজিযা অনেক রয়েছে, সেগুলোই বয়ান করা উচিত। অতএব এ ধরনের ভিত্তিহীন বর্ণনার বয়ান একেবারেই পরিহার করা উচিত।