Safar 1430   ||   February 2009

একটি ভ্রান্ত বিশ্বাস : শায়খ আবদুল কাদের জীলানী রাহ. বা মুঈনুদ্দীন চিশতী রাহ.-এরও কি আসমায়ে হুসনা রয়েছে

আল্লাহ তাআলার অনেকগুলো গুণবাচক নাম আছে, যেগুলোকে কুরআন মজীদে আলআসমাউল হুসনা বলা হয়েছে। আর এ নামগুলো শুধু অহীর  মাধ্যমে জানা সম্ভব। অহীর মাধ্যমে অনেক নাম সম্পর্কে জানানোও হয়েছে। এর মধ্যে নিরানববইটি নাম সম্পর্কে হাদীস শরীফে এই বিশেষ ফযীলত উল্লেখিত হয়েছে যে, যে এই নামগুলো আত্মস্থ করতে সক্ষম হবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহীহ বুখারী হাদীস ২/৯৪৯; সহীহ মুসলিম হাদীস ২/৩৪২)

কুরআন-হাদীস থেকে খুঁজে বুযুর্গরা ওই নামগুলো সংকলন করেছেন, যা জামে তিরমিযী ও সহীহ বুখারীর শরাহ যেমন ফাতহুল বারী ইত্যাদি গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে। এই নামগুলোর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সম্পর্কে সালাফ অসংখ্য কিতাব রচনা করেছেন। তন্মধ্যে মুদ্রিত ও প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যাও কম নয়।

কুরআন হাকীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

ولله الاسماء الحسنى فادعوا بها

তাই আসমায়ে হুসনা একমাত্র আল্লাহ তাআলারই এবং তাকে ওই নামগুলো দিয়েই ডাকা উচিত। এই নামেই তার কাছে প্রার্থনা করা উচিত এবং এদেরই দোহাই দিয়ে তাঁর কাছে করুণা কামনা করা উচিত।

এটা শুধু আল্লাহরই হক। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নাম জপা, অন্য কারো নামের অযীফা পড়া, দূর থেকে তাকে আহবান করা কিংবা মানবীয় ক্ষমতার উর্ধ্বের কোনো  বিষয়ে তার সাহায্য প্রার্থনা করা, এগুলো সবই শিরক। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, তাওহীদ ও সুন্নাহ সম্পর্কে অজ্ঞ আমাদের অনেক কালেমা পাঠকারী ভাই উপরোক্ত শিরকী বিদআতে লিপ্ত। তারা পীরের নামের অযীফা পড়ে এবং এ উদ্দেশ্যে তারা নিজেরা পীরের বিভিন্ন নাম উদ্ভাবন করে, কিছু তো একেবারেই আজব অর্থহীন। কিছু নাম শিরকের বাহক। এরপর এইসব নামকে আসমায়ে পাক নাম দিয়ে জপতে থাকে। আল্লাহ তাআলার আসমায়ে হুসনার মতো এই নামগুলোর অযীফা পাঠ করে। কোনো কোনো অযীফার কিতাবে মূর্খরা খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রাহ.-এর ১৯৯ নাম তৈরি করে লিপিবদ্ধ করেছে। অযীফা আকারে তা পাঠ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয় (নাউযুবিল্লাহ)।

মনে রাখতে হবে যে,এগুলো সব জাহেলী ও শিরকী কাজ। খোদ মুঈনুদ্দীন চিশতী রাহ.-এর আদর্শের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি তাওহীদের ঝান্ডাবাহী, মুত্তাবিয়ে সুন্নত বুযুর্গ ও দায়ী ছিলেন। তাঁর দাওয়াতে অসংখ্য মানুষ শিরক-বিদআত ছেড়ে তাওহীদ ও সুন্নতের দিকে এসেছে। ইসলাম গ্রহণ করেছে। অথচ তার অনুসারী হওয়ার দাবি করে একশ্রেণীর মানুষ তাওহীদ ও ইসলাম বিরোধী রসম-রেওয়াজে লিপ্ত হয়ে থাকে। এটা কত বড় আফসোসের বিষয় ! আল্লাহ তাআলা উম্মতকে হেফাযত করুন। আমীন।

 


 

advertisement