Ramadan 1429   ||   September 2008

আজো মনে পড়ে সেই দিনটি

১৫ আগস্ট ২০০২ সাল। অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটি ঘটনা এদিন ঘটেছিল। নিষ্পাপ তাজাপ্রাণ ইলমে নবুওয়াতের ঝান্ডাবাহী তালিবুল ইল্ম,আমার ভাই আবুল বাসার, হাফেজ ইয়াহইয়া, রেজাউল করীম ও মুসল্লী জয়নুল আবেদীন এদিন শাহাদাত বরণ করেন। রাজধানী ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা মালিবাগে এ কলংকময় বর্বর হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছিল। মুসলিম জাতির প্রতি চরম বিদ্বেষী জনৈক কাদিয়ানীর ভাড়াটিয়া কতগুলো বর্বর পশু রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করেছিল। সন্ত্রাসী চক্রের গুলিতে এক এক করে শহীদ হয়েছিল ৪টি তাজা প্রাণ। ঘটনাটি ঘটেছিল এমন সময় যখন ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী(?) চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায়। শোকাহত জাতি অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করেছে পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ। সেদিন যে নজীরবিহীন ঘটনা ঘটেছিল বাইতুল আযীম জামে মসজিদকে কেন্দ্র করে তা চৌদ্দকোটি মুসলমানের অন্তরে মারাত্নক ক্ষতের জন্ম দিয়েছিল।

১৫ আগষ্ট ২০০২ সালে মালিবাগ বাইতুল আযীম জামে মসজিদে নামায পড়া বন্ধ করার অপচেষ্টা করে সেই কাদিয়ানী গোষ্ঠী। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে তাওহীদী জনতা। সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় নেমে আসে ইসলামপ্রিয় তাওহীদী জনতা। সেই প্রতিবাদী মিছিলে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে শহীদ করা হল নববী উদ্যোনের তিনটি পুষ্প ও একজন নিরীহ মুসল্লীকে!

ঈমানের বলে বলীয়ান হয়ে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় তারা বুকের তাজা রক্ত ডেলে দিয়েছিলেন।

মসজিদের দেশ বাংলাদেশ এবং মসজিদের শহর হিসেবে পৃ©র্থবী জুড়ে ঢাকার সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে।  সেই মসজিদের দেশে, মসজিদের শহরে মসজিদপ্রিয় মুসল্লী ও ছাত্র-জনতাকে মসজিদ রক্ষার দাবিতে সোচ্চার হওয়ার কারণে গুলি করে শহীদ করার ঘটনা নিঃসন্দেহে ন্যক্কারজনক।

দুর্ভাগ্য আমাদের । যারা তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাল, শহীদ করল, তাদেরকে আমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারলাম না। অথচ এক এক করে আজ ছয়টি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল। দীর্ঘ ছয়টি বছর পার হয়ে গেলেও এ ন্যক্কারজনক ঘটনার যারা জন্ম দিল তাদের কোনো বিচার হল না। শহীদ মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রতিশ্রুতি শুধুই প্রতিশ্রুতি রয়ে গেল। একটি মসজিদের রুদ্ধ দুয়ার খুলে দিতে যারা জীবন দিলেন,তারা আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেলেন যে,আমরা যদি নিজেদের ঈমানদার বলে দাবি করি, তবে অবরুদ্ধ প্রতিটি  মসজিদের দুয়ার খুলতে আমাদেরও আত্মত্যাগের মানসিকতা নিয়ে অবতীর্ণ হতে হবে ময়দানে। কবির ভাষায় -

যদি মৃত্যুর ভয়ে কাপুরুষ হয়ে/বসে থাক শুধু ঘরে/লাখো শহীদের রক্তের ঋণ/ শোধিবে কেমন করে?

মুহাম্মাদ আব্দুল আলীম

পল্লবী, ঢাকা-১২১৬

 

advertisement