Zilhajj 1429   ||   December 2008

ঈদুল আযহা : তাওহীদের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন

লা-ইলাহা ইল্লাহ। আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। এটা তাওহীদের ঘোষণা। ইসলামের কালেমার অংশ। অতএব মুমিনের ঈমান ও চেতনারও অংশ। যিলহজ্ব মাস এই ঈমানী চেতনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। এই মাসে হজ্ব ও কুরবানীর বিধান এসেছে। হজ্বের স্থানগুলোতে ধ্বনিত হয় -লাববাইক আল্লাহুম্মা লাববাইক, লাববাইক লা শারীকা লাকা লাববাইক ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারীকা লাক।

হাজির, ইয়া অল্লাহ! আমি হাজির। তোমার কোনো শরীক নেই, আমি হাজির। সকল প্রশংসা ও দান তোমারই, রাজত্বও তোমারই। তোমার কোনো শরীক নেই।

তাওহীদ ও আনুগত্যের গভীর ভাব বহনকারী এই বাক্যগুলোই কাবার যিয়ারতে গমনকারীদের বিশেষ তারানা, বিশেষ পহচান।

কুরবানীর সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দুআ পাঠ করতেন তা-ও ভাব ও ব্যঞ্জনায় অভিন্ন। লা-শরীক আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর আদেশের সামনে পূর্ণ সমর্পণই ওই দুআর অভিব্যক্তি। ওই দুআ থেকেই কুরবানীর তাৎপর্য ও অন্তর্নিহিত প্রেরণা প্রকাশিত হয়। সুনানে আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদসহ বিভিন্ন হাদীসের কিতাবে হযরত জাবির রা. থেকে তা বর্ণিত হয়েছে।

সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের উপর কুরবানী ওয়াজিব করা হয়েছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও প্রতি বছর কুরবানী করেছেন এবং অন্যদেরও কুরবানীর আদেশ দিয়েছেন। এক হাদীসে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। রাহমাতুল্লিল আলামীন এই কঠিন বাক্যটিই তাদের উদ্দেশ্যে উচ্চারণ করেছেন।

৯ যিলহজ্ব থেকে তাকবীরে তাশরীকের বিধান এসেছে। ৯ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১৩ যিলহজ্ব আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামাযের পর একবার তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। নারী-পুরুষ সবাই নামায শেষে পাঠ করবেন-আল্লাহু আকবার, ওয়াল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্ললাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।

অর্থাৎ আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আল্লাহই সবচেয়ে বড় এবং আল্লাহরই জন্য সকল প্রশংসা।

তালবিয়া-তাকবীরের এই মাসে আমরা যেন তাওহীদের চেতনায় উজ্জীবিত হই। শিরক ও পৌত্তলিকার সকল চিহ্ন পরিষ্কার করতে সক্ষম হই। আমাদের মান-মানস থেকে শুরু করে সমাজ ও পরিবেশের কোথাও যেন পৌত্তলিকতার অনুপ্রবেশ না ঘটে এজন্য যেন আমরা সতর্ক হই।

পবিত্র ঈদুল আযহা আমাদের জন্য লা-শরীক আল্লাহর আনুগত্যে সমর্পিত হওয়ার বারতা নিয়ে আসে।

 

কৃতজ্ঞতা

মূর্তি ও ভাস্কর্য সম্পর্কে কুরআন-সুন্নাহর বিধান আলোচনা করে গত সংখ্যায় একাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এ সংখ্যায় আলকাউসারের তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক ছাহেবের একটি বিশদ ও বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ পত্রস্থ হল। দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর অনুরোধে তিনি তা প্রস্ত্তত করেছিলেন। তাঁর অনুমতিক্রমে মাসিক আলকাউসারের পাঠকদের জন্যও তা প্রকাশিত হল। আল্লাহ তাআলা উভয়কে জাযায়ে খায়ের দান করুন।

 

advertisement