Zilhajj 1429   ||   December 2008

নে তৃ ত্ব : সামনে ভোটের দিন!

Waris Rabbani

শেষ পর্যন্ত তফসিল পরিবর্তন করে ২৯ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়েছে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ। প্রধান দুটি জোটের নির্বাচনের প্রস্ত্ততি জোরেশোরে চলছে। যদিও দু-একটি শর্তের বিষয় এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে যথা সময়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়তো হয়ে যাবে। প্রায় দুবছরের একটি দীর্ঘ  মেয়াদী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাত থেকে দেশ পরিচালনার ক্ষমতা হস্তান্তরিত হবে নির্বাচিত সরকারের কাছে। এর মাসখানের পরই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উপজেলা নির্বাচন।

এটি এ দেশের জন্য মোটা দাগের একটি স্বস্তিদায়ক ঘটনা। একই সঙ্গে আসন্ন নির্বাচিত সরকারের হাতে দুর্নীতি বিরোধিতা, সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিগ্রস্ত লোকদের বিচার প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং উৎপাদন-উন্নয়ন ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা ও ব্যবসায়ীদের উগ্র মুনাফাখোরি বন্ধ করার বাস্তব কর্মপন্থা গৃহীত হলে সেটি হবে এ দেশের জন্য আরো বড় ঘটনা। ভালো লোককে মনোনয়ন দান ও দলগত তীব্র দূরত্ব দূর করা এবং জাতীয় স্বার্থে ঐক্যের ঘোষণা দিয়ে বড় দল ও জোটগুলো নির্বাচনের পূর্ব  থেকেই এ পথে অগ্রসর হতে পারেন। এতে গত দুবছর বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন প্রয়াস, সাফল্য-ব্যর্থতা, ঝুঁকি, ত্যাগ ও কষ্টের একটি সুপরিণতি চলেও আসতে পারে। এ নির্বাচনটিকে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বাঁচা-মরার যুদ্ধ মনে করে এখন থেকেই নিরাপস ও যু্দ্ধংদেহী হয়ে পদক্ষেপ নিতে থাকলে দেশের জন্য আশু কল্যাণের পরিবর্তে ব্যাপক কোনো ক্ষতিও চলে আসতে পারে।

বিশেষত নির্বাচনের সম্ভাবনা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বিদেশী কূটনীতিক ও পর্যবেক্ষকদের দূতিয়ালির মাত্রা নতুন সংশয়ের সৃষ্টি করছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের চেয়ে এদেরকে অন্য কিছু বিষয়ে বেশি আগ্রহী দেখা যায় বরাবর। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মরিয়া মনোভাব থেকে তারা তাদের সেসব বিষয়গুলো বাস্তবায়নের ফাঁক বের করে নেওয়ার সুযোগ পাবে। একেক গ্রুপের সঙ্গে একেক ভাষায় কথা বলা তাদের পলিসি। এভাবে প্রত্যেককে প্রত্যেকের মুখোমুখি করে দিয়ে আবারো একটি চলৎ-ক্ষমতা রহিত পরিস্থিতির দিকে দেশকে ঠেলে দিতে পারে তারা। কিংবা এ দেশকে  নামমাত্র মূল্যে তাদের তেল-গ্যাস-কয়লা লুটের চারণক্ষেত্র হিসেবে কথাপাকা করার পর্যায়ে চলে যেতে পারে তারা। এ সময় জাতীয় নেতৃত্বের এ ক্ষেত্রেও স্থির মনোযোগ দান ও সর্বোচ্চ সতর্কতা রক্ষা করা একটি জরুরি বিষয়। এজন্যই বিদেশী শক্তির পরিবর্তে দেশের প্রতিটি শক্তিকে আস্থায় এনে সব বড় মহলের সিদ্ধান্ত ব্যক্ত  করা উচিত। আস্থা না থাকলে আস্থা স্থাপন করার মতো পদক্ষেপ চালাচালি করে হলেও সে পর্যায় পর্যন্ত যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।

দেশের সার্বভৌমত্ব, মূল্যবোধের ধরাবাহিকতা এবং সততা ও যোগ্যতার সব দিকে চোখ রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজটি করা ভোটার জন সাধারণের দায়িত্ব। নগদ প্রলোভন, নগদ আশ্বাস কিংবা অমূলক আতংকের পরিবর্তে

বাস্তবতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভোটারগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সিদ্ধান্ত জানালে দেশ ও দশের উপকার হবে।#

 

advertisement